রূপকথা নয়

তানবীরা এর ছবি
লিখেছেন তানবীরা (তারিখ: সোম, ২৪/০৮/২০০৯ - ৩:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই গল্পটি অনেক দিন ধরেই লিখবো ভাবছিলাম, কিন্তু অন্য একটা সিরিজের জন্য। আমার আশপাশে দেখা অনেক মেয়েদের অসংগতিপূর্ন জীবন নিয়ে একটা সিরিজ লিখবো ভেবেছিলাম। সিরিজের নামও ভেবেছিলাম “মুখ ও মুখোশ”। প্রবাসে দেখা নানা রকমের অসংগতি, কিংবা আমাদের এই অস্থির জেনারেশন দ্রুত পরিবর্তনশীল সর্ম্পকের কথাগুলো লিখব ভেবেছিলাম। হতে পারে এগুলো সবসময়ই ছিল আমার দেখার চোখ এতোদিনে এসে খুলেছে। আমাদের আশপাশে অস্বাভাবিক এতো কিছু এতো স্বাভাবিক গতিতে চলেছে যে, আজগুবি গল্প দিয়ে তৈরী মাশালা হিন্দী সিনেমাকেও আজকাল মনে হয় হয়ত সম্ভব, হয়তো হয়। যা যা আজকাল বাস্তবে ঘটে যায় তা অনেক সময় পর্দার সিনেমাকেও অনেক দূর ছাড়িয়ে যায়। অতন্দ্র প্রহরীর লেখা “গল্প নয়, সত্যি”পড়ে মনে হলো কবে আর সিরিজ লিখব তারচেয়ে এই ঘটনাটিই এখন লিখে ফেলি।

এবারের নির্বাচনের ফলাফল একটা কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতি আমাদের ঘৃণা আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি নিয়ে আর কালক্ষেপন নয়। যা আমরা করতে পারিনি, তা আমাদের ছোটরা করে দেখিয়েছে। অনেকেরই মতে এবার যারা নতুন ভোটার হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই নির্বিচারে যুদ্ধাপরাধীদের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাই ক্ষমতাসীন দলের বিশাল বিরাট বিজয় হয়েছে। এতো ভোটের ব্যবধানে তারা জয়ী হবেন তারা নিজেরাও আশা করেননি হয়তো। এই নিয়ে তাওয়া এখন বেশ গরম। আমরা বেশিরভাগ দেশপ্রেমিক বাংলাদেশিরাই যুদ্ধকালীন সময়ে আমাদের প্রতি তাদের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করি। আগে আমিও তাই করতাম। কিন্তু এখন আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, সেই ক্ষোভ এখন আমার অনেক কম। পাকিস্তানিরা তাদের নিজেদের ভাইবোন বা বউ মেয়ের সাথে যা ব্যবহার করে, আমাদের সাথে তার চেয়ে হয়তো একটু কম বেশি করেছে, তার বেশি কিছু না। এরচেয়ে ভালো তারা কিছু জানে না। বাংলাদেশ বারবার তাদেরকে ক্ষমা চাইতে বলে, আরে কিসের ক্ষমা তারা চাইবে? তাদের অপরাধটা কী? তারা আগে তাদের অপরাধ বুঝতে পারবে তারপরতো ক্ষমা চাইবে। যেগুলো তাদের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, সাধারণ ডাল রুটি, তার জন্য আবার ক্ষমা কিসের? যে দেশে প্রকাশ্য সালিশে কোনো মেয়েকে ধর্ষণ করার জন্য আদেশ দেয়া হয় এবং তারপর নির্যাতিত নারী মামলা করতে গেলে কোনো থানা তার মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের কাছে অন্যেরা কী আশা করতে পারে?

আমি তখন ডাচ ভাষা শিখতে স্কুলে যাই দিনের বেলায়। সাধারণতঃ সব রকমের গৃহবধূরাই দিনের বেলায় ভাষার ক্লাশে যান। যারা ছাত্র কিংবা চাকুরীজীবি, তারা যান সন্ধ্যার ক্লাশে। আমি সবে দেশ ছাড়া, প্রচন্ড হোমসিক। বরফের মধ্যে দিয়ে বাস ধরে কাঁদতে কাঁদতে বাবা - মাকে অভিশাপ দিতে দিতে স্কুলে যাই। কেনো বাবা মা আমার এই সর্বনাশ করলো, এই বিদেশ বিভূঁইয়ে একা পাঠিয়ে দিলো কষ্ট করার জন্য। আমিই একমাত্র বকলম ছাত্রী যে একবর্ণ ডাচ না জেনে স্কুলে গেছি। বেশিরভাগ জনই অনেকদিন আছেন, তাদের ছেলেমেয়েরা ডাচ স্কুলে পড়াশোনা করেন, তারা টুকটাক ডাচ বলেন। ভাষা শেখার থেকেও তারা আসেন সময় কাটানো সহ সামাজিক বিনোদনের কারণে। আমার মনে হতো আমি সৌদি বা তুর্কী বা সোমালিয়ায় আছি। আমার আশপাশ ভরা বোরকাওয়ালী যারা টীচারকেও হারাম - হালাল নিয়ে জ্ঞান দিয়ে, শুয়োর খেতে বারণ করেন। তুর্কীরা সংখ্যায় বেশি। তারা নিজেদের বাইরে কারো সাথে মিশতে আগ্রহী না। এবং তারা ক্লাশের ধনী শ্রেণী। বাড়ির কাজ করুক না করুক, ব্যকরণ পারুক না পারুক, ব্র্যান্ডেড জামা, জুতো, ঘড়ি, ব্যাগ, ডায়মন্ডের বাহার। আমার তখন খাওয়া পরার বাইরে যেকোন কিছুই সমস্যা, তাদের বাহার দেখে দেখে ফোঁস ফোঁস শ্বাস ফেলানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই। সোমালিয়ার যুদ্ধের কারণে সোমালিয়ান শরণার্থীও অনেক, কিন্তু তারা দরিদ্র শ্রেণীকে উপস্থাপন করেন। বাকি আমি, দু’একজন চাইনিজ কিংবা থাই, যারা রেষ্টুরেন্টে কাজ করেন; আর একজন সালোয়ার কামিজ পরা আন্টি।

আমরা এশিয়ানরা মোটামুটি একাই ক্লাশ করি। কেউ কারো সাথে গুড মর্নিং এবং সী ইউ টুমরোর বাইরে বেশি কিছু বলি না। সবাই বেশ হোমসিক, বিমর্ষ মুখে বসে থাকি। এরমধ্যে সালোয়ার কামিজ আন্টি প্রায়ই কফি ব্রেকে এসে আমার টেবিলে বসেন, যেটা আমার তখন বেশ অপছন্দ। আমি চাইতাম কফি ব্রেকে পড়াশোনা একটু দেখে রাখতে, বাসায় ফিরেই যাতে ঘুম দিতে পারি। কিন্তু উনি এসে বসেন আলাপ করতে। তারচেয়ে মহাজ্বালা—হিন্দী ফিল্ম দেখে আমি একটু আধটু হিন্দী বললেও, পাঞ্জাবী আমি কিছুই জানি না। আর উনি জানেন শুধুই পাঞ্জাবী। ইংরেজি, ডাচ কিংবা হিন্দী কিছুই জানেন না। উনি ‘ক্যায়সে হো বেটি’ বলে বাকি কি সব বলে যান উনিই জানেন। আমি হাজার বার বলি, “আমি আপনার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না”। উনি হাত নেড়ে নেড়ে বলেই যান। শেষের দিকে উনি উনার মতো কথা বলতো, আমি আমার মতো নিজের কাজ করতাম। মাঝে মাঝে স্কুল ছুটির পর আমি যখন বাস স্টপে হেটে যেতাম, উনি আমার সাথে সাথে বাক বাকুম পায়রা হয়ে আসতেন। আমি নির্বিকার। এক আধ সময় উনার মেয়ে উনাকে নিতে গাড়ি নিয়ে আসতো। তখন আমার সাথে সাধারণ সৌজন্য বিনিময় হতো।

উনার মেয়ে প্রায় আমার বয়সী। আমার সমান হলেও পাঞ্জাবী স্বাস্থ্যের কারণে আমার থেকে অনেক বড় দেখা যেতো। একদিন আন্টি হাত নেড়ে নেড়ে মেয়েকে কি বললেন, মেয়ে আমাকে এসে ওদের বাড়ি যেতে দাওয়াত করল। আমি একটু হ্যা না করে আর গেলাম না। কিন্তু পরে আফসোস লাগলো গেলেই হতো, বাসায় সারাক্ষণ একা থাকি। রাতে বাসায় বলতেই, স্বামী খুব বিরক্ত হয়ে বললেন, কে কী মতলবে ঘোরে কে জানে? হুট করে কোথাও যাবে না। ওদেরকে বলো বরং আমাদের বাড়ি আসতে। আমাকে অন্যদিন মা বেটি আবার ধরতেই, আমি বললাম, তার চেয়ে তোমরা আমার বাড়ি চলো। ওরা সাথে সাথে রাজি। মেয়ের সাথে হিন্দী, ইংরেজি, সাথে হাত পা মিলে ভাব প্রকাশ করতে করতে বেশ বন্ধুত্বই হয়ে গেলো। ওরা প্রায়ই আসতে লাগলো, ফোন ছাড়া, পূর্ব নির্ধারিত কোন ঘোষণা ছাড়াই। আমাকে স্কুল থেকে ওদের বাড়ি যেতে বললেও, এমনি সময় যেতে বলে না। আমার স্বামী বিরক্ত, তিনি বলেন, ওদের বলো তোমাকে-আমাকে দুজনকে একসাথে ডাকতে। আমি যখন এটা ওদেরকে বললাম, আমি কখনো আমার স্বামীকে নিয়ে আসতে চাই তোমাদের বাড়ি, মেয়ে বিশেষ কিছু উচ্চবাচ্য করলো না।

বেশ অনেকদিন পর একদিন অবশেষে আমাদের দুজনের দাওয়াত হলো ঐ বাড়িতে। আঙ্কেল তখন পাকিস্তান। বেশ খাওয়া দাওয়া হলো। ততোদিনে ওরা আমাদের বেশ বন্ধু। তারপর মাঝে মাঝে আমি ওদের বাড়ি যেতে লাগলাম স্কুল থেকে। অনেক আর্কষণ তখন ঐ বাড়িতে, জি-টিভি, নিজে না রেঁধে ভালোমন্দ খাওয়া দাওয়া আর গল্পগুজবতো আছেই। মাঝে মাঝে সিনেমা বা গল্প এক্সটেন্ড করলে আমার স্বামী অফিস ফেরত আমাকে নিতে আসতেন সেখানে। ডিনারও সেখানে খতম, বেশ ঝাড়া হাত পা। আমার স্বামী ওদের হাতে গড়ানো বাজরার রুটির খুব ভক্ত হয়ে গেছেন তখন। আঙ্কেল তখন পাকিস্তান থেকে ফেরত এসেছেন। সাথে এক সুন্দরী বিজনেস পার্টনার। ঐ পার্টনার আবার হোটেলে না থেকে ঐ বাড়িতেই থাকতো। মাঝে মাঝে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেকে গেলে দেখতাম, আঙ্কেল তার সুন্দরী বিজনেস পার্টনার নিয়ে ডিনার করছেন, তার তিন বড় বড় ছেলেও আছে সাথে। তারা খেয়ে গেলে আমি, আন্টি, আন্টির শাশুড়ী আর উনার মেয়ে খেতে বসতাম টেবলে। যদিও আঙ্কেল একজন নারীর সাথেই ডিনার সারছেন টেবলে, কিন্তু পরিবেশন করা ছাড়া বাড়ির অন্য মেয়েদের সেখানে খাবার খাওয়ার অনুমতি নেই। আন্টির সাথে আঙ্কেলের ভালো করে কথা আমি কখনোই শুনিনি। আন্টির শাশুড়ীকে মাঝে মাঝেই দেখতাম আন্টিকে খুব বকছে পাঞ্জাবী ভাষায়। আন্টিও তেড়ে তেড়ে ঝগড়া করছে, কিন্তু আমি তার এক বর্ণও বুঝতে পারছি না। আমি এটাকে অবশ্য নিতান্তই শাশুড়ী বউয়ের পারিবারিক কলহ ভেবেছিলাম, অন্যকিছু হতে পারে এমন ভাবনা ভাবার মতো ব্রেইন তখন আমার ছিল না।

একদিন তারপর বরফ কেটে সূর্য উঠলো। সূর্যের তাপ বরফ গলিয়ে মাটিকে উত্তপ্ত করলো। উত্তপ্ত মাটি তার গর্ভ থেকে ছোট ছোট কচি চারা বের করল। দেখতে না দেখতেই সেই চারাগুলো আলো হাওয়া পেয়ে লকলকিয়ে উঠলো। তারা তাদের শাখায় শাখায় নানা রঙের ফুল দিয়ে এই দেশটাকে সাজিয়ে ফেললো। জীবন বহমান। এর মাঝে একটি জিনিস দেখলাম, যদিও তখনও এ ব্যাপারটাকে অস্বাভাবিক ভাবিনি। আঙ্কেল প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর নতুন নতুন সুন্দরী বিজনেস পার্টনার নিজে পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসেন। কোনো পার্টনারকেই দ্বিতীয়বার দেখিনি। আমাদের তখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। ছোট একটা ফ্ল্যাটে থাকি, সুজুকি আল্টো গাড়ি চালাই। আর আঙ্কেল থাকেন বিরাট বাড়ি নিয়ে, মার্সিডিজ চালান। গার্মেন্টসের ব্যবসা, প্রতি তিন চার মাসে একবার পাকিস্তানে আসেন যান। এর মধ্যে অন্য কোন মাজেজা থাকতে পারে বুঝিনি। শুধু আন্টিকে দেখি কান্না করেন, আমাকে হাউ হাউ কেঁদে কেঁদে কি যেনো বলেন কফি ব্রেকে। আবার বলেন উনার মেয়েকে যেনো এসব কিছু না বলি (এটুকু বুঝতে পারি)। আর উনার মেয়ে শক্ত পাথরের মতো মুখ করে গাড়ি নিয়ে আসে, আমার সাথে কোনো রকমে হাই-হ্যালো সেরে মাকে নিয়ে চলে যায়।

