হেনস্থা
একদা সান্ধ্যকালে আমার আজাইরা গফসফে বিরক্ত হইয়া সচলের সম্মানিত মহান মড হিমু আমাকে কহিল, গালগল্প বাদ দিয়ে একটা লেখা লেখেন। আমি তখন হিমুকে তীব্র বেদনার সহিত জানাইলাম, হিমু, আমিতো রচনা লিখিতে চাই কিন্তু কি নিয়া রচনা লিখিব তাহা খুজিয়া পাইতেছিনা। হিমু ততোধিক বিরক্ত হইয়া কহিল, নৃত্যশিল্পী হিসেবে আপনার জীবনের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতাগুলো লিখিয়া ফেলুন। কিভাবে পচা ডিম খাইয়া খাইয়া আপনি ডিমের স্যালাদ বানাইতে শিখিলেন সেইটা লিখিয়া সচলে দেন। প্রথমে আমি বালক ভাবিয়া তাহার কথা আমলে নেই নাই। কিন্তু আজ প্রত্যুষে অফিসে বসিয়া সচল পাঠ করিতে করিতে, বিশেষ করে লিলেন ভাইয়ের ছাগু সাহিত্য রচনা খানি আমার মনে গভীর ভাবের উদয় করিল। ভাবিলাম বেশীর ভাগ বাঙ্গালীই বিখ্যাত হয়েছেন মরনের পরে। তো সে সময়তো আমার এখনও ফুরাইয়া যায় নাই। মরনের রিস্ক আমাকে নিতেই হবে, অন্য সকল মানব এর মতো। তখন দেখা যাইবে আমার নৃত্যদৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ হয়তো ইউনিভার্সেল ষ্টুডিওতে রাখা আছে, আমার লেখা সচল ব্লগ গুলো রবীন্দ্রনাথের অপ্রকাশিত চিঠির বইয়ের পাশেই গাদা গাদা করিয়া বিক্রিত হইয়া চলিতেছে। একবার কিছু মনে হইলে তাহা আমার মাথায় প্যারেকের মতো গাথিয়া যায়, কিছুতেই মাথা ঝাকাইয়া সেই প্যারেক আমি নাড়াইতে পারি না। জীবনে যদি তাহারে মালা নাহি দিতে পারো টাইপের আবেগে আমি কম্পিত হইয়া ঠিক করিয়া ফেলিলাম লিখিয়াই ফেলাইবো আমার মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা সমূহ। আমি তাহার সাথে আরো একটি ব্যাপার লক্ষ্য করিলাম যে বিশেষ বিশেষ ভাব আমার শুধু শুক্কুরবারেই উৎপন্ন হয়, এর আগের সচলা নারী লেখাটিও আমার শুক্কুরবারেই মনের ভিতর উদয় হইয়াছিল। কারন দুইটা হইতে পারে, শুক্কুরবারে অফিস ঠান্ডা থাকে বিধায় ভাব উদয় হওয়ার সুযোগ হয়, দ্বিতীয়তঃ হইতে পারে, পরের দুই দিন বেলা করিয়া ঘুম থেকে উঠিতে পারিব সেই আনন্দ আমাকে বিভোর করিয়া রাখে, যাহা হয়তো ভাব উৎপাদকের প্রভাবক হিসেবে কাজ করিয়া থাকে।
তো যখন আমি আমার অতীব দুঃখের সেই ইতিহাস রচনা করিতে লাগিলাম, কিভাবে পচা ডিম হইতে ডিমের স্যালাদ, সেই স্যালাদ দিয়া স্যান্ডউইচ বানাইতে শিখিলাম ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার দুই নয়ন অশ্রুজলে ভাসিয়া যাইতে লাগিল সেই সাথে ভাসিতে থাকিল আমার কাগজ - কলম সব। লিখিতে লিখিতে তখন মনে হইল কি হইবে আমার দুঃখের কথা লিখিয়া সচলায়তনের সমস্ত সচলকে গড়াগড়ি দিয়া কাদাইয়া? কেউ আমার প্রতিভার দাম