সিগারেটের গোড়াটা অ্যাশট্রেতে পিষতে গিয়ে দেখলাম কাঁপছে হাতটা। মাথাটা হালকা ঘুরছে, ভেতরে কেমন একটা চাপ ধরা অনুভূতি। কাঁপা কাঁপা হাতে আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। কষে একটা টান দিয়ে কায়দা করে ধোঁয়া ছাড়লাম। অস্থির ভাবটা কেন যেন কাটছে না কিছুতেই। অবশ্য এত তাড়াতাড়ি হয়ত কাটবেও না। কারণ কিছুক্ষণ আগেই আমি একটা খুন করেছি। না, পাঠক, আতকে উঠবেন না। শুনতে খুব নির্লিপ্ত বা ভাবলেশহীন মনে হলেও ব্যাপারটা আমাকে যে একদমই নাড়াচ্ছে না তা নয়। বরং ভীষণভাবে অস্থির করেছে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, এটাই আমার প্রথম খুন নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার খুন করেছি, খুন করে স্বভাববশত সিগারেট ফুঁকে তা বেমালুম ভুলে গেছি, এমনকি পরবর্তী খুনের পরিকল্পনা পর্যন্ত করেছি! তবে এই প্রথমবারের মত মাথা থেকে দূর করতে পারছি না কিছুক্ষণ আগের খুনটা। এমনকি ক্ষনিকের জন্য কি কিছুটা অনুতাপও উকি দিয়ে গেল না!
রাস্তার পাশের টং দোকানটাতে কয়েকটা ছেলে জটলা পাকিয়েছে। ওদের আড্ডার আওয়াজ ছাপিয়ে এখনো কানে ভাসছে রূপার আর্তচিৎকার, জীবন বাঁচানোর শেষ আকুতি। কতই বা বয়স হবে মেয়েটার! পঁচিশ কি ছাব্বিশ হয়ত! জীবনের আরো কতটা পথ তো বাকিই ছিল ওর। বেঁচে থাকলে হয়ত বিয়েও করত ওর ভালবাসার মানুষটিকে। ঘরসংসার করত, ছেলেপুলে মানুষ করত। বৃষ্টি দেখলে হয়ত এক দৌড়ে গিয়ে ভিজতে শুরু করত অথবা ভরা জোছনায় থালার মত চাঁদ দেখে ছোট্ট কিশোরীর মত মুঠো পাকিয়ে ধরার চেষ্টা করত অথবা বিকট আওয়াজে বজ্রপাতের শব্দে হয়ত স্বামীর কাছে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজত। মেয়েটার সাথে আমার পরিচয়, জানাশোনা মাত্র মাসখানেকের। এর ভেতরেই কেমন কেমন করে যেন এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। না হলে কি আর এই প্রথমবারের মত সব নিয়ম ভেঙে এত খারাপ লাগে! অনেকবারই অনেকের কাছে শুনেছি, জন্ম-মৃত্যু সবই নাকি উপরওয়ালার হাতে। কিন্তু এই প্রথমবারের মত মনটা তা মানতে সায় দিল না। রূপার মৃত্যুর দায়ভার কি পুরোটাই আমার উপর বর্তায় না!
চিন্তায় ছেদ পড়ল দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজে। ওই মনে হয় প্রকাশক এসেছে! গত একমাস ধরে ঘুরঘুর করছে নতুন কোন লেখার জন্য। দরজার দিকে এগোতে গিয়ে চোখ পড়ল টেবিলের উপর রাখা পান্ডুলিপির শিরোনামের উপর, 'রূপার চোখে জল'। ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবলাম আজ মনে হয় পান্ডুলিপি না নিয়ে ব্যাটা নড়বেই না!
মন্তব্য
প্রথমে ভাবলাম, খুনটা কে হলো! জ্যোতি না তো! বয়সও মেলে। এতদিন পরে হয়তো সে-ই খুন হতে চাইলো। পরে দেখি রূপা! তারও পরে দেখি, হিমুর হাতে একখান নীলপদ্ম। সাসপেন্স আর সাসপেন্স। পরের দৃশ্যে শ্যারন স্টোনের বেসিক ইনস্টিংক্ট ধাওয়া না করায় রূপা এ যাত্রা বেঁচেই গেলো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
জ্যোতিরে করব আমি খুন! আমার ঘাড়ে ভাই কয়টা মাথা?
বেসিক ইন্সটিংক্ট!
এ যাত্রায় বাঁচলেও দেখি পরের যাত্রায় কেমনে বাঁচে ও!
বেশী জোশ!!
পাঁচ তারা...আর জাঝা
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।
ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।
থেংকু!
হিহি মজা হইসে
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
হাচা কতা?
- অরে খাইছে রে!
বিডিআর ভাই এক্কারে বুক ঢিপঢিপ করাইয়া সারছে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বুকে একটু থুতু দেন, ডর কাইটা যাইবো!
পাঁচ তারা রে পাঁচ তারা!
সাসপেন্স আর কারে বলে!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ভালা হইছে....ভরপুর রহস্য
কল্পনা আক্তার
................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
ঠেংখ্যু আফামনি!
বেশ লাগলো।
তবে মনে হয়, কিছুটা মেদ ঝরালে এ থেকে দারুণ একটা অণুগল্প হতে পারতো।
একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। গুরুত্ব না দেয়াই উচিত হবে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি একগামী পুরুষ। একমাত্র নারীদের ভালোবাসি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
এইডা কি কইলেন! গুরুত্ব কেন দিব না! বরং আমি আপনার কথার সাথে ভীষণভাবে একমত। কারণ আমি আগেও বলছি, আমি লিখতে পারি না, সচলায়তনেই শুরু। আপনাদের মূল্যবান মতামত না পাইলে শিখব কেমনে!
প্রথমত বলি গল্পটা ভালো হইছে...
দ্বিতীয়ত বলি হ্যাপী বার্থ ডে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রথমত বলি ধন্যবাদ।
দ্বিতীয়ত বলি ধন্যবাদ।
রনি এই গল্পটা আসলেই খুব ভালো হইছে ... তুমি তো খুব অল্প সময়ে ওস্তাদ হয়ে গেছ
হ্যাপী বাড্ডে
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
ওস্তাদ!
না রে ভাই, আমি এখনো শেখার পর্যায়ে আছি।
থেংকু!
কঠিন! কঠিন! টেনশনে ঘারের কাছে যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছিল।
আমারে মারেন আর যাইই করেন একটা কথা বলি, এবারেও শেষ প্যারাটায় কিন্চিত টান বেশী পড়েছে। এটা দোষ ধরা না, আমার মন্তব্য বলছি। দোষ ধরার মতোন বস পাবলিক এখানে আছে অনেকেই। ওনারা ধরলে আপনি সৌভাগ্যবান!
শেষ প্যারাটা আরেকটু সংক্ষেপ করা যেত। আরেকটু ইঙ্গিতময়।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
মারব কেন বস! আপনে তো আপনার মতামতটাই দিছেন। আর আমিও চাই মতামত আসুক। বরাবরের মত আবারো বলি, আমি এখনো লেখালেখি শিখতেছি। তাই, আপনাদের মন্তব্য থেকেই ধীরে ধীরে আরো শিখব আশা করি।
নতুন মন্তব্য করুন