একদিন ওরা মা-মেয়ে আমাদের বাড়ি এলো হঠাৎ করে। দুপুরের দিকে, আমি ওদের জন্য খাবার বানাচ্ছি রান্না ঘরে। ফ্ল্যাটের ওপেন কিচেন। মা মেয়ে কি নিয়ে যেনো কথা বলছিল। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। শুধু শুনছি মেয়ে চাপা গলায় মাকে ধমকাচ্ছে ‘চুপ করো’ টাইপ কিছু বলে, আর মা উচ্চস্বরে কেঁদে উঠছে বার বার। আমি তখন নতুন এসেছি এখানে। রান্না বান্না করতে হবে ভাবলেই গায়ে জ্বর আসে। রান্না শুরু করব কি ভেবে, আর অবশেষে কি পদার্থ ভেসে উঠবে হাঁড়ি থেকে এই টেনশন তো আছেই, আর সময়ও প্রচুর লাগে সামান্য একটা কিছু রাঁধতে। তারপরও আমি চা নাস্তা নিয়ে এসে ওদের অবস্থা দেখে কৌতূহল চাপতে না পেরে জিজ্ঞেসই করে ফেললাম, কী হয়েছে, আন্টি কাঁদছেন কেনো? মেয়েও বোধহয় সেদিন ধৈর্য্যহারা হয়ে গেছিল মাকে সারাক্ষণ সামলাতে সামলাতে। রাগ সামলাতে না পেরে বলেই ফেললো। যা শুনলাম তাতে আমি মাথা ঘুরে পড়েই গেলাম একরকম। আঙ্কেলের বিজনেস পার্টনাররা আসলে পাকিস্তানের ডাকসাইটে কলগার্ল যাদের সাথে আঙ্কেল ইউরোপ ঘোরানোর ডীল করে নিয়ে আসেন এখানে। আঙ্কেলের শোবার ঘরে আঙ্কেল তাদের নিয়ে ঘুমান, আন্টি উপরে এটিকে (ছাঁদের ঘরে) মেয়ের সাথে ঘুমান। আঙ্কেলের মা দোতলার অন্য শোবারঘরে ঘুমান। আর দুই শোবার ঘরে আঙ্কেলের তিন ছেলে ভাগাভাগি করে থাকেন। সকালে আন্টি আঙ্কেল আর তার গার্লফ্রেন্ডের জন্য নিজ হাতে চা বানিয়ে নিয়ে ওপরে দিয়ে আসেন।

আঙ্কেলের মায়ের এতে কোনো আপত্তি নেই। ছেলে পয়সাওয়ালা, দুটো চারটে এরকম মেয়ে বান্ধবী থাকা দোষের কিছুই না তার চোখে। আন্টি দেখতে শুনতে তেমন ভালো না আবার এত্তো মোটা হয়ে গেছেন, পড়াশুনা কিছুই জানেন না, তার কাছে উনার ছেলে কেনো যাবেন শুতে? আর উনার ছেলে কি বউকে খাওয়া পরা দিচ্ছেন না? মাঝে মাঝে আঙ্কেলের গার্লফ্রেন্ডদেরকে চা নাস্তা দিতে আন্টি গাই গুই করলে রান্না করার হাতা দিয়ে আঙ্কেল দু চারটে আরামসে লাগিয়ে দেন আন্টিকে। তখন শাশুড়ীও যান ছেলেকে সাহায্য করতে। বউয়ের চুলের মুঠি ধরে উনিও দু ঘা আচ্ছাসে লাগান। এত্তো কথা কিসের আবার? ভালো থাকতে ভালো লাগে না। চুল টানাটানির পর্যায়ে মাঝে মধ্যে আন্টিও দু ঘা শাশুড়ীকে বসিয়ে দেন। আঙ্কেল খুবই মা ভক্ত। তিনি এই বেয়াদপি সহ্য করতে পারেন না, তিনি আবার মারেন আন্টিকে। তারচেয়েও বড় কথা, উনি তখন আন্টিকে তার রঙিন রাতের বর্ণনা দেন জোরে জোরে। সারারাত তিনি কি ফুর্তি করেছেন, সেই বর্ননা দেন সবিস্তারে। আর কলগার্ল যারা সে সময় উপস্থিত থাকেন, বিনা টিকেটে এই সিনেমা দেখেন।

তখন আমি প্রথম অনুভব করলাম, আন্টি হাউ কাউ করে এতোদিন আমায় কি বলতেন। শ্যামলা রঙের আন্টিকে আমার শ্যামলা রঙ একটা পরিচিত বন্ধুর নির্ভরতা দিয়েছিল। সম্পূর্ণ অপরিচিত আমাকে তিনি এই বিদেশে আপন করে পেতে চেয়েছিলেন, আমার কাঁধে মাথা রেখে কাঁদবার জন্য। আমি খুবই রেগে তখন আন্টির মেয়েকে বল্লাম, তোমার ভাইয়েরা কেনো কিছু বলছে না? মেয়ে খুব দুঃখিত গলায় বললো, ভাইয়েরা নিজেদের জীবন, ফুর্তি নিয়ে ব্যস্ত। মায়ের কান্না তাদের কানে পৌঁছায় না। তাছাড়া, পয়সা দেবে কে তাদেরকে? ছেলেগুলো খুব একটা পড়াশোনা করেনি, সব বাবার ব্যবসাতেই সাহায্য করে। কিন্তু ওর এসব নির্জীব উক্তি তখন আমায় দমাতে পারছে না। আমার শরীরে তখনো ইউনিভার্সিটির জোশ। সমাধান করা যায় না এমন কোনো সমস্যা তখন আমার খাতায় নেই। পুলিশে কেনো যায় না ওরা? কেনো সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারের সাহায্য নেয় না, কোনো নারীসংস্থার সাহায্য কেনো নেয় না, এসব নিয়ে আমি তখন তুমুলে আছি আন্টির মেয়ের সাথে। আন্টি শুধু আল্লাহ আল্লাহ, নসীব নসীব করে, কপাল চাপড়ে কাঁদছেন।

আন্টিকে হল্যান্ডে এনেছেন কেনো তাহলে উনি? বিনা পয়সায় এতোগুলো লোকের রান্না, থালা বাটি ধোয়া, সংসারের যাবতীয় কাজ, ইস্ত্রি এগুলো না হলে কে করবে? ছেলে মেয়ে আর সংসারের গৃহস্থালী কাজের জন্য বিনা মাইনের এমন একটা হেল্প কি ইউরোপে পাওয়া যাবে? স্বীকার করতে বাধা নেই, আমি কোনদিন আন্টির ছেলেদের চোখেও ওদের মায়ের জন্য একফোঁটা শ্রদ্ধা, সমবেদনা কিংবা ভালোবাসা দেখিনি। বাবা যেমন মাকে কাজের লোকের মতো ব্যবহার করতেন, ছেলেরাও সেই রকমই ধরতে গেলে ব্যবহার করতো। তার চেয়ে খুব ভালো কিছু না। বোনের জন্য ছিল কিনা জানি না কিন্তু বোনের সাথে হর হামেশা পাঞ্জাবী ভাষায় লাগালাগি হতো, সেটা বুঝতে পারতাম তাদের চোখ নাক মুখ দেখে। সর্বোপরি নারীদের প্রতি কোন ধরনের শ্রদ্ধা ঐ পরিবারের ছেলেদের চোখে আমি দেখিনি কখনো। একবার এম। এস। এনে নিজের বোনের নামে লগ ইন করে আমাকে ভাইরাস পাঠিয়েছিলো ওদের এক ভাই। আমি ওর বোনকে ফোনে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে তুমি ভাইরাস পাঠালে কেন? বোন বললো আমার নামে ভাই লগ ইন করেছিলো।

আমার স্বামী বাড়ি ফিরলে আমি তাকে সবিস্তারে এই ঘটনা বলে অনুরোধ করলাম যেভাবেই হোক তিনি যেনো ওদেরকে সাহায্য করেন। আমার অনুরোধে রাইসমিল গিলে আমার স্বামী তার পরিচিত দু’একজনের সাথে আলাপ করতেই সব্বাই বললো, এসবে না জড়াতে। পাকিস্তানীরা এখানের সব রকম অপরাধের সাথে আষ্টে পৃষ্টে জড়িয়ে আছেন। আমরা ছা পোষা মানুষ, কোন ঝামেলায় পড়ি আবার। তাছাড়া যারা বিপদে আছেন তারাই কেনো কোনো হেল্প নম্বর কল করেন না? আমি কিছু করতে পারছি না সেই রাগে গরর গরর করে যাই দিন রাত। আমার স্বামী ততোদিনে আমার অযাচিতভাবে যেয়ে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার এই অভ্যাসের ব্যাপারটা টের পেয়ে গেছেন। তিনি ভয়ে ভয়ে থাকেন। কিন্তু আমি কিছুতেই আন্টি কিংবা তার মেয়েকে এই ভদ্রলোকের বিপক্ষে আইনী কিংবা সামাজিক লড়াইয়ে নামাতে পারিনি। তারা কান্নাকাটি করে কপালকে দোষ দিয়ে, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে, এই আশা বুকে বেঁধে নিয়ে নেদারল্যান্ডসের মতো দেশে জীবনটা কাটিয়ে দিলেন। যেখানে বহু ক্ষেত্রে, আন্টির ক্ষেত্রেতো বটেই, ডিভোর্স যে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আর মুক্তি দেয়, বিয়ে তা দিতে পারে না। তবে স্বীকার করতে দোষ নেই আঙ্কেল মানুষ খারাপ হলেও ঈমানদার ছিলেন। রমজানের মাসে তিনি কোন গার্লফ্রেন্ড রাখতেন না। ড্রিঙ্ক করতেন না। আমি রোজা রাখি না দেখে রোজার ফজিলত আর দোজখের আজাবের একটি লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে ফেললেন একদিন।

আমার পাকিস্তান অপ্রীতির জন্য আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের দ্বারা তিরস্কৃত হই। এদের মধ্যে ভারতীয়রাও আছেন। ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে একবার খুব হৈ চৈ হচ্ছিল। সেবার বিশ্বকাপে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ দুই দেশই আউট। পাকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে খেলছে। উপমহাদেশের অনেকের মতেই ‘ঠিকাছে পাকিস্তান জিতুক’। বিশ্বকাপ এশিয়াতেই আসুক। আর আমার মতে যেই জিতুক, পাকিস্তান না জিতুক। অনেকেই একদল আর আমি একা। তারা আমাকে অ্যারোগ্যান্ট বললেন, আবার বললেন অনেক দিনের ব্যাপার এখন ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা উচিত। কিন্তু ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার আমি কে? আমার তো কেউ মরে নাই, আমার বাড়ি ঘর জ্বলে নাই। যাদের গেছে তারা ভাবুন। জাতির পিতা যে ভুল করে গেছেন, সে ভুলের পুনরাবৃত্তি আমি কেনো করতে যাবো?

লালনের উক্তিটি মনে পড়ে, “মানুষ কী জাত সংসারে”। আমি যদি বলি, নারী কী জাত সংসারে? কি পাকিস্তানি, কি আফগানি, কি ইরানি কিংবা মার্কিনি। যুদ্ধ আমি দেখিনি। যুদ্ধ বা যুদ্ধাপরাধীদের ইস্যু আমার কাছে অনেকটা তাত্ত্বিক ব্যাপার। বলতে দ্বিধা নেই, আমার নিকটাত্মীয় কেউ মারাও যাননি যুদ্ধে। যদিও অন্যান্য বাংলাদেশিদের মতো আমার পরিবারের অনেকেই যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের দ্বারা নিগৃহীত হয়েছেন। আমার মা তখন নতুন বউ, যিনি ঠিকমতো শাড়ি পড়তে জানেন না, মাইলের পর মাইল দৌড়েছেন, আমার বাবাকে পেটের ধান্ধায় বেরোতে হতো। দুই দুইবার তাকে আটকে মিলিটারীরা রাস্তায় গুলি করতে করতে করেনি। কিন্তু এগুলো যখন আমি শুনতাম, টিভিতে দেখা মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার সাথে মিশিয়ে একটা ছবি দাঁড় করিয়ে নিতাম মনে মনে। ভাবতাম, ওরা কতো খারাপ। কিন্তু প্রবাসে এসে কিছু পাকিস্তানি পরিবারকে যদি এতো কাছ থেকে বিভিন্ন কারণে না দেখতাম, তাহলে হয়তো এভাবে ঘৃণা করতাম না।

কিন্তু এখন আমি সত্যিই পাকিস্তানিদেরকে ঘৃণা করি, মন থেকে।

তানবীরা
২৩.০৮.০৯

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ নানা ব্যস্ততায় লেখালেখি যখন শিকেয়, তখন অতন্দ্র প্রহরীর অক্লান্ত সহযোগিতায় এই লেখাটি পাঠকের দরজায়।


মন্তব্য

আহমেদুর রশীদ [অতিথি] এর ছবি

সিরিজটা নামিয়ে ফেলুন।

তানবীরা এর ছবি

ফেলবো কোথায় ?
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানবীরা এর ছবি

এইটার নাম জোশ, দিক্কার।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

জাহিদ হোসেন এর ছবি

বিদেশে না এলে ভালকরে পাকিস্তানীদের চিনতে পারতাম না। এরা যে কতবড় খচ্চর আর ভন্ড তার প্রমান পেয়েছি বহুবার।দুপুরে জুমার নামাজে জ্বালাময়ী ভাষায় যে খুৎবা দিলো, রাতের বেলার নাচের আসরে তাকেই দেখেছি একহাতে বীয়ার আর অন্যহাতে জাপানী মেয়ের কোমর জড়িয়ে ধরতে।
আপনার সিরিজটি চালু করুন।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

তানবীরা এর ছবি

সেটাই।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

আফরিনা এর ছবি

আল্লাহ আপনি একটা পাকিস্তানি ফ্যামিলির শাথে এতো ক্লোজ ছিলেন?

তানবীরা এর ছবি

ছিলাম না এখনো আছিতো।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মামুন হক এর ছবি

সিরিজ চালু হোক তানবীরা আপু।

তানবীরা এর ছবি

কোন একদিন নিশ্চয়ই হবে ............।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমিও সিরিজ চালুর দাবী জানালাম।

এই পোস্ট পড়ে পাকিদের আরেক দফা চেনার সুযোগ হলো। ধন্যবাদ তাতা'পু।

আর প্রহরী ভাই আসলেই সচলের অতন্দ্র প্রহরী। সবাইকে খুঁচিয়ে লেখা বের করতে তার জুরি নেই। ধন্যবাদ তাহাকেও হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সংশোধনী: আমি মোটেও তাতাপুরে খোঁচাইনি এই লেখার জন্য। উনি সম্পূর্ণ নিজের আগ্রহে এই পোস্ট লিখসেন। সকল কৃতিত্ব শুধুই উনার। তাই ধন্যবাদ নিতে পারলাম না। তবে আইসক্রীম আর মিষ্টি খাইতে 'না' নাই দেঁতো হাসি

কীর্তিনাশা এর ছবি

আহারে আমার বিনয়ের অবতার রেহ.............. দেঁতো হাসি

আমি তো খাওয়াতে এবং খেতে উভয়ই চাই। ডেট ফালান তাড়াতাড়ি। হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সত্যি কথাই কইসি রে ভাই। আমি তো বালিকা ছাড়া ডেটে যাই না দেঁতো হাসি

তানবীরা এর ছবি

আমারে দিয়া সিরিজ লেখাইবা আর তোমরা আইসক্রীম আর মিষ্টি খাইবা ????চাল্লু
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এইটা আর এমন কী? এসব তো তারা কর্তব্য মনে করে...

সিরিজ চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তানবীরা এর ছবি

সেটাই। আমাদের দেশে চারটা বিয়ে করা যায় না, দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগে নইলে জেল হতে পারে শুনে, আমরা মুসলমান কি না, তা নিয়েও উনাদের সন্দেহ জাগে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রানা [অতিথি] এর ছবি

তানবীরা, দারুন লিখা। মনে হল আপনি ঘটনাকে খুব অথেন্টিকালি, মানে যে রকম ঘটেছে ঠিক সেরকম করেই, বর্ণনা করার চেষ্টা করেছেন । চালিয়ে যান “মুখ ও মুখোশ” সিরিজ।

আংকেলের কথা পড়ে পেট গুলাচ্ছে রোজামুখে। আন্টির জন্য খারাপ লাগছে আর অসহায়ত্ব বোধ করছি ছেলেগুলো এরকম দেখে। কিছু কি এখনও করা যায় না?

“মুখ ও মুখোশ” সিরিজের মত অন্য আর একটি সিরিজ করবেন কি, অনেকটা বিপরীত মেরুর? যেখানে থাকবে প্রবাসে প্রক্ষিপ্ত মানুষের অসাধারণত্বের কথা, অযাচিত, অপ্রত্যাশিত ভালবাসার কথা, স্বার্থ আর ভালবাসার মাঝে ভালবাসাকে বেছে নেয়ার কথা।

তানবীরা এর ছবি

রানা, ধন্যবাদ আপনার অভজারবেশনের জন্য। আমিতো আসলে লেখিকা না, প্রফেশনালদের মতো গল্প আমার হয়ও না। আমি চাই আমার লেখার খাতায় আমার নিজের দেখা অভিজ্ঞতাই থাকুক। কারো কোন কাজে হয়তো লাগবে না কিন্তু অনেক হাবিজাবির সাথে আর একখানা। তাই আমি যেভাবে দেখি সেভাবেই লেখার চেষ্টা করি।

প্রবাসের আলোকিত লোকেরা বিভিন্নভাবে তাদের আলোক রেখা ছড়াচ্ছেন। বিভিন্ন ই-ম্যাগ আছে, টিভি আছে। আমি দুঃখিনিদের কথাগুলোই লিখতে চাই। অন্য কেউতো দূরের কথা, দুঃখিনিরা নিজেরাও মুখ ফুটে সে কথা কাউকে বলতে পারে না।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রানা [অতিথি] এর ছবি

আপনার বিনয়ের মুখে আরও যোগ করছি । আমার মনে হয়েছে, আপনি পান্চ লাইনের জন্য পুরো লেখাকে সাজাননি যা কিনা অনেকেই করেন। বিস্ময় স্বাভাবিকভাবে এসেছে । স্টাইলটা অনেকটা সত্যজিত্ রায়ের মত ।

বিপরীতধারার একটি সিরিজ লেখার অনুরোধও কিছুটা এই কারণেই । আমার মানে হয়
আপনার ঘটনা ধরতে পারার ক্ষমতা আছে । আমি আলোকিত মানুষের কথা বলিনি , তাদের নিয়ে সবাই ব্যস্ত । আর "আলোকিত" মানুষও অনেকসময় বাস করেন পাদপ্রদীপের অন্ধকারে । আমি বলেছি সাধারণ মানুষের কথা, যারা জোনাকির মত আলো ছড়ায় । আপনার এই লেখাতেই এরকম কিছুটা এসেছে, আপনি আন্টি বা তার মেয়ের আতিথেয়তা বা বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ ভালভাবে তুলে এনেছেন । আপনার স্বামী অফিস থেকে ফেরার পথে আপনাকে তুলে নেবার সাথে সাথে যেন খেয়ে যান সেটি আন্টি করতেন আন্তরিকতার সাথে, এধরণের একটি জীবনে বাস করেও। এরকম আন্টির কাহিনি বিজয়ের কাহিনি, পরাজয়ের নয়।

আমি নিজেও প্রবাসে এরকম অনেক অপ্রত্যাশিত ভালবাসার সম্মুখীন হয়েছি। কর্মসূত্রে আমার বাস "আলোকিত" মানুষদের মাঝে হলেও এ ভালবাসা, আন্তরিকতার প্রায় পুরোটুকুই পেয়েছি সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে, যারা অনেকেই সংগ্রামরত প্রবাসী। কঠিন বাস্তবতা আর অনিশ্চয়তার মাঝে থেকেও তারা মনের কোমলতা নষ্ট হতে দেননি। পত্রপত্রিকায় তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলা হয়, তারা দৌড়ে কিভাবে এগুতে পারে তা নিয়ে অভিসন্দর্ভ রচনা করা হয়, কিন্তু তাদের "সাফল্যের" কথা ক'জন বলে?

তানবীরা এর ছবি

আমার লেখায় কোন পাঞ্চ লাইন থাকে না শুধু লেখাটাই থাকে।

আমিও আপনার সাথে একমত। আলোকিত লোকেরা নিজেরা এ্যাটেনশন পেতে এতো ব্যস্ত যে আমাদের মতো লোকদের দিকে তাকাবার সময় কোথায় তাদের? সাধারণ লোকেরাই মানুষের কদর করে, ভালোবাসে
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অম্লান অভি এর ছবি

আপনার অভিজ্ঞতার লেখা গুলো ধারাবাহিক ভাবেই চলুক।
একটু ফোড়ন দেই- লেখক মাত্র তার সমসাময়িক অভিজ্ঞতার শাব্দিক রূপ দেয় তা গল্পে, কবিতায়, খেরখাতায়, ইন্দ্রজালে আর এই আন্তজালিকতায়ও। না হলেন প্রফেশনাল গল্প লিখিয়ে! তাতে কি, সময় তো রয়েছেই পড়ে আগামীর কোন লেখা হয়তো আপনার মন কাঠামোগত গল্প হয়ে উঠবে।
ধিক্কার আমারও আছে.........পাকিস্তানিরা চলে গেছে এমন কিছু পাকি রেখে গেছে এই সোনার বাংলায়ও...........আর আপনাদের মত প্রবাসীরা মাঝে দেখা পায় প্রবাসেও তাদের।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

মুশফিকা মুমু এর ছবি

OMG অ্যাঁ অ্যাঁ অ্যাঁ

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

তানবীরা এর ছবি


---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"আমি যদি বলি, নারী কী জাত সংসারে? কি পাকিস্তানি, কি আফগানি, কি ইরানি কিংবা মার্কিনি।"

এই কথাটাই ঠিক। বাংলাদেশের কথাই ধরুন, কেবল অশিক্ষিত শ্রেণীই না উচ্চশিক্ষিত, রুচিবান, সংস্কৃতিমনা বা পণ্ডিত বলে পরিচিত এমন সব পুরুষকে দেখেছি যারা নির্দ্বিধায় বাড়ির মেয়েদের (স্ত্রী, কন্যা, বোন, ভাইয়ের বউ, এমনকি মা) গায়ে হাত তোলেন। যারা হাত তোলেন না তাদের জিহ্বা বা চোখ চাবুক বা জালি বেতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। নারীমুক্তি, নারীর অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে মুখে ফেনা তোলা, কলমে রক্ত ঝরানোদের অনেকেই নিজের ঘরের নারীদের অধিকারের ব্যাপারে আশ্চর্যরকম নিরব। খ্যাতিমান পুরুষের খ্যাতিমান স্ত্রীকেও এই পারিবারিক নিগ্রহের নিয়মিত শিকার হতে দেখেছি।

প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় একটা কথা বলি। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর মধ্যে যেগুলো নারীদের ব্যবহার করতে হয় তার অধিকাংশই তাদের রক্তে মেশে। আমরা জানি এইসব গিলে খাওয়া বা শিরায় নেয়া ঔষধগুলো এখনো নারীর শরীরের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত নয়। এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার গল্প আপনার চারপাশে কোটি কোটি আছে। এতসব কিছু জানার পরও একনিষ্ঠ দম্পতিদের মধ্যে দেখবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীকেই বাধ্য করা হয় কিছু গিলে খেতে বা শিরায় নিতে। আরো বাজে এবং ভয়ঙ্কর পদ্ধতিও আছে যেগুলোতে নারীকে বাধ্য করা হয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারীর এই নিগ্রহের, এই অপমানের শেষ নেই।

একটা মুভিতে দেখেছিলাম (সম্ভবতঃ Scarface) যেখানে মোটামুটি এমন একটা কথা বলা হয়েছিল যে, অপরাধে ডিপ্লোমা নেয়ারা জেলে আসার পর অপরাধে গ্রাজুয়েশন করে, পিএইচডি করে। অর্থাৎ জেলখানা অপরাধীকে সংশোধন করে না, অপরাধী তৈরি করে। পাকিস্তান হচ্ছে জেলখানার সাথে তুলনীয় এমন একটা দেশ যেখানে ভালো-মন্দ মিলিয়ে প্রকৃতির স্বাভাবিক বৈচিত্রের বাইরে গিয়ে নানা প্রকারের অমানুষই কেবল তৈরি হয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডবের মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

মন্তব্যে হাততালি

তানবীরা এর ছবি

"আমি যদি বলি, নারী কী জাত সংসারে? কি পাকিস্তানি, কি আফগানি, কি ইরানি কিংবা মার্কিনি।"

নারী পুরুষের বৈষম্য নেই, এমন কোন জাতিই নেই। খোদ আমেরিকানরা এখনো নারীকে ক্ষমতার শীর্ষে মেনে নিতে পারে না। পঞ্চাশ বছর আগেও নেদারল্যান্ডসের তথা ইউরোপের মেয়েরা বাইরে কাজ করতেন না। সেই আমলের অনেক বিল্ডিং, খোদ ফিলিপসে আমরা অফিস করেছি টয়লেটের সমস্যা নিয়ে। আট তলা বিল্ডিং এ দুটো জেন্টস টয়লেটকে সময়ের দাবীতে লেডিস এ পরিবর্তন করা হয়েছিল। সুতরাং গ্রামের বাড়ির মতো মেয়েদেরকে দোতলা কিংবা ছয় তলায় টয়লেটে যেতে হতো। এগুলো এখনো কালের সাক্ষী বহন করলেও এখানের মানুষ অনেক বদলেছে।

কিন্তু শুধু মুসলমান সমাজের বদল হয়নি। যেকোন দৃষ্টিতেই দেখা হোক না কেনো মুসলমান ছেলেদের মানসিকতার তেমন কোন পরিবর্তন নেই। এটা দৃষ্টিকটুভাবে চোখে পড়ে।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মুস্তাফিজ এর ছবি

ঘৃণা করি পাইকাদের।

...........................
Every Picture Tells a Story

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক “মুখ ও মুখোশ” সিরিজ চলুক।

"তবে স্বীকার করতে দোষ নেই আঙ্কেল মানুষ খারাপ হলেও ঈমানদার ছিলেন। রমজানের মাসে তিনি কোন গার্লফ্রেন্ড রাখতেন না। ড্রিঙ্ক করতেন না। আমি রোজা রাখি না দেখে রোজার ফজিলত আর দোজখের আজাবের একটি লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে ফেললেন একদিন।"

মাহে রমজানে মৌসুমি ঈমানদার ও আমলদারের সংখ্যা বেড়ে যায় এদেশেও ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

তানবীরা এর ছবি

সিরিজ আরম্ভ হইলে কোনদিন নিশ্চয়ই চলবে।

হ, ঘুষের টাকার মচমচানি বন্ধ হইলে ঢাকার ফুটপাতের অর্ধেক ইফতারি বিক্রি হবে না।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

পাকিস্তানিদের ঘৃণা করি।
“মুখ ও মুখোশ” সিরিজ চলুক।

নৈশী ।

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

মানিক ভাই আমার টার্গেট আর লক করা অংশ মারিং করা্য তারে মাইনাছ।

আর তনুপা, আপনে থামিয়েন না, সবার থামা ভালানা। আপনেরে চলুক

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

দারুণ লেখা। আগুনঝরা লেখা।
চোখের সামনে নরক দেখতে পেলাম। নিজেকে কী ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এমন একটি পরিবারে যদি জন্মগ্রহণ করতাম!
তানবীরা আপা, নাড়া দেয়া লেখা। এটা না লিখলে এইভাবে অনুভূতি ভাগাভাগি না করলে অন্যায় হত! ধন্যবাদ আপনাকে!
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

তানবীরা এর ছবি

নিজেকে কী ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এমন একটি পরিবারে যদি জন্মগ্রহণ করতাম!

মৃদ্যুলদা, কতো সহস্র বার এই কথাটি আমি নিজেকে বলেছি আর বলি দিনের মধ্যে তা কেউ ভাবতে পারবে না। ভিসার জন্য, পয়সার জন্য, ব্যবসার জন্য কতো আবোল তাবোল ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয় লোকে। যদি তাই হতো, তাহলে কি করতাম?

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

এইটা একটা লেখা বটে! চলুক

পাকিরা জাতিগতভাবেই এমন কেন, এইটা আসলেই একটা বিস্ময় বটে! সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণা করার বহুত কিছু আছে এদের নিয়ে। (যদিও মিছাই সময় নষ্ট)

তানবীরা এর ছবি

সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণা করার বহুত কিছু আছে এদের নিয়ে। (যদিও মিছাই সময় নষ্ট)

উত্তম জাঝা!

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

যেই দেশের জাতীয় পশু গরু, আপনি তাদের কাছে আর কী আশা করেন প্রহরী ??

...আই হেইট পাকিস...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

মেয়ে যেহেতু আপনার বয়সী, তাহলে বলতেই হয় বুড়া পাকি শালার জোস আছে!
পাকিদের মনেপ্রাণে ঘৃণা করি, করবো!
................................................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

হিমেল [অতিথি] এর ছবি

পাকিস্তানী এবং তাদের বাঙ্গালী/বাংলাদেশী বন্ধুদের জন্য সব সময় ঘৃণা বরাদ্দ থাকবে আমার পক্ষ থেকে। দারুণ লিখেছেন আপু...

আশরাফুল আলম রাসেল এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। আর যাই হোক পাকিস্তানীদের বিশ্বাস করিনি কখনো। আমার মনে আছে একবার বাজারে গিয়ে একটা শার্টের কাপড় খুব বেশি পছন্দ হয়েছিলো। দামটা বেশ চড়া। আমি জানতে চাইলাম, দাম বেশি হবার কারণ কী। তারা বললো এটা পাকিস্তানী কাপড়, খুব ভালো। ভাগ্যিস দামটা বেশি মনে হওয়াতে জিজ্ঞেস করেছিলাম। আমি সাথে সাথেই চলে আসি। পেছন থেকে দোকানী ডাকডাকি করে, দাম কমাতে চায় কিন্তআমি আর সেই দোকানে যায়নি। পাকিস্তানী কোনো কিছুই আমার পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভ না, কোনো বিষয়েই সাথে আপোষ সম্ভব না। সিরিজ টা শেষ করুন এটাই কামনা।

আমি অতিথি তোমার দেশে.....

আমি অতিথি তোমার দেশে.....

তানবীরা এর ছবি

এইটা একটা কথা বটে দেশে। গাউছিয়ার সামনে যে পথকলিরা চিরুনী, সেফটিপিন বিক্রি করে, এগুলাও বলে, আপা এডি চাইনীজ, অনেক দাম পড়ব। সারা বাংলাদেশে বাংলাদেশি কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

উন্মাতাল তারুণ্য এর ছবি

ছিঃ ছিঃ এইভাবে পাকিস্তানী আংকেলকে ভিলেন বানানো ঠিক হইল না। জানেন না, এই দুনিয়ার মুসলমানদের দুইটা জাত আছে। এক। পাকিস্তানি মুসলমান দুই। বাকি সব মুসলমান। আল্লাহতায়ালা খাসভাবে এই পাকিস্তানি মুসলমানদের জাতকে অন্য মুসলিমদের উঁচা করে দিয়ে কচুপাতা দিয়ে মুড়ে দিয়েছেন যাতে পানি লেগে জং না ধরে। এবং সেইসাথে জান্নাতি সুযোগ সুবিধা দুনিয়াতেই দিয়ে দিয়েছেন। জানেন না, জান্নাতে ৭০খানা হুর পরী থাকবে এবং তাদের সাথে মিলনেও কোন পাপ নাই। জান্নাতি শরাবেও কোন সমস্যা নাই। এই বিচারে জান্নাতি আংকেলের এইসব জান্নাতি কর্মকান্ড মোটেও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না।

ফাকিস্তান ঝিন্দাবাদ!!

