[পূর্ব প্রকাশিতের পর। পর্ব ১, পর্ব ২, পর্ব ৩]
বাংলাদেশকে যে কোন দেশের স্বীকৃতিকেই যিনি ‘শত্রুভাবাপন্ন কাজ’ হিসেবে বিবেচনা করতেন, সেই ভুট্টকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ানোর কাজটি অবশ্যই সহজ ছিল না। পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনা, স্বীকৃতি-কূটনীতি আর সেই ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর শেষ পর্যন্ত কী হলো এবং এর সাথে কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়েই এই শেষ পর্ব।
স্বীকৃতি-নাটকের সমাপ্তি
পাকিস্তানের সম্পদ ও দেনার বন্টনসহ বাংলাদেশ-পাকিস্তানের অমীমাংসীত বিষয়গুলি নিয়ে মুজিব-ভুট্ট বৈঠকে দুই দেশই আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু শেখ মুজিব শর্ত দেন যে, পাকিস্তানের স্বীকৃতি ব্যতীত কোন আলোচনা হবে না। অন্যদিকে ভুট্ট শর্তদেন যে, আলোচনার পর স্বীকৃতি দেয়া হবে। এবিষয়ে ভারত শেখ মুজিবকে রাজি করানোর জন্য উদ্যোগী হলে তিনি বলেন, ‘চীনের ভেটো ব্যবহার করে পাকিস্তান বাংলাদেশকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। ফলে স্বীকৃতির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্ত হয়েছে। প্রথমে স্বীকৃতি, তারপর আলোচনা।[৪৬] এদিকে ১০ই জুলাই ১৯৭৩ সনে পাকিস্তানের সংসদ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য ভুট্টকে শর্তসাপেক্ষ ক্ষমতা প্রদান করে। তবে ভুট্ট বলেন, পাকিস্তানী সৈন্যদের বিচারের দাবী ত্যাগ না করা পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিবেন না।[৪৭]
এদিকে তেল ও মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নিয়ে ২২-২৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪ সনে লাহোরে ইসলামিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের ক্ষণ ধার্য হয়। মুসলিম জনগোষ্ঠীপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অংশগ্রহনে আরব দেশগুলির আগ্রহের প্রেক্ষিতে ভুট্ট শেখ মুজিবর রহমানকে আমন্ত্রণ জানাতে রাজী হন। কিন্তু স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান হিসেবে আমন্ত্রণ না করে, শেখ মুজিবকে পূর্বাঞ্চলের মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর সীদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪ শেখ মুজিবর রহমান এক দলীয় সভায় পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, আমরা আপনাদের স্বীকৃতির পরোয়া করিনা। তবে সম্মেলনে আগত অধিকাংশ কূটনীতিকদের অভিমত উদ্ধৃতকরে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়, সবকিছু বিবেচনা করে বাংলাদেশের পক্ষে এই বিচার করা আর সম্ভব হবে না। [৪৮]
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদম মালিক, যিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় ভুমিকা রাখছিলেন, এক স্বাক্ষাৎকারে বলেন যে, বাংলাদেশ ১৯৫ পাকিস্তানীর একটি ‘সন্তোষজনক’ সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে যা পাকিস্তানের স্বীকৃতি প্রদানকে সহজ করবে। কিন্তু শেখ মুজিব স্বীকৃতির আগে এমন কোন আশ্বাস দেবার কথা প্রত্যাখ্যান করেন।[৪৯] ফলে ভুট্টও বাংলাদশকে আমন্ত্রন জানানো থেকে সরে আসেন।
অবশেষে সম্মেলনের একদিন আগে সম্মেলনের সাধারন সম্পাদক হাসান তোহামিসহ উচ্চপদস্থ একটি প্রতিনিধিদল ১৯৫ পাকিস্তানীর বিষয়ে শেখ মুজিবকে রাজী করানোর জন্য ঢাকায় আসার সীদ্ধান্ত নেয়।[৫০] ২১শে ফেব্রুয়ারী, সম্মেলনের আগের রাতে, প্রতিনিধিদলটি ঢাকার উদ্দেশ্য যাত্রা করেন যেখানে কুয়েত, লেবানন ও সোমালিয়ার তিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আলজেরিয়া, সেনেগাল ও প্যালেস্টাইনের প্রতিনিধিবৃন্দ যোগদেন।[৫১] এদিকে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে প্রধান দাতা দেশ হিসেবে পরিচিত মিশর, সৌদি আরব এবং ইন্দোনেশিয়া অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের জন্য উভয় দেশের উপর চাপ প্রয়োগ শুরু করে। ২১শে ফেব্রুয়ারী রাতে ৩৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে উভয় দেশকে একটি সমাধানের আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।[৫২] অবশেষে ২২শে ফেব্রুয়ারী সম্মেলনের শুরুতে লাহোরে অবস্থিত টেলিভিশন স্টুডিওতে দেয়া বক্তৃতায় ভুট্ট বলেন-
