গতবছর বেশ কয়েকটি খবর এসেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুদের নিয়ে। উইকিপিডিয়া এর সুত্র মোতাবেক গতবছর নভেম্বর পর্যন্ত তারা বারো মাসে ১৫০ মিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা পেয়েছে মুক্তিপণ বাবদ [১]। গতকাল CBC (Canadian Broadcasting Corporation) এর খবরে একটি ডকুমেন্ট্রি দেখাল। ভাবলাম সচলে সবার সাথে ভাগ করি।
সোমালিয়া দেশটির পশ্চিমে ইথোপিয়া, দক্ষিন-পশ্চিমে কেনিয়া, উত্তরে গাল্ফ অফ আডেন, পূর্বে ভারত মাহাসাগর [১]। ভৌগলিক অবস্থানটি এমন যে ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে জাহাজগুলো সুয়েজ খাল হয়ে সোমালিয়ার পাশ দিয়ে এশিয়ায় যেতে হয়। এখানেই জাহাজগুলোকে অপহরন করা হয় এবং মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া হয়।
CBC এর খবর এর প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল কিভাবে এর সুত্রপাত তা নিয়ে। এখনকার জলদস্যুদের মাঝে তিন প্রকার লোক আছে। (ক) স্থানীয় জেলে, যাদের অভিজ্ঞতাই প্রধান (খ) প্রাক্তন মিলিশিয়া, যাদের রয়েছে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা এবং (গ) প্রকৌশলি, যারা প্রধানত উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার দেখে থাকে [১]।
আজকের এই জলদস্যুতার শুরু ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে [১]। ভৌগলিক অবস্থানের কারনে সোমালিয়ার সাগর পাড়ের অনেকের জীবিকা ছিল মাছ ধরা। কিন্তু বিদেশি মাছ ধরার নৌকাগুলো সোমালিয়ার জলসীমানায় প্রবেশ করতো অনমুতি ব্যাতীত। তাহা ছাড়া পাশ্চাত্যের দেশগুলো তাদের বিষাক্ত বর্জ্যগুলো ত্যাগ করে থাকে সোমালিয়ার জলসীমানায়। যেখানে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর জলসিমানায় বর্জ্য ত্যাগ এর মুল্য টন প্রতি হাজার ডলার সেখানে এই দরিদ্র দেশগুলো তে মাত্র দশ ডলার এর কম। বিষাক্ত বর্জ্যের মাঝে ইউরেনিয়াম উল্লেখযোগ্য। এই বিষাক্ত বর্জ্যের কারনে সোমালিয়ার মৎস্যক্ষেত্র ধংস হয়ে যায়। এই জেলেরাই তখন সেইসব মাছ ধরার নৌকা এবং বিদেশি বর্জ্যযুক্ত জাহাজ গুলোকে ধাওয়া করতো এবং যাদের পেত তাদের আটক করতো এবং আটকের বিনিময়ে মুক্তিপণ পেতো। ব্যাপারটা যখন লাভজনক দেখলো, তখন তারা বড় বড় জাহাজ গুলোর দিকে নজর দেওয়া শুরু করলো।
সোমালিয়ার অভ্যন্তরীন অস্থিরতা এই জলদস্যুতা কে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে অবশ্যই সাহায্য করেছে। তাই আজ সব দেশ মিলেও এই জলদস্যুতা বন্ধ করতে পারছে না। আমার কাছে যেটা ভাল লেগেছে যে পাশ্চাত্যের একটি মিডিয়াতে তারা আজ স্বীকার করছে যে তারা মানুষগুলোর মুখের আহার কেড়ে নিয়েছে। এবং তারাই বাধ্য করেছে তাদের জলদস্যু বানাতে।
মন্তব্য