তানবীরা এর ছবি

এক। পাকিস্তানি মুসলমান দুই। বাকি সব মুসলমান।

উত্তম জাঝা!

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পাকি ছাত্র কোরিয়ায় গিয়ে বাসের মধ্যে এক মেয়েকে হ্যারাস করার পরে দূতাবাসের লোকেরা ব্যাখ্যা দেয়, এইডা কালচারাল ডিফেরেন্স, পাকিস্তানে এই ঘটনা খুব নর্মাল। সুতরাং আপনি যেটা দেখেছেন, এটাও তাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রছাড়া আর কিছু নয়। দেঁতো হাসি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তানবীরা এর ছবি

আলবত।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

বশির আল হেলাল এর ছবি

লেখা চলুক..........আছি অধীর আগ্রহে.......

অতিথি লেখক এর ছবি

সিরিজটা কবে লিখবেন? আশা করি খুব তারাতারি। ভালো লাগলো সুন্দর একটা লেখা পড়ে। ধন্যবাদ পোষ্ট দেয়ার জন্য।

বর্ষা [অতিথি] এর ছবি

'কিন্তু আমি কিছুতেই আন্টি কিংবা তার মেয়েকে এই ভদ্রলোকের বিপক্ষে আইনী কিংবা সামাজিক লড়াইয়ে নামাতে পারিনি। তারা কান্নাকাটি করে কপালকে দোষ দিয়ে, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে, এই আশা বুকে বেঁধে নিয়ে নেদারল্যান্ডসের মতো দেশে জীবনটা কাটিয়ে দিলেন। যেখানে বহু ক্ষেত্রে, আন্টির ক্ষেত্রেতো বটেই, ডিভোর্স যে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আর মুক্তি দেয়, বিয়ে তা দিতে পারে না। '-----আপনি চেষ্টা চালিয়ে যান-----নইলে মেয়েটার ও একই অবস্থা হবে। বাবা র মতো আরেক টার সাথেই ওর বিয়ে হবে। মায়ের জীবন তো শেষ, বোঝাই যাচ্ছে-----

'তবে স্বীকার করতে দোষ নেই আঙ্কেল মানুষ খারাপ হলেও ঈমানদার ছিলেন। রমজানের মাসে তিনি কোন গার্লফ্রেন্ড রাখতেন না। ড্রিঙ্ক করতেন না। আমি রোজা রাখি না দেখে রোজার ফজিলত আর দোজখের আজাবের একটি লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে ফেললেন একদিন। '-----ঢাকার আমি এমন আংকেল, সহপাঠী অনেক দেখেছি।

@ ষষ্ঠ পাণ্ডব, 'অপরাধে ডিপ্লোমা নেয়ারা জেলে আসার পর অপরাধে গ্রাজুয়েশন করে, পিএইচডি করে। অর্থাৎ জেলখানা অপরাধীকে সংশোধন করে না, অপরাধী তৈরি করে। পাকিস্তান হচ্ছে জেলখানার সাথে তুলনীয় এমন একটা দেশ যেখানে ভালো-মন্দ মিলিয়ে প্রকৃতির স্বাভাবিক বৈচিত্রের বাইরে গিয়ে নানা প্রকারের অমানুষই কেবল তৈরি হয়।'------------------জটিল।

তানবীরা এর ছবি

-----আপনি চেষ্টা চালিয়ে যান-----নইলে মেয়েটার ও একই অবস্থা হবে। বাবা র মতো আরেক টার সাথেই ওর বিয়ে হবে। মায়ের জীবন তো শেষ, বোঝাই যাচ্ছে-----

এই ঘটনাগুলো অনেক আগের। এই পরিবারটি এই ভদ্রলোকের দ্বারা অনেকভাবে নির্যাতিত হয়েছে। মানসিক সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আমি আর কিছুই করতে পারি নি।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানবীরা এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই, নৈশী, সিমন, পান্থ, হিমেল, বশির আর নাম না জানা অতিথিকে অনেক ধন্যবাদ, কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

তাতাপু, সিরিজের অপেক্ষায় থাকলাম।

---------------------
নামে কি'বা আসে যায়...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নাহার মনিকা [অতিথি] এর ছবি

তানবীরা, আপনার দেখার গভীরতা আর লেখার ষ্টাইল দুটোই আকর্ষনীয়।

তানবীরা এর ছবি

ধন্যবাদ আপা।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তুলিরেখা এর ছবি

বলেন কি? এইসব নির্যাতিত মহিলারা কোনো সোশাল সার্ভিসের সাহায্য নেন না? ইনি তো ক্ষতিপূরণসমেত আলাদা হয়ে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে থাকতে পারেন, কাজকর্মের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। কেন ইনি ঐ খারাপ স্বামীর সঙ্গেই রয়ে গেলেন কোনো প্রতিবাদ ছাড়া? (এই স্বামীলোকটার তো শুধু অর্থদন্ড না, মানসিক দৈহিক অত্যাচারের জন্য রীতিমত আইনগত শাস্তি হওয়া দরকার ছিলো! )
আমার তো বিশ্বাস হচ্ছিলো না প্রথমে, এরকম এত খারাপ মানুষ হয়?

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিকেত এর ছবি

তানবীরা,

এমন একটা অসামান্য লেখার জন্যে এক কোটি তারা---
আপনার এই ভণিতাহীন সরল সৎ লেখনীর ভক্ত কেবল আমি নই---আরো অনেকে। তাই সকলের সাথে অনুরোধ রইল---সিরিজটা চলুক----

তানবীরা এর ছবি

তায়েকবাই, (সামারার মতো বল্লাম), আপনি আমারে ভালো পান, তাই এগুলো বলছেন। লজ্জা পাইলাম দাদা। ভালো থাকেন।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

রূপকথা নয়, এটা চুপকথা। চুপ ক'রে রইলাম, কিছু বলতে পারলাম না। মন খারাপ
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

