‘He was mistakenly born in Bangladesh’—Otto Pfister
আজকের দিনে হাজারো ক্রিকেটারদের ভিড়ে মনে পড়ে গেল, বাংলাদেশের ফুটবলের স্বর্ণযুগের অসাধারণ ফুটবলার মুন্নার কথা। যারা তার খেলা দেখেনি বোঝা সম্ভব না তিনি কী অসাধারণ একজন ফুটবলার ছিলেন!!
নব্বইয়ের প্রথম দিকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার- একবার সেই আমলে অকল্পনীয় বিশ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ফুটবলার বেছে নিতে বললে মুন্না প্রথম তিনেই থাকবে। কিন্তু সর্বকালের সেরা ডিফেন্ডার হিসাবে তার ধারে-কাছে যাওয়ার সাধ্য কারও নেই। সেই সময়ে ঢাকা বা কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা তার খেলা দেখতেই মাঠে যেত... কলকাতার মাঠেও অসম্ভব জনপ্রিয়-নির্ভরতার প্রতীক ছিলেন তিনি বেশ কিছুদিন। এখনকার বাংলাদেশের ফুটবলের মৃতপ্রায় অবস্থায় তার জনপ্রিয়তার কথা কল্পনাও করা সম্ভব না...
একটা লম্বা-হালকা-পাতলা গড়নের একটা মানুষ, যেকোন দলের ডিফেন্সে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার প্স্তম্ভ। ক্যারিয়ারের এক্কেবারে শেষের দিকে ছাড়া, তাকে বিট দিয়ে কেউ বল নিয়ে যাবে এমনটা দেখতে পাওয়া দুর্লভতম দৃশ্যের একটা ছিল। ফুটবল খেলাটা খেলতেন আবেগ দিয়ে আর ক্ষুরধার মস্তিষ্ক দিয়ে। হার না মেনে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার যে অদম্য ইচ্ছা তার ছিলো তা অকল্পনীয়! প্রায়ই ওভারল্যাপ করে উইং দিয়ে নাহলে সেন্টার দিয়ে উঠে যেতেন...ফ্রি কিক বা পেনাল্টিতে কিংবা হেড দিয়ে গোলও করতেন। নিজে খেলতেন, পুরো দলকে খেলাতেন... ডিফেন্সে খেললেও অমানুষিক দৃঢ়তায় আর পরিশ্রমে সারা মাঠ জুড়ে তার বিচরণ ছিল। প্রায়ই দেখা যেত মিডফিল্ডেও জেনারেলের মত শাসন করছেন... অন্যদিকে টিমমেট হিসাবে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়-আবেগী।
নব্বইয়ের শুরুতে আবাহনী-মোহামেডানের যে মহাকাব্যসম দ্বৈরথ তার অনন্য আকর্ষণীয় উপাদান ছিলেন এই মোনেম মুন্না। মোহামেডান বা অন্য যেকোন দলকে তার জন্য আলাদা চিন্তা করতে হতো- কীভাবে তাকে ফাঁকি দিয়ে গোল করা যায়।
সেই অসাধারণ ফুটবলার, অনন্যসাধারণ সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার মাত্র ৩৯ বছর বয়সে কিডনির জটিলতায় ভুগে ২০০৫ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি মারা যান। ফুটবলের প্রতি অপরিসীম ভালবাসা আর অক্লান্ত পরিশ্রমই তার মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে। নিষেধ সত্ত্বেও ফুটবল আর মাঠ ছাড়তে পারেননি।
The last defender, finally got beaten!
তার জন্য রইলো অপরিমেয় শ্রদ্ধা আর ভালবাসা!
মোনেম মুন্নার উইকিপিডিয়ার লিংক।
কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব লিজেন্ড হিসাবে স্মরণে রেখেছে মুন্নাকে!
মুন্নাকে নিয়ে ২০০৮ সালের বইমেলায় 'কিং ব্যাক মোনেম মুন্না' নামে একটি বই প্রকাশিত হয়!
মোনেম মুন্নার স্মরনে ধানমন্ডির ৮ নম্বরে একটি রাস্তা ও সেতুর নামকরণ করা হয়েছে 'মোনেম মুন্না সেতু'।
মন্তব্য
আসলেই!
তবে নিজের দেশকে ছোট হতে দেখেও ভাল লাগল না, স্বপ্নহারা!
মুন্নার জন্য
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
দেশকে ছোট করার জন্যতো বলেনি ভাই!! মনে আছে, ফিস্টার বলেছিলেন, মুন্নার মান উপমহাদেশের ফুটবলের চেয়ে অনেক উপরে। ইউরোপের কোন দেশে জন্ম হলে মুন্না অনেক ভাল কিছু হতেন সেই আক্ষেপ থেকে হয়তো বলা।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
মুন্নাকে ভোলা যায়না। অসাধারণ এক খেলোযাড়। আমরা যারা মোহামেডান করতাম তাদের জন্য তিনি ছিলেন চীনের প্রাচীর সম বা তারচেয়েও বেশি কিছু। শোনা যেত মুন্নার কনুইয়ের গুতা একবার খেলে তার আশেপাশে কেউ দ্বিতীয়বার যেতে চাইতনা।
স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো। মুন্নাকে বড় করতে যেয়ে দেশকে ছোট করা হয়েছে বলে মনে হলনা। বরং মুন্নার বড়ত্ব দেশকেও গৌরবান্বিত করেছে।
খারাপ লাগে এরকম একজন প্রতিভার অকাল প্রয়াণে। মুন্নার আত্মা শান্তি পাক।
আমারো দেশকে ছোট করার মত কিছু মনে হয়নি! আমাদের গর্ব ছিলেন তিনি। সালাহউদ্দিন একসময় হংকং এ ক্লাবে খেলতেন। এরপর মুন্না-আসলাম-রুমীরা খেলে আসেন ভারতের লীগে। মুন্না ছিলেন সবচেয়ে জনপ্রিয়। ডিফেন্ডার হয়েও এত জনপ্রিয়তা আর কেউ পায়নি। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা আসে তারই নেতৃত্বে।
আমরা আবাহনী সাপোর্টারদের ভরসাই ছিল মুন্না
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
তার জন্য রইলো অপরিমেয় শ্রদ্ধা আর ভালবাসা!
মুন্নার খেলা সেইভাবে দেখার সুযোগ হয়নি কিন্তু তবুও উনাকে চিনতাম খুব ভাল করেই।
আমার বাবা, মামা, চাচা উনার ভীষণ ভক্ত ছিল, উনার মৃত্যুতে সবাই খুব কষ্ট পেয়েছিলেন।
মনে পড়ে স্কুলে পড়ার সময় একবার তার পোস্টার ও কিনেছিলাম।
আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা গুণীর কদর করতে জানিনা।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
তার অকাল মৃত্যু সবাইকেই অনেক কষ্ট দিয়েছিল। আজ কাগজে পড়লাম, তার সন্তানেরা অনেক কষ্ট করে বড় হচ্ছে। কেউ কথা রাখেনি-মনে রাখেনি।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
মুন্নার কথা ভোলা অসম্ভব। আমি দেশ ছাড়ার পরে কোন কিছুর খবর তেমন রাখতাম না, খবর পাওয়া নব্বুইয়ের দশকে বেশ কঠিন ছিল। ২০০৪ সালের শেষে দেশের টিভির কানেকশন নেওয়ার পরে একদিন খবরে শুনলাম মৃত্যুর সংবাদ। প্রিয়জন হারানোর বেদনা অনুভব করেছিলাম - আমার কাছে এই সংবাদ অকল্পনীয় ছিল।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হ্যাঁ, আমারও অনেক কষ্ট লেগেছিল। আবাহনীর ফ্যান হিসাবে শুধু না, জাতীয় দলেও তিনি ছিলেন নির্ভরতার প্রতীক।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, দলনেতা হিসেবে উনি ছিলেন অসাধারণ। একসময় আবাহনীতে দুইজন মুন্না খেলত, বড় মুন্না আর ছোট মুন্না, সবই ইতিহাসের মত লাগে !
অটঃ ঢাকার মাঠে সবাই খেলে গেছে, খালি গণ্ডায় গণ্ডায় গোল করে গেসে নকীব। আফসোস, এই লোকরে কেউ আর মনে রাখে নাই! হয়ত কোনদিন মৃত্যুর সংবাদে কারো ওয়ালে স্ট্যাটাস হয়ে ঝুলবে।
নকীব সেইরকম স্কোরার ছিল, কিন্তু কোন কারণে তার জনপ্রিয়তা সেরকম ছিল না। আলফাজ তার পরে অনেক নাম কামিয়েছে। কিন্তু নকীব খুব ভাল একজন সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার ছিলো। তার খবর আসলে চোখেই পড়েনা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
হ্যাঁ, মুন্নার খেলা অল্প-স্বল্প দেখা হয়েছে বটে ।
তাঁর প্রতি রইল শ্রদ্ধা ।
তবে আরও আগের কথা বলতে গেলে সালাহউদ্দিন, নান্নু, মঞ্জু এঁদেরকেও ঐ সারিতে ফেলা যায় বোধহয়।
সালাহউদ্দিন-নান্নু-মঞ্জু-চুন্নুদের খেলা দেখিনি। সালাহউদ্দিনের কিংবদন্তীসম খেলার কথা অনেক শুনেছি। সেজন্যেই বলেছি হয়তো বাংলাদেশের সেরা তিনজনের একজন হবেন মুন্না। কিন্তু ডিফেন্ডার হিসাবে এত কার্যকারিতা-জনপ্রিয়তা-দেশ/বিদেশে সুনামঃ আমার কাছে আসলেই মুন্না ছিল তুলনাবিহীন!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
পোষ্টে তাঁর একটি ছবি সংযোজন করে দিলে ভাল হতো।
হ্যাঁ, ধন্যবাদ। খুঁজে একটা দিয়ে দিচ্ছি
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
উইকির পাতাটায় সম্ভব হলে কিছু যোগ করে দেন। পাতাটা দেখে খারাপই লাগল।
হুম, আমার উইকিতে একাউন্ট করা নেই। আত্মীয়ের নাম দেয়া কায়সার হামিদের মা রাণী হামিদের। কেউ ভুল করেছে মনে হয়।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
একাউন্ট ছাড়াও লিখতে পারবেন, আইপি ঠিকানা তখন সেভ করা হবে। আর একাউন্ট খুলে নিন না, খুবই সহজ। আপনাদের সবার ছোট্ট ছোট্ট সহায়তা অনেক বড় হয়ে দেখা দেবে।
____________________________
নতুন মন্তব্য করুন