পর পর দু'দুটো ঘটনা প্রমান করে যে দেশ আমাদের কোন দিকে চলছে। কার্টুনিস্ট আরিফের পুরোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে যশোরের বিচারক রায় দিয়েছেন তাঁকে আরো দু'মাসের জেলে যেতে হবে, যা নিয়ে আমাদের আরেক আরিফ জেবতিক ভাই লিখেছেন । আর সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি দুর্নীতি মামালায় সাজা প্রাপ্ত জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহাদাব আকবর এর সকল দন্ড ও অর্থ জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছেন। খবরটি পাবেন এখানে। কিন্তু রাষ্ট্রের পতি, আরিফের প্রতি এই উদারতা দেখাতে সাহস পান না। সত্যি কি বিচিত্র এই দেশ।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু তিনি নিজেও জবাবদিহিতার উর্ধ্বে নন। এই ক্ষেত্রে আমি একজন প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হিসেবে জানতে চাই ঠিক কোন কারণে তিনি এই সাজা মওকুফ করেছেন। এভাবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার অপব্যবহার বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রতি হস্তক্ষেপ বলেই মনে করি। তাতে দেশে দুর্নীতিকে আরো প্রশ্রয় দেওয়া হল। এতে এটি প্রমানিত হল যে আইন শুধু আমাদের মত সাধারণ জনগণের জন্য, ক্ষমতাধরদের জন্য নয়।
আমাদের দেশের অনেক সমস্য। দেশের অধিকাংশ মানুষ অর্ধ-শিক্ষিত। দেশের জনসংখ্যা অত্যাধিক, সম্পদ সে তুলনায় অপ্রতুল। কিন্তু সব চেয়ে বড় সমস্যা আমাদের এই দুর্নীতি। দুর্নীতি আমাদের আজ ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে। শুধু মাত্র যদি আমরা এই দুর্নীতিকে রোধ করতে পারি, প্রতিরোধ করতে পারি তবে আমরা আবার মাথা তুলে দাড়াতে পারবো। আজ পর্যন্ত আমরা একজন দুর্নীতিবাজকেও শাস্তি দিতে পারিনি। আদালত যে দু'একটিকে সাজা দেয় রাষ্ট্র তাকে ভিনদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে আর নয়তো এভাবে শাস্তি মওকুফ করে দেয়।
এই ক্ষেত্রে আরো একটি ব্যাপার চলে আসে। আমার মতে আমাদের রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়া উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী বা সংসদ আইন প্রণয়ন করুক, কিন্তু রাষ্ট্রের পিতা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হলে সংসদের জবাবদিহিতা নিশ্চিৎ করা যায়। গণতন্ত্র নিয়ে আমার আগের লেখায় আমি বলেছিলাম যে শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য ক্ষমতার ভারসাম্য অনস্বীকার্য। তাই সংসদ, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রপতি, দুর্নীতি দমন কমিশন এদের মঝে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে। একটি শক্তিশালী দুর্নীতি দমন ও স্বাধীন বিচার বিভাগ ছাড়া আমাদের শক্তিশালী গণতন্ত্র সম্ভব নয়।
বর্তমান গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বড় সমস্যা হল, জনগণের শুধু ভোটাধিকার আছে। শাসন ব্যবস্থা বা আইন প্রণয়নে সরাসরি অংশগ্রহনের কোন সুযোগ নেই। তাই যখন আইন প্রণয়নকারি নিজেই দুর্নীতি করেন তখন আমাদের হাত বাধা থাকে। বর্তমান পদ্ধতিতে যদিও আমরা ভিন্ন ভিন্ন লোককে ক্ষমতায় নিয়ে আসি, কিন্তু আড়ালে একটি শক্তিশালী গ্রুপ বিদ্যমান যারা মূলত নীতি নির্ধারণে ভুমিকা রাখে। দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিবিদ এরা সকলে মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। শুধু মাত্র তাঁদের অনাগ্রহের কারণেই তাঁরা বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেয় না। প্রতি পাঁচ বছর পর পর আমরা একবার খালেদা, একবার হাসিনা, এদেরকেই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ফিরে আনতে বাধ্য হই, আর দিন বদলের স্বপ্ন দেখি।
এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত। আমাদের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরো সোচ্চার হওয়া উচিত। এই দুর্নীতিবাজদের জনগণের সামনে তাঁদের রূপকে উম্মোচন করা উচিত, যেমনটি আমরা সোচ্চার যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে। আমরা অতীত পাপীদের যেমন বিচার করবো, এই নতুন পাপীদেরও তেমনি বিচার চাই। আমরা তরুন সমাজই পারি এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। আসুন আমরা শুরু করি এই আন্দোলন। আমরা একটি কাগুজে বাঘ দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিচার বিভাগ চাই না। সত্যিকার অর্থে একটি শক্তিশালী স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ এখন সময়ের দাবী। এই দাবীর প্রতি সকলে সোচ্চার হই, দুর্নীতিবাজদের প্রতিরোধ করি।
মন্তব্য
সরকারপত্নীর হাতেই যখন সব ক্ষ্যামতা তখন রাষ্ট্রপতির মাফ না করে উপায় আছে? কার্টুনিস্টের অপরাধের(!) সুযোগে অনেকে ধর্ম-ধোলাই করার সুযোগও পেয়েছে। পেটে অন্ন পড়লে চোখে কি আর কান্না আসে? আসেনা।
আরিফ যা করেছে সেটাতো কোনো অংশেই শাস্তিযোগ্য নয়। আর আমি যতদূর জানতাম, কোনো অপরাধের অভিযোগে একবার উচ্চ আদালতে বেকসুর খালাস পেলে সেই একই অপরাধের অভিযোগ দ্বিতীয়বার আর নিম্ন আদালতে করা যায় না। কেউ আমার জানায় ত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দেবেন।
দূর্ণীতি > দুর্নীতি
তুমি ধরিয়ে দেবার আগেই পরিবর্তন করেছি। পরিবর্তন করতে করতেই মন্তব্য এসে গেল :(।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
বর্তমান সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হলেও তাকে প্রধানমন্ত্রীর কথায় উঠাবসা করতে হবে। শাহাবুদ্ধিন আহমদ একবার বলেছিলেন জানাজা পড়া আর ফিতা কাটা ছাড়া এই রাষ্ট্রপতির আর কোন কাজ নেই। সুতরাং সমস্যা সিস্টেমের নয় সমস্যা মানুষের। তবে যেটি করা উচিৎ রাষ্ট্রপতি কোন কোন পরিস্থিতিতে ক্ষমা করতে পারেন তার নীতিগুলো ঠিক ঠাক করা যেতে পারে। বর্তমান নীতিটি দেখুনঃ
আমাদের সংবিধানই এই সুযোগ করে দিয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে আমরা সোচ্চার হবার পরও কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি? যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও আজ রাজনৈতিক গুটি স্বাধীন ভাই।
এই সরকার আসার পরই যখন হাসান মশহুদ চৌধুরীকে অপসারণ করল (আপাতদৃষ্টিতে পদত্যাগ হলেও এটা একধরনের অপসারণই) কোথায় ছিল আমাদের বুদ্ধিজীবি সমাজ ? কতটুকু প্রতিবাদ হয়েছে তখন ?
আসলে ভাবতে খারাপ লাগছে কিন্তু আমিও ধীরে ধীরে হতাশাবাদীদের একজন হয়ে যাচ্ছি।
----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সেটা আমি উল্লেখ করেছি, রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক ক্ষমতাবলেই করেছেন-তাঁকে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই প্রশ্ন ছিল, কোন যুক্তিতে তিনি ক্ষমা প্রদর্শন করেছেন। তাঁকে ক্ষমা প্রদর্শন করতে হলে কোন না কোন যুক্তি দিতে হবে। হয় মানবিক কারণে, বা তিনি আদলতে সুবিচার পাননি বা এরকম কিছু। সেটা কি সেটাই জানার ইচ্ছে। দেখি পত্রিকায় নিশ্চয়ই আসবে। আমি নিজেও হতাশাবাদী হয়ে যাচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা একজনের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়। আর বাঙ্গালী সব এক হবারও নয়। তিনজন একত্র হলে চারটি সংঘঠন করে। এদের কে উদ্ধার করবে?
