গাছও কি স্বপ্ন দেখে ডালে বসে?
নাকি জিরিয়ে ছিল পাতায়—
জানতে চাও; জানতে দাও রসায়ন
দাঁড়ি-কমা শিখাও, নিঃসঙ্গতা... কোলন
আশাহত ব্যাকরণ
টুপটাপ শব্দ বাজে; বাজে না বৃষ্টি ও পাথর
লতাপাতা ছন্দে হাসে; হাসে হাওয়ার শহর
তুমি জড়তা তুলে নাও গাছে, প্ররোচনায়
জলের উষ্ণতা পাবে পাতায়, ভরা বর্ষায়
সাঁই, ত্রিশটি বঙ্গাব্দ জীবনের গ্লানি টেনে-টুনে
কীভাবে যে হারিয়ে গেল! একত্রিশে এসে তোমার
কাছে এই প্রশ্ন— এত ঋতু চোখের সামনে গেল
বর্ষা-বসন্ত এলো, একটুও বদলাইনি আমি…
যেমন বদলায়নি হ্যান্ডসাম-রুচি, অপেক্ষাবাগান
কেন যে আমি সেই আমারই মতন!
তোমার তুলনা কেবলি তুমি— যায় দিকে আয়নাও
ফিরে-ফিরে তাকায়। পিছে কেবল একজন দোটানায়
তেটানায় ভাবে ১৪১৭ বঙ্গাব্দ শেষমুহূর্তভাবনা…
দায়
একই ছাদের নিচে বসবাস। তবুও নেই সহাবস্থান। লোক দেখানো ভালোবাসা। সে-ও তো ছায়ার মত নীরব, নাটক বলা যাবে না, যেন জীবন্ত অভিনয়!... কী অদ্ভূদ প্রজাতি দু’জন। সম্পর্ক আছে, যে সম্পর্ক ঠিকে থাকাই আত্মসম্মানবোধ—
যেন একা, একাই ছুটছে নিজেদের দায়
প্রতিদিন
এই ঠাণ্ডার দেশে ঘরে বসে সিগ্রেট টানা যায় না! যাযাবর জীবনে নিয়মনীতি মানা কষ্টের। তবুও মানতে হয়। আজ হিমবাতাস একটি সিগ্রেট জ্বালাতে তিনটি কাঠি খরচ!... সিগ্রেট টানতে-টানতে আমি নামক আত্মাটি কোথায় হারিয়ে গেছে— আর সেখান থেকে ভাবছে মানুষ প্রকাশে যেমন পোষাকেও সমান। অনেকে আশার সিঁড়ি খুঁজে দেহ দিচ্ছে উপহার… ভাবে, একবার প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেলেই সব নিরাপদ।
দিদি, আপনার চোখের দিকে তাকালে স্থির হয়ে যাই
কিছু বলার আগে লুকিয়ে ফেলি চোখের নীরব ভাষা
চোখে চোখ না-রেখে ঠিক সামনে তাকাই, আর বলি—
আপনার দু’টি চোখ না-ঘুমোতে, না-ঘুমোতে এমন যে
চোখের নিচ আরো কালো হয়ে যাচ্ছে!
সাক্ষাতে, ফোনালাপে কতবার বলেছি নিয়মিত ঘুমান
দিদি, আমার কথা রাখেনি; বারবার বলছে : মাঝে-
মধ্যে ঘুমের সমস্যা দীর্ঘ দিনের, এই আর এমন কি…
সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে
ঘুমের ভেতর স্বপ্নকে মধুকর মনে হয়
স্বপ্নের ভেতর কখনও হাসি, কখনও কাঁদি
মাঝরাতে গভীর ঘুম বিশ্রাম পায়!
ঘুম ভাঙলে সিগ্রেটের ধোঁয়া অন্ধকারকে
জিজ্ঞেস করে— কোল বালিশের পাশে
কেন দাঁড়িয়ে থাকে শেষ রাত্রির একাকীত্ব!...
