• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

জীবনপাঠ

সৈয়দ আফসার এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ আফসার (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/১২/২০০৯ - ২:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জীবনের কিছু মুখ, কিছু মুখোশ, কিছু কথা, কিছু নিরবতা, কিছু ছন্দ, কিছু দ্বন্দ্ব সব মিলিয়েই তৈরি হয় একটি কবিতা। আমার চারপাশে যে মুখগুলো, মানুষগুলো আছে, তা যদি ভাবি দেখবো কেউ খোঁড়া,কেউ আবার চমৎকার দৌঁড়াতে পারে, হাতে হাত রেখে পাশাপাশি হাঁটে, কেউ আবার আড়চোখে তাকায়, বুকদোলে ওঠে কাঙ্খাও লোভায়…! কেউ মৃদুসুরে কথা বলছে, কেউ আবার কথার ফাঁকে-ফাঁকে হাসে, কখনো বোবা হয়, বোবার মতো তাকায়! কেউ থুতলায়। তেমনি কবিতাও খুব দ্রুতগতি সম্পন্ন দৌঁড়ায়-থুতলায়-হাসায়-কাঁদায়-ভাসায়… কবিতাকে কোন চিহ্ন দিয়ে ধরে রাখা যায় না!, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করা যায় কি? ধরা যায় না! ছোঁয়া যায় না! নিজের ভেতর দোলায়-উৎরায়!

এই যে প্রতিদিন কাজের ফাঁকে-ফাঁকে ছুঁয়ে যাচ্ছি অসংখ্য শাদা-কালো রমণীর হাত, শরীর ঘেঁসে হাঁটছি, সরি-ও! বলছি, কখনো পুলকিত হচ্ছি, কখনো সে মুচকি হাসে আমিও সায় দিচ্ছি,কখনো স্পর্শবিন্দু জেগে উঠছে, কখনো না-ছোঁয়াও কল্পকথা দূরে দাঁড়িয়ে আছে, আনন্দ-বেদনা-চাওয়া-পাওয়ার হিসাব শূন্যতা… সেখান থেকেই আমার কবিতার পাঠ নিচ্ছি, জীবনের পাঠ নিচ্ছি তো বটেই। এখন প্রশ্ন আসতেই পারে কবিতা পাঠের জন্য কি গ্রন্থপাঠ জরুরী নয়? সেখানে আমার ব্যক্তিগত মত— কবিতা জীবনের পাঠ। কবিতা প্রকরণের পাঠ। ‘কবিতার ইতিহাস টেকনিকের ইতিহাস’ কবিতার জন্যই জীবনকে পাঠ করতে হয়, জীবনের পাঠ নিতে হয়। এখন এই যে ভিনদেশে থেকে আমি যদি আমার জীবনকে দেখার, জীবনকে পাঠ করার ফুসরত না পাই; তবে জীবনকে দেখার বিকল্পপথ হচ্ছে গ্রন্থপাঠ। গ্রন্থপাঠের ভেতর জীবনকে দেখা এবং চেনা। সেটাকে আমি দ্বিতীয় জীবনই ভাবি। আমার কাছে মনে হয় বহুদূর থেকে দেখা ও চেনা ওপরের চোখে আরোপিত জীবন।

আমি যদি কাজের ফাঁকে ফাঁকে সে সময়টুকু বের করতে পারি, নিজ-দৃষ্টির ভেতর যদি আমার চারপাশের মানুষকে দেখি, তাদের পর্যবেক্ষণ করি, একটু সময় পেলে যদি ঘুরে বেড়াতে পারি, তবে সে সময়টুকু ঘরের কোণে বসে নষ্ট করবো কেনো? তবে তার আগে মৌলিক কথা হচ্ছে কবিতা লিখতে হয়, আবার কবিতা লিখতে হলে কমপক্ষে বর্ণজ্ঞান প্রয়োজন, আর তা যদি একজনের থাকে এবং পাঠোদ্ধার করার ক্ষমতাও থাকে; তাহলে আমার মতে— তিনি একজন মৌলিক কবি হতে পারেন।কিন্তু কথা হচ্ছে কেনো আমরা জীবনের পাঠ ছাড়াও গ্রন্থপাঠ করি? তা প্রথমত আমাদের মৌলিক কাজ গুলোকে সহজ করে দেযার জন্যই, জীবন দেখার পাশাপাশি কিছু পাঠ করি।

যদি এভাবে বলি— জীবনানন্দকে কেনো আমরা পাঠ করি?কেনো জীবনানন্দের কবিতা পড়লেই জীবনের ছবিগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে যতই পড়ি ততই আচ্ছন্ন হই।মুগ্ধতার পাহাড় জমতে থাকে। কেনো জীবনানন্দের কবিতার একটি লাইন পড়েই থামতে হয়! কারণ জীবনানন্দের কবিতায় ভেতর দৃশ্যগুলো ফুটে ওঠে আমি চোখ বুজে সে দৃশ্যের ভেতর হাঁটি, দৃশ্যকল্প আমাকে থামাতে বাধ্য করে! কারণ একটি তিনি যে পথে হেঁটেছেন সে গুলো তো জীবনের পাঠ থেকে নেয়া। আবার এও বলতে পারি আমার ভেতর জাগা তাঁর ভুল গুলোকে নিজের মতো করে বলতে এবং দৃষ্টি-ভঙিকে পুঁজি করে নিজের মতো লিখতে চেষ্টা করি। যদি তাই হয় তবে আমি বলবো গ্রন্থপাঠ যে কোন গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছাতে সাহায্য করে কিন্তু গ্রন্থপাঠ ছাড়াও গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। কিন্তু কথা হচ্ছে মৌলিক প্রতিভা হলে আমার মতে গ্রন্থপাঠ জরুরী নয়। কেননা গ্রন্থপাঠ যে কোন প্রতিভার সহায়ক হতে পারে, একমাত্র সহায় বা আদো কোন সহায়ই নয়। যদি আমি আমার চোখের জগৎ বেয়ে নিজের জীবন দেখতে পারি।

এখন যদি নিজের কথা বলি— আশ্চর্য-সৌভাগ্যবান, পাঠ করার ধৈর্য্য দীর্ঘক্ষণ নিজের ভেতর জমে থাকার কিমৎ জোগায়। পাঠ কেনো কিমৎ জোগায় সে বিষয়বস্তু সমাধান খোঁজলেই দৃষ্টির আবরণে সোজাসুজি প্রশ্নবোধক চিহ্নই দেখি! পাঠ না করলে হয়ত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাঠান্ধ থেকে যেত আত্না…। আর নেপথ্য কথা নৈঃশব্দিক স্পর্শ বেয়ে বেড়ে ওঠা স্বপ্নসৃষ্টি। তবে পাঠ কি শুধু গদ্য-গণ্প-কবিতা পড়া। বিনয় মজুমদার তাঁর ‘এ জীবন’ কবিতাটি শুরু করেছেন এভাবে—‘পৃথিবীর ঘাস,মাটি,মানুষ,পশু ও পাখি— সবার জীবনী লেখা হলে আমার একার আর আলাদা জীবনী লেখা না হলেও চ’লে যেত বেশ।’

পাঠ বিষয়ে আরো অনেক কিছু আছে যা দৈনন্দিন জীবনের পাঠ, কারণ নদী, নিসর্গ, ঘাস, গাছ, খেলার মাঠ,পশু-পাখি আলাদা হলেও ভাবনা কিংবা পাঠ আলাদা নয়, সব সৃষ্টিই ভেতরে জেগে ওঠা, সকল রহস্যের ভেতর থাকে সুখ-ব্যথা।পৃথিবী আমাকে পাঠ করছে, না আমি পৃথিবী থেকে পাঠ নিচ্ছি, সেখানেই আমার জিজ্ঞাসা। কেননা আমার চারপাশ জুড়ে আলোর ঝলকানি গাছপালা-লতাপাতা… পৃথিবী তার অক্ষরেখায় ঘুরে, শেষ রাতের কোলে ভোর হাসছে, কাক ডাকছে, পাখি নীড় ছেড়ে আকাশে উড়ছে, মৃদু বাতাসে গাছের পাতাগুলো নড়ছে, দূর্বাঘাসে জলফুল হাসছে, গাড়ির হর্রণ বাজছে, কৃষক মাঠে যাচ্ছে, যুবারা স্নান করছে, আশা-কাঙ্ক্ষা নিয়ে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা, রাতদীর্ঘ হচ্ছে এরকম কথা গুলো মনে আসে যায়।অনেককথাই আমাকে চুম্বকের মতো টানে তার ভেতর নিজের পাঠঅভিজ্ঞতা উঠানামা করে, আকর্ষণ আসে তা কিন্তু ভাষাহীন নয়; বিগত সাড়ে চার বছর ধরে যে আমাকে পাঠ শেখাচ্ছে যে, সে আমার অতি পরিচিত করাত! আর করাতের শব্দ পাশাপাশি ভাবলেই মনে পড়ে কাঠ চেরায়ের শব্দ, স্মৃতিগাছ স্মরণে আসে, আরো মনে আসে ছাল-বাকল- কুড়াল; আর তার কথা মনে হলে দূরপানে তাকাই, বিকল্প ভাবলে কাঠের বিকল্প শুধুই কাঠ।তাও তো পাঠ! কারণ করাত আমারকে জীবিকার পাঠ শিখাচ্ছে, চেরায়ের শব্দ নিচ্ছে আত্নার খোরাক। পাতা ঝরে গেলে গাছেরও সতীত্ব হারায়, হারায় পরিবেশের ভারসম্য, আবার নতুন পাতাও গজায় নতুন আশায় নিজেকে দাঁড় করায়। কিন্তু ঘুরে ফেরে যে বিষয়টি আমাদের মনের অগোচরে দোলা দেয় তা কিন্তু কবিতা কারণ--
‘না দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!’


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভালো লাগলো লেখাটি...
জীবন থেকে পাঠ নিলেও পুস্তক পাঠকে আমার প্রয়োজনীয়ই মনে হয় খুব। একই জীবনকে একেকজন একেক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। আমি ভিন্ন কিছু চোখেও জীবনকে দেখতে চাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।