১৯৮৯ সাল। শিবির জাবি দখল করে ফেললে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়, শিবিরের হাতে নির্মমভাবে খুন হন ইতিহাস বিভাগের ছাত্র হাবিবুর রহমান কবির, জাবি’তে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। তারপর ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তাদের হুটহাট বিভিন্ন হলে পাওয়া যেত, ১৯৯৪ সালে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে মওলানা ভাসানী হলে ছাত্র শিবিরের এক ‘সাথী’ ধরা পড়ে, তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে জানা যায় কিছুদিন আগে তার বাইপাস হার্ট সার্জারি হয়েছিলো, সেই ছেলে মারা যায় সাভারের এক ক্লিনিকে; তথ্য সংগ্রহের কাজটি করা হয়েছিলো ছাত্রদল নেতা শওকত কবির দীপু’র রুমে তার অবর্তমানে।
১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছাত্রদলের লোকাল এবং এন্টি-লোকাল গ্রুপের দ্বন্দ্ব চরমে পোঁছায়, ১৫ নভেম্বর ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে চলে যাবার সময় রাতের বেলা জাবি সংলগ্ন বিপিএটিসির সামনে শওকত কবির দীপুকে পাওয়া যায় দু’হাতের কব্জি এবং পায়ের রগ কাটা অবস্থায় , মাথার সুনির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে চাপাতির কোপ; তার সাথে আহত হন ক্যাম্পাস থেকে চলে যেয়ে হুট করে আবার এই ঘটনার কিছুদিন আগে ফিরে আসা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাবু, ওরফে নেভি বাবু। শওকত কবির দীপু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান ২৩শে নভেম্বর ১৯৯৪ সালে। জাবি থেকে ছাত্রদলের লোকাল গ্রুপ সম্পূর্ণ বিতাড়িত হয় কিন্তু ডিসেম্বরের ভেতর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যায়, ছাত্রদলের সাথে সাথে ছাত্রলীগের ভেতর দুটি গ্রুপ তৈরি হয়। ১৯৯৫ সালে ভর্তি পরীক্ষার দিন প্রকাশ্যে গোলাগুলির মধ্য দিয়ে জাবি থেকে বিতাড়িত হয় ছাত্রদলের আল-বেরুনী গ্রুপ যার মূলত: নেতৃত্বে ছিলো নেভি বাবু, সাথে ছাত্রলীগের তাদের গ্রুপের সমর্থনকারী কিছু নেতাও ক্যাম্পাস থেকে চলে যান। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড প্রায় পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ে... ১৬ বছর পর জানা যায় নেভি বাবু’র ফিরে আসা, দীপু’র হত্যাকাণ্ড (ভাসানী হলে শিবির হত্যার প্রতিশোধ), কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়াই ছাত্রদলের এন্টি-লোকাল গ্রুপে বিভক্তি, লড়াই -- এই সবকিছু শিবিরের সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটেছে...
১৯৯৫ সালের এক সকাল, জাবি ক্যাম্পাসে তৎকালীন ছাত্রদলের দখলদার গ্রুপের সমস্ত অস্ত্র জমা দুইটি হলের দুই রুমে। আলবেরুনী হল, এক ছাত্রদল নেতা’র রুমে দরোজায় করাঘাত, নেতা দরোজা খুললেন, হলের নিরীহতম ছাত্রদের একজনকে সেখানে দেখতে পেয়ে জানতে চাইলেন, ‘কি ব্যাপার কাদের?’ কাদের তার মুখের উপর রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করার পর হতচকিত নেতা প্রায় অচেতন অবস্থায় টের পান যেখানে অস্ত্র লুকোনো ছিলো সেখান থেকে কাদের সব অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছে। কামালউদ্দিন হলেও একই ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের সমস্ত অস্ত্র গণিমতের মাল হিসেবে দখলে আনার পর শিবির জানান দেয়-যে তারা ক্যাম্পাস দখল করেছে, একে একে দখল হয় সব হল, ছাত্রী হলগুলো বাদ দিয়ে। সকাল ১১ টা, সব দলের সব নেতা হল থেকে বিতাড়িত, সব হল শিবিরের দখলে...
আমি আর আমার বন্ধু রিকশা করে যাচ্ছি প্রান্তিক গেটে। কবির সরণীর সামনে দেখি কামালউদ্দীন হলের এক ছাত্রদল নেতা খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পড়ে হাতে একটা কাঁটাচামচ নিয়ে বিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, আমাদের দেখে বললেন শিবির ক্যাম্পাস দখল করেছে, কিছুদূর যেয়ে দেখি আরেক ছাত্রদল নেতা হাফ প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে দাঁড়ানো, তিনিও একই কথা বললেন, ট্রান্সপোর্টে আসতেই বাসের মামা’রা সবাই যখন বললেন একই ঘটনা আমরা রিকশা ঘুরালাম সমাজবিজ্ঞান অনুষদের দিকে...
খবর জানাজানি হতেই মিছিল বেরুলো সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে, সেই মিছিল কবির সরণীর কাছে আসতেই শিবির এর আক্রমণ, কামালউদ্দীন হল থেকে দৌড়ে এলো শিবিরের একটা দল, এক তাল-লয়-ছন্দ, সবার হাতে অস্ত্র। আমরা স্লোগান দেই, তারা দেয় হুমকি, এক পর্যায়ে মাথার উপর দিয়ে গুলি। আমি স্তম্ভিত হয়ে দেখি আমার হলের চরমতম নিরীহ একটা ছেলেকে হাঁটু গেঁড়ে বসে গুলি করতে উদ্যত, চোখে চোখ পড়তেই শীতল হাসি! বিস্ময় বাধ মানেনা। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আমাদের সম্বল শুধুমাত্র ইট আর পাথর; এভাবে চলতে চলতে দুপুর, বিকেল। সব হল শিবির এর দখলে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা না পারছে বেরুতে না পারছে ঢুকতে। একসময় আমরা সবাই কবির সরণী থেকে রেজিস্টার বিল্ডিং, সেখান থেকে ট্রান্সপোর্ট, ট্রান্সপোর্ট থেকে চৌরঙ্গী, চৌরঙ্গী থেকে প্রান্তিক এই করে বেড়াতে লাগলাম। খুব বেশি স্মৃতি মনে নেই, সারাদিন কেটেছে শুধু ঘোরে। এর মাঝে একবার প্রান্তিক থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়কে উঠে গেলাম আমরা; আমার এখনও মনে আছে ছাত্র ইউনিয়নের আহসান ভাই এর স্লোগান এর কথা। আহা! এই মানুষটার স্লোগান মানেই ধমনীর সব রক্ত পরম! আমি আমার জীবনের প্রথম স্লোগান দিয়েছিলাম সেদিন, ‘আমাদের ধমনীতে লাখো শহীদের রক্ত, এই রক্ত কোনদিনও বৃথা যেতে দিবোনা...’। এই এখনও গায়ের রোম দাঁড়িয়ে গেলো!
আসাদউল্লাহ আসাদ ছিলেন ছাত্রদলের জাবি শাখা সভাপতি (প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক), এক সময় তিনি চলে এলেন ট্রান্সপোর্টে, সাথে ছাত্রদলের আরেক নেতা হায়দার ভাই; আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম আমার বন্ধুর ছোট ভাই সুমন এর সাথে (পরবর্তীতে ছাত্রলীগ নেতা, পাপাই নামে পরিচিত); হুট করে জাকসু বিল্ডিং এর ভেতর দিয়ে শিবির একটা মিছিল বেরিয়ে আসতেই আসাদ ভাই আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি যা করি তাই করো সবাই’, তিনি উল্টো তাদের দিকে দৌড় দিলেন, ডান হাত ঘুরিয়ে কোমরের পেছনে রাখা, ভাবখানা এমন যে সেখানে অস্ত্র লুকোনো, আমরাও তাই করলাম। শিবির দৌড়ুচ্ছে, আমরাও তাদের দিকে যাচ্ছি, একসময় শিবির ঘুরে উল্টোদিকে দৌড় দিলো, এই একটা ঘটনায় সাহস বেড়ে গেলো আমাদের। আসাদউল্লাহ আসাদ এর শিবির বিরোধী লড়াই এর অবদান জাবি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, এই প্রবল শিবির বিরোধিতা’র কারণেই খুব সম্ভবত তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়! পরবর্তীতে ধীরে ধীরে জাবি ছাত্রদলে জামাত সমর্থনকারীদের প্রাধান্য তৈরি হয়।
কোথা থেকে যেন একটা কাটা বন্দুক জোগাড় হলো কিন্তু কোন গুলি নেই। ছাত্রদলের বিতাড়িত গ্রুপের কিছু গুলি রাখা ছিলো এক ছাত্রী হলে, সেগুলো আনা হলো কিন্তু আবার ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হলো, সিদ্ধান্ত নেয়া হলো রক্তপাতে কোন উস্কানি দেয়া হবেনা। ছাত্র দল, ছাত্র লীগ, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন আর জাসদ ছাত্রলীগের (৭ জন ছিলেন, আমরা ডাকাতম কমান্ডার কারণ তারা মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাবিতে) যারা যারা ক্যাম্পাসে ছিলেন তারা সবাই একসাথে, কোন দল নেই, শুধু আছে সম্মিলিত প্রতিরোধ।
একটা ঘটনা আমার এখনো মনে আছে। বিকেলের পর, আসাদ ভাই, হায়দার ভাই, ছাত্র ফ্রন্ট নেত্রী সেবা আপা, পাপাই আর আমি চৌরঙ্গী’তে হুট করে আলাদা হয়ে গেলাম আর সবার কাছ থেকে। হাঁটছি, হঠাৎ আল-বেরুনী হল থেকে শিবিরের একটা মিছিল ধেয়ে এলো টের পাবার আগেই, তাদের তিনজনের হাতে বিশাল রাম’দা, বাকিদের হাতে অস্ত্র। হায়দার ভাই এর হাতে সেই গুলি বিহীন বন্দুক, তিনি ঘুরে সেটা তাক করেন আর মিছিল থেকে তারা হাসে। একটা সময় সেই রামদা’র কাছাকাছি দূরত্বে থেকে (পরবর্তী পয়েন্ট ৭ দেখুন) আমরা দৌড়াতে দৌড়াতে শিক্ষকদের ডুপ্লেক্স বিল্ডিংগুলোর সামনে দিয়ে যাবার সময় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর আবদুল হাই (বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতা, কিছুদিন আগে মারা গেছেন) আমাদের তাঁর বাসার ভেতর ঢুকিয়ে নিলেন। তার বড়ছেলে আমাদের বন্ধু, আগেও বাসায় গেছি। প্রচুর ঝাড়ি খেলাম সবাই তারপর একসময় আবার বেরিয়ে প্রান্তিক গেট!
ভিসি ছিলেন প্রফেসর আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, তার নামে শ্রদ্ধা! তিনিসহ আরও সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের বৈঠক ছিলো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে, সকাল থেকেই তিনি ছিলেন ঢাকা। তিনি খবর পেয়ে সরাসরি যোগাযোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নান চৌধুরীর সাথে, মান্নান চৌধুরীর কাছ থেকে তিনি কোন সাড়া পেলেন-না, সময় চলে যাচ্ছে। তখন তিনি যে কাজটি করলেন তার কোন তুলনা হয়না। তিনি তার নিজস্ব মাধ্যমে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী’র সাথে কথা বললেন, তাকে রাজি করালেন পুলিশ পাঠানোর জন্য।
ক্যাম্পাসে পুলিশ এসে যখন সব হল তল্লাশি করা শুরু করলো ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা। একের পর এক হল পুনরুদ্ধার করা হলো। শুরু হলো হলে হলে তল্লাশি। সেইসব তল্লাশি’র মাধ্যমে প্রাপ্ত সব তথ্য পড়ে শোনানো শুরু হলো চৌরঙ্গী মোড়ে মানুষের মেলায়। শুরু হলো গান, চোখের জল আর বেদম বুক মোড়ানো এক চাপা আবেগে ভেসে আমাদের রাত নেমে এলেও আমরা সেখানেই বসে থাকলাম। জানতে থাকলাম বিভিন্ন সংবাদ, সেগুলোর কিছু দিলাম,
১) সেদিন সকালে প্রতিটি হলের গার্ড হিসেবে দায়িত্বে ছিলো জামাত এর সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত লোকজন
২) কেন্দ্রীয় টেলিফোন এক্সচেঞ্জ এর দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনি ছিলেন জামাতের
৩) জামাতের শিক্ষক মীর আকরাম, বাকি আর কাওসার ছিলো সার্বক্ষণিক তদারকিতে
৪) এই হামলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বহুদিন ধরে এবং এরই ধারাবাহিকতায় জবি থেকে শিবিরের ৬ জনকে কমান্ডো প্রশিক্ষণ-ও দিয়ে আনা হয়েছিলো পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে (শিবিরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়)। এই ৭ জনের মধ্যে ৫ জন স্টেনগান সহ ধরা পড়েছিলো।
৫) জানা গেলো জাবি সাংবাদিক সমিতি’র প্রায় সবাই শিবির! এর বাইরে ‘ভয়েস অব আমেরিকা ফ্যান ক্লাব’, ‘শরীর চর্চা সমিতি’, ‘কারাতে এসোসিয়েশন’ ইত্যাদি ব্যানারের আড়ালে এরা নিয়মিত একত্রিত হতো।
৬) এর কিছুদিন আগে র্যাগের (বানানটা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে, ভুল বানানে হবে রেগ) সময় তানিয়া নামে এক র্যাগার (রেগার) এর কাণ্ডকারখানা (প্রকাশ্যে মদ খেয়ে মাতলামো এবং মুক্তমঞ্চের উপর অশ্লীল নৃত্য, ভালগারিজম) নিয়ে ক্যাম্পাসে বেশ কিছুদিন আলোচনা ছিলো। জানা গেলো জাবি সহ সংলগ্ন এলাকার জামাত-শিবিরের সম্পূর্ণ কর্মকাণ্ডের ফাইনান্সার সে, তার বাবা কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর। তার ডায়রি থেকে জানা গেলো সে এইসব লোক দেখানো কাজ করেছে শুধুমাত্র এই অপারেশনকে সামনে রেখে, ডায়রির পাতায় পাতায় আল্লাহ’র কাছে ফরিয়াদ, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করো!’
৭) জানা গেলো যেহেতু এর আগের বার কবির ভাই মারা যাওয়ায় শিবির ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয় সেহেতু তারা এবার সিদ্ধান্ত নেয় কাউকে এমন কোন আঘাত করা হবেনা যাতে করে মৃত্যু হয়! সেই সিদ্ধান্ত তারা বাস্তবায়ন করেছে ঢিল খেয়ে, রক্ত বেরিয়েছে কিন্তু গুলি হয়েছে সব মাথার উপর দিয়ে, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যায়নি কেউ!
৮) শিবির হল থেকে বের হয়ে যাবার পরপর যেসব ছাত্র হলের ভেতরেই থেকে শিবির বিরোধী স্লোগান দিয়েছে সবার আগে, সবাইকে হলের ভেতর একত্রিক করেছে তাদের বেশ কয়েকজন যে আসলে শিবিরের নেতা সেটা জানার পর আমরা হতবাক হয়ে যাই, তারপর স্তব্ধ। আমাদের হতবাক হয়ে যাওয়া চলতেই থাকে...
হলে হলে শুরু হলো পাহারা আর নতুন করে তল্লাশি, এমন সব মানুষের নাম শিবির হিসেবে বেরিয়ে আসতে শুরু করলো যে আমরা হতভম্ব হয়ে গেলাম। গালি ছাড়া যে ছেলে কথা বলেনা সে শিবির, যে ছেলে সারাক্ষণ প্রগতিশীলতার কথা বলে সে শিবির, যে ছেলে ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার পর থেকে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলেতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে সে শিবির। শিবির বের হলো নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে, নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে, সবচাইতে বেশি বের হলো পদার্থবিবিজ্ঞান আর রসায়ন বিভাগ থেকে, মীর আকরাম আর বাকিবিল্লাহ মিলে বাদ রাখেনি কাউকে ঢুকাতে!
জানা গেলো পুরো জাহাঙ্গীরনগর ক্যম্পাস এর একটা আলাদা মানচিত্র আছে এবং সেটা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে একটা স্ট্র্যাটেজিক ম্যাপ! প্রতিটি হলের আলাদা নাম, প্রতিটি হলের প্রতিটি ব্লকের আলাদা নাম, প্রতিটি রাস্তার আলাদা নাম, আলাদা নাম প্রতিটি গেটের! বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কাছে রণক্ষেত্র! হলে হলে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের এই সময়টাতে কিছু জিনিস জানা গেলো,
১) সব শিবিরের বাবা মুক্তিযোদ্ধা এবং সব শিবিরের বাসায় দৈনিক পত্রিকা হিসেবে সংবাদ রাখা হয়! সংবাদে সাহিত্য সাময়িকী কোনদিন ছাপা হয় জানতে চাইলে প্রথমদিকে কেউ কেউ উত্তর দিতে পারেনি, পরবর্তীতে সবাই সংবাদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবেই আসতো!
২) সব শিবির শিবির ঘৃণা করে, এর প্রচুর কারণ, প্রধান কারণ এরা ধর্মের রগকাটা রাজনীতি করে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কারণে ঘৃণা করার কথা কেউ কোনদিন বলেনি, সব কথা শেষ হওয়ার পর যখন এই কথাটা মনে করিয়ে দেয়া হতো তখন তারা চুপ!
৩) জানা গেলো আপাত নিরীহ সব ছেলেরা ছিলো শিবির এর ‘সাথী’! সাথী হতে গেলে যে প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয় তা শুনে আমাদের বিস্ময় কাটেনা! সব সাথী’রা মেডিটেশন করে, মেডিটেশন বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া শিবিরের জন্য। এবং সবাই কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত, তাদের মাসিক বরাদ্দ কিংবা বেতন আছে, এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে গেলে তাদের সেই বরাদ্দের উন্নতি হয়। জানতে পারলাম যে, প্রয়োজনে দল তাদের জন্য সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিন্তু শর্ত একটাই, নিঃশর্ত আনুগত্য! ওমের্তা??!!! (এই বিষয়টি পরে আরও পরিষ্কার হয়, শিবিরের মোট ৬৪ জন গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়, বহিষ্কার করা হয় ক্যাম্পাস থেকে, শুনেছিলাম তাদের সবাইকে দলীয় খরচে পড়ালেখা করানো হয়েছে, আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়তে পাঠানো হয়েছিলো বেছে বেছে অনেককেই। ছাত্রদলের বিতাড়িত গ্রুপের যারা গ্রেফতার হয়ে জেলে ছিলেন তাদের সাথে জেলখানায় এই ৬৪ জনের দেখা হয়েছে, সেখানেও নাকি তারা আরসব কয়েদীদের চাইতে বহুগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। এই ৬৪ জনের সবাই মনে হয় প্রতিষ্ঠিত, বিগত বিএনপি-জামাত আমলে এদের মধ্যে ১১ জন পুলিশ ক্যাডারে ঢুকেছে বলেও শুনেছি!)
সেই সময় সুযোগও নিয়েছিলো কেউ কেউ, কোন ভালো ছাত্রের কাছ থেকে নোট চেয়ে পায়নি কেউ, লাগাও তার নামে শিবির ট্যাগ, মারো। কোনকারনে কারো সাথে মনোমালিন্য, লাগাও শিবির ট্যাগ, মারো। এইরকম ঘটনা ঘটেছিলো বেশ কয়েকটা।
হল পাহারা’র স্মৃতি রোমন্থন করি...
হলে হলে পুলিশ দেয়া হলো, তারা গেস্টরুমে থাকে আর আমরা দলবেঁধে হল পাহারা দেই। খুব সম্ভবত চতুর্থ রাতে এক বড়ভাই আমাকে আড়ালে নিয়ে গেলেন, ফিসফিস করে জানতে চাইলেন ‘কিরে, তোরা যে হল পাহারা দিস, অস্ত্রপাতি আছে?’ আমি বললাম ‘না মনে হয়।’ তিনি কেমন যেন চুপসে গেলেন, জানতে চাইলেন, ‘কিচ্ছু নাই?’ আমি আসলেই জানতাম-না, সক্রিয় রাজনীতি করিনা, যতদূর জানতাম যে বন্দুকের কার্তুজ আছে ৮টা কিন্তু বন্দুক নেই, শুধু আছে প্রচুর ইট-পাথর। হলে পাহারা দেয়া পুলিশ সদস্যরা সেইসব শুনে দারুণ মজা পেতেন, তারা সবসময় বলতেন আমরা আছি, শিবির আসলে গুলি আমাদের দিয়েন, আমরা আমাদের বন্দুক থেকে সেইগুলি দিয়ে গুলি করবো। এই কথাই সেই বড়ভাইকে বললাম, তিনি পরদিন হলে ছেড়ে চলে গেলেন, চলে গেলো আরও মানুষ। তিনি যখন ফিরলেন তখন আমরা সবার শরীর, ব্যাগ তল্লাশি করে হলের ভেতর ঢুকাই, আমি যখন তার ব্যাগ খুললাম তিনি মর্মাহত হলেন, বন্ধুরাও মর্মাহত হয়েছে কিন্তু আমাদের করার কিছু ছিলোনা। এরকম আরও দেখেছি, রাতে পাহারার সময় কোনদিন দেখিনি, মিছিলে দেখিনি তেমন কিছু মানুষ শুধুমাত্র মিছিল শেষ হলে কোথা থেকে যেন চলে আসতো, বক্তব্য দিতো বড় বড়, মিটিং এ বড় বড় কথা বলতো। আমাদের এইসব বাহানা ছিলোনা।
রাতের পাহারা দেয়া ছিলো চমৎকার একটা ব্যাপার! গান হতো ব্যাপক। এক ব্লকের ছাদ থেকে আরেক ব্লকে হৈ-চৈ, গালাগালি, খোঁজখবর নেয়া। জাবি’র বিখ্যাত পঞ্চ-পাণ্ডব ছিলো আমাদের বন্ধু সম, আমরা একইসাথে একটা খাবার মেস করেছিলাম, ‘হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া’ নামে, সেই পঞ্চ-পাণ্ডব’রা থাকা মানে পুরো হল জুড়ে একটা আলাদা আনন্দময় আবহ! তারা হারমোনিয়াম, ব্যান্জো, গিটার নিয়ে পুরো হলে ঘুরতেন, গান গাইতেন। দীপ্ত ভাই তার বিখ্যাত, ‘যেইসব খানকির পোলারা ঘাপটি মাইরা শিবির করন চোদায় এইটা তাগো লাইগা...’ বলে চিৎকার দিলে পুরো হল একসাথে ‘আআআআআআআআআ’ করে টারজানের সেই বিখ্যাত চিৎকার দিতো। আমাদের হলের শিক্ষক মঞ্জু ছিলো জামাত, কানে কম শুনত বলে তাকে ডাকা হতো বয়রা মঞ্জু, তার নামে একই কাজ করার সময় বলা হতো, ‘যেইসব বয়রা...’ সবার সাথে সবার একটা আত্মিক সম্পর্ক। আহা, সে বড় মধুর সময়!
একদিন রাতের বেলা এক ছেলেকে পাকড়াও করে আনা হলো গেট থেকে, সে তার বড়ভাই এর সাথে করতে এসেছে, সেই বড়ভাই ধরা পড়েছিলো স্টেনগান সহ! ছেলেটার কথা আজো মনে আছে আমার, সর্বাঙ্গে দারিদ্রের ছাপ, হাতে একটা ছালার ব্যাগ, সেই ব্যাগ খুলে বের হলো চিড়া, হাতে বানানো নাড়ু, কয়েকটা পিঠা আর একটা নতুন কমদামী লুঙ্গি; পুরো বিষয়টিতে এমন একটা সারল্য ছিলো যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে সরাসরি সব কথা বলে ফেলা হলো। তার বড়ভাই নুরু’র সব ঘটনা শুনে তার হুহু করে কান্না আর কিছুক্ষণ পরপর মর্মভেদী ‘আল্লাহ’ বলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাথা নাড়ানো এখনও আমি চোখ বন্ধ করে দেখতে পাই। জানা গেলো তার বাবা গরীব কৃষক, ছেলের পড়ালেখার খরচ দিতে পারতেন-না, এমন সময় হলেরই কিছু ছাত্র তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে, এই সাহায্যকারীরা ছিলো শিবির, প্রতিদানে তাকে একটা ছালার ব্যাগ নিয়ে আল-বেরুনী হলের ছাদে যেয়ে বসে থাকতে হয়, সে ছালার ভেতর ছিলো স্টেনগান, পরে শুনেছিলাম যে পুলিশ যখন তাকে ধরে তখনও নাকি তার জানা ছিলোনা তার সাথে স্টেনগান। জামাত-শিবির নিজের স্বার্থে সব করতে পারে!
শিবিরের এক ছেলেকে হলে থাকতে দেয়া হয়েছে, তার একটাই পরীক্ষা বাকি মাস্টার্সের, পরদিন পরীক্ষা দিয়ে সে চলে যাবে কিন্তু রুম থেকে বের হতে পারবেনা, রুমের চাবি তার এক ব্যাচ ম্যাট এর কাছে। রাতের বেলা সে খবর শুনলাম, আমরা ছোটরা কিছুক্ষণ চেঁচামেচি করলাম কিন্তু লাভ হলোনা, বলা হলো গায়ে হাত দেয়া যাবেনা!! গেস্টরুমে ঘুমিয়ে আছি সারারাত পাহারা দেবার পর, পাশের সোফায় ছাত্র ফ্রন্টের হ্যাপি ভাই। আমি সবসময় ক্যাপ পড়তাম মাথায়, গেস্টরুমে আলো জ্বলে, মাথায় ক্যাপ সহই ঘুমিয়েছি। ঘুম ভেঙে গেলো কারণ কেউ একজন আমার ক্যাপ ধরে নাড়ছে, তাকালাম, দেখলাম একটা মুখ আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললো, ‘আবার দেখা হবে।’ আমি গালি দিলাম। তারপর সে ঘুম থেকে উঠালো হ্যাপি ভাইকে, একই কথা বললো, চলে গেলো।
সবচাইতে অদ্ভুত লাগতো যে জিনিস সেটা হচ্ছে শিবিরের রক্তের শীতলতা। আমাদের রক্ত গরম হয় আর এদের হয় শীতল। আমি শুনেছি, রগ কাটার সময় একটা সম্মোহিত ভাব চলে আসে এদের ভেতর, কোন উত্তেজনা কাজ করেনা, খুব শান্ত এবং সমাহিত ভঙ্গীতে এরা রগ কাটে, মানুষ মারে, এরা হিউম্যান এনাটমি মেনে শরীরে আঘাত করে, জানে শরীরের কোথায় কতটুকু কোপ দিলে মারা যাবে কিংবা যাবেনা। এদের নিয়ে মানুষের ভেতর একটা আতংক কাজ করে, এই আতংক এদের তৈরি করা, এই আতংক থেকেই খুব সম্ভবত বেশিরভাগ মানুষ মনে মনে নিজের কাছে পালিয়ে থাকে, ভান করে, তারপর একদিন টের পায় খুব বেশি দেরি হয়ে গেছে! বুয়েটিয়ানদের ভেতর যেমন % এর হিসেব, শিবিরের কাছে তেমন কোন হিসেব নেই, তাদের সবকিছু স্ট্র্যাটেজিক, দীর্ঘমেয়াদী, তাদের একটা ছেলে কিংবা মেয়ে কোথাও স্থিত হওয়া মানে একটা সিস্টেম চলতে শুরু করা...
