মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে একটা প্রচলিত প্রপাগান্ডা হলো- "শেখ মুজিব ডেভিড ফ্রস্টকে তিন লক্ষ শহীদের জায়গায় বিভ্রান্ত হয়ে তিন মিলিয়ন বলে ফেলেছিলেন, সেই থেকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা তিন মিলিয়ন বা ত্রিশ লক্ষ চালু হয়েছে"। বঙ্গবন্ধু মুখ দিয়ে ‘তিন মিলিয়ন’ উচ্চারণ করার আগেই যে সংখ্যাটা বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্টে এসেছিলো, তা সচলায়তনে শেহাবের লেখায় পাওয়া যাবে। এই সাংবাদিক বা পত্রিকাওয়ালারা নিশ্চয় পাকিস্তানের কারাগারে গিয়ে শেখ মুজিবের সাথে আলাপ করে তাদের রিপোর্টে তিন মিলিয়ন বা ত্রিশ লক্ষ লেখেন নি! গণহত্যার ভয়াবহতা বিচারে হতাহতের সংখ্যা কেমন হতে পারে তা সরেজমিনে দেখেই সাংবাদিকরা রিপোর্ট করেছেন। হতাহতের সংখ্যা তাই কেউ শুধু মুখে মুখে চালু করে নি। তবে ‘তিন মিলিয়ন’ হত্যার ধারণা আবিস্কারের কৃতিত্ব যদি কাউকে দিতে হয়, সেটার দাবীদার তৎকালীন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭১ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি এই নরপিশাচই বলেছিলো-
"Kill three million of them, and the rest will eat out of our hands." (Robert Payne, Massacre, The Tragedy of Bangladesh and the Phenomenon of Mass Slaughter Throughout History; P50; New York, Macmillan, 1973).
যাই হোক, অবাক ব্যাপার হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে শহীদের সংখ্যা নিয়ে এই ‘লাখ/মিলিয়ন’ প্রপাগান্ডার মূল উৎস লন্ডনস্থ বিবিসি বাংলার দীর্ঘদিনের সাংবাদিক প্রয়াত সিরাজুর রহমান। ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে সিরাজুর রহমানের লেখা ‘প্রীতি নিন সকলে’ নামক এক বইতে প্রথম এ বিষয়ে কিছুটা জেনেছিলাম। তখন দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার সীমিত; গুগল, ইউটিউব চালু হয় নি। তার বক্তব্য আজগুবি মনে হলেও যাচাই করার তেমন সুযোগ ছিলো না। সম্প্রতি ফেসবুকে এক প্রবীণ ব্যক্তিকে দেখলাম মুজিবের নামে একই ‘লাখ/মিলিয়ন বিভ্রান্তির’ কথা প্রচার করতে। কৌতুহলী হয়ে সূত্র জানতে চাইলে তিনি সিরাজুর রহমানের বক্তব্যের ভিডিও ধরিয়ে দিলেন!
ভিডিওতে সিরাজুর রহমান বলছেন উনি বঙ্গবন্ধুকে জানিয়েছিলেন, মিডিয়াতে যা রিপোর্ট এসেছে তাতে নাকি শুধু ‘তিন লাখ’ বাংলাদেশী মারা গেছে; কিন্তু শেখ মুজিব 'পরের দিনই' ডেভিড ফ্রস্টকে বিভ্রান্ত হয়ে বলে ফেলেছিলেন ‘তিন মিলিয়ন’। সিরাজুর রহমানের ভাষায়- যেহেতু ‘উনি তো একটু উদ্ভ্রান্ত ছিলেন, একটু ভ্যাবলা গোছের ছিলেন’ তাই ‘লাখে এবং মিলিয়নে’ বিভ্রান্ত হয়ে বলেছেন তিন মিলিয়ন এবং সেই থেকে অনেক লোক এখনো বলে ‘তিন মিলিয়ন বা ত্রিশ লক্ষ’! এই হলো সিরাজুর রহমানের বক্তব্য!
