আমি শিবির প্রথম দেখি ক্লাস সেভেনে। চট্টগ্রাম কলেজের ঠিক উলটো দিকে ছিল আমাদের স্কুল। একদিন ক্লাস পিরিয়ডে দেখলাম মাথায় টুপি, ছাগলা দাড়ি কয়েকজন এসে ক্লাসরুমে ঢুকলো। তাদের একজন স্যারকে বলল কিছুক্ষণের জন্য তাদের কাছে রুম ছেড়ে দিতে। আমি ভাবলাম নিশ্চয়ই তারা এবার একটা ধমক খাবে। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সেই শিক্ষক আমাদের একা রেখে সুড়সুড় করে চলে গেলেন। তারা কী ভ্যাজর ভ্যাজর করেছিল এখন কিছু মনে নেই, কিন্তু সেদিন তাদের ক্ষমতা ও ঔদ্ধত্য দেখে অবাক ও বিরক্ত হয়েছিলাম তা পরিস্কার মনে আছে।
এরপর শিবির দেখেছি পরিচিতজনদের মাঝেই! সিরাতের পোস্টে মন্তব্যগুলো দেখে মনে হয়েছে অধিকাংশের ধারনা যারা শিবির করে, তারা সবাই জেনে বুঝেই শিবির করে। আমার অভিজ্ঞতা বলে অন্যরকম। আমি শিবির কর্মী দেখেছি বেশিরভাগ ব্রোকেন ফ্যামিলির লোকজন, যাদের দুঃসময়ে শিবির সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বা বলা যায় মানুষের দুর্বলতার সদ্ব্যবহার করেছে। ফলে এরা কৃতজ্ঞতাস্বরূপ শিবির করে। শিবির এদেরকেই মূলত খুঁজে খুঁজে বের করে। আরেক অংশ আছে সচল শিক্ষানবিশের মতো (মানে পূর্বে), যারা পারিবারিকভাবে এর সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে। ধর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিবিরে যোগ দিয়েছে এমন আমি একজনও দেখি নি। তাই শিবির হিসেবে আমি যাদের চিনি তারা ঠিক ধার্মিকও না। নামাজ হয়তো পড়ে, ওই পর্যন্তই। কিন্তু টাংকিবাজি থেকে শুরু করে সামাজিক ছবি দেখা কোনকিছুই তাদের বাদ দিতে কখনো দেখি নি। মূল ষড়যন্ত্রের হোতারা বোধহয় সব উপরের লেভেলে থাকে গোআ, মইত্যার মতো এবং তাদের বিশ্বস্ত লোকজন, ব্রেন ওয়াশড হওয়া শিবির কর্মীদের মাঝে যারা একটা পীরের ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছে।
শিবিরের কাজকর্ম ভালো করে প্রত্যক্ষ করেছি কলেজে উঠে। চট্টগ্রাম কলেজ দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে শিবিরের মূল ঘাঁটি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে দূরে এবং সেখান থেকে তারা মাঝে মাঝে বিতাড়িত হয়। যতদূর শুনেছি চট্টগ্রাম কলেজ সত্তর দশকের প্রায় শেষভাগ পর্যন্ত জাসদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। জাসদ ক্রমে দুবর্ল হয়ে পড়লে সত্তরের শেষে সম্ভবত ৭৮-৭৯-তে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে শিবির চট্টগ্রাম কলেজ এবং সংলগ্ন মহসীন কলেজ দখল করে এবং সেই থেকে তাদের দখলেই আছে। এখানে তখন থেকে কোন ছাত্র-সংসদ নির্বাচন হয় না। নব্বইয়ে এরশাদ পতনের পর সাধারণ ছাত্ররা একবার ছাত্র-সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্যানেল ঘোষণার পর লিস্টে যাদের নাম ছিল তাদের সবার ওপরই একে একে হামলা হয়েছিল এবং তারা প্যানেল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে এ চিত্র দেখে যদি আপনি ভাবেন শিবির একাই শুধু এরকম, তাহলে ভুল হবে। চট্টগ্রামের প্রতিটি কলেজ এভাবে গায়ের জোরে কোন না কোন দল দখল করে আছে এবং সেখানে কোন বিরোধী পক্ষের অস্তিত্ব নেই।
আমি মাঝে মাঝে চিন্তা করতাম চট্টগ্রাম কলেজের মতো একটা জায়গায় শিবির থাকে কী করে! কারণ বাংলাদেশের আর দশটা কলেজের মতো এটা শুধুই একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, প্রায় দেড়শ বছর সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়ানো বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ চট্টগ্রামবাসীর ঐতিহ্যের একটা অংশ। শিবির সেখানে একটা কলংকের দাগের মতো। কিন্তু তারপরও আছে হয়তো কয়েকটা কারণে-
১। উপরে যেটা বলেছি নির্বাচন করতে চাইলে জানে মেরে ফেলার হুমকি। আমার এক পরিচিত ছেলে ছাত্র ইউনিয়ন করত। কলেজে ঢুকে সে নির্বাচন করার ব্যাপারে একটু উৎসাহী হয়ে উঠল। শিবির থেকে তাকে সরাসরি জানিয়ে দেয়া হলো- রাজনীতি করতে চাইলে করতে পারো, কিন্তু ইলেকশন করতে চাইলে সাবধান। চট্টগ্রামে অন্য কলেজের চাইতে এটা অবশ্য একটু ভালো ব্যবস্থা। অন্য কলেজে এন্টি-পার্টির কারো খোঁজ পাওয়া গেলে, তাকে উত্তম-মধ্যম পেতে বেশি দেরি হয় না।
২। সাধারণ ছাত্রদের উদাসীনতা। এখন শুনেছি চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক উঠিয়ে দেয়া হয়েছে (শিবির আরো পোক্ত করার জন্য?)। মূলত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরাই কলেজের প্রাণ। চট্টগ্রাম কলেজের মতো এমন আনন্দময় দু’বছর আমি কখনোই পাই নি। বাইরে থেকে হয়তো মনে হয় চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের আস্তানা, কিন্তু শিবির এমনই ধুরন্ধর প্রয়োজন না পড়লে (মানে কেউ ইলেকশন বা সেরকম কিছু করতে না চাইলে) এরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কখনো ঘাঁটায় না বা ঘাঁটানোর সাহস রাখে না। অন্য কলেজে বন্ধুদের দেখতাম ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের মিছিলে না চাইলেও বাধ্যতামূলকভাবে যেতে হতো, এটা চট্টগ্রামের সব কলেজেরই অলিখিত নিয়ম। কিন্তু শিবির তাদের মিছিলে যেতে সাধারণ ছাত্রদের ফোর্স করত না। অন্য কলেজগুলোতে প্রায়শই ছাত্র-ধর্মঘট হতো। কিন্তু ছাত্র-ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম কলেজ কখনো বন্ধ হতে দেখি নি। এসব কারণে সাধারণ ছাত্ররা হয়তো আরো বেশি উদাসীন ছিল। আর এখন মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ ইত্যাদি নিয়ে যেরকম সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে, তখন সেটারও বেশ অভাব ছিল বলে মনে করি। আর নব্বই পর্যন্ত পুরো সময় সবার মনোযোগ বেশিরভাগ কুলাংগার এরশাদ নিয়েই ছিল। শিবির যে তখন সূঁচ হয়ে ঢুকে এমন ফাল হয়ে বের হবে সেটা বোধহয় তখন কেউ ভাবে নি।
যাই হোক কলেজে ঢুকে প্রথম দিনই শিবিরের খপ্পরে পড়লাম। দলবলের সাথে ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছিলাম, শিবিরের সভাপতি রফিক ভাই সেখানে এল আমাদের সাথে পরিচিত হতে। তারপর আমাদের সবাইকে চা-সিঙারা খাওয়াল। আমরা ভাবলাম বাহ ভালোই তো ঢুকতে না ঢুকতে একেবারে জামাই আদর। পরের দিন ব্যাটা আবার এল, হাতে শিবিরের ফর্ম। বলল ফর্ম ফিলআপ করে জমা দিতে। আমি বেশ ভদ্রভাবে বললাম, বাসায় জিজ্ঞেস না করে আমি ফর্ম ফিলআপ করতে পারব না। এমনই ছোটলোক ব্যাটা সাথে সাথে আমাকে বলল, ‘কালকে যে চা-সিঙারা খাইসিলা, বাসায় জিজ্ঞেস করে খাইসিলা?’ আমার ধারণা আমি বেশ ঠাণ্ডা মাথার লোক, কিন্তু মাঝে মাঝে এ ধরনের কথা শুনে টং করে মাথা গরম হয়ে যায়। কইলাম- ‘কালকে খাওয়ার সময় তো ফর্মের কথা বলেন নাই, বললে খেতাম না, এখন থেকে আর খাবো না’। এ ধরনের বদমাইশদের কাছে আমি অবশ্য সবসময় বেশ কৃতজ্ঞ থাকি। কারণ, নতুন নতুন জিনিস শিখতে পারি। এ ব্যাটার কাছ থেকে যেমন শিখলাম, শিবিরের কাছ থেকে কখনো কিছু খেতে হয় না, সে যখন সাধাসাধি করে তখনো।
আরেকবার মেজাজ খারাপ হইসিল কলেজের আন্ত-সেকশন ফুটবল প্রতিযোগিতার সময়। এমনিতে আমরা সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানে স্কুল থেকেই কলেজের মাঠে (‘প্যারেড গ্রাউন্ড’ নামে পরিচিত) হাফ প্যান্ট বা শর্টস পরে ফুটবল খেলি। শিবির কখনো বাগড়া দিসে বলে শুনি নি। কলেজের ইন্টার-সেকশন ফুটবল কম্পিটিশানে যেই শর্টস পরে সবাই নামলাম, শিবিরের চ্যালা মাঠে ঢুকে কয় ‘হাফপ্যান্ট পরে এখানে খেলা যাবে না, ফুল প্যান্ট পরে আসতে হবে’। আমরা বললাম, এখানে তো আমরা প্রতিদিনই হাফপ্যান্ট পরে খেলি, এখন খেললে কী অসুবিধা?’ ছাগু কইল, ‘এমনি খেলেন অসুবিধা নাই, কিন্তু কলেজের কম্পিটিশনে খেলা যাবে না কারণ আমরা এর সাথে সম্পর্কিত’। আমরা কইলাম- ‘তোমাদের আব্বা- সৌদি আরব, আমিরাত ওদের ফুটবল টিম তো শর্টস পরেই খেলে, ওরা কি তোমাদের চেয়ে কম মুসলমান নাকি? ওরা হাফপ্যান্ট পরে খেলতে পারলে আমাদের কেন ফুলপ্যান্ট পরতে হবে?’ ছাগুরাম আর যুক্তিতর্কের ধার দিয়েই গেল না। তার সাফ কথা- ফুলপ্যান্ট পরে না খেললে, কম্পিটিশনে কোন খেলাই হতে দিবে না। আর কী, আমরাও গজগজ করতে করতে বেকুবের মতো ফুল প্যান্ট পরে খেলতে নামলাম।
যে চ্যালার কথা বললাম সে ছিল আমাদের ক্লাসেরই ছেলে- জাহিদ নাম। শালাকে দেখলেই মনে হতো একটা চটকনা দেই। মিনমিনে শয়তান- মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে খালি স্পাইগিরি করত। প্রত্যেক ক্লাসেই শিবিরের এরকম একটা করে স্পাই ছিল। তাদের কাজ হলো ক্যাম্পাসের কোথায়, কী হচ্ছে, কে, কেমন সব খোঁজ রাখা। ফুটবল খেলার কথা শিবিরের কানে কোনভাবেই যাওয়ার কথা না। এই চ্যালাদের মাধ্যমেই খবর গেছে। ওরা ডিসিশান নিয়ে চ্যালা মারফত আবার খবর পাঠিয়েছে। আমরা কলেজে ওঠার পরপর আমাদের কিছু বন্ধু ট্যাবলয়েড জাতীয় একটা ম্যাগাজিন বের করল, নাম- ‘মালামাল’। প্রথম সংখ্যাতেই ব্যাপক হিট। ক্যাম্পাসে হুলুস্থুল কাণ্ড, সবার মুখেই মালামালের কথা, কিন্তু ঠিক কারা এটা বের করেছে কেউ বলতে পারে না। শিবিরের তো মাথায় হাত। তারা থাকতে, ক্যাম্পাসে এসব বেলেল্লাপনা! শুনেছি ‘মালামালে’র কপি শিবির কলেজের প্রিন্সিপাল ও অন্যান্য শিক্ষকদের দেখানোর পর কলেজ থেকে নোটিশ দেয়া হয়- এ ধরনের কাজে জড়িতদের ভবিষ্যতে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হবে। ‘মালামাল’ তাই গুটি কয়েক সংখ্যা বের হবার পরেই বন্ধ হয়ে যায়।
হুম, পোস্ট দেখি লম্বা হয়ে যাচ্ছে। শিবিরের ক্যাডারবাজি দিয়েই শেষ করি। অন্য সব পলিটিক্যাল পার্টির মতো শিবিরেরও পোষা ক্যাডার বাহিনী আছে। শিবিরের মারামারির কাজটা মূলত ক্যাডার বাহিনীই করে। কাজেই আপনি যাকে শিবির হিসেবে চিনেন, সেই যে রগকাটা বিশেষজ্ঞ হবে এমন কোন কথা নেই- এসব কাজের জন্য তাদের ভাড়া করা আলাদা লোকজনই আছে, যাদেরকে এরা আবার খুব চতুরতার সাথে শিবির থেকে আলাদা করে রাখে। আমরা যখন কলেজে ছিলাম, তখন কলেজের হোস্টেলে শিবিরের দুটো ক্যাডার বাহিনী ছিল। একটার নাম ‘ফটিকছড়ি গ্রুপ’, অন্যটা ‘গাইবান্ধা গ্রুপ’। মনে হয় এ দুই এলাকা থেকে এরা এসেছিল দেখে এই নাম। দুই গ্রুপ আবার মাঝে মাঝে নিজেরা মারামারি করত। কলেজের মাঠে আমরা যখন বিকেলে ফুটবল খেলতাম তখন এদের কয়েকজন মাঝে মাঝে এসে আমাদের সাথে খেলত। নিতে না চাইলেও বাধ্য হয়ে নিতে হতো। এরা দেখতে ছিল একেবারেই ভাবলেশহীন, দেখেই বোঝা যায় মানুষ খুন করতে এদের হাত কাঁপে না। মাঝে মাঝে শুনতাম এদের কেউ আবার ছাত্রদল বা লীগের ক্যাডার হয়েছে। কলেজের ছাত্র না, তবু মনে হয় উপরের নির্দেশে কলেজের হোস্টেলে এরা থাকত। একদিন রাতে কেমিস্ট্রির ইয়াকুব আলী স্যারের বাসা থেকে পড়ে বের হয়েছি, বাইরে এসে শুনি শিবিরের ক্যাডার নাসিরকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। ক্যাডাররা সব রাস্তা ব্লক করে গোলাগুলি শুরু করেছে। রাস্তায় নেমে দেখি বিকেলে আমাদের সাথে মাঝে মাঝে খেলতে আসা এক ক্যাডার স্টেনগান হাতে দাঁড়িয়ে আছে, আমাদের দেখে সে আবার অভয় দিল। রাস্তায় সবাই যখন ভীত, ঝপাঝপ দোকানের শাটার বন্ধ হচ্ছে, আমরা তখন বেশ নির্ভয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। পরিচিত সন্ত্রাসী দেখেই কি আমাদের তখন ভয়-ডর চলে গিয়েছিল? পরদিন খবরের কাগজে নাসিরকে ধরার খবর এবং পরবর্তীতে শহর জুড়ে শিবিরের সন্ত্রাসের খবর দেখলাম। মজার ব্যাপার হলো, নিচে আবার শিবির বিবৃতি দিয়েছিল- নাসির শিবিরের সদস্য নয়। টেকনিকালি অবশ্য শিবিরের কথা ঠিকই আছে। নাসির শিবিরের ভাড়া করা ক্যাডার, শিবিরের সদস্যপদ তার নেই। এরকম ধুরন্ধর ও সংগঠিত একটা দল বাংলাদেশে মনে হয় না আর আছে।
যাই হোক শিবিরেরই একজন বড় মাপের নেতা আমাকে যা বলেছিল তা হচ্ছে- জামাত-শিবির জানে যে ভোটে তারা কখনো ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তারা তাই পাব্লিকের তোয়াক্কাও করে না। তাদের পরিকল্পনা সুদূরপ্রসারী। সরকারের প্রশাসণ, সিভিল সার্ভিস, সেনাবাহিনী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবকিছুতে তারা ধীরে ধীরে তাদের লোক ঢুকাবে। যখন সব সেক্টরে তাদের লোক ভারী হয়ে যাবে, রাষ্ট্র অচল করে দিয়ে জামাত একসময় ক্ষমতা দখল করবে। শুনতে অবাস্তব মনে হলেও বাংলাদেশের অন্য মাথামোটা রাজনৈতিক দলগুলোকে দেখে আমার তা অসম্ভব মনে হয় না। আর উদাহরণ হিসেবে ছোট পরিসরে চট্টগ্রাম কলেজই আছে। শিবির এখানে থাকার কোন যৌক্তিকতা না থাকলেও শিবির আছে। আজ আমি যেমন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লিখেছি শিবির ছিল কিন্তু আমরা কলেজে তেমন খারাপ ছিলাম না, শিবির আমাদের অন্য দলগুলোর মতো ঘাঁটায় নি, আমাদের ক্লাস-পড়ালেখায় কোন ব্যঘাত ঘটে নি। জামাত-শিবির বাংলাদেশ দখল করার পর হয়তো কোন একদিন কেউ লিখবে, ‘জামাত-শিবির আছে, কিন্তু আমরা খারাপ নেই। বাংলাদেশের অর্থনীতি সবল হচ্ছে, এখন আর আগের মতো হরতাল হয় না, দুর্নীতি নেই, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা আছে। সব পার্টি এখন মিলে-মিশে আছে, ভোট হয় না, ভোট নিয়ে তাই কোন ক্যাচালও নেই’। আজ এই মিলটা আবিষ্কার করে শিউরে উঠলাম। কলেজ দখল আর রাষ্ট্র দখলে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে জানি। কিন্তু জামাত-শিবির আটঘাট বেঁধে তলে তলে সে প্রস্তুতিই নিচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা দেশের মন্ত্রীও হয়েছে। দুর্নীতিবাজ সরকারের সবচেয়ে সৎ, যোগ্য মন্ত্রী!