একসময় আমরা কয়েকজন মিলে পুরনো ঢাকা’র বন্ধুদের কাছ থেকে চকলেট বোমা নিয়ে আসলাম, সেগুলোর ৪টা করে একসাথে নিয়ে পাতলা দড়ি দিয়ে বেল্টের মত বাধা হলো কায়দা করে এবং সেটা কাজে লেগে গেলো একরাতে। আমাদের হল ছিলো একদম ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে। একরাতে হলের পেছন থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসতে লাগলো, আমরা সবাই দৌড়ে এ-ব্লকের ছাদে চলে গেলাম, সবাই ইট-পাথর নিয়ে রেডি, আবার গুলির আওয়াজ। আমি একদম পানির ট্যাঙ্কির উপরে উঠে গেলাম সেই চকলেট বোমার বেল্টসহ, আগুন জ্বালিয়ে দিলাম সলতেয়, হাঁটুতে মাথা গুজে বসে থাকলাম, নির্দিষ্ট বিরতির পর একটা একটা করে ফাটতে লাগলো সেই চকলেট বোমা। আবার গুলির আওয়াজ, আবার বেল্টে আগুন। পরে শুনেছিলাম সেগুলো নাকি রাইফেলের গুলির মত আওয়াজে ফেটেছে এবং সবাই নিশ্চিত ছিলো আমি গুলি করেছি! নেমে আসার পর ছাত্রদলের এক নেতা আমার শরীর তল্লাশি করলেন, তার সাথে শিবির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নানারকম কথা হতো বিভিন্ন মহলে কিন্তু কোনদিন প্রমাণ করা যায়নি। বেশ কিছুদিন কানে শুনিনি আমি, এখনও এই ঘটনা মনে পড়লে হাসি চলে আসে।
সারারাত জাগতাম, সকালে নাস্তা খেয়ে ঘুমোতে যেতাম, যখন উঠতাম তখন দেখা যেতো দুপুরের খাবার ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। বিভাগের শিক্ষকরা উৎসাহ দিতেন। ক্যাম্পাসের শিক্ষকদের ছেলে-মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব ছিলো, তাদের বাসা থেকে দুপুরবেলা খাবার আসতো মাঝে মাঝে আমার জন্য! কিন্তু বাসায় যেতে পারিনা, ক্যাম্পাসের বাসে আক্রমণ হয়েছে দুইবার আমিনবাজারে, বাস বন্ধ, আবার একরাত বাইরে থাকলে যদি ‘কি জানি কি হয়ে যায়’ এই চিন্তায় যেতেও ইচ্ছে করেনা। ক্যাম্পাসের দুই ছোট ভাইকে পাঠালাম টাকা আনার জন্য, বাবা-মা তাদের বিরাট যত্ন করলেন কিন্তু কোন প্রশ্ন করলেননা।
পরিবার খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, আমার বাবা এই কথাটা খুব বলতেন, আমি আপত্তি করতাম, আমার কাছে মনে হতো একজন মানুষ তার পরিবারের গণ্ডি ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর বাবার সাথে দূরত্ব বেড়েছে, বেড়েছে তর্কের পরিধি আর মায়ের বেড়েছে ছায়া। আমি তাদের একমাত্র ছেলে, ছেলেবেলা থেকেই নিজের মত করে বেড়ে উঠেছি, মন যা চেয়েছে তাই করেছি, ভীষণ জেদি। বাবা-মা যেদিন ক্যাম্পাসে চলে এলেন আমি তখন হলে নেই, তারা আমাকে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান, যেখানে যান শুনতে পান, ‘এইতো একটু আগে এখানে ছিলো!’
তাদের সাথে যখন আমার দেখা হলো তখন আমি একা, পছন্দের রিকশা করে ঘুরছি আর চিৎকার করে হেঁড়ে গলায় গান গাইছি রিকশাচালকের সাথে। তাদের দেখেই আমার প্রথম যে অনুভূতি হলো সেটা হচ্ছে এখন শাসন হবে, মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমার মা আমার দিকে তাকিয়ে এমন একটা হাসি দিলেন যে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। বাবা খুবই সরাসরি মানুষ, আমি কি করছি জানতে চাইলেন, আমি বললাম, তিনি আমাকে হতভম্ব করে দিয়ে বললেন, ‘এমন কাজে তোমাকে আমি বাধা দেই কিভাবে?’ বলে চুপ করে রইলেন। সবাই চুপচাপ, নীরবতা ভাঙলেন আমার মা, তিনি যা বলেছিলেন তা এরকম, ‘শোন, তুমি এমনিতেই লম্বা, সবসময় সামনে থাকার দরকার নেই, পেছনে থাকলেও তোমার মাথা উঁচু থাকবে, এই কথাটা এই কারণে বললাম কারণ তুমি আমাদের একমাত্র ছেলে, তুমি আর তোমার বোন ছাড়া আমাদের আর কোনকিছু নাই।’
বহুবছর পর এই স্মৃতিটা মনে পড়তেই বাবা-মায়ের জন্য গর্বে বুক ভরে গেলো আমার, চোখে জল এলো। আবার মনে হলো মুক্তিযুদ্ধে আমরা জিতেছিলাম শুধুমাত্র শুদ্ধতম আবেগের উপর ভিত্তি করে। যেসব বাবা-মা এই লেখাটি পড়বেন তাদের কাছে একটা অনুরোধ দিয়ে এই পর্বের শেষ করতে চাই, সন্তানের মঙ্গল চিন্তা তার সর্বোত্তম বেঁচে থাকায় হোক, সেই বেঁচে থাকা হোক নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অহংকারে, সহজাত মৃত্তিকার অনুভবে এবং জাতিগত অস্তিত্বের সংকটে- প্রতিরোধে…
মন্তব্য
মামুনের কাছ থেকে শোনা- এক রাতে মামুনের পালা পড়েছিলো পাহারার। ইঠাত করেই শিবিরকে আসতে দেখে প্লান অনুযায়ী মামুন গলা ফাটানো এক চিৎকার দেয়। এতে মামুনের ভোকাল কর্ড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই থেকেই মামুনের গলার স্বর বদলে গেছে।
আচ্ছা, এই সেবা আপা কি আমার দোস্তো জীনাত আরা বেগম?
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
তাই তো হবার কথা। প্রত্মতত্ত্বে পড়তো মনে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ, প্রত্নতত্ত্বের ছাত্র ছিলেন।
মামুন নৃবিজ্ঞানে পড়তো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমার প্রিয় বন্ধুসম বড় ভাই, আমরা একই বিভাগের ছাত্র, আমার তিনব্যাচ সিনিয়র। মামুন ভাইয়ের কাছ থেকে বহুকিছু শিখেছি আমি।
হ্যাঁ, এই সেবা আপা আপনার দোস্ত জীনাত আরা বেগম
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনার বাবা-মায়ের জন্য শ্রদ্ধা।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ। বাবা-মায়ের বয়স বেড়েছে আর আমার বেড়েছে ঋণ!
ওই সময়ের কিছু কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল, খুব বেশি কিছু মনে নেই।।তারপরও ওই সময়টার কথা মনে পড়ে।
জাবি’তে ছিলেন?
আপনার এই লেখা যদি দেশের কয়েকটা মানুষকে উদবুদ্ধ করত!!!
আপনার বাবা-মাকে শ্রদ্ধা!!!
-বেচারাথেরিয়াম
আপনি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন আশা করি।
ছাগুশিবিরের কাটাকুটিতে এত নিখুঁত হওয়ার কারণ কী? এদের অ্যানাটমি শেখায়/চেনায় কে? এদের মেডিকেল শাখাকে আচ্ছাসে ডলা দেওয়া উচিত্।
তাই নাকি? দিয়ে দিন-না।
লেখায়
অমি_বন্যা
সাথে থাকার জন্য সবার পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতা আপনার।
সত্য, আমার অভিজ্ঞতাও তাই বলে । চিটাগং কলেজের শিবিরদের দেখেছি নরপিশাচ যাকে বলে এক একটা। কিন্তু দেখলে বোঝা যায়না।
জাবি’র সবার পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
সাথে আছি তানিম ভাই, চলুক। শীতল রক্তের খুনিদের না হয় গরম রক্তের আমরাই প্রতিরোধ করবো।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
বুয়েটে সনি হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনেও আমার বাবা এইরকম কথা বলেছিলেন, "তুই এসব করতে গিয়ে মারা গেলে আমরা গর্ববোধ করবো যে ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। শুধু চাইনা যে কেউ পেছন থেকে কাপুরুষের মত মারুক, চাই তুই যেন সাহসের সাথে সামনা-সামনি লড়াই করে মরতে পারিস। দিনকাল খারাপ, এখন কেউ সামনে থেকে মারে না! তবুও সাবধানে থাকিস। আমরা বাবা-মা, আমরা চাইবোই আমাদের সন্তান বেঁচে থাকুক-ভাল থাকুক।"
আমার বন্ধু সাবুর বাবা-মা কে হাজারো হুমকি-বহিষ্কারের ভয়-এলাকায় ভয়ংকর সব হুমকিতে টলানো যায়নি। সাবুর মা ভিসির সামনে গিয়ে ভিসিকে বলে এসেছিলেন, ভিসির নামে মামলা করবেন। কারো কিছু হলে সবকিছুর দায় ভিসিকে নিতে হবে। বহিষ্কার করতে চাইলে করুক, কিন্তু তিনিও আমাদের সাথে আছেন। তিনিও আমাদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন- অনশনকারীদের সেবা শুশ্রুষা করেছিলেন।
এই সিরিজটা চালান ভাইয়া।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
বুয়েটে বহিষ্কারের হুমকি দেয়াটা খুব পুরনো একটা ট্রিক। তবে উলটো মামলা করলে সেসব আর টেকে না। কিন্তু এতে একটা জিনিস ঘটে, তা হচ্ছে পরবর্তীতে ঐ ছেলের নিয়মিত পাশ করাটা একটু মুশকিল হয়ে যায়। তবে দিন শেষে কাউকেই ঠেকানো যায় না। দৃঢ়তা দেখাতে পারলে অনেক জায়গায়ই প্রশাসনের উঁচু গলা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার বাবা-মা’কে আমার শ্রদ্ধা জানাবেন। আপনার বন্ধু সাবু’র মা-কে দেখতে ইচ্ছে করছে এখন!
থ্রিলার।
হাহাহাহাহাহাহা। আপনার কাছে থ্রিলার মনে হলে থ্রিলার
তানিম ভাই, দারুণ দারুণ লাগলো আপনার এই অভিজ্ঞতার গল্প ।
আফটপিক - পপ কে মনে আছে?? ওই বেকুবটা যে চট্টগ্রাম ভার্সিটি গিয়ে শিবিরের ধাওয়া খাইছিল এইটা জানেন? অল্পের জন্য জানে বেঁচে গেছে। চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে ভার্সিটির ট্রেনে উঠে নাকি লোকজনকে জিজ্ঞেস করতেছিল, ভাই এইখানে নাকি শুনি খুব শিবির এর অত্যাচার , কই শিবির তো দেখিনা। ট্রেন থেকে নামার পর চার পাঁচজন ক্লিন সেভড জিনস টি পরা স্মার্ট ছেলে ওকে ফলো করে নির্জন রাস্তায় কিরিচের পোচ দিতে গেছিলো। ছোকরা গাবর বলে ধাক্কা মেরে দৌড়ে পালায়ে জানে বেঁচে গেছে। শিবির যে দাড়ি টুপিতে থাকেনা এই জিনিসটা বুঝতে বুঝতে লোকজনের এক জনম চলে যায়।
আমি, বড় ভাই সহ আমাদের গ্রুপের সবাই কিন্তু ফুলকুঁড়ি এর সদস্য ছিলাম ক্লাস থ্রি ফোর এর দিকে টানা দুই বছর। প্রতি বাই উইকলি কালচারাল প্রোগ্রাম হতো ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ। এই দুই বছরে এমন কিছু চোখে পড়ে নাই যেটা দেখে সরাসরি বোঝা যায় ফুলকুঁড়ি শিবির বানানোর কারখানা। এদের শেকড় এত গভীর, এত বেশী অরগানাইজড যে সাধারণ মানুষের চোখে পরা মুশকিল। তাই পাবলিক, শিবির কই, শিবির কই বলে খুঁজতে খুঁজতে মরে যায়। আর ওইদিকে তাদের কাঁধে হাত রেখেই এরা আস্তে আস্তে তৈরি হয় সঠিক সময় আর সুযোগ আসার অপেক্ষায়। ওইসব গল্প নিয়ে একদিন কখনো লিখব না হয়।
পরের পর্ব জলদি চাই।
পপ এর সাথে শেষবার দেখা গত বইমেলায়, ও এখনো আগের মত সহজ-সরল আছে। ভালো লেগেছে খুব। ফোন দিতে হবে ওকে।
আপনার মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি!