স্বপ্ন জানে না, আমার চোখে জমা কত অজানা ভয়
একাকীত্ব জানে কী? চোখের গভীরতা কাকে তাড়ায়!
অবশেষে তোর চোখের আদর খুঁজতে আসা
রহস্যফল একাকী খুলে যায় রাত্রির ভেতর!
সোজাসুজি মার্জনা করলে শব্দদেহে শতভাগ
নিশ্চয়তা পাবে, বাকিটুকু ভীত, স্বার্থপর
অপ্রস্তুত দৃষ্টি কিছু লিখছেন? এই হল ম্যাপ
চোখে খুঁজে দেখুন, পুরো পৃথিবীর পথ পাবেন
এইপথ বৃষ্টিবর্ষা কিছুই খুঁজে না, খুঁজে কেবল
মর্মবেদনা
দীর্ঘশ্বাস স্বপ্নে-গন্ধে অন্ধকারের গল্প বুনে যায়!
নিশ্চিত পরশুই ফিরবে তাই... যদিও এ আশায় দুপুর এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকঠাক, বিকেলও গড়িয়ে সন্ধ্যা নামবে এইখানে, ওই দিঘির পাড় ঘেঁসে ঘনজলে। সাপ্তাহে একদিন ছুটি,... ইচ্ছে দু'দিন চাই, এই লোভে কখনও না-বলে চলে যাও! বুঝতে পারি না কখন ফিরবে… ফেরার পথে খুলে রাখি চোখ, কিন্তু স্বপ্ন খুলতে পারি না। কখনও না-ফেরার ক্ষণ এত দীর্ঘ হয় যে, অপেক্ষা টানতে টানতে ছিঁড়ে যায় অনিশ্চয়তাসহ দীর্ঘশ্বাসের নাড়িভূড়ি
ইচ্ছাকে লালন করে পুড়ছো একা
আমাকে আর কতটুকু দূরে রেখে
বহন করা যাবে? নিয়ম ভাঙা যাবে
স্বার্থপর!
হতে পারে জলে ও জালে গোপনইচ্ছা
সুযোগময় স্বার্থপরকথা বুঝে না সময়
নিয়মফল দীর্ঘ হলে সবর্ত্রই খুলে রাখি
দরকারি আশা ও উচ্চারণ
ক্লান্তিঘাম; একটানা জড়িয়ে ধরো বিশ্রাম
এ-রকমও ঘটে যায়, গোপনইচ্ছা ও ভয়
এই বুঝি ফুরিয়ে গেল, ভয় জাগা সময়...
‘একটি জটিল আয়ুরেখা’ চিরকাল হাত খুলে দেখায়
হারিয়ে যাওয়া; না-যাওয়া; সেও এক চিন্তানুভবফুল
যেহেতু তুমিও আত্মকাহিনিতে লেগে আছো; বাদবাকি
স্বার্থরক্ষার ভয়ে জড়িয়ে রাখছো আঁকাদৃশ্য; অস্থিসার
চুপিচুপি ফিরিয়ে দাও স্মৃতি-সম্পর্ক, চিহ্ন ও সুতায়
প্রথম-প্রথম কোন কথা বললে, দ্বিতীয় কথার ভেতর
বদলে ফেলা যায়; শুধু কিঞ্চিৎ মিথ্যা বলার ফর্মূলা
-জানা দরকার
জানার ভেতর যে রহস্য, তা কোত্থেকে আসে? তাকে
কি খাবো? মনে পরাবো? না বুকে রেখে ঠোকরাবো?
কারণ— ধ্বংস হবার পূর্বে আমাদের হৃদপিণ্ডের
বিষফল কাটছে করাত, আলজিভও কাটছে দ্বিধা ও ধার
তোকে জড়িয়ে ধরার শখ যেন স্মৃতি, সেই ছোট্টবেলাকার