- এক –
১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল ঘূর্ণিঝড় তান্ডবের একদিন পর প্রথম পাতা জুড়ে দৈনিক ইত্তেফাকের শিরোণাম ছিল- ‘কাঁদো বাংলাদেশ কাঁদো’। আজ এত বছর পরেও ওই রাতটা এখনো স্মৃতিকে তাড়া করে। তখন কতই বা বয়স। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ক্লাস নাইনে বা টেনে পড়ি। এরপর জীবনে ভালো-খারাপের মিশেলে আরো অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে; কিন্তু এমন একটা বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা আর কখনো হবে বলে আমার মনে হয় না। মৃত্যুকে অমন কাছ থেকে এত দীর্ঘক্ষণ সেই প্রথম দেখা হয়েছিল।
আমার মনে আছে, ২৯শে এপ্রিলের আগেও চট্টগ্রামে একবার ‘দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত’ দেয়া হয়েছিল। ওটা ছিল ‘ফলস এলার্ম’। তাই ২৯শে এপ্রিল যখন আবার দশ নম্বর সংকেত দেয়া হল আমি সেটাকে পাত্তাই দিতে চাই নি এবং আমার ধারণা চট্টগ্রামের অধিকাংশ লোকের মনোভাবও ঠিক আমার মত ছিল। তখন কি আর জানতাম কী এক ভয়ংকর রাত অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য! রাত আটটা/নয়টার দিকে দেখলাম বিটিভি-র নিয়মিত অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে হামদ-নাত পড়া শুরু হয়ে গেল। এই সময় আমরা একটু অস্থির হলাম। বাসায় তখন শুধু আমি আর আম্মা। ভাইয়াও চট্টগ্রামে, তবে ফৌজদারহাটে ক্যাডেট কলেজের হোস্টেলে, আব্বা তখন দেশের বাইরে। রাতের খাবার শেষে যখন ঘুমাতে গেলাম, বাইরে তখন হালকা ঝড়ো বাতাস এবং বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
কিন্তু একটু পর আমরা আর ঘরে থাকতে পারলাম না। দোতালায় আমাদের রুমগুলোর জানালা ছিল বাইরের দিকে। ঝড়ের এমনই তান্ডব শুরু হল, বাতাসে প্রথম জানালার ছিটকিনি খুলে গেল, তারপর ঝনঝন করে সব কাঁচ ভেঙ্গে পড়ল। রুমের মধ্যেই তখন শুরু হয়েছে ঝড়ের নৃত্য। বাতাসে আমার বই-খাতা, জিনিষ-পত্র সব উড়ছে। বেডরুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমরা ড্রইং রুমে এসে জড়ো হলাম। একমাত্র এই ঘরটার বাইরের দিকেই কোন জানালা-দরজা নেই। বাইরে তখন প্রকৃতি প্রচন্ড আক্রোশে গর্জে চলেছে। দরজা-জানালা, বাড়ীটা এমনভাবে কাঁপছে, মনে হচ্ছে উড়ে চলে যাবে যে কোন সময়। তখন প্রতিটা মূহুর্ত মনে হচ্ছিল অনন্তকাল; শুধু ভাবছিলাম এই ঝড় কখন শেষ হবে, আগামী দিনটা কী দেখতে পাব?
ঘরের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। হঠাৎ খুব ইচ্ছে হল বাইরেটাকে দেখার। আম্মার নিষেধ অগ্রাহ্য করে ড্রইংরুমের দরজা খুলে বাইরে যা দেখলাম তাতে রক্ত হিম করা একটা ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা হল! দেখলাম ওই প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যে একটা আগুন কুন্ডলী সাপের মত হিস হিস শব্দ করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই অদ্ভূত ঘটনার ব্যাখা আজও আমি পাই নি। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, পরদিন ঝড় থামার পর দেখলাম, শহরে যে সব গাছ তখনো অক্ষত আছে সেসব গাছের পাতা প্রায় সবই পুড়ে কালো হয়ে গেছে! পৃথিবীর আরো অনেক ঝড় নিয়ে পরে ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, কিন্তু ঝড়ের সময় এমন আগুন কুন্ডলী ছোটাছুটি করার আর গাছের পাতা পুড়ে যাবার কথা আর কোথাও শুনি নি।
যাই হোক, এক সময় ঝড় থেমে গিয়ে ভোর হল। চট্টগ্রাম তখন এক মৃত নগরী...
