(ডিসক্লেইমারঃ প্রবলভাবে জেনারেলাইজ করা পোস্ট! মুড়ি-মুড়কি-চিনি-সয়াবিন তেল-ছোলা সবই একদর। বেশি দামী জিনিসের প্রবেশ নিষেধ!)
জাতি হিসেবে আমরা খুব বীর এবং সেজন্য আমরা ব্যাপকভাবে গর্বিত। সেটা জাতিগতভাবে যেমন প্রযোজ্য, তেমনি ব্যক্তিগতক্ষেত্রেও খুব মানানসই! "নিজ"-এর সাথে সম্পর্কিত যেকোন বিষয়েই আমরা খুব বেশি "সুবেদী"। জাতিগতভাবে আত্মসমালোচনা করা অবশ্য আমাদের বাঙালি সমাজে "কবীরা গুণাহ"- একটু সতর্ক না থাকলেই দেশদ্রোহী-স্বজাতিদ্রোহী-প্রবাসী-বিদেশের দালাল সমার্থক হয়ে পড়ে। আর তাছাড়া, জন্মের পর থেকেই আমাদের সেই জাতিগত বীরত্ব শিক্ষা দেয়া হয়, সাথে আত্মম্ভরীতার পাঠও শুরু হয়...আমরা সবাই একটা ধারণা, একটা জপমন্ত্র, একটা বিশ্বাস নিয়ে বেড়ে উঠিঃ "আপ্নে/আপ্নেরা আমাত্তে বেশি বুজেন?!"
প্রতিদিন টিভি খুললেই হাজারো বিশেষজ্ঞ-হাজারো শিল্পী-হাজারো ভি,আই,পি-দের দেখা মেলে...যারা গলার রগ ছিঁড়ে (কখনওবা হাসিমুখে অথবা নিজ নিজ বাদ্যযন্ত্র সহযোগে) বিভিন্ন বিষয়ে বাণী দেন, আমাদের জ্ঞান দান করেন, শিল্প নিয়ে "আলু"-"চনা" করেন! এই দেশ স্বর্ণপ্রসবিনীঃ দেশের ১৪ কোটি মানুষের মধ্যে খুব সম্ভব সাড়ে ১৪ কোটি রাজনীতিবিদ, ১৪ কোটি ক্রিকেটার, ১৩ কোটি ডাক্তার, ১২ কোটি গানের শিল্পী, ১১ কোটি কবি, ১০ কোটি সুপার মডেল, ৯ কোটি অর্থনীতিবিদ, ৮ কোটি অভিনেতা, ৭ কোটি ভি,আই,পি, ৬ কোটি ফটোগ্রাফার, আর ৫ কোটি সর্ব-বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন! হিসাবে না মিললে যোগ করে দেখেন! আমি প্রতিদিন টিভি দেখি আর গর্বিত হই, মনে মনে ব্যাপক উচ্ছ্বাস হয়...সারা দুনিয়া খুঁজে এত রাজনীতিবিদ-বিশেষজ্ঞ-ফটোগ্রাফার-কবি-শিল্পী-অর্থনীতিবিদ-অভিনেতা-ভি,আই,পি-মডেল-ক্রিকেটার-ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-বিজ্ঞ লোক পাওয়া যাবে না!
মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা অবশ্য আমার গর্বের পাল-টা একটু "ফুটা" করে দিয়ে যায়, নিজের গর্বিত অবস্থান থেকে টলিয়ে দেয়! (অবশ্য দুই-তিন দিন পরেই আবার সেই অবস্থানে আরো শক্তভাবে ফেরত যাই..)! এবারের ঘটনাটাও তাই...টেনশন নিচ্ছিনা, কারণ আমি বীরের জাতির অংশ। দুই-তিনদিন পরে ভুলে যাওয়ার স্বভাবটা আমাদের জাতিগত বীরত্বের অনুপম নিদর্শন...তাই নিজেকে বাঙালি-বাংলাদেশি হিসেবে আবার গর্বিত ভাববো...
যে ঘটনাটা আমার নিজের দেশপ্রেমে একটু সমস্যা তৈরি করেছে সেটা ক্লোজ-আপ ওয়ানের শিল্পী আবিদের বন্ধুসহ কক্সবাজারে মৃত্যু! তারপর গতকাল প্রকাশিত এই খবরটা আমার মাথাটা একটু "আউলাইয়া" দিয়েছে! অনেক "এন্টিদেশমার্কা" চিন্তাভাবনা মাথায় ভিড় করছে...
বাংলাদেশ নাকি একটা নদীমাতৃক দেশ? নদী-পুকুর-বিল-জলাশয়ের নাকি অভাব নাই? নগরায়নের প্রভাবে আমরা অবশ্য বেড়ে উঠছি শহরে...অত নদনদীর গল্প বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়! সেই নদীমাতৃক দেশে মানুষের বেড়াতে (বা কোন কাজে) যাওয়ার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গাগুলো কোন না কোন ভাবে পানির সাথে সম্পর্কিত...কিন্তু শহরে থেকে ওইসব প্রোপাগান্ডায় আমরা বিশ্বাস করিনা। অবশ্য আমরা জানি আমাদের তিন/চারটা নদী আছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-আরেকটা জানি কী নাম! আর জানি আমাদের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর আছে...চট্টগ্রাম-কুয়াকাটা-কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন আছে! আমরা শহরের লোকজন খুব প্রকৃতিপ্রেমী-ভ্রমণপিয়াসী তাই সাঁতার না শিখেও আমরা এইসব নদী-সমুদ্রে বেড়াতে যাই। শহরে থাকার কারণে সাঁতার শেখার দরকার পড়ে না- এইসব ফালতু জিনিস গ্রামের লোকের জন্য! সাগর-নদী আমাদের পেয়ারের জিনিস, সম্পর্কে আমাদের "সম্বন্ধির" মতন - তারা আমাদের কিছু করবে না। আর তাছাড়া গ্রামে বেড়ে না উঠলেও নাঙ্গা হয়ে একযোগে অনেকগুলো ছেলেমেয়ের সাঁতার শেখার অশ্লীল ব্যাপারটা অবশ্য আমরা ফটোগ্রাফি কম্পিটিশনের কারণে দেখে থাকি...বুঝতে পারি, "এতগুলান ছুড ছুড নেংটা পুলাপাইনের বেলাজ কর্মকান্ড সেই ফটুকের প্রাইজ এনে দেবে"।
কিন্তু আবিদের মৃত্যু আমায় বলে দেশের ১৪ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ কোটি মানুষের সাঁতার বিশেষজ্ঞ হওয়াটা খুব বেশি দরকার! কেউ কেউ বলেন, "চোরাবালি-গুপ্ত খালে বা সমুদ্রে সাঁতার জানলে লাভ নাই!" আমি মূর্খ- এইসব কথা মানতে পারিনা। তাহলে দুনিয়ার কোন মানুষই সাঁতার কেটে সাগর পাড়ি দিত না...চোরাবালি থেকেও মানুষ বেঁচে ফিরতো না! আমার মনে হয়, সুইমিংপুল বা পুকুরে যেভাবে সাঁতার কাটেন তার চেয়ে সাগরে সাঁতারের টেকনিকটা সামান্য একটু ভিন্ন! আর চোরাবালি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় (যতদূর জানি, নিজে কখনও এই অবস্থায় পড়িনি!) ভয় না পাওয়া। এই তিনটা লিংক (এক, দুই, তিন) বলছে, ভয় না পেয়ে শুধুমাত্র শান্ত থেকে হাত-পা না নাড়ালেই আপনি ভেসে থাকতে পারবেন (শুধু ভেসে থাকলেই হবে, সাঁতারের প্রথম স্টেপ!) এবং বেঁচে যাবেন!
