আজকে ‘প্রথম আলো’ পড়তে গিয়ে হঠাৎ একটা শিরোনামে চোখ আটকে গেল- ‘ই-মেইলের নাগালে প্রধান উপদেষ্টা’। অন্য সব খবর ফেলে লেখাটায় চোখ বুলালাম। সেখানে একটা ওয়েব সাইটের ঠিকানা দেয়া আছে যেখানে যে কোনো কেউ দেশের শাসন ব্যবস্থা সম্বন্ধে তাঁর নিজস্ব মন্তব্য প্রধান উপদেষ্টার বরাবর পাঠাতে পারেন। লেখাটা শেষ করেই সাইটটিতে (http://www.cao.gov.bd/) চলে গেলাম। প্রথম দেখাতেই ওয়েবটির কয়েকটা বিষয়ে চোখ চলে গেল। প্রথমে ক্লিক করলাম ’২১শে ফেব্রুয়ারী’ ট্যাব এ। ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা পড়ে আমি হতবাক। ওখানে ১৯৫২ এর পাকিস্তানি বর্বতার ইতিহাস ঊধাও! পুরো পাতার ভূমিকায় স্থান পেয়েছে কিভাবে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে তার বর্ণনা। তখনকার শাসকদের ক্রুদ্ধ অংগুলি উপেক্ষা করে বাংলার জন্য ছাত্র, কৃষক আর সাধারণ জনতার বিক্ষোভ, রাতারাতি শহীদ মিনার নির্মাণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা মিনার ধ্বংসের তান্ডব কিচ্ছু নেই ঐ পাতায়! ভাবলাম হয়ত অন্য কোনো পাতায় আমাদের যুদ্ধের কথা আছে। অন্তত যেখানেই লাল সবুজের পতাকা, সেখানেই তো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ’৭১ কে খুঁজে বেড়াতে লাগলাম। কোথা-ও খুঁজে পেলাম না। শুধু ২১শে ফেব্রুয়ারীর পাতায় উল্লেখ করা আছে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এর ঘোষণার সমান সম্মান আর কিছু অর্জন করেনি। শুধু এটুকুই আমাদের স্বাধীনতার কথা! কেউ যদি একটু সচেতনভাবে এ সাইটটিতে লক্ষ করেন, তাহলে দেখবেন এখানে খুব সুকৌশলে পাকিস্তানী নির্যাতনের ঘটনাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এই-ই আমার বাংলাদেশ আর তার উপদেষ্টামন্ডলীর পরিচিতি! যে মানুষগুলো তাঁর দেশের জন্মপরিচয় জানাতে ‘ঢাক ঢাক গুড় গুড়’ অবস্থা, যাঁরা তাঁদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে পূর্বপরিচয় গোপন রাখায় তৎপর, তাঁরা দেশের উন্নয়নে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটা খানিকটা ভাববার বিষয়।
মন্তব্য
কে যেন কিছুদিন আগে বললেন সবসময় দেখি ইতিহাস লেখে বিজয়ীরা, কেবল আমাদের দেশেই উল্টোরথ।
দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
হ্যাঁ, এজন্যই এদেশে মৌলবাদীরা আজ-ও বাংগালীর টুটি চেপে ধরার ধৃষ্টতা দেখায়। আর আড়ালে তাদেরই সমর্থনকারী বর্তমান শিক্ষিত সমাজের একাংশ বাহবা দিয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে।
ভাল জিনিস লক্ষ্য করেছেন। যেদিকে তাকাই এদের পাকিস্থান প্রিয়তা চোখে পড়ে!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এই অংশটুকু কারো নজরে পড়েছে? (আর্টিকেলের ইউনিকোড ভার্সন এখানে)
আমি অবশ্য খুঁজে দেখিনি সাইটের ঠিক কোথায় সেটি আছে, অতটা আগ্রহ নেই হিটলারের বই পড়ার।
অবশ্য কৌ্তুহলী হয়ে W3C Markup Validation Service-এ প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের ওয়েবসাইট চেক করে দেখলাম ১৪টি এরর দিচ্ছে। সচলায়্তনের অবস্থা কি চেক করে দেখলাম ২৫৩টি এরর দিচ্ছে! হূমম...
স্ট্যাটিক পেইজে তো কম এরর দিবেই! তবে আমাদের দূর্বলতা লুকাতে চাইছি না। পরের ভার্সনে এগুলো আরো কেয়ারফুলী হ্যান্ডল করব নির্ঘাত।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মানছি, একই এররের পুনরাবৃত্তি ঘ্টাতে সংখ্যাটা বেশী দেখাচ্ছে। তবে আমি আশা করেছিলাম আরও কম (বা শূন্য) হবে।
সচলায়তন না হয় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে চলছে, তাই ভুল-ভ্রান্তি মার্জনীয়। প্রধান উপদেষ্টার সাইটের দায়িত্বে কারা? UNDP?
আমি-ও একমত সাজেদ ভাই এর সাথে। আমি একবার দেখার চেষ্টা করেছিলাম পেইজটি কবে শেষ আপডেট হয়েছে। কিন্তু কোনো তথ্য নেই। এমনকি কখন এটা চালু হয়েছে সেটা সম্বন্ধে-ও কিছু লেখা নেই!
সাজেদ ভাই,
ব্যাপারটা আমি-ও লক্ষ করেছি। আমি-ও বারদুয়েক চেষ্টা করেছিলাম বই এর ওয়েব এ যাওয়ার। কিন্তু সেখানে দেখাচ্ছিল শুধুমাত্র ঐ সাইটের সদস্যদের জন্য লাইব্রেরীর বইগুলো বরাদ্দ। কাজেই কি করা!! বিষন্ন মনোরথে...
কই যাই??
==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।
নতুন মন্তব্য করুন