জীবন থেকে নেয়া

তানবীরা এর ছবি
লিখেছেন তানবীরা (তারিখ: মঙ্গল, ১০/০৩/২০০৯ - ৪:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যখন থামবে কোলাহল

দেশ থেকে ঘুরে এসেছি আজ প্রায় দু মাস এর উপরে। একটাও কি গঠনমূলক কোন লেখা লিখেছি? একটা ভালো বই পড়েছি? কোন নাটক বা সিনেমা দেখেছি উপভোগ করে? না ঠিকমতো ঘুমিয়েছি। অথচ প্রতিদিন অফিস যাচ্ছি, সপ্তাহান্তের পার্টিতে যাচ্ছি, খাচ্ছি - দাচ্ছি, সবার সাথে মাস্তি করছি কিংবা মাস্তি মাস্তি ভাব করছি যেনো সব খুব স্বাভাবিক আছে। আমিও খুব স্বাভাবিক আছি। এ পৃথিবীর কোথাও কোন পরিবর্তন হয়নি। যেমন সূর্য উঠতো তেমনিই সূর্য উঠছে, যেমন অস্ত যেতো তেমনিতো যাচ্ছে, ক্যালেন্ডারের পাতা ঘুরে সবার জন্মদিন আসছে, আরো একটি স্বরনালী বছর হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে। কিন্তু তবু কেনো আমার মন ভালো হয় না? সমস্ত কাজের ভীড়ে, ঘুরে ঘুরে আমার চোখের পাতা ভিজে আসে। কারনে অকারনে, সময়ে - অসময়ে। মনে হয় সব কোলাহল থেমে গেছে। আমি খুব একা হয়ে গেছি। কোথাও আজ আমার আর কেউ নেই। আমি আসব সে জন্য নতুন ফ্যাশনের ড্রেস কিনে কেউ আর অপেক্ষায় থাকবে না হয়তো। আমার ড্রয়ার ঝাড় পোচ হবে না। আমার প্রিয় খাবার তিন মাস আগ থেকে ফ্রিজড হবে না। ফ্যান্টাসী কিংডম কিংবা যমুনা ব্রীজে বেড়াতে যাওয়ার প্রোগ্রাম বার বার আর ক্যানসেল হবে না আমার জন্য । সারা বাংলাদেশ ভর্তি অনেক মানুষ, কিন্তু সেই মানুষের ভীড়ে আমার এই মানুষেরা থাকবে না।

সারা বছর বিদেশে পড়ে থাকতাম এই একটি আশায়। ছুটি হবে, বাড়ি যাবো, আনলিমিটেড ফান হবে। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টার আনন্দ। ভাই-বোনেরা মেইলে ঠিক করতাম ছুটির প্ল্যান। কখন দেশে কি হবে, কার বিয়ে কিংবা পহেলা বৈশাখ নাকি আর্মি স্টেডিয়ামে কনসার্ট কখন এলে বেশী আনন্দ হবে। কার কার পরীক্ষা কখন শেষ হবে। এখন সবার পরীক্ষা শেষ, সব খেলা সাংগ। যখন ইচ্ছে বাড়ি যাওয়া যাবে শুধু সেই প্রিয় মুখ গুলো হয়তো আর ভীড় করবে না। এক বোন এক পা বাড়িয়ে আছে, ডাক আসা মাত্র চলে যাবে। যেকোন মুহূর্তে ডাক আসবে। ভাইয়ারও একই কথা। বন্ধু বান্ধব কেউ দেশে নেই। এই রেজাল্ট নিয়ে দেশে পড়ে থাকার কোন মানে নেই। আর এক বোন শ্বশুর বাড়ি। আর ছোটটাকে ভাইয়া আটকে রেখেছে এক সাথে যাবো বাইরে এই কড়ারে। তাও আর কদিন, আর এক বছর, বড় জোর? মায়ের কঠিন বাক্য কোমল সুরে বলা, যাও সবাই যার যার মতো নিজের জীবন খুজে নাও। কিন্তু আম্মি, আমি যখনই বাড়ি আসব, আমার বাড়ি, হ্যা আমি পৃথিবীর যেখানেই থাকি, এটাই চিরজীবন আমার বাড়ি থাকবে। আমি আমার নিজের হাতে লাগানো সেই মানি প্ল্যান্টের চারা গুলো খুজবো। বানিজ্য মেলা থেকে কিনে আনা আমার ফুলের টবগুলো খুজব, সারা সারা অলস দুপুরে দোল খাওয়ার আমার দোলনাটা খুজব। আমার কিংবা আমাদের স্পর্শ মাখা আছে এমন সব স্মৃতি আর স্মৃতিমাখা জিনিসগুলো আমি আজীবন খুজেই যাবো। ঠিক তোমার বলা কোমল গলার কঠিন কথা গুলোর মতো। তুমি যে বলো, “সব মেয়েরাই বাবার বাড়ি এসে তার ছেলেবেলা খুজে ফিরে কিন্তু ছেলেবেলা হারিয়ে যায় তার ছেলেবেলার সাথেই। আজীবন খুজে ফিরবে কিন্তু কখনো তাকে পাবে না।“ জানি সে কথাই চরম সত্যি কিন্তু তবুও আমি খুজব।

একসময় মনোপলির বোর্ডটা দেখলেই ভয় লাগতো, এক্ষুনি আরম্ভ হবে পীড়াপিড়ি, একটু খেলো, প্লীজ একটু খেলো। খেলতেও ইচ্ছে করতো না আবার না’ও করতে পারতাম না, সারা বছর আশা করে তোরা বসে আছিস, খেলবি বলে আমার সাথে। কতো অনিচ্ছায় বসতাম তোদের সাথে খেলতে। আজকে কথা দিচ্ছি অনেক ভালোবেসে খেলব তোদের সাথে, তোরা আসবি মনোপলির বোর্ড নিয়ে? রাতে খেয়ে - দেয়ে বারান্দায় কিংবা ছাদে পাটি পেতে বসতাম গল্প করবো বলে। তোরা সেসব বড়দের গল্পে কোন মজা খুজে পেতি না। তোরা আসতি আন্তাক্সরী খেলার জন্য। প্রথমে তোদের দুই বিচ্ছুকে সহজেই কুপোকাত করে ফেলব ভেবে হেলা ফেলায় আরম্ভ করে সহসাই আমাদের ভুল ভাংগল। একবার আরম্ভ হলে আর শেষ হয় না। গল্প করাতো দূরে থাক, ঘুমের সময়ও বাদ যায়। ক্যাবল টিভি দেখে দেখে তোরা তখন ঝানু। তোদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় ভাবলাম। বল্লাম এসব অপসংসকৃতি বাসায় চলবে না, আন্তাক্সরী খেলা শুধু বাংলা গানেই হবে। তোদের বাংলা গানের ষ্টক তখন লিমিটেড, গানের স্যার যা শেখায় ধরতে গেলে শুধু সেটুকুই। প্রথম দিন অনেক তাড়াতাড়ি জয়ী হলেও দ্বিতীয় দিন তোরা দুই বিচ্ছু এলি অন্য বুদ্ধি নিয়ে। বাংলা গানেই খেলা হবে কিন্তু জোড়া হবে ভিন্ন। বড় - বড়, আর ছোট - ছোট হবে না। হতে হবে একজন বড় আর একজন ছোট। বুদ্ধি দেখে রীতিমতো আমরাও চমকিত। আসলেই কি সেদিন আন্তাক্সরী প্রধান ছিল? নাকি বড় ভাইবোনদের কাছে থাকাটাই উদ্দেশ্য ছিল তোদের? তোরা কি জানিস এর উত্তর?

সারাটা বছর বাসা থাকতো নিরিবিলি। আমি বাইরে, ভাইয়া বাইরে, একজন ভার্সিটি, আব্বু ব্যস্ত ব্যবসা নিয়ে আর আম্মি ব্যস্ত তোদের স্কুল আর টিউটর নিয়ে। খুব বৃষ্টি ছিলো সেদিন। কেউই বাসা থেকে বের হয়নি। সারা ঢাকা যাকে বলে নিঃশব্দ, নিথর। সব্বাই বাসায় আছে এই আনন্দে আম্মি রান্না ঘরে বিশেষ সিদ্দিকা কবীর খিচুড়ী রাধতে ব্যস্ত। হঠাৎ আমরা অকারনেই সেদিন সাপ লুডু খেল্লাম। ভাইয়া খুব চিৎকার করলো। সাপ খেয়ে ফেললে এক চিৎকার, মই দিয়ে উঠে গেলে আবার চিৎকার। ভাইয়ার সাথে সাথে সাহস পেয়ে গলা ফাটিয়ে আমরাও চিৎকার করলাম। সারা বছরের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে আমাদের বাড়ির এই চিৎকার এক ঘন্টা ধরে শুনে, আমাদের পাশের বাসার কৌতুহলী চাচী আর সহ্য করতে পারলেন না। জানালা দিয়ে মুখ বের করে ভয়ার্ত গলায় ভাইয়াকে ডাকলেন, কি হয়েছে তোমাদের বাসায়? ব্যস আমরা মজা পেয়ে গেলাম। সেদিনের পর থেকে আমাদের কোড ওয়ার্ড শুরু হলো, চাচীকে ভয় দেখাবি? কি আনন্দই না ছিল আমাদের চারপাশে। রবীন্দ্র সরোবর, মহিলা কমপ্লেক্স, টি।এস।সি, মহিলা সমিতি, বেইলী রোড, মালঞ্চ, বউ - জামাই চানাচুর - ঝালমুড়ি, মহুয়া চটপটি ফুচকা, গার্ডেন মার্কেট, কালাচান্দের পিয়াজু, মামা হালিম, বিহারী ক্যাম্পের চাপ। আমার এসব ক্ষ্যাত অভ্যাসের কতোই না সমালোচনা আসতো ঘর থেকে বাইরে থেকে। সামান্য জিনিসের প্রতি আমার এই আগ্রহ। এর অনেক কিছুই হয়তো ভবিষ্যতে এরকমই থাকবে অন্যদের জন্য, কিন্তু আমার জন্য??? মহিলা সমিতির নাটক কিংবা বিহারী ক্যাম্পের চাপ এর কিছুই আমাকে আর কোনদিনও সে আনন্দ দিবে না, পাশে তোরা থাকবি না বলে।

ভাইয়া মাইশোর থেকে চিঠি পাঠাত, বাসার গুড়া শয়তানরা ক্যামন আছো তোমরা, এই সম্বোধনে। তোরা সেই চিঠির অর্ধেক আবার আমাকে লিখে জানাতি ভাইয়া তোদের কি কি লিখেছে। বাংলাদেশ বিমানের টাইম টেবল তখন আমার মুখস্থ ছিল, তোদের চিঠি কবে পাবো সেই আশায়। হুজুরের উপর রাগ করে হুজুরকে টাইট দেয়ার জন্য সোফায় টুথপিক গুজে রাখতি, হুজুরের পাছায় ফুটে কি অবস্থা সেই রাগ আম্মি আমাকে বলত ফোনে, কতো দুষ্টই না তোরা ছিলি তখন। ভাইয়া মাইশোর থেকে আমাকে হিন্দীতে চিঠি লিখতো, আর আমি সেই চিঠি ইন্ডিয়ান বান্ধবীদের দিয়ে পড়িয়ে ডাচে উত্তর লিখে পাঠাতাম। ভাবলে অবাক লাগে এই জীবনেই কি এতো আনন্দময় সময় পার করেছি আমরা সবাই মিলে? ভাইয়া আর আমি প্রত্যেক বার দেশে যাওয়ার আগে প্রমিস করে যেতাম এইবার দেশে যেয়ে তোরা যতো দুষ্টুমীই করিস না কেনো তোদের মারব না। কিন্তু সাত দিন পার করতে পারতাম না, আম্মির সাথে চিৎকার, তোদেরকে কানমলা সব দিয়ে ফেলতাম। আমি ভাইয়াও লেগে যেতাম আবার পেপার নিয়ে টানাটানি, উন্মাদ দিয়ে কাড়াকাড়ি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আজ সে বাঁশী হারিয়ে গেছে। আর হয়তো এই সুরে এই বাঁশী কোনদিনই বাজবে না।

