তানভীর ইসলাম | এম. এম. আর. জালাল
বছর কয়েক আগে ইকোনমিক এন্ড পলিটিক্যাল উইকলি জার্নালে প্রকাশিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নিপীড়ন বিষয়ে ডঃ শর্মিলা বোসের একটি বিতর্কিত প্রবন্ধ ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। প্রবন্ধটিতে শর্মিলা বোস বলেছিলেন একাত্তরে পাক বাহিনী কোন ধর্ষণ করে নি, বরং বাঙালীরাই বিহারীদের ধর্ষণসহ নানা অপরাধ ও নিপীড়নে যুক্ত ছিল। আরেক ভারতীয় গবেষক ডঃ নয়নিকা মূখার্জী পরবর্তীতে একই জার্নালে বোসের নিবন্ধে উদ্ধৃত অসত্য তথ্য ও যুক্তিসমূহ খন্ডন করে পাল্টা প্রবন্ধ লেখেন। কিন্তু শর্মিলা বোস একা নন, সাম্প্রতিক সময়ে আরো অনেকেই নিয়মিতভাবে বিভিন্ন একাডেমিক জার্নাল ও গবেষণামূলক বইয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যা ও নিপীড়ন বিষয়ে অসত্য তথ্য পরিবেশন করছেন, যা খুবই উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা নিয়ে একাডেমিক অঙ্গনে অপর্যাপ্ত গবেষণাই অনেককে এ সু্যোগ করে দিচ্ছে।
মার্কিন অধ্যাপক ডোনাল্ড বিচলার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে অতীতে যে সব গবেষণা হয়েছে বা এখনো হচ্ছে তার আলোকে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার ওপর গবেষণার একটি তুলনামূলক চিত্র তাঁর সাম্প্রতিক একটি প্রবন্ধে তুলে ধরেছেন। ‘প্যাটার্নস অফ প্রেজুডিস’ নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধটির শিরোনাম- ‘দ্য পলিটিক্স অফ জেনোসাইড স্কলারশীপঃ দ্য কেইস অফ বাংলাদেশ’। বিচলার বলেছেন গবেষকরা কোন একটি নির্দিষ্ট গণহত্যা নিয়ে গবেষণায় তখনই আগ্রহী হয়ে ওঠেন, যখন একে রাজনৈতিক বা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে তুলে ধরে লাভবান হওয়া যাবে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার কাছাকাছি সময়ে কম্বোডিয়ায়ও গণহত্যা হয়েছিল। কিন্তু কম্বোডিয়ার গণহত্যা নিয়ে পশ্চিমের গবেষকরা প্রচুর গবেষণা করলেও বাংলাদেশের গণহত্যার ব্যাপারে তারা বরাবরই খুবই উদাসীন। অথচ মিডিয়া কাভারেজের ক্ষেত্রে দু’টো গণহত্যাই প্রায় সমান মনোযোগ আকৃষ্ট করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৫ সালে খেমার রুজরা যখন কম্বোডিয়ায় গণহত্যা শুরু করে সে বছর নিউইয়র্ক টাইমসে ৭৯১ কলাম ইঞ্চি জুড়ে কম্বোডিয়ার খবর ছিল। অপরদিকে ১৯৭১ সালের ঘটনাবলী নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে বাংলাদেশের খবর ছিল ৬৯০ কলাম ইঞ্চি বিস্তৃত।
কম্বোডিয়ায় কম্যুনিস্ট খেমার রুজরা ১৯৭৫ সালে মার্কিন সমর্থিত লন নোল সরকারকে উৎখাত করে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত যে গণহত্যা চালায়, কমিউনিজমের কুফল তুলে ধরতে উৎসাহী গবেষকদের কাছে প্রেরণা হিসেবে তা যথেষ্ট ছিল। বিপরীতে মার্কিন বামপন্থী গবেষকরাও খেমার রুজদের নীতিকে সমর্থন করে প্রচুর গবেষণা করেন। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যায় কমিউনিজমের মত কোন আকর্ষণীয় প্রভাবক ছিল অনুপস্থিত। উপরন্তু কোল্ড ওয়ার পলিসির কারণে সে সময় চীনের সাথে মিত্রতা স্থাপনে ইচ্ছুক নিক্সন সরকারের সমর্থন ছিল বৈঠকে মধ্যস্থতাকারী পাকিস্তানের পক্ষে। পাকিস্তান কর্তৃক সংঘটিত সব ধরণের অপরাধ উপেক্ষা করে এগুলোকে তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে নিক্সন সরকার মত দিয়েছিল। এমনকি তৎকালীন ঢাকাস্থ মার্কিন প্রশাসণ যখন ওয়াশিংটনে টেলিগ্রামে গণহত্যার খবর জানিয়েছিলেন, নিক্সন ও কিসিঞ্জার তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাডকে ঢাকা থেকে অপসারণ করেছিলেন। যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়কে তারা দেখেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে হার হিসেবে। সে সময়ে সংঘটিত বাংলাদেশের গণহত্যাও তাই একাত্তর পরবর্তীতে মার্কিন গবেষকদের কাছে আগ্রহের বিষয় হয়ে ওঠে নি। অন্যদিকে বামপন্থী মার্কিন গবেষক যারা মার্কিন পলিসির বিরূদ্ধে গবেষণা করেন, স্বাধীনতা পরবর্তীতে শেখ মুজিবের দুর্নীতিগ্রস্থ শাসনামল, জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসন এবং ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশের ডানপন্থী ব্লকের দিকে সরে আসার কারণে তারাও এতে আর আগ্রহবোধ করেন নি।
বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় গবেষণা হয়েছিল ১৯৯০ সালে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার দুই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রিচার্ড সিসন এবং লিও রোজ তাদের সে গবেষণায় সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন- একাত্তরে বাংলাদেশে কোন গণহত্যা হয় নি! সিসন ও রোজের গবেষণা মূলত সিদ্দিক সালিকের ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ বইয়ে মিলিটারি সৈন্যদের সাক্ষাতকারগুলোর ওপরই বেশী নির্ভরশীল ছিল। সেগুলো যাচাইয়ের কোন প্রয়োজন তারা বোধ করেন নি। বিচলার তাঁর প্রবন্ধের সূচনায় বলেছেন, বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে একাডেমিক প্রকাশনা এতই অপর্যাপ্ত এবং বিভ্রান্তিকর যে তাঁকে প্রবন্ধটি লিখতে গিয়ে শুরুতে প্রমাণ করতে হয়েছে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে এবং প্রায় ত্রিশ লক্ষ লোক এতে মারা গিয়েছিল। নানা সূত্র থেকে প্রাপ্ত বাংলাদেশের গণহত্যায় নিহতের বিভিন্ন সংখ্যা উল্লেখ করে যুদ্ধের পরপর বাংলাদেশে ভ্রমণরত নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক সিডনি শেনবার্গের একটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে বিচলার জানাচ্ছেন- বাংলাদেশে পাকিস্তানী সৈন্যদের হাতে নিহতের সংখ্যা, ভারতে আশ্রয় নেয়া কোটি শরনার্থীদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা এবং দেশে যুদ্ধাবস্থার কারণে জীবনাহানির সংখ্যা যোগ করলে তা শেখ মুজিবুর রহমানের দাবীকৃত নিহতের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছায়।
গণহত্যা নিয়ে গবেষণায় প্রধান আরেকটি বাধা হচ্ছে যারা এ কাজ করেছিল তাদের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা। কম্বোডিয়ায় ১৯৭৯ সালের পর যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছিল তারা খেমার রুজদের গণহত্যা আড়াল করার কোন চেষ্টা করে নি এবং সে সময়কার অপরাধ তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিল। ফলে পশ্চিমের গবেষকরা অবাধে তাদের গণহত্যা গবেষণা ফলপ্রসূভাবে চালিয়ে যেতে পেরেছেন। কিন্তু পাকিস্তানের কোন সরকারই আজ পর্যন্ত ১৯৭১ সালের প্রকৃত ঘটনাবলী উদঘাটনে আগ্রহ বা সদিচ্ছা দেখায় নি, যা বাংলাদেশের গণহত্যা গবেষণায় প্রধান একটি বাধা হয়ে রয়েছে। বিচলার একে তুলনা করেছেন তুরস্ক সরকারের মনোভাবের সাথে যারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সংঘটিত আর্মেনীয় গণহত্যাকে আজ পর্যন্ত স্বীকার করে নি। বিচলার অবশ্য যা বলেন নি তা হচ্ছে, আর্মেনীয় গণহত্যা স্বীকার করে নেবার ব্যাপারে তুরস্ক সরকারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে প্রচুর চাপ আছে, যা বাংলাদেশের গণহত্যা স্বীকার করার ব্যাপারে পাকিস্তানের ওপর নেই। এক্ষেত্রে কোন উদ্যোগী ভূমিকা পালন না করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ব্যর্থতাকেও দায়ী করা যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার অনেক বছর পর একটি ‘মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- তাও বেসরকারী উদ্যোগে এবং বিচলার বলছেন এত বছর পর এখনো এখানে স্বাধীনতার ঘোষণা কে দিয়েছেন তা নিয়ে খোলা বিতর্ক হতে দেখা যায়- এ থেকেই বাংলাদেশে গণহত্যা গবেষণার অবস্থা কী পর্যায়ে এবং তাতে সরকারী উদ্যোগ কতটুকু তা সহজেই অনুমেয়।
পাশ্চাত্যে গণহত্যা গবেষণায় প্রধান একটি অনুঘটক থাকে প্রবাসী জনগোষ্ঠীর তৎপরতা। একসময় ইউরোপের হোলোকাস্ট নিয়ে গবেষণায় মার্কিন গবেষকরা উদাসীন ছিলেন। কিন্তু প্রবাসী আমেরিকান ইহুদীদের তৎপরতায় তারা এদিকে নজর দিতে বাধ্য হন। বাংলাদেশের প্রবাসী জনগোষ্ঠী এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংহত হয়ে উঠছে। তাই, তাদের এখন এগিয়ে আসতে হবে সেদেশের গবেষকদের বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ এবং প্রয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতার ব্যাপারে।
একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণায় এ মূহুর্তে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষকদের এগিয়ে আসা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের নিজেদের চাইতে অন্যদের কাছে কখনোই বেশী আকর্ষণীয় হতে পারে না। পাশ্চাত্যের গবেষকরা কখন একাডেমিক জার্নালগুলোতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশ করবেন সে আশায় বসে না থেকে দেশ থেকেই সে উদ্যোগ নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের উপর আমাদের রিসোর্সের কোন অভাব নেই- পনের খন্ডব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের দলিল আছে, জাতীয় আর্কাইভ এবং বিভিন্ন মিডিয়া আর্কাইভে সে সময়কার অসংখ্য প্রকাশনা আছে, আছে অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার। এখন প্রয়োজন শুধু সেগুলো একাডেমিক জার্নালগুলোতে প্রকাশ করা।
*** ৭ ই এপ্রিল, ২০০৯ দৈনিক জনকন্ঠে প্রকাশিত।
http://www.dailyjanakantha.com/070409/chn.pdf
মন্তব্য
একটা কথা উল্লেখ করতে ভুলে গেছি। লেখাটা প্রথম পাঠানো হয়েছিল প্রথম আলোর ১৬ ই ডিসেম্বরের বিজয় দিবস সংখ্যার জন্য। প্রথম আলোর একজন জালাল ভাইয়ের কাছে একটা লেখা চেয়েছিলেন। লেখা পাঠানোর পর তাদের বিজয় দিবস কমিটি জানালো- ‘লেখাটিতে নতুন কোন তথ্য না থাকায় তারা এটি ছাপাতে পারছে না!’ আমরা তো কোন নতুন তথ্য জানাতে চাই নি। দেশের জনগণ, ইতিহাসবিদ, গবেষকদের ইতিহাস বিকৃতিরোধে এগিয়ে আসতে বলেছি মাত্র। প্রথম আলোর প্রায়োরিটির মধ্যে বোধহয় তা পড়ে না।
লেখাটার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আজ জালাল ভাইয়ের কাছে শুনলাম জনকন্ঠে ছাপানোর কথা। স্বদেশ রায় ও জনকন্ঠকে ধন্যবাদ।
একাত্তর আমাদের সেই কষ্টিপাথর যার নিরিখে আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ, শাসকশ্রেণী, বুদ্ধিজীবী এবং আন্তর্জাতিক শত্রু-মিত্র সবাইকেই চিনে নেওয়া যায়। এবং দেখা যায় যে, একাত্তরের গণহত্যার অভিজ্ঞতা এরা সকলই বাইপাস করাই নিরাপদ মনে করেছে। এই রাষ্ট্র ও এর আইন গণহত্যাকে আমল করেনি, স্বাধীনতাকে আমল করেছে। কারণ স্বাধীনতা না হলে এদের অনেকেরই রাজা-উজির হওয়া হতো না। কারণ, গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস মানে যুদ্ধে এদের সুবিধাবাদী ভূমিকাও খোলা হয়ে পড়া। কারণ, তাতে দেখা যাবে, এরা নাইওর খেয়েছে আর যুদ্ধ করেছে তাজউদ্দীনরা আর দেশের কৃষক-ছাত্র জনতা। যুদ্ধের আগুনে যারা পোড়ে নাই, গণহত্যায় যারা বেশি কিছু হারায় নাই, তারা বিপদে পড়া টিকটিকির মতো গণহত্যা নামক স্বাধীনতার লেজকে ফেলে তো পালাবেই।
২০০৬ এর ডিসেম্বরে সমকালে লিখেছিলাম:
''দক্ষ বিউটিশিয়ানের মতো এরা স্বাধীনতার দেহ থেকে ৩০ লাখ মানুষের রক্তদাগ মুছে ফেলতে পেরেছে, শারীরীক ও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত লাখ-লাখ নারীর ভয়াবহ অভিজ্ঞতাকে চেপে যাওয়া হয়েছে। লুকিয়ে ফেলা হয়েছে পাকিস্তানী সেনা ও রাজাকারদের ধর্ষণের ফসল যু্দ্ধশিশুদের অস্তিত্ব। সেইসব মা ও তাদের সন্তানদের পরিণতির কোনো খোঁজ কি আমরা রেখেছি? এসব এখন কিছু লেখক-গবেষক আর মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের বিষয়। আজো রাষ্ট্র্রীয় এজেন্ডাভুক্ত হয়নি ’৭১-এ সংঘটিত গণহত্যা, জাতিগত নিধন, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আর যুদ্ধাপরাধের বিচারের জরুরত। আমাদের কত কত রাষ্ট্রীয় দিবস, কিন্তু ১৯৭১-এর নারকীয় গণহত্যার জন্য একটি ‘গণহত্যা দিবস’ও আজতক ঘোষিত হয়নি। এমনকি এ গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক আদালতে প্রমাণ করতে গেলে যে ধরনের পদ্ধতিগত তদন্ত দরকার, তাও সমাধা করা হয়নি। হত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ হয়েছে, কিন্তু তার চরিত্রটা যে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ তা প্রমাণের উপযুক্ত আইনী ভাষা কি আমাদের আছে? দেশীয় দালালদের বিচারের উপযোগী ১৯৭২-এর দালাল আইনটিও জিয়াউর রহমানের আমলে রদ করা হয়েছে।''
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আপনার সমকালের লেখাটা কি সচলায়তনে পোস্ট দেয়া যায়?
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে তুলে আনার জন্য তানভীর ভাইকে ধন্যবাদ। এমন গবেষনার অভাবেই সুযোগ সন্ধানীরা নানা রকমের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে। এছাড়া জামাতিরা পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রমান-পত্র নষ্ট করছে বা সরিয়ে ফেলছে। বাংলাদেশের কোন গ্রন্থাগারে '৭১ এর 'দৈনিক সংগ্রাম' খুজে পাবেননা। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরও তা সংগ্রহের প্রয়োজন মনে করেনি! আমার ভয় হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার সময় সঠিক ও যথোপযুক্ত প্রমান-পত্র হাজির করা যাবেতো?! গো. আযমের নাগরিকত্বের বিচারের সময় নাকি টিক্কা খানের সাথে একটি ছবি ছাড়া কিছুই দেখানো সম্ভব হয়নি। সতর্ক থাকা উচিত এবার যেন এমনটি না হয়।
আর এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি 'প্রথম আলো' কেন ছাপাল না তার উত্তর বোধ হয় এখানে ফারুক ওয়াসিফ সাহেব এর মত কেউ দিতে পারবেনা। কি বলেন ফারুক সাহেব?
দেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন -একাত্তরে রাজাকাররা নাকি অনেক ভালো কাজ করেছে! (সূত্র- এপ্রিল ৪, প্রথম আলো)। এই যদি হয় দেশের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কর্ণধারের অবস্থা, তবে কিছুদিন পরেই হয়তো আমাদের নতুন ইতিহাস পড়তে হবে- 'রাজাকাররাই আসলে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল'। আর শর্মিলা বোসরা সে তথ্যপ্রমাণ যোগাড় করে দেবে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন