বন্ধু যারা দুঃখ পেয়েছো রূপাদের কথায়
দুঃখকে করুণা কর না, হাড়ের ভাষায়
মিশে যাচ্ছো সম্পর্কে তৎক্ষণাত...
অল্পই তফাৎ
এই যা পান করা তামাকপাতা; শুশ্রূষা আহা!
সুখের ভেতর দুঃখকে শেখানো হচ্ছে চোখের প্রণয়
ওভাবে আমরা ভাবলে দেখতো কেমন হয়?
গাছের ছায়াগুলো হাসে পাখির ডানায়
রূপাদের ছায়া মিশে যাচ্ছে ঘাসের পাতায়
বন্ধু যারা দুঃখ পেয়েছো সমবেদনা তোমাদের
কথা বলার ভেতর যে আনন্দভাব থাকে
কথা বলার শেষে তাও কি ধরে রাখা যায়?
সারাক্ষণ জীবন-জিজ্ঞাসা, ফোটে কি ফোটে না
এই প্রাবল্যে কাটছে সময়, বহু দিনের ইচ্ছা
আর ক’টা দিন পর সব কথা পরবে মুখোশ
-হারাবে অঙ্গের সচলতা
চোখ খুললেই দেখি জটিল রূপ রেখার ভেতর
হাঁটতে হাঁটতে তুমি তুলে আনছো রোদক্লান্তবুক
পাতার ছায়া!
পপকর্ন, সে-তো ভালোই জানে—
হতবাক, রূপ ধরে হেসে ওঠো আপনগৃহে
নিজসমগ্র ঘিরিয়া রাখো, যেন সর্তক নিমার্ণ
ফুল-মাটির-স্নেহে
অন্ততঃ একটি দিন— তুমি শুধু মন টেনে ধরো
তোমার জামার ভেতর একবার হই নিশ্বাসহীন
আপনগৃহে হলাম নর্দমারমুখ, বৃক্ষতলবাসি বিবশদেহ
আগত স্নেহময়ী, ভেঙো না প্রতিশ্রুতি, পিনপতন
নীরবতা জেনেছে কি আঙুল ফোটাবার ছলচাতুরি
কিংবা পাল্টানো নিয়ম
নিজের উচ্চতা মাপি! ‘গা-ঘেঁষে দাঁড়াই’ আলাপে-প্রলাপে
‘গা-ঘেঁষে’ দাঁড়াবার ঢরে বার-বার দম বন্ধ হয়ে আসে
ছায়ার আঘাতে
তোর চাপাহাসি খুললেই গালের টোল খুবই স্পর্শাচেতন হয়
আমার চোখও লুকিয়ে লুকিয়ে হাসে নিয়ম মোহের ডানায়
এসময় তোর দেহবাতাসের সুঘ্রাণ ছাড়া দাঁড়ানো কী সম্ভব?
কতটুকু দাঁড়িয়ে থাকা যায়? ফুলের মতো, ছায়ার মতো
যৌথতা, কেন বলছ ভেজা বরষায়
কত প্রসঙ্গ আসে— ‘সে এক বিস্ময়’
সেই কবে, জোড়া-চোখের গহনায়
গ্রহণলাগা মৌসুমী ফলের পাতায়…
যৌথতা, মাতালের নেই কোন দায়
আগামী অধিকার এমনও হতে পারে
অমন না-হলে প্রতিবেদনা খুব ধীরে
মেলামেশা করে, সারমর্মটুকু আঁধারে
অলস দিনের মত রূপ ধরে ও ঝরে—
যৌথতা, ‘ইচ্ছার ব্যাখ্যা’ জানবে সন্ধ্যা পরে
জলে না-ভিজে কীভাবে নেবে জলজ্ঞান?
জলের চিবুক যে অর্ধেক জেনেছি, কারণ
সর্বনাশে কথা ভাবতে-ভাবতে জিভে বিঁধে
যাচ্ছে দাঁত, কাউকে বলি নি হঠাৎ বোধে
বোধের পূর্ণমাত্রা গুটিয়ে নিচ্ছো একা হৃদে
হৃদয়ের পূর্ণতাও দুলছে ভেজা ভেজা রোদে
যেমন, সে-ও দাঁড়িয়েছে দ্বিধাহৃতচোখে; ক্ষুরধার
আশায় দোলছে পরশখানি, বুকে বহিতেছে ঝড়
সরে যাবে বললে দ্বিধাও হাসে, নিকটে দাঁড়াবার
আগে কীভাবে বলি— টানিয়া তোলো দেহাঙ্গীকার…
বহুদিন ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছি কথা, দয়ার আশায়
কিসে যেন রেগে গেলে... তার মানে
হারানো কান্নাও হতে পারে গোপনে
আরো তিন-তিনটি বছর পর...
সবই বুঝি মৃদু ত্রুটি কাঁচা মাংশের ঘ্রাণে
ওই মুখ! ‘বর্ণিত হবার লোভে’ লাজুক বাগানে
মনে ও বনে
এসব ঘটনাপ্রবাহ কুড়ি বছর পর কবিকে চেনে
শেষ দিবসে আমি যখন কিছু কথা জমিয়ে রাখি
কাঁধেপিঠে ধূলির নগরে
কাঁপা হাতের আড়াল থেকে সর্বস্ব দাও
আমি কি জানি? শেষরাত্রি ছুঁলে কীভাবে
বুকপাথর থেকে খুলে পড়ে মর্মভেদী যত
কথা ও ভয়
শক্ত পাথর আকুল হয়ে উঠে; নরম ছোঁয়া পেতে পেতে
যে কথা বলা হলো না; তার জন্য জমছে কি বেদনা?
দোহাই তোমাদের; আমাকে জড়াতে বলো না রাত্রিকথা
আমার হাঁটার ফাঁকে জমছে হাওয়াপাগলা; মৌনধুলা
জল-মাটির গন্ধে সবজি তরতাজা থাকে
তুমি হাসলে সবজি বাজারে আগুন চড়ে
তারপর ক্রেতারা কিনে থলিতে ভরে
রান্নাঘরে দা-বাটির তলে হাত-পা
কেটে জবাই, খাবার টেবিলে গৃহিনীর
তেলে ভাজা কড়াই, এ টুকুই চাই...
কাজ আর ঘরের ব্যবধান ঠিক পাঁচ মিনিট
ঠিক সাড়ে তিন মিনিটে একটি সিগ্রেট পুড়ে
ফেলা যায়; অথচ যে পথ দিয়ে প্রতিদিন ঘরে
ফিরি; পথের ধুলো পা জড়িয়ে-প্যাঁচিয়ে থাকে
ধুলোর ঘ্রাণে ভরে উঠে ড্রয়িংরুম, চায়ের কাপ
শাদাজামার ভাঁজে লেগে থাকে ছাইপোড়া ঘ্রাণ