জামায়াত ও আল-বদরের ইতিহাস, পাকি মডেল, গো আযম, নিজামি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার

তানভীর এর ছবি
লিখেছেন তানভীর (তারিখ: শুক্র, ১১/০২/২০১১ - ১২:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্যে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে জানি না, বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে এ বিষয়ে সরকার ও বাদীপক্ষের প্রস্তুতি কেমন তাও জানি না। তবে মাঝে মাঝে পত্রিকায় জামায়াত-শিবির নেতাদের উদ্ধত কথাবার্তা দেখি। এ রিপোর্টে যেমন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এমটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন,

‘একটি ভিডিও ফুটেজ ও কয়েকটি পেপার কাটিং দেখিয়ে জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমকে যেমন যুদ্ধাপরাধী প্রমাণ করা যায়নি; তেমনি জামায়াতের বন্দি নেতাদেরও যুদ্ধাপরাধী প্রমাণিত করতে পারবে না সরকার।’

গোলাম আযমের নাগরিকত্বের রায় নাকি জামায়াতের সবচেয়ে বড় ভরসা। এই নরাধমের বিরূদ্ধে আদালতে কিছু প্রমাণ করা যায় নি। সবচেয়ে বেশি হতাশাজনক রায়ে আদালতের বক্তব্যঃ

‘কতিপয় সংবাদ ভাষ্য ও একটি ছবিতে দেখা যায় যে, আবেদনকারী অধ্যাপক গোলাম আযম, জেনারেল টিক্কা খান ও জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এ ব্যতীত পাকিস্তানি বাহিনী বা তাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর বা আল-শামস কর্তৃক কথিত নৃশংসতার সাথে আবেদনকারী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এমন কিছু পাওয়া যায় না।’

একাত্তরে গোলাম আজম টিক্কা খান ও ইয়াহিয়া খানের সাথে সাক্ষাৎ ব্যতিত আর কিছুই করেন নি। তিনি নিতান্তই মাসুম ও নাদান ছিলেন! ইউ গট টু বি কিডিং মি!! যে রায়ে এমন বক্তব্য থাকে তা দেখে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে জামায়াত নেতাদের ভরসা পাওয়াই স্বাভাবিক। আমার জানা নেই অভিনব এ রায় কোন বিচারপতি দিয়েছিলেন বা বাদী পক্ষের আইনজীবি কারা ছিলো। তবে তারা যে তাদের পেশার প্রতি সুবিচার করেন নি তা বলাই বাহুল্য।

যাহোক, অনেকে জানে তবুও আজ জামায়াত ও আল-বদর বিষয়ক দুটো বইয়ের কথা এখানে বলতে চাই যেখানে সুস্পষ্ট ভাষায় গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামীর একাত্তরের ভূমিকা সম্পর্কে বিবরণ রয়েছে। আশা করি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দলিলপত্র উত্থাপনের সময় এগুলো এড়িয়ে যাওয়া হবে না।

The Vangaurd of the Islamic Revolution:The Jama‘at-i Islami of Pakistan

সৈয়দ ওয়ালি রেজা নাসর রচিত ‘ভ্যানগার্ড অফ ইসলামিক রেভ্যুলশন’ ১৯৯৪ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়। ইরানি বংশোদ্ভূত নাসর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যাপক এবং ইসলাম ও রাজনীতি বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত। নাসর তার বইয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাস পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। বইটিতে অসংখ্য তথ্যসূত্র রয়েছে। আমি মনে করি শুধু জামায়াত সম্পর্কে জানতে নয়, একাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনীতির গতি-প্রকৃতি বুঝতে হলেও এ বইটি সবার পাঠ্য হওয়া উচিত। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ কেন আবার পাকিস্তানের পথে হাঁটা শুরু করল; কারা, কী কারণে জামাত-রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করলো, মৌলবাদ কেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতিই বা কেন শুরু হলো- এর উত্তরগুলো পাকিস্তান, তার সেনাবাহিনী ও জামায়াতের ইতিহাসের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।

নাসরের বই প্রচলিত তথ্যের বিপরীতে কিছু সত্য আমাদের সামনে তুলে ধরে। জামায়াতের মধ্যে আসলে কোনো পাকিস্তানপ্রীতি নেই, কোনো ভারত বা বাংলাদেশপ্রীতিও নেই (জামায়াতের শাখা আছে সবখানেই), এমনকি কোনো ইসলামপ্রীতিও নেই। যা আছে তা হলো মওদুদীপ্রীতি। দেশে দেশে মওদুদীতন্ত্র কায়েম করাই জামায়াতের একমাত্র লক্ষ্য। এ কারণে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্মলগ্নে জামায়াত পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছিল। মওদুদী ১৯৪৭-এর জানুয়ারিতে ‘পাকিস্তান’কে ব্যঙ্গ করে ‘ফাকিস্তান’ এবং ‘লেংড়া পাকিস্তান' হিসেবে অভিহিত করেন।

Mawdudi himself set the tone when in Kawthar in January 1947 he referred to the “Pakistan of the Muslim League” as “faqistan” (the land of the famished) and “langra” Pakistan (crippled Pakistan).

উল্লেখ্য, প্রথম আলোর কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস কিছুদিন আগে মওদুদীর বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে কেন এ মর্মে সরকারের বিরূদ্ধে ভুয়া অভিযোগ তুলে কান্নাকাটি এবং অন্য এক কলামে পাকিস্তানকে ‘ফাকিস্তান’ বলে অভিহিত করেন।

এই বইয়ে আমরা আরো জানতে পারি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী যাকে আমরা অনেকে দেবতুল্য গণ্য করে ‘মহাত্মা গান্ধী’ ডাকি, সেই তিনি জামায়াতের এই পাকিস্তান বিরোধিতাকে সমর্থন জানিয়ে তাদের বুকে টেনে নিয়েছিলেন!

In April 1947, during the Jama‘at’s regional convention in Patna, Gandhi attended a lecture by Amin Ahsan Islahi. After the lecture, Congress officials in the city announced that Gandhi had been invited to the session by the Jama‘at’s leaders, and a possible merger of the party into the nationalist movement might be in the making. Gandhi also lauded Islahi and endorsed his views, which the Mahatma argued “attacked the political uses of Islam!

পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করায় পাকিস্তান সূচনার দিনগুলোতে জামায়াতের অবস্থা তেমন সুখকর ছিলো না। সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগে পাকিস্তান সরকার মওদুদীর ফাঁসির আদেশও দিয়েছিল। এহেন কোনঠাসা জামায়াত পাকিস্তানে আবার পুনর্বাসিত হলো কী করে? পুনর্বাসন করলো পাকিস্তানের সামরিক জান্তা। সেনাবাহিনীর অবৈধ ক্ষমতা দখলকে পাকাপোক্ত করার জন্য তাদের দরকার হলো ধর্মভীরু জনগণকে ইসলামের আফিম গেলানোর। ফলে একদা আইয়ুব খান বিরোধী জামায়াত আবার আইয়ুব খানের হাত ধরে উঠে এলো। মদখোর, লম্পট ইয়াহিয়া খানকে তারা ‘ইসলামের চ্যাম্পিয়ন’ বলে ঘোষণা দিলো। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য যেমন সেনাবাহিনীর জামায়াত ও ইসলামিক লেবাসের প্রয়োজন ছিলো, তেমনি জামায়াতের স্বার্থও ছিলো সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষমতা দখল। সেনাবাহিনী একসময় ক্ষমতা ছেড়ে দিলে আওয়ামী লীগ ও পিপলস পার্টিকে পাশ কাটিয়ে তাদের হাতে ক্ষমতা দেবে এ আশায় জামায়াত সর্বশক্তি দিয়ে একাত্তরে পাক সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছিল।

বস্তুত, পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর যে দুই ভূত তার ঘাড়ে চেপে বসেছিল- সেনাবাহিনী ও মৌলবাদ, পঁচাত্তর পরবর্তীতে তারা বাংলাদেশের ঘাড়েও সওয়ার হয়েছে। ঠিক একই ছক কেটে, পাকিস্তানি মডেল অনুসরণ করে। জিয়াউর রহমানকে তাই সংবিধানে বিসমিল্লাহ যোগ করতে হয়েছিল, রাজাকার-জামাত-শিবির পুনর্বাসন করতে হয়েছিল; দুশ্চরিত্র, লম্পট এরশাদ ঘোষণা দিয়েছিল ইসলাম 'রাষ্ট্রধর্ম'। এগুলো নতুন কিছু নয়। এ শিক্ষা তারা পাকিস্তানে তাদের গুরুজনদের কাছ থেকেই দেখে শিখেছেন। প্রথম আলোয় ২৮শে জানুয়ারি, ২০১১ লরেন্স লিফশুলজের স্মৃতিচারণে আমরা কর্নেল তাহেরের আশংকার কথা জানতে পারি-

তাহের মনে করেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সংযোগস্থলে দাঁড়ানো। এই সেনাবাহিনী হয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাঠামো ও সাংগঠনিক প্রকৃতিতে গঠিত হবে অথবা তার নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তি খাটিয়ে এমন একটি সেনাবাহিনী গড়ে তুলবে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় আগে কখনো দেখা যায়নি। যদি এই সেনাবাহিনী আদর্শগত ও কাঠামোগতভাবে পাকিস্তানি মডেল গ্রহণ করে, যেখানে প্রায় সব সেনাসদস্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন, সে ক্ষেত্রে কোনো সন্দেহ নেই যে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীও ভবিষ্যতে কোনো একপর্যায়ে একটি সামরিক কিংবা একটি সামরিক-বেসামরিক স্বৈরতন্ত্রের এজেন্সিতে পরিণত হবে।

সেনাবাহিনীর দেখিয়ে দেওয়া পথ আমাদের রাজনীতিবিদরাও বেশ ভালো রপ্ত করেছেন। হাসিনাকে তাই ক্ষমতায় যেতে হিজাব পরে, তসবি হাতে ভোট চাইতে হয়, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম ও মোল্লাদের সাথে জোট গঠন করতে হয়। অন্য ম্যাডাম তো জামায়াতকে ক্ষমতায় নিয়ে গিয়ে তাদের মনের আশাই পূর্ণ করেছেন! এই যখন সার্বিক পরিস্থিতি, তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কতটা সুষ্ঠুভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

ভ্যানগার্ডে গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামী

জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাতের পর একাত্তরের এপ্রিলে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির গোলাম আযম যে পাকবাহিনীর কার্যক্রমে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল নাসর ভ্যানগার্ডে তা পরিস্কারভাবে উল্লেখ করেছেন।

After a meeting with General Tikka Khan, the head of the army in East Pakistan, in April 1971, Ghulam A‘ zam , the amir of East Pakistan, gave full support to the army’s actions against “enemies of Islam.

শুধু তাই নয়, সেপ্টেম্বরে পূর্ব পাকিস্তান জামাতের চার সদস্য সামরিক সরকারে যোগদান করে আর্মির সাথে জোট গঠন করে।

In September 1971 the alliance between the Jama‘at and the army was made official when four members of the Jama‘at-i Islami of East Pakistan joined the military government of the province.Both sides saw gains to be made from their alliance. The army would receive religious sanction for its increasingly brutal campaign, and the Jama‘at would gain prominence.

এসময় পাকবাহিনীর সহযোগী হিসেবে একাত্তরে জামায়াতের কুকর্মের সিদ্ধান্তগুলোও গোলাম আযম নিয়েছিল।


Its position was, in good measure, the result of decisions made by the Jama‘at-i Islami of East Pakistan, then led by Ghulam A‘ zam and Khurram Jah Murad. This branch of the Jama‘at, faced with annihilation, was thoroughly radicalized, and acted with increasing independence in doing the bidding of the military regime in Dhaka.

এখানে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি নাগরিকত্ব রায়ের মতো কোনো মাননীয় বিচারক বলেন যে গোলাম আযম হাতে-কলমে যুদ্ধাপরাধ করেছে এমন কোনো প্রমাণ নাই, তবে তাকে আমি সবিনয়ে জানাতে চাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার কাউকে নিজ হাতে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মেরেছে এমন কোনো প্রমাণ নাই। কিন্তু তার নির্দেশেই তার অধীনস্থরা লক্ষ লক্ষ মানুষ মেরেছে। বিচার হওয়ার সুযোগ থাকলে নিশ্চয়ই হিটলার হাতে-কলমে কাউকে মেরেছে কিনা তার প্রমাণ যোগাড় করতে হতো না। তেমনি একাত্তরে জামায়াতের হাতে যত বাঙালি নিধন হয়েছে, যত যুদ্ধাপরাধ হয়েছে, ১৪ই ডিসেম্বর এবং এর আগে, পরে যত বুদ্ধিজীবি হত্যা হয়েছে- তার সবকিছুই এই গোলাম আযমের নির্দেশে হয়েছে।

একাত্তরে গোলাম আযমের ‘ডান হাত’ কুখ্যাত মতিউর রহমান নিজামির অপকর্মের কথাও ভ্যানগার্ডে বিবৃত রয়েছে। নিজামি তখন ছিলো জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামি জামিয়াত-ই তুলাবাহ’ (IJT) এর ‘নাজিম-ই আলা’ বা প্রধান কমান্ডার। পাক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞে সহায়তার জন্য নিজামির এই আইজেটি ‘আল-বদর’ ও ‘আল-শামস’ নামে দুটো প্যারা-মিলিটারি বাহিনী গড়ে তোলে মূলত মোহাজের বা বিহারি সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে। নিজামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই আল-বদর ও আল-শামস বাহিনী পরিচালনা করে।

in May 1971, when the IJT joined the army’s counterinsurgency campaign in East Pakistan. With the help of the army the IJT organized two paramilitary units, called al-Badr and al-Shams, to fight the Bengali guerrillas. Most of al-Badr consisted of IJT members, who also galvanized support for the operation among the Muhajir community settled in East Pakistan.[37] Muti‘ u’ l- Rahman Nizami , the IJT’s nazim-i a‘la (supreme head or organizer) at the time, organized al-Badr and al-Shams from Dhaka University

Al-Badr by Salim Mansur Khalid (Lahore, 1985)

নিজামি প্রসঙ্গে নাসর তিনটি তথ্যসূত্র ব্যবহার করেছেন। এগুলো হলো লাহোর থেকে ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত উর্দুতে লেখা বই সালিম মনসুর খালিদের ‘আল-বদর’, কে এম আমিনুল হকের প্রবন্ধ ‘আল-বদর কমান্ডার বলতা হি’ এবং JVNAT-এ প্রকাশিত নিজামির সাক্ষাৎকার।

37. Salim Mansur Khalid, Al-Badr (Lahore, 1985); and K. M. Aminu’l-Haq, “Al-Badr Commander Bulta Hi,” in TT, vol. 2, 326–54.
38. Interview with Muti‘ u’ l- Rahman Nizami in JVNAT, vol. 2, 234–35.

আল-বদর বইটি সম্প্রতি আমি হাতে পেয়েছিলাম। শুনেছি বাংলাদেশে এর বাংলা অনুবাদ হয়ে গেছে এবং প্রকাশের অপেক্ষায়। বইমেলায় কেউ খোঁজ পেলে জানালে বাধিত হবো। আগ্রহীদের জন্য মূল উর্দু সংস্করণটি নিচে তুলে দিলাম। প্রথম পৃষ্ঠায় ইংরেজিতে এক আল-বদর কর্মীর বয়ান দেয়া আছে-

If you wish to know about the martyrs of ‘AL-BADR’…I have no courage to tell you..When I think of the tyranny to which they were subjected courage fails me…my heart bleeds and my soul shudders…You had better ask the Race Course Ground and the walls of the Dhaka University Campus, with all their silence, the recount the tragic tale so clearly, that I cannot do justice to the subject…So, in this respect, brother! I cannot control my tears,…every inch of this land is coloured with the blood of our dear fellows…..The tragedy is that we cannot even express our agony…The nation does not recognize our sacrifice, the Muslim Ummah does not realize its significance…We are strangers at home and foreigners in Pakistan….

আহা...! ইদানিং একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা বিদগ্ধজন আমাদের সামনে ‘আদার ন্যারেটিভ’ ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’ ইত্যাদি নানা ‘ডিসকোর্স’ উপস্থাপন করছেন, ‘রিকনসিলিয়েশনের’ নানা পন্থা বাতলে দিচ্ছেন। ‘আল-বদর’ বইটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আলামত হিসাবে উপস্থাপন করা যাবে কিনা নিশ্চিত নই, তবে রুবাইয়াত হোসেনের মতো লোকজন যে এতে পাকিপ্রেমের মতো রাজাকার/আল-বদরের প্রেমে মজে সিনেমা বানানোর মাল-মশলা খুঁজে পাবে- তা এই আল-বদর ছানার মায়াকান্না দেখেই বলে দেয়া যায়।

বহি

১। দ্যা ভ্যানগার্ড অফ ইসলামিক রেভ্যুলুশন- দ্যা জামায়াতে ইসলামি অফ পাকিস্তান

২। আল-বদর (মূল উর্দু সংস্করণ)- ডাউনলোড লিংক (৭৫ MB)

৩। আল-বদর কমান্ডার বলতা হি- ডাউনলোড লিংক [সৌজন্যে- এম এম আর জালাল]

৪। নিজামির সাক্ষাৎকার- ডাউনলোড লিংক [সৌজন্যে- এম এম আর জালাল]


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে সত্যিই বড় সন্দেহে ভুগি।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতি হিসেবে আমাদের স্থানকে নির্ধারণ করবে। এটার উপর নির্ভর করবে আগামী পঞ্চাশ বছর পরে হলেও আমরা একটি মাথা তুলে দাঁড়ানো জাতি হয়ে উঠবো কিনা!

রাজনীতিবিদরাও কি বুঝতে পারেন না যে যুদ্ধাপরাধীর বিচার সকল রাজনৈতিক স্বার্থের উর্দ্ধে গিয়ে তাদের উপকারই করবে!

মাঝে মাঝে খুবই অসহায় লাগে...

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তানভীর এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি আসলেই বিশ্বাস করি যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে না। এরা মারা যাওয়ার পরে একটা প্রতীকীমূলক বিচার হবে শুধু। -রু

তানভীর এর ছবি

বিচার যদি গুয়াজমের নাগরিকত্ব মামলার মতো হয়, তবে না হওয়াই তো ভালো। তেমন হলে তাদের তো আর যুদ্ধাপরাধীও ডাকতে পারবেন না।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

‘ফাকিস্তান’ এবং ‘লেংড়া পাকিস্তান'

ইনফরমেটিভ পোস্ট। চলুক

------------------------------------------------
যুদ্ধপরাধীদের বিচার বাংলাদেশীদের দাবি না; অধিকার।

তানভীর এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

বইখাতা এর ছবি

চলুক দরকারী একটা লিংক পাওয়া গেল - ভ্যানগার্ড ই-বইয়ের লিংক। সময় নিয়ে পড়তে হবে। ‘আল-বদর’ এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশ হয়ে গেছে কিনা কে জানে! খোঁজ নিতে হবে।

তানভীর এর ছবি

'আল-বদর' বেশ দুষ্প্রাপ্য বইও বটে। আমি ইন্টার-লাইব্রেরি লোনের রিকোয়েস্ট পাঠানোর পর লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস থেকে এক কপি আসে। তাতে বইখানা যেন লাইব্রেরির বাইরে না নেয়া হয় তার নির্দেশ দেয়া ছিলো। সাধারণত দুষ্প্রাপ্য বই হলে এমন নোটিশ দিতে দেখা যায়। অনেক কসরত করে বইখানা স্ক্যান করতে হয়েছে। যারা অনুবাদ করেছেন তাদেরও নিশ্চয়ই বেশ ঝামেলা করে বই এবং তারপর ট্রান্সলেটর যোগাড় করতে হয়েছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যে প্রবল ভয়টা আমার মধ্যে কাজ করে সেটা হচ্ছে, বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এমন পাঁচ-দশ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করেই এই প্রক্রিয়াটা বন্ধ করে দেবার সমূহ সম্ভাবনা আছে। সেই বিচারেও "প্রত্যক্ষ কোন প্রমান পাওয়া যায় নাই" ইত্যাদি কথা বলে অল্পকিছু দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ধরনের শাস্তি দেয়া হবে। এরপর গলা ফাটিয়ে, আকাশ কাঁপিয়ে সবাইকে জানান দেয়া হবে "আমরা যুদ্ধাপরাধীগো বিচার কইরা ফালাইছি"।

আমার এমন সন্দেহের ভিত্তি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার। সেখানে কয়েকজন হত্যাকারীর মৃত্যদণ্ড কার্যকর হলেও হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য অপ্রকাশিত থেকে গেছে, মূল পরিকল্পনাকারী আর সুবিধাভোগীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। তারপর এখন দিনে-রাতে আমাদের জানান দেয়া হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়েছে।

আগাছাকে তার মূলসহ উপড়ে ফেলতে হয়, নয়তো তার মূল থকে বার বার নতুন আগাছা জন্মাবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তানভীর এর ছবি

চলুক

দ্রোহী এর ছবি

"যুদ্ধাপরাধীদের বিচার" পুরোপুরি রাজনৈতিক ইস্যু।

আমি বিশ্বাস করি না যে আওয়ামীলীগের কোন সদিচ্ছা আছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে। কেন জানি মনে হয় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে কয়েকটা শুয়োরকে ঝুলিয়ে দিয়ে জনগণকে মুলা দেখাবে যে "আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলাম। আরেকবার নির্বাচিত কর আমাদের তখন আমরা বাকিদের বিচার করব।"

তানভীর এর ছবি

মূলাই ঝুলানো হবে...শুয়োর ঝুলানো...কভি নেহি!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ লেখা।

তানভীর এর ছবি

হ। এইজন্যে বেশি লোকে পড়ে নাই চোখ টিপি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভাই, লেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পড়েছি অনেক আগেই। কিন্তু মোবাইল থেকে পড়ার কারণে মন্তব্য করতে পারিনি।

কথা হচ্ছে, সরকার বিচার নিয়ে এখন কী করছে তা জানতে পারছি না। পত্রিকাগুলো না জানালে আমাদের কারো পক্ষেই জানা সম্ভবও নয়। এর মধ্যে বাঘের ঘরে ঘোগের আনাগোনাও আমরা দেখলাম। পরিস্থিতি কতদূর যাবে সেটা আলিমুল গায়েবই জানেন।

তানভীর এর ছবি

জালাল ভাই নিচের ডকুমেন্ট দুটো পাঠিয়েছেন। মূল পোস্টেও যোগ করে দেয়া হলো-

৩। আল-বদর কমান্ডার বলতা হি- ডাউনলোড লিংক

৪। নিজামির সাক্ষাৎকার- ডাউনলোড লিংক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।