আপনি ফিরেছেন তাহলে সচলে! ওয়েল্কাম ব্যাক! মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
অজ্ঞাতবাস
সুমন আপনাকে ধন্যবাদ সবকিছুর জন্য।
আমাদের ধমনিতে লাখো শহিদের রক্ত, এই রক্ত কোনওদিনও পরাজয় মানে না---------
শিবির ভোল পাল্টায়। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে টের পেয়েছি। তবু ঠিকই চিনে ফেলতে পারতাম কেউ না কেউ। প্রায় প্রতিটাই পরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। প্রপদ, লেখক সংঘ, থেকে শুরু করে আরো নানা প্রগতিশীল সংগঠনের ভেতরেও এদের পাওয়া গেছে। এখনও খুঁজলে যাবে নিশ্চয়। এদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার নিজেদের নামে ছড়ানো আতঙ্ক।
সম্প্রতি এরা রাস্তায়, কাওরান বাজার থেকে শুরু করে অলিগলিতে মিছিল করেছে, ‘পুলিশ ধরে বারবার, শিবির ধরে একবার’।
আমার এলাকায় এই মূহুর্তে ভয়ঙ্কর কিছুর মাঝ দিয়ে যাচ্ছি। গোটা অঞ্চল জামাত শিবিরের শক্ত ঘাঁটি। শুরু হয়েছিল স্কুল দিয়ে। ঢাকার অঞ্চলগুলোকে এরা টার্গেট করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এদের মূল হাতিয়ার। গোটা বিল্ডিং শক্ত ঘাঁটি। আমি তবু এদের পোস্টার, সিটকার ছিঁড়ে যাই। বুঝতে পারি সামনে সময়টা কঠিন। মাঝে মাঝে ভিষণ আক্রান্ত বোধ করি। ভালো থাকবেন। লেখাটা আরো উদ্দিপ্ত করলো।
স্বয়ম
উদ্দিপ্ত মানুষকে উদ্দিপ্ত করার জন্য কোনকিছুর প্রয়োজন হয়-না আসলে। শিবির একবারই ধরে, মানুষও একবার-ই মরে, পশু জন্মায় বারবার!
মুক্তিযুদ্ধে আমরা জিতেছিলাম শুধুমাত্র শুদ্ধতম আবেগের উপর ভিত্তি করে। যেসব বাবা-মা এই লেখাটি পড়বেন তাদের কাছে একটা অনুরোধ দিয়ে এই পর্বের শেষ করতে চাই, সন্তানের মঙ্গল চিন্তা তার সর্বোত্তম বেঁচে থাকায় হোক, সেই বেঁচে থাকা হোক নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অহংকারে, সহজাত মৃত্তিকার অনুভবে এবং জাতিগত অস্তিত্বের সংকটে- প্রতিরোধে…
সত্য কথা! লিখুন আরও ঘটনাবলী--
facebook
..................................................................
#Banshibir.
আপনি ইতিহাস নিয়ে লেখেন, আপনার কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা আছে। জামাতিদের ইতিহাস আপনার হাত দিয়ে নতুন করে লিখা হোক।
১৯৮৯ সনের শিবির খেদাও সংগ্রাম একাট্টা সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিরোধ আরেক স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুভব ছিল । মনে পরে অই সময়ের বিখ্যাত অনুবাদ "যখন শিবির এল - দি রান" । জাহাঙ্গিরনগর-এর আরেক অদ্ভুত বিস্ময় ছিল কোনো বিশেষ কারন ছাড়াই ছাত্র সংগঠনের লোকাল এন্টি-লোকাল রাজনীতি যার ফাদে পরে অনেক মেধাবি তরুনের জীবন নস্ট হয়েছে । শহিদ কবিরের স্মরনে শ্রদ্ধা এবং আপনাকে ধন্যবাদ লেখার জন্য ।
কোন কায়েস? ২২ তম ব্যাচের বিবিএ’র কায়েস নাকি? শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হয়েছিলো! মনে আছে।
সেসময়ের ইতিহাস যারা জানি না, তাদের জন্য এই পোস্টটা খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। আরও লিখুন।
যারা ইতিহাসের খোঁজ রাখেনা তারা কোনদিন কিছু জানবেনা। আপনি যদি জাবি’র স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে খোঁজ নিন। ভাসানী হলের একজন গার্ড মামা আছেন বীরপ্রতিক, নাম বলবোনা, খুঁজে বের করুন -- শুরু করুন।
শিবিরের রামদা কিরিচের চেয়েও ভয়ংকর অস্ত্র হলো চরম নিরীহ চেহারা। শিবির মেম্বরশীপ দেবার জন্য বাজারের সবচেয়ে আবালগুলারে টার্গেট করে, এগুলার মগজ ধোলাই করা সহজ। শিবিরের মগজ ধোলাইয়ের প্রথম ধাপ হলো বিবেক নামক জিনিসটাকে অবশ করে দেয়া। দ্বিতীয় ধাপ হলো সেখানে শিবিরের সফটওয়ার ইনস্টল করে দেয়া। এরপর আবালগুলারে দিয়ে যে কোন কাজ করানো যায়।
চবিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর আবাল শিবির ক্যাডারকে কাছ থেকে দেখেছি যারা পার্টির জন্য মা বাপের নাম পর্যন্ত ভুলে যেতে রাজী। মেয়াদ শেষ করতে পারলে এদের পুরষ্কারটা বেশ লোভনীয়। জামাত শিবিরের মালিকানার প্রচুর প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে নামে বেনামে দাড়িয়ে গেছে। এদের অনেকেই ওসব প্রতিষ্ঠানে চাকরী পায়।
এই নিরীহ চেহারাগুলো একদিকে লোকজনের কাছে ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিতি পায়, অন্যদিকে পার্টির সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হয়। সুতরাং নিরীহ ভুদাই চেহারার শিবির বলে অবহেলা করাটা মারাত্মক ভুল।
আপনার এই লেখাটা শিবির সম্পর্ক অজ্ঞ লোকদের ভালো গাইড বই হতে পারে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনি যা-কিছু দেখেছেন তাও লিখুন-না ভাইয়া। একদিন সচলের নীড়পাতা ভরে যাক এইধরনের লেখায়!
