আমরা করব জয়

তানবীরা এর ছবি
লিখেছেন তানবীরা (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/০৬/২০০৮ - ২:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা করব জয়

একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে, "God created the world, but the Dutch created the Netherlands." ‘স্রষ্টা বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন আর ডাচেরা নেদারল্যান্ডস সৃষ্টি করেছে’। ‘নেদারল্যান্ডস’ দেশটি বর্হিবিশ্বের অনেকের কাছে ‘হল্যান্ড’ নামেও পরিচিত। ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দীতে নেদারল্যান্ডসের উত্তর পশ্চিম ভাগ ‘প্রভিনস হল্যান্ড’ অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রচন্ড প্রভাব এবং প্রতিপত্তি বিস্তার করেছিল, সে কারণে তখন বর্হিবিশ্ব ‘নেদারল্যান্ডস’ কে ‘হল্যান্ড’ নামেই জানতো, ‘উত্তর হল্যান্ড’ আর ‘দক্ষিন হল্যান্ড’। ১৮১৫ সালে নেপোলিয়ন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বিদায় নেয়ার পর আজকের এই অফিসিয়াল নাম " Koninkrijk der Nederlanden' = The Royal Netherlands' যার অর্থ দ্বারায় বৃক্ষ দ্বারা আবৃত নীচু ভূমি। পশ্চিম ইউরোপের এই সমতল ভূমির মোট আয়তন ৪১,৫২৬ বর্গ কি,মি, যার মধ্যে প্রায় ৩৩,৮৮২ বর্গ কি,মি, স্থল আর বাকীটা জল। বাংলাদেশের মোট আয়তনের (১৪৪,০০০ বর্গ কি,মি,) প্রায় তিন ভাগের একভাগ। ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ঘন বসতির এই দেশটিতে প্রতি বর্গ কি, মি, এ প্রায় ৩৮৯ জন লোকের বসবাস। ২০০৬ সালের হিসাবনুযায়ী দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ষোল মিলিয়ন। দেশটির একটি বিরাট অংশ সমুদ্রের নীচ থেকে পাওয়া। উত্তর সাগর এর পাশে এই দেশটির নীচু সমতল ভূমির দেশ হিসাবেই প্রধান পরিচয় যার দক্ষিন - পূর্বদিকে কিছুটা পাহাড় আছে। সবচেয়ে নীচু জায়গাটি প্রিন্স আলেকজান্ডারপোলডার (Prins Alexanderpolder), সমুদ্র থেকে -৬ মিটার নীচে যার অবস্থান আর সবচেয়ে উচু পাহাড়টি ফালসেবার্গে (Vaalseberg) অবস্থিত যার উচতা ৩২২,৫ মিটার। ঝড়ো বাতাস আর জলোছাস উত্তর দিক থেকে মাটি ভেঙ্গে নিয়ে দক্ষিনে জড়ো করার কারণে এই পাহাড়ের উৎপত্তি। এ ছাড়া বন্যা উত্তর দিকের মাটি সরিয়ে নিয়ে দক্ষিনে জমা করার ফলে দেশের দক্ষিন দিকের মাটিতে পলি পড়ে, সেখানের মাটি অনেক বেশী উর্বর। নদীমাতৃক বাঙ্গলাদেশের মতোও এ পুরো দেশটি জুড়ে রয়েছে নদী, খাল - বিল, হ্রদ আর সমুদ্রতো আছেই এর উত্তর পশ্চিম পাশ জুড়ে। প্রধান নদীগুলোর মধ্যে রাইন, ওয়াল, স্কেলডে এবং মাস এর নাম উল্লেখযোগ্য। হাজার বছর আগের সামুদ্রিক জলোছাস দেশটির কিছু অংশকে মূল ভুমি থেকে বিছিন করে ফেলেছিল, 'Friesland' তারমধ্যে একটি। আর বন্যার কারণে দেশের অন্যান্য দ্বীপগুলির মধ্যেও যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক সময়সাধ্য ও কষ্টসাধ্য ছিল। অনেক সময় দেখা যেতো "Schagen' থেকে বাস্পচালিত ট্রেন আর নৌকা পেরিয়ে "Wieringer' দ্বীপটিতে পৌছতে সময় লাগত তখন প্রায় পুরোদিন।

সঙ্কটেরই বিহ্বলতা নিজেরই অপমান
সঙ্কটেরই কল্পনাতে হয়ো না ম্রিয়মান।

রবি ঠাকুরের এই কবিতাটি ছিল হয়তো বাঙ্গালীদের জন্য, কিন্তু কবিতাটিকে সার্থক রুপ দিয়েছেন এরা।

উত্তর সমুদ্রের কাছে অবস্থান হওয়ার কারণে ঝড়, ঝ³া, বন্যা, টর্নেডো, প্রচন্ড বেগে ঝড়ো বাতাস, জলোছাস, প্রাকৃতিক দূর্যোগ এই দেশটির নিত্যদিনের সাথী ছিলো। অশান্ত রাইন আর মাস আর তার সাথে আরো অশান্ত সমুদ্র যখন দিনের পর দিন দেশটিকে তছনছ করে দিছিল তখন সবাই ভাবতে লাগল কি করা যায়, কি করে এর হাত থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়? এরমধ্যে ১১৩৪ সালে, ১২৮৭ সালের ঝড় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করে, ১২৮৭ সালের ঝড়ে প্রায় ৫০,০০০ লোকের প্রাণহানি ঘটে আর ক্ষয় - ক্ষতির পরিমান ছিল অগনিত। ১৪২১ সালের সেন্ট এলিজাবেথ বন্যায়ও প্রচন্ড ভূমি ধস ঘটে নেদারল্যান্ডসে। বন্যা থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য নানা রকম ব্যবস্থা সে সময়ের মানুষ গ্রহন করেছিলেন, প্রথম শতাব্দীর মানুষেরা নিজেরা উচু টিলা তৈরী করে তার উপর গ্রামের পত্তন করেছিলেন এবং চাষের বন্দোবস্ত করেছিলেন। এই টিলা গুলোকে "Terps' বলা হতো। তার সাথে সাথে অনেক জায়গায় পানির তোড়কে বাধা দেয়ার জন্য ছোট ছোট ড্যাম (বাধ) বানানো হছিল। পরের দিকে এই "Terps' গুলোকে ড্যামের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছিলো। দ্বাদশ শতাব্দীতে স্থানীয় সরকার ‘Water Bodies' এবং ‘High Water Council' নামে দুটি সংগঠন তৈরী করেছিলেন যাদের কাজ ছিল পানির উচতা, চাপ তদারকী করা এবং বন্যার উপর নিয়ন্ত্রন রাখা। সে সমস্ত সংগঠনগুলো আজ এই একবিংশ শতাব্দীতেও ঠিক একইভাবে একই কাজ করে যাছে। আস্তে আস্তে সময়ের সাথে সাথে মাটির স্তর নীচে নামছিলো বলে ড্যাম গুলোকে আরো উচু করা হছিল। তেরশ শতাব্দীতে যখন উইন্ডমিলের ব্যবহার আরম্ভ হলো তখন উইন্ডমিলের শক্তির সাহায্যে সমুদ্রের নীচের জমিগুলো থেকে পানি বাইরে বের করে দেয়া হতে লাগল। পরে অবশ্য উইন্ডমিলের সাহায্যে লেক শুকানো, পোলডার বানানোর মতো আরো বহু কাজও করা হয়েছে। কিন্তু ঝড় - ঝ³ায় লোক ক্ষয়, সম্পদের ক্ষয় হতেই থাকলো। প্রকৃতিকে এতো সহসা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হলো না। বিভিন্ন জায়গায় উচু উচু ড্যাম আর পোলডার বানানোর কাজ হয়েই যাছিল। যে ড্যামগুলো বানানো ছিলো সেগুলোকে আরো উচু করা হছিলো। বিভিন্ন জায়গার "Terps' গুলোকেও ড্যামের সাথে যোগ করে দিয়ে বন্যা প্রতিরোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হছিল। কিন্তু ফলাফল আশানুরুপ ছিল না। সপ্তদশ শতাব্দী থেকেই সমুদ্রে বাধ দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রনের একটা স্থায়ী সমাধান সবাই মিলে চাছিলো। কিন্তু কি করে বাধ দেয়া যায় আর বাধ দেয়ার পরিনতি কি হতে পারে তা নিয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা কেউ নিশ্চয় করে দিতে পারছিলো না। পরিপূর্ণ পরিকল্পনার অভাবে শুধু আলোচনা আর ড্যাম -পোলডার বানানোর মাঝেই বন্যা প্রতিরোধের কাজ আবদ্ধ ছিল। এক এক জন এক এক ধরনের পরিকল্পনা জমা দিছিলেন, যাদের বেশীরভাগই কারিগরী ও প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা আর অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে বাতিল হয়ে যাছিল। ১৬৬৭ সালে প্রকৌশলী হেন্ডরিক স্টেভিন সর্বপ্রথম মোটামুটি সুনির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা জমা দেন সমুদ্রের মাঝে বাধ দিয়ে উত্তর পাশকে দক্ষিন পাশ থেকে আলাদা করে দেয়ার, দক্ষিন পাশকে সর্ম্পূন রুপে বিলোপ বন্ধ করে দেয়ার। যদিও তার পরিকল্পনা নিয়ে কেউ কোন কাজ করেনি। ১৮২৫ সালে এতো বড়ো ঝড় হয় যে উত্তর হল্যান্ড, ফ্রিসল্যান্ড আর ওভারআইসেল সম্পূর্ণ পানির নীচে তলিয়ে যায়। কিন্তু সে সময়েই ‘সমুদ্রে বাধ দেয়া হবে কোন একদিন’ এ পরিকল্পনা নিয়ে সরকার আলাদা একটি সঞ্চয়ী খাত খুলেছিলেন যেখানে অনেকেই তাদের এই দুঃখ একদিন ঘুচবে, তাদের সন্তানরা সুখের মুখ দেখবে এই আশায় সরকারের কাছে এইখাতে পয়সা জমা দিতেন, কিন্তু একটা অল্প সময় পরে এই শৌখিন পয়সা জমা দেয়া পরিবর্তন হয়ে ‘কর’ এ রুপান্তর হলো। আয়নুযায়ী কর দিতে হতো কিন্তু তারও একটা সর্বোচ এবং একটা সর্বনিম্ন মাত্রা ছিলো। আর এ কর উপকুলবর্তী এলাকার লোকজনের জন্য শুধু বাধ্যতামূলক ছিলো না, ছিলো দেশের সবার জন্য বাধ্যতামূলক। তৎকালীন রানী উইলমিনাও সমুদ্রে বাধ দেয়ার পক্ষে সারা দেশে অনেক প্রচারনা চালিয়েছেন, দেশের জনগণকে আশার আলো দেখিয়েছেন, উদ্বুদ্ধ করেছেন, আর সংসদকেও এ ব্যাপার নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার তাগাদা দিয়েছেন।

প্রকৌশলী ডক্টরেট কর্নেলিস লেলি (১৮৫৪ - ১৯২৯) তার পরিপূর্ণ পরিকল্পনা হাতে সমুদ্রে বাধ দিতে শক্তভাবে এগিয়ে এলেন। ১৮৯১ সালে লেলি তার পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেন। তিনি আট রকমের কারিগরী পরিকল্পনা আকেন যেখানে তিনি দক্ষিন সমুদ্রকে শুকিয়ে ফেলার সব রকমের সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরজন্য তিনি নিজে সমুদ্রে ড্রিল করে, সেখান থেকে মাটি তুলে গবেষনা করেন। তিনি উত্তর হল্যান্ড আর ফ্রিসল্যান্ডের মধ্যে প্রায় ৩৫০,০০০ হেক্টর জায়গার উপর বাধ দেয়ার কথা বলেন। লেলির পরিকল্পনায় দেখানো হয় ১২০,০০০ হেক্টর পানি ভিতরে থাকবে যেগুলো সময়ের সাথে মিষ্টি পানিতে রুপান্তরিত হবে। এরপর প্রধান সমস্যা হয়ে আসে অর্থনৈতিক সামর্থ্য। প্রায় ১৫০ বছর ধরে টাকা জমিয়ে, কর আদায় করেও যথেষ্ঠ পরিমান টাকা জমা হয়নি বাধ দেয়ার জন্য। কি করে খরচ সংকুলান করা যায় তার জন্য পথ খোজা হতে লাগল। তখন ঠিক হলো অনেকেই বিনা পারিশ্রমিকে তাদের অবসর সময়ে বাধের কাজে সাহায্য করবে। এরমধ্যে বয়োজোষ্ঠ থেকে বেশ অল্পবয়সী ছেলেও ছিল। সে সময় মেয়েরা বাইরে কাজ করতেন না বিধায়, বাইরের কাজে সাহায্যে তাদের কোন ভুমিকা ছিলো না। যে যে কাজ পারবেন, সে সেই কাজ করবেন কিংবা কাজ শিখিয়ে দেয়া হবে এই পরিকল্পনা ঠিক হলো। এভাবে পারিশ্রমিক থেকে কিছুটা টাকা সাশ্রয় করার পরিকল্পনা করা হলো। আর একবারে পুরো বাধের সম্পন্ন করতে না পারলে আস্তে আস্তে টাকা জমিয়ে তা করা হবে সেই কথা ভাবা হলো। তাছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলের কারণেও কাজ শুরু হতে দেরী হলো। কিন্তু এবার বাধা পড়ল সম্পূর্ণ অন্য জায়গা থেকে। জেলেরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললেন, সমুদ্রে বাধ দেয়া হলে, তাদের মাছ ধরার সমস্যা হবে, সমুদ্র শুকিয়ে গেলে মাছ ধরবে কোথায়, তাদের কি হবে? মাছ ধরা অনেকের পৈত্রিক পেশা তাছাড়া অনেকে মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোন কাজ জানেন না। সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকার বেশীর ভাগ লোকের জীবিকাই সমুদ্রকে ঘিরে গড়ে উঠেছে আর দেশবাসীও তখন ভাবতে বসল মাছের কি হবে? সরকারী তরফ থেকে তখন জেলেদের জন্য পূর্ণবাসন পরিকল্পনার কথা ভাবা হলো। জেলেদের বলা হলো তাদের অন্য পেশায় যেতে সাহায্য করা হবে, তাদের যা ক্ষতি হবে সেটার ক্ষতিপূরন দেয়া হবে আর যারা কোনভাবেই নিজের বাসস্থান আর পেশার পরিবর্তন করতে চান না তাদেরকে বাধ দেয়ার পর উত্তর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য পরিপূর্ণ সাহায্য করা হবে। সমুদ্রে বাধ দেয়ার পর দেখা গেলো ভিতরের সমুদ্র বা দক্ষিন সমুদ্রের অবশিষ্টাংশের পানি মিষ্টি হয়ে গেছে প্রাকৃতিক ভাবেই, আর সেখানে নতুন ধরনের মাছও জন্মেছে। যেগুলো খেতে বেশ সুস্বাদুও বটে। মিষ্টি পানির মাছও দেখতে দেখতে পুরো দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠল। জেলেদের আক্ষরিক অর্থে তেমন দুঃখ কষ্ট আর পোহাতে হয়নি। এরমধ্যে ১৯১৬ সালে প্রচন্ড বন্যা হয় উত্তর নেদারল্যান্ডসে, অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়, যার জন্য ১৯১৮ সালের ১৪ই জুন পার্লামেন্টে ‘দক্ষিন সমুদ্র বিষয়ক আইন’ নামে একটি আইন তৈরী করা হয়, লেলির পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে। তাছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যে খাদ্য সংকট তৈরী হয়েছিল সেটা থেকে পরিত্রানের জন্যও নেদারল্যান্ডসবাসীদের আরো চাষের জমির প্রয়োজন ছিল। সেই কারণেও লেলির প্রস্তাব আরো গুরুত্ব পায়। সমুদ্রের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রবল অসুবিধা কাটিয়ে উঠে দ্রুত এবং সহজ যোগাযোগের সুবিধা ছিল লেলির পরিকল্পনার আর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। ১৯১৯ সালে শুরু হয় বাধ কিভাবে দেয়া হবে সেই কাজের পরিকল্পনা, প্রথমে পোলডার তৈরী করা যার ফলাফল হবে (দক্ষিন) সমুদ্রের কিছু অংশ শুকিয়ে ফেলা এবং পরবর্তীতে বাধ দেয়া।

সমস্ত বাধা কাটিয়ে অবশেষে ১৯২০ সালে বাধ তৈরীর কাজ শুরু হয়। পাচ বছর কোন বিরাম ছাড়া হাজার হাজার বেতনভুক্ত আর অবৈতনিক শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ১৯২৪ সালে সমুদ্রে প্রথম ছোট ড্যাম বসানোর চেষ্টা করা হয় পশ্চিম পাশে ‘"Van Ewijcksluis'’ নামক জায়গাটিতে। যদিও এই চেষ্টা ছিলো পরীক্ষামূলক কিন্তু ছিলো প্রকৃত কাজেরই অংশ। এই চেষ্টায় দেখা গেলো ইঞ্জিনিয়ারদের চিন্তা ও হিসাব সঠিক ছিলো না। তারা ভেবেছিলো সমুদ্রের মাটি এই ওজনের ড্যামকে ধরে রাখতে পারবে। "Van Ewijcksluis' ঘাসের চাপড়া দ্বারা আছাদিত একটি ভূমি ছিলো, এই ভূমি ড্যামের ওজন নিতে পারল না। ড্যামটি আস্তে আস্তে নীচের দিকে ডেবে যেতে লাগল আর পাশের জমি উচু হয়ে এক ধরনের নতুন প্রাকৃতিক জলাভূমির তৈরী হলো। সব ইঞ্জিনিয়াররা মিলে ড্যামকে মাটিতে বসানোর জন্য অনেক ধরনের চেষ্টা করলেন। সব রকমের প্রচেষ্টা শেষে যখন তারা উপায় খুজে পেলেন তখন তাদের কাজ বন্ধ করে দিতে হলো, কারণ ড্যাম বানানোর বাজেট শেষ হয়ে গেছে। ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের এই হিসাবের ভুলের জন্য ড্যাম বানানোর কাজ আপাতত স্থগিত হলো। ১৯২৬ সালে ছোট খাটো একটা ড্যাম বসানো হলো অস্থায়ী ভাবে। ২,৫ কিলোমিটার জায়গা বন্ধ করা হলো, ড্যামটির নাম হলো Amsteldiepdijk'. Dijk = Dam. . বিশ্বজোড়া আজ যে ‘Dijk ’ শব্দটা ব্যবহূত হয় সেটা ডাচদের কাছ থেকে আসা। এই বাধটি দেয়ার ফলে "Weiringen' আর দ্বীপ রইলো না, মূল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত হয়ে গেলো। তারপর উইন্ডমিলের সাহায্যে শুরু হলো "Weiringen' কে শুকানোর পালা। প্রায় সাড়ে ছ’মাস দুরকমের পাম্প দিয়ে অবিরত শুকানোর পর "Weiringen' বেশ শুকিয়ে গেলো। একটি ছিল বিদ্যুৎ চালিত পাম্প, যেটি তিনটি উইন্ডমিলের সমন্নয়ে গঠিত আর প্রতি মিনিটে প্রায় ৪০০ কিউবিক মিটার পানি বের করতে পারে আর একটি ছিল ডিজেল চালিত পাম্প যেটির ক্ষমতা ছিল প্রতি মিনিটে প্রায় ২৫০ কিউবিক মিটার। বাধের উপাদান হিসাবে ছিল উইলো গাছের গুড়ি, প্রাকৃতিক ভাবে যতো উইলো গাছের গুড়ি তাদের ছিল তা এক সময় আর বাধের জন্য যথেষ্ঠ না বলে, আলাদাভাবে মধ্য নেদারল্যান্ডসে জমি নিয়ে উইলো গাছের চাষ করা হলো। দস্তার পাত সমুদ্রের নীচে স্থাপন করা হলো, ড্যামটাকে মজবুত করার জন্য। প্রথমে তারা বালি আর এটেল মাটির মিশ্রন দিয়ে বাধ দেবেন ভেবেছিলেন কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেলো সেটা কার্যকর করা কষ্টসাধ্য। সমুদ্রের মাটি সে ওজন নিতে পারছে না, ড্যাম বসে যাছে। তাই বালি আর মাটির মিশ্রনটাকে পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন ও আরো উন্নত করতে করতে তারা একসময় আর একটি নতুন মাটি তৈরী করলেন যা ২,৬৪ মি,মি এর মাপের টুকরো আকারে তৈরী করা হলো। এই মাটিটি অনেক বেশী ওজন পানির মধ্যে নিতে পারে আর পানির মধ্যে বসেও দারুনভাবে। এই মাটির নাম হলো "Kleileem'. দি হেগ এর ‘দক্ষিন সমুদ্র প্ল্যানিং’ অফিসের পিছনের বাগানে প্রথমে এটির পরীক্ষা নেয়া হলো, পরীক্ষা নেয়া ছিল একটি অতি প্রয়োজনীয় শর্ত। পরীক্ষা নিয়ে দেখা গেলো বাধের জন্য এটিই সবচেয়ে উন্নত উপাদান।

ড্যাম বানানোর একটা প্রচন্ড প্রভাব পড়েছিল সে সময়ের ডাচ অর্থনীতিতে। সারাদেশ থেকে লোক তখন সমুদ্র উপকুলবর্তী অঞ্চলে কাজের জন্য ভীড় জমাছিলো। সেটা অর্থনীতির জন্য ভালো হলেও উপকুলে বসবাসকারী আদি বাসিন্দাদের মনে বেশ অসন্েতাষের সৃস্টি করছিল কারণ উপকুলে বসবাসকারী লোকদের আলাদা এক ধরনের ভাষা (Dialect), সংস্কৃতি, জীবন - যাপনের রীতি - নীতি ছিল যা অন্য প্রদেশের মানুষের মিশ্রনে অনেকটাই উধাও হয়ে গেলো। তখন ইছে করলে সেদিকের লোকেরা সারা দেশের লোকের বিপক্ষে যায় এমন পদক্ষেপ ও নিতে পারতেন, নিজেদের সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্য, কারণ তখন আর তারা কোন পশ্চাদপদ জনবিছিন্ন নিরিবিলি দ্বীপের মানুষ নন। অনেক লোকের সমাগমে উপকুলবর্তী এলাকা তখন সরগরম। আজকেও কেউ যদি ভাবে ত্রিশ কিলোমিটার লম্বা একটি বাধ বানানো হবে সমুদ্রের মাঝ দিয়ে , যার জন্য কোন যন্ত্রপাতি নেই, সমস্ত কাজের জন্য শুধু মানুষের দুটি হাতই সম্বল। মাটি টেনে আনা, মাটির গাথুনি গাথা, মাটি বসানো, পাথর টেনে আনা, পাথর বসানো সবই শুধু হাতেই করা হয়েছিল। সততা, একতা, পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস মানুষকে যে সব অসাধ্য সাধন করায় এই ড্যামটি তার প্রমান। বিশেষ করে ১৯৩০ সালের পরে যখন অর্থাভাবে ড্যাম বানানোর প্রকল্পটিকে ‘ত্রান প্রকল্প’ হিসেবে ঘোষনা করা হয়। হাজার হাজার মানুষ ড্যাম বানানোর কাজে সাহায্য করার জন্য সেখানে চলে আসেন। সাধারণ কর্মচারীরা কর্মজীবি আবাসস্থল কিংবা সারিবদ্ধ বাড়িতে বসবাস করতেন এখনও কিছু কিছু সে সমস্ত বাড়ি সেখানে রয়ে গেছে। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজে অসংখ্য প্রকৌশলী আর ফোরম্যানও জড়িত ছিলেন, তাদের জন্য প্রচন্ড বিলাসবহুল চারটি প্রাসাদোপোম বাড়ি চারটি দ্বীপে নির্মান করা হয়। তারা তাদের পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন এবং সেখান থেকেই কাজ পরিচালনা করতেন। এগুলো ছিল তাদের বাসস্থান ও কর্মস্থান। তাদের এই বাস স্থানের একটি আজও ‘Oosterland' এ ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহূত হছে, যাতে প্রায় ৭০টি শয্যা পাতা আছে। সৌভাগ্যক্রমে এই প্রাচুর্য তাদেরকে কোন ধরনের অহমিকায় নিয়ে যায়নি। অনেক প্রকৌশলীরাই প্রতি সপ্তাহান্েত
দ্বীপবাসীদেরকে এবং ড্যমের কাজের জন্য আসা লোকজনকে নানা বিষয়ে বিনামুল্যে শিক্ষা দিতেন। এরমধ্যে অঙ্ক, পর্দাথ বিদ্যা, নানা রকম কারিগরী শিক্ষা ও ভূমি পরীক্ষা ছিল অন্যতম। শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো Weiringen দ্বীপে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেও শুধু এই বিষয়গুলোর উপরই জোর দেয়া হছে। বিশেষ করে যারা প্রকৌশলীদের কাছ থেকে খুব ভালো করে শিক্ষা অর্জন করছিলেন তারা এই বিষয়গুলোর উপর পাঠদানকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছিলেন। সেই সময় Weiringen দ্বীপের লোকজন এই বিষয়গুলোতে বেশ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন এবং এই জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করছিলেন। এর কয়েক বছর পরেই যখন ড্যামের কাজ শেষ হলে প্রকৌশলীরা যার যার নিজের জায়গায় ফিরে যান, দ্বীপবাসীরা শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত হয়ে বেশ মনক্ষুন্ন হয়েছিলেন।

যাহোক, আবার ১৯২৭ সালে ‘Den Oever' এবং ‘Friesland' এর মধ্যে দিয়ে ড্যাম বানানোর কাজ শুরু হলো। এবার কাজ শুরু হলো আরো জোরেশোরে। যদিও ড্যাম বানানোর জন্য পিলার, স্লুইস গেট ইত্যাদি ১৯২০ সালের দিকেই বানিয়ে রাখা হয়েছিল। এই বাধটি লম্বায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার, আর উচতা ছিল স্থানভেদে ৭,৫ মিটার থেকে ৭,৮ মিটার। এই উচতা ছিল NAP এর উচতা থেকে ৩,৫ মিটার বেশী। (NAP = Normal Amsterdam Peil)) এই পরিমাপের একক এসেছে সমুদ্রের সের্বাচ জলোছাসের উচতা পরিমাপ করে। পরে এই ড্যামটিকে আরো ১০ মিটার উচু করে ডেলটা প্ল্যানিং এর উচতায় নিয়ে আসা হয়। ড্যামটি পানির সমতায় ৯০ মিটার প্রসস্ত। ড্যামটির উপরে একটি গাড়ির হাইওয়ে নির্মান করা হয়, যাতে চারটি লাইনে সারিবদ্ধভাবে গাড়ি চলাচল করে। ১৯৩৩ সালের ২৩শে জানুয়ারী হাইওয়েটিকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। পাচ বছর মানুষ আর সমুদ্রের মধ্যে অবিশ্রান্র যুদ্ধের পর অবশেষে জয় হলো মানুষের। ১৯৩২ সালের ২৮শে মে এক শনিবারে মানুষ নিজের স্বাক্ষরতার চিহ¡ একে দিল প্রকৃতির বুকে, সমুদ্রের বুকে, অবশেষে দক্ষিন সমুদ্রের অস্তিত্ব বিলোপ করে দিয়ে মাথা উচু করে দাড়াল Afsluitdijk = Closing dam. আর সেখানে জন্ম হলো IJsselmeer = IJssel lake এর. তাৎক্ষনিকভাবে তারা সেখানে ১৬৫০ বর্গ কি, মিটার জমি পুনরুদ্ধার করার ঘোষনা দিলেন। আর IJsselmeer দক্ষিন সমুদ্রকে বিলুপ্ত করে দিয়ে মূলভুখন্ডের সাথে যুক্ত এক জনপদ হয়ে গেলো। যেখানে সমুদ্রকে দেশ থেকে আলাদা করে ফেলা হলো সেখানে একটি মনুমেন্ট স্থাপন করে বড় বড় হরফে লিখে দেয়া হলো ‘A people that lives, builds to its future'. বাধটির মধ্যে ২৫টি স্লুইস গেট রাখা হলো IJsselmeer er সমস্ত পানি বের করে দেয়ার জন্যে। ৩ X ৫ টি গেট রাখা হলো Den Over এর দিকে মুখ করে আর বাকী ২ X ৫ টি রাখা হলো Kornwerderzand এর দিকে মুখ করে। জাহাজ আসা যাওয়া করার জন্যও গেট রাখা হয়েছে। ৬০০ টন থেকে ২০০০ টন মালামাল নিয়ে যেনো জাহাজ আসা যাওয়া করতে পারে সেই রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই বাধ দেয়ার ফলে নেদারল্যান্ডসের উপকুল সীমা ৩০০ কি,মিটার থেকে কমে ৩০ কি, মিটারে চলে এসেছে। ১৯৩৩ সালের হিসাবনুযায়ী তখন পর্যন্ত এই বাধের পিছনে খরচ হয়েছিল ১২০ মিলিয়ন ডাচ গিলডার। ১৯৪৫ সালের ১৭ই এপ্রিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র কিছুদিন আগে জার্মান সৈন্যরা আক্রমন করে ড্যামটির দুটি পিলার গুড়িয়ে দেয়, যে পাশের পিলার গুড়ানো হয়েছিল সেই পাশে ড্যামটি সম্পূর্নভাবে পানির নীচে তলিয়ে যায়, আশেপাশের বাড়ি - ঘর, চাষের জমি সব তলিয়ে যায়। সর্বশক্তি নিয়োগ করে ড্যামটি আবার মেরামত করে ১৯৫০ সালে সর্ম্পূন বসবাস উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা বিভাগ ড্যামটির সুরক্ষার বন্দনোবস্ত করার পরিকল্পনাকে প্রচন্ড গুরুত্বের সাথে নেয়। যার কারণে উত্তর নেদারল্যান্ডসের Den Helder একটি দুর্গও বানানো হয়েছে। ১৯৩৩ সালের ২৫শে সেÌেটম্বর যাদের তত্বাবধনে ড্যামটি তৈরী হয় সাফল্যের স্বারক হিসেবে তাদের দ্বারা ড্যামটির উপর একটি মনুমেন্ট স্থাপন করা হয়। তবে জাতীয়ভাবে ১৯৫৪ সালের ২৩শে সেÌেটম্বর রানী জুলিয়ানা প্রকৌশলী লেলি’র মূর্তি সারা দেশের পক্ষ থেকে সম্মান স্বরুপ ড্যামটির উপর স্থাপন করেন।

(চলবে)


মন্তব্য

তানভীর এর ছবি

ডাচরা আসলেই এক বিস্ময়...সমুদ্রের কবল থেকে কী আশ্চর্যজনকভাবেই না তাদের দেশ উদ্ধার করেছে! ডিসকভারী চ্যানেলের এক্সট্রিম ইঞ্জিনিয়ারিং সিরিজে "Holland's barrier to the sea' পর্বে দেখেছিলাম ১৯৫৩ -সালের ভয়ংকর বন্যার পর তারা অত্যাশ্চর্যরকমের দারুণ একটা বাঁধ বানিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। আগামী পর্বে আশা রাখছি তার বর্ণনা দেবেন। সাম্প্রতিক তারা যে কেরামতি দেখাচ্ছে তা হল 'Floating City' -বন্যা হলে বাড়ীঘরগুলো আপনা-আপনি ভাসতে থাকবে, পানিতে ডুবে যাবে না!

ডাচদের সালাম আর আপনাকে কষ্ট করে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। একদিন নেদারল্যান্ডস গিয়ে সব নিজের চোখে দেখে আসব এই আশা রাখি।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

তানবীরা এর ছবি

নিশ্চয়ই আসার আমন্ত্রন রইল, এনি ডে, এনি টাইম

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

দ্রোহী এর ছবি

আফসোস, আমরা চোখের সামনে উদাহরণ থেকেও শিখতে পারি না।

চমৎকার লেখা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় .....


কি মাঝি? ডরাইলা?

তানবীরা এর ছবি

আমাদের আছে অসীম লোভ, শেখার আগ্রহ নেই বলে ক্ষমতাও নেই আমাদের।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

আফসোসের কারণ তো অবশ্যই আছে। তারপরও আমরা কিন্তু এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারি। ডাচদের উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্ভুত সমস্যা উত্তরণে এখনই আমাদের দেশকে সজাগ হতে হবে। ধন্যবাদ।

জিজ্ঞাসু

তানবীরা এর ছবি

আশায় আশায় তবু এই আমি থাকি ............যদি কোন দিন আসে দেই পাখি .........।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জেনে ভালো এবং মন্দ দুটোই লাগলো... ভালো লাগলো মানুষ জয়ী হয় শুনে। আর মন্দ লাগলো আমরা বুঝি তাইলে মানুষ না।

এইসব প্রকল্পে বিশ্বব্যাঙ্ক লোন দিছিলো? চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তানবীরা এর ছবি

নির্মলেন্দু গুনের কবিতাটা মনে পড়ল, আমি বোধ হয় মানুষ নই, মানুষগুলো অন্যরকম …...।

আসলেই বোধ হয় আমরা মানুষ না, বিবেক বর্জিত প্রানী, নইলে শুধু মাত্র নিজেরা ভালো থাকার জন্য, শুধু পয়সার জন্য যা ইচ্হে তা এভাবে দেশটা কে নিয়ে করতে পারতাম না। যতো অন্যায় ততো বড়লোক, ততো সমমান আর ভালো মানুষ হাটে খালি পায়ে।

আমাদের মতো অরিজিন্যাল আর এক পিস খুজে পাওয়া দুস্কর
দ্বিজেন্দ্রলালের গানটা কোরানের মতো এডজাস্ট করা দরকার, সকল দেশের লজ্জা তুমি আমার জন্মভূমি ......

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানবীরা এর ছবি

নেদারল্যান্ডস তার ড্যাম এর জন্য কোন ঋন নেই নি সেই টুকু জানি, তারা ১৫০ বছরের উপড়ে টাকা জমিয়ে ছিল।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍খুবই তথ্যবহুল পোস্ট। তবে নীরস একবারেই নয়।
চলুক।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

১। খুবই তথ্যবহুল পোস্ট। তবে নীরস একবারেই নয়।
চলুক। (কোট ফ্রম সংসারে এক সন্ন্যাসী )

২ । পাচ তারকা দিলাম

৩। আরে তানবীরা
তোর ত' ২২ তারিখে আসার কথা

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

তানবীরা এর ছবি

হুমম, চেয়েছিলামতো তাই কিন্তু অনেক অনেক না পাওয়ার সাথে আরো একটা যোগ হলো ...............।।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

কীর্তিনাশা এর ছবি

২য় কিস্তি দ্রুত পাবার আশায় রইলাম।
---------------------------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তানবীরা এর ছবি

কীর্তিনাশা আর সন্যাসীকে ধন্যবাদ

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানবীরা এর ছবি

জানি, বুঝি কি করা দরকার কিন্তু করি না ............

কি হয় আজ থেকে যমুনা সেতুর মতো ট্যাক্স বসালে সব কিছুর উপড়, বাধের পরিকল্পনা হাতে নিলে, যতো চুরিরি টাকা বের হচ্ছে সেগুলোকে এই খাতে লাগালে, তারেক জিয়াকে বলুক অন্যায়ের সব টাকা দিয়ে দে, তোক্বে ছেড়ে দেব। দেশের উন্নতির কাছে, তারেক কি ???

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।