আমার স্বজাতিবিরোধী চেতনা আমায় বলে, সবাই যদি সাঁতার জানে তাহলে প্রতি বছর লঞ্চডুবিতে বা কক্সবাজার-সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমানো যাবে। আমরা বুয়েটের ছাত্ররা প্রায় প্রতিবছরই সমুদ্রে গিয়ে কিছু প্রাণ কোরবানি দিয়ে আসি...নিজে ছাত্র থাকাকালীনও অনেক পরিচিত মুখের বিসর্জন দেখেছি...চাই না প্রতিবছর এমন হোক। তাই "শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সম্ভব হলে গ্রাজুয়েশনের অন্যতম শর্ত হিসেবে সাঁতার জানা বাধ্যতামূলক করা হোক" এমন অবাস্তব চিন্তা মাথায় এসে ভিড় করে।
থাক, এসব "আউলা" চিন্তাভাবনা বাদ দিই। আবার আমার গর্বের কথায় ফিরে আসি। কোন জাতি কতটা বীরত্বপূর্ণ চিন্তাচেতনা করে বা কোন জাতি কাজে-কর্মে-মানসিকতায় কতটা বীর সেটার কোন অলিম্পিক/প্রতিযোগিতা থাকলে সারা ইউনিভার্সে আমরা সব বিভাগে গোল্ড-সিল্ভার-ব্রোঞ্জ নিয়ে আসবো- এব্যাপারে আমি নিশ্চিত (এবং গর্বিত)! আর কোন জাতি একটা পদকও পাবে না! বিশ্বাস হচ্ছে না? খবরে প্রকাশ
"তবে লাইফ গার্ড কর্মীরা বলছেন, পর্যটকরা তাঁদের সতর্কবার্তায় কান দেন না। ইয়াছির লাইফ গার্ডের মোস্তফা কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিপজ্জনক সময়ে সাগরে নামতে নিষেধ করলে উল্টো অনেকেই আমাদের ওপর খেপে যান। অনেক সময় পর্যটকরা বলেন, নিজের টাকা খরচ করে বেড়াতে এসেছি সাগরে গোসল করব বলে। বাধা দেওয়ার তোমরা কে?'"
এটাই আমাদের মহান জাতির বৈশিষ্ট্য! "আপ্নে আমাত্তে বেশি বুজেন?" আমরা স্বাধীনচেতা-মুক্তমনা! আমরা কারো আধিপত্য মানিনা। আমাদের কেউ যদি বলে, "ওরে এইখানে মুতিস না", সেইখানে আমরা সবাই জামাত বানিয়ে মূত্রত্যাগে গর্ব অনুভব করি! আমাদের জাতীয় কবি বিদ্রোহী ছিলেন...তাই নামে "ভেতো বাঙালি" হলেও আমরা জাতিগতভাবে খুবই বিদ্রোহী - কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করিনা- ওইসব আমাদের জন্য না- আমরা আলাদা- আমরা শ্রেষ্ঠ- আমরা মহান। ভিনদেশে এসেও অনেককে দেখি কোন নিয়ম মানতে চান না- এক নাম্বারি রাস্তা আমাদের জন্য না, তা আম-আদমিদের জন্য...আমরা মহোত্তম বীরের জাতি।
সেজন্যেই আমরা সবসময় বীরত্ব দেখতে এবং দেখাতে চাই; সমস্যা হল, কোনটা যে সত্যিকারের "বীরত্বপূর্ণ কর্ম" এইটা আবার আমাদের কাছে খুব পরিষ্কার না! তাই সহজভাবে চিন্তা করে আমরা দেখলাম, নিষেধাজ্ঞা না মানাটাই আসল বীরত্ব! দেশে ১৪ কোটি বীরপুরুষ ও বীরনারী বসবাস করে...প্রতিনিয়ত তারা তাদের বীরত্বের প্রমাণ দেন। আমাদের সমাজ বীরপূজারী সমাজ। যে যত বীর তার তত সুনাম!
গতকালই একটা ছেলে তার মেয়েবন্ধুর সাথে ঝগড়া করে বীরত্ব দেখানোর জন্য পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে। আমাদের "পুলাপাইন" প্রেম করে "ছ্যাঁকা" খেয়ে "দেবদাস" হয়ে আত্মাহুতিকে বীরত্ব মনে করে (পুলাপাইনের কী দোষ? অনাদিকাল থেকে আমাদের প্রেমের আইডল দেবদাসের মত একটা "লুজার"! আমাদের সামনে আর কোন আইডল নাই )! হার্টের সিরিয়াস পেশেন্টের বীরত্ব দেখা যায় "ধুমায়া" চর্বিযুক্ত খাসি-গরুর মাংস ভক্ষণের সময়! গ্যাস্ট্রিক-আলসারের রুগী ইচ্ছামত তেল-মশলা খেয়ে বীরত্ব দেখান! লাংসের রুগীর বীরত্ব দেখবেন চেইন স্মোকিংয়ের সময় (ঢাকার বাতাসে সীসা খায়া হজম করি আর সিগারেটের ধূঁয়া ত পানিভাত)। আমরা জাতিগতভাবে লোহা তো লোহা, টাইটেনিয়াম খেয়েও হজম করতে পারি; তাই ওয়াসার সাপ্লাইকৃত ড্রেনের পানি খাই, ফল-মূল-মাছ-মিষ্টিতে অনেক বেশি করে ফরমালিন খাই। আর, ঢাকা শহরে যেটাই খাই সেটাতেই বিষ, তাই অত ভেবে লাভ আছে?
আর অন্যদিকে বিক্রেতারা (লগে গরমেন্টও) আমরা সব খেয়ে হজম করতে পারি দেখে ইচ্ছামত বিষের পরিমাণ বাড়িয়ে বীরত্ব দেখান আর আমরা সব বিষাক্ত জিনিস খেয়েও টিকে থেকে বীরত্ব দেখাই! বিবেক-মনুষ্যত্ব থাকলে কী আর বীর হওয়া যায়? ওইসব ভুলে যান...আমার বিষাক্ত জিনিস খেয়ে বা আমার কারণে কেউ মরলে সেইটা তার দোষ, আমার না- "ব্যাটা আনফিট"! (ডারউইন কী বলেছেন?) তাই ছিনতাইকারী ছিনতাইয়ের সময় টাকা না থাকলে দুটা ক্ষুরের পোঁচ দিয়ে আক্রান্তকে মেরে বীরত্ব দেখান, অজ্ঞান পার্টির লোকজন বিষ খাইয়ে মানুষ মেরে বীরত্ব প্রকাশে দ্বিধাবোধ করেন না! একটা গ্রামের লোকজন তাই কয়েকটা ছেলেকে ইচ্ছামত পিটিয়ে মেরে বীরত্ব দেখাচ্ছেন!
কোন যানবাহনে চলবেন? বাংলাদেশে সব যানবাহনই আল্লাহর নামে চলতে বীরত্ব বোধ করে। বাসের ব্রেক থাকেনা, ইঞ্জিন থাকে ৩০-৪০ বছরের পুরাতন; অপেক্ষা করেন, কিছুদিন পর দেশে ইঞ্জিন ছাড়াই বাস চলতে দেখবেন। অন্যদিকে বাস-ট্রাকের মালিক এক ড্রাইভার দিয়ে দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম পারলে ৪ ট্রিপ দেয়াতে বীরত্ব খুঁজে পান; ড্রাইভাররাও তাই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বাস চালিয়ে, অন্ধের মত হাইস্পিডে চালিয়ে বা চালানোর সময় দুইহাতে দুই মোবাইলে কথা বলতে বলতে নিজের বীরত্বের প্রকাশ ঘটায়! যাত্রীরা রিক্সা বা অন্য কোন যানবাহনে চড়ার সময় ট্রাফিক সিগন্যাল ভঙ্গ করে আর রেলগেটের গেট পড়ে যাওয়ার পরও চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে আধা-সেকেন্ডের জন্য বেঁচে পার হওয়াতে দিগ্বিজয়ের গর্ব অনুভব করেন!
সাঁতার না জেনে সাগরে নামা তরুণ সমাজে অনেক বড় বীরত্বের লক্ষণ (আমিও দেখিয়েছি যৌবনে); বিমান ঠিকমত পরীক্ষা না করে বা নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বিমান চালানো বীরত্ব; বিমান টেক-অফ আর ল্যান্ডের সময় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলা বীরত্বের লক্ষণ; বিমানের রানওয়েতে গিয়ে খেলাধূলা করা বীরের কাজ; আমরা দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি ওষুধখোর-সবচেয়ে বেশি এন্টিবায়োটিক খেয়ে খেয়ে এন্টিবায়োটিক প্রুফ হয়ে গেছি-সেটা কত বড় বীরত্বের ব্যাপার!