- দুই –
যুদ্ধের পর একটা শহর যেমন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়, ২৯ শে এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ের পর চট্টগ্রাম শহর ঠিক তাই ছিল। পথের পাশে পড়েছিল ইতস্তত বিক্ষিপ্ত লাশ, রাস্তা জুড়ে ছিল উপড়ে পড়া গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, ঘর-বাড়িগুলো দুমড়ানো-মুচরানো, আর লাশের পচা গন্ধ থেকে থেকে বাতাসটাকে ভারী করে তুলছিল। মানুষ যত না ঝড়ে মারা গিয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশী মরেছিল জলোচ্ছ্বাসে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে ৪-৫ মাইল অভ্যন্তরের প্রায় সব মানুষই বোধহয় নিহত হয়েছিল ২৫-২৬ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে। মানুষ তিনতলায় আশ্রয় নিয়েও পানির হাত থেকে বাঁচতে পারে নি।
প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোক এ ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারিয়েছিল। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল উপকূলবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলগুলো। কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সন্দ্বীপ, বাঁশখালী এসব এলাকায় অনেক জনবসতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। বাঁশখালীতে আমাদের দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয় পরিবারের সবাই নিহত হয়েছিলেন।
ঝড়ের পর অনেক দিন চট্টগ্রাম শহরে কোন বিদ্যুত ছিল না। রাত নামলে শহরটা হয়ে যেত এক ভূতের নগরী। অন্ধকারে হেঁটে বেড়াতাম এ-গলি, ও-গলি। শহরটাকে মনে হত শয্যাশায়ী, মূমুর্ষ কোন আপনজন প্রচন্ড ব্যথায় ছটফট করছে। মানুষের লাশগুলো দু’একদিনের মধ্যেই সৎকার করা হয়েছিল। কিন্তু গরু-ছাগলের মত অবলা জীবগুলোর সৎকারের ভার কেউ নেয় নি। লাশগুলো পথের পাশেই ফুলে-ফেঁপে উঠছিল। কে করবে ওদের জন্য, মানুষ বাঁচানোই তখন দায় হয়ে পড়েছে। স্বজনহারা গৃহহীন, খাদ্যহীন, বস্ত্রহীন নর-নারী তখন পিলপিল করে আসছে ফুটপাতে, রেলস্টেশনে। কাঁদো মানুষ কাঁদো। একদিকে দেখছি নির্লজ্জ কিছু সাংবাদিক আব্রুহীন নারীর ছবি তুলছে তাদের চমৎকার রিপোর্টের সাবজেক্ট হিসেবে, অন্যদিকে কিছু মানুষ অবলীলায় গায়ের জামা, মানিব্যাগ তুলে দিচ্ছে মায়ের সম্মান রক্ষার্থে। পতেংগায় শুনলাম ঢাকা থেকে তামাশা দেখতে আসা কিছু মানুষকে স্থানীয় লোকেরা তাড়া করেছিল। ছবি চাই না, ত্রাণ চাই।