টিটু ভাইয়া কতোই না ভালোবাসতো আমাদেরকে। বেচারার বোন নেই, আমরাই বোন। গান শুনতে ইচ্ছে হলেই বারান্দা দিয়ে ডাক দিতো কিংবা বউ মেয়ে নিয়ে বাসায় এসে হাজির হতো ভবিষ্যতের রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিনের খোজে। আমরা এই ভাইয়াকেও কতো ভেঙ্গিয়েছি, সামনেই কদম আলী বলেছি বেচারা বুঝতেও পারেনি। সবচেয়ে আনন্দময় বাসার খেতাব পাড়ায় আমাদের জুটে ছিল। মেয়ে যাদের ছিলো না তারা সবাই আমাদের দেখে আফসোস করত। আজ মনে হয়, না থাকলে হারানোর ভয় বা কষ্ট কিছুই নেই। ছিল কিন্তু নাই বলেই এখন কষ্ট পাচ্ছি। বারান্দার দোলনায় দুলে দুলে একটি বিশেষ বাড়ির বিশেষ কিছু লোকজনকে নিয়ে আমরা প্যারোডী গেয়ে গেয়ে তাদের মাথায় রক্ত তুলে দিতাম। তারা উপায় না দেখে ভাইয়াকে নালিশ করল। ভাইয়া আরো মোলায়েম গলায় বলে আসল, আপনি কি করে বুঝলেন, আপনার জন্য গায় ??? সে সবের কিছুই আজ আর নেই। তোদের গান নেই, নেই সাথে ভাইয়ার তবলার তাল, নেই কারো নাচ। ক্লান্ত দুপুরে সারা বারান্দা হেটে হেটে তোদেরকে সাথে করে অমিয় চক্রবর্তী কিংবা শঙ্খ ঘোষ আউরানোর কেউ নেই আজ আর। এখন সব কোলাহল থেমে গেছে। বাসাটা আজ অনেক শান্ত, আগের চেয়েও হয়তো আরো অনেক অনেক বেশীই নিস্তব্ধ আজকাল। কিন্তু আমি আজীবন থেকে থেকে খুজে ফিরব সে কোলাহলকে।

তানবীরা
০৫.০৩.০৯


মন্তব্য

সচল জাহিদ এর ছবি

তানবীরা
মন খারাপ করা লেখা। এমনিতেই দেশে যেতে ইচ্ছে করছিল আপনি আরো বাড়িয়ে দিলেন। আমারও একি ধরনের স্মৃতি আছে অনেকটাই আমার বোনের বাড়িকে ঘিরে। পাশ করার পর থেকে বাইরে আসার সময়টা প্রায় পুরোটাই আমি ছিলাম ইবরাহীমপুরের বাসায়। সে বাসাকে ঘিরে আমার কত স্মৃতি , কত অভিমান। শুক্রবারে খিচুড়ী আর গরুর মাংস, কিংবা বৃষ্টির দিনে সড়ষে ইলিশ , কারো জন্মদিনের রাত বারটায় কেক কাটা , বইমেলা বা বানিজ্যমেলাতে যাওয়া, লাইট বন্ধ করে ভুতের গল্প করা , একসাথে সিনেমা বা নাটকবা আমার প্রিয় অনুষ্ঠান ক্লোজয়াপ ওয়ান দেখা ...আরো শত সহস্র স্মৃতি আমাকে তাড়া করে বেড়ায়।জানি আর কখনো ফিরে পাবনা সেই দিনগুলি । আমার ভাগ্নীর সামনের এপ্রিলে বিয়ে অথচ আমি যেতেও পারছিনা সেই বিয়েতে ...এটাই এখন বাস্তবতা। সময় বড় নিষ্ঠুর আরা তার প্রতি পিছুটান আরো বেশী নিষ্ঠুর।

_____________________

জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তানবীরা এর ছবি

দেশে যারা থাকেন, তারা সিচুয়েশন পরিবর্তনের পুরো প্রসেসটার মধ্যে দিয়ে যান। তাই তারা ব্যথাটা ঠিক সেভাবে অনুভব করেন না। আমরা লটকে থাকি হয়তো নষ্টালজিয়াতেই।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রানা মেহের এর ছবি

খুব মন খারাপ করা লেখা তানবীরা।
আপনি যেন সেই কোলাহল খুজে পান
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তানবীরা এর ছবি

হাহাহাহা, দোয়ার জন্য ধন্যবাদ।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আশাবাদী মানুষ আমি, ধ্বংসস্তুপের মধ্যেও সৃষ্টির আনন্দ খুঁজে ফিরি। তাই বলছি, এটা কি খুব বিগ ডীল স্বাতী আপা?

এখনো তো সম্ভব, যে যেখানেই থাকুক। আগের মতো এখনো একই সময়ে কোনো একটা নির্দিষ্ট উপলক্ষ্যে এক হওয়া যাবে এখনো। আগে যেমনটা হতো বছরের যেকোনো সময়েই, এখন নির্ধারণ করে নিবেন বছরের শুধু একটা সময়। সেই সময়টা হবে আপনাদের, এবং কেবল আপনাদের। যে যেখানেই থাকুন, বছরের ঐ সময়টাকে কেন্দ্র করে সবাই আবার ফিরে যাবেন সেই বারান্দায়, সেই দোলনায়, সাপ লুডু খেলার চিৎকারে 'চাচীকে ভয়' পাইয়ে দেয়ায় কিংবা লোডশেডিংএর কোনো এক সন্ধ্যায় ছাদে উঠে গানের ডালি খেলায়।

সময় জিনিষটা হলো গ্যাস বেলুনের মতো। ছেড়ে দিলেই ফুঁশ করে উড়ে চলে যায়, আর বুকের খুব কাছে ধরে রাখতে পারলে বশ মানানো যায়। আমি বিশ্বাস করি আপনি / আপনারা সময়কে বশ মানানোদের দলে।

সো, চিয়ার আপ। আরও আরও বেশি আনন্দ করুন আপনারা সবাই মিলে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানবীরা এর ছবি

চাইলেই যদি পাইতো
তাইলে লোকে শুধুই চাইতো।

আমি না আমার ভাই বলে এইটা।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানবীরা এর ছবি

চাওয়ার কোন শ্যাষ নাই
চাওয়ার চেষ্টা বৃথা তাই

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রণদীপম বসু এর ছবি

মানুষের জীবনে এতোটা নস্টালজিয়া বা স্মৃতিকাতরতা থাকে বলেই জীবনটা এতো সুন্দর ! এটাই জীবনের প্রবহমানতা ! মধুর শৈশব চলে যায় বলেই শৈশব এতো মধুর। দুরন্ত কৈশোর বেশিকাল থাকে না বলেই কৈশোর স্বর্ণালী হয়ে ওঠে। তারুণ্য এতো উচ্ছ্বাসপ্রবণ আর ক্ষণস্থায়ী বলেই এতো দীপ্তি ছড়ায়। আসলে ধরে রাখতে পারি না বলেই এগুলো এতো সুন্দর মহোহরী। যদি কখনোই তা চলে না যেতো, তাহলে ওই অবস্থাতেই মানুষ একসময় আত্মহত্যার প্রতিযোগিতায় উন্মত্ত হয়ে ওঠতো !
এখন যৌবনের যে সময়কালটা পার করছেন, তারবীরা আপা, আগামী দশ কি পনের বা বিশ বছর পর এই সময়টার জন্যই হাহাকার করবেন। এটাই জীবনের রীতি। অন্যদিকে আমাদের এইসব চিন্তাগুলো একাধারে সুন্দর ও স্বার্থপরতায় আচ্ছন্ন। কেননা আমরা সুন্দর ও স্বার্থপরতাকে আলাদা করতে জানি না। আমরা বড় বেশি আত্মকেন্দ্রিক। আমি আমার সময়টাকে চিরকাল আকড়ে থাকতে চাই, আগামীর জন্য ছেড়ে দিতে চাই না। আমাদের পূর্বসূরীরা যদি এগুলো ছেড়ে না দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করতো তাহলে আমাদের কী হতো ! আমরা আমাদের উত্তরসূরীদের জন্য যদি তা ছেড়ে না দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলি, তাদের কী হবে !

প্রকৃতি আমাদের মতো এতোটা স্বার্থপর নয়। অনেক সুশৃঙ্খল, পরিমিত, পরিকল্পিত, এবং তাই আনন্দময়। স্থিরতা নয়, জীবনের প্রবহমানতাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। এই নিয়মের ক্ষুণ্নতা মানেই সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাওয়া, জীবনের সৌন্দর্য মরে যাওয়া।

অফটপিক: অধিকাংশ মানুষ (বিশেষ করে সুন্দরী রমণীরা) খুব তাড়াতাড়ি হতাশ হয়ে পড়ে। কারণ যে সমৃদ্ধি সে না চাইতেই পেয়ে গেছে, হারানোর আগে তার উপলব্ধিতে হয়তো ভালো করে ধরা দেয় না, অথবা সম্পদ পাওয়ার আনন্দ থেকে হারানোর কষ্টটাই সবার কাছে বেশি করে বাজে বলে.......

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তানবীরা এর ছবি

অফটপিকঃ জুতো মেরে গরু দান কি এই বস্তুর নাম রনদা?
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুবই মন খারাপ করা একটা লেখা, তানবীরাপু।

ফেলে আসা দিনের কথা ভেবে প্লিজ মন খারাপ কইরেন না। আপনি দেশে বেড়াতে আসেন আবার খুব তাড়াতাড়ি। প্রমিজ এইবার কোন গিফট চাব না। শুধু মজা করব অনেক। আড্ডা হবে, বেড়ানো হবে...

ভাল থাইকেন।

তানবীরা এর ছবি

হুমম

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মন ভাল হইসে?

তাইলে গিফটের যে লিস্টটা বানাইতেসিলাম, সেইটা পাঠায়া দেই দেঁতো হাসি

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হুমমম আসলেই আপু, আমরা যে কেন বড় হয়ে যাই মন খারাপ যত বড় হই আনন্দ তত কমে যায়। মনোপলি নিয়ে আমিও আম্মু আব্বুকে যন্ত্রনা করতাম আমারতো আর বড় কোন ভাইবোন ছিল না, মনেপড়ে ছোটবেলায় আব্বু দাবা খেলা শেখানোর পর আব্বুকে যে কি যন্ত্রনা করতাম। আব্বু ঘুমালেও বলতাম তুমি ঘুমায়ে ঘুমায়ে খেল, আমি চেলে দিব, আব্বু বাধ্য হয়ে আধা ঘুমে গো গো করে কোনরকমে গুটি নরাতো। এবার দেশে গিয়ে আব্বু আম্মু ছোট ভাইকে এত্ত মিস করসি কিন্তু বলিনাই। দেশে যাওয়ার দিন আমার রুমে পা রাখার মত জায়গা ছিলনা, এত এলোমেলো। এসে দেখি আমার রুম এত পরিষ্কার এত সুন্দর করে গোছানো, আমি নিজেও কখনো এত ভাল গোছাইনি। আর আম্মু প্রতিদিন ভোর ৭টায় ঘুম ভাংগাতো আর এর পর ৩-৪বার ফোন করত, এখন কি কর? এরপর কি করবা? আমি বলতাম মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেইতো ফোন করলা এর মাঝে আর কি করব খেলাম খাইছে অবশ্য আমার একটা বড় ভাই বা বোনের খুব শখ ছিল কিন্তু কিছুই করার নাই, আসলে এত ভালবাসা আছে বলেই পৃথিবীটা এত মায়ালী লাগে হাসি
আশা করি আবার আপনি ওরকম মজা করবেন ভাইবোনদের নিয়ে হাসি এক কাজ করেন সবাইকে নিয়ে সিডনী এসে বেড়িয়ে যান দেঁতো হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

তানবীরা এর ছবি

অদূর ভবিষ্যতে অস আসার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটা সিডনী হবে কি না জানি না। তুমি যদি তখনো সিডনী সো ফার অস থাকো তাহলে নিশ্চয়ই দেখা হবে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হাসিখুশি মানুষটার হঠাৎ অতো মন খারাপ কেনো?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তানবীরা এর ছবি

জানি না, জানি না, জানি না

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

তাতা আপু, পড়তে পড়তে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু তবুও পড়তে খুব ভাল লাগছিল। কেমন যেন আনন্দ আর বিষাদের মিশ্র অনুভূতি...
-----------------------------

--------------------------------------------------------

তানবীরা এর ছবি

হুমম

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

দুর্দান্ত এর ছবি

আপনার ছেলেবেলার বাড়ি এখনো আছে...আমাদেরটা তো নেই। সেই আম-পেয়ারা-কাঁঠাল-পেপে-নারকেল গাছে ঘেরা, ধান ক্ষেতের মাঝখানে ১২ সিড়ি পেরিয়ে উচু ভিটির টিনশেডের বাড়িটা নেই। এখন সেখানে এপার্টমেন্ট, মার্কেট, বস্তি, আর আবর্জনা।

ঢাকায় ফেরত যেতে পারি যখন চাই, কিন্তু শৈশব আর কৈশোরে আর ফেরত যাওয়া হয় না।

তানবীরা এর ছবি

আমার এই মূহুর্তে আসলে স্বার্থপর এর মতো নিজের দুঃখকেই বড় মনে হচ্ছে। কিন্তু আপনার কথা ঠিক, এর চেয়ে বড় কষ্ট বুকে নিয়েও বহুজন আছে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

s-s এর ছবি

"চিঠিটা তার পকেটে ছিলো - ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা, খোকা তুই কবে আসবি? কবে ছুটি?" মা"দের কান্নাগুলো কেমন যেন এমনই হয় তাই না?

খুব হালকা করে লিখলেও তানবীরা আপু আপনার লেখা খুব গভীর করেই স্পর্শ করলো ---- খুব ভেতরে কোথাও। বিষণ্ণ বাজনার মতো। একটানা রিনরিন সুরে বেজে চলছে ---
ভীষণ স্পর্শ করলেন আপু ---- অনেক দিন পর -- লেখা দিয়ে এত সহজে এমনভাবে নিজের জীবনটাকে আমাদের সার্বজনীন করে ফেললেন, শুধু একটি কথাই বারবার মনে আসছে রবি ঠাকুরের -- আপন হ'তে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া, বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া। বাইরে দাঁড়ানোর এই প্রচেষ্টাটুকুর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

তানবীরা এর ছবি

কি বলবো এর উত্তরে ???

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সুমন সুপান্থ এর ছবি

এমনি একটা হাহাকার বয়ে নিয়ে বেড়াই নিয়ত । আপনার এই লেখাটা পড়ে হু হু করে উঠছিলো হাওয়া...চরাচর !
এই রকম একেকটা গল্প আমরা সবাই পুষে রাখি মনে হয় তানবীরা !
তবু কী আশ্চর্য ভালো থাকা !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

তানবীরা এর ছবি

প্র্যাকটিস করছি একদিন হয়তো এভাবেই ভালো থাকা রপ্ত হয়ে যাবে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

তাতা'পু, কী বুড়ো হয়ে গ্যালেন!
ক্যামন বিষন্ন করা সুর পুরো লেখা জুড়ে।

তানবীরা এর ছবি

বুড়া আবার হবো কি নতুন করে, হয়েইতো আছি

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হূদয় খুড়ে বেদনা জাগানিয়া লেখা ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

তানবীরা এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আনন্দ উল্লাস কেম্নে সাবেক হয়? এ তো যতক্ষন দেহে আছে প্রাণ ততক্ষনের মাল...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তানবীরা এর ছবি

সাবেক না শুধু প্রাগৈতিহাসিক হইয়া গেছে

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

মন খারাপ

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

তানবীরা এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

tuli এর ছবি

খুব মন খারাপ করা লেখা। মনের খুব ভেতরের কোথায় যেন নাড়া দিয়ে যায়।
আমি নিজেও কি কোনদিন ভেবেছিলাম জড়াজড়ি করে বেড়ে ওঠা চার ভাইবোন আজ এতটা বিচ্ছিন্ন হবো ! কল্পনায়ও আসতোনা । আজ দেশে থেকেও অফিস- সংসার-সন্তান করে আর সময়ই পাইনা সবাই একসাথে হবার ।

তানবীরা এর ছবি

ধূ-গো'র মন্তব্য পড়ে এটাই ভাবছিলাম, দেশে থেকেই দেখা হয় না এমনকি এক বাড়িতে থেকেও হয় না। সবাই দিন - মান অফিস করে। আর দেখা হবে তিন মহাদেশ থেকে যেয়ে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সামিয়া এর ছবি

অনেক অনেক সত্যি কথা .............................. তাই এটা শুধুই মন খারাপ করা লেখা।

............................................................
চাইলেই যদি পাইতো.........আর পাইলেই যদি হইতো
তাইলে তো চাইলেই হইতো !!

তাহমিনা এর ছবি

খুব চেনা, নস্টালজিক আর মন খারাপ করা গল্প; নিবিড় ভালোবাসায় সাজানো!

____________________________________
When I'm right nobody remembers; when I'm wrong nobody forgets!

When I'm right nobody remembers; when I'm wrong nobody forgets!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।