জামাত-শিবির মানে যারা শুধুমাত্র একাত্তর ভেবে তারপর আর ভাবতেই চান-না, এই বিচার শেষ হলেই যারা ঘরে ফিরে যাবার কথা ভাবতে শুরু করেছেন তাদের জন্য করুণা! জামাত-শিবির মানে যারা ধরে নেন দুইটা দাঁড়ি আর তিনটা তাবিজ-কবজ তারা বোকা, তার চাইতে বেহদ্দ বোকা যারা মনে করেন এই বিচার হয়ে গেলে জামাত কলংকমুক্ত হয়ে যাবে। কলঙ্কের আবার জামাত কি!
আমরা হাত মেলাই মানুষের সাথে একাত্ম হতে, আর এরা দু’আঙুলের গোঁড়ার ফাঁকে ব্লেড রেখে হাত মেলাতে এসে চট করে কব্জির রগ কেটে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে চলে যাওয়া পশু! এদের রগকাটা শুরুই হয়েছিলো এইভাবে (কৃতজ্ঞতা: সাইফ, মনে করিয়ে দেয়ার জন্য)। শিবির এর হত্যাকাণ্ডগুলো সম্পর্কে আপনাদের কোন ধারনা আছে? আমার-ও ছিলোনা, কোনদিন হোক আমি চাইনি। এই নিয়ে লিখবো, জ্ঞান ফলাবো ভাবিনি, জামাত-শিবির বিরোধী লড়াই কেউ নাম বিক্রি করার জন্য করে নাকি? পৃথিবীর কোন হত্যাকাণ্ড শুধু আমি কেন কেউ সমর্থন করেনা। কিন্তু জামাত-শিবির এর হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখলে আপনি বোকা। নিজ থেকে চিন্তায় পার্থক্য হন!
এরা হিউম্যান এনাটমি মেনে মানুষ খুন করে। ব্যবহার করে চাপাতি, ক্ষুর, বিশেষভাবে নির্মিত রড, গুলি’র যেহেতু দাম আছে তাই সবরকম কাজে এরা গুলি ব্যবহার করেনা। ভয় লাগছে? এখন-তো ভয় জয় করার সময়। আমাকে ভয় না পেলেই হয়! মনে করুন আপনি সুযোগ পেয়েছেন নিজেকে স্থিত করার। রগ কাটা বললে আপনার মাথায় নিশ্চয়ই কাজ করে যে ঘ্যাচাং করে ধরে রগ কেটে দেয়া হয়; বিষয়টা মোটেই সেরকম নয়। এরা রগ কাটে বৃত্তাকারে, সুনিপুণ সে হাতের কাজ কতটা সূক্ষ্ম হতে পারে আপনি না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন-না। নিশ্চয়ই সে রগ কাটার আগে মানুষটাকে কাবু হতে হয়, তারা কাবু করে মাথার নির্দিষ্ট জায়গায় আর কিডনি বরাবর মেরে... মাথায় কোপ দিয়ে মারা হবে এটা যদি সিদ্ধান্ত হয় তাহলে কোপ হয় নির্দিষ্ট জায়গায়, স্পেশালিষ্ট কসাই আনা হয়, রিহার্সাল হয়, ঘটনা ঘটানোর আগে রেকি হয়, ঘটনা ঘটানোর সময় ব্যাক-আপ টিম থাকে, সেই ব্যাক-আপের ব্যাক-আপ থাকে; ঘটনা ঘটানোর পর রিভিউ মিটিং হয়... কোথায় কতটা মারলে কিরকম কি হয় সেটা এদের চাইতে বেশি কেউ জানেনা পৃথিবীতে।
এই কথাগুলো বলার একটাই কারণ, জামাত-শিবির এর ভয়ংকরত্ব বোঝানো। কেন বোঝা দরকার? কারণ আমরা যে লড়াইটা করছি তার শুরুই হয়নি এখনো, শেষ হতে বহু দেরী! ১৯৭১ সালে যতজন রাজাকার ছিল তাদের বাচ্চা-কাচ্চা হয়েছে, আর বিশেষ শ্রেণীর পশুরা গণ্ডায় গণ্ডায় বাচ্চা দেয়! এদের বাচ্চা-কাচ্চা হয়েছে, ১৯৭৫ এর পর নতুন রিক্রুটমেন্ট হয়েছে দেদারসে, সেই রিক্রুটমেন্টরা আরও রিক্রুটমেন্ট করেছে, কিলবিল করতে করতে এদের টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি-বাম সহ সব নব্য রাজাকারেরা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা-কাঠামোয় এদের ভিত্তি ব্যাপক; পাশাপাশি সবাই এখন প্রতিবাদ করা শুরু করেছে, এই প্রতিবাদ করতে পারাটাও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা-কাঠামোর জন্য সহনীয় নয়... লড়াইটা সত্যিকারের যুদ্ধ হবে যদি আপনি, আমি, আমরা তিরিশ লাখ শহীদের ‘তোমাদের যা বলার ছিল বলছে, বলবে বাংলাদেশ...’ নিশ্চিত করতে পারি। আমাদের পারতেই হবে, এইবার না পারলে আরা কোনদিন পারবো-না...