মাঝে মাঝে কর্ণফুলী ব্রীজের পিলারের নীচে গিয়ে বসে থাকতাম। কর্ণফুলীর ঢেউ তখনও প্রমত্তা সমুদ্রের মত। ঝড়ের সময় কোটি টাকা দামের ক্রেন ‘শক্তিমান’ নোংগর ছিঁড়ে ব্রীজটাকে আঘাত করে দুই ভাগ করে ফেলেছে। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ। ক্রেনটাও একপাশে অনেকদিন ডুবে ছিল। দুঃখের মধ্যেও সবচেয়ে মজার ঘটনা ছিল ঝড়ের সময় বিমান বাহিনীর কিছু দামী ফাইটার প্লেন বাইরে রাখা ছিল, ঝড়ের পর ওগুলোকে খেলনা প্নেনের মত দুমরানো-মুচড়ানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। হায় রে বিমান বাহিনী! এইটুকু কমন সেন্সও নাই।
এত দুর্যোগের মাঝেও যাদের কথা না বললেই নয়, তারা ছিল ভিনদেশী। গালফ ওয়ার থেকে দেশে ফেরার জন্য উন্মুখ ৭ হাজার সৈন্যের বিশাল একটা মার্কিন বাহিনীকে আমেরিকার বদলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হল দুর্গতদের সাহায্যের জন্য। ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম’ হয়ে গেল ‘অপারেশন সী এঞ্জেল’। এটা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ একটি ত্রাণ কার্যক্রম। লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেনরী স্ট্যাকপোল জাপানের ওকিনাওয়া থেকে এসে যোগ দিলেন অপারেশন কমান্ডার হিসেবে। আসলেই দেবদূত ছিল ঐ সেনাগুলো। আমাদের মত স্কুল ছাত্রদের যাদের পড়াশোনা কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাদের কাজ ছিল মন্ত্রমুগ্ধের মত প্রায় প্রতিদিন ঐ সেনাদের কাজ-কর্ম দেখা। তখন বিশুদ্ধ পানির খুব অভাব ছিল। সাগরের পানি এসে পুকুর, জলাশয়ের সব পানি দূষিত করে ফেলেছিল। আমরা অবাক হয়ে দেখতাম, সেনারা পুকুরের ময়লা পানি একটা বিশাল যন্ত্র দিয়ে সাকশন করে আবার কিছুক্ষণ পরেই পরিষ্কার পানি পুকুরে ফেলত। মানুষ খালি তাজ্জব হয়েই দেবদূত-দের কাজ-কর্ম দেখত। আমার এখনো মনে হয়, ঐ সময় মার্কিন সৈন্যরা না আসলে এত তাড়াতাড়ি দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। ২৯ শে এপ্রিলের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জেনারেল স্ট্যাকপোল ২০০৫ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন।
ঝড়ে যে গাছগুলোর পাতা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল, আমার জানালা দিয়ে তা দেখতে দেখতে ভাবতাম এ শহর কি আবার আগের মত সেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাবে? একদিন বিস্মিত হয়ে দেখলাম মরা গাছে আবার সবুজ, কচি পাতা ধরেছে। তিন মাসের মধ্যেই গাছগুলো সতেজ হওয়া শুরু করল, প্রকৃতি তার ক্ষতে নিপুণ হাতে প্রলেপ লাগিয়ে দিতে লাগল। ছয় মাস পর এ শহরকে দেখে আর বোঝার উপায় রইল না এর উপর দিয়ে কী ঘটে গিয়েছিল। আমরাও স্বজন হারানোর বেদনা, দুর্যোগ সব কিছু ভুলে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। প্রকৃতি এক বিশাল বিস্ময়, তার চেয়েও বোধহয় বিস্ময়কর আমাদের জীবন!
মন্তব্য
শেষ খবরঃ ঘূর্ণিঝড় নার্গিস
=======================
বাংলাদেশে বর্ষা-পূর্ব এবং বর্ষা-পরবর্তী দুটো ঘূর্ণিঝড় মৌসুম। সিডর দেখেছিলাম আমরা গত বর্ষা-পরবর্তী মৌসুমে। এবার বর্ষা পূর্ব মৌসুমে এসেছে নার্গিস। এখনো ভয়ের কিছু নেই। ভারত উপকূলের কাছে ক্যাটাগরি দুই মাত্রা (বর্তমানে ঘন্টায় গতিবেগ ৮৫ নট) শক্তি নিয়ে এটি এখন অবস্থান করছে এবং খুব ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে (ঘন্টায় মাত্র ৪ নট বেগে)। পূর্বাভাস অনুযায়ী এটা বাঁক নিয়ে বাংলাদেশ বা মায়ানমার উপকূলের দিকে আসতে পারে। তেমন খারাপ কিছু ঘটলে আপডেট নিয়ে হাজির হব।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
অসাধারণ লাগলো প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ। আপনার দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার পেছনে এই অভিজ্ঞতা কিছু কাজ করেছে কি না জানতে ইচ্ছে করে।
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস স্মরণ করে গত বছর নভেম্বরে একটা স্মৃতিচারণমূলক লেখা পোস্ট করেছিলাম। দেখেছিলেন কি?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
এভাবে বলা যেতে পারে আমি যদি অন্য পেশায়ও থাকতাম তবে শুধু এ অভিজ্ঞতার কারণেই এ ব্যাপারে কিছু করার চেষ্টা করতাম। ভাগ্যের ফেরে আমার পেশা আর সুপ্ত বাসনা এক বিন্দুতে মিলে গেছে
আপনার স্মৃতিচারণমূলক লেখা দুর্দান্ত হয়েছে। আগেও দেখেছিলাম মনে পড়ছে, হয়ত ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য করা হয় নি।
হিস্টরি চ্যানেলের ওয়েবসাইটে ১৯৭০ সাইক্লোনের একটা ছোট্ট ফুটেজ আছে। এখানে লিংক
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
লেখা দিয়ে ঘটনাটা চোখের সামনে নিয়ে আসলেন একেবারে।
আগুনের ব্যাপারটা বেশ কৌতুহলোদ্দীপক। কোন চুলা থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল হয়তো বাতাসের জন্য, আর বৃষ্টির জন্য সেটা বাড়তে পারছিল না .... .... কে জানে। নিশ্চয়ই এর কোন ব্যাখ্যা আছে।
কয়েকটা টাইফুন দেখার সুযোগ হয়েছে জাপানে থাকতে। ... ... ওগুলো দেশে হলে সেই একই রকম কেয়ামত হয়ে যেত। জাপান বলেই হয়তো ক্ষয়ক্ষতি বেশ কম হয়েছিল। একবারতো পানি সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল কয়েকমাস - জলাধারটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া বিরাট বিরাট ভুমিধস হত পাহাড়ী এলাকায়।
এ প্রসঙ্গে একটা গবেষণা ফলাফল দেখেছিলাম। তাঁদের গবেষণা বলে - পাহাড়ে বড় গাছ থাকলে ভুমিধসের আশংকা বেড়ে যায় ঝড়ের পরে! কারণ বাতাসে বড় গাছগুলো যত নড়াচড়া করে তাতে গোড়ার মাটি সব আলগা হয়ে যায়। তাদের একটা সিমুলেশন মডেলও ছিল ঐ ঘটনার ব্যাখ্যা নিয়ে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
দ্বিমত পোষণ করছি।
চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, পরিবেশবিদ ফিলিপ গাইন ও সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গাসহ অনেকের গবেষণাপত্রে আমি কিন্তু বিপরীত বিষয়টিরই উপস্থাপনা দেখেছি।
গাছ-পালার শেকড় মাটি আবদ্ধ করে রাখে। এ জন্য পাহাড়ের ভূমিক্ষয় ও ভূমিধ্বস রক্ষা পায়। গভীরভাবে পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে, গত তিন দশকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে নির্বিচারে পাহাড়ের বন-জঙ্গল উজাড় করা এবং পাহাড় কেটে সেখানে অপরিকল্পিতভাবে বসতি স্থাপন করার জন্য পাহাড় ধ্বসের সংখ্যা এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে।
ধন্যবাদ।
----
দেখুন: গত জুনে চট্টগ্রামে পাহাড় ধ্বসে শতাধীক নিহত হওয়ার ঘটনার ওপর ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয়।
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
গবেষণার ফলাফল দেখে অন্য সকলের মত আমিও একটু অস্বস্তিতে নড়াচড়া করেছিলাম।
হতে পারে, ওরা যে সকল মাটির কথা বলছে সেই মাটির গঠনের সাথে আমাদের মাটির গঠনের (টেক্সচার) অনেক অমিল। কাজেই একই ফলাফল খাটবে না। আর গবেষণাটাও কোন জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। সুতরাং ওটা ভুল হওয়ার বিরাট সম্ভাবনা আছে।
আর জাপানের টাইফুনের সাথে আমাদের এখানকার টাইফুনেরও কিছুটা অমিল আছে। চারিদিকেই সমূদ্র এবং ভূ-ভাগের ভৌগলিক গঠন ভিন্ন বলে প্যাটার্নটা একটু অন্যরকমই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
হতে পারে, ওরা যে সকল মাটির কথা বলছে সেই মাটির গঠনের সাথে আমাদের মাটির গঠনের (টেক্সচার) অনেক অমিল। কাজেই একই ফলাফল খাটবে না। আর গবেষণাটাও কোন জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। সুতরাং ওটা ভুল হওয়ার বিরাট সম্ভাবনা আছে।
ঠিক বলেছেন। ভূমিধ্বসের জন্য মাটির গঠন অনেকাংশে দায়ী। তবে ভূমিধ্বস পৃথিবীর যেখানে যেখানে হয়, সব ধরণের মাটির গঠন নিয়েই গবেষণা হয়েছে। কোথাও গাছপালা থাকলে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা এমনটি পাই নি। আপনার দেখা গবেষণাপত্রের একটা লিংক দিলে ভালো হত।
আর জাপানের টাইফুনের সাথে আমাদের এখানকার টাইফুনেরও কিছুটা অমিল আছে। চারিদিকেই সমূদ্র এবং ভূ-ভাগের ভৌগলিক গঠন ভিন্ন বলে প্যাটার্নটা একটু অন্যরকমই।
আমি তো জানতাম নামের ভিন্নতা ছাড়া ক্রান্তীয় অঞ্চলের সব ঘূর্ণিঝড়ের প্যাটার্নই একরকম। এই তথ্য কোথায় পেলেন?
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
গবেষণাপত্র নয়, প্রেজেন্টেশন ছিল। প্রেজেন্টেশনটা যে দেখেছিলাম সেটা বেশ মনে আছে। তবে সেটা ছিল জাপানিতে। জাপানে সবকিছুই ফেলে এসেছি। স্মৃতিটুকুই ভরসা।
ভূমিধ্বসের ঐ গবেষণাটা ভুয়া হতে পারে। তবে ওদের যুক্তি ছিল গাছগুলোর নড়াচড়াতে মূল উল্টা মাটি নড়াচড়া করিয়ে দেয়। তবে এখন মনে হচ্ছে ওদের ঐ অনুমানটা শুধু বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সত্য হতে পারে। ওখানকার সেই টাইফুনটা পুরা জাপানের পেট চিরে দক্ষিন থেকে উত্তরে গিয়েছিল (২০০৬ সালের টাইফুন-১৪/ টাইফুন-১৬ হবে সম্ভবত) ... ওকিনওয়া থেকে কাগোশিমা দিয়ে ঢুকে নাগাসাকি দিয়ে সমূদ্রে বের হয়েছিল। আবার শক্তি সংগ্রহ করে মূল ভূখন্ডে ঢুকেছিল। টাইফুন যখন নিগাতার উপর দিয়ে যায় তার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে ওটার প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে মাটি এমনিতেই নরম হয়ে গিয়েছিল। তারপর টাইফুনের বাতাস যখন গাছগুলোকে কাত করে প্রায় শুইয়ে ফেলে তখন মাটিতে গেড়ে থাকা মূলগুলো মাটিসহ উপড়ে আসে .. অনেকটা লাঙ্গল দিয়ে মাটি উল্টানোর মত করে। গাছগুলো না থাকলে হয়তো এত মাটি আলগা হত না ............................ ওদের বক্তব্য অনেকটা এই ধরণের ছিল (জাপানিতে আমার দক্ষতা মধ্যম থেকে নিম্ন .. সুতরাং বোঝার ভুল থাকতে পারে।)