আরিফের ঘটনা আর শাহাদাবের সাজা মওকুফ দুইটা ভিন্ন বিষয়। আরিফ কোন অপরাধই করে নাই, তার ক্ষেত্রে সাজা মওকুফের প্রশ্ন পর্যন্তই যাওয়া উচিত না। অন্যদিকে শাহাদাবের মতো অপরাধীর কোনো উদারতা প্রাপ্য নয়। তবে এই তুলনাটা আমাদের দুরাবস্থাকে তুলে ধরতে হয়তো সাহায্য করে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
তুলনাটি আমাদের দুরাবস্থাকে তুলে ধরতেই করেছি। আরিফের কার্টুনটিকে ব্যক্তিগত ভাবে কোনভাবেই অপরাধের তুল্য মনে করি না।
কী আর বলবো নতুন করে, বলুন? লেখায় উল্লেখকৃত দুইটি ঘটনাই ন্যাক্কারজনক।
"ছিহ!"-এর বেশি কিছুই বলার নেই।
ছিহ! বলা ছাড়া আরো কিছু করার আছে। আপাতত একটি লেখা দাও, নীচে ধ্রুবর মন্তব্যের জবাবে যে কথাগুলো বললাম সেগুলো নিয়ে চিন্তা করে একটি লেখা দাও। এই সব গুলো বিভাগকে স্বাধীন ভাবে কিভাবে সচল করা সম্ভব তার একটি বাস্তব রূপরেখা সম্পর্কে একটি ধারণা দিতে পারো। একেকটি বিভাগ আলাদা আলাদা করে ধরতে পারি। অথবা ভাগ করে নিতে পারি। এই বিভাগগুলোর স্বাধীনতার পথে অন্তরায় গুলো কি কি চিহ্নিত করতে পারলে তখন কিছু সমাধানের কথা চিন্তা করা যাবে।
প্রথমে অতিথি হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে, আর লিখতে হবে, পোস্ট বা মন্তব্য। লেখা প্রকাশ করতে চাইলে সদস্য নাম: guest_writer এবং পাসওয়ার্ড: guest ব্যবহার করে লগইন করুন। বাকীটা এই লেখায় জানতে পারবেন।
---
এমন একটা গুরুতর বিষয় নিয়ে মজা করার জন্য দু:খিত, কিন্তু এতটাই হতাশ যে আসলেই কিছু বলার পাচ্ছিনা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যোগ্যতা যখন বিপদের সময় দলকে জোড়াতালি দিয়ে ধরে রাখার কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন হয়, তখন আর কিই বা আশা করতে পারি?
আসলে আমাদের রাষ্ট্রপতিদের মেরুদন্ডে সবসময়ই একটু সমস্যা ছিল। এখন যদি আমাদের দূনীতির অন্য রাজপুএদের (তারেক সমগ্র) সাজাও ভবিষ্যতে মওকুফ হয় তাহলে ঘটনার একটা sequence থাকে।
আমাদের রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের কথা চিন্তা করলে বারবার আমার একটি শব্দই মনে আসে - "অসম্ভব"।
আমার ধারণা এর কারণ হলো আমরা কাঠামোটার কিছু মূল অনুমানকে যথাস্থানে রেখে বাকিটায় অদল-বদল করে একটি আকাঙ্ক্ষিত সমাধান পাবার চেষ্টা করছি। কিন্তু হয়তো, ঐ মূল অনুমানগুলো বহাল থাকলে "কাঙ্ক্ষিত" ব্যবস্থাটি পাওয়া সম্ভব নয়। যেমন, আমরা ধরে নিচ্ছি, রাষ্ট্রের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার বলে একটি সংস্থার থাকবে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। ওগুলো কেবল হবে তার কর্তৃত্বাধীন।
সাধারণতঃ এই মূল অনুমান ঠিক রেখে তারপর আমরা এগিয়ে থাকি, কিভাবে সে সরকারের প্রতিনিধি ঠিক হবে, কিভাবে তার সংস্থাগুলো বিন্যস্ত হবে, কর্তৃত্ব বন্টিত হবে।
আমাদের সভ্যতার একটি উপাদান হিসেবে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। কিন্তু এই ধারণাটা আদৌ কতটা আবশ্যক, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করার অভ্যাস নেই।
ধন্যবাদ লেখাটার জন্য। গুরুত্বপুর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের যৌক্তিক ধারণার ভিত্তিগুলো দৃঢ় করা দরকার।
--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন~
যে দেশে প্রধানত দুর্বৃত্তরাই রাজনীতি করে--সেদেশে এরকম হওয়া্ই কি স্বাভাবিক নয়?
এ কারণেই ক্ষমতার ভারসাম্য ও বন্টনের প্রয়োজন। শুধু সরকারের একার হাতে বা কোন নির্দিষ্ট বিভাগের হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতা থাকবে না এ রকম একটি মডেলের কিছুটা ধারণা দিয়েছিলাম আমার উল্লেখিত লেখায়।
নির্বাহী বিভাগ, আইন প্রণয়ন বিভাগ বা সংসদ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন এবং প্রচার মাধ্যম এই সবগুলোকে যদি স্বাধীনভাবে চলতে দেওয়া হয় তবে শক্তিশালী গণতন্ত্র পাওয়া সম্ভব। আমাদের দেশের কথা যদি চিন্তা করি, তবে প্রথম দু'টো বিভাগ একই ব্যক্তি বা গোষ্ঠির দ্বারা সরাসরি পরিচালিত, আর বাকি বিভাগ গুলোতেও সরকার হস্তক্ষেপ করে। এমতাবস্থায় গণতন্ত্রের সুফল কামনা করা অসম্ভব। আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ এই বিভাগ গুলোকে স্বাধীন ভাবে চলতে দেওয়ার জন্য ণীতি নির্ধারকদের বাধ্য করাতে। সেই উদ্দেশ্যে আমাদের কাজ করা উচিৎ।
ধন্যবাদ।
আমি আরো ভেতরের ধারণাটা নিয়ে আলোচনা করতে চাই। "নির্বাহী বিভাগ, আইন প্রণয়ন বিভাগ বা সংসদ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন এবং প্রচার মাধ্যম" এর অধিকাংশেরই প্রয়োজন পড়ে যখন আমরা ধরে নেই, রাষ্ট্র বলে একটা ধারণার আমাদের প্রয়োজন এবং সেটা একটা ব্যবস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
এখন সেই সিস্টেম কিভাবে ঠিকমতো ফাংশন করবে তার জন্যে নানা কমিশন, কর্তৃত্ব-বন্টনের নানা তত্ত্ব। কিন্তু মূল ধারণাটা কিন্তু বদলাচ্ছে না। আমরা মূলত আমাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ব্যবস্থা থাকবে মেনে নিচ্ছি। সেখানে স্বেচ্ছাচারিতা বা অনিয়মের লাগাম পড়ানোর জন্য ভিতরকার অংশগুলোর বিন্যাস চিন্তা করা করছি। তারপরেও ওই অংশগুলো কিন্তু সরকারেরই অংশ। অর্থাৎ মেনে নিচ্ছি, আমাদের দায়িত্ব কাউকে নিতে হবে।
অথচ, রাষ্ট্রের ধারণাটা বা সমার্থকভাবে সরকারের ধারণাটার বিকল্প কিন্তু আমরা চিন্তা করছি না। রাষ্ট্র ধারণাটা বা সরকার ধারণাটার প্রয়োজন নিয়ে দার্শনিক আলোচনা দরকার। এই ব্যবস্থাগুলো আমাদের কিভাবে সেবা করছে সেটার সম্পূর্ণ বোঝাপড়া প্রয়োজন। এবং আরো প্রয়োজন এই সেবাগুলো পাওয়ার জন্য এই ব্যবস্থাগুলো আবশ্যক অর্থাৎ এই ব্যবস্থাটিই একমাত্র উত্তর কিনা চিন্তা করা।
এই সেবাগুলো যদি সরকারের অস্তিত্ব না থাকলেও ফলপ্রসূভাবে পাওয়া সম্ভব হয়, তাহলে সরকারব্যবস্থা একটি দুর্বল সমাধান। আমার সন্দেহ, এটা সত্য। একটা আঁচ এভাবে পাই যে, সরকার সেবা দিতে গিয়ে অবধারিতভাবে মানুষকে অনেকভাবে নিয়ন্ত্রণও করে। তার সাথে রয়েছে উপজাত হিসেবে এর ব্যবস্থাগত জটিলতা ও প্রায় অমোচনীয় ত্রুটি। এর সবই কিন্তু পোহাতে হচ্ছে কেবল আমরা তার থেকে সেবা আশা করছি দেখে। আমরা সেবা চাই, কিন্তু বাদ বাকি জটিলতা, নিয়ন্ত্রণ, এগুলো কিন্তু চাই না। আমাদের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে যে ব্যবস্থা এত অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতার জন্ম দেয়, তাকে আমার দুর্বল এবং সব-অপটিমাল সমাধান বলে সন্দেহ হয়।
আরো সন্দেহ হয় একারণে যে, দেখবেন এ ধরনের সব ব্যবস্থাতেই "রাষ্ট্রদ্রোহিতা" বলে একটি মারাত্মক অস্ত্র মজুদ থাকে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য। "রাষ্ট্রদ্রোহিতা" অর্থটা কি?