বঙ্গবন্ধুকে সিরাজুর রহমানের 'ভ্যাবলা গোছের' ডাকার স্পর্ধার কথা বাদই দিলাম, সিরাজুর রহমান নিজে হয়তো ‘ভ্যাবলা গোছের’ সাংবাদিক ছিলেন, তাই বিভিন্ন পত্রিকায় যে ‘ত্রিশ লক্ষ’ সংখ্যাটা যে এসেছে- তা তিনি দেখেন নি (শেহাবের লেখা দ্রষ্টব্য)। কিন্তু তিনি যে তার বক্তব্যে মিথ্যাচার করেছেন সেটা দিনের আলোর মতো পরিস্কার। কারণ ‘পরের দিনই উনি ডেভিড ফ্রস্টকে বলেছেন তিন মিলিয়ন’- এটা একটা নির্জলা মিথ্যা কথা। সিরাজুর রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী ৮ই জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে যদি লন্ডনের হোটেলে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার দেখা হয়, তবে ‘পরের দিনই’ অর্থাৎ ৯ই জানুয়ারি ডেভিড ফ্রস্টের সাথে লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর কোন সাক্ষাৎ হয় নি (গার্ডিয়ানে লেখা চিঠিতে আবার তিনি গোঁজামিল দিয়ে ‘পরের দিন’ না বলে লিখেছেন ‘later’!) । ডেভিড ফ্রস্টকে বঙ্গবন্ধু সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পর ঢাকায় বসে যা নিউইয়র্ক থেকে প্রচারিত হয়েছে ১৮ ই জানুয়ারি ১৯৭২ সালে! (The David Frost Show, WNEW-TV, New York on January 18, 1972)। কাজেই, সিরাজুর রহমানের ‘পরের দিনের’ কথা এখানে ধোপে টেকে না।
১৮ ই জানুয়ারি ডেভিড ফ্রস্টকে যে শেখ মুজিব বিভ্রান্ত হয়ে তিন লাখের জায়গায় তিন মিলিয়ন বলেছেন- এটা যে সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মনগড়া তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে, ১৮ই জানুয়ারির আগেই বঙ্গবন্ধু 'তিন মিলিয়ন' লিখিত ভাষ্যে উল্লেখ করছেন। ১২ই জানুয়ারি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি পরিস্কারভাবে লিখিত বক্তব্যে 'তিন মিলিয়ন' উল্লেখ করেছেন যার কপি উপস্থিত সবার কাছেই ছিলো (ভিডিও দ্রষ্টব্য)। কাজেই ডেভিড ফ্রস্টকে বিভ্রান্ত হয়ে বলার কোন প্রশ্নই আসে না। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই ১২ই জানুয়ারি দেয়া লিখিত বক্তব্যের সংখ্যাই বাংলাদেশ সরকারের অফিশিয়াল এস্টিমেট হিসেবে সরকারীভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
এছাড়া ১০ই জানুয়ারি শেখ মুজিব দেশে ফিরে বলেছিলেন "Three million people have been killed. I believe that there is no parallel in the history of the world of such a colossal loss of lives for the struggle for freedom." আর সিরাজুর রহমানের সাথে যেদিন দেখা হয়েছিলো, সেদিনই অর্থাৎ ৮ই জানুয়ারি লন্ডনে সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু 'তিন' মিলিয়নের কোন উল্লেখ করেন নি। শুধু বলেছেন- “millions people died…’। কাজেই, সিরাজুর রহমানের কথা যে সত্য নয়, এই দলিলগুলোই তার প্রমাণ।
মন্তব্য
আইন করে প্রপাগান্ডা বন্ধ করা দরকার। ‘পাক প্রভাবিত’ এইসব মানুষ বঙ্গবন্ধুর আশেপাশে ছিলো এটা ভাবতেই অবাক লাগে।
গুড জব! তবে এতো তথ্যপ্রমাণ দেবার পরও কিছু মানুষ সেই ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে যাবে।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, পৃথিবীতে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া দেশগুলোর মধ্যে কোন কোন দেশে গণহত্যাকারী দখলদার/হানাদার/আগ্রাসনকারী/ঔপনিবেশিক প্রতিপক্ষের এতো বিপুল পরিমাণ সমর্থক আছে? কোন দেশে নিজেদের করা মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করার এত প্রচেষ্টা আছে? কোথায় জাতির পিতাকে অপমান করার এমন প্রবণতা আছে?
[ এই বইটিতেও ছাপার অক্ষরে এই বহুল প্রচলিত মিথটি ভাঙ্গা হয়েছে, যার কাছে ইন্টারনেট সহজলভ্য নয় তাকে এটি দিয়ে আশু আরোগ্যলাভে সহায়তা করা যেতে পারে। ]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ডেভিড ফ্রস্টের সাথে সাক্ষাৎকার "প্রচারিত" হয়েছে ১৮ই জানুয়ারী, কিন্তু সেটা ধারণ করা হয়েছে কবে, সেটার কোনো উল্লেখ দেখছিনা। আপনার লেখায় প্রচারিত বনাম ধারণকৃত, এই বিভ্রান্তিটা দেখতে পাচ্ছি (আপনার ভাষ্যমতে "১৮ ই জানুয়ারি ডেভিড ফ্রস্টকে শেখ মুজিব তিন লাখের জায়গায় তিন মিলিয়ন বলেছেন")। ডেভিস ফ্রস্টকে শেখ মুজিব আসলে কবে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সেটা না জানলে আপনার যুক্তিগুলি খাটছে না।
---কৌতুহলী
সাক্ষাৎকারটি ঢাকায় ধারণকৃত হলে অবশ্যই ১০ জানুয়ারির পরে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ভিডিও থেকেই পরিস্কার সাক্ষাৎকারটি ঢাকায় ধারণ করা হয়েছে, সুতরাং অবশ্যই ১০ জানুয়ারির পরে। অনেক জায়গাতেই উল্লেখ আছে ১৮ ই জানুয়ারি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন (খুঁজে দেখুন, পেয়ে যাবেন)। আর যেটা আসল ব্যাপার সিরাজুর রহমান ঐ সাক্ষাতকার ১৮ই জানুয়ারিই শুনতে পেয়েছে এবং ঐ সাক্ষাৎকারের কথাই ছিলো তার বক্তব্যে যেটা 'পরের দিন' হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। ১৮ই জানুয়ারির আগে বা 'পরের দিন' ডেভিড ফ্রস্ট আর বঙ্গবন্ধুর কোন সাক্ষাৎকারের খবর জানলে আমাদের সেটা জানিয়ে যাবেন।
একটু ঘেঁটে যা পেলাম, তা হলো এই---ডেভিড ফ্রস্টের সাক্ষাৎকার সম্ভবত আপনার সুত্রমত ১৮ জানুয়ারী নয়, প্রচারিত হয় ৩১ শে জানুয়ারী, টিভি ডট কম আর আইএমডিবি তাই বলছে। ১৮ই জানুয়ারী তারিখটা দেখছি ডেইলি স্টারের পিডিএফে, দেখে ঠিক বোঝার উপায় নেই যে এটা কি প্রচারের তারিখ না গ্রহণের তারিখ। গ্রহণ করা হয় বাংলাদেশে, সেটায় কোনো প্রশ্ন নেই, তবে কবে গ্রহণ করা হয় সেটা আপনার "খুঁজে দেখার" পরামর্শের পরেও পেলামনা।
সম্পূরক প্রশ্ন: ১০ই জানুয়ারীর শেখ মুজিবের তিন মিলিয়নের যে রেফারেন্স দিলেন, সেটা নেটে আরো কয়েক জায়গায় পেয়েছি, সেটা আসলে ঠিক কোথায় দেয়া? ফ্রস্টের সাথে কথা বলার আগে বাংলাদেশে ইংরেজিতে কারো কাছে সম্ভবত বক্তব্য দেননি, তাই সেটা বাংলায় হওয়ার সম্ভাবনা আছে, লাখ-মিলিয়ন প্রশ্ন সমাধানের জন্য তাই সেটার গুরুত্ব আরো বাড়ে।
---কৌতুহলী