প্রশ্ন শুধু একটাই - ত্রিশ লক্ষ শহীদের সাথে বেঈমানি করার দায়ভারটা তাহলে কে নেবে?
মন্তব্য
তানভীর, অসাধারণ লেখা । খুবই বস্তুনিষ্ঠ । ধন্যবাদ ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
প্রথমেই আওয়ামী লীগ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
হতাশ লাগে এসব ঘটনা দেখলে-শুনলে-পড়লে...
হায় রে সোনার বাংলা... কে জানে, সেদিন হয়ত আর দূরে নেই, যেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নতুন করে লেখা হবে... যেখানে গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামীদের মতো বীর সাহসী মুক্তিকামী নেতাদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। জাতিও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে তাদের!
বেঈমানী কি এ অবধি কম হয়েছে?
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
সেটাই। রাতারাতি তো আর কোন কিছুই হয় না।
কলেজে থাকতে প্রায় রোজ দিনই শিবিরদের খপ্পরে পড়তাম।
কোন ব্রেক আওয়ার থাকলেই হইছিল দলবলে সব শিবির মাইয়া-পোলা ক্লাসের ভিতর ঢুইকা দরজা বন্ধ কইরা লেকচার দিত। আর বোরখাওয়ালীরা পথে-ঘাটে-মাঠে যেইখানে পাইতো পারলে কোলে তুইলা মিটিং এ লইয়া যায়। একদিন এরকম এক বোরখাওয়ালী আইছিল আমগোরে পাকড়াও করতে, আমরা রেডী হইয়া আছিলাম। দেখা মাত্র উলটা তারে ধইরা কইলাম "আপনার লাইগা ওয়েট খাইতেছিলাম, চলেন এক জায়গায়"। বোরখাওয়ালী থতমত খাইয়া কতক্ষন হ্যাচড় প্যাচড় কইরা অন্যদিকে গেল গা। এরপর থেইকা আমগো উপর বোরখাওয়ালীদের উৎপাত কিছু কমছিল।
চট্টগ্রাম কলেজের ২ বছর সময়ে শিবির মাইয়া-পোলাদের সাথে হুদা কামেই যে কতবার তর্কাতর্কি+ একবার ঘুসাঘুসি পর্যন্ত ঘটনা গড়াইতে নিছিল।
দৃশা
হে হে...আমি তো কলেজে দুই বছর বেশির ভাগ সময় ক্লাস বাং মারসি ..প্রক্সির উর্পে ছিলাম...তাই ব্রেক আওয়ারে শিবিরে লেকচার দিতো কিনা সেটাও কইতে পারি না।
তানভীর ভাই, আপনি মনে হয় আমার কয়েক ব্যাচ আগেরই হবেন। তবুও নাসিরাবাদ ওমরগনী কলেজের মামুনের নাম/কথা মনে হয় শুনে থাকবেন। নিজের চোখে দেখা এই গলাকাটা সন্ত্রাসী একসময় কমিশনারও হয়েছিল আওয়ামী লীগের আমলে। সেই কমিশনার থাকা অবস্থাতেই মনে হয় পরে জেলেও গেছিল তদ্দিনে আমি চট্টগ্রাম ছাড়া। সেসময় হাসাহাসি করতাম ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দেবে কে? কমিশনার, তিনি কই দুশ্চরিত্র হবার কারণে জেলে। সেই মামুন, চন্দন মিতু আর অন্যান্যদের শটগান, রিভালভার আর অন্যান্য যন্ত্রপাতি দেখতে দেখতেই বড় হয়েছি ইস্পাহানী স্কুলে।
আপনার শেষ লাইনের প্রেক্ষিতে বলছি, আজকে বহুদিন পরে ছাপা কাগজ হাতে নিয়ে দেখলাম দুটো খবর। দিনবদলের দিনে মামুন ভারত থেকে নিশ্চিন্তে ফেরত এসেছে আর মেয়র সাহেব বললেই জনসম্মুখে চেহারা দেখাবে। আজকের লিঙ্ক
http://www.prothom-alo.net/V1/index.news.details.php?nid=MjU3Njg=
আর জয়নাল হাজারী সম্পর্কেও ভালোর চেয়ে মন্দই বেশী শুনেছি। তার নামেও দেখলাম এক ধাক্কায় তেইশটি মামলার বেকসুর খালাস।
এরকম উদাহরণ না থাকলে শিবিরের মত আগাছা জন্মাতে আরেকটু কষ্ট হত। আর এই শিবিরের দুঃখেই চিটাগং কলেজে এডমিশন নিয়েও পরে নটরডেমে পালালাম।
দেশ আমাদের! পণ করাই আছে বদ লোকেদের দিয়েই দেশ চালাব
এরকম উদাহরণ না থাকলে শিবিরের মত আগাছা জন্মাতে আরেকটু কষ্ট হত।
কথা সইত্য। অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শহীনতাই জামাত-শিবিরের উত্থানে সহায়তা করছে।
তানভীর ভাই,
এর মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন জামাত-শিবির আদর্শবাদী দল??
তানভীর ভাই, শিবির সম্পর্কে এরকম ডিটেইল লেখা আগে পড়িনি। অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম।
আমাদের এখন খুব দ্রুতই নির্দলীয় নিরপেক্ষীয় শিবিরবিরোধী জোট গঠন করা দরকার। শুনতে হাস্যকর হইলেও এটা ছাড়া গতি নাই।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পানির মতো ঝকঝকে লেখা।
আচ্ছা, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এখনকার কার্যক্রম কী? বলতে পারেন কেউ?
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
দারুণ একটা লেখা তানভীর ভাই
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
আপনার লেখাটি পড়ে লগইন করতে বাধ্য হলাম। বিশেষতঃ নীচের লাইনগুলো দেখে,
এই কথাগুলো একদম সত্যি। আগে যেমন সবাই ভাবতো যে শিবির মানেই হচ্ছে আধময়লা জোব্বা পরা, চিবুকে ছাগলাদাঁড়িওয়ালা, হাতে বাঁশের লাঠি নিয়ে মুখে নারায়ে তাকবীর ডাক দেওয়া কোন মাদ্রাসার ছাত্র, এখন কিন্তু মোটেই তা নয়। জামাতের এক খুবই বড় নেতার কয়েকটি ছেলেমেয়ে উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত, তাদের সম্পর্কে কিছু তথ্য জানি। এরা সবাই ভালো পয়সাওয়ালা, শিক্ষিত। তাদের মুখে দাঁড়িও নেই, জোব্বাজাব্বাও পরেন না। এদের পরের বংশধরেরা পড়াশুনা করছে হার্ভার্ড, প্রিন্সটনে (মিথ্যে বলছিনা)। এরাই একসময়ে ক্ষমতায় যাবে। ঠেকানোর উপায় কি? অত্যন্ত হিসেবী পদক্ষেপে তারা আস্তে আস্তে এগোচ্ছে সেদিকে।
ত্রিশলক্ষ শহীদের দায়ভারের কথা বলছেন? আর কদিন পর এরা শহীদ হয়েছিল কিনা সেটা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হবে। ভাবলে সত্যিই চোখে পানি আসে, তখন মনে হয় বড় কাপুরুষ আমরা, বড় বেশী স্বার্থপর। কেউ কি কোথাও নেই যে নূরলদীনের মতো হাঁক ছেড়ে ডাকবে,"জাগো বাহে।" আমরা কি নূরলদীন হতে পারিনা?
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
তানভীর ভাই, আপনর লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনার লেখা পড়ার পরে মনে হল আমার লেখাটা শিশুতোষ অপচেষ্টা। আপনাকে স্যালুট তারা, সালাম কিছু দিয়েই প্রাপ্য সম্মান দেওয়া সম্ভব না, এই লেখাটা সকলের পড়া উচিত। লেখার শেষের দিকে এসে ভয়ে কুকড়ে গেলাম, আপনার শঙ্কা যে ভুল নয়, তা সবাই জানেন, তারপরেও আশায় বুক বাঁধব যেন আরেকজন লেখতে না পারেন, ‘জামাত-শিবির আছে, কিন্তু আমরা খারাপ নেই। বাংলাদেশের অর্থনীতি সবল হচ্ছে, এখন আর আগের মতো হরতাল হয় না, দুর্নীতি নেই, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা আছে। সব পার্টি এখন মিলে-মিশে আছে, ভোট হয় না, ভোট নিয়ে তাই কোন ক্যাচালও নেই’।
তার মানে, আপনার এই লেখার ২য় পর্ব আসবে, এরকম আশা করতে পারি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
দ্বিতীয় পর্ব আসবে না রে ভাই, মূল প্রসঙ্গগুলো মোটামুটি সব এখানেই। বাকী যা থাকে তা হলো ঐ পরিচিতজনদের কথা, তাতে অনেক ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ টানা হবে। এদের বেশিরভাগ যেমন বলেছি ব্রোকেন বা ডিস্টার্বড ফ্যামিলির লোকজন। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সহমত।
সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট একটা পোস্ট। এভাবে যতই ইশপের গল্প বানাও কোন লাভ নেই। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এর অগ্রযাত্রা কে কেউ থামাতে পারবে না।
জায়গামতো লাগসে দেখে মজা পাইসি
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
কোন পথে মৃদুল ভাই,
নাকি জামাত-শিবিরকে আপনি প্রতিভাবান বলছেন।
আপনে কি ভাই না আপা? নান বলতে কি আপনে নান রুটি বুঝাইছেন, নাকি চার্চের নান বুঝাইসেন নাকি ইংরেজীতে ভাড়ামি করসেন NONE এর ভুল বানান লিখে। তানভীর ভাইয়ের সাথে সহমত, এজন্যে এত তড়পাইতেছেন। গোপন অঙ্গে গুতাটা কী বেশী জোরে লেগেছে? লেগে থাকলে আপনার গুরু নিজামী বা গোলাম আজমের কাছে জান, হাত বুলায় দিবে, আরো কিছু করতে পারে, চিন্তার কি আছে, যাই করুক, ধর্মের নামেই করবে। শিবিরের চ্যালারাতো নান হবেই, সর্বার্থে নান, সুস্থ আদর্শহীন, মানবিক গুনাবলীহীন, মুক্তচিন্তাহীন, বিকারহীন।
আবার যদি, চার্চের নান ধরি, তাহলে তো আরো মজা কিংবা যদি নান রুটি হন, তাহলেও খারাপ না, অন্তত ভাড়ামি আর সন্ত্রাস না করে দেশে খাদ্যের অভাব কিছুটা হলেও পুরণ করতে পারতেন। কিন্তু তা করবেন কেন, ধর্মের নামে মানুষের মগজ ধোলাই করবেন আর তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়া তাদের পশ্চাতে আঙ্গুল দিবেন।
ছাত্রশিবির বলছেন, ঠিক আছে, "ইসলামী" শব্দ বাদ দিয়া বলেন, আপনাদের মুখে ধর্মের নাম শুনলে মুখে মুতে দিতে ইচ্ছা করে। পাকি, শিবির এদের আমি সমান ভাবেই ঘৃনা করি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ছাগু, এই খবর তোরে দিছে কেডায়? পাকিস্তানের কাগুরা কইছে?
সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট একটা পোস্ট। এভাবে যতই ইশপের গল্প বানাও কোন লাভ নেই। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এর অগ্রযাত্রা কে কেউ থামাতে পারবে না।
সে আর কইতে, তবু পারেন না সইতে
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
এই দেশের মানুষ কেবল বেইমানি করে গেছে, ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু, এই বাংলার মাটি কখনো বেইমানি করবে না...।
অফটপিকঃ আজকাল অজানা কেউ এইসব ভালো লেখায় আজাইরা মন্তব্য করে। এরা আসলেই কেউ না (nun)...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
লেখাটা খুবই কাজের, তানভীর ভাই। এরকম আরও অনেক অনেক লেখা প্রয়োজন। এগিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ। ফেসবুকাইলাম।
"কেউ না", "nun", প্রমুখের মন্তব্য কিন্তু আমার বেশ মজা লাগে। মডারেশনের মাধ্যমে সচলায়তনকে ছাগুমুক্ত রাখা হয়, তবু মাঝে মাঝে এমন স্পেসিমেন দেখতে মন্দ লাগে না। হয়তো আমরা ঠিক কিছু করছি, বলছি দেখেই এদের এত গাত্রদাহ।
আবার জিগায় জন্ম থেকে জ্বলতেছে কিনা, যেভাবে এরা এখানে লাত্থিগুতা খাইতেসে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ইশতিয়াক রউফ ভাই,
”মডারেশনের মাধ্যমে সচলায়তনকে ছাগুমুক্ত রাখা হয়”
সচলায়তনের মডারেটগন শুনলে মাইন্ড করবেন।
nun বাবু তার স্বাধীন মতামত প্রদান করিয়াছেন। আমরা তাহাদের নামে যা তা বলিলে তাহারা কেন কিছুই বলিতে পারিবেননা বলুন।
ভাল লেখা ।
আপনার বিস্তারিত অভিজ্ঞতার জন্য অনেক ধন্যবাদ। চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের কাহিনী সম্পর্কে অনেকের ধারনা নেই। এখানে চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের প্রথম জবাই করার ঘটনাটা আমি যোগ করতে চাই। শাহাদাত হত্যা বলে পরিচিত পেয়েছিল সেটি। ঘটনাটা সম্ভবতঃ ১৯৮১ সালের। ছাত্র ইউনিয়নের সমর্থক শাহাদাত ও তার শিবির বন্ধু এক সাথে থাকতো একই রুমে। শাহাদাতকে বেশ কবার শিবিরের দাওয়াত দিয়ে ব্যর্থ হয়। সেই ক্ষোভে তার বন্ধু শিবির কর্মী একরাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শাহাদাতের গলা কেটে হত্যা করে। সেই প্রথম দেশবাসী জানতে পারলো শিবিরের পৈচাশিক রূপ। মতে মিল না হলে বাপের গলায়ও ছুরি চালাতে পারে। কারন শিবিরে যোগ দেবার পর নানা কায়দায় বলে দেয়া হয় তাদের নতুন বাপ মওদুদী। ছাগু শিবিরগুলা সেই বড়ি খায়।
চট্টগ্রাম কলেজে সেই শাহাদাত হত্যার পর আমরা প্রথম জানতে পারি শিবিরের নাম। কিন্তু ভয়াবহতা টের পেতে আরো কয়েক বছর লেগেছিল বিশেষতঃ ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এরশাদ সমর্থক ছাত্র সমাজ নেতা হামিদের হাত কাটা পর্যন্ত। হামিদের হাত কেটে তার কাছ থেকে অস্ত্রভান্ডার দখল করে সারাদেশে শিবির শক্তিশালী হয়েছিল যেটা দিয়ে প্রতিপক্ষকে এখনো পর্যন্ত কাবু করে রাখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শিবিরকে কিছুদিনের জন্য বের করে দেয়া হয়। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো হচ্ছিলাম। সেই সময় আবারো কিভাবে শিবির ক্যাম্পাস দখল করে সেই কাহিনী আরেকদিন বলবো।
অন্যরাও ভিন্ন ভিন্নভাবে যার যার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে ভালো হয়। বিশেষ করে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা হলে শিবিরের কায়দার ভেতরে ছিলেন তার কাহিনী। আমরা শহর থেকে গিয়ে ক্লাস করতাম বলে আমাদের উপর উপদ্রপের সুযোগ কম ছিল অনেক।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এই "নান", "কেউ না" চুদির্ভাই গুলাই আগাইয়া যাইতাছে নিজেগো পরিকল্পনা মত আর আমরা "সুশীল সমাজ" তাগো রে একটু গাইল দিয়াই শান্তি খুজার চেষ্টা করি। বুকের মইধ্যে ছ্যাৎ কইরা ওঠে যখন চিন্তা করি হয়তো শেষ পর্যন্ত জিতবো এই চুদির্ভাই গুলাই।
মইত্যা নিজামির পোলা নকিবুর রহমান আমগোরে MIS পড়াইতো ইষ্ট ওয়েষ্টে (www.ewubd.edu). শুনছি হালায় নাকি মাষ্টার্স করছিলো University of Maine (www.umaine.edu) থেইকা, এখন মনে হয় PHD করতাছে ক্যানাডা কোন এক ইউনিভার্সিটিতে।
শিবিরের গতি ঠেকানো সহজ হবে না কখনোই । আমাদের সামাজিক-ধর্মীয় কাঠামোটাই এমন। কেবল কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্ত এটা সম্ভব করতে পারে। যেমন ৭১ ও পরবর্তী সময়ে তাদের নেতিবাচক ভূমিকাকে শিক্ষামুলক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে তুলে ধরা। এই ঝুকিটা কেউ নিতে রাজী হবে না। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তাদের ভূমিকা রাখলেও তার নিরাপত্তা রাস্ট্র নিশ্চিত করে নাই;তাই এই অন্ধকার-গোষ্ঠী চেষ্টা করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে নিশ্চিহ্ন করতে।
আর কেউ যদি মনে করে বিজ্ঞান শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে এদের পুরা দূর করা যাবে, তাহলে তিনি বোকার স্বর্গে আছেন। আমাদের নিজেদের জন্যই বিজ্ঞান শিক্ষা দরকার; তবে তা দিয়ে অন্ধকার দূর হবে এই আশায় নয়। আমাদের "ভালো" ছেলে ও মেয়েরা একগুচ্ছ অন্ধকার নিয়েই উচ্চ শিক্ষায় আসে; সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণাটাকে নিজের বিশ্বাসের একপাশে সরিয়ে রেখে চলতে কোন সমস্যা হয় না। স্টিফেন হকিং যেমন ঈশ্বর কে পাশে সরিয়ে রেখে বিশ্বকে ব্যাখ্যা করতে পারেন, তেমনি এরা বিশ্ব/বিজ্ঞান কে পাশে সরিয়ে রেখে নিজের বিশ্বাসকে ব্যাখ্যা করতে পারে!
আপনার লেখাটা অন্ধকার-গোষ্ঠীর চরিত্র বুঝতে সহায়তা করবে; সেই সাথে কিছু অন্ধকারও দূর করবে।
নদী
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
দারুণ দরকারী পোস্ট
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
অসাধারন লিখেছেন ভাই!
---------------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আগেও উল্লেখ করেছি, আবারও বলি, এই সব অসভ্য মন্তব্য মডারেশনে আটকানো উচিত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একে বলে কি? বাজে এলিমেন্ট থেকে দেশকে মুক্ত রাখা সোজা কথা নয়, কিন্তু আমরা অন্ততঃ সচলকে পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিতে পারি।
মন্তব্যে আপত্তি জানালাম।
উদ্ধৃতি
শিবিরের কাজকর্ম ভালো করে প্রত্যক্ষ করেছি কলেজে উঠে।
চট্টগ্রামে অন্য কলেজের চাইতে এটা অবশ্য একটু ভালো ব্যবস্থা।
চট্টগ্রাম কলেজের মতো এমন আনন্দময় দু’বছর আমি কখনোই পাই নি। বাইরে থেকে হয়তো মনে হয় চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের আস্তানা, কিন্তু শিবির এমনই ধুরন্ধর প্রয়োজন না পড়লে (মানে কেউ ইলেকশন বা সেরকম কিছু করতে না চাইলে) এরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কখনো ঘাঁটায় না বা ঘাঁটানোর সাহস রাখে না।
কিন্তু শিবির তাদের মিছিলে যেতে সাধারণ ছাত্রদের ফোর্স করত না।
অন্য কলেজগুলোতে প্রায়শই ছাত্র-ধর্মঘট হতো। কিন্তু ছাত্র-ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম কলেজ কখনো বন্ধ হতে দেখি নি।
উদ্ধৃতি
কিন্তু আমরা খারাপ নেই।
বাংলাদেশের অর্থনীতি সবল হচ্ছে,
এখন আর আগের মতো হরতাল হয় না,
দুর্নীতি নেই,
মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা আছে।
সব পার্টি এখন মিলে-মিশে আছে, ভোট হয় না, ভোট নিয়ে তাই কোন ক্যাচালও নেই’।
দুর্নীতিবাজ সরকারের সবচেয়ে সৎ, যোগ্য মন্ত্রী!
ত্রিশ লক্ষ শহীদের সাথে বেঈমানি করার দায়ভারটা তাহলে কে নেবে?
-------------------------------------------------------------
অন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শিবিরের তৎপড়তা না থাকলেও অন্যান্য
সংগঠন আছে। যাদের রাজনৈতিক কার্যকলাপের ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার
পরিবেশ বিনষ্ট হয়। যা রাজশাহী বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব কম।
শিবির ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সেখানে নির্বাচন
বা অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোকে বাধা দেয়।
তাই
শিবির সেখানে একটা কলংকের দাগের মতো।
কথাটি গ্রহনযোগ্য নয়।
------------------
শিবির ছাত্রদের মাঝে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ইসলামের দাওয়াত তুলে ধরে।
তবে প্রত্যেক সংগঠনে কিছু কুলাংগার থাকতে পারে।
------------------
আমরা কইলাম- ‘তোমাদের আব্বা?!- সৌদি আরব, আমিরাত ওদের ফুটবল টিম তো শর্টস পরেই খেলে, ওরা কি তোমাদের চেয়ে কম মুসলমান নাকি? ওরা হাফপ্যান্ট পরে খেলতে পারলে আমাদের কেন ফুলপ্যান্ট পরতে হবে?’
মুসলমান বলে তাকে যে; ইসলামের সমস্ত অবশ্য পালনীয়(ফরজ) বিষয়গুলোকে সকল কিছুর উপর স্থান দেয়। সতর ঢেকে রাখা ফরজ। হাটুর উপর কাপড় তোলা তাই মুসলমানের কাজ হতে পারে না। মুসলমান দেশ ভিত্তিক হয়না, বিশ্বাস ও কর্মে মিল থাকতে হয়। সৌদি আরবের ফুটবল টিমের খেলোয়ারদের ক্ষেত্রে একই কথা।
তবে কলেজের ইন্টার-সেকশন ফুটবল কম্পিটিশানেই নয় শিবিরের উচিত ছিল এবিষয়ে সব সময় বলা-বোঝানো।শিবির কখনো বাগড়া দিসে বলে শুনি নি
কথাটি যদিও অরুচিপূর্ণ তারপরও, শিবিরের উচিৎ ছিল সর্বদা এ বিষয়ে বাগড়া দেয়া।
আপনাদের গুনাহ্ থেকে বাচাঁতে।
---------------------------------------
ত্রিশ লক্ষ শহীদের সাথে বেঈমানি করার দায়ভারটা তাহলে কে নেবে?
= আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠির আমাদের উপর অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ইত্যাদি বিভিন্ন অধিকার আদায় করতে না পেরে, আমাদের অধিকার আদায়ে আমরা দেখেছিলাম একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন।
সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে বাংলার রাজপথ, আগান-বাগান, মাটি রঞ্জীত হয়েছে। তা পূরণ করার দ্বায়ীত্ব ছিল যুদ্ধ পরবর্তী রাষ্ট্রনায়কদের। কিন্তু তারা তা না করে, ক্ষমতাকে পাঁকা পোক্ত করার চেষ্টা করেছেন, দেশের সম্পদ পাচার করেছেন বিদেশে, যুদ্ধ পরবর্তী ভারতীয় সৈন্যবাহিনী কর্তিক বাংলার সম্পদ লুট যার ফল যুদ্ধ পরবর্তী দূ্র্ভিক্ষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, দূর্ণীতি, যা পূরণ করতে পারেনি ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের শোধ।
এই শহীদদের সাথে বেঈমানী করেছেন সে সকল রাষ্ট্রনায়কেরা, মন্ত্রীরা, আমলারা যারা স্বাধীনতা উত্তর দেশের সম্পদকে বাপ-দাদার সম্পদ মনে করে নিয়েছেন।যারা মুক্তিযুদ্ধের দালালদের নিজেদের স্বার্থে হজম করে নিয়েছেন।
কোন দলই নিজেদের এ বিষয়ে শুদ্ধতা প্রমাণ করতে পারবেননা।
আওয়ামীলীগ সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নূরুল ইসলাম নিজেই ছিলেন রাজাকার কমান্ডার। এ দলটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার বিয়াই ছিলেন ফরিদপুরের শান্তি কমিটির নেতা। তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা সাবের চৌধুরীর পিতা ছিলেন রাজধানী ঢাকার শান্তি কমিটির নেতা। শুধু ঢাকা মহানগরী বা কেন্দ্রীয় নেতা নয় থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামীলীগের অনেক নেতা-কর্মীই রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতে ছিলেন।
বিএনপির অবস্থাও একই। একসময়কার প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজ নিজেই ছিলেন পাক বাহিনীর ঘনিষ্ট সহযোগী।খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন পাক সামরিক জান্তার একান্ত ঘনিষ্ট একজন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত তিনটি রাজনৈতিক দলেরই দলীয় প্রধানের উপদেষ্টা হিসেবে যারা দ্বায়ীত্ব পালন করেছেন তারা সবাই এসেছেন দালাল পরিবার থেকে। তারপরও আমরা শুধু জামায়াতকে এককভাবে অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে কোন অবকাশ রাখিনা।
প্রকৃত বেঈমানীর দায়ভার তাদের দেয়া উচিত যারা স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে খেলা করছে রাজনৈতিক ময়দানে জনগনের সাথে। দালালদের দিয়েছে আশ্রয়।দেশের সম্পদকে নিজের বলে মনে করছে।
একটি কথা আছে আমরা সংস্কৃতি উপভোগ করার আগেই সংস্কৃতি আমাদের নিয়ে খেলা করে। তেমনি আমরা রাজনীতি না বোঝার আগেই রাজনীতি আমাদের নিয়ে খেলা করে।
আমরা ঘুমিয়ে নেইতো??????
***********************************
দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, জীবন বদলে যাবে।
বরাহ নিজেই শিকারীর কাছে চলে এসেছে দেখা যায়।
নতুন মন্তব্য করুন