যেকোনো ব্যবস্থা যা নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য এ ধরণের অস্ত্র মজুদ রাখে, তার প্রতি আমার রয়েছে চরম সন্দেহ।
রাষ্ট্র ছাড়াও হয়তো সভ্যতা সম্ভব। আরো কার্যকরী সভ্যতা। কিন্তু সে বিকল্প চেষ্টার সহজ উপায় নেই। কারণ রাষ্ট্র এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়াশীল।
--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন
আরো ভেতরের ধারণাটি নিয়ে আলোচনা করতে আমিও আগ্রহী। তবে সেটা মনে হয় এই ব্লগের স্বল্প পরিষরে হবে না। তোমার কথাগুলো আকর্ষনীয়। এই মন্তব্যে তোমার পুরো বক্তব্য আসেনি বলে আমার মনে হচ্ছে। আমার মতে তুমি একটি আলাদা পোষ্ট দাও, তোমার চিন্তাগুলো নিয়ে। সেখানে সবাই সেটি নিয়ে যার যার মন্তব্য দিতে পারবো। রাষ্ট্রের বিকল্প কি হতে পারে, বা রাষ্ট্র ছাড়া সভ্যতা কিভাবে সম্ভব, এর রূপ কি, এগুলো ব্যাখ্যা করে একটি লেখা দিতে পারো। হাতে সময় নিয়েই লেখ, তাড়াহুড়া নেই।
আপাতত আমার নিজের কথা যদি বলি, মানুষের নিজের জন্যই নিয়মের বা নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। পরিপূর্ণ ব্যক্তিস্বাধীনতা সমাজের দূর্বল শ্রেনীর জন্য ক্ষতিকর এবং তা নৈরাজ্যবাদের জন্ম দেয়। তবে নিয়ম যেহেতু আমার নিজের প্রয়োজনে, তাই নিয়ম কোন শ্বাশত কিছু নয়, চিরস্থায়ী কোন বন্দোবস্ত নয়, তা সর্বদা পরিবর্তনশীল। মানুষ নিজের প্রয়োজনে নিয়ম বানায়, আবার সময়ের প্রয়োজনে নিয়ম পরিবর্তন করে। এখন রাষ্ট্র ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু নিয়ম এক হতে পারে বা একদিন শুধু একটি রাষ্ট্র ও একটি সংবিধান হতে পারে, কিন্তু সভ্যতার জন্য আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রন প্রয়োজন বলে মনে করি। তোমার লেখায় উক্ত বিষয়গুলো আলোকপাত করো।
ধন্যবাদ।
অপরিপূর্ণ ধারণা নিয়ে যদি পোস্ট দেয়া যায়, আমি সুদূর ভবিষ্যতে এ বিষয়ে একটি পোস্ট দিব। সমাধান আমার হাতে নেই, কিছু ছায়া আছে। তাই আপাতত সমস্যাগুলোই তুলে ধরব, যাতে প্রথমে সবাই অন্তত একমত হতে পারে যে এ সমস্যাগুলো আমরা চাই না।
আপনার সাথে আশা করি ওখানে বিস্তর আলোচনা হবে।
--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন~
সচলের ব্যানারে এই বিষয়টা আসতে পারে কি?
ন্যায়বিচারের দাড়িপাল্লার (!) একদিকে শাহাদাব আকবর, আরেকদিকে কার্টুনিস্ট আরিফকে চড়িয়ে কোনদিকে বেশি ওজন হয় সেটা দেখানো যেতে পারে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ব্যানার হলে প্রতিবাদটি আরো জোড়ালো হয়। খুব ভাল প্রস্তাব। কেউ কি আছেন?
ধিক্কার জানানো ছাড়া কী আর করা যায়, কিন্তু তাতে করে এদের কিছু হবে সে আশাও করতে পারি না।
আমারতো মনে হয় মোহাম্মদ বিড়াল টা লিখেছেন এইটা মেইন কারন না আসলে মাওলানাদের নিয়ে একেঁছেন এইটাই হয়ত আসল কারন। মাঝে মাঝে মনে হয় "মোহাম্মদ বিড়াল" না হয়ে অন্য কোন নাম লিখলেও তখনও বেচারাকে জেলেই বা অন্য কোথাও মাইর খেতে হইত। কোন কারণ না পেলেও কারণ বানানো হইত। তারপর বলত ইসলাম নিয়ে কার্টুন আকাঁবার করার জন্য আল্লাহ শাস্তি দিয়েছেন।
মোল্লাদের ধর্মানুভূতির রাডারে নতুন কিছু ধরা না পড়া পর্যন্ত আরিফ ক্যাচাল চলবে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রায় দু'বছর আগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রসঙ্গে লিখেছিলাম। আজকের খবরটা (খুনিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা) পড়ে পুরোনো লেখাটা মনে পড়ে গেলো। আমাদের মনে হয় আশ্চর্য হওয়ার বোধটুকুও হারিয়ে গিয়েছে, তাই কোন কিছুতেই আর অবাক হই না, সাঈদের কান্ডতেও না, পরিমলের কান্ডতেও না, ছয়টি মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেললেও না, রাষ্ট্রপতি একজন খুনিকে মাফ করে দিলেও না।
নতুন মন্তব্য করুন