টাইফুনের ধরণ যে দেশে কী ধরণের সেটা আসলেই আমি জানি না। জাপানে থাকার সময় যে কয়বার টাইফুনের কেন্দ্র আমার শহরের (মিয়াজাকি) উপর দিয়ে গেছে ... টাইফুনের পর বৃষ্টি কম হয়েছে। আর কেন্দ্র/চোখের যাত্রাপথ থেকে দূরত্বটা ৫০ কি.মি.এর মত হলে বেশুমার বৃষ্টি হত। সমূদ্র থেকে বেশ দুরে ঢাকার সমতল ভূপ্রকৃতি আর জাপানে প্রশান্ত মহাসাগরের কূলে পাহাড়ি ভূ-প্রকৃতির কারণে হয়ত অভিজ্ঞতাগুলো ভিন্ন হয়েছিল।
এখন আপনার কথা আর অভিজ্ঞতা শুনে মনে হচ্ছে আসলেই সবজায়গায় একই রকম ঘটে, তবে ওখানকার অবকাঠামোগত শ্রেষ্ঠত্বের জন্য বৃষ্টির পরিমানটা অনুমান করা যেত না। ঢাকা সঙ্গে ওটা তুলনা করাই ভুল ছিল আমার। টাইফুনের কেন্দ্র, সমূদ্র থেকে দূরত্ব, এবং ভূ-প্রকৃতি বিচারে ঢাকা আর মিয়াজাকির(Miyazaki) মধ্যে বিস্তর তফাৎ। ঢাকায় তো আধাঘন্টা জোরে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা হয় .... ওখানে জলাবদ্ধতাই দেখিনি কখনো।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এ ব্যাপারে বিপ্লব ভাইয়ের সাথে একমত। অতিবৃষ্টি অথবা ভূ-কম্পনের ফলে ভূমিধ্বস হয়। ঘূর্ণিঝড়ের সময় বৃষ্টি বেশী হলে তা মাটিকে নরম করে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধ্বস ঘটাতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্য মাটির গঠন প্রকৃতি অনেকাংশে দায়ী। গাছপালার শেকড় বরং মাটিকে ধরে র্রেখে ভূমিধ্বসরোধে সাহায্য করে। ভূমিধ্বস রোধে গাছপালার শেকড়ের ভূমিকা সম্পর্কে এই রিসার্চ পেপারটা দেখতে পারেন।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
... আমি তখন অনেক ছোট। তেমন কিছু মনে নাই। পোর্ট কলোনিতে আমাদের একতলা বাসায় ভোরে পানি বেড়েছিল আব্বার কোমর পর্যন্ত, আমাদের দু'টো ইউক্যালিপ্টাস গাছ ছাদে হেলে পড়েছিলো ঝড়ে। তবে ঝড়ের পর অনেকদিন আমাদের এলাকায় কারেন্ট ছিলো না সেটা মনে আছে।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
হুম। পতেঙ্গার আশেপাশে বন্দরটিলা পর্যন্ত অবস্থা বেশী খারাপ হয়েছিল।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
মাত্র ছাত্র জীবন শেষ করেছি তখন। এখনো মনে আছে, সংবাদপত্রে দেখা সেই ভয়াল রাতের ওপর পাভেল রহমানের তোলা কিছু অসামান্য আলোকচিত্রের কথা।
তানভীর ভাই, আপনার এই লেখার ছবিটিও সম্ভবত তারই তোলা। আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাটি খুব চমৎকারভাবে লেখায় তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে লেখায় ফুটে উঠেছে, অসহায় উপকূলবাসীর জন্য আপনার মমত্ববোধ!
এই ভয়াল রাতের ওপর সেদিন একটি ফাইল-স্টোরি করতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছি নিউ ইয়র্ক টাইমসে ছাপা হওয়া সেই ঘটনার রিপোর্ট। রিপোর্টটি দেখুন এখানে।
বদ্বীপ অঞ্চল বাংলাদেশের বোধহয় এই সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কিছুতেই রেহাই নেই!...
অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
নিউইয়র্ক টাইমসের লিংক আর পাভেল রহমানের নাম জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ। সেসময় আসলেই দুর্দান্ত কিছু ছবি পত্রিকায় এসেছিল। সংগ্রহ করে রাখা দরকার ছিল
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আপনার। একেবারে জীবন্ত বর্ননাভঙ্গী...!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ধন্যবাদ তীরন্দাজ।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
এই সাবজেক্টটা নিয়ে যে লিখেছেন, সেজন্যে ধন্যবাদ। অসাধারণ বর্ণনার জন্য অসাধারণ গ্রেডের পাঁচতারা দিলাম!
কিন্তু কথা সেটা না... আমার ভারী কৌতূহল হচ্ছে ঐ আগুনের কুণ্ডলীটা নিয়ে, সেটা কি বিদুত্ জাতীয় কোনোকিছুর স্পার্ক বা এ জাতীয় কিছু?
আর বাংলাদেশের উপকূলীয় মানুষের মৃত্যু... সে নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আগুনের কুন্ডলী হিমুর ব্যাখানুসারে গোলকবজ্র হতে পারে। বিদ্যুতের স্পার্ক, চুলা এসব আমার মনে হয় না। কারণ, চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরো অনেক মানুষ এই আগুনের গোলা ছোটাছুটি করতে দেখেছে।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
অসাধারণ বর্ণনা!!
(বিপ্লব)
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।
ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।
ধন্যবাদ! বিপ্লব ভাইকে নিলাম
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
প্রতি ২৯শে এপ্রিলে আতঙ্কিত হই। আমার অভিজ্ঞতা সবই মিডিয়া থেকে পাওয়া, আপনার চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা তাকে আরো জ্যান্ট করে তুললো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
প্রতি ২৯ শে এপ্রিল আমিও আতংকিত হই।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
আপনি যা দেখেছেন, তা সম্ভবত গোলকবজ্র।
হাঁটুপানির জলদস্যু
দারুণ। এটা গোলকবজ্র হবার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও গোলকবজ্রেরই সঠিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দেখছি এখনো পাওয়া যায় নি। যে উদাহরণগুলো দেয়া আছে সেগুলোর কোনটি যদিও ঘূর্ণিঝড় নয়, তবে ঘূর্ণিঝড়ের সময় বজ্রঝড় থেকে এটা হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। শহরের সব গাছের পাতা কি তবে এই গোলকবজ্র থেকেই পুড়ে গেল?
উইকিপিডিয়ার গোলকবজ্র উদাহরণে ১৯৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের কথাটাও যোগ করা গেলে ভালো হত।
হিমু অনেক ধন্যবাদ। এই গোলকবজ্রের খোঁজ পেলে কোথায় জানতে পারি কি?
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
কী জীবন্ত বর্ণনা!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ!
আপনার আগের সিগনেচারটাই কিন্তু আমার পছন্দ ছিল- একগামী পুরুষ
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
৯১ এর ঘুর্ণিঝড়ের সময় আমিও যদ্দুর মনে পরে ৮/৯ ক্লাশের ছাত্র। স্কাউটিং করি তীব্রভাবে। মনে আছে স্কুল স্কাউট দলের পক্ষ হয়ে পুরো এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেক ত্রাণ সংগ্রহ করেছিলাম... আর আমি যেহেতু তখন ঢাকা মেট্রোপলিটন স্কাউটের মোটামুটি নামী স্কাউট তাই বেশ একটা নেতৃত্ব ছিলো... পুরো ঢাকা থেকে ত্রাণ এসে জমা হতো কাকরাইলের জাতীয় স্কাউট ভবনে। একদিন বেশ ঝড় হলো... সেই ঝড়ে বের হতে পারলাম না স্কাউট ভবন থেকে... শেষে অনেক রাতে বাড়ি ফিরলাম... তাতেই বেশ ভয় পেয়েছিলাম...