দিলো না সেই কষ্ট আমার বুকেই থাকুক। সকলের সম্মিলিত কাদাকাটিতে কাজের কাজতো কিছুই হইবে না, মাঝখান থাকিয়া বসুন্ধরা টিস্যুর অপ্রত্যাশিত ব্যবসা অন্যসকল সমস্যার উদয় করিবে। মার্কেটিং এর লোকজনকে অযথায় ঘুরিতে হইবে মার্কেট সার্ভে করিয়া উহার কারন বাহির করিবার জন্য। নতুন বিজনেস টার্গেট স্থির করিতে হইবে উহার পর আবার কেউ টিস্যু না কিনিলে টার্গেট ফেল হইলে উনাদের চাকুরী নিয়া টানাটানি লাগিবে। এছাড়াও শ্রমিকগনকে হয়তো ওভারটাইম খাটিতে হইতে পারে যাহাতে হঠাৎ করিয়া স্ত্রীর মনে সন্দেহ দানা বাধিতে পারে, স্বামী কিসের বাহানায় এতো রাত্রি করিয়া বাড়ি ফিরিতেছে? দাম্পত্য কলহ কখনও কখনো কঠিন আকার ধারন করিতে পারে, বধূ রাগ করিয়া পিত্রালয়ে আশ্রয় গ্রহন করিতে পারে।
অতোশতো ভাবিয়া ঠিক করিলাম মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা বাদ দিয়া বরং নৃত্যশিল্পী জীবনের হেনস্থা গুলিই লিখিয়া ফেলি। কাছাকাছিইতো ব্যাপারটি। যাহা ভাবিলাম তাহাই করিলাম। আমাদের ধর্মপ্রান প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিভিন্ন কারনেই তাহাদের বাড়িতে ঘন ঘন মিলাদ মাহফিলের দাওয়াতের আয়োজন করিয়া থাকেন। ছেলে - মেয়ের জন্মদিন, নিজেদের বিবাহ বার্ষিকী, ছেলে -মেয়ের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া ইত্যাদি উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করিয়া এগুলি আবর্তিত হইয়া থাকে। বাংলাদেশ থেকে সব হারাইয়া বিদেশে আসিয়া ধর্মটাকে তাহার অতীব কষিয়া আকড়াইয়া ধরেন, কিছুতেই যেনো ছুটিয়া যাইতে না পারে। হারাম - হালাল, শুয়োরের চর্বি, পশ্চিম দিক - পূর্ব দিক এইসব নিয়া মহা ব্যস্ততার মধ্যে তাহারা কালাতিপাত করেন। বাংলাদেশের বেশীরভাগ লোকজন ব্যবসা করেন কিংবা রেস্টুরেন্টে কাজ করেন বিধায় দাওয়াত গুলো সাধারনতঃ রবিবার দুপুরে হইয়া থাকে। আমি মিলাদ মাহফিলের দাওয়াত তেমন একটা পছন্দ করি না। সারাক্ষন সবার সামনে একখানা ভালো মানুষী মুখোভাব ধরিয়া রাখিতে হয়, এই দুনিয়া কয়দিনের, হইয়া যাইবে ফানা টাইপ। কিন্তু আসলে এতো ভালো মানুষতো আমি আর না। আর আমার নিকট দুনিয়া খুবই ইন্টারেষ্টিং একটা জায়গা, তাহা যে কয়দিনেরই হোউক না কেনো। পরেরটা পরে দেখিবো। আমার রবিবারের মধ্যানহ ভোজের নিমন্ত্রন তেমন একটা পছন্দের তালিকায় পড়ে না। লক্ষী, অন্নপূর্নারা যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠিয়া তাহাদের তিন সন্তানকে আপাদমস্তক সাজাইয়া লইয়া বেলা বারো ঘটিকার মধ্যে নিমন্ত্রন বাটিতে উপস্থিত হইতে পারেন, আমি তাহা মোটেও পারি না। আমি শনিবারে রাতে ছায়াছবি দেখিয়া কিংবা কোথাও বলো তা - রা - রা মার্কা পার্টি করিয়া কিংবা কাহারো সাথে অন্তর্জালে আলাপ - সালাপ করিয়া রাত্রি তিন ঘটিকায় শুইতে যাই। ফলে পরদিন বেলা দশটার আগে আমার তথা আমার বাড়ির কারোই নিদ্রাভংগ হয় না। এরপর উঠিয়া গড়াইয়া প্রাতঃরাশ সারিয়া আমার মেয়েকে কোন রকমে একটু - আধটু ঠিক ঠাক করিয়া লইয়া নিমন্ত্রন বাড়ি যাইতে যাইতে বেলা দ্বিপ্রহর গড়াইয়া যায়। আগে যদিও অন্যান্য ভাবী স্থানীয়রা নিজেদের পরম দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য ভাবিয়া, আমাকে সৎ পথে আনার জন্য এই সমস্ত লইয়া আমাকে বহু টিটকারী করিয়াছেন, এক কন্যায় এই অবস্থা আরো দুই চারিটি হইলে কি অবস্থা আমার হইবে তাহার বিশদ রম্য আলোচনা করিয়া ইদানীং তাহারা ক্ষান্ত হইয়াছেন। কারন কাজের কাজ কিছুই হয় নাই, মাঝ থাকিয়া আমি দুইটার বদলে আড়াইটায় পৌছানো শুরু করিয়াছি।
আমি যখন পৌছাই তখন সাধারনতঃ মিলাদ শেষ হইয়া হুজুর মোনাজাতে পৌছান। আমি ঢুকিয়া সবার সাথে কুশল আদান - প্রদান করা পর্যন্ত মোনাজাত, যাহার বাড়িতে দাওয়াত কিংবা যাহা উপলক্ষ্য বা যাহাকে উপলক্ষ্য করিয়া মিলাদ তাহার শান্তি কামনার মধ্যেই থাকে। আমি এক ধারে আসন গ্রহন করিবার কিছুক্ষন পর হইতেই মোনাজাতের / নার্গিসের মোড় ঘুরিতে থাকে। তখন উহা অযাচিত অপ্রাসংগিকভাবে নাচ - গান, বিভিন্ন বেদাতী কাজের উপর পড়িয়া যায়। হুজুর আখিরাতে তাহাদের কিরকম ভয়ানক শাস্তি হইবে উহার বিস্তারিত বিবরন দিয়া চিৎকার করিয়া কাদিতে থাকেন। হাশরের মাঠে তাহাদেরকে (আমাকে) কিভাবে কতো ডিগ্রী তাপমাত্রায় বারবিকিউ করা হইবে তাহার রোমহর্ষক বর্ননা থাকে। আশে পাশের সবাই সেই বর্ননা শুনিয়া আর কল্পনায় আমার গ্রীল্ড অবস্থা দেখিয়া শিহরিয়া শিহরিয়া উঠিতে থাকেন। আর আল্লাহর কাছে আমাদের মতো পাপী তাপীর জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করিয়া ডুকরাইয়া ডুকরাইয়া কাদিয়া উঠেন। আমি এক পাশে নির্লিপ্ত মুখ করিয়া বসিয়া দুই হাত মোনাজাতের ভঙ্গীতে উপড়ে তুলিয়া রাখি, চোখে মুখে এমন একটা ভাব ধরিয়া রাখার চেষ্টা করি, এই পাপী আমি না এবং এই মোনাজাতের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই আর রান্নাঘর থেকে আসা সমস্ত সুখাদ্যের ঘ্রান নিতে থাকি। আর ভাবি কখন এই নিদারুন বোরিং মোনাজাত শেষ হইবে আর আমরা ভালো মন্দ কয়টা খাইতে পারিব অন্তত আমার যে উদ্দেশ্য এখানে আসা তাহা পূরন হইবে। যদিও এর মধ্যে হুজুর আমাকে আশা প্রদান করিয়া বারংবার বলিতে থাকেন, আল্লাহ মহান, তিনি মাফ করনেওয়ালা, ভুল স্বীকার করিয়া, তওবা করিয়া, বোরখায় ঢুকিয়া গেলে পরকালে একটা হিল্লা হইলেও হইতে পারে।
এহেন নিদারুন আমার আবার মাঝে মাঝে বিভিন্ন জায়গায় নৃত্য পরিবেশন করার দাওয়াত আসে। এইখানে বসবাস করা বাংগালীদের ছেলে মেয়েরা স্কুল আর মসজিদের বাইরে গানের ক্লাশে কেউ কেউ গেলেও, নাচের ক্লাশের সহিত মোটামুটি তেমন কারোই সংযোগ নাই। তো এইবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন কমিটি সবে ধন নীলমনি আমাকে বেলজিয়ামে নৃত্য পরিবেশন করিতে আবার আমন্ত্রন জানাইলো। আমাকে “ফরেনার ক্যাটাগরী’তে ক্যাটাগরাইজ করা হইলো । হাজার হোক নেদারল্যান্ডসের লোক ব্যাকারনগতভাবে ও রাজনৈতিকভাবে বেলজিয়ামে ফরেনারতো বটেই। আমি পৌছানোর পর আয়োজক বাহিনীর একজন আমাকে অত্যন্ত গর্বের সহিত বাংলাদেশ হইতে আসা ফরেন (বাংলাদেশী ) আর্টিস্টদের কাছে লইয়া গেলেন। লুক্কায়িত মণোভাবটা এমন কাদের কাদের এনেছি দেখো। একজন খুব বিখ্যাত !!! কারো কাছে লইয়া গিয়া খুবই গর্ব ভরিয়া আমাকে পরিচয় করাইয়া দিইয়া তারপর আমাকে কহিলেন, উনাকেতো নিশ্চয় চিনেন। আমি অত্যন্ত লজ্জায় মরমে মরিয়া গিয়া বলিলাম, জ্বী না। আয়োজক সাহবে অবাক হইয়া আকাশ হইতে ভূমিতে পতন করিয়া বলিলেন, কেনো? টিভি দেখেন না? আমি আরো কুন্ঠিতভাবে বলিলাম, আমার বাংলা টিভি নাই। তিনি হুঙ্কার দিয়া উঠিলেন, কেনো নাই? আমি মিনমিনে গলায় বলিলাম, আমরা দিন আনি, দিন খাই, মজদুর মানুষ। আমাদের টিভি দেখিবারতো সময় নাই। উনি আমার মূর্খামিতে চরম বিরক্ত হইয়া রাগান্বিত ভঙ্গীতে চলিয়া গেলেন। আমি অন্য বিখ্যাত লোকদের সাথে আরাম করিয়া বসিয়া মাগনায় পিয়াজু, চা, সিঙ্গারা খাইতে ছিলাম। আমাকে একা পাইয়া তখন বাংলাদেশ থেকে আগত একজন বিখ্যাত শিল্পী মাগনার নসিহত দিলেন। এইযে দেশ, সংস্ক্রতি ভুলিয়া পয়সার পিছনে ছুটছি, কয়েকদিন পর টের পাইবো মজা। সন্তান যখন পুরো বেলজিয়ান (আমার বেলায় ডাচ হইতো উনি উত্তেজনায় খেয়াল করেন নাই) কিংবা বিদেশী হইয়া যাইবে। আখিরাতের কথাতো ভাবি না। ঝারি খাইয়া ভাবছিলাম কহিব নাকি, ওরে অবার্চীন দেশী বানানোর এক মাত্র উপায় কি শুধু দেশী টিভি দেখা? তাহাই যদি হয় তাহলে আমার কন্যা ডাচ বা বন মানুষ হইয়া যাক। বাংলা টিভি দেখিয়া আমার সন্তান কি মানুষ হইবে তাহা আর ব্যাখা করিয়া বলার অপেক্ষা রাখে না। যা আমার অনুষ্ঠানের ছিরি। সঠিক উচ্চারনে বাংলা কহিতে পারে এমন কয় জন আসে টিভিতে? তাহারা আবার নিজেদেরকে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে দাবী করে। কিন্তু সাহস করিয়া কহিতে পারিলাম না কিছুই, মনে মনেই কহিলাম। কে জানে আবার না উঠাইয়া দেয় ।
এরপর দেখিলাম বিখ্যাত লোকদের ঘিরিয়া ছবি তোলার হিড়িক লাগিয়া গেলো। যাহাদের অনুদানে এই অনুষ্ঠান হইতেছে তাহাদের স্ত্রী - সন্তানরা সাজঘরে আসিয়া নামী দামী শিল্পীদের সাথে ছবি তুলিতে লাগিলেন। নামী দামী শিল্পীরাও আরো ফরেন ট্যুরে আসিবার লোভে তাহাদের এক্সক্লুসিভ শাড়ির মায়া ভুলিয়া, বাচ্চাদের কোলে বসাইয়া, ভাবীদের কাধে জড়াইয়া ধরিয়া ছবি উঠাইতে লাগিল। ট্যুর থাকিলে শাড়ীও থাকিবে ইহা পাগলেও বুঝে। ইহা দেখিয়া আমিও উত্তেজিত হইয়া কাহাকে দিয়া আমার স্বামীকে ডাকাইয়া আনাইলাম। তিনি তখন বাইরে দাড়াইয়া অন্যদের সাথে বিড়ি ফুকিয়া ফুকিয়া জম্পেশ আড্ডা দিচ্ছিলেন। এই কারনে ডাকাইতে তিনি যারপর নাই বিরক্ত হইয়া, অন্যদের নজর বাচাইয়া কঠিন একখানা লুক দিলেন আমাকে। তারপর কিড় কিড় করিয়া কহিলেন, যাহাতে আমি ব্যাতীত অন্য কেউ শুনিতে না পায়, এই সমস্ত ছবি দিয়া কি হইবে? আমিও আবদার করিয়া কহিলাম, কি হইবে আর কি হইবে না তাহা আমি জানি না। সব্বাই তুলিতেছে, আমরাও তুলিব। টিভি না থাকার ভুলতো হইয়াই গেছে, ছবি না থাকার ভুল করতে আমি আর রাজী না। ছবি তোলা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার পর যথারীতিতে যথাগতিতে অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন হইয়া গেলো।
পুনশ্চঃ জনতার মুখে খবর পাইলাম আমার বাসায় বাংলা টিভির কানেকশন নাই এই খবর পাইয়া, বাংলা টিভি, এটিএন, চ্যানেল আই ইত্যাদি যাহারা এই অনুষ্ঠান কভার করিয়া ছিল তাহারা বৈশাখী রিপোটিং এ আমার একখানা নৃত্যের ক্ষুদ্রাংশ প্রতিশোধ স্বরূপ বারং বার প্রচার করিয়াছেন। যাহারা আমার নৃত্যাংশ দেখিয়াছেন তাহারা বিমলানন্দে আমাকে দূরালাপনীতে এই খবর জানাইলেন। ভাবখানা এই রকম, হাশরের মাঠে আমার রোষ্ট হওয়াটা এইবার একদম রিকনফার্ম। আমার খুবই জিজ্ঞেস করিতে ইচ্ছে করে তাহাদেরকে, যাহারা দেখিয়াছেন, হাশরের মাঠে তাহাদের জন্য কি বিধান থাকিবে? রবি ঠাকুরের মতে অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে .........। যদিও মালাউনের কবিতা নিয়া তাহারা ব্যস্ত না। তদুপরি কথাতো একটা থাকিয়াই যায়, যাহারা সারাদিন টিভির সামনে বসিয়া নানা রকম অনুষ্ঠানাদি উপভোগ করেন আর আজান দিলে কোনরকমে যাইয়া নামাজ সারিয়া আসেন কারন মনোযোগ দিয়া নামাজ, ইবাদত সারিতে গেলে ওইদিকে আবার সিরিয়াল চলিয়া যাইবে, তাহাদের জন্য কি বিধান আছে? প্রায়ই দেখা যায়, নামাজ আদায়ের পাচ মিনিট সময়ের মধ্যেই অনেকেই ছেলে - মেয়েকে চোখ রাঙ্গাইয়া শাসন কিংবা তরকারী গরম করার মতো কথাগুলো বলিয়া ফেলেন। তাহাদের বিধান কি ???
সতর্কতাঃ নেদারল্যান্ডসের যাহারা এই রচনা পড়িবেন, তাহার দয়া করে এর বিষয়বস্তু নিজেদের মধ্যেই রাখিবেন। পাচ কান করিয়া অন্যদেরকে আমার উপর চটাইয়া দিবেন না। সামনে রোজা আসিতেছে, ইফতারী আমার খুবই পছন্দের বিষয়। নিজে বানাইয়া যেহতু খাইতে পারিব না, দাওয়াতই আমার ভরসা।
তানবীরা তালুকদার
২৩.০৫.০৮
মন্তব্য
জোস্স লেখা।
হেনস্তা বলছেন কেন?
আমার দুঃখ আপনার কাছে জোশ লাগিল? কলিকাল কি তবে ইহাকেই বলে?
ঃ-}, ধন্যবাদ নুশেরাকে।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আপনাকে জাঝা ।
উত্তম জা'ঝা মানে কী, জানেন?
না মানে জানি না, তবে আপনি কহিয়া যান। উত্তম যখ্ন আছে, আশা করি নেতিবাচ্ক কিছু না ঃ-}
বাই দা ওয়ে, আপনাকেও তাহলে একটা জাঝা ঃ-}
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আরে তানবীরা , তুই তো জম্পেস রম্যরচনা লিখেছিস ।
বেশ সুস্বাদু ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আপনি তো খুব ভাল আর বেশ চোখা রম্য লিখেন!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ভাল লাগলো আপনার লেখা পড়ে...
--------------------------------
আমি মরিবনা ...জন্মই যে নেইনি এখনও
আশরাফ
হাসতে হাসতে লুটোপুটি ..... দারুন লিখেছেন
আমার নাচের এত সখ, ছোট বেলায় নাচ শিখতাম, এখানে এসে আর হয়নাই, ইসস দেশে থাকলে নাচ শিখতে পারতাম
--------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
আমি কিন্তু ছোটবেলায় নাচ শিখিনি, কঠিন ধার্মিক পরিবার থেকে এসেছি। নাচ বুড়ো বয়সেই শিখছি, স্বামী অধার্মিক, সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছি। আপনিও কাছে পিঠে কোথাও ঢুকে যান ট্যাংগো, সালসা একটা হলেই হলো।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
দারুণ লিখেছেন। পরবর্তী পর্ব কবে পাচ্ছি?
আপনি তাহলে কনফার্ম আমার জীবনে হেনস্থাই হেনস্থা ??? ভুল অবশ্য বলেন নাই, দেখি আবার পরের শুক্কুরবার কোনটা মনে পড়ে।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
লেখা অতিশয় উপাদেয় হইয়াছে। গোড়া হইতে সমাপ্তি পর্যন্ত বিশদ মজা করিয়া খাইয়া একখানা বড় সড় তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলিলাম।
এই খানার বাবুর্চিকে পাঁচ তারা দিতেও ভুলি নাই।
ধন্যবাদ, না বলিলেও আবার আসিবো।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ইয়ে, মানে তাহলে সচল কবে হচ্ছি ???? ঃ-}
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
তানবীরা, হেনস্থা মানে আপনি জানেন??? হেনস্থা মানে আপনি বোঝেন?? হেনস্থা মানে হলো কোন লেখায় পেঁয়াজু, সিঙ্গারার কথা পড়ে আকুলিত মনে সেটা খেতে রান্নাঘরে গিয়ে উপলব্ধি করা যে ফ্রীজে ............
নিজে নাচতে পারি না কিন্তু নাচ আমার ভয়ংকর পছন্দের একটা জিনিষ আমাদের মতো দূর্ভাগাদের কথা মনে করে একটু কম কম মজার জিনিষ খাবেন আর বেশী করে নাচবেন, ইনশাল্লাহ আপনার গ্রীল্ড হওয়ার তাপমাত্রা ৩০০ ডিগ্রীতে নেমে আসবে .........
স্নিগ্ধা, ওইটাই আমার দুর্বলতারে ভাই। আর মাগনায় খাওয়া হলে আরো সামলাতে পারি না।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হয়তো একদিন আপনার সদগতি হইবেক!
অনেক অনুষ্ঠানে কোরান তালাওয়াত করিয়া নাচগানের পাপীদের জন্য আল্লার দরবারে আগাম তওবা করিয়া, তার পর গীতবাদনের তালে মোনাজাতকারীর দল নৃত্যশিল্পীর দায়িত্ব নেন। তাহাতে আমাদের পাপের বোঝা সবাই মিলিয়া বহন করেন!
এমন মহান মোল্লাদের হাতে থুক্কু মুখে এতটুকু হেনস্থা হইতে পারিলে পরকালে বেহেস্ত নসীব হইবেক।
সবাই বলেন আমীন!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পুতুল, আপনার আইডিয়া আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। কল্পনা করেন বায়তুল মোকারমের হুজুররা সব একসাথে তালে তালে মম চিত্তে, নিতি নৃত্য নাচচ্ছে, দারুন একটা দৃশ্য।
এর উপর একটা ফিকশন লিখুক না কেউ
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
- ফি সাবিলিল্লাহ্
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনাকে ৫০, হিমুকে ২৫ আর লীলেনকে ২৫। তার মানে আপনি ১০০-এ একশ'।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
ধমক শুনে অভ্যস্ত তো। প্রশংসা শুনলে কেমন কেমন যেনো লাগে ঃ-}
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হিমু ছোকরা লেখিকা চিনিতে ভুল করে নাই।
প্রশংসা করিয়া মুখে ফেনা তুলিতে আমি পারি না।
শুধু এটুকু বলি, লেখাটি আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
হিমু, মনে হচ্ছে দরবেশ।
রেনেট আর নিরিবিলিকে একসাথে ধন্যবাদ জানাই।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
- হিমুকে একবার বললেন বালক, প্রতিবাদ করতে চাইলাম। করলাম না।
এখন বললেন দরবেশ, এইবার আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।
আপনি আমার দোস্ত হিমুকে হেনস্থা করার চেষ্টা করছেন খাতুন।
আপনারা যে যাই বলুন, আমি তো বলি হিমু পুরুষই না!
জনগণ ক্ষেইপা গিয়ে প্রশ্ন ছুড়তে পারেন, তাইলে কী!
না জনাব, মনের মধ্যে "লাইসেন আছে না?" টাইপের কিছু আসার আগেই বলে ফেলি, হিমু একজন মহাপুরুষ।
তাঁকে বালক, দরবেশ বলে দয়াপরবশ ভাবার কোনো কারণ নাই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
গোধূলি, হিমুকে পচাইও না। এমনিতেই ও অন্তর জ্বালায় মর্মর করতেছে। তুমি আর তুষে আগুন দিও না।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
অনেক মজার ছিল লিখাটা!!পড়লাম আর একা একা হাসলাম।
-নিরিবিলি
বাহ, খুব ভাল লাগলো এই লেখাটা। আদ্যোপান্ত মজা করার স্টাইল রীতিমত প্রশংসার।
অত দুঃখ করার কী দরকার
আপনি সচলায়তনে একখান নাচের প্রোগ্রাম চালু করেন
আমরা চোখ ভরে দেখব
০২
আমার বাড়িতে এসে লোকজন আমার বড়োভাই- ছোট ভাইবোনকে বিয়ে শাদির আমন্ত্রণ দেয়
আমাকে দেখলে বড়ো জোর জিজ্ঞেস করে- ভালো তো?
আমাকে একবার ভুলেও বলে না যাবার কথা
না বিয়েতে। না মরাতে
আমার মতো অসামাজিক এবং লোক গেলে অনুষ্ঠানের সম্মান কমে যায়
কিন্তু হসপিট্যাল গেলে সবার আগে আমাকেই ফোন করে- আমার অমুক গ্রুপের অত ব্যাগ রক্ত লাগবে
সামাজিক লোক থেকে নাকি অসামাজিক লোকের দলবল বড়ো হয়। এজন্য সব গ্রুপের রক্তই কয়েক ঘন্টার মধ্যে আমার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব বলে তারা বিশ্বাস করে
এবং যারা সব সময়ই ধর্ম এবং সমাজ নিয়ে উপদেশ দেয় কিংবা আমাকে গালাগাল করে
রক্ত নেবার ক্ষেত্রে কিন্তু তারা একটা প্রশ্নও করে না
না ধর্ম
না সমাজ
আমি অনেকবার ইচ্ছা করেই গোঁড়া মুসলিমের জন্য হিন্দু রক্ত জোগাড় করে নিয়ে গিয়ে বলেছি- এই রক্তটা কিন্তু হিন্দু রক্ত। নেবেন?
হালারা ঠোঁটের কোনায় একটা সুবিধাবাদী হাসি টেনে বলে- রক্তে আবার হিন্দু মুসলমান কী?
কিন্তু সুস্থ হয়ে আবার যেই সেই গোঁড়া হয়ে যায়
এবং আমাকে যেমন গালাগাল করে। অন্য ধর্মের লোককেও গালাগাল করে
অথচ চিপায় পড়লে কী লিবারেল যে হয়...
লীলেন ভাই, একদম খাটি কথা বলেছেন। টাকা আর রক্তের কোন জাত নেই। সাথে জাত নেই প্রয়োজনের। কালে কালে তো আর কম দেখলাম না। যতই দেখি স্বার্থপরতা ততই নিজেকে গুটাই আর আরো একার রাজত্বে চলে যাই।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ভাল্লাগলো ভীষণ
লেখাটা যথেষ্ট উপাদেয় হয়েছে । জাঝা না কি একটা আছে না ঐটা একটা দিলাম।
eru
-------------------------------------
pause 4 exam
ইরু , সচেতনা আর সবুজ বাঘ কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আপু নামটা হেনস্তা কেন?
হায়রে আমার কপাল!!! এতো হেনস্থা হওয়ার পরও আমারেই জিজ্ঞেস করেন, নাম হেনস্থা কেনো?
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ইহাকে বলে হেনস্থা নিয়ে গল্প লেখার হেনস্থা
আমরারে সন্দেশ বানাইয়া না খাওয়াইলে কিন্তু এক্কেরে কৈয়া দিমু! হ'!
এর লাইগাই আগে জিজ্ঞাস করছিলাম নোয়াখালীর কেউ আছে নাকি এখানে ?
আমাদেরকে ফেলে ডলফিনিরিয়াম গেলেন কেনো? স ন্দেশ খাওয়াবো না।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
সেরকম হইছে । আমারও মিলাদ খাইতে মন চাইতেছে ।
মানুষের হেনস্তা দেখে আপনার মিলাদ খাইতে মন চাইতেছে। দুঃখ পাইলাম।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
নতুন মন্তব্য করুন