ক্ষরণ

তানবীরা এর ছবি
লিখেছেন তানবীরা (তারিখ: মঙ্গল, ০৮/০৯/২০০৯ - ১:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মানিব্যাগটা পকেটে নিয়েছে কিনা সেটা এই নিয়ে হারুন তিনবার চেক করলো। প্রত্যেকদিনই তাই করে। অফিসে যাওয়ার সময় তার চিরুনি, মানিব্যাগ, রুমাল, চশমা, অফিসের ফাইল প্রত্যেকটি খুঁটে খুঁটে বার বার চেক করে নেয়। অফিসের গাড়ি আসার ঠিক দশ মিনিট আগে সে রোজ নিচে নেমে যেয়ে পোর্চের কাছে হাঁটাহাঁটি করে। পাছে তার জন্য না আবার অন্য কাউকে তুলতে দেরি হয়ে যায়। কোনো কারণেই তার রুটিন এদিক ওদিক হওয়ার কোনো জো নেই। খুব সাবধানী ছেলে সে, খুব সাবধানী। কোনকিছু নড়চড় হওয়ার কিংবা হারানোর জো তার কাছে নেই। নিজের জামা-কাপড়, ফাইলপত্র সে নিজের মতো গুছিয়ে রাখে, কারো সাহায্যের অপেক্ষায় নেই। নোরার অসহ্য লাগতে থাকে। ছেলেরা হবে ছেলেদের মতো, একটু অগোছালো, ম্যানলি। জিনিসপত্র হারাবে, খামখেয়ালিভাবে চলবে, হাঁক-ডাক করবে, না এ একেবারেই ম্যান্দা মারা যাকে বলে। সিগারেট পর্যন্ত খায় না! বলে কিনা স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক। সিগ্রেট না খেলে কোনো ছেলেকে কি ছেলে ছেলে মনে হয়? বেপরোয়া কোনো ব্যাপারেই নেই হারুন, সব হিসেব করে তবেই পা ফেলে সে। নোরার হাতে একবার বিকিনি পরা মেয়ের ছবি দেয়া তাসের প্যাকেট দেখে এমন ভাবে চমকে উঠেছিল যেন নোরা হাতে সাপ নিয়ে ঘুরছে। মিনমিনে গলায় বললো, তুমি কি তাস খেলো নাকি? নোরা যতোটা তার পক্ষে স্বাভাবিক থাকা সম্ভব ততোটা স্বাভাবিক গলায়ই বললো, পেশেন্স খেলা আমার ছোটবেলার অভ্যাস। কোনো কিছু নিয়ে প্রচণ্ড রেগে গেলে বা মন খারাপ থাকলেই যে সে সারাক্ষণ পেশেন্স খেলে, সেটা আর বললো না। আবার কী উপদেশ দিতে বসবে কে জানে?

হারুন খুবই অস্বস্তির সাথে চারপাশ সাবধানী চোখে দেখে নিয়ে মিনমিনিয়ে বললো, তাহলে দরজা বন্ধ করে লুকিয়ে খেলো, যাতে আব্বা-আম্মা না দেখেন। বোঝ অবস্থা, শুধু পেশেন্সইতো খেলছে নোরা, নাকি? বন্ধু-বান্ধব নিয়ে তো আর টুয়েন্টি নাইন খেলছে না। সেটুকুতে থামলেও নোরা হয়তো মানতে পারত, কিন্তু আবার বলে উঠলো, আর একটা ভালো ফুলের কিংবা পাখির ছবি দেয়া তাসের প্যাকেট কিনে নিও। এগুলা দেখলে আব্বা-আম্মা আবার মাইন্ড করতে পারেন। ঘরের বউ তুমি। আর সহ্য করতে পারলো না নোরা। ঝাঝিয়ে উঠে বলে ফেললো, বাপি এই প্যাকেটটা আমাকে সিঙ্গাপুর থেকে এনে দিয়েছেন, তা জানো। হারুন আরো বিব্রত হয়ে অসহায় গলায় বলে উঠল, ঠিকাছে, আমি না হয় অফিস থেকে আসার পথে গুলশান থেকে তোমার জন্য এক প্যাকেট বিদেশি তাস নিয়ে আসবো। রাগে দুঃখে, অভিমানে নোরা গুম হয়ে রইলো। এমনিতে হারুন ওর মন রাখার জন্য অনেক কিছুই করে, করতে চায়, কিন্তু সব সময় লোকে কী বলবে, লোকে কী বলবে, কোনটা করলে লাভ হবে এই তটস্থ ভাবটা নোরা মেনে নিতে পারে না। রাতে যখন নোরা ভিক্টোরিয়া সিক্রেট কিংবা রাফ লওরেন-এর রাত পোশাক পরে ওর পাশে বসে, ঠিক করে হারুন ওর দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারে না। এমনভাবে তাকায় যেনো নোরার গায়ে কোনো কাপড় নেই। অস্বস্তি নিয়ে জানালার পর্দা টানতে থাকে যাতে পাশের বাড়ির কেউ ওদের না দেখতে পায়, বারান্দার দরজা বন্ধ রাখে। লজ্জায়-অপমানে নোরা নীল হয়ে, অনেক স্বপ্ন দেখে কেনা পছন্দের সে সব পোশাক তুলে রেখে আড়ং থেকে সূতির ম্যাক্সি কিনে নিয়েছে।

নোরার বাপি কী দেখে যে তাকে এই প্যাত প্যাতে মধ্যবিত্ত পাত্রের গলায় ঝুলিয়ে দিলেন কে জানে? নোরা কিছুতেই এই বিয়ে করতে চায় নি। মাথায় তেল দিয়ে, স্যুট-টাই পরে যখন ভ্যাবলার মতো নোরার সাথে কথা বলতে এসেছিল, তখনই নোরা তাকে চরম অপছন্দ করে ফেলেছিলো। আর হারুনের মা’তো ধরতে গেলে তার হাত-পা সব টিপে টিপে পরীক্ষা করে দেখছিলেন। এতো মধ্যবিত্ত মানসিকতায় নোরা মানিয়ে নিতে পারবে না, বাপিকে বার বার বলেছিল সে। কিন্তু বাপির এক কথা, স্টুডেন্ট খুব ভালো ছিল, অফিসে পারফরমেন্স খুব ভালো। খুব দ্রুত খুব উন্নতি করবে। বাইরে যাবে ট্রেনিং-এ, ফিরে এলেই কোম্পানি থেকে আলাদা ফ্ল্যাট আর আলাদা গাড়ি পাবে। মাত্র বছর দু-তিনের ব্যাপার বইতো নয়। চিরজীবন নোরাকে শ্বশুর-শাশুড়ির ঘর করতে হবে না। এ ক’টা দিন হাসতে হাসতে দেখতে দেখতেই চলে যাবে। আর নোরার যা দরকার তার জন্য বাপি তো আছেই। অফিসের বড়কর্তাদের নজরে আছে এই ছেলে, উন্নতি করবে অনেক। নোরার ‘না’ আর নোরার মায়ের হ্যাঁ-না’কে আমলে না এনে বিয়ের আয়োজন করে ফেললেন বাপি। নোরা জানে বাপি তাকে কতো ভালোবাসে, তার ক্ষতি হবে এমন কাজটি কখনো বাপি করবে না। তাই আর অমত না করে রাজি হয়ে গেলো সে। আর হারুন দেখতে এমন খারাপ কিছু নয়, সে কথাটা মিথ্যে বলবে না নোরা।

তারপর এই মধ্যবিত্ত বাড়ির নিরানন্দময় জীবন। প্রতিদিন ইউনিভার্সিটি যাচ্ছে বলে নোরা এখনো বেঁচে আছে। ক্লাশের পরে করিডোরে, লাইব্রেরিতে আর‌ ক্যান্টিনে জম্পেশ আড্ডা দিয়ে তারপর বাড়ি ফেরে। অনেক সময় ফেরে না, মায়ের কাছে চলে যায়। মায়ের সাথে শপিং করে, রাতে বাইরে খেয়ে মা তাকে ড্রপ করে দিয়ে যান। যখন থেকে বড় আপুনিটা বিয়ে করে বাইরে চলে গেলেন, তখন থেকে নোরা আর মা দুজনেই ভীষণ ভালো বন্ধু হয়ে গেলো। একসাথে ঘোরা, শপিং, পার্টি। হারুন অবশ্য এসব নিয়ে তাকে তেমন কিছু বলে না আর শ্বশুর-শাশুড়িকে তো তেমন পাত্তাই দেয় না নোরা। দরকার নেই বাবা বেশি ভাবের আর ঝগড়ার। তারচেয়ে তোমরা তোমাদের মতো থাকো, আমিও আমার মতো ভালো থাকি। ক’দিন থেকে ওদের বন্ধুদের গ্রুপ বেশ গরম, ঢাকায় “টাইটানিক” এসেছে। বন্ধুরা সব্বাই যাচ্ছে গ্রুপে গ্রুপে সিনেমাটা দেখতে, কেউ কেউ তো তিন চার বার করে দেখে ফেললো এই ছবিটা। যদিও নোরা ভিসিডিতে দেখেছে এই ছবিটা কিন্তু হলে যেয়ে বড় পর্দায় ছবি দেখার আনন্দই আলাদা। বন্ধুরা বার বার বলছে, চল একসাথে যাই, কিন্তু নোরা আসলে হারুনের সাথেই যেতে চায় এই সিনেমাটা দেখতে। এতো রোমান্টিক একটা ছবি, তেমন কারো পাশে বসে দেখতে ইচ্ছে করে। যদিও হারুন মোটেও রোমান্টিক টাইপ না কিন্তু তবুও, ওর স্বামী তো বটে। হাতে হাত রেখে দেখবে দুজন একসাথে।

রোজ ফিরতে হারুন দেরি করে ফেলে। সেদিন সন্ধ্যায় নোরা রাগের চোটে কেঁদেই ফেললো। তোমার কোনো আগ্রহ নেই তো আমাকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়ার। কথাটা সত্যি সিনেমা-টিনেমার প্রতি হারুন তেমন কোন আকর্ষণ অনুভব করে না, যতোই অস্কার পাওয়া হোক না কেনো। কিন্তু নোরার কাছে ধরা পরে গিয়ে হারুন ভাবলো, ঠিকাছে কাল যাবোই যাবো নোরাকে নিয়ে সিনেমায়। নতুন বউয়ের চোখের পানির আঘাতে সে মুহ্যমান হয়ে পড়লো। বিকেল বিকেল হন্তদন্ত অফিস থেকে বেরিয়ে পড়ল সে। একটু আগে থাকতে না গেলে আবার টিকেট পাওয়া যাবে না, লাস্ট দুদিন আছে আর। বাড়ি ফিরে দেখে নোরা তৈরি। নোরা আজ স্বামীর সাথে বেরোচ্ছে বলে কানাডা থেকে বড় আপুনির পাঠানো মেরুন ফ্রেঞ্চ শিফনের শাড়ি পড়েছে। এমনিতে শিফনের সাথে স্লিভলেসই ভালো লাগে কিন্তু হারুনের মুখটা মনে করে সে একটা বড়সড় ব্লাউজ পরে নিল। সুন্দরী নোরাকে কার্ল করা চুল আর মেকাপে অপ্সরী লাগছিল। হারুন হাত মুখ ধুয়েই বেরিয়ে পড়ল নোরাকে নিয়ে। গলির মাথায় যেয়ে রিকশা নিবে জানা কথা, গলির ভিতর সে কিছুতেই বউয়ের সাথে গা ঘেঁসাঘেঁসি করে রিকশা দিয়ে যাবে না। পাড়ার মুরুব্বীরা সব্বাই আছেন, ছিঃ। পুরো সিনেমাটা নোরা হারুনের হাত ধরে দেখল। হলের অন্ধকারে, নোরার স্পর্শ আর সিনেমার গল্পটা সদা সাবধানী হারুনকেও কিছুটা তরল করে তুলল। বিশেষ করে যখন লিওনার্দো ডিক্যাপরিও তার প্রেমিকাকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিলেন, আর তা দেখে নোরা হাপুস নয়নে কেঁদেই গেলো। সিনেমা শেষ হতে হতে রাত প্রায় নটা। নোরা এখুনি বাসায় ফিরতে চাইছে না। সেইতো যেয়ে ঘুপচি ফ্ল্যাটে বসে থাকা। তার থেকে আজকে ও বাইরে হারুনের সাথে ঘুরবে, খাবে। অন্যদিন হলে হারুন হয়তো রাজি হতো না কিন্তু সিনেমার গল্পটা, প্রায় সুনসান হয়ে আসা রাতের নিরিবিলি ঢাকা, আকাশের বুক চিরে জ্বলে থাকা অসংখ্য নাম না জানা তারা আর পাশে বসে থাকা তন্বী তরতাজা বউয়ের চুলের সুগন্ধ হারুনকে দুর্বল করে ফেললো।

দুজন হাত ধরে এই প্রথম রিকশা করে যাচ্ছে। কোথায় খাবে, কোথায় খাবে ভেবে ভেবে নোরা বলল, চলো মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্পে যাই, রুমালি রুটি আর বটি কাবাব খাবো। সেখানকার বটি কাবারের স্বাদই আলাদা। হারুন আজকে নোরার সব কথাতেই রাজি। রিকশা আসাদগেটের কাছ দিয়ে যাচ্ছে। ঐ জায়গাটা একটু রাত না হতেই ভীষণ নিরিবিলি হয়ে যায়। বিরাট বিরাট সব গাছ লাগানো আর ঝোপ। লোক চলাচল খুবই কম। এই নির্জনতাকে কাজে লাগিয়ে ওরা দুজন রিকশায় বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে বসল। হঠাৎ ভূমি ছেদ করে দুই পাশ থেকে দুটো হোন্ডা এসে নোরাদের রিকশাটাকে থামিয়ে দিলো। দুটো হোন্ডায় চারজন টগবগে যুবক বসে আছে। তাদের পোশাক-আশাক রীতিমতো আকর্ষণীয়। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে খুবই ধনী ঘরের ছেলে। রিকশা থামিয়ে দিয়ে খুবই পরিচিত ভঙ্গিতে বললো, কোথায় যাচ্ছেন এতো রাতে? হারুন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে নোরার দিকে তাকালো, ভাবলো নোরার পূর্ব পরিচিত কেউ কি না। নোরা ভীত চোখে তাকালো হারুনের দিকে, হারুনের চেনা কেউ কি? ওরা দুজনই আমতা আমতা করতে লাগলো, কে কি জবাব দিবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলো না। ছেলেগুলো খুব ঠান্ডা ভঙ্গিতে পরের মুহূর্তে ভোল পাল্টে নোরাকে আদেশ দিলো, “ম্যাম” আপনি আমাদের সাথে আসুন তো, আমাদের একটা দরকার আছে। নোরা আতঙ্কিত গলায় বলে উঠল, কী দরকার? হোন্ডার পেছনে বসা একটা ছেলে ফিচলে হাসি দিয়ে বললো, কী দরকার বুঝো না সুন্দরী? কথাটা শেষ হতে বাকি ছেলেগুলো একসাথে হেসে উঠল।

হারুন আতঙ্কিত গলায় বলে উঠল, কে আপনারা, কী চাইছেন? পেছেন বসা দুজন তড়াক করে হোন্ডা থেকে নেমে, একজন হারুনের দিকে এগুলো আর একজন নোরার দিকে। হারুনের মাথায় শীতল ধাতব কী একটা বস্তু ঠেকাল‌ আর একজন এসে দাঁড়ালো নোরার পাশে। অস্ত্র ঠেকিয়ে রেখেই হারুনের কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে কিন্তু পরিষ্কার গলায় বলল, আমরা তোমার বউয়ের ইয়ার লাগি, চিনতে পারছ নাই আমাদেরকে মাঙ্গীর পুত। হারুন ভয়ে বাক্যহারা হয়ে গেলো। তারপর হাতজোড় করে মিনতি করতে লাগলো তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার জন্যে। সেই তরুনটি আরো শীতল গলায় বলল, বেশি ট্যা ফো করবি তো এখানেই লাশ ফেলে দিয়ে, মাইয়া নিয়া চলে যাবো। তুই কি চাস? চুপচাপ তোর বউকে বল আমাদের সাথে আসতে। কোন গণ্ডগোল মানেই তোর লাশ শালা। হারুন তো তো করতে করতে নোরার দিকে তাকালো কিন্তু গলা দিয়ে পরিষ্কার কোনো আওয়াজ বেরোলো না। হোন্ডায় বসা এক তরুণ একটা বোতল থেকে তার গলায় কিছু ঢালতে ঢালতে বলল, ইজি বস ইজি। কোনো ব্যাপার না, দুই ঘণ্টা আপনি একটু ঘুরেন-ঘারেন, হাওয়া বাতাস খান। দুই ঘণ্টা পর এসে বউরে নিয়ে যাবেন, কোনো ব্যাপার না বস। ভয়ে হারুনের প্যান্ট ভিজে গেছে। কখন হয়ে গেছে সে টের পায়নি। হারুন আবার তার পূর্বের সাবধানী অবস্থায় ফিরে গেলো। নোরার দিকে মিনতি ভরা চোখে তাকালো, অসহায় নোরা কী করবে বুঝতে পারছে না। নোরার শরীরটা পুরো কাঠের মতো হয়ে গেলো হারুনের আচরণে। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটি অন্য হাতে হারুনের পেটে জোরসে একটা ঘুষি মারতেই হারুন হড়বড় করে নোরাকে বলতে লাগলো, তুমি ওদের সাথে যাও। নোরা প্রায় চিৎকার করে কেঁদে উঠতেই তার পাশে দাঁড়ানো ছেলেটা ধাতব গলায় বললো, কোন সীন করার চেষ্টা করবেন না ম্যাম। বলতে বলতেই তাকে টেনে নিয়ে হোন্ডায় তুলে ফেললো। হারুনের কাছে দাঁড়ানো ছেলেটা রিকশাওয়ালার গালে জোরে এক থাপ্পর দিয়ে বলল, পিছনে তাকাবি না, উল্কার বেগে উড়ে যা।

এতক্ষণ রিকশাওয়ালা ভয়ে সিটিয়ে ঘটনা দেখছিলো। সম্বিত ফিরে পেয়ে রিকশা ঘুরিয়ে দিলো ছুট। নোরাকে হোন্ডার মাঝে বসিয়ে একজন নোরার সামনে বসল চালকের আসনে আর একজন নোরার পেছনে। হোন্ডাগুলো ক্রিসেন্ট লেকের পাশের বড় বড় ঝোপের অন্ধকারে মিলিয়ে যেতে যেতে, একটা আওয়াজ আসলো, দু’ঘণ্টা পরে তাহলে ব্রাদার। কিছু দূর যাওয়ার পরই রাতের ঢাকার তাজা হাওয়া হারুনের মাথায় লেগে, হারুনে ভ্যাবাচ্যাকা ভাব চলে যেয়ে তার মাথা দ্রুত কাজ করতে শুরু করলো। সদা সাবধানী হারুন কিছু দূর যেয়ে রিকশাওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে বিদায় করে দিলো। ভাড়া হাতে নিয়ে অবাক চোখে রিকশাওয়ালা হারুনকে দেখলো তারপর বিনাবাক্য ব্যয়ে সে কেটে পড়লো।

সদা চঞ্চল নোরা এখন অনেক চুপচাপ। সে রাতের পর থেকে সে অপ্রয়োজনে কেনো প্রয়োজনেও হারুনের সাথে কোনো কথা বলে না। যদিও হারুন তাকে অনেক ভাবে নিজের অসহায়তাটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে, পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করেছে। কিইবা করতে পারতো হারুন। আর তেমন কেউতো ঘটনাটা জানে না। হারুন সব ভুলে যাওয়ার জন্য তৈরি আছে। নোরাকে সে যেমন ভালোবাসতো, তেমনিই ভালোবাসবে। নোরাকে সেসব নিয়ে ভাবতে হবে না। নোরা তার পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দিক, ঘর সংসারের দিকে মনোযোগ দিক। জীবনে চলতে পথে কতো ঘটনাই ঘটে, সব ধরে রাখলে কি চলে? সামনে দুই বছরের ট্রেনিং-এর জন্য হারুনকে অফিস থেকে লন্ডনে পাঠাচ্ছে। ভিসা কাগজপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। কতো কাজ। নোরার ভিসাও নিতে হবে, ফ্যামিলি অ্যালাউন্স পাবে অফিস থেকে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে সে নোরাকে নিয়ে ইউরোপ ট্যুরটাও সেরে ফেলবে। লন্ডন, প্যারিস, রোম কতোদিনের স্বপ্ন তার। আর লন্ডন থেকে ফিরে এসে গুলশানের ফ্ল্যাটে উঠবে, এই এঁদো শুক্রাবাদে আর নয়। সামনের সোনালী দিনের অনেক গল্প হারুন তাকে দিন রাত শুনিয়ে যাচ্ছে।

চুপচাপ নোরা গুম হয়ে সে সব শোনে। আসলে কি কোনো কথা নোরার কানে যায় কি না তাও জানে না। হঠাৎ করে চতুর্দিককে নোরার খুব কুৎসিত মনে হতে থাকে। সব কিছুতেই তার বমি পায়। সযতনে হারুনের স্পর্শ সে এড়িয়ে চলে। কী করবে কার কাছে যাবে কিছুই ভেবে পায় না। ক্লাশ বন্ধ, পড়া বন্ধ। এই পড়াশুনা, বন্ধু-বান্ধব সব কিছুকেই তার অর্থহীন মনে হয়। একটা রাত তার জীবনটাকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে। কী করে সে জীবনটাকে আবার ঠিক করবে? হারুনকে মুছে ফেলবে নাকি ভয়াল সেই রাতটাকে? বাপি-মা’ও সারাক্ষণ তাকে একই কথা বলে যাচ্ছে, ভুলে যা নোরা, ভুলে যা। কী ভুলে যাবে নোরা? তার জীবনসাথী কতোগুলো বদমাশের হাতে তাকে ফেলে কাপুরুষের মতো পালিয়ে এসেছে সেটা, নাকি সে কয়েক ঘণ্টায় তার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়টাকে। নাকি সমাজ আর লোকলজ্জার ভয়ে সবার এই ঘটনাটাকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রয়াসটাকে। বার বার গোসল করেও অশুচি ভাবটা যায় না নোরার। মনে হয় নখ দিয়ে খামচে নিজের শরীরটাকে ছিন্ন-ভিন্ন করে ফেলতে যদি পারতো সে। কিংবা আরো অনেক বড় একটা জঘন্য শাস্তি দিতে পারতো তার শরীরটাকে। গুম হয়ে বসে সে সারাদিন এমনই অনেক কিছু ভাবে। কী ভাবে সে নিজেও জানে না। শুন্য মন আর শুন্য দুচোখ নিয়ে দিনরাত একা ঘরে নোরা আপন মনে তাস শাফল করে, বিছানার উপর তাস বিছায় আবার শাফল করে আবার বিছায়। সারাদিন নোরা নিজেকে বলে যায় পেশেন্স, পেশেন্স আর পেশেন্স।

তানবীরা
০৪.০৯.০৯


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে তবে কিছুটা বাংলা সিনেমার মত হয়েছে।

তারেক

রেশনুভা এর ছবি

জীবনতো সিনেমার চেয়েও নাটকীয় মনে হয় আমার কাছে মাঝে মাঝে।

তানবীরা এর ছবি

কোন বাংলা সিনেমায় নায়িকা "রেপড" হয়েছে আর নায়ক পালিয়ে এসেছে, নামটা একটু বলুনতো?
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রেশনুভা এর ছবি

সুন্দর হইছে আপুনি। কিন্তু একটা কাম খুব খারাপ করছেন।
এখন আমি বটি কাবাব আর মগজ ভুনা কই পাই?

তানবীরা এর ছবি

এন্ডহোভেন এসে খেয়ে যাও ।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

জীবনটা তো না টক না মিষ্টি.........

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

ামার ধারনা আপনি আপনি উপরের (আমার নয়) মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছেন। আমার ধারনা উনি বাংলা ছিনেমা বলতে বুঝিয়েছেন যে গল্পটা লজিক্যালি বায়াসড।

আপনি গলপের শুরুতেই ভুল করেছেন। যে ভিক্টোরিয়া সিক্রেট কিংবা রাফ লওরেন এর ভক্ত তার পক্ষে বাবার মতে বিচার বিবেচনা না করে বিয়ে করাটা
"unacceptable". আপনার গলপের কাঠামো এখানেই ভেঙ্গে পড়ে।

আপনার পুরো গল্প যদি "Ethics" নিয়ে হয় তাহলে "ভবিষ্যত" এর আশায় বিয়ে করাটা "Unethical". আপনার ক্যারেক্টার এখানে সিম্প্যাথি হারাবে। কুবের হারায় না ব্যালেন্স(আকর্ষনের একটা সু/কুনির্দিষ্ট সঙ্গা থাকায়) এর কারনে। আপনার ক্যারেক্টাররা "too much dramatic".

আমার কাছে আপনার ক্যারেক্টার কে মনে হচ্ছে "Slutty". কারন ঘটনায় তার কোনো কার্যক্রম ছিলোনা। আধুনিক দর্শন এটা সমর্থন করেনা।

ব্যাক্তিগত ভাবে আমি মনে করি আপনার মানিক পড়া উচিত।

হাসিব এর ছবি

আধুনিক দর্শন ?

তানবীরা এর ছবি

উনি "ছিনেমা" বলতে কি বুঝিয়েছেন সেটা আমি বুঝিনি কিন্তু আপনি বুঝে গেলেন, কিভাবে? আপনিও কি সেই একই "ব্লগের" বা "ব্লকের" লোক নাকি? তাহলে আপনার "নোরা"কে থাপ্পড় মারা সমালোচনা বুঝতে পেরেছি।

আপনারা যে চুপচাপ বসে থাকবেন না, আক্রমন না করে সেটা বোঝার শক্তি এখনো আছে। অসুবিধা নাই ভাই, মনের সুখে গালাগালি দিয়ে যান। রাগতো "লেখার" উপরে না "লেখিকার" উপরে। তাই সমালোচনা করছেন এই ভড়ং না করলেও চলতো। তবুও বলবো কষ্ট করে, মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমার এই ট্র্যাশ পড়ে আপনার তথা আপনাদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনভাবে কমপেনসেট করতে পারলে খুশি হবো।

বেচারা আপনারা। কখনো মেইলে, কখনো ফেসবুকে, সাড়া না পেলে তো শুরু করলেন সচলে। আমার কি পড়া উচিত সেটা বুঝলাম, আপনারা মানুষের পিছনে কাঠি দিয়ে দিয়ে না ঘুরে আর কি করতে পারেন সেটা ভাবার সময় কি এখনো আসেনি ?

ধন্যবাদ আপনাকে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

ামার একটা কবিতা আবৃত্তি করতে ইচ্ছে করছেঃ

ত্র্যাম্বকের ত্রিনয়ন ত্রিকাল ত্রিগুন
শক্তিভেদে ব্যাক্তিভেদ দিগুন বিগুন।
বিবর্তন আবর্তন সম্বর্তন আদি
....................................

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

এ পোষ্টে এটাই আমার শেষ মন্তব্য কারন আমার ধারনা আপনি খুবই সফলতার সাথে পুরো আলোচনাকে ডাস্টবিন এ ফেলে দেয়ার মতো পর্যায়ে উত্তীর্ন করতে সক্ষম হয়েছেন আপনার এই একটি মাত্র মন্তব্য দারা। Congratulation.

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আমার কাছে আপনার ক্যারেক্টার কে মনে হচ্ছে "Slutty". কারন ঘটনায় তার কোনো কার্যক্রম ছিলোনা

মন্তব্যে আপত্তি জানালাম, অতিথিকে সংযত ভাবে মন্তব্য করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।

বাংলা ব্লগে এসে সাব্বির ভাইজান ইংরেজী ফলাইতেসেন কেন? ইংরেজীতে বললে কি তার ওজন বেশী হয়? আগে বাংলা শিখে আসেন। আর বেহুদা আবোল তাবোল কথা বলে সচলে খোচাখোচি করে এখানকার পরিবেশ নষ্ট করছেন কেন? এতই যদি ভালো বুঝেন, একখানা ভালো লেখা পয়দা করেন না।

ভালো খারাপ লাগার, সমালোচনা করার অধিকার সবারই আছে। সেই অধিকারের সুযোগ নিয়ে তানবীরা আপার বা তার লেখাকে অপমান করার কোন অধিকার আপনার আছে বলে আমি মনে করি না। যা মনে আসছে, গায়ের জোরে বাংরেজি কোরে তা সত্য করার অপচেষ্টা দেখে আপনার প্রতি আমার ঘেন্না আসল।

একজন মেয়ে তার স্বামীর সাথে অন্তরঙ্গ হতে চাইলে তাকে আপনার slutty লাগে? আপনার বর্তমান বা ভবিষ্যত স্ত্রীর জন্যে আমার শুধুই সমবেদনা থাকল। আপনার মাথা ঠিক আছে তো। আর নিচে কি সব বাংরেজি লিখলেন, কষ্ট করে অনুবাদ করে দিবেন, সিরাতের মত নির্বিরোধি একজন ব্লগারকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করা হয়েছে, তার বাংরেজির জন্যে, তাও আপনার মত ভাষা কেউ ব্যবহার করেননি। আপনাকে কি ভাষায় জবাব দেওয়া উচিৎ?

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

রানা মেহের এর ছবি

সাব্বির

আমার কাছে আপনার ক্যারেক্টার কে মনে হচ্ছে "Slutty". কারন ঘটনায় তার কোনো কার্যক্রম ছিলোনা। আধুনিক দর্শন এটা সমর্থন করেনা।

আধুনিক দর্শন এটা সমর্থন করেনা, মানে কি?

আপনার কেন মনে হলো এই গল্পের লেখককে বিশেষ করে মানিক পড়তে হবে?

তাতাআপু ডার্লিং
গল্প ভালো লাগেনি। কাহিনী খুবই দুর্বল এবং বহু ব্যাবহারে জীর্ন।
আরেকটা সমস্যা হলো গদ্যের ভাষা

পাছে তার জন্য না আবার অন্য কাউকে তুলতে দেরি হয়ে যায়। কোনো কারণেই তার রুটিন এদিক ওদিক হওয়ার কোনো জো নেই।

এজাতীয় বর্ণনা গল্পকে প্রানহীন করে দিয়েছে।

ভালো লেগেছে পেশেন্স এর ব্যাপারটা

(মাইন্ড খাবেন না বস) মন খারাপ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তানবীরা এর ছবি

মাইন্ড খাই নাই বস, আপনেরা যদি ভুল না ধরিয়ে দেন তাহলে শিখব কোথা থেকে? ভবিষ্যতেও আপনার থেকে এধরনের মন্তব্য আশাকরি বস।

ভালো থাকবেন আর লেখা খাতাটা মাঝে মাঝে ঝাড়া মুছা করবেন।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রেনেট এর ছবি

ভালো থাকবেন আর লেখা খাতাটা মাঝে মাঝে ঝাড়া মুছা করবেন।

হো হো হো

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সমুদ্র এর ছবি

আপু আপনার দিনপঞ্জিগুলোর ভাষা অনেক অনেক ভালো হয় এই গল্পের চেয়ে, তাড়াহুড়ো করে লিখলেন নাকি?
আর গল্পের বিল্ড আপ, ক্লাইমেক্স - পুরোটাই বেশ সাদামাটা লাগলো।
শেষ লাইনটার জন্যে উত্তম জাঝা!

আর, শিরোনামটা বোধহয় 'ক্ষরণ' হবে।

"Life happens while we are busy planning it"

তুলিরেখা এর ছবি

দহন বলে সুচিত্রা ভট্টাচার্যের একটা উপন্যাস আছে( বিখ্যাত দহন সিনেমা হয়েছে এই কাহিনি নিয়েই ), সেখানে এক দম্পতিকে গুন্ডারা এইভাবেই আক্রমণ করে, এক তরুণী শিক্ষিকা(ঝিনুক) ঝাঁপিয়ে না পড়ে বাধা না দিলে সেদিন বৌটি(রমিতা) এইরকমভাবেই পাশবিক অত্যাচারিত হতো(পথে ব হু লোক ছিলো, কেউ এক পা এগোয় নি ঝামেলার ভয়ে)। সেই মেয়েটিও(রমিতা) বড়লোক বাবামায়ের মেয়ে যার কিনা মধ্যবিত্ত বাড়ীতে বিয়ে হয়েছে। একটা রাতপোশাকের কাহিনিও আছে। এই কাহিনির বড় অংশ হলো কিভাবে ঢেকেচেপে দেওয়া হলো বিচারপ্রক্রিয়া। সমাজের চাপে। কাহিনি সত্য ঘটনা অবলম্বনে বলে দাবী করা হয়েছে(খুবই সম্ভব)।
এই গল্পের সঙ্গে কোথাও কোথাও মিল দেখে চমকালাম। -----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

সেখানে কী গলপের শেষ হয় "পেশেন্স, পেশেন্স আর পেশেন্স " বলে??
JUST কৌতুহল।

তানবীরা এর ছবি

তুলিদি, মধ্যবিত্তের গল্পের ধরন ঘুরে ফিরে হয়তো একই ধরনের হয়, এতে চমকানোর কিছু নেই। রাত পোশাকের ব্যপারটা প্রায় সব মধ্যবিত্ত ঘরেই এতো কমন যে অনেকের গল্পেই তুমি এটা পাবে এটাও নতুন কিছু নয়। ফাল্গুনী থেকে আশুতোষ কিংবা সুচিত্রা কিংবা হয়তো তানবীরা।

ধন্যবাদ দিদি তোমাকে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

াধুনিক দ র্শ ন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এখানে প্রত্যেককে তার নিজের দায় দায়িত্ত নিজেকেই বহন করতে হবে (self sufficient).(***) যেকারনে যে কোনো দার্শনিকের আধুনিক দর্শন শুরু হয় ধর্মকে অসীকার এর মাধ্যমে, যুক্তির ভিত্তিতে।

আধুনিক নারী যদি শুধুমাত্র সাধীনতা(self sufficiency এর সুবিধা) ভোগ করতে চায় এবং অন্যান্য কাজ কর্মে তার প্রমান না দিতে পারে তাহলে সেটাকে বলা হবে "hypocracy" । এসব ক্ষেত্রে আমি সাধারনত slut or bitch বিশেষন ব্যাবহার করি (যখন victorian এবং modern ফিলোসফি overlap করে)।
উদাহরন দিচ্ছিঃ
১। আধুনিক দর্শন অনুযায়ী গল্প এর শেষে মেয়েটির উচিত তার সামীকে ত্যাগ করা এবং নিজের পায়ে দাড়ানোর চেষ্টা করা(যেহেতু,
"তার জীবনসাথী কতোগুলো বদমাশের হাতে তাকে ফেলে কাপুরুষের মতো পালিয়ে এসেছে ")
ভিক্টোরিয়ান ফিলোসফি হলে আত্মহত্যা করবে।

* পুরো গলপে মেয়েটির ব্যাপারে তথ্যের (background info) অভাব হতাশাজনক। কয়েকটি তথ্য আছে । প্রথম অর্ধে তাসের প্যাকেট, ভিক্টোরিয়া সিক্রেট ( প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংস্কার কে প্রশ্ন করা এবং ফ্যাশন সচেতনতা) যা আধুনিক নারীর বৈশিষ্ট্য। সে কী করে তা পুরোপুরি উহ্য যা হতাশাজনক। আধুনিক নারী কী তবে সামীর ঘাড়ে বসে বসে খাবে?!!!
* "সিগারেট খেলে ম্যানলি লাগে" . এখানে প্রশ্ন আসবে "ম্যানলি" কী positive নাকী negative বিশেষন। positive হলে সে কেনো খায় না ? negative হলে সে কেনো খুশী না?
dominated হওয়ার ইচ্ছা তো এই ক্যারেক্টার এর থাকার কথা না, তাই না?

পুরো গল্প জুড়ে এ ধরনের পরস্পর বিপরীত ধর্মী বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। আপনি বললে আমি লাইন ধরে ধরে ব্যাখ্যা করবো। করবো কারন লেখিকা এখনো এ গলপের সাথে বাংলা ছিনেমার কোনো মিল খুযে পান নি যা দুক্ষ জনক।

"কোন বাংলা সিনেমায় নায়িকা "রেপড" হয়েছে আর নায়ক পালিয়ে এসেছে, নামটা একটু বলুনতো?"

পুরো গল্পের মাঝে এ ব্যাপারটাই যে "বাংলা সিনেমা " অপ্রমান এর একমাত্র যুক্তি তা আমি ধরতে পারিনি!!!!!!!!!

আপনার একটা কথার সাথে একমত হতে পারছি না সেটা হচ্ছে আমার মতে "পেশেন্স, পেশেন্স আর পেশেন্স " এ গল্পের সবচেয়ে দুর্বল অংশ। এটা পুরোপুরি অপ্র্যোজনীয় একটা অংশ কারন এ ব্যাপারে তথ্য গুলো আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা আমার কাছে স্পষ্ট না। পেশেন্স এ কী হবে? সময়ে সে সব ভুলে যাবে?!!! এটাই কী লেখিকার আশা?? এই লাইন গুলো না থাকলে কী ক্ষতি হতো গল্পের কাঠামোর?
গল্ পে এ ধরনের বাক্যের বিলাসিতা অমার্জনীয়।

হারুন যে একটি পুরোপুরি আরোপিত চরিত্র তা নতুন করে বলার কোনো মানে নেই তাই বিশ্লেষন এ যাচ্ছি না।

মানিক পড়তে বলছি কারন বাংলাদেশে একমাত্র তার উপন্যাসেই ক্যারেক্টারগুলো হয় মানুষ। অন্য সবাই লেখে নায়ক, নায়িকা এবং ভিলেন নিয়ে।
উদাঃ আমরা কী ভিকুর (প্রাগৈতিহাসিক) কাছ থেকে এটাই আশা করি না( প্রথম পাতা পড়ার পরে) যে সে অন্য কারো বউ এর হাত ধরে টান দেবে কিংবা গোসল দেখে দুর্বিনীত হাসি দেবে? করি, কারন সেটাই যুক্তিযুক্ত।

overreact করার জন্য দুক্ষিত। সমস্যাটা হচ্ছে ন্যাড়া বেলতলা দেখলেই চেতে। গল্পো পড়ার পরে আমার প্রথম মনে হয়েছে "নোরাকে ঠাডায়া দুইটা চড় মারা উচিত"। কারন সে বলে "পেশেন্স, পেশেন্স আর পেশেন্স "। গাধা কোথাকার! " Be a slave or a damn bloody human being. why r u trying to taste the honey of both without a bite of any of them?!! any ll suffice for me!!!may be i ll prefer human.thats it."

(বানান এর জন্য দুক্ষিত। আমি এ কীবোর্ড ব্যাবহার করে অভ্যস্ত নই।)

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এই গল্পের চরিত্র নোরাকে আদর্শ আধুনিক নারী কেন হতে হবে ভাবছেন? এই অংশটা বুঝিনি। বাস্তবের চরিত্ররা আধুনিক, গোঁড়া, উত্তরাধুনিক এসব কোন ছাঁচেই পুরোপুরি মিলে যাবে এটা আশা করা হয়ত দর্শনগত একটা অবসেশন।

পাঠক হিসাবে দুইটি ফ্রেম ওয়ার্কের কথা বললেন আধুনিক আর ভিক্টরিয়ান। এর বাইরে আর কোন চয়েস কি নেই? নোরার যে অবস্থান সেখানে তার প্রতিক্রিয়ায় তার সামাজিক কাঠামোর একটা প্রভাব থাকতে পারে না কি? সে তার স্বামীর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু এই অবস্থাতেও সামাজিক আর পারিবারিক বিধি নিষেধকে সে যে এক ঝটকায় উড়িয়ে দিতে পারেনি এটাই স্বাভাবিক মনে হয়েছে কিন্তু তার চরিত্রের পক্ষে। বিয়ের ব্যপারে সে তার বাবার ইচ্ছার উপর আস্থা রেখেছে; নিজের ভাবনাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেনি। এসবের সাথে তার এই আচরন বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়েছে আমার।

গল্পটি যে আমার খুব ভাল লেগেছে সেটা আমি বলছি না। কিন্তু আপনি যে ভাবে দর্শনের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে গল্পের নোরা চরিত্রটিকে বোঝার চেষ্টা করলেন এটাকে আমার মনে হয়েছে একটা আবদ্ধ গণ্ডীর মত।

আমি কেতাবি সাহিত্য সমালোচনার সাথে পরিচিত নই। কিন্তু কেতাবি সমালোচনায় এধরনের ফ্রেম ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সীমিত হওয়া উচিত বলে মনে করি।

সমস্যাটা হচ্ছে ন্যাড়া বেলতলা দেখলেই চেতে

উদাহরনটা ভাল হয়েছে। কারন এক্ষেত্রে দোষটা বোধহয় পুরোপুরি বেলতলার নয়। হাসি চরিত্রে একটা নির্দষ্ট প্যাটার্ণ না হয় নাই খুঁজলেন। তাহলে তালতলা, বেলতলা, কদম তলা সবই পাঠ্য/গম্য হয়ে উঠতে পারে।

মানিকের কথা বললেন। তার চরিত্রগুলোকি ভিক্টরিয়ান নাকি আধুনিক? একটু ব্যখ্যা করলে সুবিধা হয়।

পেশেন্সের উদাহরনটি আমার কিন্তু বেশ লেগেছে। তবে লেখিকা হয়ত এখানে নোরার মনের ভাবের সাথে পেশেন্সের যোগাযোগটি আরো সূচারু ভাবে করার চেষ্টা করতে পারতেন। ব্যপারটা আরো ইন্টারেস্টিং হত সে ক্ষেত্রে।

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

রিয়াজ ভাই,

১. আচ্ছা। গল্পের একটা স্থুল সীমারেখা দেয়ার চেষ্টা করি।

কোনো গল্পে প্রবন্ধের মতো তিনটা অংশ থাকতে পারে। প্রথম অংশে চরিত্র রূপায়ন, দিতীয়াংশে বর্ননা এবং তৃতীয়াংশে লেখকের ধারনা অথবা সমাধান(যাই হোক না কেনো)। এই তিনটি অংশ পরস্পর এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন নাহলে গল্পটিকে বলা হবে “সপ্ন”।
চরিত্ররা আধুনিক, গোঁড়া, উত্তরাধুনিক অথবা কী হবে তা নির্ভর করে লেখকের উপর। যেকোনো কিছুই হতে পারে। কিন্তু প্রথমাংশে তার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকতে হবে।
প্রথমাংশে “নোরার” যে চরিত্র অঙ্কন করা হয় তার সাথে পরবর্তীতে করা তার কাজ কর্মের কোনো মিল পাওয়া যায় না। এটা হতে পারে যদি তার বয়স ১২-২০ এর মাঝখানে হয়। যার মানে হচ্ছে সে সপ্ন দেখে অথবা সপ্নে থাকে। যদি এক্ষেত্রে তাই হয় তবে লেখিকাকে কী আপনার সে বিষয়ে সচেতন মনে হয়েছে? আমার মনে হয় নি। কারন সে ঘটনা থেকে কিছু শেখার চেয়ে পেশেন্সে এ বেশী বিশশাসী!!!!!
আর এটা আমার দর্শনগত একটা অবসেশন নয়। এই গল্প হচ্ছে “Promising একটা প্লটকে এচড়পাকা বাশ দেয়ার” প্রকৃষ্ট উদাহরন এবং আমার মন্তব্য হচ্ছে তার প্রতি প্রখর নিন্দাজ্ঞাপন।
আমি খুব খুশী হতাম যদি সে সাধীনতার মানে বুঝতো (নিজের দায়িত্ত নেয়ার মাধ্যমে অথবা সমাজের কাছে নতি সীকার করতো)। সমাজ এখানে একটা বড় বিষয় হতে পারতো এবং গল্প সেদিকে যেতে পারতো কিন্তু লেখিকার সে বিষয়ে কোনো মাথা ব্যাথা আছে বলে আমার মনে হয়নি। যার মানে দাঁড়ায় সে “পুরোই আধুনিক!”। খুবই ভালো!!!

২. আধুনিক আর ভিক্টরিয়ান বলে কোনো নির্দিষ্ট দর্শনগত বিভাগ নেই। আধুনিক এ হাজারটা ভাগ আছে তাই চরিত্র হাজার রকম হতে পারে। কিন্তু তাদের সাধারন মিল হচ্ছে তারা পূর্নাংগ মানুষ (সাধীন)। ভিক্টরিয়ান এ তারা পুরুষের উপর অনেক্ষানি নির্ভরশীল যেকারনে মর্যাদা পাবে “Slave” এর।

চমতকার একটি পয়েন্ট, হতে পারতো। এ গল্পের মূল বিষয় “সামাজিক আর পারিবারিক বিধি নিষেধ” হতে পারতো।
আপনি কষ্ট করে গল্পটি আবার পড়ে দেখুন এধরনের কোনো ব্যাপার এর প্রতি লেখিকা সচেতন ছিলেন কীনা?!!ছিলেন না।

গল্পে সমাধান থক্তেই হবে এ ধরনের কোনো কথা নেই কিন্তু এ গল্পে থাকতে হবে। চরিত্র কে বলতে হবে “আমি এটাকে নয় ওটাকে দোষ দিচ্ছি এবং এ কারনে এটা অথবা ওটা করছি”। পেসেন্স হচ্ছে সবচেয়ে খারাপ সমাধান!!!

এখন আসা যাক মূল প্রসংগে। এখন ২০০৯।
দর্শন এবং সাহিত্য আসবে একে অন্যের হাত ধরে। সেটাই সাভাবিক। এমুহুর্তে এধরনের “Confusing” (বিশাল দর্শনগত পরিবর্তনের মাঝামাঝি যে সময়টা আসতে পারে)এ ধরনের প্লটকে আপনি উতসাহিত করবেন নাকী অনুতসাহিত করবেন তা আপনার ইচ্ছা। আমি করবো না।
এমুহুর্তে আল্লাহর মহিমা বর্ননাকারী কোনো লেখার বিরুদ্ধে আমি আমার কীবোর্ড নিয়ে নামবো যে কারনে, এই লেখার বিরুদ্ধে নামবো সেই একই কারনে। আমি মনে করি এইসব বিলাসিতার সময় আমাদের নেই।

মানিক আমাদ্বের আধুনিক বানিয়েছেন। সেটা যখন যেভাবে সম্ভব সেভাবে করেছেন। চরিত্র কী সেটা মূল ব্যাপার নয়। মূল ব্যাপার হচ্ছে তিনি কাকে কেমন ভাবে মার দিচ্ছেন। চরিত্রের প্রতি তার “treatment” বলে দেয় তিনি কোনটাকে মূল্য দিচ্ছেন অথবা দিচ্ছেন না। তার সবচেয়ে প্রিয় থিওরী ছিলো “Philosophy stands on the graveyard of history, so lets kill it (past)”. তার সেন্স অফ হিউমার “অসাধারন”। তিনি এই অস্ত্রটি ব্যাবহার করেছেন বেশীরভাগ ক্ষেত্রে।
উদাঃ সূর্যদেবের ভক্তের পৈতা গবেষনা এবং দম্পত্তির মৃত্যু (পুতুলনাচের ইতিকথা)
আমি জানি আপনি বলবেন এটা তো ছিলো শশীর হার। কিন্তু বেদনাহত হওয়াও শক্তি অর্জনের একটি বড় উপায়, শিক্ষার অংশ।
মানিক ছিলেন বাদরের(পড়ুন বাঙ্গালী) গলায় মুক্তোর মালা।
একজন লেখকের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে সে যে পর্যায়েরই (সময়ের চেয়ে অগ্রগামী) হোক না কেনো সময় নিয়ে তাকে কথা বলতেই হয়। সেখানেই আমাদের(বাঙ্গালীর) ব্যার্থতা। তারপরো মানিক সার্থক। কারন তিনি তাই করেছেন যা তার করা উচিত ছিলো। দায়িত্ত এবং এগিয়ে যাওয়া দুটোই পালন করেছেন একই সাথে এবং সমদক্ষতায়।

ধন্যবাদ। বানানের জন্য দুক্ষিত আবার।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আরেকটু "আলোচনা" করা যাক তবে।
আমি আপনার প্রতিমন্তব্য আসলে খুব যে সুবিধা হল আমার মনে হচ্ছে না। এখনকার পর্যবেক্ষন গুলো নিচে দিলাম।

  • গল্পের একটা স্থুল সীমারেখা দেয়ার চেষ্টা করি।
    এই স্থুলতার ব্যপারগুলোই কিন্তু বেশি চোখে লাগছে। আপনি আসলেই এই রকম কিছু কেতাবি সংজ্ঞা, বা দার্শনিক ধারনার কাছে নিজের ভাবনাকে জিম্মি করে রাখছেন। এটা আপনার মুক্ত মননের জন্য ভীষন ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।

  • এবার আপনার সীমারেখায় আসি। আপনি একটা সীমারেখা দিলেন কিন্তু একজন সার্থক গল্পকার সবসময় এই সীমারেখাকে কিভাবে প্রয়োগ করবেন সেটা তার পছন্দ এবং এখানেই তিনি তাঁর স্বাকিয়তাকে প্রকাশ করবেন এটা ভুলে গেলে চলবে না। চরিত্রের বিকাশ গল্পে শুরুতেই থাকতে হবে কেন? আপনিকি গল্পের সামগ্রিকতায় চরিত্রকে বিচার করতে পারছেন না? প্রথমেই গল্পের চরিত্রকে একটা আকার দিলেন নিজের মত করে। তারপর তার বাকি আচরন থেকে সেটার সাথে অমিল পেয়ে বিরক্ত হলেন। আপনি নিজেকে অযথাই কিন্তু কষ্ট দিচ্ছেন। আর এই গল্পের মধ্যে আপনি যে নোরাকে দেখলেন সেটা তার পরিপূর্ণ রূপ সেটা কেন হতে হবে? আর এখানে চরিত্রটাই প্রধান হতে হবে কেন? এখানে গল্পে আরো অনেক কিছু দেখার আছে। অনুভব করার আছে। একটি মেয়ে যখন লেখাটি পড়বে সে বিবাহিত না অবিবাহিত, তার সামাজিক পারিবারিক আবহ সব মিলিয়ে তার মনে যে প্রতিবিম্ব তৈরি হবে সেটা একজন পুরুষের ভাবনা থেকে আলাদা হবে। পুরুষটি হয়ত অবস্থাভেদে নিজেকে নোরার বাবা বা স্বামীর স্থানে নিজেকে কল্পনা করে তার চিন্তাকে পূনর্মূল্যায়ন করার সুযোগ পাবে।

  • একটা চরিত্র সব আবহে একই আচরন করবে এটাও একটা অবসেসিভ চাওয়া মনে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে আপনি নোরাকে বারবার আপনার পরিচিত প্যাটার্ণের কোন একটি তে ফিট করার চেষ্টা করছেন। তাঁর অন্তর্গত দ্বান্দ্বিকতা, ঘটনার আলোকে মানসিক প্রতিক্রিয়া এগুলোকে বারবার প্যটার্নের যাতাকল দিয়ে পিষতে চাচ্ছেন। তাহলে সে যদি প্রতি মূহুর্তে প্রেডিক্টেবল আচরন করে অর্থাৎ আধুনিক হলে X, গোড়া হলে Y ভিক্টরিয়ান হলে Z. দয়া করে এই প্যটার্নের সীমাবদ্ধতাটুকু ধরার চেষ্টা করুন। যেই যুক্তি ব্যবহার করে আপনি নোরার ওপর চটেছেন সেটা কিন্তু গ্রহনযোগ্য নয়।

  • গল্প একটা গানিতিক সমীকরন নয় যেখানে আপনি আপনার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন। এটা ব্যক্তির আচরনের মতই।

    গল্পে সমাধান থক্তেই হবে এ ধরনের কোনো কথা নেই কিন্তু এ গল্পে থাকতে হবে। চরিত্র কে বলতে হবে “আমি এটাকে নয় ওটাকে দোষ দিচ্ছি এবং এ কারনে এটা অথবা ওটা করছি”। পেসেন্স হচ্ছে সবচেয়ে খারাপ সমাধান!!!

    এটা আপনার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা হতে পারে। নোরার কাছে আপনার প্রত্যাশা হয়ত আরো বেশি ছিল। কিন্তু তার এই না পারাটা হয়ত বাস্তবতার অনেক কাছা কাছি। এখানে পেশেন্স ব্যপারটাকে আমার কাছে সমাধান মনে হয়নি। বরং হতবাক সিদ্ধান্তহীন, সমাধান ছাড়া একটা অবস্থার প্রতিফলন মনে হয়েছে। লেখিকার চিন্তা হয়ত বা তার চেয়েও আলাদা কিছু। কিন্তু এই পেশেন্সের কারনে নোরাকে গালাগাল করার পয়েণ্টটা আমার কাছে ভীষন আপত্তিকর মনে হল।

  • দর্শন, সাহিত্য আর সমাজের হাত ধরাধরির ব্যপারটা বুঝলাম মানলাম। কিন্তু একটা বিষয় এখানে যোগ করতে চাই। কন্টেক্সট, চরিত্রের মনস্তত্ব, লেখক লেখিকার সমাজ চিন্তা মনন সবকিছুর মিশ্রনে একটা প্রতিরূপ তৈরি হয় যেটাকে যেটা অনেক ক্ষেত্রে দর্শনকে, সমাজকে বা সমাজ সম্পর্কে ব্যক্তির ধারনাকে নির্মান, বিনির্মান বা দরকার হলে পুননির্মান করবে। তাই এই ক্ষেত্রে দর্শন আর সাহিত্যের যোগাযোগ একমুখি বা সরলরৈখিক কোনটাই নয়।
  • দর্শনের ব্যপারে আপনার অবস্থানও পরিষ্কার নয়। আপনি যখন 'আধুনিক' বলছেন তখন সাহিত্যের না দর্শনের সংজ্ঞা ব্যবহার করছেন না এটা আপনার নিজের কোন পছন্দের সংজ্ঞা আমি বুঝতে পারছিনা। নাকি ২০০৯ মনে করিয়ে দিয়ে আপনি আধুনিক বলতে সাম্প্রতিক বোঝাচ্ছেন সেটাও ঠিক পরিষ্কার নয়।
  • এখন আসা যাক মূল প্রসংগে। এখন ২০০৯।

    এখানে মনে হচ্ছে আপনি আধুনিক বলতে সাম্প্রতিক বোঝাচ্ছেন।

    এমুহুর্তে আল্লাহর মহিমা বর্ননাকারী কোনো লেখার বিরুদ্ধে আমি আমার কীবোর্ড নিয়ে নামবো যে কারনে, এই লেখার বিরুদ্ধে নামবো সেই একই কারনে। আমি মনে করি এইসব বিলাসিতার সময় আমাদের নেই।

    এখানে মনে হচ্ছে আপনি দর্শনের অভিধান থেকে 'আধুনিক'-এর সংজ্ঞা খুঁজছেন [pre-modern থেকে modern এর ট্রান্সিশন এখানেই]। বলা বাহুল্য দর্শনের সাম্প্রতিক কিন্তু 'আধুনিক' নয়। তারা ২০০৯ এর অনেক আগেই উত্তরাধুনিকতার গ্রহে পদার্পন করেছেন। তাছাড়া পাশাপাশি আরো অনেক ধারাই দর্শনের জগতে বিকাশমান যেটা আধুনিক যুগের ধারনাকে বিনির্মানের প্রকল্পে নিয়োজিত। সেই বিচারে আপনি যদি দর্শনের খাতা খোলেন আপনাকে আসলেই আরো সাম্প্রতিক দর্শনের খোঁজ করতে হবে। আর যদি একবার উত্তরাধুনিকতার প্যাঁচে পরেন প্যটার্নের ব্যবহার হয়ত ভুলে যেতে হবে। আসলে এই প্যটার্ন নির্ভরতার সমালোচনা থেকেই কিন্তু উত্তরাধুনিকতার শুরু।
একটা ছোট্ট অনুরোধ। সহব্লগারদের প্রতি এবং তাদের লেখার প্রতি আরো সংবেদনশীল আচরন করুন। আধুনিক (সাম্প্রতিক অর্থে) দর্শনের একটা ধারা প্রাচ্যবাদ (পোস্ট কলনিয়াল ধারার একটা শাখা ধরতে পারেন এটাকে)। এখানে স্টেরিওটাইপিং-এর কঠোর সমালোচনা করা হয়। আসলে এই স্টেরিওটাইপিং ব্যপারটা আপনার সমালোচনায় একটু দৃষ্টিকটু রকমের বেশি।

তানবীরা এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথিলেখক এর ছবি

উদ্ধৃতিঃ
"পুরো গলপে মেয়েটির ব্যাপারে তথ্যের (background info) অভাব হতাশাজনক। "
---আপনি যে মন দিয়ে লেখা পড়েননা, এটাই তার প্রমাণ। গল্পের একজায়গাতে উল্লেখিত আছে যে নোরা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে।

এবার আসি আপনার অন্য সমস্যাগুলোতে।
এখানে গল্পটিতে দেখানোই হয়েছে হারুণকে একজন দুর্বল চিত্তের ব্যক্তি হিসাবে আর নোরাকে একজন আধুনিক, চঞ্চল, স্বামী সংগে স্বপ্ন দেখা একটি মেয়ে হিসেবে। স্বাভাবিক ভাবেই এতে দুজনের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের কথা উল্লেখ করেছেন লেখিকা যেটা বাস্তবের সাথে খুবই মেলে। লেখিকার নির্ধারিত চরিত্রের বৈশিষ্ট নিয়ে আপনার আবজাব, অর্থবিহীন উলটো তর্কের মানেটা বুঝলামনা! বুঝলামনা, আপনি লেখাটি পড়ে বিরক্ত নাকি লেখিকার প্রতি নাকি নোরার প্রতি!

উদ্ধৃতিঃ
"গল্প পড়ার পরে আমার প্রথম মনে হয়েছে "নোরাকে ঠাডায়া দুইটা চড় মারা উচিত"। "

"পেশেন্স, পেশেন্স আর পেশেন্স " এ গল্পের সবচেয়ে দুর্বল অংশ। এটা পুরোপুরি অপ্র্যোজনীয় একটা অংশ কারন এ ব্যাপারে তথ্য গুলো আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা আমার কাছে স্পষ্ট না। পেশেন্স এ কী হবে? সময়ে সে সব ভুলে যাবে?!!! এটাই কী লেখিকার আশা?? এই লাইন গুলো না থাকলে কী ক্ষতি হতো গল্পের কাঠামোর?
গল্ পে এ ধরনের বাক্যের বিলাসিতা অমার্জনীয়।"

----আপনি যে কেন গল্প পড়েন আর পড়ে কিইবা বোঝেন তা নিয়ে এখন সন্দেহ জাগছে।
যাক, অন্যের গল্পের চরিত্র, ঘটনা, ঘটনার মোড়ে এভাবে চড়ে বসবেননা। তাহলেতো কেউ আর গল্প লিখতে পারবেনা। আর সমালোচনা করার আগে সমালোচনা শব্দের অর্থ জেনে করুন।

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

"পুরো গলপে মেয়েটির ব্যাপারে তথ্যের (background info) অভাব হতাশাজনক। "
---আপনি যে মন দিয়ে লেখা পড়েননা, এটাই তার প্রমাণ। গল্পের একজায়গাতে উল্লেখিত আছে যে নোরা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে।“

খুবই ভালো পয়েন্ট কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না এ তথ্য কার যূক্তিকে শক্তিশালী করে?!!!!!আমার তো মনে হয় আমারটাকেই করে। সে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে অথচ ডিসিশান নিতে তার অনীহা তো তার অবস্থার কোনো উনিশ বিশ করছে না, তাই না!!!!

“এখানে গল্পটিতে দেখানোই হয়েছে হারুণকে একজন দুর্বল চিত্তের ব্যক্তি হিসাবে আর নোরাকে একজন আধুনিক, চঞ্চল, স্বামী সংগে স্বপ্ন দেখা একটি মেয়ে হিসেবে।“

আপনি আধুনিক এর মানেই বোঝেন না। “আধুনিক” এবং “স্বামী সংগে স্বপ্ন দেখা” এক জনের চরিত্র হতে পারেনা। যেকোনো একটা হতে হবে।

“বুঝলামনা, আপনি লেখাটি পড়ে বিরক্ত নাকি লেখিকার প্রতি নাকি নোরার প্রতি!”
সবগুলোর প্রতি একইসাথে, সমানভাবে বিরক্ত । আমার ধারনা লেখিকার বয়স ২০ ছাড়ায় নি। যদি হয় তা হবে লজ্জাজনক। এই পুরো গল্পটি ছিলো একটা সপ্ন বর্ননা। পর্যবেক্ষন এর ছিটেফোটাও এতে নেই।
“----আপনি যে কেন গল্প পড়েন আর পড়ে কিইবা বোঝেন তা নিয়ে এখন সন্দেহ জাগছে।
যাক, অন্যের গল্পের চরিত্র, ঘটনা, ঘটনার মোড়ে এভাবে চড়ে বসবেননা। তাহলেতো কেউ আর গল্প লিখতে পারবেনা। আর সমালোচনা করার আগে সমালোচনা শব্দের অর্থ জেনে করুন।“

আর আমার সন্দেহ জাগছে যে আপনিই না আবার লেখিকা!!!!!
যদি তাই হোন তবে আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে আপনার গল্পের উপর চড়ে বসবার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলো না কারন এর চেয়ে খারাপ গল্প আমি নিয়মিত পড়ি। আমি চেপে বসছি আপনার Confidence এর উপর (যা আপনি প্রমান করেছেন আপনার প্রথম কমেন্ট এ)। যা একজন লেখকের সবচেয়ে বড় দোষ।

রানা [অতিথি] এর ছবি

সাব্বির,

"১। আধুনিক দর্শন অনুযায়ী গল্প এর শেষে মেয়েটির উচিত তার সামীকে ত্যাগ করা এবং নিজের পায়ে দাড়ানোর চেষ্টা করা (যেহেতু,"তার জীবনসাথী কতোগুলো বদমাশের হাতে তাকে ফেলে কাপুরুষের মতো পালিয়ে এসেছে ") ভিক্টোরিয়ান ফিলোসফি হলে আত্মহত্যা করবে।"

আধুনিক দর্শন বা ভিক্টোরিয়ান ফিলোসফি অনুযায়ী স্বামীটির কি করা উচিত এ ক্ষেত্রে?

আর আমাদের কাহিনিতে পুরুষ বা নারীর আধুনিক দর্শন বা ভিক্টোরিয়ান ফিলোসফি অনুযায়ী চলতে হবে এর পিছনে যুক্তিটা কি ?

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

আমি প্রথমেই বলেছি এ চরিত্র পুরোটাই আরোপিত। তারপরো যদি হয় তবে বলতে হবে হারুন পড়ে যায় দর্শনলেস ক্যাটাগরীতে। সে অনুযায়ী তার অবস্থার কোনো উনিশ বিশ হবে না। সে হয়তো ৬-১২ মাস পরে আবার বিয়ে করবে।

উত্তর অনেকবার দিয়েছি। আবার বলছি চলতে হবে না যদি সেভাবে তার চরিত্র অঙ্কন করা হয়। লেখিকা তা করতে ব্যার্থ হয়েছেন।

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমার মন্তব্য লেখা নিয়ে নয়, অতএব সেটার গুণাগুণ বিচারে যাচ্ছি না, আমার মন্তব্য অতিথি সাব্বিরের মন্তব্য নিয়ে -

াধুনিক দ র্শ ন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এখানে প্রত্যেককে তার নিজের দায় দায়িত্ত নিজেকেই বহন করতে হবে (self sufficient).(***) যেকারনে যে কোনো দার্শনিকের আধুনিক দর্শন শুরু হয় ধর্মকে অসীকার এর মাধ্যমে, যুক্তির ভিত্তিতে।
আধুনিক নারী যদি শুধুমাত্র সাধীনতা(self sufficiency এর সুবিধা) ভোগ করতে চায় এবং অন্যান্য কাজ কর্মে তার প্রমান না দিতে পারে তাহলে সেটাকে বলা হবে "hypocracy" । এসব ক্ষেত্রে আমি সাধারনত slut or bitch বিশেষন ব্যাবহার করি (যখন victorian এবং modern ফিলোসফি overlap করে)।

যদিও আমার দর্শন - তা সে আধুনিক কি প্রাগঐতিহাসিক যেটাই হোক না কেন, নিয়ে জ্ঞান একেবারেই কিছু নেই তারপরও গুগল টুগল সার্চ করে যা বুঝলাম আধুনিক দর্শন র‌্যাশনালিজম, সংশয়, প্রশ্ন বা চ্যালেঞ্জ এইসব টেইসব নিয়ে কাজকারবার করে। আপনি বলছেন স্বনির্ভরতা বা স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়েও করে, ভালো কথা। কিন্তু ঠিক কী কারণে এই গল্পের চরিত্রদের 'আধুনিক দর্শন' এর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে বলে আপনি মনে করছেন সেটা কি একটু ব্যাখ্যা করবেন?

'আধুনিক নারী' আর 'আধুনিক দর্শননির্ভর/আধুনিক দার্শনিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত নারীচরিত্র' দুটো কি এক জিনিষ?! আধুনিক নারী বলতে আমরা আধুনিক আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে অবস্থিত একজন নারী, যে সেই তথাকথিত 'আধুনিক' সমাজের মূল্যবোধ বা নর্মএর প্রতিনিধিত্ব করে সেটা বুঝি। চলতি অর্থে শিক্ষিত হবে, যা বলা হবে একদম বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবে না, একটু আধটু স্বাধীন চিন্তা টিন্তাও মাঝে মাঝে করে ফেলবে - এরকম বুঝি, তাই তো? কিন্তু তারপরও - শিক্ষিত হলেই নারী স্বনির্ভর হয় না, স্বনির্ভর হলেই নারী (এবং পুরুষও) আধুনিক হয় না। সেক্ষেত্রে এটা ঠিক কীভাবে hypocrisy হলো? দুর্বলতা হতে পারে, পরনির্ভরতা হতে পারে, মেয়ে হিসেবে সুবিধা নেয়া হতে পারে, কিন্তু 'আধুনিকতাও চাইবো কিন্তু নিজে কষ্ট করার দায় নেবো না' এটাকে ঠিক হিপোক্রিসি কি বলা যায়? তাও আবার আপনার কঠিন 'আধুনিক দর্শনভিত্তিক' সংজ্ঞা অনুযায়ী?

আর তাও যদি বা মেনে নেই - slut/bitch??? এগুলো কোথা থেকে আসলো?? কোন দর্শন/ধারা/সংজ্ঞা/অন্য কিছু অনুযায়ী নোরা স্বামীর টাকায় আহ্লাদ করে বসে বসে খায় বলে, অথবা প্যাতপ্যাতে মধ্যবিত্ত স্বামীকে কিছুটা অনুকম্পার দৃষ্টিতে দেখে বলে, অথবা স্বামীর সাবধানী কাপুরুষ আচরণে বিতৃষ্ণ বলে সে slut বা bitch হয়ে গেলো? আপনি বলেছেন ভিকটোরিয়ান আর আধুনিক দর্শনের ওভারল্যাপ হলে (একটু বুঝিয়ে বলবেন এই ব্যাপারটাও, ঠিক কীভাবে ওভারল্যাপ হলো)আপনি নাকি সেরকমই বলে থাকেন, এই কথাটাও বুঝলাম না!

মানিক ছাড়া আর যারাই লেখেন সবাই নায়ক, নায়িকা আর ভীলেন নিয়ে গল্প লেখেন, তাদের চরিত্রগুলো ঠিক 'মানুষ' হয় না - এরকম একটা কথা আমার কাছে ভীষণ সীমাবদ্ধ একটা পর্যবেক্ষণ!

সাব্বির [অতিথি] এর ছবি

হা ভগবান!!! আপনি এখনো না বুঝলে আমি বোঝাতে অক্ষম।
লেখার এক প্যারার মধ্যে চরিত্র গুলো থেকে আমার যে আশা তৈরী হয় তা যদি সে চরিত্র ঠিক মতো পালন না করতে পারে তাহলে তার পেছনের যূক্তিটি হবে গল্পের মূল বিষয়, চরিত্রটি নয়। এ গল্পের বিষয় কী?!!!!!

“'আধুনিক নারী' আর 'আধুনিক দর্শননির্ভর/আধুনিক দার্শনিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত নারীচরিত্র' দুটো কি এক জিনিষ?! আধুনিক নারী বলতে আমরা আধুনিক আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে অবস্থিত একজন নারী, যে সেই তথাকথিত 'আধুনিক' সমাজের মূল্যবোধ বা নর্মএর প্রতিনিধিত্ব করে সেটা বুঝি। চলতি অর্থে শিক্ষিত হবে, যা বলা হবে একদম বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবে না, একটু আধটু স্বাধীন চিন্তা টিন্তাও মাঝে মাঝে করে ফেলবে - এরকম বুঝি, তাই তো? কিন্তু তারপরও - শিক্ষিত হলেই নারী স্বনির্ভর হয় না, স্বনির্ভর হলেই নারী (এবং পুরুষও) আধুনিক হয় না। সেক্ষেত্রে এটা ঠিক কীভাবে hypocrisy হলো? দুর্বলতা হতে পারে, পরনির্ভরতা হতে পারে, মেয়ে হিসেবে সুবিধা নেয়া হতে পারে, কিন্তু 'আধুনিকতাও চাইবো কিন্তু নিজে কষ্ট করার দায় নেবো না' এটাকে ঠিক হিপোক্রিসি কি বলা যায়? তাও আবার আপনার কঠিন 'আধুনিক দর্শনভিত্তিক' সংজ্ঞা অনুযায়ী?”

আপনার এ প্যারা প্রমান করে যে আপনি কোনো পড়াশোনা ছাড়া তর্কে নেমেছেন। আপনি কাকে নবী মানেন? ব্যুভোর, ভার্জিনিয়া উলফ,মেরি ওলষ্টোন ক্রাফট?!!!! কারো কোনো লেখায় এ প্যারার সমর্থনে কিছু পেলে আমাকে জানান এবং আপনার ঠিকানা পাঠান। আমি আমার কান কেটে আপনার কাছে পার্সেল করবো।
Hypocrisy: False claim to virtue (moral excellence, goodness)
(virtue (moral excellence, goodness) এর সঙ্গা নির্ভর করে সে সময়ের দর্শনের উপর। আপনি এ ব্যাপার গুলোকে “দুর্বলতা হতে পারে, পরনির্ভরতা হতে পারে, মেয়ে হিসেবে(!!!!) সুবিধা নেয়া হতে পারে,” কী হিসেবে সংগায়িত করতে চান?!!!!!! বাংলাদেশের মেয়েদের virtue এর সংগায় এগুলো নেই!!!!!!!! ধরা গেলো শব্দটা hypocrite না। তাহলে কী Dishonest, Immoral??!! তাই যদি হয় তাহলেও আমার চলবে ।
Overlap বলতে আমি বুঝিয়েছি (আগেও বলেছি) “When u try to taste the honey of both….”

“মানিক ছাড়া আর যারাই লেখেন সবাই নায়ক, নায়িকা আর ভীলেন নিয়ে গল্প লেখেন, তাদের চরিত্রগুলো ঠিক 'মানুষ' হয় না - এরকম একটা কথা আমার কাছে ভীষণ সীমাবদ্ধ একটা পর্যবেক্ষণ!”

এটা একটা কথার কথা। আমি আখতাউজ্জামান ইলিয়াস ওয়ালীউল্লাহ এদের এর কথা ভুলে যাইনি । লেখিকার জন্য আমার মনে হয়েছে মানিক বেশী কার্যকরী তাই বলেছি।

স্নিগ্ধা এর ছবি

হায় নবীবাদী - না আমি আসলেই এখনও বুঝিনি, এবং যেহেতু আমার বোধহীনতায় আপনি হতাশ অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন, তাই মনে হচ্ছে এ জীবনটা আপনার এই 'আধুনিক দর্শন নির্ভরতা' না বুঝেই পার করতে হবে। আফসোস!

না, ঐ প্যারাটা (অবশ্য, আমার মতে) কিছুই প্রমাণ করে না, এমনকি এটাও না যে আমি কোন পড়াশোনা ছাড়া তর্কে নেমেছি। আমার যে দর্শন বিষয়ে কোন পড়াশোনা নেই সেটা আমি নিজেই গুগলের কথা উল্লেখ করে খুব স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি - আমার লেখা থেকে ডিডাক্টেড হওয়ার জন্য রেখে দেই নি। তার একটা কারণ, আমি - যদিও অতীব সাধারণ এক নারী - কোন কিছু না জানলে বা না বুঝলে বা ভুল করলে, সেটা স্বীকার করে থাকি।

না, ওনাদের কাউকেই আমি নবী মানি না - ব্যোভয়ারকে খুব, খুব পছন্দ করলেও। আপনার এই অংশ পড়ে আমারও মনে হচ্ছে আপনি খুব তাত্ত্বিক কাঠামোনির্ভর, আপনি theory হিসেবে যা পড়েছেন সেটাকে একদম আক্ষরিক অর্থে সমাজে প্রয়োগ করে সেটার বিচার করেন। তা করতেই পারেন, করুন যত খুশি - অসুবিধে নেই। কিন্তু, আমার কেন ঐ প্যারার সমর্থনে নারীবাদ বিষয়ক তাত্ত্বিকদের রেফারেন্স দিতে হবে??!! আপনি আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করলে সেটা বলুন বা আমাকে ভুল প্রমাণ করুন? রেফারেন্স দিয়ে বা নাহয় না দিয়েই?

আপনি বলছেন hypocrisy'র সংজ্ঞা নাকি সেই সময়ের দর্শনের ওপর নির্ভর করে - সেই একই concept এর কথাই তো আমিও বললাম 'আধুনিক' নারী সম্বন্ধে চলতি অর্থে ধারণা বোঝাতে গিয়ে! তাহলে?

Hypocrisy'র সংজ্ঞা false claim to virtue - হ্যাঁ, তাইই - তো এখানে নোরা বা নোরা যে সমস্ত আধুনিক মেয়েদের প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের virtue গুলো কী? আপনি যে বলছেন বাংলাদেশের মেয়েদের virtue'র সংজ্ঞায় আমি যে দুর্বলতা, পরনির্ভরতা এসব বলেছি সেগুলো নেই - তাহলে ঠিক কী কী আছে? আপনার বক্তব্য অনুযায়ী slutty আচরণ না করাটা ঠিক কীভাবে বর্ণিত আছে সেই virtueমালায়?

আধুনিক দর্শন নিয়ে আপনার পড়াশোনা আছে (আমার মতো পড়াশোনা ছাড়াই আপনি তর্কে নামেন নি) তাহলে এবার বলুন - সামাজিক নর্মগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস বা moral courage নোরার নেই বলে সে 'immoral' হয় কীভাবে?! সে তো একই অবস্থানে থাকা আরেকটা মেয়ের 'এই এই জিনিষগুলো করা উচিত' বলছে কিন্তু নিজে করছে না, এমনও না- তাহলে?? আধুনিক দর্শন কি যে কোন তত্ত্বই সামাজিক কাঠামোর মধ্যে applied হয়, এক্ষেত্রে আপনি যদি বলতেন গল্পের থীমটা আধুনিক দর্শন অনুযায়ী সামগ্রিকভাবে সমাজের হিপোক্রিসি তুলে ধরে, সেটা বুঝতাম। কিন্তু আপনি তা তো বলেন নি?!

ওভারল্যাপ মানে সে ভিক্টোরিয়ান এবং আধুনিক - দু'যুগেরই সুবিধা নেবে, এবং নিলে তাকে আপনি slut বা bitch বলে অভিহিত করেন? বাহ!

আপনার কান কেটে আমাকে পাঠানোর কোনই দরকার নেই, (আর পাঠাবেনই বা কেন, আমি তো আমার 'নবী'র কোন রেফারেন্স দেইও নি!) তার চাইতে বরং আরেকটু বিশদভাবে যদি আপনার যুক্তিগুলোই বুঝিয়ে বলতেন - বাধিত হতাম!

আর গল্পের বিষয় জানতে চাইছিলেন না? আমার কাছে এক কথায় গল্পের থীম 'আমাদের' কাপুরুষতা বা সাহসের অভাব, সমাজের নর্মগুলোকে ভয় পেয়ে (আপনার ভাষায়) দ্বিচারণ করা।

ভালো কথা - বাংলাদেশের মেয়েদের virtue এর সংজ্ঞাটা আমি আমার জ্ঞানবর্ধনের জন্যই জানতে চাচ্ছি, পারলে জানাবেন।

আর মানিকের রেফারেন্স যদি কথার কথাই হবে, তাহলে বারবার শুধু সেই উদাহরনের প্রয়োগ আমার মতে মানুষকে 'ভুল' দর্শনের দিকে চালিত করে হাসি

তানবীরা এর ছবি

আপনার এ প্যারা প্রমান করে যে আপনি কোনো পড়াশোনা ছাড়া তর্কে নেমেছেন। আপনি কাকে নবী মানেন? ব্যুভোর, ভার্জিনিয়া উলফ,মেরি ওলষ্টোন ক্রাফট?!!!! কারো কোনো লেখায় এ প্যারার সমর্থনে কিছু পেলে আমাকে জানান এবং আপনার ঠিকানা পাঠান। আমি আমার কান কেটে আপনার কাছে পার্সেল করবো।

এ ধরনের কান্ডজ্ঞানহীন, শিষ্টাচার বর্হিভূত, উগ্র ব্যক্তিগত আক্রমনমূলক মন্তব্য অনুমোদন করার প্রতিবাদে আমি মডুদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সবজান্তা এর ছবি

সাব্বির, আপনি অতিথি দেখে আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, সচলায়তনে আমরা প্রায়ই অনেক তর্ক বিতর্ক করে থাকি। তবে খুবই সতর্ক থাকি যেন ব্যক্তিগত ভদ্রতার সীমা লঙ্ঘিত না হয়। সচলায়তনের একজন সদস্য হিসেবে অন্তত আমি আশা করি, আরেকজন অতিথি যখন এখানে লিখবেন বা তর্ক করবেন, তিনিও যেন ভদ্রতার এই সীমারেখাটুকু মেনে চলেন।

অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, আপনার-


আপনার এ প্যারা প্রমান করে যে আপনি কোনো পড়াশোনা ছাড়া তর্কে নেমেছেন।
লাইনটি এই ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করেছে বলেই আমার বিশ্বাস। তর্ক হতেই পারে, তবে তা যে কোন মতেই ব্যক্তি আক্রমনে পরিণত না হয়।

আমরা আশা করবো, ভবিষ্যতে আপনি এ ব্যাপারে যত্নশীল হবেন।


অলমিতি বিস্তারেণ

সাইফ তাহসিন এর ছবি

লাইনটি এই ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করেছে বলেই আমার বিশ্বাস।

একমত, খালি ঐ লাইন্টাই না বস, অন্যান্য মন্তব্যেও যথেষ্ট আক্রমনাত্মাক ভাবে লিখেছে এই অতিথি সাব

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

দময়ন্তী এর ছবি

সাব্বির,
আপনি তো দেখি এক টেমপ্লেটকাকু বিশেষ৷ দর্শনের দুই তিনখানা টেমপ্লেট মুখস্থ করে তাতেই ঘপাঘপ গল্প বসাতে চাচ্ছেন৷
আপনার মন্তব্যের কিছু শব্দ ও ভাষা ব্যবহারের ধরণ আমার কাছে অত্যন্ত আপত্তিকর মনে হয়েছে৷

আমি ৩টি মন্তব্যকে "আপত্তিকর' বলে রিপোর্ট করেছি৷
-----------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আমিও আপত্তি তুললাম ।
বুঝলাম জ্ঞান আহরণের কোনো শেষ নাই । এই মহান জ্ঞানীর (সাব্বির নিক ) কাছ থেকে যা যা শিখলামঃ

১। আধুনিক দর্শন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এখানে প্রত্যেককে তার নিজের দায় দায়িত্ত নিজেকেই বহন করতে হবে (self sufficient) !!!

২। তানবীরার মত গল্প লিখতে হলে আগে মানিক পড়া উচিত । কারন, বাংলাদেশে একমাত্র তার উপন্যাসেই ক্যারেক্টারগুলো হয় মানুষ !!

৩। মানিক আমাদের আধুনিক বানিয়েছেন !!

৪। স্নিগ্ধার কমেন্টে তার জবাব "আমি আখতাউজ্জামান ইলিয়াস ওয়ালীউল্লাহ এদের এর কথা ভুলে যাইনি । লেখিকার জন্য আমার মনে হয়েছে মানিক বেশী কার্যকরী তাই বলেছি।" গল্পের ধরন অনুযায়ী কার কার লেখা পড়তে হবে এমন একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা সাব্বির সাহেবের কাছ থেকে আশা করছি ।

৫। সাহিত্য সমালোচনা আর খিস্তিখেউড় সমার্থক ।

৬। স্নিগ্ধার বলেছে "আপনার এ প্যারা প্রমান করে যে আপনি কোনো পড়াশোনা ছাড়া তর্কে নেমেছেন।" স্নিগ্ধার পড়াশোনা নিয়ে যদি প্রশ্ন করা হয় তবে, আমি তো এখন বিদ্যালয়েই ভর্তি হয়নি ।

৭। ভাইজানের বিদ্যালয়ে ঠিকানা দিবেন । একটা মনে পড়ে গেলোঃ

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সবজান্তা এর ছবি


১। আধুনিক দর্শন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এখানে প্রত্যেককে তার নিজের দায় দায়িত্ত নিজেকেই বহন করতে হবে (self sufficient) !!!

এই কথাটা কিন্তু ঠিক। আমার দর্শন নিয়ে তেমন কোন পড়াশোনা নেই। কিন্তু সার্ত্রের অস্তিত্ববাদ এবং মানবীয় আবেগের উপর লিখিত একটা বইয়ে হুবহু একই জিনিস পড়েছি -

Man is Condemned to be Free !


অলমিতি বিস্তারেণ

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

জানলাম । এখানে চমৎকার আলোচনা আছে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ও তনু আপা, আপনাগো হইল কি? কয়দিন আগে অনিকেতদা ধর্ষন নিয়া দর্শন করল, আবার আপনে ঝাপায় পড়লেন, মন মিজাজ কি খুব খারাপ নাকি? আপনার নামে লেখা না থাকলে আমি বিশ্বাস করতাম না এইটা আপনার লেখা গল্প। সম্ভবত আপনার লেখা সবচেয়ে দুর্বল গল্প এটা।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তানবীরা এর ছবি

হুমম তায়েক ভাইয়ের লেখা দেখেইতো ঠিক করলাম, মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন, হয়েছেন প্রাতঃস্মরনীয়, সেই পথ লক্ষ্য করে স্বীয় কীর্তি ধ্বজা করে ...............
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

প্রবাসিনী এর ছবি

ভাল লেগেছে।
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

তানবীরা এর ছবি

ধন্যবাদ সাজিয়া, ভালো থেকো।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

আপনার গপ্পো পড়তে বরাবরই ভাল লাগে স্বাতীপু। এইবারেও ব্যতিক্রম হলোনা।
--------------------------------------------------------

--------------------------------------------------------

তানবীরা এর ছবি

যাক, দু একজনেরতো ভালো লেগেছে, নইলে কাঁদতাম।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

আনন্দেও কাঁদতে পারেন আপু। আপনার কান্নাকাটি দেখতে মন্দ লাগবেনা আমাদের। চোখ টিপি

--------------------------------------------------------

--------------------------------------------------------

কীর্তিনাশা এর ছবি

গল্প পড়ে চমক খেলাম।

চালিয়ে যান তাতা'পু চলুক

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তানবীরা এর ছবি

ক্যান, চমকাইলা ক্যান ?
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

কীর্তিনাশা এর ছবি

চমকাইছি কারণ আমি নিজেই প্রায় কাছাকাছি এক ঘটনায় পইড়া গেছিলাম। সেখানে কোন নারী বিষয়ক ব্যাপার ছিল না। এক সিএনজি ড্রাইভারকে দুই বখাটের হাতে অযথা মার খাওয়া থেকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলাম। তাতে বেচারা সিএনজি ড্রাইভার ঠিকই রক্ষা পেল। কিন্তু ফান্দে পড়লাম আমি। সেই বখাটেরা তাদের আরো কিছু সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে একটু দূরে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। আমি তো তা বুঝিনি। এগিয়ে যেতেই তারা আমাকে ঘিরে ধরলো। অবস্থা বেগতিক দেখে এবং কারো কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না বুঝে সে যাত্রা ওদের কাছে অনেক স্যরি-টরি বলে পার পেয়েছিলাম।

চমকেছি এ কারণেই। হারুন আর নোরার আতঙ্ক কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা কিছুটা হলেও সেদিন টের পেয়েছিলাম।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

রানা [অতিথি] এর ছবি

তানবীরা, গল্প ভাল হয়েছে । লোকজন কাহিনির মধ্যে নতুন চমক খুঁজে, তাতেই বোধকরি বিভিন্ন মন্তব্য ।

চিলেকোঠার সেপাই পড়েছেন কি? তাতে এরকমই একটা ঘটনা আছে । স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর সরকারী পোষা ছাত্রগুন্ডা। প্রায় চল্লিশ বছর পেরোলো, নিজেদের দেশ, কিন্তু এখনও কত সত্যি !

তানবীরা এর ছবি

হ্যা, রানা আজকাল শুধু লেখায় না, টেলিফোনে, আলাপে সব কিছুতেই লোকে নতুন চমক চায় কিন্তু জানেন, এই গল্পটা মাত্র গত সপ্তাহে কোলকাতা থেকে ঘুরে আসা এক বন্ধুর কাছে শুনেছি। তার কোন এক কাজিন এখন প্রায় মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু কেউ তাকে হেল্প করছে না এমনকি বাবা মাও না। কিন্তু আমি চমক দেয়া কিছুই জানি না। সব সাদামাটা।

ধন্যবাদ আপনাকে।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মুছাব্বির এর ছবি

শিরোনামটা ঠিক করে দিন- ক্ষরণ হবে ক্ষরন নয়।

তানবীরা এর ছবি

দিলাম , থ্যাঙ্কু।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হয়তো তোমার সেরা লেখা নয়, কিন্তু লেখার গুণেই আমার কাছে ভালো লেগেছে। চেনা কাহিনী হলেই যে সেগুলো নিয়ে লেখা যাবে না, এটা আমি মনে করি না। বরং চিরচেনা বিষয়গুলোই যে যতটা দারুণভাবে তুলে ধরতে পারে, সেখানেই তার দক্ষতা ততো বেশি প্রকাশ পায়।

পড়তে ভালো লেগেছে গল্পটা। আরো গল্প লেখ। আশা করি এইসব সমালোচনা তোমার লেখায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।

ওহ্, পেশেন্সের ব্যাপারটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।

শিরোনামে শব্দটা 'ক্ষরণ' হবে।

তানবীরা এর ছবি

না প্রভাব ফেলবে না। থ্যাঙ্কু। ভালো থেকো।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্পটা পরলাম, কেমন লাগলো তা পরে বলছি - লেখিকাকে ধন্যবাদ.........।
আমদের চারি পাশে কত রকমের ঘটনাই ঘটে, আমরা তার কয়টাই বা দেখি বা জানি। লেখক তার মনের কল্পনা দিয়ে সমাজের কোন বিষয়কে অবলম্ভন করে তার মনের রঙ মিশিয়ে গল্প লিখেন। পাঠকের তা পড়ে ভাল লাগতেও পারে আবার নাও লাগতে পারে, তা পাঠকের নিজের বিষয় । এ নিয়ে পাঠকের সমালোচনা করার অধিকার পাঠকের অবশ্যি আছে। কিন্তু সমালোচনার ধরনটা যদি হয় আক্রমনাত্তক বা ব্যঙ্গাত্তক তবে তা হয় দুঃখজনক। তখন মনে হয় সমালোচক তার নিজের পান্ডিত্ত জাহির করার জন্যই অধীক ব্যাস্ত।

যে কোন বিষয়েরই দুটো দিক থাকে-ভালো আর মন্দ। "নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো" এবং " দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল", এই দুটো প্রবাদ আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত এবং বিপরিতার্থক। আমারা হরহামেশাই আমাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকি। একই বিষয়ে যেটা বললে পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে থাকে- সেটাই বলি, তবে আমার মতো অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিতরা তেমন বলে না । এই দুটো প্রবাদের ষোলআনা লাভ সূদে-আসলে জ্ঞ্যানীগুনী / পন্ডিত / সমালোচক ব্যাক্তিরাই নিয়ে থাকেন।

অতি দুষ্ট লোকও তার দূষ্কর্মের পক্ষে অনেক যূক্তি দেখাতে পারে, যেহেতু সব কিছুর ই দুটো দিক থাকে। এমন কি পিতৃহন্তাকারীও আদালতে তার কর্মের পক্ষে যুতি দিতে স্বচেষ্ট থাকেন। নিম্ন আদালত যে রায় দিচ্ছে তা উচ্চাআদালত খারিজ করে দিচ্ছে, আবার উচ্চাদালত যা বলচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দিচ্ছে, যা আমরা প্রতিনিয়তই দেখছি। যার যার অবস্থান থেকে ন্যায়-অন্যায় বিবেচোনা করা হচ্ছে। তাই আমি মনে করি কোন কিছুর ই চুড়ান্ত সঠিক মাপকাঠি বলতে কিছুই নাই।

ঊল্ল্যেখিত গল্পের আলোচক / সমালোচকদের আলোচনা গুলি পরে বেশ ভাল লেগেছে যে তারা তাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে লেখিকাকে উৎসাহের পাশাপাশি তার ভবিষ্যৎ লেখার মান আরো উন্নত করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি বেশ খারাপ লেগেছে সমালোচদের সমালোচনার ধরন দেখে। হতে পারে বিদ্দ্বা ও জ্ঞ্যানের বহর অনেক কম বলে আমি তাদের মূল্যবান সমালোচনা ঠিক বুঝতে পারি নাই, তারপরেও আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা - সমালোনা নয়, সূযোগ মতো নিজের পান্ডিত্ত জাহির করা......... আমার অবাক লাগে এই পন্ডিত লোকগুলি দেশে থাকতে কেমন করে এত বস্তা পচা কাহিনী সর্বশ্য সিনেমা / নাটক / গল্প গুলি চলে......!!!
পাশাপাশি এও আশা করব- সমালোচক ভাইরা যেন সুন্দর কিছু গল্প লিখে আমার মতো অর্ধ শিক্ষিতদের পড়ার সুযোগ দেন যাতে আমরা বুঝতে পারি "গল্প কাকে বলে..........."।

(আমার বাংলা বানান জ্ঞ্যান এমনিতেই অনেক কম তার উপর অনেকদিন চর্চা না থাকায় নিজেও জানি না কোন বানানটা ঠীক - অতএব পাঠক আমাকে ক্ষ্মা করবেন।)

লেখিকা কে বলছি- আপনাকে অনেক ধন্যবাদ -আপনার সুন্দর লিখার জন্য।
আশা করি আপনার কাছ থেকে আমরা আরো অনেক সুন্দর লিখা ভবিষ্যতে পাব............।

অতিথি

তানবীরা এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ কষ্ট করে লেখা পড়ার জন্য আর আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- শেষটায় এসে একটা ঝাঁকি লাগলো, সত্যিকারেই। ইদানিং কি 'সফট' হয়ে যাচ্ছি নাকি বুঝতেছি না। জুবায়ের ভাইকে নিয়ে লেখা ভাবীর লেখাগুলো ঠিকঠাক পড়তেই পারতেছি না! চোখের কোণা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে কেবল।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানবীরা এর ছবি

জুবায়ের ভাবীর লেখা আসলেই কাঁদানিয়া। কিন্তু তোমার যেনো কি হয়েছে, আমি লক্ষ্য করছি।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রেনেট এর ছবি

একই খাবার যেমন সবার সমান ভালো লাগে না, তেমনি একই গল্প সবার সমান ভালো লাগবে না, এটাই স্বাভাবিক।

আমার কিন্তু গল্পটা ভালো লেগেছে হাসি

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

তানবীরা এর ছবি

আমাদের রান্টু ভাই কেমন আছেন ?

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

জি.এম.তানিম এর ছবি

গল্পটা অনেক চেনা, তবে সেটা গল্পের দোষ না... চেনা গল্পই তো বারবার নতুন করে চোখে পড়ে। পারিপার্শ্বিকের কারণেই হোক, অথবা উদাসীনতা... নোরা চরিত্রটা গল্পটাতে হয়ে উঠতে পারেনি পারফেক্ট। তবে এই ইম্পারফেকশনটাই চরিত্রটাকে করে ফেলেছে অনেক বেশি বাস্তবিক। মানে আমরা চারপাশে যেমন মানুষগুলোকে দেখি তারা কিন্তু খুব কমই সাদা আর কালোতে আলাদা। বরং ধূসরের বিভিন্ন মাত্রাই চোখে পড়ে বেশি। সেকারণেই হয়তো গল্পটি তোমার অন্য অনেক লেখার মতো শৈল্পিক হয়ে ওঠেনি, কিন্তু হয়েছে অনেক বেশি বাস্তব। (অশিক্ষিত মানুষ হিসেবে অনেক বেশি বকবক করে ফেললাম... ভালো থাইকো আপু)
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

তানবীরা এর ছবি

অশিক্ষিত মানুষের লেখায় অশিক্ষিত মানুষের মন্তব্যই ঠিকাছে। গল্পটা অবশ্যই চেনা। রোজ খবরের কাগজে এই খবরটা অত্যন্ত পরিচিত। এবং তাদের পারিপার্শ্বকিতাও পরিচিত, নয় কি ?
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

জি.এম.তানিম এর ছবি

(হে হে হে... কইলা একটা কথা... তাইলে চলো আমরা ভাইবোনে বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রে ভর্তি হই... দেঁতো হাসি )

একটা কথা ভাবছিলাম একটু আগে... সময় সময় আমরা এই গল্পের চরিত্রগুলো হয়ে যাই... কখনো নোরা, কখনো হারুন আবার কখনো হোন্ডায় বসা যুবকগুলো...
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এত আলাপ-আলোচনা দেখে গল্পটা খুব খুঁটিয়ে পড়লাম। আমার মন্দ লাগলো না। এটাকে "গল্প" মনে করলে এর হাজারটা খুঁত ধরা যায়। গল্পের গাড়ি আকাশেও উড়তে পারে। "সময়ের প্রতিবেদন" হিসেবে দেখলে কিন্তু এই সাদামাটা গল্পটাও একটা বিষণ্ণতা তৈরি করে। সফলতা সেখানেই।

তবে হ্যাঁ, কেউ আবেগ বাদ দিয়ে স্রেফ গল্প হিসেবে দেখে এটা অপছন্দ করতেই পারেন, সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার।

অতিথি লেখক এর ছবি

।।।।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

তানবীরা আপু (আমি মুক্তমনা থেকেই আপনার বিশাল পাংখা.. মানে ফ্যান )....

সাব্বির সাহেবের মনে হয় বাস্তবতার থেকে দর্শণে আগ্রহ বেশি। উনি আপনার গল্পটাকে উনার পরিচিত গৎবাঁধা প্যাটার্ণে ফেলতে না পেরে বোধকরি অসহায় বোধ করছেন।

গল্পটা ভাল লেগেছে, তবে গঠন আরেকটু সময় নিয়ে লিখলে একটু মজবুত হত.. শুরুর দিকে পরপর দুই লাইন এ ".. হবার জো নেই" থাকলে চোখে একটু লাগে।

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

গল্পের অর্ধেকটা লম্বা একটা আলোচনা লিখেছিলাম। কিন্তু বিদ্যুত বিভ্রাটে তা গেল।
আর লেখার অবস্থা নেই।

তানবীরা ও সাব্বির দুজনের কাছ থেকে আরো বেশি বেশি লেখা দেখতে চাই।

-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

শোহেইল মতাহির ভাইয়ের সমালোচনা আশা করেছিলাম ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

হিমু এর ছবি

গল্পটা মন দিয়ে পড়লাম না। তবে সাব্বিরের মন্তব্যের ধরন দেখে বিরক্ত হইলাম। মডারেটরদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, অতিথিদের কাছ থেকে ন্যূনতম পরিশীলিত ফিডব্যাক প্রত্যাশার যে অভ্যাস আমাদের গড়ে উঠেছে, সেটাকে ভরসা যোগাতে যেন তারা ত্রুটি না করেন। এই লোক তো দর্শন কপচানোর ফাঁকে ফাঁকে খিস্তিখেউড় করে গেলো কেবল।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

মূল গল্পের সমালোচনায় আর না যাই। তবে গল্প, মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য মিলিয়ে পোস্টটা বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিলো সন্দেহ নেই। অনেক কিছু শিখলাম - বিশেষ করে সাব্বির, স্নিগ্ধা আর রিয়াজ উদ্দীনের মন্তব্য থেকে।

জনাব সাব্বিরের মন্তব্যের ধরনটা, মানে ওই তাত্বিক সাহিত্য সমালোচনার দৃষ্টিকোনটা সচলায়তনে একেবারেই অনুপস্থিত। আমরা বেশির ভাগ সময়েই আমাদের আলোচনা বা সমালোচনা "ভালো লেগেছে", "ভালো লাগেনি"তে সীমাবদ্ধ রাখি, এক, দুই বা পাঁচতারা দেই, বা খুব বেশি হলে বানান ভুল ধরা, বা বর্ণনার জড়তা/সাবলীলতা এসব নিয়েই কথা বলি। আমার মনে হয় মডুদের এই লোকের মন্তব্যগুলোকে এবারের মত ছাড় দেয়ার যৌক্তিকতা এটিই। ইনি যদি ব্যক্তি আক্রমণ বাদ দিয়ে শুধু তাত্বিক সমালোচনার দিকটা সচলে নিয়ে আসতেন, আমরা সবাই বেশ লাভবানই হতাম। কিন্তু সেই লাভটুকু নিতে গিয়ে শিষ্টাচার বর্জিত আচরণ আমরা মেনে নেই না, হৃদ্যতাপূর্ণ মিথস্ক্রিয়াকে আমরা বিসর্জন দেই না। যে কোন মূল্যে তাত্বিক সমালোচনা উপস্থিত থাকতেই হবে, এমনটা বিশ্বাস করি না। যেটা বিশ্বাস করি তা হলো, সংশোধনের দরজা খোলা থাকলো, দ্বিতীয় সুযোগ তো যে কেউই পেতে পারেন।

এই পোস্ট থেকে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো দময়ন্তীর দেয়া "টেমপ্লেটকাকু বিশেষ" - এই অসাধারণ উপাধিটা। আমি মডু হলে এটার একটা ইমো বানিয়ে রাখতাম।

ভ্রম এর ছবি

তানবীরা আপু, গল্পটা পড়ে ভালো লাগোলো।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

গল্পটা ভালো লাগলো আমারো।
সব গল্প সবার ভালো লাগবে, এমন কোনো কথা নেই।
সাব্বির সাহেবের সমালোচনার ধরণ খুবই বাজে লেগেছে।

...........................

কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অর্পিতা [অতিথি] এর ছবি

সাব্বিরের কমেন্টের পরে গল্পটার ফোকাস অন্যদিকে ঘুরে গেলো মন খারাপ

গল্পটা ভালো লাগলোনা। প্রথমেই নোরাকে ফালতু আর সস্তা মনে হইসে। জামাইয়ের পয়সায় খেয়েপরেঘুরেফিরে জামাইয়ের এতো খুঁত ধরার কী আছে? জামাইরে পছন্দ না করে কেবল জামাইয়ের পয়সা দেখে যখন তারে বিয়া করসে (পড়ুন, বিক্রি করসে নিজেকে), তখন জামাই আর তার বাপ মায়ের পছন্দমতোই চলা তো ভদ্রলোকের মেয়ের কাজ। গাছেরো খাইবা, তলারও কুরাবা, এইটা তো ভাই চরম হিপোক্রেসি।

এবিউজ যে কোনো মেয়ের জীবনে খুব বড়ো একটা বাজে ঘটনা। অন্য দুর্ঘটনার থেকে ভিন্ন কারণ এইটা কেবল মেয়ে হওয়ার জন্যই তার জীবনে ঘটে। ভয়ঙ্কর অপমান।

কিন্তু তারপরেও এইটা একটা দুর্ঘটনা। কোনো মানুষ নিশ্চয়ই কেবল তার শরীর না, যে সেইটা ধরে সারা জীবন দুক্ষু করবে।

আর যেই মেয়ে জামাকাপড়ে চিন্তাভাবনায় এতো আধুনিক, কেবল টাকা পয়সা উন্নতি দেখে অপছন্দের লোককে বিয়া করার মতো স্পোর্টসম্যান, সে মলেস্ট হওয়ার ঘটনা ধরে নিয়া এভাবে বসে থাকবে, ব্যাপারটা সেলফকন্ট্রাডিক্টরি।

তার মানে কী এই মেয়ের চোখে সে নিজে শুধুই একটা শরীর? জামাইয়ের সাথে ঘরে সুন্দর অন্তর্বাস পরে গল্প থাকবে, বাইরে সুন্দর জামা পরে ঘুরে বেড়াবে, আর জামাই বাদে অন্য কেউ ইভেন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার শরীরের উপরে নির্যাতন করলে "সে নিজে" অশুচি হয়ে যাবে?

ভালো কথা, এই গল্পে যদি এইটা দেখানোর চেষ্টা হয়ে থাকে যে সমাজের চাপে মানুষকে অনেক কিছু মেনে নিতে হয় (যেইটা কোন একটা কমেন্টে দেখলাম, গল্প পড়ে বুঝি নাই), তাইলেও এই গল্পের প্রগতিশীলা আধুনিকা নোরা কেন সেইটা মেনে নিবে সেইটা আমি বুঝলাম না।

ওকে তোমার জামাইয়ের এটিটিউড পসন্দ হয়নাই, তুমি সমাজের চাপে কাউরে কিছু কইতে পারলানা, ফাইন। তুমি খুব বেচারি। তারপরে? তারপরে তুমি কী করলা? তুমি যদি এই সোসাইটিতে তোমার দুর্বল অবস্থান বুঝতে পারো, তখন তুমি নিজেকে সবল করার জন্য কী করসো? চাকরি খুঁজসো?

ও না, তুমি তো পয়সাওয়ালা জামাইটিকে বগলদাবা করে দেশ বিদেশ ঘুরতে যাবা। তুমি তো কেবল আম্মুর সাথে ঘুরো, শপিং করো, আর পার্টি করো, তাই জানোনা, ছাত্রী ভালো হইলে ঢাকা শহরে করার মতো অনেক পার্ট টাইম কাজ আছে, সায়েন্স হইলে স্টুডেন্ট পড়াবে, আর্টস হইলে সোস্যাল ওয়ার্ক, কমার্স হইলে অনেক পার্ট টাইম জব। এই মেয়ে তো দেখি বাসায় বইসা সারাদিন তাশপাশা খেলে। নাকি সুন্দরী আকর্ষনীয়া হাউজোয়াইফ হইলে জামাইকে সার্ভিস দেওয়াটাই চাকরি? খোদা সুন্দর চেহারা সুন্দর শরীর দিয়া দুনিয়াতে পাঠাইসে, লেখাপড়া চাকরি বাকরি করার কী দর্কার? জামাইয়ের পয়সায় চলবো ফিরবো আর জামাইয়ের দোষ ধর্বো।

আমার মতে এইরকম গল্প মেয়েদের জন্য ডিসট্র্যাক্টিং এবং ক্ষতিকারক। কারণ এতে নিজের রোল সম্পর্কে মারাত্মক ভুল ধারণার তৈরি হয়।

স্নিগ্ধাদি'র আলোচনা বরাবরের মতো দারুণ ভালো লাগলো।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

গল্পটি পড়লাম। ভাবলাম দু'কলম লিখি। (গল্প লেখা যখন হচ্ছেনা, তখন গল্পের সমালোচনাই লিখি। এটি সোজা কাজ।)
মূল কাহিনী হচ্ছে এই যে নোরার সাথে তার স্বামী হারুনের মানসিকতায় অমিল রয়েছে। নোরা আধুনিক, হারুন সেকেলে। ব্যাপরটা এমন নয় যে হারুণ নোরাকে ভালবাসেনা বা পছন্দ করেনা, কিন্তু খোলামেলা ভাবে হারুন তার স্ত্রীর সাথে চলতে পারছে না। এরই মাঝে একদিন হারুনের সামনে থেকে নোরাকে কয়েকজনে এসে ধরে নিয়ে গেল। হারুন কিছুই করলো না (বা করতে পারলো না)। এখন নোরা নিজেক অশুচি ভাবছে এবং কি করবে তা সে জানে না। যদিও হারুন এবং পরিবারের অন্যেরা নোরাকে বারবার সেই দুর্ঘটনার কথা ভুলে যেতে বলছে।
নোরার এই মনোভাব কি যৌক্তিক? নিশ্চয়ই। রেপড হওয়া একটি মেয়ে সারাটি জীবন নিজেকে অশুচি ভাবতে পারে, কাছের মানুষের হাজার কথাতেও সেই ভাবনা দূর হবেনা। আমার কাছে বরং হারুনের ভাবনাটিকে ভালো লেগেছে কিছুটা। সাধারণতঃ এই জাতীয় ঘটনার পর মেয়েটির স্বামীও একধরণের দূরত্ব আরোপ করে ফেলে। যখনই সে তার স্ত্রীকে দেখে তখন সেও মনে করতে করতে পারে যে "আমার স্ত্রী আর শুচি নেই"। সামাজিক লোকলজ্জায় পড়েও অনেক স্বামী তার স্ত্রীকে এই দুঃসময়ে ত্যাগও করে বসে। সেখানে কিন্তু সেকেলে মনোবৃত্তির হারুন নোরাকে নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছে, তাকে বারবার ফিরিয়ে আনতে চাইছে স্বাভাবিক জীবনে। আমি ভেবেছিলাম যে হারুণের এই মনোভাবের কারণে নোরা হারুণের একটি নতুন রূপ দেখতে পাবে। সে বুঝতে পারবে যে অনেক "আধুনিক" স্বামীর চেয়ে হারুণ আরো বেশী প্রেমময়।
গল্পটি আমার কাছে অসমাপ্ত মনে হয়েছে। কি হলো তারপর? নোরা কেন বলছে পেশেন্স পেশেন্স? কিসের জন্য সে ধৈর্য্য ধরছে?সে কি তাহলে আশা করছে যে সময়ের সাথে নোরা নিজেকে শুচি ভাবতে শুরু করবে, নাকি সে হারুনকে ফেলে চলে যাবে অন্য জীবনে? শেষে এসে আমি কিছুটা থমকে যাই তাই। আরো কিছুটা লিখলে হয়তো ভালো হোত। আর মূল গল্পের (মানে রেপড হওয়ার ঘটনাটি) সাথে হারুনের সেকেলে মনোবৃত্তির কি সম্পর্ক? নোরাকে ফেলে হারুনের চলে যাওয়াটি কি হারুনের মনোবৃত্তির পরিচায়ক? মনে হয় তা নয়। তাহলে হারুনের সেকেলে মনোবৃত্তিটির ভূমিকাটি কি এই কাহিনীতে?
অনেক কিছু লিখে ফেললাম। আশাকরি মনে কষ্ট দেইনি। আমি নিজেও এতবড় কোন কাপ্তান নই যে আমার কথা সিরিয়াসলি নিতে হবে। ভবিষ্যতে আরো লেখা আসুক, তা নিয়ে আলোচনা হোক, সুস্থ সমালোচনা হোক।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

এনকিদু এর ছবি

তাতাপু, এইবার সাব্বির কে নিয়া একটা গল্প লিখেন ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

তানবীরা এর ছবি

চোখ টিপি শয়তানী হাসি শয়তানী হাসি চিন্তিত
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

শাফিন হক [অতিথি] এর ছবি

[ব্লগার হিসেবে এটা আমার প্রথম লেখা।সাব্বির ভাইয়ের মত প্রতিক্রিয়া পাওয়ার আশংকায় ভয়ে ভয়ে এটা লিখে ফেললাম।গল্পের বুনন ও সার্থকতা নিয়ে কথা বলার চেয়ে এর চরিত্রগুলো বিশ্লেষণ করতেই আমার ভালো লেগেছে।

গল্পের নোরা গতানুগতিক একজন।চলনে-বলনে মডার্ন কিন্তু চিন্তাভাবনায় প্রগতির ছোয়া নেই।“ছেলেরা একটু অগোছালো-হাকডাকওয়ালা হবে;সিগারেট না খেলে কোন ছেলেকে ছেলে মনে হয় না।"-এমন যার ভাবনা তাকে খুব অগ্রসর চিন্তার মানুষ বলে ভাবা যায় না।তাসের প্যাকেটে বিকিনি পরা মেয়ের ছবি নিয়ে নোরার কোন অস্বস্তি নেই;ভিক্টোরিয়া সিক্রেট আর রাফ লওরেনের নাইটি পরে নোরা।নোরার এমন আচরণ সামাজিক ও পারিবারিক আবহ থেকে উদ্ভুত,এর সাথে প্রগতির কোন যোগসূত্র নেই।

“এত মধ্যবিত্ত মানসিকতায় নোরা মানিয়ে নিতে পারবে না।“-বাপিকে নোরার একথা বার বার বলা থেকেই বুঝা যায়,নোরা স্রেফ একজন উচ্চবিত্ত মানসিকতাসম্পন্ন নারী,নোরার আচরনের উৎস নারীবাদ নয়,আদর্শবাদ নয়,প্রগতি নয়।

অন্যদিকে হারুন বুর্জোয়া সমাজব্যবস্থার টিপিক্যাল প্রোডাক্ট।নোরার লাইফ স্টাইলে সে অস্বস্তিবোধ করে,একইভাবে হারুনের নিয়মতান্ত্রিক-হিসেবি জীবনযাপন নোরার কাছে অসহ্য।আমাদের এই সংকীর্ণ পুরুষশাসিত সমাজ়ে এমন পরিস্থিতিতে নারীকেই আপোষ করতে হয়,কিন্তু গল্পে নোরা-হারুন দু’জনেই আপোষকামী।আর নোরাকে দেখতে এসে হারুনের মা যে আচরন করেছে,অভিজাত নোরা ও তার অভিজাত পরিবার যদি এর প্রতিবাদ না করে তাহলে ‘নিজের কথা মিন মিনিয়ে বলা’ হারুনের কাছে এর প্রতিবাদ আশা করা ভুল।

“ ক্লাশের পরে করিডোরে, লাইব্রেরিতে আর‌ ক্যান্টিনে জম্পেশ আড্ডা দিয়ে তারপর বাড়ি ফেরে। অনেক সময় ফেরে না, মায়ের কাছে চলে যায়। মায়ের সাথে শপিং করে, রাতে বাইরে খেয়ে মা তাকে ড্রপ করে দিয়ে যান।...... নোরা আর মা দুজনেই ভীষণ ভালো বন্ধু হয়ে গেলো। একসাথে ঘোরা, শপিং, পার্টি।হারুন অবশ্য এসব নিয়ে তাকে তেমন কিছু বলে না আর শ্বশুর-শাশুড়িকে তো তেমন পাত্তাই দেয় না নোরা।”-গল্পের প্রায় পুরোটা জুড়েই আমরা নোরার স্বাধীনতার ব্যাপারে হারুনের ইতিবাচক(অথবা নির্বিরোধী) মনোভাবের পরিচয় পাই।

একজন দুর্বল চিত্তের মানুষ,অস্ত্রের মুখে যে কিনা প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলেছে,সে যে কোন উপায়ে জীবন বাঁচাতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু নোরা চেয়েছে তার সম্ভ্রম রক্ষার জন্য হারুন জীবন বাজি রাখুক।এতে হয়তোবা নোরার সম্ভ্রম রক্ষা হত এই বাজিতে হারুনের প্রাণ হারানোর সম্ভাবনা ছিল প্রায় শতভাগ।নোরার সতীত্ব রক্ষার এই বাসনাকে আমি শ্রদ্ধা জানাই কিন্তু একজনের সতীত্ব ও অন্যজনের প্রাণ-এই দুইয়ের মাঝে যদি একটিকে বিসর্জন দিতেই হয় তাহলে প্রথমটিকে বিসর্জন দেয়াই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে।আর নোরা যদি জীবনের বিনিময়ে সতীত্ব রক্ষা করতে চাইত,তাহলে মোটর-সাইকেলে তুলে নেয়ার পরেও সে তা করতে পারত।

কাপুরুষতা,পৌরুষত্ব এসব শব্দাবলী আমার কাছে সবসময়ই নারীর জন্য অবমাননাকর মনে হয়েছে।তাই ঘটনার পরে হারুনের প্রতি নোরার অব্যক্ত ঘৃণাকে আমি সমর্থন করতে পারিনি।

**তানবীরা আপু’র গল্পে বাস্তবতা আছে বলেই হারুন কোন ছবির নায়কের মত অস্ত্রের মুখে জীবন বাজি রাখতে পারে নি।নোরা যদি তার বিরুদ্ধে করা ঘৃণ্য অপরাধের বিচার চাইত তাহলে বোধহয় হারুন অতি সাধারন হয়েও নোরার পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেত,কিন্তু তানবীরা আপু হারুনকে সে সুযোগ দেন নি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।