বিএনপি সম্পর্কে যার যে মতই থাকুক না কেন, জনসমর্থনের ভিত্তিতে এটি যে দেশের বৃহত্তর দুইটি দলের একটি, তা অনস্বীকার্য। এমন একটি দলের লিখিত "ভাবাদর্শ" কি সামরিকতন্ত্র বা কর্পোরেটতন্ত্র হওয়া উচিত?
যে দলটি নিজেদের জনগনের দল বলে প্রচার করে, সে আমজনতার কথা না বলে "সামরিক বাহিনী এবং ব্যবসায়ী শ্রেণীর বেশি প্রিয়" এমন কথা তার নিজের ভাবাদর্শে কী করে উল্লেখ করে? জামায়াতে ইসলামী তার আদর্শিক-মিত্র-- এমন কথাই বা কিভাবে বিএনপি তার দলীয় ভাবাদর্শে লিখে প্রচার করে?
এমন পীড়াদায়ক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ যে কোন রাজনৈতিক দল সোৎসাহে প্রচার করতে পারে, তা অবিশ্বাস্য!
Party Ideology
The BNP promotes a very center-right policy combining elements of conservatism, corporatism, nationalism, militarism, anti-anarchism and anti-communism. The party believes that Islam is an integral part of the socio-cultural life of Bangladesh, and favors Islamic principles, as well as cultural views together.
গণতন্ত্র নেই, কিন্তু সামরিকতন্ত্র আর কর্পোরেটতন্ত্রের কথা বলা আছে! প্রথমে ভেবেছিলাম নিশ্চই কোথাও ভুল হচ্ছে। হতেই পারে। তাই বিএনপির নিজস্ব ওয়েবসাইটে গেলাম। দেখে আবারো অবাক হবার পালা।
এখানে সামরিকতন্ত্রের বদলে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর কথা বলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই সাথে এটাও যোগ করা হয়েছে যে—দলটি ব্যবসায়ী শ্রেণী, সামরিক বাহিনী আর রক্ষণশীলদের কাছে সবচে’ বেশি প্রিয়!
শুধু কি তাই? জামাতে ইসলামিকে অনেকেই বিএনপির শুধু রাজনৈতিক বা কৌশলগত মিত্র বলেই ভেবে এসেছেন। অথচ বিএনপি তার দলীয় ওয়েবসাইটে এই দলটিকে দলীয় ভাবাদর্শের অংশ হিসেবেই প্রচার করছে। দেখুন—
It is more popular among the country's business class, military, and conservatives, and is credited with bringing socio-economic stability in the country.The party believes that Islam is an integral part of the socio-cultural life of Bangladesh, and favors Islamic principles, as well as cultural views together. This is particularly seen through its alliance with the Islamic party of Jamaat.
এরপর যতই দেখি, ততই অবাক হই। তারেক রহমানের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে ফেসবুক, উইকি সবখানেই সামরিকতন্ত্র, কর্পোরেটতন্ত্র আর জামাত হলো দলীয় ভাবাদর্শের অংশ!
গণতন্ত্রে বিরোধীদলের ভুমিকা কত গুরুত্বপূর্ণ অথবা কেন সরকারী দলের একটি বিকল্প থাকা উচিত—তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু গত তিন যুগ ধরে যারা এই দলটিকে ভালোবেসে সমর্থন দিয়ে এসেছেন, তারা কি সত্যিই সামরিকতন্ত্র, কর্পোরেটতন্ত্র আর জামাত-কেন্দ্রিক ভাবাদর্শের জন্যই এই সমর্থন দিয়েছেন?
কী ভাবে এবং কী ভেবে দলটির এই ভাবাদর্শ লিখলো? কী ছিল তাদের মনে?