স্বাধীন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সোমালিয়ার জলদস্যুদের কথা পত্রিকায় পড়ে কেন তারা জলদস্যু হলো, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে না- প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছিলাম। কিন্তু তেমন জুৎসই উত্তর পাচ্ছিলাম না কোথাও। এসব ঘট্নায় আক্রান্ত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীরাই সবসময়ই সহানুভূতি পায়, কিন্তু ঘটনা কেন ঘটলো, সেটি তলিয়ে দেখার মানুষজন খুবই কম। ঘটনার ব্যাকগ্রাউন্ড না জেনে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ডের সমস্যার সমাধান না করে উপরে উপরে সমাধানের তৎপরতাই চোখে পড়ে বেশি। সোমালিয়ার ক্ষেত্রেও তাই হতে যাচ্ছিলো বোধহয়।
যা হোক, আপনার এই লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সচলে নিয়মিত লিখবেন আশা করি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
স্বীকারোক্তির ব্যাপারটা আমারও ভাল লাগল । তবে পুরো দুনিয়ার এত বড় ক্ষতি করে ফেলার পর স্বীকারোক্তি করা আর না করা সমান । চাইলেই তো আর এখন সেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ বর্জ্য ফেরত নিতে পারবে না ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এই ইতিহাস জানা ছিলনা, অনেক ধন্যবাদ মোস্তফা ভাই।আসলে অনেক অপরাধীর বেড়ে উঠার পেছনেই থাকে কিছু না কিছু ইতিহাস যার অধিকাংশর খবরই আমরা জানতে পারিনা।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
বহুদিন পরে একটা লেখা পড়ে আরাম পেলাম
০২
কোনো এক কালে বৃটেনের দুরবস্থার কালে স্যার ওয়াল্টার ড়্যালে (তিনি আবার কবিও) (ড় এর স্থলে র বসবে) জলদস্যুতা করে নাকি রাণীর অর্থভাণ্ডার পুরা করে দিয়েছিলেন এবং উপাধী পেয়েছিলেন স্যার....
এদের দস্যুতা অস্তিত্বের.... সেইসব স্যারদের সভ্যতার বিপক্ষে
ভাল বলেছেন লীলেন ভাই।
সোমালিয়ার ঘটনার শেষ নাই। এর আগের ঘটনা ছিল ইথিওপিয়াকে দিয়ে তারপর সরাসরি মার্কিন আক্রমণ। তাদের লক্ষ ছিল সেখানকার ইসলামিক কোর্ট। তারা একভাবে বিবদমান গোষ্ঠীগুলোকে এক করে একধরনের শান্তি আনে। কিছুটা তালেবানদের মতো। তাদের হাতে অর্থনীতিটাও থিতু হচ্ছিল। তারপর আক্রমণ তারপর এই জলদস্যুতা।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
গুড পোষ্ট
এই ব্যাপারটা একেবারেই অজানা ছিল। জেনে খারাপ লাগলো। সোমালিয়ার জলদস্যুদের আগের মতো ঘৃনা করবো না। ক্ষুধার কাছে অন্ন বাদে কোন আইন নেই।
সোমালিয়ার জনদস্যুদের ব্যাপারে খবরের কাগজে পড়েছিলাম। তবে এত কিছু জানা ছিল না।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ধ ন্যবাদ গৌতম, এনকিন্দু, জাহিদ, লীলেন ভাই, ফারুক ভাই, জেবতিক, নীড় সন্ধানী ও কীর্তিনাশা।
আম রা কি সব সময় সব কিছুর পেছনের ঘটনা কি জানি? তালেবান কেন সৃষ্টি হয় তার খোঁজ আমরা নেই না শুধু তাদের মারতে চাই। মাওবাদী কেন জন্ম নিল তার খোঁজ নেবার দরকার বোধ করিনা, তামিলরা বা ফিলিস্তিনিরা কেন যুদ্ধ করে, কোন পরিস্থিতিতে একজন মানুষ আত্মঘাতী হয় তার কারন বের করি না। আমরা কখনই সমস্যার মূলে আঘাত করি না। আজকের গণতন্ত্র সমস্যা/বিভেদ বাচিয়ে রাখে তাদের নিজেদের প্রয়োজনে।
সোমালিয়ার এই ব্যাপারগুলো পত্রিকায় কখনো বিস্তারিত পাইনি।
লেখাটা পড়ে অনেক কিছুই জানা গেল।
লেখককে ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন