সন্ধ্যার চোখে চেয়ে দেখি জেগে যায় সন্ধ্যামণি।
মানুষের এতো ভিড় থাকে! এতোখানি ভিড় নিয়ে এতোসব পথ হাঁটে, বেঁচে থাকে একজন মানুষ!
বাক্যের ভিড়ে ভিড়ে বেড়ে যায় আমাদের সারাংশ জীবন! আমরা কত কথা বলে যাই, কতভাবে বুঝে নিতে চাই একে অপরের নীরবতা যতো; স্তব্ধতার কাছে এলে পরে জানা যায় নীরবতা পাঠে কতখানি নীরবতা ছিলো;
পাখীরা মাতাল হয় ভোরে, মানুষেরা রাতে; রাতের আঁধারে দেখেছি মানুষেরা গুম হয়ে বসে থাকে কোথায় সে নিজেও জানেনা;
মানুষকে অবিশ্বাস করা ছিলো জীবনের প্রথম সর্বোত পাপ; পাপ সব ভিন্ন ভিন্ন মানুষেরা নিয়ে যায় ভাগ করে। মানুষেরা নিয়ে যায় আমাদের যতো যা কিছু নিতে পারে। মানুষেরা দিতে শিখেছে বলে নিয়ে গেছে অপাপবিদ্ধ সব চাওয়া;
সবাই ছিলো। নির্বাসিত জনপদে একা বসে আছি; সবার তাড়া থাকে বলে আমার কোনদিন ছিলোনা তাড়া; আমি থেকে যাই। কেউ থাকেনা বলে আমি শুধু থেকে গেছি চলে যাওয়া পথ!
এবং চলে গেলো শেষ রাতের ট্রেনটিও, নিভে গেলো শেষ বাতি। জনান্তিক, মৌনতার ভেতর-বাহির স্টেশনে অম্লান অবয়বে রাত, আধেকটা জীবন কাটানোর পরে বুঝি জেনে গেলে - তোমার বাড়ী ফেরার কথা ছিলো -
ভাব এর বিভিন্ন অনুবাদে তুমি আমি, আমরা, কত সহজেই না জেনে যাই - আমাদের নীরবতার কাছে আমরা কি ভীষণ চেনা!
শুধু ফুল নয়, ভালোবাসি ফুলের জীবন। একটি শিশিরের ভিড়ে একদিন দাঁড়িয়ে দেখেছি ফুলের পরিস্ফুটনজনিত ঋদ্ধ কাঁপুনি লেগে একটি এলোমেলো বাতাস কিভাবে যেন স্থির হয়ে গেলো;
পৃথিবীর সব পথের শুরুতেই তার শেষ মিশে থাকে, জানা হয়ে যায়; সংজ্ঞায়িত জীবনের বিভক্ত পথ ঘুরে শেষবার জেনে নিলাম, প্রথম বেছে নেয়া পথ আজো তবু থেকে গেছে দ্বিধাহীন।
অসতর্ক নই, ঠেকে শিখি। সতর্ক সবার কাছে ঠেকে ঠেকে শিখে ফেলা -গোডাউন গোডাউনে শুধু ভ্যাপসা অন্ধকার!
মনে করে দেখো, আমরা কি অসাধারণ কাটিয়ে এসেছি আমাদের মুহূর্তগুলো! মুহূর্ত, তোমাকে প্রতিদিন দেখি ঘেমেনেয়ে একাকার।
মানুষের প্রলম্বিত ছায়া পড়ে, দেখেছি। মানুষের ছায়া তার চতুঃপার্শ্ব ভিড় করে থাকে বলে জেনেছি মানুষ চোখের আড়ালে অনায়াসে প্রাত্যহিক। কাছাকাছি দূরত্বে এসে জানা গেলো, আমাদের চোখ তবু অনুক্ত থেকে গেছে কত!
যারা চুপ করে বসে থাকে তাদের ভাষা বুঝেছি বেশি। দেখেছি মুখর মানুষের ভিড়ে মুখরতা চলে যায় একদিন। নৈঃশব্দ্যের কাছাকাছি বসে থাকি, সামনে বিভক্ত পথ - একপাশে পৃথিবী ব্যাকুল, আর পাশে ব্যাকুলতা প্রফুল্ল স্থির; আরো দূরে অতিক্রান্ত যাতায়াত -
আপোষ করিনা, বড়োজোর মেনে নেই কিছুদিন; কিছুদিন জানা হয় আত্মতুষ্টি কোথা হতে আসে!
সমরুপ বসবাসেও দেখেছি সমানুভূতির প্রান্তিক একটা অভাব আছে। সমানভাবে অনুভূত হতে পারি কই! আমরা কতদূর অনুবাদ করে নিতে পারি আমাদের সমাসীন অনুভূতি সব!
যেখানেই থাকিনা কেন শিশু দেখলেই টের পাই শৈশবে ফিরে গেছি; শিশুদের ভেতর দেখেছি জটিলতা থাকেনা, আর আমাদের থাকেনা বাস্তবতা।
তন্দ্রাচ্ছন্ন রাতে নিজস্ব পৃথিবী জেগে থাকে সারারাত, শুধু শিমুল তুলোরা ঘুমিয়ে থাকে!
“জানিস, কালরাতে স্বপ্ন দেখলাম। হ্যাঁ হ্যাঁ, একটা স্বপ্ন! দেখলাম আকাশটা হঠাৎ ভাঁজ খুলে দিচ্ছে একের পর এক - একের পর এক বৃত্তাবদ্ধতা পেছনে ফেলে অযুত দূরের এক নিযুত আলো দেখে আমার মনটা বিমুগ্ধ বিস্ময়ে ভরে উঠলো। ঘুম ভেঙে বালিশের পাশে দেখি একটি বিমুগ্ধ জীবন সবটুকু বিস্ময় নিয়ে প্রতিমূর্ত হয়ে আছে!”
বাহ, চমৎকার!
সব্জীফুলে সবুজ সবুজ সবজীগুলো পথের ধারে
বিছিয়ে থাকা ক্ষেতের উপর উঠলো হেসে;
ভোরের আলোয় তাকিয়ে দেখি
শিশিরগুলো ঝিকিয়ে ওঠে রোদ পড়ে তাই;
রোদ পড়ে তাই ক্ষেত্রফলে, আলে আলে জাগছে ছায়া;
ছায়ার ভিড়ে তাকিয়ে দেখি পাতাকপির পাতায় পাতায়
স্বর্ণসবুজ একটা রঙে আবেশ ঘনায় চোখের ভেতর;
শীত এসেছে, প্রিয় আলোয়ান জড়ানো ঋতু,
এরপর বিরল বসন্ত বুঝিবা!
ঢাকা
১১.১১.১১
মন্তব্য
মুগ্ধকর, কবি!!!
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ কবি মৃত্যুময় শুভেচ্ছা
ভাইজান মুগ্ধতা এবং একটুকরো প্রতিদান রেখে গেলাম :
হঠাৎ নিজের চিলতে আলপথ মেঘের আমদানি করে। ঘ্যানর ঘ্যানর
জোছনা
কখনো কেটে যায় পরিবার ভালোবাসা।দুপুরের বৃষ্টির ঘ্রাণ প্রমিকা আমার
আনমনা
কেউ দিয়ে যায়নি পথ বর্তিকার নিয়ম বিলাশ। নিলামে উঠি প্রতিদিন
কাতর
পথ নেই নিশায় বারেবারে দূরে বহু দূরে অচিন রাঙা মেঘ আমি অযান্ত্রিক
পাথর
অনেক শুভেচ্ছা ... জীবনের পরিবর্ধিত পথে আশা করি ভালো সময় কাটাচ্ছেন।
মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম।
আপনার দৃশ্যকল্পসদৃশ বর্ণনা চমৎকার!
এখানে শিশির কি 'একটি', না কি ভিড়টা? আমি ধরে নিয়েছি ভিড়কে। আর 'দাঁড়িয়ে'টা ঠিক করে নেবেন।
অনেক মুগ্ধতা আবারও।
একটি শিশির - একটি শিশিরের একজীবনের সম্পন্ন ভিড় এর কথা বলতে চেয়েছি আমি। বানান ঠিক করেছি। ‘অতিথি অন্যকেউ’ আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ
facebook
প্রিয় উড়ন্ত ঘুড়ির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা
পড়ে এবং মন্তব্য করে উৎসাহ দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ রু
পড়তে ভালো লেগেছে।
এটি শুধু নীরবতা পাঠ নয় তারচেয়ে বেশী কিছু। তোমার কাব্যভাষায় আত্মজিজ্ঞাসার স্বরটি ধীরে ধীরে বেগবান হচ্ছে।
'হাটে' ও 'হাঁটে' এ দুটিতে যে বিস্তর ব্যবধান। তেমনি 'বেচে' ও 'বেঁচে'-তে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বানান ঠিক করে দিয়েছি রোমেল ভাই। এই দূর্বলতাটা থেকেই যাচ্ছে প্রতিটি পোস্টে, একদম শুরু থেকেই।
অনেক ধন্যবাদ রোমেল ভাই, শুভেচ্ছা রইলো
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভাই নীড়সন্ধানী, কৃতজ্ঞতা জানবেন
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ত্রিমাত্রিক কবি, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার উপন্যাসের চলমানতা ভালো লাগছে, অনেক শুভেচ্ছা রইলো
"আপোষ করিনা,বড়জোর মেনে নেই কিছুদিন"-বিমুগ্ধ!
কি অকপটে মনের কথাটাই সুন্দর বলে দিলেন!
উৎসাহিত হলাম; আপনাকে ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইলো
সুন্দর লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে .... ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা
বসন্ত বিরল কেন কবি?
-------------if winter comes, can spring be far behind?
তবে নীরবতা পাঠ ভালো হয়েছে।
------------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি কেবল...
বসন্ত কখনোই বিরল নয়, তবে ‘বিরল বসন্ত’ মনে হয় অবিরল হয়না! আপনাকে ধন্যবাদ
কিছু লাইন ভীষণ ভালো লাগলো তানিম ভাইয়া।
অশেষ কৃতজ্ঞতা বন্দনা ....
নতুন মন্তব্য করুন