সিরিজ নামান।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

s-s এর ছবি

আমি একটা বোকার মতো, মানে বোকাসরল গোছের প্রশ্ন করি, ভদ্রমহিলার স্বামীর যেহেতু পারিবারিক "সম্মতি" আছে বহুগামিতার ব্যাপারে, আপনি নিশ্চিত ছিলেন কি তানবীরাদি যে উনি ওই অ্যাবিউসিভ সম্পর্কটা একরকম অভ্যস্ততাতে
"মেনে" নিয়েছিলেন কি'না? এটা একারণে বলছি, দেখা যায় মেয়েদের অত্যাচারিত হতে হতে মানসিক বাঁধনটা এমনভাবে ভেঙে পড়ে যে, অত্যাচারী স্বামী, বিয়েফ, পার্টনার এদের কাছে মার খাবার পর এই মেয়েদের ফিরে যাবার একটা প্রবণতা খুব বেশি মাত্রায় প্রবল হয়। বেরুনোর রাস্তাটা জানা থাকলেও জানা রাস্তা নেবার মতো এক্সপেরিমেন্টের ইঁদুরগুলোর অবস্থা হয় তাদের। পকিস্তানীদের শুধু নয় যেখানেই মুসলিম/ধর্ম-প্রধান সমাজ, সেখানে মেয়েদের সরাসরি দলন ও দমনের চিত্রটা একই রকম সেটা তুর্কী, লেবানিজ, মিশরীয়,আরব, বেদুইন সবার মধ্যেই দেখেছি অত্যন্ত প্রবল। আর বাংলাদেশীদের কথা না বললে এখানে পাপ হবে। একজন শিক্ষক আছেন, এদেশেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের, শুনেছি, তাঁর দুই স্ত্রী বর্তমান এবং তৃতীয়া অপেক্ষমান ! অয়োময়ের মির্জার কথা মনে পড়ে গেলো। সবকিছুর পরও, শিউরে ওঠা যে বাস্তবতায় আমাদের বসবাস, বহুগামিতা ক্ষমতার প্রভাবকেই আরো জোরদার করে, এটা তার থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো গল্প নয়। আমি শিউরে উঠলাম না কারণ এর থেকে কুৎসিত, অবনমন আমার নিজের চোখেই দেখা, এই গোরাল্যান্ডেই। ক্ষমতার রাজনীতি যদ্দিন থাকবে , নারী পুরুষের যৌনসম্পর্ক সে রাজনীতি বিবর্জিত হবে কি ?
ভদ্রমহিলার জন্য খারাপ লাগছে, খুব। কিন্তু সান্ত্বনা দিতে পারছিনা। তাতে ওঁর নিজেরই অপমান বাড়ে। মেয়ে হিসেবে আমারও বাড়ে। বেরিয়ে আসাটা দরকার হলেও সেটা বাস্তব কি'না তা বোঝাটাও জরুরী। সম্পর্কের ক্ষমতায়ন আমাদের সেটা এখনও শেখাচ্ছে, তাই ওনার মেয়ের এ অবস্থা হবে না, এটুকু আশাবাদ ব্যাক্ত করি।

তানবীরা এর ছবি

সেজুঁতিদি, আসলে উনার সাথে আমার ভাষার সমস্যার কারনে, আমি কখনোই ঠিক করে উনার সাথে কথা বলতে পারিনি। তবে আন্টি গ্রাম থেকে এসেছেন, খুবই সহজ সরল একজন নারী যিনি নিজের অনুভূতি হয়তো ঠিক করে কিভাবে ভাষায় প্রকাশ করতে হয় তা জানেন না। আর নিজের সম্পর্কে কিংবা অধিকার সম্পর্কে কোন সচেতনতা নেইই।

উনি এখন মেয়ের সাথে আছেন। মেয়ের বিয়ে হয়েছে, ছেলে হয়েছে, আপাতত ঠিকঠাক চলছে কারণ যে ছেলেটাকে বিয়ে করেছে তার এখনো কাগজ হয়নি। আর যাদের কাগজ আছে তারা কেউ ওকে বিয়ে করেনি। এনগেজমেন্টের পরে তিন বার ওর বিয়ে ভেঙ্গেছে বাবার কারনে ।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

স্বপ্নহারা এর ছবি

জটিল লেখা...পাকিগো আসলেই এলেম আছে! হেগোরে গালি যেই গালিই দেই মনে হয় কম হইয়া গেল...

অপেক্ষায় থাক্লাম...সিরিজটার জন্য!

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মণিকা রশিদ এর ছবি

নানান কিসিমের পাকী দেখছি। বড়ই বিস্ময়কর সম্প্রদায়!
জাপানে একই হস্টেলে ছিলাম ২ টা পাকী পরিবারের সাথে। জন্ম থেকেই পাকিস্তানী দেখতে পারি না। তাই আমার রুমের দুই পাশে দুইজন পাকীর রুম খুবই অস্বস্তিতে ফেলেছিল। একদিন দেখি বাঁ পাশের পাকিস্তানীর বউ আমারে নামাজ পড়ার উপদেশ দ্যায়। তার স্বামীর কপালে বিশাল কালো দাগ( নিয়মিত নামাজ পড়ার)। যা হোক, একদিন সেই বউ পাকিস্তান বেড়াতে গেছিলো। তারপর থেকে যতদিন বউ ছিলনা, ওই লোক রোজ একজন করে মেয়ে নিয়ে আসত। হাহা হিহি , নাচানাচি ইত্যাদির চলত! সারারাত তাদের যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারতাম না। একদিন বাধ্য হয়ে হস্টেল সুপারের কাছে বলতে হলো। এরপর বউ ফিরে আসার পরে আমাকে আর নামাজ পড়ার উপদেশ দ্যায়নাই। মনে হয় সুপারকে নালিশ করাটা অন্যভাবে কাজে লেগেছিলো! এরকম আরো অনেক আছে ঘটনা, একদিন সময় করে লেখার ইচ্ছা রাখি। তোমার লেখা খুবই ভাল লেগেছে।

........................................
......সবটুকু বুঝতে কে চায়!

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

তানবীরা এর ছবি

তোমাকে স্যালুট
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাইফ তাহসিন এর ছবি

তানবীরাপু, এই নিয়ে চারবার পড়লাম, আগের তিনবার ভাষা হারিয়ে বিদায় হয়েছি, এবারে কিছু সাহস সঞ্চয় করে কমেন্টাইতে আসলাম, পাকিদের কথা উঠলে আমার মাথা খারাপ হয়ে যায় ইদানিং, খালি খিস্তি আসতে থাকে, আসলে এরা মানুষের জাত না। সভ্য দুনিয়া থেকে এদের হিটলারের পন্থায় নিশ্চিহ্ন করা উচিত। খুব অসাধারন একটা লেখা। লক্ষ কোটি তারা আপনার লেখায়।

আর আন্টির কথা কি বলব, আসলে এই পরিস্থিতে আপনার করার নাই কিছু, মারিকায় এ পরিস্থিতিতে কিছু করার নেই, নির্যাতিত ব্যক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে, কিন্তু নির্যাতিত যদি ৬৫ বছর বয়সের উপরে চলে যান, তখন আপনে পুলিশে রিপোর্ট করলেই চলবে। এর আগ পর্যন্ত আপনার একমাত্র করণীয় হল, যখন আবার আংকেল হারামজাদার পৌরুষ জেগে উঠে, তৎক্ষনাৎ পুলিশে ফোন দিতে পারেন বা কাউকে দিয়ে ফোন করাতে পারেন, সেখানেও বিপদ আছে, আপানর আন্টি তো মনে হ্য় এরকম মাইর খাইতে ব্যাপক মজা পান, কাজেই পুলিশ আসলে তিনি বলবে, না, আমাকে তো কেউ কিছু বলে নাই, নাহলে কোন ভাবে মামাবাড়ীতে একবার আংকেলকে পাঠাইতে পারলে তখন তার সকল স্ক্রু টাইট দেওয়া সম্ভব।

আর সিরিজ লিখেন, হাত ব্যাথা হয়ে গেলে মালিশের দায়িত্ব আমি নিলাম। আর পাকিরা এত খারাপ তা বাংলাদেশ থেকে বের হবার আগে জানতাম না। আগে কখনও দেকাহ হয় নাই এদের সাথে, তবে এখানে এসে ২-১ টা ঘটনা ঘটেছে, ইচ্ছা আছে সেগুলো নিয়ে লেখার। দএখা যাক কী হয়।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তানবীরা এর ছবি

এই আন্টিরা এতোই নিজের ভাগ্যের উপর বিশ্বাসী যে, উনারা নিজেদের সাহায্য করতে এগিয়ে না আসলে স্বয়ং ভগবানও উনাদের জন্য কিছু করতে পারবে না সাইফ।

ধন্যবাদ তোমাকে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

পাকিদের জন্যে থুথু।
আন্টির জন্যে সমবেদনা জানানো ছাড়া তো করার আর কিছুই নাই। মন খারাপ
সিরিজটা চলুক আপু।

- মুক্ত বয়ান।

নাহীদ এর ছবি

অসম্ভব রকম পছন্দ করলাম আপনার লেখা। পাকিদের তো আগে থেকেই দেখতে পারি না। সেই ঘৃনা আরো বাড়লো এবং ক্রমসই বেড়ে চলছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।