মূল ঝড়ে পরলে কি হইতো? অভিজ্ঞতা বটেক।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
জীবন্ত বর্ণনা, দারুন লাগলো।
সেই রাত আমার জন্যেও কালো রাত - তবে ভিন্ন কারনে। ঢাকাতে সারাদিন ধরে তির তির করে বৃষ্টি পড়লো। রাতেও চলছে। রাতের খাবারের সময় আব্বা বললেন, টাংকি থেকে একটু খাবার পানি নিয়ে আসো জগ ভরে। উনি বাসায় আন্ডারগ্রাউন্ড পানির টাংকি বসিয়েছিলেন, পাকা সিমেন্টের। আমি গেলাম পানি আনতে, পেছন পেছন এলো আমার সবচেয়ে ছোট ভাই - আড়াই বছর বয়স হবে তখন। পানিতে জগ ভরে টাংকির ঢাকনাটা আবার তালা দিতে যাবো এমন সময় ঘটলো অঘটন।
পিচ্চি ভাই দিলো পানির টাংকির ভেতর প্রস্রাব করে।
ভর্তি পানির টাংকি। তাই দিয়ে তিন তলার তিন ফ্যামিলির খাবার পানি, গোসলের পানি জুটে। একবার ভাবলাম না বলি। কিন্তু বুঝলাম বলতেই হবে। বাপ-মা পাক-পবিত্রতার ব্যাপারে অত্যন্ত টনটনে।
ব্যাস, আর কি। বাকি রাত আমার কাটলো টাংকির ভেতরে। বালতি বালতি করে পুরা টাংকি খালি করতে দুই-তিন ঘন্টা চলে গিয়েছিল। পড়ছে তিরতির বৃষ্টি, আর আমি পানি ফেলতে ফেলতে ভাবছি দক্ষিণে না জানি কি হচ্ছে। টাংকি ভালমতো ধুয়ে বের হতে হতে রাত একটা বেজেছিল।
গল্পের খলনায়ক, আমার পিচ্চি ভাই, এখন বুয়েট ফার্স্ট ইয়ারে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আমাদের এসএসসি পরীক্ষা প্রথমবার বাতিল হলো এই ঘুর্নিঝড়ের কারনে, এর পর আরো দুবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে ।
মনে আছে,সব বন্ধুরা মিলে পুরো শহর তুলকালাম করেছিলাম ত্রানের জন্য । রিক্সায় মাইক লাগিয়ে ত্রানের আহবান চলছিলো । ফকির আলমগীরের একটা গান বাজাচ্ছিলাম আমরা ' কাইন্দোনা রহমতের মা, কান্দলে মুর্দার আজাব হয়...'
একজন প্রায় ভিখিরীর মতো মানুষ গায়ের জামাটা খুলে দিয়েছিল আমাদের হাতে ।
----x----
...অথবা সময় ছিলো;আমারই অস্তিত্ব ছিলোনা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
দুর্দান্ত বর্ণনা।
তানভির ভাই, আগুনের গোলার ব্যাখ্যাটা আমার কাছে একটু অন্যরকম। তবে তা আমার ব্যক্তিগত ধারণা।
গাছপালার সাথে বাতাসের তীব্রগতির (দুইশ বা তদোর্ধ্ব) ঘর্ষণে সৃষ্ট তাপেই হয়তো এই পুড়ে যাওয়ার বিষয়টা হয়েছিলো। ঘূর্ণায়মান ঝড়ের কারণে বিভিন্নমুখী বাতাসের মধ্যে প্রচণ্ড পারস্পরিক ঘর্ষণসৃষ্ট তাপে আগুণ তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু কি ?
আপনার লেখাটা একটা নির্ভরযোগ্য তথ্য হিসেবে দেখছি আমি। ধন্যবাদ।
আমি তখন ঝালকাঠির কাঠালিয়া থানার আমুয়া ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটা এলাকায় খুব কাছে থেকে মৃত্যুকে দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করছিলাম।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন