ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিল সংলগ্ন সড়কটির নাম আমরা সবাই জানি ফুলার রোড। নাম শুনেই আন্দাজ করা যায় এটি ব্রিটিশ কোনো নাম। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি, কে ছিলো এই ফুলার? ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হবার পর ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’ নিয়ে (এবং এই নামে) যে নতুন প্রদেশ গঠিত হয়েছিলো, ফুলার ছিলো তার প্রথম গভর্ণর। পুরো নাম ব্যামফিল্ড ফুলার। মূলত বেয়াড়া বাঙালিদের শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যেই ভারতের তৎকালীন বড়লাট লর্ড কার্জন বাংলাকে দু’ভাগে ভাগ করেছিলো যা ইতিহাসে ‘বঙ্গভঙ্গ’ নামে পরিচিত। আর একাজে পূর্ববঙ্গ তথা এ অঞ্চলের বাঙালিদের নিপীড়নের জন্য বেছে নেয়া হয়েছিলো অত্যাচারী ব্যামফিল্ড ফুলারকে, প্রভুভক্ত রাজকর্মচারী হিসেবে যাকে দেয়া হয়েছিলো ‘নাইট’ উপাধি। ‘স্যার’ ব্যামফিল্ড ফুলার বাংলার গভর্ণর নিযুক্ত হয়েই প্রজাদের দমন-পীড়নের জন্য ‘গোর্খা বাহিনী’ নামিয়ে দেন। ততদিনে অবশ্য বাংলার বিভিন্ন এলাকায় নানা বিপ্লবী গুপ্ত সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। প্রতিশোধ স্পৃহায় মত্ত গুপ্ত সমিতি ‘যুগান্তরের’ বিপ্লবীরা বরিশাল, গোয়ালন্দ, রংপুর, শিলং ও গৌহাটি এলাকায় ফুলারকে বিভিন্ন সময়ে হত্যার প্রচেষ্টা নেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তা প্রতিবারই ব্যর্থ হয়। অবস্থা আঁচ করতে পেরে ফুলার তড়িঘড়ি করে পদত্যাগ করে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমায়। আর এই ফুলারের নামে আমরা সসম্মানে এখনো রাস্তার নাম রেখে দিয়েছি ‘ফুলার রোড’! সেলুকাস...!
সবচেয়ে বড় কুচক্রী বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনাকারী লর্ড কার্জনের নামে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কার্জন হল’। জন কার্জন ছিলো ভারতবর্ষে ইংল্যান্ডের সম্রাজ্ঞীর প্রতিনিধি বা ‘ভাইসরয়’- যাদের ডাকা হতো বড়লাট। ইটন স্কুল ও অক্সফোর্ডে লেখাপড়া করা কার্জন ছিলো ভীষণ নাক-উঁচু স্বভাবের। তার ধারণা ছিলো ভারতবর্ষের লোকেরা খুবই অযোগ্য, অসভ্য ও মূর্খ; ব্রিটিশরা যদি এদেশে না আসতো, তবে এখানে কখনো সভ্যতার ছোঁয়া লাগতো না- ভারতবর্ষ শাসন করে ব্রিটিশরা প্রকারান্তরে এখানকার লোকদের বিশাল উপকার করছে। কার্জনের মনোভাব যে একেবারে অমূলক ছিলো না তার প্রমাণ আমরা এখনো রেখে চলেছি তার নামে আমাদের শ্রেষ্ঠ এক বিদ্যাপীঠের নাম বহাল রেখে! আশ্চর্যের বিষয় হলো ঠিক এই ভবনেই অধ্যাপনা করে গেছেন বোস-আইনস্টাইন থিয়োরির জনক সত্যেন বসু, বের হয়েছেন অনেক অনেক নামজাদা শিক্ষার্থী, মুক্তিযুদ্ধে শহীদও হয়েছেন অনেকে। তাঁদের কারো নামে কি এই ভবনের নাম পালটে রাখা যেত না? কিন্তু ইংরেজি নাম থাকলে মনে হয় একটু স্ট্যাটাস বাড়ে, ‘রাজায় কইসে শালার ভাই...’।
কার্জন হলের কাছেই বুয়েট ক্যাম্পাসের সন্নিকটে রয়েছে ‘ইডেন’ মহিলা কলেজ, যার নামকরণ করা হয়েছে বাংলার অত্যাচারী ছোটলাট এশলে ইডেনের নামে। ইনিও ‘স্যার’, স্যার এশলে ইডেন। ভারতবর্ষে ইডেন এসেছিলো কোম্পানির কর্মচারী হিসেবে, ১৮৭৭ সালে হয়েছিল বাংলার ছোটলাট বা লেফটেনেন্ট গভর্ণর।
আমাদের মন্ত্রী-মিনিস্টাররা অনেকে রাজধানীর যে অভিজাত সড়কের পাশে থাকেন তার নাম মিন্টো রোড। অনেকে বলে মিন্টু রোড- শুনে মনে হতে পারে আব্দুল আউয়াল মিন্টু বা এইরকম কারো নামে। আসলে এ সড়কের নামকরণ হয়েছে আরেক লর্ড, লর্ড মিন্টোর নামে; জন কার্জন অভিমানভরে পদত্যাগ করার পর বড়লাট হিসেবে যে ভারতবর্ষে এসেছিলো। (এ গল্পটাও মজার। কার্জনের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকায় বুয়রের যুদ্ধে জেতা ভারত ফেরত ব্রিটিশ সেনাপতি কিচেনারের রেষারেষি চলছিলো। কিচেনার বেশি পাত্তা পাচ্ছে মনে করে কার্জন তার পদত্যাগপত্র ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে একটু বাজিয়ে দেখতে চাইলো। ভাবখানা এ পদত্যাগপত্র তো নেয়া হবেই না, উলটো তার কাছে সবাই অনুনয়-বিনয় করবে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য এবং সেইসাথে তার ক্ষমতা আরো বাড়িয়ে তাকে খুশি করা হবে। কিন্তু কেউ কিছুই করলো না, রাজাও জানালো ‘আমি দুঃখের সাথে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি..’ ...বেচারা!)
এরকম আরো পাওয়া যাবে আর্নল্ড টয়েনবির নামে টয়েনবি সার্কুলার রোড, ঢাকার কালেক্টর রবার্ট মিটফোর্ডের নামে মিটফোর্ড হাসপাতাল, লর্ড নর্থব্রুকের নামে নর্থব্রুক হল রোড ইত্যাদি।
ঢাকার বাইরেও এরকম অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যাবে। যে কক্সবাজারের নামে আমরা এত গর্ব করি, সেই কক্স ছিলো কুখ্যাত ওয়ারেন হেস্টিংসের নিয়োগকৃত অনুগত কর্মচারী। হেস্টিংস ছিলো বাংলার প্রথম গভর্ণর জেনারেল, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর যার আমলে এদেশে হয়েছিল- জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সে দুর্ভিক্ষে মরে সাফ হয়ে গিয়েছিলো। কক্সবাজারের নাম পালটে একটা সুন্দর বাংলা নাম কি আমরা দিতে পারি না?
