আজ পূর্ণগ্রাস হর্তগ্রহণ

সাঈদ আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন সাঈদ আহমেদ (তারিখ: রবি, ২৭/০৬/২০১০ - ১০:১৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ বছরের প্রথম পূর্ণগ্রাস হর্তগ্রহণ। সাড়ে তিন বছর পর এই পূর্ণগ্রাস আসায় বাংলাদেশে ব্যপক সাড়া পড়েছে। এই পূর্ণগ্রাস হর্তগ্রহণ উপলক্ষ্যে সরকার ও বিরোধীদল পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছে।
বিরোধীদলীয় নেত্রী তাঁর বাণীতে কষ্ট হলেও “মাত্র কয়েকটি ঘণ্টা কাজ বন্ধ রেখে জালেম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবার জন্য সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন”।

এ উপলক্ষ্যে বিরোধীদল “স্মৃতি তুমি বেদনা” নামে একটি স্মৃতিচারনমূলক স্মরনিকা প্রকাশ করেছে। এতে বর্তমান বিরোধীদলের দু’বার ক্ষমতায় থাকাকালীন হর্তগ্রহণের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান; হরতাল দমনে “আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২” প্রবর্তন; এবং একদিন হরতালে কাজ বন্ধ থাকলে দেশ কতগুলো যমুনা সেতু থেকে বঞ্চিত হয় সে সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

এদিকে হরতালের কারনে জনজীবনে যে ব্যপক দুভোর্গ হয় তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও দু:খ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন- হরতাল দিয়ে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে “ওয়াদা খেলাপ করেছে” বিরোধীদল।

হর্তগ্রহণ স্মরণে সরকারীদলও “ভুলোনা আমায়” নামে একটি দেয়াল-পত্রিকা প্রকাশ করেছে। এতে তাঁরা বিরোধীদলে থাকা কালে যে শতশত আংশিক ও পূর্ণগ্রাস হর্তগ্রহণ পরিবেশন করেছেন তার সংক্ষিপ্ত বিবরনসহ হরতালের গনতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ সময় আজ রবিবার সকাল ৬টা ০০ মিনিট ০০ সেকেন্ডে গ্রহণ শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬ টা ০০ মিনিট ০০ সেকেন্ডে শেষ হবে। পূর্ণগ্রাস গ্রহণের স্থায়িত্ব হবে ১২ ঘন্টা ০০ সেকেন্ড। রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের সকল জেলায় পূর্ণ হর্তগ্রহণ দেখা গেলেও হর্তগ্রহণের উষ্ণতা রাজধানী ঢাকাতেই বেশি অনুভূত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এরই মধ্যে হর্তগ্রহণের প্রাক-উষ্ণতায় গতরাতে বেশ কিছু গাড়ি ভষ্মীভূত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মহাজাগতিক এ দৃশ্য দেখতে দেশের কোটি কোটি মানুষ আজ বিশেষ ব্যবস্থায় চোখ-কান খোলা রাখবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হা হা হা... জটিল লিখছেন
দুঃখের দিনেও হাসি পাইলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল। শেষ হাসিটা রাজনীতিবিদরা না হেসে আমরা হাসতে পারলেই হয়।
-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

অতিথি লেখক এর ছবি

... খবরে আরও বলা হয় কেউ যেন এই পূর্ণগ্রাস হর্ত্যগ্রহণ খালি চোখে না দেখেন। সবাইকে এ দৃশ্য উপভোগে রঙিন চশমা বা ঠুলি পড়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। মন খারাপ

অফটপিক : এই পূর্ণগ্রাসে দেশের কী লাভ-ক্ষতি হবে সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। সরকারি বা বিরোধীদল কাউকে এ ব্যাপারে উদ্বিগ্নও মনে হয়নি। তবে সম্ভাব্য এই উষ্ণতা থেকে আবারও আগুন লাগতে পারে এই আশায় অনেকে আলু গুদামজাত করতে শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

-------------------------------
কুটুমবাড়ি

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

সবাইকে এ দৃশ্য উপভোগে রঙিন চশমা বা ঠুলি পড়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে

আম-জনতা ঠুলি পড়ে আছি বলেই তো মাথায়-ভাঙা কাঠাল কপাল বেয়ে পড়ছে, তবু দেখতে পারছি না মন খারাপ
-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক, সাঈদ ভাই। আমি এই কথাটিই বলতে চেয়েছি।

যা হোক, আপনার লেখা বিয়াফক ভালু পাইসি। দারুণ সৃজনশীল। শিক্ষণীয়ও। চলুক

----------------------
কুটুমবাড়ি

সিরাত এর ছবি

হরতালের কোল্যাটারাল ড্যামেজ বেশি এবং ক্রমেই বাড়ছে, তাছাড়া হরতাল মানে সহিংস টেন্ডেন্সিকে স্যাংশন দেয়া। আরো ফোকাসড আন্দোলন করে ভাল প্রচারণা পাওয়া যেতে পারে। এই যে গতরাতে গাড়ি পুড়লো, মানুষ একজন অগ্নিদগ্ধ হল, সেটার দাম কে দেবে?

আজকের বাংলাদেশ থেকে হরতাল আস্তে আস্তে উঠে যাওয়া উচিৎ। আশা করি বিরোধী দল এটি বুঝবে। কৌশলেও এর থেকে বেটার ট্যাকটিকস কি নেই?

এখানে সমস্যা মনে হয় যে হরতাল যেভাবে একটি ইস্যু ব্যক্তিকেন্দ্রিক করে, অন্য অস্ত্রগুলো সেভাবে করে না। তাছাড়া একেবারে আমজনতার জন্য হরতাল বোঝা সহজ, বিশেষ করে সমর্থকগোষ্ঠীর জন্য। সুতরাং হরতালের একটি উঁচু উপযোগ সবসময়ই থাকবে। তবে অতিব্যবহারে এটি নেগেটিভ হয়ে যেতে পারে। যেমন আওয়ামী লীগ যে ১৭৬ দিনের অসহযোগ আন্দোলন ডেকেছিল (যদিও সেটি হরতাল নয় ঠিক), এরকম এখন কি আর ডাকা যাবে? হয়তো, যদি মানুষ সেরকম ক্ষিপ্ত হয়। তবে রাজনৈতিক দলগুলোও আশা করা যায় কিছু জিনিস শিখেছে।

একেবারে রাজনৈতিক হিসাব থেকে মনে হয় বিএনপি বলবে: এই হরতাল ঠিকাছে। আমাদের কথা শুনামু কেমনে নাইলে? তাছাড়া মাঝে মাঝে না দিলে রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদেরই বা কেমন দেখায়? এটা এক ধরণের শো অফ ফোর্স-ও। আমার মনে হয় আওয়ামী লীগও সেটা বোঝে দেখেই বেশি কিছু বলে না। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ তো হরতালের রাজা (ছিল)। হাসি

একই সাথে, হরতালে বেশি শো-অফ-ফোর্স করা আবার হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।

আশা করি হরতাল ব্যবহার করলেও পরিমিত ব্যবহার হবে। তবে, মনে রাখা দরকার হরতালের একটা পজিটিভ দিকও আছে: পরিবেশ ভাল থাকে। হয়তো দলগুলো সামনে এটাও ব্যবহার করতে পারে, যদিও বেশ খোঁড়া হয়ে যায়। হাসি কিন্তু আজকের পরিবেশ সচেতনতার দিনে মানুষ নিজেই মিটলেস ডে'র মত কারলেস ডে পছন্দ করে নিতে পারে। এটাকে বিরোধী দল আরো কিছু ইস্যুর সাথেও মিলিয়ে কিছু কি করতে পারে? (মনে হয় না!)

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

হরতালের কোল্যাটারাল ড্যামেজ বেশি এবং ক্রমেই বাড়ছে

সহমত। এটা হলো আসলে মন্দের ভালো। সরকার ও বিরোধীদলের কোল্যাটারাল ড্যামেজ বেশি হলে উভয় পক্ষই হয়তো হরতালের অধিক ব্যবহারে এর মূল্যমানে যে ঘাটতি দেখা দিবে-- তা অনুধাবন করতে পারবে।
-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

বিশ্বকাপে ফুটবলারদের দেখে রাজনৈতিক নেতারা ভালু কিছু শিখছে মনে হইলো। আইজ পাবলিক লাইব্রেরির সামনে ক্যামেরা দেইখা কুনু গুঁতা-গাতি না খায়াই, হুদা পটকা বাতাসে পাকা অভিনেতা এ্যানি যেমনে মাটিত লুটায়া পড়লো, মনে হইলো বিশ্বকাপের কুনু খেলা দেখতাছি ...

এই হরতাল, তা যেই ডাকুক না কেন - তারে তীব্র মাইনাচ ... ...

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

হেহে... এদেরকে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে পাঠানো উচিত।
মনে যখন করিয়েই দিলেন-

-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌আহা, সেই হরতাল দিন আজ আর নাই..........রিক্সা করিয়া হাসিয়া হাসিয়া..........

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

হুম... রাস্তার মাঝে ফুটবল আর ক্রিকেট... দিনগুলি মোর...
-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

দ্রোহী এর ছবি

হর্তগ্রহণ সফল হৈল নাকি বিফল হৈল?


কি মাঝি, ডরাইলা?

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

সরকার বলিয়াছে (বিদ্যুতের অভাবে) হারিকেন দিয়ে খুজেও নাকি হর্তগ্রহণ পাওয়া যায় নাই।
বিরোধীদল বলিয়াছে, বায়ু-সমুদ্রে ডুবিয়া যেমন বায়ুর দেখা পাওয়া যায় না, তেমনি হর্তগ্রহণের মধ্যে ডুবিয়া থাকার কারনেই সরকার হর্তগ্রহণ দেখতে পাচ্ছে না।
আমজনতা ভাবিতেছে-- উহারা ডুবিয়াই যদি থাকিবে, তাহলে ডুবিয়া মরে না কেন!
-----------
চর্যাপদ

-----------
চর্যাপদ

স্পর্শ এর ছবি

পোস্টটা খুব মজার হয়েছে। দেঁতো হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।