সরকারী দলের ব্যর্থতা বা দলীয় নেতাদের আচরনে সাধারনত সরকার বিরোধী একটা অস্থায়ী ভোট ব্যাংক তৈরি হয়, যারা প্রতি নির্বাচনে বিকল্প কাউকে ভোট দেবার জন্য খুঁজে থাকেন। এভাবেই গত দুই দশকে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। কিন্তু, এই ভাবাদর্শ কি বিএনপি-র জন্য সহায় হবে?
মন্তব্য
বিরক্ত হন কেন সাঈদ ভাই? মনে যা ছিল তাই লিখেছে। অতি সরল ও সত্যবাদী পার্টি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হুম... দেশ এগিয়ে যাচ্ছে... নেতারাও সত্যবাদী হয়ে উঠছে! জিম ক্যারির লায়ার লায়ার ছবির কথা মনে হচ্ছে... কেউ মনে হয় অমন সত্যব্রত গ্রহন করে লিখতে বসেছিল।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
ওয়েবসাইট দেখে এত অবাক হলেন কেন বুঝলাম না! বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। জিয়াউর রহমান এসেছিলেন মিলিটারি থেকে। তারেক রহমান নিজের পরিচয় দেয় ব্যবসায়ী হিসেবে। এরাই তো বিএনপির বাপ-মা। আর ইসলাম তো সব দলেরই দাবার গুটি, জামাতের সাথেও ঘুরেফিরে সবাই আঁতাত করে ক্ষমতার এপাশে আর ওপাশে। তো ওয়েবসাইটে এগুলো লেখা থাকবে না তো কি ভিন্ন কিছু আশা করেছিলেন?!!!
আমি অন্তত কিছু মানুষকে জানি যারা "জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো" এই আশা নিয়ে বিএনপি করে। আমার ব্যক্তিগত ভাবনা যাই হোক, ভোটের হিসেবে এটি তো দেশের দ্বিতীয় জনপ্রিয় দল। এতগুলি মানুষ নিশ্চই সামরিকতন্ত্র, কপোর্রেটতন্ত্র আর জামাতকে সমর্থন করে ভোট দেয়নি?!
বিএনপি যেন এই দলীয় মতাদর্শটি প্রচার করে "লাভ ইট অর লীভ ইট" মনোভাব নিয়ে সেই সব মানুষদের বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করলো!
হয়তো উচিত হয়নি, কিন্তু সত্যিই অবাক হয়েছি
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
আমার ধারণা বহু মানুষ বি এন পির এই মতাদর্শের সাথে একাত্ম হয়েই বি এন পি সমর্থন করে। এরকম মতধারার মানুষ বাংলাদেশে আছে, তাই তাদের একটা দলও আছে। কি আর করা?
বিএনপি যারা করেন তাঁদের কয়জন এই মতাদর্শ জানেন, সেটা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ আছে। জানলে এই লোকগুলো খালেদা জিয়াকে "দেশনেত্রী", "আপোষহীন নেত্রী" আখ্যা দিতো না। উপরে দেশ আর জনগণের কথা বলা বিএনপি তলে তলে জনগণের পিঠে পা দিয়ে নানা ইজমের চর্চা করছে যেগুলোর দুই পয়সা দাম বাংলাদেশের মানুষের কাছে নাই, তাঁদের জন্য দরকারীও না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
মানুষের শুভবুদ্ধির প্রতি আপনার অনেক আস্থা। খাঁড়ান। পোস্টাইতেছি।
অনেক ফেসবুক পাতা দেখলাম যেখানে এই মতাদর্শগুলি কপি-পেস্ট করা হয়েছে। এখন যদি কেউ দাবি করে যে সে একটি দলের আদর্শ না জেনেই তাকে সমর্থন করে, তাহলে তো আরো বিপদ।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
সাঈদ ভাই, খন্দকার দেলওয়ার কিংবা আমি মওদূদ আহমেদদের মতো কারো কথা বলছি না। আমি বলছি প্রান্তিক লোকজনের কথা। মফস্বলের মানুষ হিসেবে আমি দেখেছি, বিএনপির বাক্সে ভোট যারা দেয়, কিংবা মিছিলে যারা হাত উঁচিয়ে 'নিজের খায়া ধানের শীষ' শ্লোগান দেয়, তারা নানা ধরণের ইজম আসলে ঠিক কতোটা বুঝে! তাদের কাছে বিএনপি'র পরিচয়টা আসলে কী!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কাছাকাছি বিষয়, তাই একসাথে লিখছি--
ধ্রুব বর্ণন, এসবের সাথে একাত্ম হয়ে সমর্থন করার লোক অবশ্যই আছে। জেএমবি-র আদর্শও তো অনেককে উদ্ভুদ্ধ করে।
কিন্তু হাসিব বলতেই পারেন যে সবাই সব জেনে ভোট দেয় না, সব তথ্য থাকে না বা তার ব্যবহার হয়না। নির্বাচনতো মুক্ত বাজারের মতনই-- তথ্যের ঘাটতি থাকলে ভুল সীদ্ধান্ত হবেই। প্রাথমিক ভাবে, না জেনে কেনার দায় হয়তো ক্রেতারই। আমি নিজেইতো না পড়ে কত সফটওয়্যারের নীতিমালায় "এ্যাগ্রি" করলাম!
