সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায়শই মৃদু থেকে মাঝারি ভূকম্পন অনুভূত হচ্ছে। ঘনবসতিপূর্ণ এদেশে বড় কোনো ভূমিকম্প যে বিশাল দুর্যোগ বয়ে নিয়ে আসবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শিরোনামে প্রস্তুতি ও করণীয় বলতে মূলত ব্যক্তিগত প্রস্তুতির কথাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। প্রচারণা, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কাজে রাষ্ট্র এবং নগর কর্তৃপক্ষগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভূমিকম্পের সাথে অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলির মধ্যে একটি বড় পার্থক্য হচ্ছে এটি খুব কম সময়ে কোনো ধরনের পূর্বাভাস ছাড়াই সম্পন্ন হয় (বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবশ্য টর্নেডো পূর্বাভাসও দেয়া হয় না)। প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে ভূমিকম্প বিষয়ে তাই ব্যক্তিগত পূর্বপ্রস্তুতি ও করণীয় সম্পর্কে ধারণালাভ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
ভূমিকম্প ঝুঁকি
নিজ এলাকায় ভূমিকম্প ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা রাখাও প্রস্তুতির একটা অংশ। ভূমিকম্প ঝুঁকি অনুযায়ী ভূ-তাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশকে তিনটি প্রধান অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। সিলেট বিভাগসহ নেত্রকোনা, শেরপুর, কুড়িগ্রাম জেলা এবং ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, গাইবান্ধা, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার অংশবিশেষ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে। ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ইত্যাদি জেলা মাঝারি ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় পড়েছে। (ম্যাপ)
চিত্রঃ ভূমিকম্প ঝুঁকি অঞ্চল (সূত্র)
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সর্বশেষ সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছিল ১৯১৮ সালে তৎকালীন শ্রীমঙ্গল বা সিলেট অঞ্চলে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৬ (সূত্র)। এছাড়া, ১৮৯৭ এবং ১৯৫০ সালে আসামে যে বিশাল ভূমিকম্প হয় তা ছিল সিলেট সীমান্ত থেকে খুব কাছেই। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের খুব কাছে ডাউকি ফল্ট (ম্যাপ) এবং ইউরেশিয়া-ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলের অবস্থান হওয়ায় এ অঞ্চল ভূমিকম্পের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
চিত্রঃ বিভিন্ন এলাকায় সম্ভাব্য ভূমিকম্প মাত্রা (সূত্র)
ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহর ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত হলেও বিশেষ করে ঢাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ন, নাজুক দালান-কোঠা এবং অত্যধিক জনসংখ্যা ভূমিকম্পে ক্ষয়-ক্ষতির সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে বিশাল এক ভূমিকম্প হয়েছিল (আনুমানিক ৭ থেকে ৮ মাত্রার) যা ইতিহাসে 'বেঙ্গল আর্থকোয়েক' নামে পরিচিত। এখন যদি ঢাকায় এ ধরনের কোনো ভূমিকম্প হয়, তবে অবস্থা কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। চট্টগ্রামেও ১৭৬২ সালে চট্টগ্রাম-আরাকান সীমান্তে একটি বড় ভূমিকম্প হয়েছিলো। সাম্প্রতিককালে, চট্টগ্রামে ১৯৯৭ সালে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫ তলা বাড়ি ধসে ২৩ জন নিহত হয়েছিল।
ভূ-তাত্ত্বিক গঠন অনুযায়ী ঢাকাকে চারটি ভূমিকম্প ঝুঁকি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। নিচে সাদাকালো প্রথম মানচিত্রটি ডেইলি স্টারে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আফতাব আলম খানের কলাম থেকে নেয়া এবং দ্বিতীয়টি করেছেন সচলায়তন সদস্য ভূ-তত্ত্ববিদ মুহম্মদ শাহাদাত হোসেন ওরফে দ্রোহী। ম্যাপ অনুযায়ী উত্তরা সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং খিলগাঁও, বাড্ডা, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রয়েছে। দু’টো ম্যাপের মধ্যে অবশ্য হাল্কা কিছু পার্থক্য রয়েছে। দ্বিতীয় মানচিত্রে পুরানো ঢাকা পুরোপুরি মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ দেখানো হলেও প্রথম মানচিত্রে বুড়িগঙ্গা সংলগ্ন অঞ্চল বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় চিহ্নিত হয়েছে। একইভাবে মিরপুর এলাকার বেশিরভাগ প্রথম মানচিত্রে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ দেখানো হলেও দ্বিতীয়টিতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দেখানো হয়েছে। মানচিত্রে চলক ব্যবহারে ভিন্নতার কারণে এ ধরনের পার্থক্য থাকা স্বাভাবিক।
চিত্রঃ ঢাকার ভূমিকম্প ঝুঁকি (ড. আফতাব আলম খান)
চিত্রঃ ঢাকার ভূমিকম্প ঝুঁকি (দ্রোহী)
ভূমিকম্পের তীব্রতা বা ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দালানকোঠার নির্মাণ, গঠন, উপাদান, উচ্চতা ইত্যাদির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। অনেক সময় ভূকম্পনের দোলনের সাথে ভবনের দোলনের যদি অনুরণন ঘটে তবে পুরো বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে। ১৯৮৫ সালে মেক্সিকো সিটির ভূমিকম্পে ৬-১৫ তলা ভবনগুলোর দোলনের সাথে ভূকম্পনের সর্বোচ্চ মাত্রার দোলনের সমাপতন বা অনুরণন ঘটেছিল। তাই এ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ বেশিরভাগ (৬০%) ভবনের উচ্চতা ছিলো ৬-১৫ তলা। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন উচ্চতার ভবনের একটি অনুরণন মানচিত্র দ্রোহী তৈরী করেছিলেন।
চিত্রঃ অনুরণন চিত্র (দ্রোহী)
প্রস্তুতি
• আপনি যদি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকেন তবে খোঁজ নিন আপনার ভবনটিতে ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা আছে কিনা, থাকলে তা কী মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পারবে। যদি না থাকে তবে রেট্রোফিটিং-এর ব্যবস্থা নিন। কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পুরনো ভবনেও রেট্রোফিটিং-এর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। জাপানে ভূমিকম্প একটি নৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু তাদের ভবনগুলিতে ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা থাকায় তাদের ক্ষয়ক্ষতি হয় অতি সামান্য।
• পরিবারের সবার সাথে বসে এ ধরণের জরুরী অবস্থায় কি করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে- মোট কথা আপনার পরিবারের ইমার্জেন্সি প্ল্যান কী সেটা ঠিক করে সব সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। ভূমিকম্পের সময় হাতে খুব সামান্যই সময় পাওয়া যাবে। এ সময় কী করবেন তা সবাইকে নিয়ে আগেই ঠিক করে রাখুন।
• বড় বড় এবং লম্বা ফার্নিচারগুলোকে যেমন- শেলফ ইত্যাদি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখুন যেন কম্পনের সময় গায়ের উপর পড়ে না যায়। আর টিভি, ক্যাসেট প্লেয়ার ইতাদি ভারী জিনিষগুলো মাটিতে নামিয়ে রাখুন।
• বিছানার পাশে সবসময় টর্চলাইট, ব্যাটারী এবং জুতো রাখুন।
• বছরে একবার হলেও ঘরের সবাই মিলে আসল ভুমিকম্পের সময় কী করবেন তার একটা ট্রায়াল দিন।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
নিচের পরামর্শগুলো আপনার ভবনে ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা আছে তা ধরে নিয়ে দেয়া।
১। ভূমিকম্পের সময় বেশি নড়াচড়া, বাইরে বের হবার চেষ্টা করা, জানালা দিয়ে লাফ দেবার চেষ্টা ইত্যাদি না করা উত্তম। একটা সাধারণ নিয়ম হল- এসময় যত বেশি মুভমেন্ট করবেন, তত বেশি আহত হবার সম্ভাবনা থাকবে। আপনার ভবনে যদি ভূমিকম্পরোধক ব্যবস্থা থাকে বা রেট্রোফিটিং করা থাকে তবে ভূমিকম্পের সময় বাসায় থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ।