মন্তব্য
একটু অপ্রসাঙ্গিক মন্তব্যঃ
না হয় কার্জন সাহেব খুব খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলা ভাগ করেছিলেন। কিন্তু সাথে করে আসামকে দিয়ে দিয়েছিলেন। তো আমরা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ৪১ বছর পরে ১৯৪৭ এ আবার নিজেদের ভাগ করলাম? তাও আসাম কে বাদ দিয়ে।
এটা মুসলিম লীগের নেতাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। তবে মনে হয় রেফারেন্ডাম হয়েছিলো। সিলেট ছাড়া আর কেউ 'পাকিস্তানে' যোগ দিতে রাজী হয় নি।
আপনার এই তথ্যটা ঠিক না | সিলেটে গণভোটে হারার পর ভারত আসামের বাকি অংশে আর গণভোট হতে দেয় নাই |
বঙ্গভঙ্গ তো ১৯১১ সালেই রদ হয়ে গিয়েছিলো। 'পূর্ববঙ্গ ও আসাম' ভেঙে তখনই আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছিলো। ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে নেতারা ভারত, পাকিস্তান ভাগ করেছিলেন। আসামের নেতারা তখন ভারতেই যোগ দিতে চেয়েছিলেন। শুধু আসামের সিলেটসহ, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এরকম কিছু বিতর্কিত এলাকা গণভোটের ভিত্তিতে মীমাংসা হয়েছিলো যে তারা পাকিস্তানে যাবে কি না। আসামের বাকি অংশে ভারত গণভোট হতে দেয় নাই- কথাটি সত্য নয়, সেখানে গণভোট হবারই কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিলো না। বরং আসামের বাকী অংশ মুসলিম প্রধান সিলেটকে বাদ দিয়ে খুশিই হয়েছিলো। বঙ্গভঙ্গের যুক্তি দেখিয়ে মুসলিম লীগের নেতারা হয়ত আসামকে পূর্ববঙ্গের সাথে রাখতে পারতেন। কিন্তু তারাও সম্ভবত হিন্দু প্রধান আসামের বাকি অংশকে বাদ দিয়ে মুসলিম প্রধান 'পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান' নিয়ে নাচতে নাচতে বাড়ি গিয়েছিলেন।
এই নামগুলো পরিবর্তন করে সুন্দর বাংলা নাম দিলে ভালো হয়। কিন্তু বাংলা নাম করতে গেলেই সেটা একটা পঞ্চবার্ষিকী জিনিসে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই বিদেশী নামগুলো ছাড়া কোনটাই তো স্থায়ী নয় দেখতে পাচ্ছি আমরা।
কতা সত্য। তবে তেনাদের নামে তো এখন শুধু দেশের নামকরণ করাটাই বাকী আছে। এসব ছোটখাটো জিনিসে তেনাদের নাম না জড়িয়ে রেহাই দেয়া হোক।
নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে যদি আবার সেটা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়ে যায় সে দায়িত্ব কিন্তু তখন আপনার।
কথা সত্য। আসলে একটু বিদিশি বিদিশি নাম না থাকলে মনে হয় এই ম্যাগাসিটির মান-ইজ্জতই থাকে না!
ব্যাপারটা নিয়ে যাদের ভেবে দেখা উচিৎ তারা কি আসলেই এটা নিয়ে ভাববে????
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
রাস্তার নাম দেবার সময় একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হয় যাতে নামটা লোকমুখে সহজে উচ্চারিত হতে পারে। কিন্তু ইদানিংকালে রাস্তার নাম দেবার সময় বিষয়টি খেয়াল করা হয় না বলে পরিবর্তিত নামগুলো জনপ্রিয়তা পায় না, বহুলভাবে ব্যবহৃতও হয় না। মগবাজার থেকে মালিবাগ মোড়ের রাস্তার নাম "শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক"। দেশের একজন মহিয়সী নারী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে এই নামকরণ যথার্থ। কিন্তু নামটির আকারের জন্য নামটি ব্যবহৃত হয় খুব কম, আর লোকমুখে চলে আরও কম। রাস্তাটি "সেলিনা সড়ক" বা "সেলিনা পারভীন সড়ক" দিয়ে রাস্তার দুই মাথায় তাঁর ভাষ্কর্য স্থাপন করে বড় ট্যাবলেটে তাঁর জীবনী ও অবদান যোগ করলে রাস্তাটি তাঁর নামে যেমন পরিচিতি পেতো সাথে সাথে আগ্রহী সবাই তাঁর ব্যাপারে আরো জানতে পারতেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
একমত।
facebook
সহমত
ধানমন্ডি ৫ নম্বর আবার জিগায়? এর বর্তমান নাম মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ রোড। ভদ্রলোক কে কিছুই জানি না।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
হাছা হাছাই জানেন না?
এইখানে দেখেন!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
সন্দেশের এই পোস্টটার কথা মনে পড়ে গেল।
বাংলাদেশের সবকিছুর নাম পাল্টে "রহমান" জুড়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। যে দেশে গুণীর সম্মান নেই সে দেশে গুণী জন্মাতে পারে না। বাংলাদেশে আর কখনো সত্যেন বসু, মেঘনাদ সাহা আসবে না।
হা হা। এই পোস্টটা তো আগে খেয়াল করি নি।
হুম...সবকিছু পালটে "রহমান" জুড়ে দিলেই আসলে ল্যাঠা চুকে যায়।
হ!
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
নামের শেষে একটা রহমান লাগাই নিলে দুই দিকেই সুবিধা
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
হতাশ হবার কিছু নেই। একদিন এদেশে বিভিন্ন স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ইত্যাদির চমৎকার চমৎকার নাম হবে জাতির শ্রদ্ধাভাজনদের নামে নিশ্চিত। তবে তার আগে এদেশ থেকে কিছু অপদার্থ প্রজন্ম ও নাম মুছে যেতে হবে। আমি আশাবাদী, আমাদের আগামী প্রজন্মরা এতো অপদার্থ হবে না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
দেখা যাক।
আসল জিনিসটাই বাদ গেছে। কেরু কোম্পানি।
কেরুমিয়া তো মনে হয় বিলাতি
'বাংলার' কোম্পানির নাম বিদেশীর নামে!! এটা কোনো মতেই মেনে নেওয়া যায় না...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হ্যাঁ। ব্যাটার নাম রবার্ট রাসেল কেরু। তবে এসব কিছু নাম থাকুক ইংরেজদের নামে। তাতে ক্ষতি নাই
ছিঃ, এইটা কী কইলেন ভাইয়া! কেরুর মত সুস্বাদু-বিখ্যাত জিনিসের নাম ইংরেজিতে থাকলে কেম্নে কী!
কেরুর উপর জিনিস নাই!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
'কেরু এন্ড কোং' এর নাম তাইলে হোক 'বণিক এন্ড কোং'
যতদুর মনে পরে, চট্টগ্রামের একটি রাস্তা আছে ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে। তাছাড়া যে দেশে বনানীর মত জায়গায় মোনায়েম খানের বাড়ির সামনে বিরাট করে লেখা 'শহীদ গভর্নর মোনায়েম খান' বছরের পর বছর অক্ষত থাকে, সেদেশে ব্রিটিশ বড়/ ছোট/ মাঝারি: সকল লাটের নামাঙ্কিত রাস্তা যে অক্ষতই থাকবে, তাতে সন্দেহের অবকাশ কই ?
লিখতে গিয়ে ফকা চৌধুরীর কথা মনে এসেছিলো। কিন্তু রাস্তাটা যে কই মনে করতে পারছি না। চন্দনপুরায় চট্টগ্রাম কলেজের পাশের রোডের নামকরণ করা হয়েছে 'ক্যাপ্টেন বখতিয়ার সড়ক'। বখতিয়ার সাহেব ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা এবং একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধী। এরকম আরো অসংখ্য নজীর আছে।
খুলনার প্রধান সড়কের নাম খান এ সবুর রোড। ব্যাটা রাজাকার। তার কবর আবার সংসদ ভবন চত্বরে, আড়ং-এর উল্টাদিকে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
তাই নাকি!
হ!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সহমত।
বাহ, চমৎকার লিখেছেন।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। ইংরেজ আমলের নামগুলো সম্বন্ধে প্রায়ই এমনটা মনে হত। ইংরেজি উচ্চারণে লাট সাহেবদের নামের প্রীতি এখনও বয়ে বেড়ানো আসলে হীনমন্যতার পরিচায়ক।
খুব বেশি টাকা পয়সা খরচ না হলে এটা করা উচিত। একসাথে না হলেও ধাপে ধাপে। অবশ্য দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান কারা এ নিয়ে ক্যাচাল লাগবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমার খুব ই মেজাজ খারাপ লাগে যখন লোকজনরে আমাদের বাসার ঠিকানা বোঝানোর জন্য বলতে হয়, "খাঁন এ সবুর রোড ধরে এই দিকে যেতে হবে . . . . . . . . ."
ধন্যবাদ গৌতম দাদা।
নামকরন নিয়ে এই দেশে এত পানি ঘোলা করা হয়েছে, এত টাকার অপচয় করা হয়েছে তা বোধ হয় আর কোথাও নজীর নাই।
যশোর রোড বলবেন। এখোনো মানুষ ওই রাস্তাকে যশোর রোড নামে বেশি চেনে। তাছাড়া এই রোডে প্রচুর ল্যান্ডমার্ক আছে, সেগুলোর কথা বলবেন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
মনে হয় না এতগুলা নাম বদলানো যাবে। বিদঘুটে নাম রাজনীতি আছে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের মগজে।
তার চেয়ে নামগুলোর আগে নরাধম বা নরপশু যোগ করে দেয়া সহজ। যেমন নরপশু কার্জন হল বা নরাধম ফুলার রোড
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কার্জন হলের নাম বসু ভবন হতে পারে।
আপসোস, এককালে সত্যেন বোসের মতো লোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। এখন করে আসিফ নজরুল, ফাহমিদুল হকের মতো লোক।
আর কক্সবাজারের নাম কী হতে পারে? কক্স সাহেবের বাজার শুনলেই তো গা জ্বলে
এক বিশালতা-ব্যাপকতার এবং আন্তর্জাতিক পরিচিতির বিচারে কোন ব্যাক্তিবিশেষের নামে এর নামকরণ না করে বরং 'বঙ্গবেলা' বা এজাতীয় কিছু একটা প্রস্তাব করা যেতে পারে। ব্যাক্তির নামে নামকরণ করলে হয়তো আবার নাম বদলের স্কীমে অন্তর্ভূক্ত হয়ে যেতে পারে এই জাতীয় পরিচয়বাহী সৈকতশহর। আরেকটা প্রস্তাব করা যেতে পারে, 'রহমান নগর'।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমরা আমাদের ওপর ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাসকে তো মুছে ফেলতে পারবো না। কক্স যদি কক্সবাজারে শহর প্রতিষ্ঠা করে থাকে, তাহলে তার নামটুকু থাকতেই পারে। কিন্তু যদি আমলারা তাদের বসকে তেল দেয়ার জন্যে বসের নামে কোনো কিছুর নামকরণ করে বসে থাকে, এবং সেই বসের চেয়ে যোগ্য ব্যক্তি যদি আমাদের কেউ হন, তাহলে নাম পাল্টানো যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে কার্জনের ভূমিকা সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না অবশ্য। সে যদি অনেক সংগ্রাম করে এর পেছনে, তাহলে কার্জন হল নামেও সমস্যা দেখি না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯২১ সালে। কার্জন এর অনেক আগেই এখান থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গিয়েছিলো। ওই ভবনের সাথে তার হয়ত কিছু সংশ্লিষ্টতা আছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে এটা রাজকার্যে ব্যবহৃত হতো।
উইকিতে দেখতে পাচ্ছি কক্সবাজারের অন্য নাম নাকি 'পানোয়া'। কোন ভাষার শব্দ জানি না, অর্থ 'হলুদ ফুল'। কক্স এ শহর প্রতিষ্ঠা করে নি। কক্স এখানে নিয়োগ পাওয়ার আগে এ শহরের নাম ছিলো 'পালঙ্কি'? আমরা কক্সবাজারের বদলে পুরনো নাম 'পালঙ্কি' বা 'পানোয়া' ব্যবহার করতে পারি।
ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস যদি রাখতে হয়, তবে সেটা সে সময়ের বিপ্লবী বা স্বদেশি কৃতী সন্তানদের নামেই রাখা উচিত। পাকিস্তান আমলের ইতিহাসকেও তো আমরা মুছে ফেলতে পারব না। তার জন্য কি আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানদের নাম রেখে দিতে হবে?
আপনার যুক্তিতে দমাছে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কক্সবাজার তো পর্যটন শহর। এর নাম পাল্টায় দিলে এর ইতিমধ্যে যতটুকু ব্র্যাণ্ডিং গড়ে উঠেছে, সেটার গোলামাজম মারা হয়ে যাবে না?
কার্জন হলের নাম বসু ভবন রাখা যায়, যদি না সত্যেন বোসের নামে ঢাবিতে এর মধ্যেই বড়সড় কিছু থেকে থাকে।
ফুলার রোডের নামও রাখা যায় কাজী মোতাহার হোসেন বা নলিনীকান্ত ভট্টশালীর নামে।
কক্সবাজারের পর্যটক বেশিরভাগই তো দেশি। বিদেশী আর কয়টা ঢাকার বাইরে যায়। আমরা এমনিও যাবো, নাম পাল্টায় দিলেও যাবো। যাওয়ার আর জায়গা কই।
পালঙ্কি আর পানোয়া দুইটাই সুন্দর নাম। আমি হাভুট দিলাম।
হিমু ভাই,
১। খুব বড় না হলেও "বোস সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন ফিজিক্যাল সায়েন্সেস" আছে।
২। কাজী মোতাহার হোসেন এঁর নামে ভবন আছে, শহীদ মিনারের ঠিক উল্টোদিকে
৩। নলিনীকান্ত ভট্টশালীর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভবত কিছু নাই বলেই মনে পড়ে, তবে জাদুঘরে একটা গ্যালারী আছে ওনার নামে।
৪। শহীদুল্লাহ হলের দোতালায় আতাউর রহমান খান খাদিম (২৫ মার্চের শহীদ শিক্ষক) এঁর নাম সম্বলিত ফলক অপসারন করে টাইলস বসিয়ে ঢেকে দেয়া হয় ২০০৬/৭ সালে
৫। অতি সম্প্রতি শহীদুল্লাহ হলের বর্ধিত ভবন দুটি'র নাম হলের দু'জন শহীদ শিক্ষকের নামে করার জোর দাবী এসেছে বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই [এখনও বাস্তবায়িত হয়নি]
হিমু ভাই,
১। খুব বড় না হলেও "বোস সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন ফিজিক্যাল সায়েন্সেস" আছে।
২। কাজী মোতাহার হোসেন এঁর নামে ভবন আছে, শহীদ মিনারের ঠিক উল্টোদিকে
৩। নলিনীকান্ত ভট্টশালীর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভবত কিছু নাই বলেই মনে পড়ে, তবে জাদুঘরে একটা গ্যালারী আছে ওনার নামে।
৪। শহীদুল্লাহ হলের দোতালায় আতাউর রহমান খান খাদিম (২৫ মার্চের শহীদ শিক্ষক) এঁর নাম সম্বলিত ফলক অপসারন করে টাইলস বসিয়ে ঢেকে দেয়া হয় ২০০৬/৭ সালে
৫। অতি সম্প্রতি শহীদুল্লাহ হলের বর্ধিত ভবন দুটি'র নাম হলের দু'জন শহীদ শিক্ষকের নামে করার জোর দাবী এসেছে বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই [এখনও বাস্তবায়িত হয়নি]
নতুন মন্তব্য করুন