“আল্লাহর নামে এবং এদেশের জনগনের পক্ষথেকে আমি ঘোষণা করছি যে, আমরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিচ্ছি।… আমি বলছি না যে এটি আমি পছন্দ করছি, আমি বলছি না যে আমার হৃদয় আনন্দিত। এটি আমার জন্য একটি আনন্দের দিন নয়, কিন্তু বাস্তবতাকে আমরা বদলাতে পারিনা”। [৫৩]
তবে ১৯৫ পাকিস্তানীর বিচার ত্যাগ করার বিষয়ে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত কোন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এমন কোন দাবী করা থেকে তিনি বিরত থাকেন। শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিশ্রুতি ছাড়াই পাকিস্তানের স্বীকৃতি আদায়ে সমর্থ হলেও, বাংলাদেশে ঐ সকল পাকিস্তানীর বিচার হবে না তা সম্মেলনের সকলেই নিশ্চিত হয়ে যান।
অবশেষে চুক্তি
অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপে, পাকিস্তানে জিম্মি অবশিষ্ট বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্ধার, জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ, এবং আর্ন্তজাতিক সাহায্য নিশ্চিতকরনসহ একাধিক কারনে পাকিস্তানীদের বিচারের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। এরই প্রেক্ষিতে ২৪শে মার্চ ১৯৭৪, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দুই দিন আগে, পাকিস্তানে জিম্মি সর্বশেষ ২০৬ জন বাংলাদেশী নাগরিককে মুক্তি দেয়া হয়।[৫৪]
তবে, পাকিস্তানের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনাসহ একাধিক কারনে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৯৫ পাকিস্তানীর প্রত্যাবাসন কিছুদিন আটকে রাখে। সমস্যা সমাধানের সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ১৯৭৪ সনের এপ্রিলে দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠানের ঘোষনা দেয়া হয়। দি গার্ডিয়ানের এক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ভুট্টকে যে ক্ষমতা দিয়েছিল, তা ছিল শর্তসাপেক্ষ- অর্থাৎ ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির পরই তা দেয়া যাবে। কিন্তু ইসলামী সম্মেলনে যোগদানের সময় পাকিস্তানীদের মুক্তি ছাড়াই বাংলাদেশ স্বীকৃতি আদায় করে নেয়ায় পাকিস্তান জানায় যে, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ১৯৫ পাকিস্তানীর বিচারের বিষয়টিই আগে নিষ্পত্তি করতে হবে। [৫৫]
৫ই এপ্রিল ১৯৭৪ সনে শুরু হওয়া বৈঠকে কামাল হোসেন, আজিজ আহমেদ ও সেরওয়ান সিং যথাক্রমে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেখানে ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ ঘোষনা করে যে, পাকিস্তান যদি তার একত্তরের কৃতকর্মের জন্য জনসম্মুখে ক্ষমাপ্রার্থনা করে’ এবং বিহারি প্রত্যাবাসনসহ পাকিস্তানের সম্পদ বন্টনে রাজি হয়, তাহলেই শুধু ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর উপর আনীত অভিযোগ তুলে নেয়া হবে। জবাবে, পাকিস্তান জানায় যে, ‘সম্পদ বন্টনহলে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আর্ন্তজাতিক দেনাও গ্রহন করতে হবে। ভুট্ট যেহেতু অনানুষ্ঠানিক ভাবে একাধিকবার দু:খ প্রকাশ করেছেন, সেহেতু ক্ষমা চাইবার বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে সেজন্য বাংলাদেশকেও মার্চ-পূর্ব কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। তাছাড়া, ফেব্রুয়ারীতে মিশরের রাষ্টপ্রধানের মধ্যস্থতায় যে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশ পাকিস্তানী বন্দীদের প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল’।[৫৬]
অবশেষে ১০ই এপ্রিল ১৯৭৪ সনে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পন্ন হয় যার মাধ্যমে ১৯৫ পাকিস্তানী বন্দীর বিষয়টি মিমাংসা হয়।
পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনা?
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ১৩ ধারায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে উল্লেখ করা হয় যে-
“পাকিস্তানের ঐসব বন্দী যে মাত্রাতিরিক্ত ও বহুধা অপরাধ করেছে, তা জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনা এবং আর্ন্তজাতিক আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গনহত্যা হিসেবে চিহ্নত; এবং এই ১৯৫ জন পাকিস্তানী বন্দী যে ধরনের অপরাধ করেছে, সেধরনের অপরাধের অপরাধীদের দায়ী করে আইনের মুখোমুখী করার বিষয়ে সার্বজনীন ঐকমত্য রয়েছে”।[৫৭]
পাকিস্তান তার পূর্বের কথা অনুযায়ী অভিযুক্ত আসামীদের নিজ দেশে বিচার করবে এই প্রত্যাশায় বাংলাদেশ ‘ক্ষমাসুলভ দৃষ্টকোন’ (clemency) থেকে ১৯৫ পাকিস্তানীর বিচার ঢাকাতেই করতে হবে, এমন দাবী থেকে সরে আসে। তবে বাংলাদেশ লিখিত ভাবে পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনাও আদায় করে নেয়। ১১ই এপ্রিল দি নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ সংক্রান্ত খবরের শিরনাম ছিল “বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমাপ্রার্থনা” (“Pakistan Offers Apology to Bangladesh”)। [৫৮]
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ১৪ নং ধারায়ও মন্ত্রীদের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়-
“স্বীকৃতিদানের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে ঘোষনা দিয়েছেন এবং বাংলাদেশের জনগনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং অতীতের ত্রুটি ভুলে যাবার জন্য আহ্বান করেছেন (appealed to the people of Bangladesh to forgive and forget)”।[৫৯]
বাংলাদেশ যখন একাত্তরের গনহত্যায় জড়িত স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছিল, এবং পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চেষ্টা করছিল, তখন এভাবেই নিরীহ বাঙালিদের জিম্মিকরে, জাতিসংঘের সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত রাখাসহ বাংলাদেশকে বহুমুখী আর্ন্তজাতিক চাপের মধ্যে রেখে পাকিস্তান ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীকে ভারতীয় বন্দীদশা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
কিছু প্রশ্নের উত্তর
ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর পর্যালোচনায় এটি নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত যে, পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি খুব সহজে হয়নি এবং এবিষয়ে বাংলাদেশের সবোর্চ্চ প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু এই লেখাটি শুরু হয়েছিল আরো কিছু সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর খোজার জন্য—
প্রশ্ন ১. ত্রিপক্ষীয় চুক্তি কি পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছে?
উত্তর:
অবশ্যই না। আর্ন্তজাতিক চুক্তির ধারা যা প্রকাশ করে, তাতেই সীমাবদ্ধ থাকে, এখানে অন্যকিছুও বোঝানো হয়েছে কী-না তা নিয়ে অযথা সন্দেহ প্রকাশের অবকাশ নেই। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির যে ধারায় প্রত্যাবসন নিয়ে বলা হয়েছে, তা নিম্নরূপ—
১৫. আলোচ্য বিষয়ের আলোকে, বিশেষত:, বাংলাদেশের জনগনের কাছে অতীতের সব ত্রুটি ভুলে যাওয়া ও ক্ষমা করে দেবার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আবেদন বিবেচনা করে, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশ সরকার ক্ষমাশীলতার পরিচয় দিয়ে বিচার চালিয়ে না যাওয়ার সীদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্মত হয় যে, ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দীকে দিল্লী চুক্তির অধীন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সাথে প্রত্যাবাসন করা যেতে পারে। (15. In the light of the foregoing and, in particular, having regard to the appeal of the Prime Minister of Pakistan to the people of Bangladesh to forgive and forget the mistakes of the past, the Foreign Minister of Bangladesh stated that the Government of Bangladesh had decided not to proceed with the trials as an act of clemency. It was agreed that the 195 prisoners of war might be repatriated to Pakistan along with the other prisoners of war now in the process of repatriation under the Delhi Agreement.)[৬০]