আপনি কি আপনার এলাকায় কোন শিবির’কে হাসতে হাসতে বলতে শোনেন সে শিবির করে? কিংবা জামাতকে? প্রশ্নই আসেনা। এইযে প্রজন্ম চত্বরে লাখ লাখ মানুষ যাচ্ছে এদের ভেতর কে শিবির আপনি জানেন? জানেন-না কিন্তু শিবির জানে এই এখন শাহবাগে তাদের বেতন ভুক্ত কতজন আছে। হ্যাঁ, বেতন ভুক্ত। একদম গুনে গুনে সবাই, কাজের উপর ভিত্তি করে এদের বেতন বাড়ে, কায়দা-কানুন বাড়ে, শিবির এর একজন সাথী মানে বিশাল ব্যাপার-স্যাপার। এই একটা জায়গায় আমরা এগিয়ে, আমাদের সম্পর্কগুলো সব মানবিক। এদের নিজ সমাজের বাইরে বিবাহ, প্রেম, ভালবাসা হয়না, পারেনা কেউ, আমরা কোনদিন শুনিনি; আপনি চেষ্টা করে দেখুন পারেন কিনা এদের ভেতর যেয়েই একদম ‘সাথী’ হয়ে যেতে! সবকিছু স্তরায়িত, কর্মী হতেও বহুদূর পাড়ি দিতে হয়...
আমরা এমনকি বন্ধুদের নানানরকম নাম দেই, ‘কালা সুমন’, ‘খারাপ সেলিম’, ‘ব্যাক্কল কুদ্দুস’, ‘ভোন্দা সুমন’, ইত্যাদি ইত্যাদি; কখনো কখনো কাউকে পুরো নামে ডাকতে আমাদের বিশেষ ভাল লাগে কিংবা নাম ধরে ডাকিনা কিন্তু আকাশ-পাতাল সব ডেকে ফেলি। জামাত-শিবির এর ভেতর এইসব নেই, এরা সবাই সবাইকে পুরা নাম ধরে ডাকে, একদম ফর্মাল সম্পর্ক। সেদিন প্রজন্ম চত্বরে একটা গ্রুপের সবাইকে দেখলাম ডাকাডাকি হচ্ছে এইরকম-ভাবে- ‘এই আবু সুফিয়ান’, ‘এই আখলাকুর রহমান’, ‘এই মোহাম্মদ রাজ্জাকুল আলম’। মাদ্রাসার ছাত্রদের ভেতর-ও এটা আছে বলে আমরা নিজেদের সান্ত্বনা দিয়ে চলে এলাম। জামাত-শিবির এর পরবর্তী পশু-প্রজন্ম অবশ্য খুব স্মার্ট বলে শুনেছি, কিন্তু এরা যেটা ছাড়েনা সেটা হচ্ছে এদের সবার আব্বা-হুজুর গোআজম এর চরিত্র।
আপনি কি চান? আপনি যদি চান যে এই আন্দোলন শেষ হবার পর সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে, তার আরও ২৫ বছর পর জামাতি’দের সন্তান আবার মন্ত্রী হয়ে গাড়ীতে ফ্ল্যাগ লাগিয়ে ঘুরবে আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাড়-মাংস চিবিয়ে, এর ভেতর আরও বহু মানুষ এদের হাতে খুন হবে; তার আরও ১৭ বছর পর আরেকটা ‘প্রজন্ম চত্বর জাগরণে’ আপনার ছেলে-মেয়ে-নাতি-পুতি পুত-পবিত্র হবে তাহলে ফরমালিন-মুক্ত পেঁপের একটা কষে যাওয়া টুকরা আর এক গ্লাস চিরতার রস খেয়ে ঘুমাতে যান প্রতিরাতে; কেননা, উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ছাড়া মানুষের বোধ আসলে গিলে গিলে তৈরি হয়-না, এইসব জন্মগত!
