একাকীত্ব, দূরে আছো বলেই কি উইশ করব না!
আমি আর মন এক জায়গায় স্থির থাকতে পারি না
কি আশ্চর্য, ঘুমে জাগি, ঘুমে হাসি ভালো লাগে না
প্রস্তুতি, যৌথইচ্ছেকে একা পেয়ে নালিশ করো না
তারচে’ গোপনে চেপে যাও, যা ধরে রাখা যায় না
আমি হাঁটছি, সে হাঁটার রোমাঞ্চ খেয়ে বলছো কথা
শরীরের ভার ধরে রাখছে খাড়ারোদ, পায়ের পাতা
ডালে ঝুলে ফুল হও, ফল হও, গাছে পরাও ভাবনা
এই যে, তোমার দিকে না-তাকিয়ে কমে যাচ্ছে সলজ্জ
চোখের সহনক্ষমতা
তুমি কি চাও, লোকে আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করুক
বলাবলি করুক, আলাদা থাকার মানে ঝগড়া হচ্ছে না
কিংবা আত্মসমর্পনের আগে-পিছে কোন সম্পর্ক ছিল না!
হতে পারে যে কোন ইচ্ছের আগে দীর্ঘশ্বাসের রঙটি একা
যদিও বিশ্বাসের আগে সাবধানতা ধরে রাখা সম্ভব হয় না!
এতদিন একা থাকা অসহ্য, ভালো থাকা সম্ভাব্য দরকার
রাস্তার ও-পাশ ধরে হাঁটলেই মনে হয় আমার ইচ্ছেটা ঐশ্বর্যময়
রোদের প্রখর দৃষ্টি যেন গহননদী! নাড়ছে-চুষছে রীতিহীন খেলায়
কিছু ছায়াহীন ধূলিপথ গিলে ফেলছে কেউ জলগন্ধ পিপাসায়
আলতা-সিঁদুর পরা পায়ের ঘুঙুর… বেণীচুলের ঘ্রাণে সেও প্রিয়
দুশ্চিন্তা, অমন করে কেউ কি ধরে রাখতে পারে ছড়ানো ছাতায়
বৃষ্টি আসলেই পুরনো বছরের প্রতীক্ষায় ‘দিনানুদিনের’ ঝঞ্ঝায়
ধরো, এই আমি— ওই নদীটির কথা ভাবতে ভাবতে
ঘামছি… অতঃপর অপারগ হয়ে যাচ্ছি, আর কবে যেন
সে-ও বলছিল জেনে রাখো, ওই নদী, ওই জল অন্যত্রাসে
তৃষ্ণার টানটান জলে কামড়াতে জানে… অহেতুক বাঁধনে
পেঁচিয়ে যেও না, পুড়ে যাবে
জল কি জানে? অনাদর পেতে-পেতে কীভাবে খুলে পড়ছে
বোবাকথা, গায়ে লেগে থাকা পলাতক ইচ্ছাসহ দেহপূর্ণতা
আমি মূলত আমার আত্মাকে ফেরি করি, তাই জন্মের পর
মৃত্যুই আমাকে পাহারায় রাখছে একা
সাহস হয় না তবুও বলি— তোকে বন্ধু ভাবলেই
ভোগদৃশ্যের ভেতর জেগে ওঠে এক চোখের জরা
গোপনে অন্য চোখের সমর্পণ, আহা টাঙানো নিয়ম
শূন্যদিনে খুব কাছে জেগে ওঠা সর্বপরিচিত ঋণসহ
বিবশ-করা দেহের পুরনো বিশ্বাস
চোখের স্বভাবে চারপাশ ঘুমিয়ে পড়ে মধ্যরাতের আগে
অনিচ্ছাগুলো অন্ধঘরে ক্রমশ ধ্বস্ত করে শিয়রে দাঁড়ায়
আমি কেবল লুকিয়ে রাখছি ভাবঘুম, মাদুলীশব্দ আর
ধারণা থেকে বানিয়ে নিচ্ছো ব্যথা; ধন্দযত চিন্তা পোষাক
ব্যথার ভার শরীর থেকে মনে হয় আরো তিনহাত অধিক
এই ধরো, প্রতিদিন আমি হাঁটছি কেবল নিজ ছায়া মেপে
এই যে ওনারা, মানে আমার ছায়ারা কেন দ্বিধায় থাকেন?
সবই দেখি; কত ইচ্ছাই-না দূর থেকে তোতলান দৈনন্দিন
তাকিয়ে দেখো, ব্যবধান অপ্রত্যাশিত হলেও আমি ঝুলে আছি
একটু বেশি আশা করে ডুবুসন্ধ্যায় চিবুকে টেনে রাখছি আরো
কাঁটাঅলা গাছ! ছাল ছুঁতে গিয়ে ভিন্ন অভিজ্ঞতা
না-ছুঁলে অপলক নতিজা হৃদাবেগ রোগা-পাতা
তোর কাছে এও আছে রঙিন দিনের ইস্তেমাল
হৃদপিণ্ডে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হচ্ছে গাঁথা-শোক
পরশ বিষয়ক কিছু কথা অসমাপ্ত না-থেকেও
বিপরীত দিকটার জানার ইচ্ছে তোরই প্রবল!
আমাদের আটকে যাওয়া অস্থির নিজস্বতা, আহা!
সে-ও এক বিষ্ময়!
জানি, নীরবতা ভাঙলে আমাদের ইতস্তত চোখ
হাত ঘষলেই ভিখিরি বাজারে তোর অংশীদার
দূরে আছি তাই— তোকে নিয়ে ভাববার
সাহস পাই
যা ইচ্ছা করিস; আরো তিন বছর গেলেও
ফেরার ইচ্ছা নাই; জমা হউক আরো; আরো…
আর্কষণশক্তি ও সময়
সাহস কিভাবে এতো প্রিয় হলো দ্বন্ধ ছাড়াই
হয়ত জটিলতার ভেতর জন্মেছে তিন বর্ষায়—
তুই ফিরলে ভয়টুকু আমি তবে কোথায় লুকাই?
২.
সব ব্যর্থ কথার পূর্ণ ভাগ আমার অথচ
তাকে বন্ধু ভাবলে কিছু বলার ইচ্ছে
আমাকে পান করাও হাজার দিবস ক্লান্তি ও গ্লানি
‘বন্ধু মানে অন্য আমি’ একই আত্মার খেলা
তুই কি উপলব্দি করিস বন্ধু? হয়ত-বা না...
জানতাম, বিয়ে হলে আমাদের বনিবনা হত না
তুই গাল ভার করে ঘুমিয়ে যেতে আমি—
দীর্ঘরাত বই পড়তাম। কাক ডাকা ভোরে
বিছানায় গেলে পাশ ফিরে শোতে!...
বারবার তুই লিখতে বারণ করত, বলতে
বই-টই পুড়িয়ে ফেলা দরকার, এইসব
অসহ্য লাগে। বলতে ‘আমার চেয়ে ওদের
ভালোবাসাই সব তোমার কাছে’ আমি চুপচাপ
চক্রাকারে ঘুরে কেউ যদি ফিরে আসে
ধাঁধায়
তাকে বারণ করো না—
অন্তত বাস্তবতাটুকু বুঝে-ওঠার আগে
সেও নিয়ে আসতে পারে চায়ের পেয়ালায় ধরে
রাখা ফকফকা কিছু স্বপ্ন কিংবা শাদা-সমাধান
কেউ যদি না ফেরে, তাকে ফেরাতে যাবে না কারণ
দেহের প্রণোদনায় লুকিয়েছে অহংকার, ছায়াবাঁধা মন