একটা ঘটনা বলি, কেমিস্ট্রির এক ছেলে, নাম দেলোয়ার, ২৯তম ব্যাচের, ভাসানী হলের সম্ভবত। ক্যাম্পাসে এসেছিল দাড়ি ছাড়া, কিছুদিন পর তাবলীগে যোগ দিয়ে দাড়ি-পাগড়ি দুইটাই নিল। আজব ব্যাপার হল ২য় বর্ষে উঠে সে এই পাগড়ি-দাড়ি নিয়ে ছাত্র ফ্রন্টের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিছিল করে!!! কী যে অদ্ভুত লাগত ব্যাপারটা। এর আগে সে ছাত্রলীগের সঙ্গেও ঘুরেছিল কিছুদিন- তখন আওয়ামী লীগের শেষসময়। ইউনিয়নের সঙ্গে ঘুরেছিল কিনা নিশ্চিত নই। তবে জিজ্ঞাসা করলে সে বলতো সব দলের সঙ্গে ঘুরে সে দলগুলি সম্পর্কে জানছে। তাবলীগের বড়ভাইরা কিংবা ফ্রন্টের নেতারা অস্বস্তিবোধ করলেও তাকে সরাসরি একটা পথ বেছে নিতে বলে নাই কখনো- অন্তত আমার জানামতে।
এই ছেলেটাকে ২০০২/০৩ এর দিকে আবিষ্কার করা গেল শিবির হিসাবে, কিছু বইপত্রও পাওয়া গেল তার রুমে প্রকৃত ইসলামের/জিহাদের ডাকওয়ালা। আরো ২টা ছেলের সঙ্গে মার দিয়ে তাকে সাভার থানায় সোপর্দ করা হয়। ক্যাম্পাসে তাকে আর কখনো দেখি নাই, ঠিক নিশ্চিত না সে তার ডিগ্রী শেষ নিতে পেরেছিল কিনা।
এইবার মজাটা শুনেন, গত ঈদে একটা এসএমএস পেলাম ভাইজানের কাছ থেকে- ''উই ওয়ান্ট টু বিল্ট (বিল্ড না কিন্তু) আবাসিক ক্যাম্পাস ইন স্কুল লেভেল লাইক জেইউ ক্যাম্পাস। ইউ আর মাস্ট এন্ড মোস্ট ওয়েলকাম।'' এই স্কুলটা হল সাভারের অগ্রদূত আবাসিক স্কুল। আগ্রহীরা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।
শিবির এতো সহজে হার মানে না।
শিবির এতো সহজে হার মানে না। ঘাপটি মারা জামাত-শিবির জিতেছিলো কবে!!!! হুট করে কারো রগ-কাটা, মেরে ফেলা, জবরদখল করার প্রয়োজনে বিয়ে করা, সনাতন নাম ধারন করা, মিথ্যে বলা -- এরা আদতে জিতেছিলো কবে??
পশুদের আঁধারের উল্লাস থাকতে পারে কিন্তু মানুষের কাছে তারা চিরকাল পরাজিত!
শিবির বার বার ফিরে আসার চেষ্টা করে বুঝাতে চেয়েছি তানিম ভাই।
আমি ভুল বুঝিনি ভাই। আসুক। আবার মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ
এবং আপনি নিজেও জানেন-না আপনার উপস্থিতি কতটা প্রেরণাদায়ক ছিলো! এখনো আছে!
এই কমেন্ট এখানে এলো কেন? এটা স্যাম এর কমেন্টের পর যাবার কথা ছিলো। কি আজব!
সেটা আমরাও শুনেছি গোবিন্দনগরে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে
অজ্ঞাতবাস
এটা বুঝলাম-না। গোবিন্দনগরে কার প্লট, কি প্লট?
গোবিন্দনগর তো বিশমাইলের পরে। সাভার ক্যান্টনমেন্টের আগে। সেখানে জাবির ছাত্রশিক্ষককর্মচারীদের একটা জনপদ গড়ে উঠবার কথা ছিল। কিন্তু ২০০২-০৩ থেকে শুনেছি সেটা জামাত শিবিরের দখলে চলে গেছে।
অজ্ঞাতবাস
আচ্ছা।
আমার যা বলার আপনার দ্বিতীয় কিস্তি নামার পরে বলবো। চোখের সামনে দুইদশক আগের জাবি নেমে আসলো।
অজ্ঞাতবাস
ঠিকাছে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ রু।
এই ইতিহাসগুলো আমরা দেখি নাই, এবং কেন কে জানে জানতেও চাই না। শিবিরকে উপেক্ষা করার কি দারুণ একটা প্রবণতা দেখি এখন! যেদিন বোধোদয় হবে, সেদিন বেশি দেরি হয়ে না গেলেই হয়।
আপনাদের সকলের জন্য শ্রদ্ধা।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
দেরি বলে কিছু নেই, যখন সময় হয় তখনই সময়।
আমি জাবিতে ছিলাম, অনেক কিছু দূর থেকে দেখেছি। আপনার অভিজ্ঞতা থেকে নতুন করে অনেক কিছু জানতে পারছি। জামাতিরা যে কত বড় হারামি হয়, আমার ব্যাক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা আছে, কোনদিন লিখব। ওরা মানুষ না, পিশাচ। ওদের কথা মনে পড়লেই মুখ ঘৃণায় তিতা হয়ে যায়।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম, তাড়াতাড়ি দেন ভাইয়া!
এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। দারুণ! ভবিষ্যতে শিবিরকে কীভাবে ঠেকানো যাবে তা নিয়ে ভাবা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
মূর্তালা রামাত
দূর থেকে দেখাও দেখা, লিখে ফেলুন। আপনার পোস্টের জন্য
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনাকে যত চিনছি তত অবাক হচ্ছি এবং আপনার সাথে ব্যক্তিগতভাবে পরিচয় আছে সেই জন্য গর্ব অনুভব করছি।
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
হাহাহাহাহাহা, আমি বর্ণচোরা চিনে শেষ করতে পারবেন-না। গর্ব করার কিছু নাই জুন ভাই, আমার আঁধার-ও আছে। ঢাকা কিচেন যামু
সিরিজ নিয়মিত চলুক
_____________________
Give Her Freedom!
ভাইয়া, আমিও এম এইচ এর ছাত্র ছিলাম।ভালো লাগল আপনার লেখাটা পড়ে। এখনও যারা বলে জাবি তে শিবির নেই তারা হয়ত ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করছে কোন অসৎ উদ্দেশ্যে। চুপা শিবিরের অভাব নাই।
Vi ami 34 th batch JU. Apner kotha gulo pora amro sai purono din kotha mona pora galo.I Am Proud Because JU olny Campus in where Dogs are allowed but not Shibir...........!
Tanim ..Thanks ....
তানিম, আমি তোমাকে চিনতে পেরেছি।
তোমার যা অভিজ্ঞতা, আমারো তাই।
ভালো থেকো।
----------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
নতুন মন্তব্য করুন