আপনি কি বিশ্বাস করেন? আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি-বাম এইগুলো সব দলীয় তাবিজ, দলীয় ছাতা’র নীচে ব্যক্তি চরিত্র খুব গুরুত্বপূর্ণ – এটা আরেকবার প্রমাণ হয়ে গেছে বাংলাদেশে। ব্যক্তি আগে। ব্যক্তিগত জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনি কিসে বিশ্বাস করেন? আপনার স্ব-দেশ’কে আজ থেকে ১০ বছর, ১৫ বছর কিংবা তারও পরে আপনি যেভাবে চোখ বুজে দেখতে চান দেশটা সেরকম-ই হবে। সম্মিলিত চিন্তার একটা আলাদা তাৎপর্য আছে এটা আপনি নিশ্চয়ই এখন স্বীকার করবেন। একবার সাহস নিয়ে এগিয়েছেন, এইবার থেকে যান; রাজপথ বলে আদতে যে বিষয়টি আছে সেটি বাস করে আমাদের বুকের ভেতর, পথ মানে চলমান দীপাবলি, আমৃত্যু... হৃদয়ের তারুণ্য ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার নিজের; কেউ কি কোনদিন কাউকে ধরে চেতনা খাইয়ে দিতে পারে! ‘পতিতা’ নামে যাদের ডাকা হয় তারা কেউ হাসতে হাসতে এই পেশায় আসেন-নি, আসে রাষ্ট্র এবং সমাজের ব্যর্থতায়। উন্নয়নকর্মী হিসেবে এইসব মানুষের সাথে কাজ করেছি আমি। আর এই পেশার উদ্ভাবক, লালন-পালনকারী সবাই-তো পুরুষ! জামাত-শিবির আমাদের মা-বোন’কে ‘পতিতা’ বলে ডাকার স্পর্ধা দেখায়, মানুষ’কে এরা শুধুমাত্র মানুষ হিসেবে দেখেছে কবে??
আপনি যদি চান আপনি শুধুমাত্র ধর্ম দিয়ে নিজেকে বিচার করবেন, মূল্যায়ন চাইবেন, জোর করে ধর্মের নামে আপনি যা করেন তাই বাকি সবাইকে কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করে করাতে হবেই হবে... যদি মনে করেন যে নারীরা আপনার ইচ্ছায় পোশাক পড়বে কারণ আপনি তাদের শরীরের সবকিছু মাইক্রোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করার সার্বভৌমত্ব রাখেন কারণ আপনার নীচে লেবু’র রস ঝরে... যদি ভাবেন আউল-বাউল সম্প্রদায় ‘তামাক’ খায় বলে তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেয়া জায়েজ... যদি মনে করেন, অন্যের ক্ষতি না করে কেউ যদি তার একান্ত ব্যক্তিগত জীবন নিজের মত করেই কাটাতে চায় সেটা হতে পারেনা কারণ সবকিছু’কে জাজমেন্ট করার অধিকার আপনার আছে... যদি মনে করেন, সবাই চোর তাই আপনাকেও হতে হবে কিন্তু ব্যাংক একাউন্ট করতে হবে স্ত্রী কিংবা শাশুড়ির নামে... যদি মনে করেন মুক্তিযুদ্ধের সময় মা-বোন’দের চরম অত্যাচার করার পরেও আজকে জামাত দুষ্টুমি করে আপনার মা আর বোন’কে ‘পতিতা’ বলেছে... যদি মনে করেন, তবুও জামাত-শিবির ইসলামের কথা বলে, বিশ্বের সব মুসলমান ভাই-ভাই মানেই পাকিস্তানী আর সৌদি’রা ভাইয়ের উপরে শালা... তাহলে তোমার-ও জন্মের সমস্যা আছে! মাতৃগর্ভ থেকে নয়, জারজ বাবার পশ্চাৎদেশ দিয়ে তোমার-ও পশু নির্গমন হয়েছে এই রাম-ধরাধামে!
বাংলাদেশে রিকশা চালনাকে যে মানুষটি পেশা হিসেবে নিয়েছেন তিনি বয়োবৃদ্ধ হলেও আমরা, ‘এই বুড়া মিয়া যাবা?’ কিংবা তুই-তুকারী করি হরে-দরে। একজন কৃষকের কাছে যেয়ে মাটিতে বসতে আমাদের পাছায় ব্যথা হয়, একটি শিশু ঘরের সব কাজ করে দেবার পরেও তাকে খাবার টেবিলে নিয়ে একসাথে বসে খেতে আমাদের সামাজিক সমস্যা হয়, শ্রমিকেরা তবুও দেহ বিক্রি করে -– এইগুলা জামাতিদের সাফল্য নয়, আমাদের ব্যর্থতা! প্রজন্ম চত্বর শুধুমাত্র জামাত-শিবির নয়, সবরকম মানবিকতার জয়গান সুরে সুরে যাক গেয়ে!
আর জামাত-শিবির! ১৯৭১ সালে মা-বোন’দের নিয়ে যা খুশী তাই করার সরল হিসেব-ই এখনো বুঝে নেই নাই আমরা! ‘পতিতা’ নামের ছবক দেবার চেষ্টার লসাগু-গসাগু হিসেব-তো বহু পরের কথা! তোদের মাতৃকুলের কোন অস্তিত্ব নেই, বেজন্মা পিতার জন্মদাত্রী কূলের শুরুতেই সমস্যা ছিল-রে বেজন্মার দল!
মন্তব্য
দারুণ ... দারুণ
অসাধারণ বলেছেন ভাইয়া।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
সঠিক বিশ্লেসন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
বেশ ভালো লাগলো।।।।
আগুনের পরশমনি'৭১
একটা কথাও বাড়িয়ে বলেন নাই, বরং কিছু ক্ষেত্রে কমও বলে ফেলতে পারেন শিবিরের পৈশাচিকতার। এরা ঠান্ডা মাথার খুনী। আমার শুধু একটাই স্বপ্ন এই স্বপ্নের জাগরনকে ঘিরে, শিবিরের মূলোৎপাটনের আগে কেউ ক্ষান্ত দিবে না। জহির রায়হান বলেছিলেন,"আসছে ফাল্গুনে আমরা দ্বিগুন হব" সাথে আমি যোগ করতে চাই,"আসছে ফাল্গুনে ওরা নিশ্চিহ্ন হবে"
মডুদের সমীপেঃ
ফেসবুকে লিঙ্ক পোস্ট করা যাচ্ছে না, কিছুদিন আগে এইধরনের একবার সমস্যা হয়েছিল যদ্দুর মনে পড়ে। একটু চেক কইরেন।
আমিও এইমাত্র কয়েকবার চেষ্টা করলাম, পারি নাই ।
এরর দেখাচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন এক মডু। আপাতত আমরা পোস্টের ইউআরএলটা কপি করে ফেসবুকে পেস্ট করতে পারি।
বেছে বেছি কিছু পোস্টেই ব্যপারটা ঘটছে দেখা যাচ্ছে। আমরা দেখছি ব্যাপারটা।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
এটাই ভাবছিলাম। জামাত এখন কোনঠাসা হয়ে পড়ায় যে আক্রমণ টা সেটা ট্যাকল করার জন্য, বা মানুষকে এই আশঙ্কা সত্ত্বেও রাস্তায় থাকার জন্য কি প্রস্তুতি বা পরিকল্পনা আছে এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের। এইটা নিয়ে ভেবে চিন্তে পূর্বপ্রস্ততি নেয়া দরকার, কেমনে জামাতের সহিংস হামলা ঠেকানো হবে। জনস্রোতের মানুষকেও আগে থেকেই সতর্ক করতে হবে।
আমাদের শক্তি সংখ্যায়, আর দেশের জন্য ভালোবাসায়। জামাতকে দেশ থেকে মুছে ফেলতে হবে।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
দারুণ লিখেছেন তানিম ভাই। কিশোর থেকে যুবক হয়ে উঠার সময়টাতে চট্টগ্রামের চকবাজারের আশেপাশে ছিলাম; শিবিরের ভয়াবহতা দেখেছি এবং শুনেছি। এরা যে কি পরিমান ঠান্ডা রক্তের প্রাণী বিশ্বাস হতে চায়না মাঝে মাঝে।
ফারাসাত
লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমার জানার পরিধি বেড়ে গেল।
বিষয়ান্তর : তানিম, তোমাদের এই প্রজন্মের এই মহাজাগরণে আমি অভিভূত, আবেগাপ্লুত। সাবাশ নতুন প্রজন্ম, তোমায় স্যালুট।
১২/১২/১২ ইং তারিখে আমার একটা লেখায় লিখেছিলাম,
আমরা অবশ্য আপনাদের অর্থাৎ এই প্রজন্মের চাপে পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য্য শুরু করেছি। কিন্তু তারপরও বলি মূল কাজটি কিন্তু আপনাদেরকেই করতে হবে।যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতেই হবে।
এই প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আমার প্রাণের মাঝে এক ধরনের আশা সঞ্চারিত হয়। আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে ইতিবাচক মত প্রকাশ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন। সমাজ পরিবর্তনের প্রশ্নেও আপনারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
পরিশেষে বলি, আমরা গণমানুষের সর্বাত্মক মুক্তি যাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলা হয়েছে, বাংলার মানুষকে দিতে পারিনি। আপনারা নয়তো আপনাদের পরের প্রজন্ম প্রয়োজনে আরেকটি যুদ্ধ করে গণমানুষের সেই কাঙ্খিত মুক্তি প্রতিষ্ঠিত করবেন।
আমি এখন নিশ্চিত, আমার এ জীবনেই আমি তা দেখে যেত পারবো।
জামাত শিবির নিজেরা বাদে আর কারো কাছে বলে না আমি শিবির করি। বিষয়টা যে লজ্জার গ্লানির তা ওরা জানে। বাংলাদেশে ওরা চিরকাল চোরের মতো লুকিয়েই কাটাবে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দরকারী লেখা, শেয়ার দিচ্ছি। কিন্তু গালাগালিটা কি একটু কমানো যায়? গালি হয়ত এসে যায়, কিন্তু লেখা পোস্টের আগে তো ভাষাটা ঠিক করে নেয় চলে? গালিতে লেখার জোর বাড়ে না, বরং কমে। যারা এখনো সিদ্ধান্তে আসেনি - সব লেখারই যারা আসলে টার্গেট অডিয়েন্স - তাদেরকে দূরে ঠেলে দ্যায় স্ল্যাং।
মাই টু সেন্টস। ধন্যবাদ।
জামাতকে গালি দিলে কারা ঠেলা খেয়ে দূরে সরে যায়?
যারা এখনো ঠিকভাবে জানেনা, যাদেরকে জানানোটা সবচেয়ে জরুরি, তারা
বাকিরা হয় এপথে কখনো যাবে না, নইলে আর ফিরবে না - এই দুই দলের। এদের জন্য নিশ্চয়ই লেখাটা নয়? না কি তেলা মাথায় তেল ঢালা (প্রথম দলের জন্য) বা, গালি দেওয়ার জন্যই লেখা (দুই নম্বর দলের জন্য) সেটাই একমাত্র উদ্দেশ্য?
আপনি কি মাঝের কাউকে কখনো দেখেননি? আমার পরিচিতের মধ্যে আছে কিন্তু, এবং তাদের জন্য শেয়ার দিতে চেষ্টা করছি, কোন কারণে যাচ্ছে না। আর কারও কি সমস্যা হচ্ছে?
আমি প্রচুর ছাগুকে দেখেছি যারা মাঝের দলে থাকার অভিনয় করে। ঠসা না হলে বা রাজাকারের বাচ্চা না হলে বাংলাদেশে এমন কোনো মানুষ মায়ের কোক থেকে বের হয় নাই যারা রাজাকারদের কাণ্ডকীর্তি সম্পর্কে কমবেশি জানে না। শাহবাগে ক্লাস এইট-নাইনের ছেলেমেয়েদের দেখেছেন? ওরা কিন্তু মাঝের গ্রুপে নাই।
আপনার পরিচিত লোকজনদের কাছ থেকে সাবধানে থাকুন। এরা লোক ভালো না।
"আপনার পরিচিত লোকজনদের কাছ থেকে সাবধানে থাকুন।"
'আমার পরিচিত লোক' হলো আমার বিভিন্ন বয়সী কাজিন। যাদের থেকে সাবধানে থাকার কথা তাদের আমি চিনি, এরা তারা না। আপনারা কড়া রাজাকারদের তাড়াতে তাড়াতে এমন হয়ে গেছেন যে আসল উদ্দেশ্য - এই প্রজন্মকে ঠিকটা শেখানো - সেটা থেকেই বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছেন। সচলায়তন আস্তে আস্তে আপনাদের পরষ্পরের পিঠ চাপড়ানোর একটা মাধ্যম হয়ে যাচ্ছে (সামু যেমন ছাগুদের), যে তাগিদ থেকে এই আলাপচারিগুলি শুরু হয়েছিল সেগুলিই চাপা পড়ে যাচ্ছে।
প্রতিটি দ্বিমতকেই মতলব/শত্রুতা ভাবা বন্ধ করেন ভাই।
এই প্রজন্ম ঠিকটা শেখে নাই, এরকম ভেবে বসে থাকা তো বুদ্ধিমানের লক্ষণ না ভাই। আপনি শাহবাগে গেছিলেন? যান নাই মনে হয়। ঘরে বসে স্মার্ট স্মার্ট কথা বলছেন আর কাজিনদের ঠিক শিখলাচ্ছেন। বাংলাদেশ হওয়ার পর সব প্রজন্মই রাজাকার ইস্যুতে ঠিকটা জানে। জানে না কিছু ছাগুর বাচ্চা ছাগু, যাদের চিবি দিয়ে ধরলে তারা প্রথমে গালির বিরুদ্ধে জেহাদ করে, তারপর কয় আপনার পিঠ চাপড়ান, তারপরে গেস নাই পানি নাই কিন্তু যদি হয়তো তবে এইসব বলতে থাকে।
আপনার কাজিনের বাপ মা সুবিধার লোক না। ফটকা কিসিমের। তারা নিজেরা বাচ্চাদের শিখায় নাই, আপনার কাছে শিখানোর বর্গা দিয়ে রেখেছে। সাবধানে থাকবেন।
পিঠ ছাড়া আরও অনেক কিছু চাপড়াতে পারি আমরা। গাজী টেংক গাজী টেংক গাজী টেংক।
বুশে মত 'উইথ মি অর উইদাউট মি' বলা কি বন্ধ করবেন? অনেক টাইপের ছেলেমেয়ে আছে এই দেশে। আপনি হয়ত শুধু দুইটা পরিষ্কার টাইপ দেখতে পান, কিন্তু আরো অনেক ধরণের মানুষ আছে। আপনি আমাকেও চেনেননা, আমার কাজিনদের বাবা-মাদেরও চেনেন না, ফট করে একটা লেবেল লাগিয়ে দিলেই হল?
জ্বি, হলো। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসঞ্জাত লেবেলারোপ স্কিল।
আপনার কাজিনদের আপনি সচলায়তনের লেখা শেয়ার করে "ঠিক" শেখাতে চান। এর অর্থ, তাদের হাতে ইন্টারনেট কানেকশন আছে, এবং তারা বাংলা পড়তে জানে, এবং এই পোস্ট পড়ে বোঝার মতো বুদ্ধি তাদের আছে। অর্থাৎ তাদের বয়স বারোর বেশি। যেহেতু তাদের ঠিক শেখাতে চান, ধরে নেওয়া যায় তারা ঠিকটা এখনও শেখেনি। গত বারো বছরে যদি তাদের বাপ মা জামাতশিবির রাজাকার সম্পর্কে তাদের ঠিকটা শেখায় নাই। তাদের ফটকা বলেছি, কমই বলেছি।
দেশে অনেক ধরনের মানুষ আছে। কিন্তু জামাতশিবির প্রশ্নে মানুষ আছে দুই ধরনের। একদল জানে, আরেকদল কথা প্যাঁচায়। আপনি আর আপনার কাজিনের বাপমা দ্বিতীয় দলে।
আপনি যদি লেবেল না চান, ছাগুপনা করবেন না। আমরা ভোদাই না যে গোলগোল কথা শুনে হুহু করবো। ভালো না লাগলে ফুটেন, ঘাস মাঠে পাবেন।
কেন এদেরকে বোঝানো/জানানো/শেখানোর চেষ্টা করতে হচ্ছে সে বিষয়ে দীর্ঘ আলাপ করা যায়, কিন্তু প্রতিটা দ্বিমতেই যে কথাটা বোঝার চেষ্টা না করে গালি দেওয়া শুরু করে তার সাথে তর্কে আমি পারবো না।
আপনার দীর্ঘ আলাপ নিয়ে অন্য কোথাও যান। এখানে সুবিধা করতে পারবেন না।
এইখানে দেখেন শালিখ সাহেব
অজ্ঞাতবাস
@সুমন চৌধুরী, ধন্যবাদ। সেদিন ছাগু'র উৎপত্তির ইতিহাস পড়ার পর আপনাদের অবস্থা্নের কারণ অনেকখানি বুঝতে পারলাম, এই লেখাটাও হেল্পফুল। গালাগালির ক্ষেত্রে আমার আপত্তিটা একটু মডিফাই করি তাহলে। আমার মূল আপত্তি ছিল দশম এবং দ্বাদশ প্যারার শেষ লাইনগুলি নিয়ে। আমার মনে হয়েছে লেখার কনটেন্টকে প্রতিস্থাপন করেছে বাজে শব্দ। তীব্র রাগটাকে প্রকাশ করেছে কিন্তু রাগের চেয়েও চোখ পড়ছে বেশি শব্দগুলিতে আর লেখার কনটেন্ট (রাগের কারণ) থেকেও বেশি চোখে পড়ছে রাগটা।
যাই হোক, আমার মতটা আমি দিলাম। লেখা থেকে অনাবশ্যক গালি সরিয়ে নিলেই যে সেটা ছাগুবান্ধব হয়ে যায় তা না। আবার 'আমিও আছি, কিন্তু তবে' জাতীয় ত্যানা প্যাঁচানোও আমার উদ্দেশ্য না। এই ধরণের লেখা (জামাতের কার্যকলাপ নিয়ে) আরো পড়তে চাই এবং ছড়িয়ে দিতে চাই। ছড়াবার কাজটা এবং ছড়ানোর মাধ্যমে ভাবতে বাধ্য করাটা আমার পক্ষে যাতে সহজতর হয় সেটাই আমার স্বার্থ।
জামাত-শিবিরের প্রসঙ্গ আসলে যার মুখে ১০টা গালি আসে না, এরকম ব্যক্তি সমাজে যত শীঘ্র অনাবশ্যক হয়ে উঠে ততই দেশের মঙ্গল। যারা দুষ্টু জামাত-শিবিরকে মাথায় হাত বুলিয়ে বাবা-বাছা বলে পোষ মানানোর স্বপ্ন দেখে একসময় তাদের সবারই নিজেদের পাছায় হাত বোলাতে হবে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
গালি দিতে পারার সামর্থ্য বাড়িয়েছে জামাত-শিবির; কমিয়েছে বোধ যখন আপনি নিজে-ও সবকিছু’তে লিবারেল থাকতে চান, গালি দিতে ভুলে যান? সারা পৃথিবী জুড়ে গালাগালি-ও একটা স্পোর্ট যখন তাতে আক্ষরিক চাওয়া-পাওয়া মিন না করা হয়; সবাই গালি দেয়, যে দেয়না সেও থু মারে কিংবা যখন ‘কুকুর’ বলে তখন সেটা তার জন্য সর্বোচ্চ গালি’র পরিসীমা। যখন আপনার মা-বোন শাহবাগে যায় এবং জামাত-শিবির তাদের ‘পতিতা’ বলে ট্যাগিং করে, সেই মা-বোনদের ছবি তাদের ফেসবুক পেজে পোস্টিয়ে তাদের চারিত্রিক সনদপত্র দাবী করে তখন যদি আপনি মনে মনে-ও গালি না দিয়ে তাদের আদর করে বুঝাতে যান, তাহলে আপনার সমস্যা আছে।
দশম এবং দ্বাদশ প্যারার বাজে নামে অভিহিত শব্দগুলো যথেষ্ট রকম মোড়কে মোড়ানো; বরং যদি বলতেন যে বংশলতিকা ধরে টানাটানি না করলে-ও চলে তাহলে আপনার বারবার মন্তব্য করার কারণ জাস্টিফাই হতো। কনটেন্ট নষ্ট হয় হোক, শুদ্ধ ব্লগার হিসেবে কেন, সব ইস্যুতে শুদ্ধ মানুষ হিসেবে পরিচিত হওয়ার কোন ইচ্ছা আমার কোনদিন ছিলোনা। পাঠকের ঔচিত্যবোধের কাছে আমার সামগ্রিক চেতনা দায়বদ্ধ নয়।
যদি ধরে-ও নেই আপনি ত্যানা নন, তবুও খুব কৌতূহল হচ্ছে। ‘যদি বুঝতেন’ বলে যে পরিস্থিতি’র কথা বুঝাতে চেয়েছেন তাতে কি কারো কোন পারিবারিক ইতিহাস জড়িত? আমি দুইটা পরিবার এর কথা জানি যাদের সর্বাংশ জামাত কিন্তু দুই সাহসীনি সেখানকার বন্ধ গরাদ লাথি মেরে বেরিয়ে এসেছিলেন তাদের সন্তান-সহ। একটি ছেলের কথা জানি যে তাঁর বাবা জামাতি বলে একটা বয়সের পর প্রকাশ্যে গালাগালি করে বেড়াতো যত্রতত্র, আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম একবার। আনোয়ার জাহিদ বেঁচে থাকতে তার ছেলের চোখে যে ঘৃণা দেখে গেছে তার তুলনা মেলা ভার; যতদূর জানি ছেলেটা মারা গেছে। আমাদের আবেগ হয়তো সবকিছু’কে স্বীকৃতি দেয়-না কিন্তু এই পরিস্থিতি আমরা তৈরি করিনি, করেছে জামাত-শিবির। যে-কারণে গালি এখন তালি দিয়ে দেয়া হয়, হচ্ছে, হবে।
জামাত-শিবির ইস্যুতে সব আপত্তি গ্রহণযোগ্য নয়। আপনার স্বার্থরক্ষা করার কোন চেষ্টা আমি করবো-না এবং আমি মোটেই দুঃখিত নই। সব শালিকের ধানে রোগ!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আপনি পারসোনালি নেন কেন ভাই? গালি-তো আপনাকে দেয়া হয়নি। আর এখানে নোবেল সাহেবের ডাইনামাইট পুরষ্কারের জন্য কেউ লিখেনা।
শালিখ ভাই জামাত-শিবির প্রশ্নে 'উইথ মি অর উইদাউট মি' হওয়ার কথা। মাঝামাঝি তো কিছু থাকার কথা না। গালি শুনে যদি কেউ জামাত-শিবির করা শসুর করে বা ছাগু হয়, থালে বুঝতে হবে সে বাংলাদেশে বিশ্বাসি না।
শালিখ ভাই, আপনি কি বলতে চাচ্ছেন বুঝছি। তবে জামাতকে গালি দেয়া জিনিসটা কিন্তু অনেকসময় লিটমাস টেস্ট হিসাবেও কাজ করে। গালি দিয়ে যদি দেখেন কেউ বলতেছে, আহা আহা ওভাবে বলোনা একটু মিষ্টি করে বোকে দাও ওদের। তাইলে বুঝবেন ফেন্সিডিল মে কুচ কালা আছে।
শাহবাগ মুভমেন্টে আপনার বরাহশিকারের গানটা যোগ করে দিয়েন প্লিজ।
-রু
এখানে গালি কোথায় দেয়া হইসে?? খুঁজেপেতে তো একটাও পেলাম না।
ফারাসাত
সেটাই। আমি বরং আমার প্রাক্তন কলিগের কাছ থেকে লিখা’র উপর ভাল ফিডব্যাক পেলাম যিনি গালাগালি একদম পছন্দ করেন-না।
এই যুদ্ধে হয় কেউ বাংলাদেশের পক্ষে নয় বিপক্ষে, কোন মাঝামাঝি কিছু নাই। যারা বলে মাঝামাঝিদের তো বোঝাতে হবে, তাদের সবার আগে গদাম দেয়া উচিত। যে নিজের মাতৃভূমি নিয়ে দ্বিধায় ভোগে তার মতো মহাবাল আর পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নাই।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
সবাইকে মন্তব্য করার জন্য আলাদা আলাদাভাবে ধন্যবাদ।
প্রজন্ম চত্বরে আর সারা বাংলাদেশে যা হচ্ছে তাতে
নতুন মন্তব্য করুন