প্যাচাল শো

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ আখতারুজ্জামান (তারিখ: শনি, ৩১/০৩/২০১২ - ১:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

- আমিও একটা নৌকা বানাইছি, কী দিয়া - কমু না

(নৌকার প্রসঙ্গ উঠতেই সুশীলরা নড়েচড়ে বসলেন
কথাবার্তা কোনদিক দিয়া কোনদিকে যায় বোঝা চাই
আজকাল টকশোগুলা সব লাইভ, কাট-ফাট বাদ
ঝলসানো আলো;
কী কইতে কী কইয়া পরে আদালত অবমাননার মামলায় পড়া যায়)

- হাজার বছর ধরে আমি খাল খুঁজিতেছি এই বাংলার প্রান্তরে

(খালের প্রসঙ্গ উঠতেই আবার উসখুস চারপাশে
নিরপেক্ষ থাকাটাই আজকাল জ্বালা, ব্যাবাক পক্ষেই কালি
তাহলে সুশীল কোন পক্ষ?)

- খালে নৌকা ভাসাইয়া আমি ধান কাটতে যামু
আমি পাট-কাটতে যামু, আমি নুন-আনতে যামু

(তাহলে কি সুশীলরা সূর্যসেন, প্রীতিলতা, ক্ষুদিরাম?
কী কাম তাদের দেয়া হয়? নিরপেক্ষ থাকা একটা বিরাট কাম বটে।)

- আমার নৌকায় চড়ে যদি আমিই খালের খোঁজ পায়া যাই
তাইলে তোমার চড়কায় তুমি তেল দ্যাও বাপু
প্যাচাল বন্! বাড়ি গিয়া বই ল্যাখো...

নূরুলদীন হওয়া অতো সোজা না।


মন্তব্য

cresida  এর ছবি

কবি, আমার শ্রদ্ধা জানবেন। আবৃতিযোগ্য একটা কবিতা। সব ভালো কবিতা কখনই আবৃত্তিযোগ্য না। অসাধারন লাগলো। সময় স্বল্পতায় আরো বিস্তারিত লিখতে পারছি না। তবে, আবারো পড়বো।তখন আরো আলাপ হবে।

cresida

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কৃতজ্ঞতার সহিত শ্রদ্ধা গৃহীত হইলো। পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

cresida  এর ছবি

আপনার শেষ লাইনটি "নুরুলদীন হওয়া এতা সোজা না" এ এসে কবিতাটা যেন দুই ভাগ হয়ে গেল।

পুরো কবিতা পড়তে পড়তে যখন শেষ লাইটি পড়লাম- "নুরুলদীন হওয়া এতা সোজা না", শুধু এই লাইনটি ই একটি কবিতা হয়ে উঠতে পারে বৈকি।

এই সোজা না হযে উঠতে না পারার মধ্যে যে বিদ্রুপের আভাস, তারা ধারটুকু ভালোলাগে। আমার ধার ভালো লাগে।

একটি প্রশ্ন (উত্তর দেয়াটা জরুরি না)," নুরুলদীন " কি সেই শুধুই সাধারন একজন? এই সাধারন এর মাঝে অসাধারন হয়ে ওঠাটাই সবচাইতে কঠিন হয়তো। নাকি "নুরুলদীন" এর পেছনে কোন গল্প আছে?

ভালো থাকবেন।

cresida

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

নূরুলদীনের সারা জীবন, সৈয়দ শামসুল হকের একটি অতি বিখ্যাত কাব্যনাট্যের নাম। নূরুলদীন সেই নাটকের একটি কেন্দ্রীয় চরিত্র। না পড়লে বোঝানো কঠিন। সে এক এলাহী ব্যাপার।

cresida  এর ছবি

ধন্যবাদ। পড়ে দেখবো।

cresida

বাউলিয়ানা এর ছবি

অসাধারন!

দেশে বলেন আর বিদেশে বলেন, আমরা এমনই দেখতে পাই। বারো ঘন্টা কাজ তার উপর আবার দুই/চাইর ঘন্টা ওভারটাইম করার পরে তারা শুধু জানে যে, তারা কলুর বলদ। তাদের নৌকা নাই, খাল বা লাঙ্গল নাই। নতুন করে আবার "তৃতীয় মাত্রা" বানাবারতো প্রশ্নই ওঠেনা। খালি আছে নাকের সামনে ঝুলানো মূলা, বেঁচে থাকার মূলা।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

দেখুন, এ সবের বাইরে থেকেও পৃথিবীর মানুষ নানা ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গান্ধীর কোন দল ছিলো না (শেষের দিকটা বাদ দিলে), সূর্যসেন, প্রীতিলতা, ক্ষুদিরাম কোন দলের কর্মী বা নেতা ছিলেন? আন্না হাজারের-ও তো কোন দল নাই। তারা কীভাবে প্রতিরোধ, প্রতিবাদে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন?

মন্দে আমার যতাটা না আপত্তি, তার চেয়ে ঘোর আপত্তি ছদ্মবেশে। মন্দের জন্য প্রস্তুতি নেয়া যায়। ছদ্মবেশ আততায়ীর মতো। যখন বুঝবেন ততক্ষনে অনেক দেড়ি হয়ে গেছে। আমি জানি না। অনুমান করছি, আমরা একটা ভয়ংকর মানবিক অবক্ষয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি কিংবা খুব শীঘ্রই এর মুখোমুখি হবো।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

বেশ লাগলো তো! দেঁতো হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

তাপস শর্মা এর ছবি

ভালো লেগেছে এই কবিতাটা।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অসাধারন লাগল।

পুরো ভিন্নস্বাদের একটা কবিতা।

চালিয়ে যান দাদা। হাততালি

বৃষ্টির রঙ এর ছবি

ভালো লেগেছে। উত্তম জাঝা!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।