২। আমেরিকান রেডক্রসের পরামর্শ অনুযায়ী- ভূমিকম্পের সময় সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল ‘ড্রপ-কাভার-হোল্ড অন’ বা ‘ডাক-কাভার’ পদ্ধতি। অর্থাৎ কম্পন শুরু হলে মেঝেতে বসে পড়ুন, তারপর কোন শক্ত টেবিল বা ডেস্কের নীচে ঢুকে কাভার নিন, এমন ডেস্ক বেছে নিন বা এমনভাবে কাভার নিন যেন প্রয়োজনে আপনি কাভারসহ মুভ করতে পারেন। তাদের মতে, কোনো ভবন ভূমিকম্পরোধক হলে তা খুব কমই ধসে পড়ে; যেটা হয় তা হল আশেপাশের বিভিন্ন জিনিষ বা ফার্নিচার গায়ের উপর পড়ে নেক-হেড-চেস্ট ইনজুরি বেশি হয়। তাই এগুলো থেকে রক্ষার জন্য কোন শক্ত ডেস্ক বা এরকম কিছুর নীচে ঢুকে কাভার নেয়া বেশি জরুরী।
৩। ভূমিকম্পের সময় এলিভেটর/লিফট ব্যবহার পরিহার করুন।
৪। ভূমিকম্পের সময় যদি গাড়িতে থাকেন তবে গাড়ি বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকুন। গাড়ীর বাইরে থাকলে আহত হবার সম্ভাবনা বেশি।
৫। 'মেইন শক' বা মূল ভূমিকম্পের আগে এবং পরে মৃদু থেকে মাঝারি আরো কিছু ভূমিকম্প হতে পারে যেগুলো 'ফোরশক' এবং 'আফটার শক' নামে পরিচিত। সতর্ক না থাকলে এগুলো থেকেও বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। সাধারণত কোনো বড় ভূমিকম্পে 'আফটার শক' প্রথম ঘণ্টার মধ্য থেকে শুরু করে কয়েক দিনের মধ্যে হতে পারে। ছবিতে একটা বড় ভূমিকম্পের শকের প্যাটার্ন দেখানো হয়েছে।
৬। প্রথম ভূমিকম্পের পর ইউটিলিটি লাইনগুলো (গ্যাস, বিদ্যুত ইত্যাদি) একনজর দেখে নিন। কোথাও কোন লিক বা ড্যামেজ দেখলে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন।
ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়লে করণীয়-
১। ধুলাবালি থেকে বাঁচার জন্য আগেই সাথে রুমাল বা তোয়ালে বা চাদরের ব্যবস্থা করে রাখুন।
২। ম্যাচ জ্বালাবেন না। দালান ধ্বসে পড়লে গ্যাস লিক হয়ে থাকতে পারে।
৩। চিৎকার করে ডাকাডাকি শেষ অপশন হিসেবে বিবেচনা করুন। কারণ, চিৎকারের সময় মুখে ক্ষতিকারক ধুলাবালি ঢুকে যেতে পারে। পাইপে বা ওয়ালে বাড়ি দিয়ে বা মুখে শিস বাজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন। তবে ভাল হয় সাথে যদি একটা রেফারির বাঁশি বা হুইসেল থাকে, তার প্রিপারেশন নিয়ে রাখুন আগেই।
ভূমিকম্পের সময় আসলে কতটুকু সময় পাবেন?
ভূমিকম্পের সময় প্রথম যে কম্পন টের পাওয়া যায় তা হলো প্রাইমারি ওয়েভ বা P-wave. এর গতিবেগ ১-১৪ কিমি/সে পর্যন্ত হতে পারে। এরপর আসে সেকেন্ডারি ওয়েভ বা Shear wave যার গতিবেগ ১-৮ কিমি/সে। এ দু’টো বডি ওয়েভ (চিত্র)। এছাড়া লাভ এবং রেলেই নামে আরো দু’টো ওয়েভ আছে যেগুলো সারফেস ওয়েভ এবং তুলনামূলকভাবে শ্লথগতিসম্পন্ন।
আমরা ভূমিকম্পে যে ঘরবাড়ি, অবকাঠামো ধ্বংস হতে দেখি তার জন্য মূলত দায়ী সেকেন্ডারি ওয়েভ এবং সারফেস ওয়েভগুলো- কারণ, এগুলোই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। এখন প্রাথমিক ভূ-কম্পন বা P-wave টের পাবার কতো সময় পর বাকিগুলো টের পাবেন? উত্তর হচ্ছে ব্যবধান খুব সামান্য। ধরুন আপনার অবস্থান ভূমিকম্পের এপিসেন্টার বা উৎপত্তিস্থল থেকে ২০০ কিমি দূরে। সেকেন্ডে যদি ১৪ কিমি বেগে P-wave আসে তবে ২০০ কিমি অতিক্রম করতে সময় নেবে প্রায় ১৪ সেকেন্ড। আর এরপর ৮ কিমি/সে বেগে সেকেন্ডারি ওয়েভ আসতে সময় নেবে প্রায় ২৫ সেকেন্ড। অর্থাৎ আপনি ভূমিকম্প টের পাবার মোটামুটি ১১ সেকেন্ডের ব্যবধানে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যাবে। এর মধ্যেই আপনাকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুনশ্চঃ এ লেখাটি ভূমিকম্পে কী করণীয়/জীবন রক্ষার টিপস পোস্ট থেকে পরিমার্জন ও হালনাগাদ করা হয়েছে। ভূমিকম্পের খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখার জন্য পুরনো পোস্ট দ্রষ্টব্য। যাঁরা সে পোস্টটিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, চিত্র ইত্যাদি যোগ করেছেন (বিশেষ করে দ্রোহী, শামীম ভাই) এবং প্রশ্ন করে সাহায্য করেছেন তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
মন্তব্য
পড়ুন এবং ছড়িয়ে দিন।
---------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
১.
নিঃসন্দেহে অতি গুরুত্বপূর্ণ লেখা।
২.
ডঃ আফতাব আলম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার থিসিস সুপারভাইজার ছিলেন। মনযোগ দিয়ে দেখলে দেখা যাবে তাঁর রিস্ক ম্যাপটির সাথে আমার হ্যাজার্ড ম্যাপটির যথেষ্ট মিল রয়েছে। যদিও তাঁর ম্যাপটিও আমার হাতেই তৈরি করা তবুও ম্যাপটির সাথে আমি পুরোপুরি একমত নই। কারণ ম্যাপটিতে তিনি যতগুলো কালো দাগের চ্যুতি লাইন (ফল্ট লাইন) দেখাচ্ছেন সেগুলোর অবস্থান নিয়ে তাঁর সাথে আমার মতানৈক্য রয়েছে। যেহেতু, ফল্টগুলোর অবস্থান সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত নয় সুতারাং সেগুলোর উপর ভিত্তি করে রিস্ক জোন ভাগ করতে গেলে খানিকটা ধারণার আশ্রয় নিতে হয়। হতে পারে তার ধারণাগুলো সঠিক, কিন্তু পরীক্ষা ব্যতীত তা মেনে নেয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানানো যেতেই পারে।
আমার থিসিস থেকে নেয়া হ্যাজার্ড ম্যাপটিতে ধারণাপ্রসূত কোন কিছু নেই। আমার কাছে যতটুকু ডেটা ছিল তার ভিত্তিতে হ্যার্জাড জোনগুলো ভাগ করেছিলাম। হয়তো বাস্তবতায় ম্যাপটির অনেক সীমাবদ্ধতা আছে কিন্তু ম্যাপটিতে আরোপিত কিছু নেই।
৩.
৫ নং পয়েন্টে আফটারশকের সাথে ফোরশকের ব্যাপারটাও যোগ করে দিন।
কাকস্য পরিবেদনা
১.
২. আগের কমেন্টটাও দেখেছি- দু'জনে দু'জনার
৩. ফোরশক যোগ করেছি। করতেই স্টিকি ছুটে গেলো।
ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা শহরগুলোতে খুব জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকি যাচাই করে রেট্রোফিটিঙের ব্যবস্থা নেয়া বাধ্যতামূলক করা উচিত। ভবনমালিকরা এই ব্যয় বহন করবেন। আমাদের দেশে পুরকৌশল থেকে পাশ করা অনেকে রয়েছেন, একটি জরুরি প্রকল্প করে প্রচুর কোয়ালিফায়েড পুরকৌশলী নিয়োগ দিয়ে কাজটি যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হোক। প্রতিটি ভবন যেন সার্টিফাই করা হয়, এবং সেই সার্টিফিকেট অনুযায়ী রেট্রোফিটিঙের আওতায় আসে। আইন করা ছাড়া ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে না। একটা দুর্বল ভবন শুধু তার বাসিন্দাদেরই মারে না, বরং আরেকজনের ঘাড়ে ভেঙে পড়ে তাকেও মারে। সময় নেই, একদমই নেই।
দ্বিতীয়ত, এই শহরগুলোতে লোকজনকে ভূমিকম্প পরিস্থিতিতে করণীয় ড্রিল শেখাতে হবে। এ কাজের জন্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্বল্পমেয়াদী কোর্স চালু করতে পারে। প্রতিটি পরিবারেও যদি একজন প্রশিক্ষিত মানুষ থাকেন, দুর্যোগপরবর্তী উদ্ধারকাজ সহজ হয়ে যায়। এ ব্যাপারেও গড়িমসির সুযোগ নেই। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উপযোগী একটি কোর্স ডিজাইন করে ইনস্ট্রাকটররা শুরু করে দিতে পারেন কাজ। একজন শেখাবে আরেকজনকে, এভাবে খুব দ্রুত কাজটা এগিয়ে নেয়া সম্ভব। অভিজ্ঞরা টিচিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করে নেটে ছড়িয়ে দিতে পারেন, পত্রিকার সাথে সরবরাহ করতে পারেন।
আমরা একটা মহাদুর্যোগের মুখোমুখি আছি। এটা উপলব্ধি করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
ভবনমালিকের নিজ খরচে আইন-মারফৎ বাধ্যতামূলক রেট্রোফিটিং-এর পরামর্শটা মনে হয় না বাস্তবসম্মত। এটা সরকারের পক্ষে সম্ভবও হবে না। রেট্রোফিটিং-এর বিশাল ব্যয় বহন করা বহু ভবনমালিকের পক্ষেই সম্ভব হবে না। মনে রাখতে হবে ভবনমালিক মাত্রেই বিরাট ক্যাশের মালিক না। এটা করতে গেলে প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের চেয়েও বড় মানবিক ভূমিকম্প ও বিপর্যয় ঘটে যাবে, যার ক্ষয়ক্ষতি হয়তো প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের চেয়ে খুব একটা কম হবে না।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ... ফেসবুকে শেয়ার করলাম
আমার কয়েক সেন্ট যোগ করি (বিশেষজ্ঞ না যেহেতু তাই সাধারণ মানুষের ভিউপয়েন্ট থেকে হবে, একটু ক্রেজী চিন্তা)
খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যায় এমন কিছু পয়েন্ট:
১। বাসার ডাইনিং টেবিলটা একটু বড় করে এবং বডি শক্ত করে বানান, দরকার হলে ডাবল লেয়ার কাঠ দিয়ে।
২। ডাইনিং টেবিলের পাতের নিচে "ভুমিকম্প এইড বক্স" সেট করে রাখুন। এতে টর্চ, রেফারির বাঁশী, শুকনো খাবার (বিস্কুট), সিম্পল ফার্স্ট এইডের জিনিসপত্র থাকতে পারে।
৩। দেখতে খারাপ দেখালেও ডাইনিং টেবিলের আশপাশেই কোথাও ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখা ভালো।
৪। যতদূর সম্ভব ঘরে সবগুলো রুমের দরজা খোলা রাখুন। ভবনধ্বসে বন্ধ দরজার দুমড়ে গিয়ে বের ভেতরে আটকা পড়ার কেস খুব বেশী হয়।
৫। ভুমিকম্প টের পেলে ঘরের সদর দরজা খুলে দিন, অন্যান্য দরজাও বন্ধ থাকলে যত বেশী সম্ভব খুলে দিন।
৬। বাসার সব সদস্যর বিছানার পাশে কোথাও একটি করে হেলমেট রাখার ব্যবস্থা করুন।
৭। সম্ভব হলে বাসার সবচেয়ে বড় বারান্দাটির গ্রিলের এক কোনায় গ্রিল কাটার ঝুলিয়ে রাখুন।
৮। সবচেয়ে বেশী আগুন লাগে গ্যাস লিকেজের কারণে। অবশ্যই রান্না শেষ হলে গ্যাসের মূল সুইচ বন্ধ করার অনুশীলন করুন। শুধু নিজে করলে হবেনা, বাড়ীর অন্যান্য প্রতিবেশীদেরকেও এই ব্যাপারে সচেতন করুন।
৯। বছরে একবার হলেও ঘরের সবাই মিলে আসল ভুমিকম্পের সময় কি করবেন তার একটা ট্রায়াল দিন। (এটা ভীষন কাজের)
১০। মোবাইল ফোন চার্জ দেয়ার জায়গাকেও ডাইনিং টেবিল থেকে কাছাকাছি কোথাও রাখুন। মোবাইল ফোনে সাহায্যকারী সংস্থাগুলোর ফোন নম্বর অবশ্যই রেকর্ড করে রাখুন।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ভাই, আপনার বুদ্ধি আমার ভাল লেগেছে। কিন্তু, ৭ নম্বর বুদ্ধি নিয়ে একটু কথা বলি।গ্রিল কাটারটা চোরের খুব কাজে লাগবে।
হা হা হা .... ভালো বলছেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
জ্বিনের বাদশা, গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট যোগ করেছেন। তবে টেবিল এমন হওয়া ভালো যেন এটা সাথে নিয়ে মুভ করা যায় মানে সবসময় কাভার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অনেক সময় কম্পনের ফলে কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির থাকা যায় না। 'ড্রপ-কাভার-হোল্ডঅন' পদ্ধতি এবং প্রস্তুতির আরো খুঁটিনাটি জানার জন্য এই ওয়েবসাইটটা কাজের।
ট্রায়াল বা ড্রিলের ব্যাপারটা মূল পোস্টে প্রস্তুতি অংশে যোগ করলাম। আপনাকে
হুমম, আসলেই, সমস্যার শেষ নাই। টেবিলে চাকা লাগানোর ব্যবস্থা করা গেলে খারাপনা, সাধারণ অবস্থায় লকড থাকবে, ডাক করার পর আনলক করা যাবে এমন কিছু
ওয়েবসাইটের জন্য ধন্যবাদ .... ভূমিকম্পের দেশে কাজে লাগবে
একটা আইডিয়ার কথা বলি
বাংলাদেশের জন্য "পূর্বপ্রস্তুতির লিস্ট আর ভূমিকম্পের সময় কি করা দরকার তার লিস্ট" নিয়ে একপৃষ্ঠার একটা সহজ ম্যানুয়াল বানিয়ে পত্রিকা অফিসগুলোকে অনুরোধ করে দেখা যেতে পারে। পত্রিকার ভাঁজের ভেতরে একটা বাড়তি কাগজ ঢুকিয়ে হয়তো তারা জনসচেতনতা সৃষ্টিতে রাজী হবেন
যেটাই হোক, বিশেষজ্ঞদের এগিয়ে আসতে হবে। বুয়েটের স্যাররা আসলে হয়তো সবচেয়ে ভালো হবে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ওহ আরেকটা কথা, আপনার পোস্টটার লিংক দিয়ে অন্য দুটো ব্লগে পোস্ট দিয়েছি। আপত্তি থাকবেনা ধরে নিয়েছি, তাও, আপত্তি থাকলে নির্দ্ধিধায় জানাবেন।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
গ্রিল কাটার না রেখে(চোরের কাজে লাগতে পারে) বারান্দা ও প্রতি রুমের একটি জানালার গ্রিল আয়তকার কেটে কব্জা লাগিয়ে ইমারজেন্সি এক্সিটের মত করা যেতে পারে। চুরির ভয়ে গ্রিলের ছিটকিনিটা(তালা না লাগানোই ভালো) যেনো বাইরে থেকে সহজে অ্যাক্সেস করা না যায় সে ব্যবস্থা করা যেতে পারে(ঢাকার সিএনজি অটোরিক্সাগুলোর গ্রিলে এ ধরণের ব্যবস্থা আছে)।
খুব প্রয়োজনীয় পোস্ট...শেয়ার করলাম ফেসবুকে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফেইসবুকে শেয়ার করলাম।
দ্রোহীদার কাছে একটি জিজ্ঞাস্য আছে। ঢাকার ভূমিকম্প ঝুকি ম্যাপে ( আপনারটা) হাই রিস্ক জোনের মধ্যে কয়েকটি ভেরি হাই রিস্ক জোনের অবস্থান দেখলাম। সেখানে উত্তরার কাছাকাছি ( উপরের দিকে ) ছোট্ট একটি জোনের অবস্থানের প্রাকৃতিক কারনগুলি কি একটু জানার ইচ্ছে ছিল। এই রিস্ক ম্যাপগুলির ভিত্তি কি? মানে ঠিক কোন প্যারামিটারের ভিত্তিতে রিস্ক ম্যাপ করা হয়?
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সচল জাহিদ ভাই, আপনার প্রশ্নটির জবাব দিতে গেলে কিছু কথা এসে পড়ে।
ড. আফতাব আলম খান তার ম্যাপটিকে বলছেন রিস্ক ম্যাপ [ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি]। অপরপক্ষে আমার থিসিস থেকে উদ্ধৃত ম্যাপটিকে আমি হ্যাজার্ড ম্যাপ [অনিশ্চিত ঝুঁকি] বলছি।
রিস্ক আর হ্যাজার্ডের মধ্যে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। অক্সফোর্ড ডিকশনারীর মতে –
হ্যাজার্ড = potential to cause harm [অনিশ্চিত সম্ভাবনা]
রিস্ক = likelihood of harm [in defined circumstances, and usually qualified by some statement of the severity of the harm]
হ্যাজার্ড আর রিস্কের মধ্যে কোন সরলরৈখিক সম্পর্ক নাই। agius.com থেকে দুটো উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে –
সুতারাং, দেখা যাচ্ছে কোন কিছু হ্যাজার্ডাস হলেই সেটা রিস্কি হবে এমন কোন কথা নেই। তেমনি কম হ্যাজার্ডাস হলে তা রিস্কি হবে না এমন কোন কথাও নিশ্চয়তা সহকারে বলা যায় না। ঠিক একইভাবে ভূমিকম্পজনিত হ্যাজার্ড ও রিস্ক ম্যাপ তৈরি করা হলে ম্যাপ দুটো পুরোপুরি ভিন্ন হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপরোল্লিখিত হ্যাজার্ড ম্যাপটি তৈরি করা হয়েছে Shear–Wave Velocity [ভূমিকম্পে ধ্বংসযজ্ঞের মূল হোতা], এবং ভূগর্ভস্থ মাটির ধরনের উপর ভিত্তি করে। উল্লিখিত তিনটি অঞ্চলে [উত্তরখান, মিরপুরের পশ্চিমাঞ্চল, ও খিলগাঁও–বাড্ডা মধ্যবর্তী অঞ্চল] shear–wave জনিত ধ্বংসযজ্ঞ ও সয়েল লিকুয়েফ্যাকশনের সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি বিধায় অঞ্চলগুলোকে হাইলি হ্যাজার্ডাস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আর, প্রাকৃতিক কারণ হিসাবে অঞ্চলগুলোর ভূগর্ভস্থ মাটির ধরনকে দায়ী করা যায়। এই অঞ্চলগুলো মূলত তৈরি হয়েছে হলোসিন [১০,০০০ বছর বা তার চাইতে কম] সেডিমেন্ট দ্বারা। এ ধরনের মাটিতে [সেডিমেন্ট] ভূমিকম্পজনিত লিকুয়েফ্যাকশন ঘটার সম্ভাবনা খুব বেশি।
এখন এই হ্যাজার্ড ম্যাপটি থেকে যদি রিস্ক ম্যাপ তৈরি করতে হয় তাহলে আরো অনেক অনেক ফ্যাক্টরকে [জনসংখ্যা, সে অঞ্চলের স্থাপনাসমূহের ধরন, বিল্ডিংগুলোর সংখ্যা, বয়স, ভূমিকম্প প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি] বিবেচনায় ধরতে হবে। যেমন ধরা যাক উত্তরখানের যে জায়গাটুকু হ্যাজার্ডাস সেখানে যদি কোন মানুষ বসবাস না করে কিংবা কোন প্রকার স্থাপনা না থাকে তাহলে সে জায়গাটি ভূমিকম্পজনিত ক্ষয়ক্ষতির বিবেচনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল বলে বিবেচিত হবে। যদিও সে এলাকাটি হাইলি হ্যাজার্ডাস ক্যাটাগরিতে পড়ে। অর্থাৎ অঞ্চলটি সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হলেও প্রকৃতপক্ষে ক্ষতি হবার পরিমাণ কম হবে।
সুতারাং, সাইজমিক হ্যাজার্ড ম্যাপ তৈরি করা যতটা সহজ রিস্ক ম্যাপ তৈরি করা ততটাই কঠিন কাজ। হ্যাজার্ড ম্যাপের ব্যবহার সুদূরপ্রসারী। ভবিষ্যত নগরায়ন পরিকল্পনায় ভূমিকম্পজনিত হ্যাজার্ড বিবেচনায় আনতে হয়। সেই তুলনায় রিস্ক ক্যালকুলেশনকে "টু দ্য পয়েন্ট" কাজ বলা যায়।
কাকস্য পরিবেদনা
চমৎকার ভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য, বিশেষ করে হ্যাজার্ড ও রিস্কের পার্থক্য বুঝিয়ে দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দ্রোহীদা।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
বাংলাদেশের মতো দেশে ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ যে কোন ট্রাজিক সিনেমাকে হার মানাবে। কল্পনা করতেও ভয় হয়। যদি সেরকম ভূমিকম্প হয় তাহলে ত্রানকাজে লাগার জন্য মানুষ পাওয়াও মুশকিল হবে। বিশেষ করে সরকারী অর্থে বানানো ভবনগুলোর দশা হবে সবচেয়ে করুণ। যেখানে প্রাক্কলিত রড সিমেন্টের বেশীরভাগ চলে গেছে দুর্নীতিবাজ 'কর্মজ'দের কাছে।
এটা ছাড়াও ব্যাঙের ছাতার মতো গজানো ডেভেলাপারদের তৈরী বহুতল ফ্ল্যাটগুলোও থাকবে আশংকার শীর্ষে। সেই হিসেবে পুরোনো ঢাকার ঘেষাঘেষি দালানগুলো বরং বেশী নিরাপদ। ওরা ধাক্কাধাক্কি করেও দাঁড়িয়ে থাকবে একজন আরেকজনের গায়ে।
ভুমিকম্পে আমার ব্যক্তিগত একটা টিপস, কম্পন শুরু হলে ভবনের নীচের দিকে না ছুটে বরং ছাদের দিকে চলে যাওয়া ভালো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
(গুড়)
এবং
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। অনেক ধন্যবাদ।
আগামীর সম্ভাব্য পরিত্যক্ত নগরী ঢাকায় বসবাসকারী খাঁচাবদ্ধ ইঁদুর-নাগরিক হিসেবে পোস্টটি পড়ে সত্যি বলতে কী আতঙ্ক দ্বিগুণ হলো !
এরকম বিপর্যয় হলে জীবনের ওয়ান-ওয়ে-চ্যানেলটা রুদ্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন সম্ভাবনা দেখছি না এখনো !
তবে গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ! সবার মনে যদি আতঙ্কটা ছড়ায় তাহলে এ নিয়ে সবাই চিন্তা করবে হয়তো। নইলে যা হবার তা-ই হবে !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সাম্প্রতিককালে চাঁদপুরে অনেকবার বিভিন্ন মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে ঢাকা বেশি দূরে নয়। তাই বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এখনই সতর্ক হতে হবে।
ভূমিকম্প সম্পর্কে আমার এক বন্ধু বেশ মজার কিন্তু একই সাথে নির্মম সত্য একটা কথা বলেছে: ভূমিকম্প হলে কি করতে হয় না হয় সেটা আসলে আমাদের দেশের (বিশেষ করে ঢাকার মানুষের) জানার তেমন দরকার নেই কেননা তেমন কোন ডেবাস্টেটিং ভূমিকম্প হলে যে ম্যাসাকার হবে এরপরে ত্রাণকাজের জন্য একেতো মানুষই খুঁজ়ে পাওয়া যাবে না আর গেলেও যারা বিভিন্ন ভবনে আটকা পড়ে থাকবে তাদের উদ্ধার হয়তো করা সম্ভব হবে এক দুই মাস পরে, যখন করে আর কোন লাভের সম্ভাবনা নেই।
রেট্রোফিটিং সম্পর্কে একটা কথাই বলার আছে তা হচ্ছে বেশিরভাগ সময়ই এর চেয়ে কম খরচে নতুন একটা ভবন নির্মাণ করে ফেলা যায়, এটা বেশ খরচসাপেক্ষ একটা ব্যাপার। আমার মনে হয় না, বাংলাদেশে এটা করা সম্ভব হবে।
পাগল মন
রেট্রোফিটিং বেশি খরচের ব্যাপার নয় বলেই শুনেছি। মূল খরচের চেয়ে নাকি মাত্র ১০%-১৫% বেশি খরচ হয়। জীবন বাঁচাতে এই ১০%-১৫% বেশি কেউ খরচ করতে রাজী হবে কিনা সেটাই কথা। রেট্রোফিটিং করার জন্য সরকার এবং ব্যাংকগুলো সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের কথা ভাবতে পারে। নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ভবনকে ভূমিকম্পরোধী করতে হলে বাড়তি যে খরচ হবে সে টাকা সরকার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের সময় ফেরত দিয়ে দিতে পারে। সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে এরকম অনেক ব্যবস্থাই নেয়া সম্ভব।
খুবই দরকারি একটা লেখা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
-শায়ের আমান,
নতুন মন্তব্য করুন