‘ওই দেখ না
ছন্দ-মিলের আনাগোনা-
পথের উপর নাচল কি-হে একটা চড়াই?’
“চড়ুই কোথা, একটা ময়ূর, রূপের বড়াই,
টিপ দিয়েছে টিয়ে!”
‘বল কী এ!’
“বাউণ্ডুলে ফিঙেটাকে-ও যাচ্ছে দেখা
একলাটি সে একলা একা
যাচ্ছে হেঁটে, খঞ্জনা তার পিছু পিছু--”
‘বল কী হে- এতকিছু!’
“বলছি শোনো তবে-
খুব তাকালে দেখতে পাবে
ঘুঙুর বেঁধে নাচছে ভীষণ মুনিয়া’টি;
দাঁত দু’পাটি
খুলে রেখে নাইতে গেছেন হাঁড়িচাচা,
পানকৌড়ি ত্যাগ করেছে জলের খাঁচা,
কাদাখোঁচা নাচছে মেখে কাদা--”
‘আর বলো না, কান ধরেছি দাদা!’
“পাপিয়াটার চোখ গিয়েছে,
পিউকাঁহা তাল খুব উঠেছে,
জলপিপি তার আদ্যিকালের জল-পাহারা...
বুলবুলি সব মাতোয়ারা,
তাই-না দেখে গান ধরেছে শ্যামা...
দোয়েল ছানা পলক পড়ে, আর নড়ে না-
শর্ষে মেখে বউ-কথা-কও যায়,
পালকি চলে বাঁশপাতি-দের ছয় বেহারায় --
শব্দ শুনে হুতুম বলে- শোর করে-না রাত জেগেছি--”
‘আর বলো না, আর বলো না, পালিয়ে বাঁচি!’
“গাছের সাথে খুব যে লড়াই-
কাঠঠোকরার দাঁতের সারাই
ভুলে গিয়ে উঠোন জুড়ে ধান ছড়ালেন শালিক;
বাবুই ছানা ডিমের ভেতর,
ঘুম ভাঙেনি পায়নি খবর-
ঈগলগুলো পালিয়ে গেছে ঠিক!
চিল-আর শকুন হার মেনেছে কবে--”
‘থাকুক তবে!
বলতে পার, মূর্ছারোগের ওষুধ পাব কোথা?’
“পক্ষীকুলে বদ্যি আছে তোতা!
তিতির-মশাই খুদ দেখে তাই খুব খুশীতে নাচে,
এক হরিয়াল রোদ পোহালেন পাখার আঁচে,
বকগুলো সব একটা পায়ে তাকিয়ে থাকে দূ--র...
হলদে-পাখি’র পায়ে নূপুর,
বালিহাঁস এর চুল পেকে সব লাল;
মান ভাঙে-নি একটা সরাল, ছাতারে তাই হাতের রুমাল
ফেলে দিয়ে যাচ্ছে কোথায় রেগে!
বটের’গুলো দিব্যি আগে
যাচ্ছে মেখে বটগাছদের রঙ...
যখন জলের নীল প্রয়োজন
যাও ভিড়ে যাও গাঙচিলদের দলে--”
‘আমায় কী ভাই পাগল পেলে!’
“কোকিল গেছে কাকের বাড়ী,
চন্দনা তার পেঁচিয়ে শাড়ী,
টুনটুনি আর ময়না সাথে যায়,
আর দু’জনের নতুন জামায়
দেয় মিশিয়ে রংতুলি সব রঙ!
ঘুঘুটা আজ খুব করে ঢং
চুপটি করে থাকলো বুঝি বসে!
মাছরাঙা তার চোখের পাশে
তাকিয়ে দেখে সারস নামে জলে...
কাকাতুয়া শেকল খুলে
তাকিয়ে দেখে আকাশ মানে স্বাধীনতার নীল...
ডাহুকগুলো অন্তঃসলিল,
কোয়েল দেখে- সব কবুতর খেলছে কানামাছি--”
‘থামবে যদি হার মেনেছি!’
“হার মেনো না, কোনদিন পরাজয় মেনে নিতে নেই --
একটা শ্বেতশুভ্র পায়রা উড়লেই
দেখ- পৃথিবী কি অদ্ভুত বিশ্বাসে থাকে সুনিশ্চিত স্থির!”
উৎসর্গ: বাংলাদেশের শিশু, কিশোর-কিশোরী- যারা নিজ দেশে’র পাখি’দের মনে রেখেছে এখনো...
মন্তব্য
দুর্দান্তিস...
আচ্ছা এইটা নিয়ে পিচ্চি-পাচ্চাদের জন্য রঙচঙে বই করা যায় না?
সুজন্দা পাখিগুলোর ইলাস্ট্রেশন করে দিলেন...
তারেক অণু ছবি সাপ্লাই দিলেন...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ সাক্ষী সত্যানন্দ।
বাহ চমৎকার
ধন্যবাদ।
তানিম ভাই, এত সুন্দর একটা ছড়া!
অন্ত্যমিল আর তাল আরেকবার দেখে দেবেন? পড়তে গিয়ে আটকে আটকে যাচ্ছে! রোমেল ভাইয়ের মত হলে ধরে দিতে পারতাম কোথায় কী হচ্ছে- তাও পারি না-
কিছু মনে করেন নি তো!? এ লেখাটায় খুঁত সহ্য হচ্ছে না!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
কিছুই মনে করিনি, বরং ভাল লেগেছে। দেখবো, মনের আনন্দে একটানা লিখা, আমি দেখবো, কথা দিচ্ছি।
আমার মাথার ভেতর একটা তাল কাজ করছিলো লিখার সময়, কয়েকটা জায়গায় এসে সেই তাল বদলে গেছে এই কথা বলতে পারি। বাকি’টা দেখবো। ধন্যবাদ মর্ম।
আহ হৈ চৈ...
হবে, আরও সময় নেবে মনে হয়, তবে হবে একদিন। তখন না হয় ভিন্ন আরেকটা লেখা যাবে। সমস্যা নেই।
নিশ্চয়ই হবে। হতেই হবে
ডাকঘর | ছবিঘর
হ!
চমৎকার
অপূর্ব / শুভেচ্ছা ।
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
কবি’কে ধন্যবাদ।
মিলে-অমিলে মিলিয়ে মজার ছড়া হইছে
আর পাখী-পরিচিতি হয়েছে খুব-ই সুন্দর ভাবে।
- একলহমা
ধন্যবাদ একলহমা।
লেখায় পাঁচতারা।
____________________________
ধন্যবাদ প্রোফেসর সাহেব!
-নিয়াজ
ধন্যবাদ।
বাহ্ !
ধন্যবাদ।
দুরন্ত।
আরও ছড়া চাই, দিতি হপে দিতি হপে
ডাকঘর | ছবিঘর
দারুণ তো
ধন্যবাদ
নতুন মন্তব্য করুন