তাই আমি ধুসর গোধূলির সাথেও একমত। প্রান্তিক সমর্থকদের কতজনইবা মতাদর্শ নিয়ে চিন্তা করে? নির্বাচনের হিসাবও তো অনেক জটিল যেখানে আদর্শের বাইরেও আঞ্চলিকতা, প্রার্থির ব্যক্তি ইমেজ, পরিবর্তনের আকাঙ্খা ইত্যাদি কাজ করে। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। তাই ৩০০ জন পদপ্রার্থী ভিন্ন ভিন্ন কারনে নির্বাচিত হতেই পারেন। কিন্তু নির্বাচিত হবার পর তাদের তো দলীয় মতাদর্শ মেনেই চলতে হয়। আর সেখানেই জনসচেতনতা জরুরী।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
সাঈদ আহমেদ,
অর্থনীতিতে ইনফরমেশন এ্যাসাইমেট্রি নামে একটা ধারণা আছে। মানুষ আসলে পুরো ইনফরমেশন জানে না। এবং সেই ইনফরমেশন হাতের কাছে থাকলেও সেটা সঠিকভাবে প্রসেস করার ক্ষমতা রাখে না।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি বিএনপির সাথে ছাগুপনার প্রচ্ছন্ন যোগ রয়েছে। পাকিপ্রেমী-অজামাতী-"প্রগতিশীল" মুসলিমদেরকে বিএনপি সমর্থন করতে দেখেই সেটা বোঝা যায়।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আমি বিশ্বাস করতে চাই, আমার দেশে প্রতিক্রিয়াশীল মানুষের সংখ্যা কম। গণতন্ত্রের জন্য প্রগতিশীল মানুষ বিএনপি-সহ সব বড় দলেই থাকা প্রয়োজন। তা না হলে, প্রগতিশীলতার একচেটিয়া বাণিজ্য তৈরি হয়।
কিন্তু বিএনপি যদি নিজেই এভাবে প্রগতিশীলদের দুরে ঠেলে দেয়, তাহলে তো মুশকিল!
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
আমার মতে জামাতের সাথে কাঁধ মিলিয়ে বিএনপি প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রগতিশীলতার মুখোশ পরার উপায় বাতলে দিয়েছে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বহু ব্যাবহৃত পাপেটের ফাঁকফোকর গলে যেমন পুতুলনাচিয়ে'র হাত-আঙুল দেখা যায়, অনেকটা তেমনই।
বাহ্, ভালো বলেছেন তো!
এই জন্যই গুরুজনরা বলেন-- বাচঁতে হলে জানতে হবে।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
সামরিকবাহিনীও তো জনগণের কথা বলে। জনসেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েই তারা দেশপ্রেম দেখায়! এখানে জনগণ বলতে কে কাকে বোঝাচ্ছে, মূল বিবেচ্য সেটাই।
দল হিসেবে প্রত্যেকেই তার শক্তিশালী দিকটি শক্তভাবে প্রকাশ করবে। এক্ষেত্রে অস্পষ্ট অবস্থানে গেলেই বরং মার খেতে হবে। উদাহরণ, ইউনুস ডাক্তার। প্রগতিশীলরা বিএনপির টার্গেট না; বরং তাদের টার্গেটদেরকেই প্রগতিশীল ট্যাগ দিয়ে প্রচার করাই তাদের উদ্দেশ্য (অনেকটা জামায়াত-ডিফাইন্ড মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ কেইস)। বাংলাদেশের মানুষের একটা বিরাট অংশই এই টার্গেটের মধ্যে পড়ে, যারা প্রগতিশীলতা শো-অফকে বিরাট অর্জন মনে করে। এতে করে সামরিকবাহিনী বা ব্যবসায়ী, যাদের সিংহভাগই আমজনতার চেয়ে নিজেদেরকে উন্নত প্রজাতির মানুষ মনে করে, তাদের সমর্থন পাওয়া সহজ। আমজনতার মধ্যে আবার ছাল-নাই-কুত্তার-বাঘা-নাম সিন্ড্রোম কাজ করে। প্যাটে ভাত থাক বা না থাক, প্রগতিশীলতার ট্যাগের দাম অনেক। এদের একটা অংশের কাছে আবার 'রাজা' মানেই উন্নততর শ্রেণী এবং নিজেদেরকে প্রজা হিসেবে দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমরা শিরা-উপশিরায় রেসিস্ট। একজনের দৈনিক রোজগার ১২০ টাকা হলে সে ১০০ টাকা উপার্জন করা অন্যের চেয়ে নিজেকে বেটার ক্রিয়েচার মনে করে। এক কাতারে দাঁড়ানো খুব কঠিন কাজ।
বিএনপির জন্য আরো সমস্যা হলো, আমজনতার কাছে পৌঁছাতে আওয়ামী লীগের ইতিমধ্যে যে বেইজ আছে, তার সাথে পাল্লা দিতে গেলে একই ফর্মূলা কাজ করবে না। বরং উলটা ফর্মূলায় গেলেই লাভ।
আওয়ামী লীগ আবার বিএনপি-জামায়াতকে নকল করতে গিয়ে (যেমন, হাসিনার হিযাবাভিনয়) ধরা খেয়েছে, সংবিধানে বিসমিল্লাহ নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়ার মধ্যে পড়ে গেছে। ইসলামকে ভাঙ্গাইয়া খাওয়া দলগুলোর সাথে জোট গড়ে আওয়ামী লীগের কয়ভোট বেড়েছে আল্লামালুম; কিন্তু সংস্কৃতির নিবিড় প্রভাবে বেড়ে ওঠা এই দেশের মানুষের কাছে রাজনৈতিক ইসলামের গুরুত্বহীনতার খবর নেয় নি। যারা রাজনৈতিক ইসলামের ভক্ত, তারা কোন দুঃখে জামায়াত বিএনপি রেখে লীগকে ভোট দিতে যাবে? হাসিনা সাত সাতটা হিযাব পড়ে মোরাকাবায় বসেও এক্ষেত্রে কোনো লাভ নেই। সুতরাং বিএনপির এই নীতি তাদের রাজনীতির জন্য ঠিক আছে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমেরিকার রিপাবলিকান পার্টি কর্মক্ষেত্রে সামরিকতন্ত্র, কর্পোরেটতন্ত্র অথবা পরিবর্তনবিমুখতার মতো অনেক মতাদর্শই অনুসরন করে। কিন্তু এমন একটি নিম্ন আয়ের দেশে কর্পোরেটতন্ত্রের আদর্শ বুকে নিয়ে রাজনীতি!
এক দিক থেকে ভালোই-- সবাই নিজেদের "শক্তিশালী দিকটি শক্তভাবে প্রকাশ করুক"। তাহলে জনগনেরও চিনে নিতে সুবিধে হয়।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
কর্পোরেট ( ফটকাবাজি ও লুঠপাঠ অর্থে) অর্থনীতি , আর্মির স্বেচ্ছাচারিতার সহযোগি হয়ে অথবা ইসলাম রক্ষা মুসলমানী জাতীয়তাবাদের ধুয়া তুলে সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি দখল দেশে এক শ্রেণীর লোক বিত্তবান ক্ষমতাবান হয়েছে তারা এবং তাদের বংশধরেরা যে conservatism, corporatism, militarism এই সব আদর্শকে পছন্দ করবে এর পক্ষে সাফাই গাবে এটাই স্বাভাবিক যারা বিএনপিকে ভোট দেয় তারা বিএনপি আদর্শ বুঝে না এটা মনে করাটাই বোকামি বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকেই একটা প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক দল যেমনটা ভারতের বিজেপি এবং পাকিস্তানে মুসলিমলীগ কাজেই যারা বিএনপিতে প্রগতিশীলতার সন্ধান করেন তারা হয় অবুঝ না হয় সুযোগসন্ধানী সুশীল।
সামরিক বাহিনীর কোলে জন্ম নেয়া বিএনপির কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করার কারণ নাই।
আর যেখানে জামাত হওয়া কঠিন সেখানেও বিএনপি বনে টিকে তো থাকা যায় ... এরপর সময় বুঝে ...
তবে কর্পরেট দালালি সবাইকেই করতে দেখা যাচ্ছে। এই ধারা থেকে দেশের প্রগতিশীল দলগুলোকেই সরে আসতে হবে। এবং প্রগতিশীল দলগুলোর ভোটারকেই সেই প্রেশার দিয়ে যেতে হবে।
ফেসবুকে শেয়ার করলাম।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সহমত।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
এই যে তুরস্ক, ১৯২৪ (ঠিক মনে নাই) থেকে সেক্যুলারিজম চর্চা করে এসেছিল। এরপরও সেদিনের কথা কোন এক ইসলামপন্থী দল ক্ষমতা পেয়েছিল। আসলে যত যাই কেউ করুক না কেন একটা শক্ত বিষ এদেশকে পেয়েছে। হয়ত আমাদেরও একদিন কোন মাহাথির ক্ষমতা দখল (গণতান্ত্রিক পন্থায় আওয়ামী লিগ ছাড়া কোন দলের ভিতর থেকে আসার আশা করিনা) করবে, তখন যদি আমরা শান্তিতে কক্সবাজারে বউ/গার্লফ্রেন্ড নিয়ে বিকিনি পরিয়ে সানবাথ করতে হয়ত পারব। তাও বেশিদিন টিকবে না (তুরস্ক থেকে শিক্ষা পেলাম)। আর নয়ত আমেরিকা অথবা রাশিয়া এদেশ দখল করুক (শর্ত প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লাগবে, যদিও ওবামা টাইপের লোক একাজ করবে না)।
মোট কথা, আমি আশাহীন।
আপনার অনেক আশা/ভাবনার সাথেই একমত নই। তুরস্কের কথা বললেন, তাই তুরস্কের গল্পটা বলি--
১৯৮০ সনে জেনারেল কেনান এভরেন সামরিক ক্যুর মাধ্যমে তুরস্কে ক্ষমতা দখল করেন এবং নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। প্রথমে সংবিধান বাতিল করে সামরিক অধ্যাদেশ দিয়ে দেশ পরিচালনা করলেও, ১৯৮২ সনে তিনি সংবিধান সংশোধন করেন এবং সামরিক বাহিনীর বিচার যেন সাধারন আদালত না করতে পারে, সংবিধানে সে সংক্রান্ত ইনডেমনিটিও তৈনি করেন। এরপর তিনি "গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য" হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে সেই সংবিধান জায়েজ করিয়ে নেন এবং নিজেকেই পরবর্তী সাত বছরের জন্য গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দেন।
সামরিকতন্ত্রের এই কাহিনীটা খুব পরিচিত মনে হচ্ছে না?
সামরিকতন্ত্রে কে যে কাকে অনুসরন করে, বলা মুশকিল।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
বিএনপি চরিত্র সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল থাকলেও এই তথ্য গুলো জানা ছিল না।
বিএনপির বিপুল জনপ্রিয়তা পায় আশির দশকে, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময়ে। ওই সময়ে খালেদা জিয়ার আপোষহীন ইমেজের কারণে তরুণ সমাজের মধ্যে বিএনপি গ্রহনযোগ্যতা প্রচুর ছিল। আমার নিজের ছাত্রজীবন কেটেছে ওই সময়ে, তখন ছাত্রদল শিবিরকে প্রতিহত করেছে এমন অনেক ঘটনা আছে।
বিএনপির নেতৃত্বে তারেক জিয়া আসার পরে আমার মনে হয়েছে ওদের জামাতপ্রীতি অনেকগুনে বেড়েছে। ভোটের সমীকরনে জামাতের ভোট যোগ করলে তারা লীগকে হারাতে পারবে...অনেকটা ত্রিভুজের দুই বাহুর যোগফল তৃতীয় বাহুর চেয়ে বেশী...হিসাবটা ছিল এই রকম। এতে দেশের কী ক্ষতি হবে, দলের কী ক্ষতি হবে, এবং দলের প্রগতিশীল সমর্থকদের বক্তব্য কী...এগুলো সবই গৌণ হয়ে দাঁড়ায়। এই বুদ্ধিহীনতার মূল্য বিএনপিসহ গোটা জাতিকে দিতে হয়েছে।
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
_______________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমি আসলে নিশ্চিত নই-- আশির দশকের শেষ দিকের বিএনপি আর এখনকার বিএনপি-র পার্থক্য কি শুধু কর্মে না-কি মতাদর্শেও?!
একমত, আসলেই ছাত্রদলের একটা ভিন্ন পরিচয় ছিল এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। এমনকি নব্বই দশকের প্রথম দিকেও ছাত্রদলের সাথে অন্যান্য প্রতিক্রিয়াশীল দলের সংঘাত ছিল! এখোন কে যে কোনটা!
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
এই জিনিসটা চোখের সামনে আনার জন্য ধন্যবাদ। কয়েকটা পর্যবেক্ষণ আর প্রশ্ন:
১। কর্পোরেটিজম শব্দটা কি আসলেই কর্পোরেট বলতে আমরা আজকাল যা বুঝি, সেটা বোঝায়? একটু আগেও আমার এই ধারণাই ছিল, কিন্তু এটাকে গুগল করে বেশ একটা অন্য রকম একটা অর্থই পেলাম, উইকিতে বিস্তারিত আছে। একনজর চোখ বুলিয়ে পুরো ব্যাপারটা বোধগম্য হয়নি, তবে ২টি লাইন কোট করি
In contemporary usage, "corporatism" is often misused as a pejorative term against the domination of politics by the interests of business corporations (Corporatocracy) based on the inaccurate interpretation of "corporat" in corporatism as referring to business corporations.
Corporatist views of community and social interaction are common in many major world religions such as Christianity, Islam, Hinduism, Buddhism and Confucianism.[9] Corporatism has been utilized by many ideologies across the political spectrum, including: absolutism, capitalism, conservatism, fascism, liberalism, progressivism, reactionism, social democracy, socialism, and syndicalism.
২। মিলিটারিজম টাও উইকিতে দেখলাম, এটার অর্থ মনে হল আমাদের সাধারণ ধারণার অনেকটা কাছাকাছি-- শক্তিশালী সেনা আর আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি, যদিও সেই বাহিনীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা কতটুকু হবে সেটা "মিলিটারিজমে"র মধ্যে পড়ে বলে মনে হল না, অর্থাৎ "আন্তর্দেশীয়" ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামানো বেশী মনে হল, "অন্তঃদেশীয়" ব্যাপারের থেকে।
৩। দেশে থাকতে মঘা ইউনানি, হেকিমি কবিরাজ এদের লিফলেটগুলো পড়লে একটা জিনিস খেয়াল করতাম, সবগুলোর ভাষা প্রায় হুবহু একই! মনের মধ্যে তখন প্রশ্ন জাগত---কে সেই মহান লোক, যে সর্বপ্রথম এই লেখাটা লিখেছিল, আর তারপর থেকে বাকি সবাই তাকে কপি করা শুরু করল?
ভাবছি, ঠিক একইভাবে, এটা যদি জানা যেত যে কে এই বহুল কপি-কৃত লেখাটুকু আদতে লিখেছিলেন, তাহলে আরো পরিষ্কার একটা ধারণা পাওয়া যেত।
৪। আর "পপুলার এমং বিজনেস ক্লাস, মিলিটারি....." এটা নিয়ে বলার কিছু নাই। খালি মাথা নাড়াইলাম। ক্লাস ফাইভের কোন শিশু বললে অবাক হতামনা, কিন্তু একটা জাতীয় দল কিভাবে দাবী করে যে "মিলিটারীর" মত একটা রাষ্ট্রীয় সংস্থায় তারা বেশী জনপ্রিয়, এটা আমার মাথায় ঢোকেনা।
ক.
মিলিটারিজমের অর্থ তত্ত্বীয় এবং ব্যবহারিক দু'দিক থেকেই বহুমুখী হতে পারে। উইকি আমেরিকান হেরিটেজ অভিধান থেকে যা উদ্ধৃত করছে, তা হলো-
Glorification of the ideas of a professional military class" and "Predominance of the armed forces in the administration or policy of the state
এদিকে ওয়েবস্টারের মতে মিলিটারিজম হচ্ছে-
: predominance of the military class or its ideals
: exaltation of military virtues and ideals
: a policy of aggressive military preparedness
অর্থাৎ, এটা শুধু আন্ত:দেশীয় নিরাপত্তা বা সম্প্রসারণবাদের অংশই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিরও সামরিকীকরণ, যাকে আমরা সামরিকতন্ত্রই বলি।
এবার আসুন ব্যবহারিক দিকটি দেখি। বাংলাদেশের সামরিক অভিজ্ঞতা চার ধরনের-
১. আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাহসী ভুমিকা;
২. বিদেশের শান্তি মিশনে ইতিবাচক ভুমিকা রাখা;
৩. সামরিক (১৫ আগস্ট পরবর্তী) অথবা আধা-সামরিক (১/১১ পরবর্তী) শাসনের মাধ্যমে সরাসরি দেশ পরিচালনা;
৪. দেশের অভ্যন্তরীণ এবং চলমান কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ-- যা অপারেশন ক্লীন হার্টের ন্যায় বিতর্কিতও হতে পারে, আবার বন্যা দূর্গতদের সাহায্যের ন্যায় ইতাবাচকও হতে পারে। এর সাথে র্যাবের সাথে সংযুক্ত হয়ে (সারাদেশে) অথবা সরাসরি (পাবর্ত্য অঞ্চলে) অভিযান তো রয়েছেই।
এর মধ্যে প্রথম ভুমিকাটি কোন রাষ্ট্রনীতির অংশ ছিল না। শান্তি মিশনও মিলিরাটিজমের আওতায় পড়ে না, কারন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সামরিক-ভুমিকাহীন জাপানও এখন শান্তি মিশনে যায়।
তৃতীয়টি তো অবশ্যই সামরিকতন্ত্র, এমন কি চতুর্থটিও অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়েই।
আর বাংলাদেশের প্রশাসনিক নিয়োগের ইতিহাস পড়লেও দেখবেন কীভাবে প্রশাসনিক পদ আর নীতির সামরিকীকরণ হয়েছে।
খ.
কর্পোরেটিজম নিয়েও এভাবে তত্ত্বীয় আর ব্যবহারিক ব্যাখ্যা দেয়া যায়। এই যেমন ধরুন ওয়েবস্টারের ব্যাখ্যা অনুসারে কর্পোরেটিজম হলো-
"the organization of a society into industrial and professional corporations serving as organs of political representation and exercising control over persons and activities within their jurisdiction"
গ.
অর্থাৎ, ব্যাখ্যা বহুমুখী হতে পারে। ঠিক আছে।
কিন্তু বাংলাদেশের কোন দল যখন কোন নীতিকে তার মতাদর্শে স্থান দেয়, তখন বাংলাদেশের নিজস্ব ইতিহাস চিন্তা করেইতো তা দেয় বা দেয়া উচিত, তাই না? দেশের প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী রাখা আর দেশকে সামরিকতন্ত্রে পরিচালনা করা দুটি ভিন্ন বিষয়। আমাদের ইতিহাসের পাল্ল্ কিন্তু দ্বিতীয়টির দিকে ভারী, তাই কারো এমন মতাদর্শ দেখলে বেনিফিট আব ডাউট দেয়া কঠিন হয়ে যায়।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
বড় একটা মন্তব্য করার পর মনে হল, আমি যা বলতে চাইছি, তার সিংহভাগই একলাইনে বোঝানো যেত---
Militarism আর Corporatism বলতে সামরিকতন্ত্র বা কর্পোরেটতন্ত্র বোঝায় না। এগুলোর সঠিক ইংরেজী অনুবাদ সম্ভবত Militocracy আর Corporatocracy।
বাহুল্য মন্তব্য মনে হলে আগেই দুঃখপ্রকাশ করছি।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
বিএনপি দেখি সত্যবাদী দল!
কাকস্য পরিবেদনা
লেখাটা পড়ে খুব অবাক হয়েছি। কৌতুহলবশত উইকিপিডিয়াতে বিএনপি সম্বন্ধে লেখা আর্টিকেলে এই এক্সটার্নাল লিংকটা পেলামা। উইকিতে বলা হচ্ছে সাইটটা বিএনপির কিন্তু বিএনপি সম্বন্ধে কোন কিছুই নাই এখানে। স্বাভাবিকভাবেই কৌতুহল আরো বেড়ে গেল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে অফিসিয়াল তথ্য পাবার কথা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে। সেখানেও তেমন কোন তথ্য নেই। নিদেনপক্ষে দলগুলোর গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা উচিত ছিল।
অভাজন
বাংলাদেশের রাজনীতির দুটি দল।একটি আওয়ামীলীগ, অন্যটি এন্টি আওয়ামীলীগ।এখানে গঠনতন্ত্র মন্ত্র কোন ব্যাপার নয়।
আওয়ামীলীগ ইসলামী লেবাস পরতে ব্যস্ত হয়ে সব আদর্শ এখন গুবলেট পাকিয়ে গেছে।
তবে আচার আচরণে আওয়ামীলীগকে বাংলাদেশের সবচাইতে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়াশীল দল হিসেবেই বিবেচনা করা যায় কোন সন্দেহ ছাড়া।বাংলাদেশের সবচাইতে পুরাতন রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামীলীগ যখন সভ্য রাজনীতির আন্ডারওয়্যারটাও পরতে শেখেনি তখন অন্য কারো কাছ থেকে কিছু আশা করা ছেড়ে দিয়েছি।
শুধু, একটাই চাওয়া, আমার কাজ আমাকে করতে দাও, অহেতুক বাগড়া বাধিওনা আর চান্দা চেয়ে আমার ব্যবসার বারোটা বাজাইওনা, ব্যস।আইনশৃংখলা যে দল ভাল রাখতে পারবে, তাকেই আমি ভোট দিব।
নতুন মন্তব্য করুন