এদেশে ১০০ বছরের কথা বলে ৫ বছর টেকসই সেতু বানানো বীরত্ব, ঢাকা শহরকে খাল-বিল-জলাশয়-গাছপালা বিহীন করে সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া নিশ্চিত করা ও নড়বড়ে-ভঙ্গুর উঁচু অট্টালিকা বানানো বীরত্বের অন্যতম লক্ষণ। আর কিছুদিন পর আমরা বীরত্ব দেখানোর জন্য জনপদে একটা নিরাপত্তাহীন নড়বড়ে পারমাণবিক কেন্দ্র তৈরি করে একটা বড়সড় ঝামেলা করে বীরত্ব দেখাব!
এদেশে সন্ত্রাসী বীরত্ব দেখায় ইচ্ছামত গুলি করে, মানুষ মেরে, ফ্রি খেয়ে, বিপক্ষকে পিটিয়ে; রাষ্ট্র বীরত্ব দেখায় পুলিশ-র্যাব দিয়ে বিরোধীদল পিটিয়ে, নিরাপরাধ হত্যা করে অথবা পঙ্গু করে, ধর্ষককে সুনিবিড় ছায়া দিয়ে, অথবা ভয়ংকর খুনীকে-ফাঁসির আসামীকে মুক্ত করে দিয়ে! রাজনীতিবিদরা বীরত্ব প্রদর্শন করেন দুর্নীতির মাধ্যমেঃ তারা জানেন, "যে যত বড় দুর্নীতিবাজ সে তত বড় বীর"। দেশের সম্পদ যখন বাইরে চলে যায়- আমাদের ভবিষ্যত যখন আরো অন্ধকারাচ্ছন্ন হতে থাকে, আমরা জনগণ চরমতম বীরত্ব দেখাই একদম চুপ থেকে; দলীয় আনুগত্য আর দুর্নীতিবাজদের সমর্থন দিয়ে বীরের মত আচরণ দেখাই! সংখ্যায় আর ক্ষমতায় বলীয়ান হয়ে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারে বীরত্বের গর্ব অনুভব করি।
আমি নিজে প্রায়ই ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয়ে পড়ে যাই, কিন্তু যখন বাংলাদেশের দিকে তাকাই তখন আমার বিশ্বাস ফিরে আসে! ঈশ্বরের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এমন একটা দেশ চলা- এমন একটা জাতি বেঁচে থাকা অসম্ভব...আমরা "অলৌকিক" ঘটনার সংজ্ঞাসহ উদাহরণ! জাতিগত বীরত্বের চূড়ান্ত নিদর্শণ!
মন্তব্য
চরম
চমৎকার।
সহমত
শেষ প্যারার সাথে চরমভাবে সহমত। কারও ঈশ্বরে অবিশ্বাস থাকলে বাংলাদেশে থাকা উচিত কিছুদিন, তাহলেই ঈশ্বরে বিশ্বাস চলে আসবে।![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
"যখন বাংলাদেশের দিকে তাকাই তখন আমার বিশ্বাস ফিরে আসে! ঈশ্বরের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এমন একটা দেশ চলা- এমন একটা জাতি বেঁচে থাকা অসম্ভব...আমরা "অলৌকিক" ঘটনার সংজ্ঞাসহ উদাহরণ!"
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
মনের কথা!
--স্বপ্নাদিষ্ট
=============================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।
ভয়ঙ্কর সব সত্য কথাগুলো খুব সুন্দর করে লিখেছেন ভাইয়া।![হাততালি হাততালি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/41.gif)
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
আবিদের মৃত্যুটায় বেশ কষ্ট পেয়েছি। ছেলেটির ভালো গানের গলা ছিল। আমাদের দেশে অপমৃত্যুটাই এখন এতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে কোন দিন কোন অপমৃত্যুর খবর না হওয়াটাই একটা খবর হবে![মন খারাপ মন খারাপ](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/2.gif)
আসলেই...টিভিতে খবর দেখতে বসলে বা পেপার পড়লে শুধুই দুঃসংবাদ...অপমৃত্যু! প্রতিদিন!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
পড়তে পড়তে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলাম বারে বারে পরে মনে পড়লো এও এক বীরত্ব দুই সেকেন্ডেই ভুলে যাওয়ার বীরত্ব যেখান জাতীয় ভাবে দুই চারদিনে সব ভুলে যাই আমরা।
দেশে ফিরে আসার কথা ভাবছি। আর এই সময় আপনি এইডা কি পোস্ট দিলেন?
আমি এই সব কিচ্চু বিশ্বাস করতাম চাই না। আমি বীরের মত দেশের ছেলে দেশে ফিরা আইতাম চাই!![গুল্লি গুল্লি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/guli.gif)
অবশ্যই!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
চরম সত্যগুলো উঠে এসেছে আপনার লেখায়।"ঈশ্বরের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এমন একটা দেশ চলা- এমন একটা জাতি বেঁচে থাকা অসম্ভব..."![হো হো হো হো হো হো](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/21.gif)
নো টক...... নো টক ......আই অ্যাম নট রেডি........টু কমেন্ট অন দিজ .......আনপ্লেজ্যান্ট থিংস!
ইউ নো, আই নো...নো টক...নো ক্ল্যাপ!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আমরা এত বড় বীর যে জেনেশুনেও ভাটার সময় জীবনের ঝুকি নিয়ে সমুদ্রে নামতে ভয় পাই না , বন্ধুদের সাবধান করতে গেলে উলটো রসিকতার স্বীকার হতে হয় , আমরাই মোবাইলে কথা বলতে বলতে দৌড়ায় রাস্তা পার হই ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করি না আবার কেউ গাড়ি চাপা পরলে বীরত্ব প্রদর্শন করে শহরের সব গাড়ি বাস ভাঙ্গা শুরু করে দেই।
যদি সঠিক পরিসংখ্যান বের করতে পারি আমি নিশ্চিত কক্সবাজার সৈকতে মৃত্যু সঙ্খ্যা বেশির ভাগ সৈকতকেই ছাড়িয়ে যাবে , এরপরও আমাদের বীরত্ব দেখানো কমবে না ।
আমার মতে এখন যে অবস্থা , মানুষের জীবনকে যদি আমরা মূল্যবান কিছু মনে করি তাহলে ,কক্সবাজার সৈকতে গোসল করাই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিৎ ।
আসলে প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমরা অপ্রয়োজনীয় বীরত্ব আর সাহস দেখাই...![মন খারাপ মন খারাপ](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/2.gif)
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আমরা বীর! আমরা মুক্তি সংগ্রাম করেছি ! থুক্কু আমাদের বাপ চাচারা করেছে .. এই বীরত্ব দিয়া আমরা এখন দেশ চালাই , চাকরি পাই , রাজনীতি করি , এমন দেশ আর আছে ? আমাদের আর কোনো চিন্তা নাই সুধু আমরা বীর এইটা মনে রাখতে হবে আর নিজের সার্থ হাসিলের জন্য বীরত্ব জাহির করতে হবে দুর্বলের উপর
কোন মন্তব্য করতে ইচ্ছে করছেনা। লিখতে থাকুন ভাইয়া!
দুর্দান্ত একটা লেখা হয়েছে !!!
![হাততালি হাততালি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/41.gif)
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
জট্টিল লিখছেন![চলুক চলুক](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/yes.gif)
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
এতগুলা সত্য কথা একেবারে অনেকদিন পরে শুনলাম। বীরের মত লেখা![খাইছে খাইছে](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/10.gif)
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
“বীরত্ব না দেখায়া শুধু একটু এসব জরুরী বিষয়গুলারে গুরুত্ব দিয়া দেখলেই....আপাততঃ এলাহী ভরসা !
আমরা সবাই![বাঘের বাচ্চা বাঘের বাচ্চা](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/bagherbaccha.gif)
নতুন মন্তব্য করুন