এখানে ক্ষমাশীলতা শুধু বাংলাদেশ সরকারের চালুকরা তখনকার বিচার না চালিয়ে যাওয়ার জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু গনহত্যায় তাদের অপরাধের ক্ষমার কথা কোথাও বলা হয়নি, বরং ১৩ ধারায় বাংলাদেশের বক্তব্য উদ্ধৃত করে উল্লেখ করা হয়েছে- “পাকিস্তানী বন্দীরা যে ধরনের অপরাধ করেছে, সেধরনের অপরাধের অপরাধীদের দায়ী করে আইনের মুখোমুখী করার বিষয়ে সার্বজনীন ঐকমত্য রয়েছে”।
পাকিস্তানের আদালতে বা আর্ন্তজাতিক আদালতে এদের বিচারকে এই চুক্তি কোন ভাবেই ব্যহত করে না।
তবে পাকিস্তান নিজেও যে এটি জানে, তার সাম্প্রতিক প্রমানও রয়েছে। বাংলাদেশে স্থানীয় যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়া মাত্রই পাকিস্তান তীব্রভাবে এর বিরোধীতা করে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ভুলকরে সিমলা চুক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে বিষয়টি মিটে গিয়েছে, এমন মন্তব্যও করেন। কিন্তু বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানকে জানায় যে, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের জন্য পাকিস্তানেরও উচিত একই সাথে নিজেদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা, পাকিস্তান তখন ‘স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ বলে দ্রুত তার অবস্থান পরিবর্তন করে।[৬১, ৬২]
প্রশ্ন ২. বাংলাদেশ কি হস্তান্তর পরবর্তী বিচারের দাবী করেছিল?
উত্তর:
হ্যা, হস্তান্তরের পরও বাংলাদেশ সরকার ঐ ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবী অব্যাহত রাখে। ২৮শে জুন ১৯৭৪ ভুট্টর বাংলাদেশ সফরের সময় বঙ্গবন্ধু তার কাছে যুদ্ধাপরাধের বেশ কিছু প্রমাণ হাজির করেন। এর মধ্যে রাও ফরমান আলীর স্বহস্তে লিখিত একটি নোটও ছিল, যাতে লেখা ছিল-
“পূর্ব পাকিস্তানের সবুজ রঙ বদলে লাল করে দিতে হবে” (The green of East Pakistan will have to be painted red) [৬৩]
যুদ্ধের পর পাকিস্তান যে হামুদুর রহমান কমিশন গঠন করে, সেখানেও বাংলাদেশ গনহত্যার প্রমাণাদি সরবরাহ করে। ১৯৭৪ সালের ২৩ অক্টোবর দাখিলকৃত কমিশনের সম্পূরক প্রতিবেদনে এর প্রাপ্তি-স্বীকার রয়েছে।[৬৪]
প্রশ্ন ৩. পাকিস্তান কি তাদের সৈন্যদের বিচারের কোন উদ্যোগ নিয়েছিল?
উত্তর:
হামুদুর রহমান কমিশন প্রতিবেদনের দ্বিতীয় ভাগে পাকিস্তানী সৈন্য ও তাদের এদেশীয় দোসরদের যুদ্ধাপরাধের বিস্তারিত উল্লেখপূর্বক সুপারিশমালায় কর্তব্য অবহেলার কারনে বেশ কিছু সামরিক কর্মকর্তার শাস্তির সুপারিশ করে। কমিশন, মার্চ থেকে ডিসেম্বর ১৯৭১ সময়কালীন পাকিস্তান আর্মির নৃশংসতা (atrocities), অবাধ নিষ্ঠুরতা (wanton cruelty) ও অনৈতিকতা (immorality) তদন্তে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আদালত অথবা কমিশন গঠনের সুপারিশ করে। এ বিষয় তদন্তের জন্য পর্যাপ্ত প্রমান কমিশনের কাছে আছে বলে জানানো হয়। কমিশন এও সুপারিশ করে যে, যেহেতু বাংলাদেশ সরকারকে পাকিস্তান স্বীকৃতি দিয়েছে, সেহেতু প্রয়োজনীয় প্রমানাদির জন্য ঢাকার সহোযোগিতাও চাওয়া যেতে পারে।[৬৫] উল্লেখ্য, কমিশনের এই সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিল করা হয় ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর প্রত্যাবাসন পরবর্তী অতিরিক্ত তদন্তের পর, যেখানে ওই ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর অনেকের স্বাক্ষাৎকারও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তবে কেন প্রতিশ্রুতি দেবার পর এবং নিজস্ব কমিশনের সুপারিশের পরও পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত এসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করেনি, তার ব্যাখ্যা এবং বিচারের দাবী পুনর্ব্যক্ত করার নৈতিক ও আইনি সুযোগ বাংলাদেশের রয়েছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের অপরাধ যে ক্ষমা প্রার্থনার ন্যায্যতা প্রতিপন্ন করে তা ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতেই উল্লেখ করা আছে। ফলে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টিও আবার তুলে ধরা যেতে পারে।
প্রশ্ন ৪. পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়া পযর্ন্ত স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা কি সঙ্গত?
উত্তর: ১৯৭২ সন থেকেই পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী আর স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আইন, প্রক্রিয়া ও ধারা ভিন্ন রাখা হয়েছে। ভারত থেকে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের প্রত্যাবাসনের পরও স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যহত ছিল। ফলে, এখনও এই বিচার স্বাধীন ভাবে অগ্রসর হতে পারে।
গনহত্যায় পাকিস্তানী এবং স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের সম্মিলিত অংশগ্রহন ছিল। যে অন্যায়ে উভয় পক্ষের অংশগ্রহনই অত্যাবশ্যকীয়, সেসব ক্ষেত্রে উভয় পক্ষকেই আলাদাভাবে দোষী স্বাব্যস্ত করা যায়। স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের সহায়তা ছাড়া যেমন পাকিস্তানীদের পক্ষে বাঙালী বুদ্ধিজীবিদের খুজে বের করা সম্ভব হতো না, তেমনি পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের অবর্তমানে হয়তো স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীরা একাজে অংশ নিত না। কিন্তু এ ধরনের সংঘটনশীল ঘটনার (concurrent case) বিচারে এক অপরাধীর অনুপস্থিতি অন্য অপরাধীর বিচারকে বাধা দেয় না।
যেসকল ক্ষেত্রে উভয় যুদ্ধাপরাধী এক সাথে কোন অপরাধ করেছে, সেসব ক্ষেত্রেও যদি প্রমান করা যায় যে উক্ত অপরাধ এক অন্যের সাহায্য ছাড়াও করতে পারতো, সসব ক্ষেত্রেও (sufficient combined causes) তো অবশ্যই, এমনকি যেসব ক্ষেত্রে পাকিস্তানী অথবা স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীরা স্বাধীন ভাবে হত্যা, ধর্ষন বা অগ্নিসংযোগে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে (direct causation), সেসব ক্ষেত্রেও যে কোন যুদ্ধাপরাধীর বিচার আলাদা ভাবে করা সম্ভব। ফলে, স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া বা না হওয়ার সাথে সর্ম্পকিত নয়।
ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ প্রমান করে যে, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ নাজুক ছিল এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মতন অনুকূল পরিস্থিতি বাংলাদেশের ছিল না। নানামুখী বাধার কারনে বাংলাদেশকে তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মুলতবি রাখতে হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের প্রত্যাবসন চুক্তি, স্থানীয় সহোযোগিদের (যুদ্ধাপরাধীদের নয়) শর্তসাপেক্ষ সাধারন ক্ষমা অথবা তাদের বিচারের জন্য সংশোধিত আইন ও সংবিধানে কখোনই ভবিষ্যৎ বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়নি। [সমাপ্ত]
ahamed ডট syeed এ্যাট gmail ডট com
তথ্যসূত্র:
[৪৬] “Sheikh Mujib holds out for recognition”, দি গার্ডিয়ান, ১৫/০৯/১৯৭২, পৃ- ৩
[৪৭] “Bhutto Given Authority to Recognize Bangladesh”, দি নিউ ইয়র্ক টাইমস, ১০/০৭/১৯৭৩, পৃ- ৮
[৪৮] “Arabs Come Early to Islamic Parley”, দি নিউ ইয়র্ক টাইমস, ১৯/০২/১৯৭৪, পৃ- ৫
[৪৯] “Bhutto's bid to wield the oil”, দি গার্ডিয়ান, ২০/০২/১৯৭৪, পৃ- ১৯
[৫০] “Islamic Mission to Dacca Seeks Bengali-Pakistani Reconciliation”, দি নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২২/০২/১৯৭৪, পৃ- ২
[৫১] “Last attempt to coax Mujib”, দি গার্ডিয়ান, ২২/০২/১৯৭৪, পৃ- ৫
[৫২] "Pakistan admits that Bangladesh exists as nation”, দি নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২৩/০২/১৯৭৪, পৃ- ৬৫
[৫৩] প্রাগুক্ত
[৫৪] “Repatriation Is Completed For Bangladesh Nationals”. দি নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২৫/০৩/১৯৭৪, পৃ- ৮
[৫৫] “Trials of PoWs on agenda”, দি গার্ডিয়ান, ৮/০৩/১৯৭৪, পৃ- ২
[৫৬] “Bangla's had bargain”, দি অবজারভার, ৭/০৪/১৯৭৪, পৃ- ৮
[৫৭] Text of the tri-patriate agreement of Bangladesh-Pakistan-India, ধারা ১৩, দেখুন http://www.genocidebangladesh.org/?p=196
[৫৮] “Pakistan Offers Apology to Bangladesh”, দি নিউ ইয়র্ক টাইমস, ১১/০৪/১৯৭৪, পৃ- ৩
[৫৯] Text of the tri-patriate agreement of Bangladesh-Pakistan-India, ধারা ১৪, প্রাগুক্ত
[৬০] প্রাগুক্ত, ধারা ১৫
[৬১] “Pakistan will not interfere in Bangladesh's war crimes trial”, ৬/৪/২০১০, www.pakistannews.net/story/620495
[৬২] “Pakistan won't interfere in war crimes trial”, বিডিনিউজ, ৬/৪/২০১০
[৬৩] হামুদুর রহমান কমিশন রিপোর্ট, দ্বিতীয় ভাগ, অধ্যায় ২।
দেখুন http://www.bangla2000.com/bangladesh/independence-war/report-hamoodur-rahman/
[৬৪] প্রাগুক্ত।
[৬৫] প্রাগুক্ত।
মন্তব্য
অনেক কিছু জানলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ সাঈদ ভাই তথ্যবহুল এবং চিন্তা জাগানিয়া এই সিরিজটার জন্য। আগামীতে আপনার কাছ থেকে আরও এ ধরনের ক্ষুরধার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
অনেক ধন্যবাদ।
আর্কাইভ ঘেটে মনে হলো, সত্তরের দশকের অনেক অজানা ঘটনাই আসলে বের করা সম্ভব।
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"
-----------
চর্যাপদ
অনেক কিছু জানলাম, আরো জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আব্দুর রহমান
বস, থাইমেন না, চালাইয়া যান। আমাদের আরও অনেক কিছু জানার আছে।
সাঈদ ভাই, শুধু ধন্যবাদ জানালে আপনাকে ছোট করা হবে, এই লেখাটি ধন্যবাদের উর্দ্ধে! একটি রিকোয়েষ্ট; এদেশীয় war criminals (রাজাকার, আলবদর) মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত করেছে, তার প্রামাণ্য দলিল সম্পর্কে কিছু লিখবেন কী?
খুব কষ্ট নিয়ে চলতি ঘটনা প্রবাহ লক্ষ্য করছি, সত্যি কী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে? নাকি নয় ছয়ের খেলায় জানোয়ারেরা বরাবরের মতই বেঁচে যাবে...
অগ্নিবীণা,
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
যুদ্ধাপরাধ বা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রামাণ্য দলিল নিয়ে এখানে কিছু তথ্য পাবেন। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কয়েকবার লিখতে গিয়েও পারিনি... এই ভয়ংকর অপরাধের কথা পড়া ও লেখা দুটোর জন্যই অনেক অনেক মানষিক শক্তির প্রয়োজন। জানি, এটা কোন অজুহাতই হতে পারে না
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"
-----------
চর্যাপদ
একই অনুরোধ জানাতে গিয়ে দেখলাম অগ্নিবীণা আগেই জানিয়েছেন। আপনার এই লেখাটা খুব মন দিয়ে পড়েছি। আমার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন এই লেখাটার জন্য।
আপনার কাছ থেকে গবেষণালব্ধ লেখা আরো পাওয়ার আশা রইল। ভালো থাকবেন।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
তথ্য গুলোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ! ফেইস বুকে আপনার লেখা আর "তথ্য" এর সাইটের লিঙ্ক শেয়ার করেছি! আসলে সচেতনাই পারবে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে জনমত কে সংঘটিত করতে!
পুরো একটা অধ্যায় একেবারে নতুন করে পড়লাম
০২
এরকম আরো কিছু আশা করছি
এইরকম পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
-------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
ধন্যবাদ।
(এই সিরিজের আগে আমার সর্বশেষ লেখায় অনেকদিন না লেখার কথা স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য আপনি হঠাৎ একদিন একটি মন্তব্য রেখে গেলেন দেখলাম... সেজন্যও কৃতজ্ঞতা জানবেন)।
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"
-----------
চর্যাপদ
- আমাদের যে মিনমিনে পররাস্ট্রমন্ত্রনালয়, তাতে কখনো পাকিস্তানিদের বিচারের সামনে দাঁড় করানো যাবে কিনা, এই ব্যাপারে আমি যথেষ্ট সন্দিহান!
তবে আমি যারপরনাই ভাবে অপেক্ষা করে আছি পাকিস্তানিদের এদেশীয় দোসর রাজাকারদের বিচার এবং শাস্তি দেখতে। এদেরকে দিয়ে শুরু হোক, অনেকে তো মনে করেছে এটাও সম্ভব না আমাদের দেশে। এইটা করা দরকার হারানো মনোবল ফিরে পেতে। যে মনোবল ছিলো মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ সরকারের। একবার এই মনোবল ফিরে আনা গেলে পাকিস্তানিদেরকে গুনে গুনে খালি বিচারের সম্মুখীনই না, কানে ধরে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চাইতে বাধ্য করা যাবে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
স্যালুট জানায়ে গেলাম... আর কিছু বলার নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ দিয়ে খাটো ক রতে চাইনা । তবে এত বেশী আবেগাতারিত হয়েছি যে কি লিখব ভেবে পাচ্ছিনা । ডবল স্যালুট ।
অসাধারন..…।! অসাধারন..……! অনেক অজানাকে জানলাম।এরকম তত্ত বহুল লেখা আজকাল খুব কম দেখতে পাই। ইতিহাসের এই কথা গুলো আমাদের দেশের মানুষ কে জানানো দরকার।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য
এখানে একটু সমস্যা আছে। আপনি রেফারেন্স দিয়েছেন HRC Report। কমিশন কিন্তু এই বক্তব্যের সাথে একমত নয়। রাও ফরমান আলীর কাছে কমিশন ব্যাখ্যা চেয়েছিল, ফরমান আলী যে ব্যাখ্যা দিয়েছিল কমিশন সেটাকেই সঠিক মনে করেছে এবং বাংলাদেশের ব্যাখ্যাকে তারা গ্রহণ করেনি।
(রিপোর্টে) the green of East Pakistan will have to be painted red; বলেছিল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (NAP) মোহাম্মদ তোহা ১৯৭০ সালে পল্টনের এক সমাবেশে। ফরমান আলী তোহার কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছিল এবং তাকে সতর্কও করেছিল এর জন্য। তোহা এটা অস্বীকার করে এবং সে কাজী জাফর, রাশেদ মেননের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে বলেছিল।
তো ফরমান আলী যাতে ভুলে না যায় সেজন্য একটা ডায়রিতে লিখে রেখেছিল এবং সেটাই বঙ্গবন্ধু ভুট্টোর কাছে পরবর্তীতে ফটোকপি সরবরাহ করেছিল।
ফরমান আলী মনে করে এই লাল রক্ত বোঝায় না বরং সমাজতন্ত্রের লাল বোঝায়।
এবং কমিশনও নানা কারণে তার বক্তব্যের সাথে একমত হয়েছিল। কারণগুলো হচ্ছে,
যেখানে লেখা হয়েছিল সেটার হেডিং হচ্ছে "Governor's Secretariat, East Pakistan"
এরপর বেশকিছু এন্ট্রি আছে, যেমন "Siraj - Iqbal Hall, D.U.", "Case against Mr. Toha and others.", এরপর চিফ জাস্টিসের ফোন নাম্বার আছে, ...
তো আমার মনে হয়, এই রেফারেন্স যথাযত না।
- ইমতিয়াজ
নতুন মন্তব্য করুন