আপনার সূত্রানুসারে যদি ৩১ শে জানুয়ারি প্রচারিত হয়, তবে তো আরো ভালো। সেক্ষেত্রে আরো নিশ্চিতভাবে ধরে নেয়া যায় সাক্ষাৎকার ১৮ই জানুয়ারি ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ই জানুয়ারির আগের কোন তারিখও জানা মতে নেই। কাজেই ডেভিড ফ্রস্টকে 'পরের দিন' তিন মিলিয়ন বলার ঘটনা সিরাজুর রহমান এবং প্রপাগান্ডাজীবিদের কল্পনাপ্রসূত।
সম্পূরক উত্তরঃ আপনি কি ১২ ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিক সম্মেলনে যে বঙ্গবন্ধু 'তিন মিলিয়ন' (লিখিত বক্তব্য থেকে পাঠ করা) বলেছেন সেটা দেখেন নি (ভিডিও দ্রষ্টব্য)? ঐ বক্তব্য কি আপনার কাছে ইংরেজি মনে হচ্ছে না? সেটা তো ডেভিড ফ্রস্টের কাছে সাক্ষাৎকারের আগেই বলা। নাকি শুধু ডেভিড ফ্রস্টের কাছে বললেই সেটা ইংরেজি হয়?
সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর পাইনি, সেটা সম্ভত আমার প্রশ্নটা ঠিক মত করা হয়নি বলে। লেট মি রিফ্রেজ, আপনার লেখায় "১০ই জানুয়ারী" শেখ মুজিবের বক্তব্যের কথা দেয়া আছে, যেখানে তিন মিলিয়নের কথা আছে, সেই বক্তব্যটা কোথায় দেয়া? "একটা সম্ভাবনা" আছে যে সেটা বাংলায় দেয়া, তাই এটা নিয়ে আমি আরেকটু আগ্রহী। (জবাব যে আপনাকেই দিতে হবে এমন নয়, এই বিতর্কের একজন ফলোয়ার হিসেবে আমি, এবং হয়ত আরো অনেকে, আগ্রহী, এটুকুই)
আর ১৮ই জানুয়ারী যে ধারণকাল সেটা একমাত্র ডেভিড বার্গম্যানের লেখায় পেলাম, ভারতীয় পত্রিকা দা হিন্দুতে, আর কোনো ভালো সূত্র পাইনি, তাই আপনার যুক্তিটা পুরো নিশ্ছিদ্র হচ্ছেনা। তবে এটা ঠিক, প্রচারকাল এখন আমি ৩১শে জানুয়ারীই ধরছি, ডেইলিস্টারের কনফিউজিং বাক্যের চেয়ে আইএমডিবিকেই ঠিক ধরছি, তাতে ধারণকাল ১৮ জানিয়ারী হওয়ার সম্ভাবনা আরো বাড়ে, এবং তাতে করে সিরাজুর রহমানের টাইমলাইন ভুল হওয়ার সম্ভাবনা আরো বেড়েছে।
---কৌতুহলী
আপনি কী জানতে চাইছেন, পরিস্কার না। ১০ ই জানুয়ারির বক্তব্য বলা আছে "Publicly announced"। সূত্র যেটা বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার হচ্ছে সেটা রামেন্দু মজুমদারের বই " Bangladesh My Bangladesh': Selected Speeches and Statements, Muktadhara. 74 Farashganj, Dhaka - 1, 1972: 140। এছাড়া বিভিন্ন পাকি সংবাদপত্র/সাইটেও এর উল্লেখ আছে। বক্তব্য যদি বাংলায় দেয়া হয় তবে 'ত্রিশ লক্ষ' বলা হয়েছে নিশ্চয়ই। নাকি অনুবাদকরা ভুলে তিন মিলিয়ন লিখেছেন?
১০ ই জানুয়ারির বক্তব্য নিয়ে এতো টানাটানি করছেন, ১২ ই জানুয়ারি তো পরিস্কার ইংরেজিতেই 'তিন মিলিয়ন' বলা হয়েছে। সেটা নিয়ে আপনার বক্তব্য কি?
সিরাজুর রহমানের দাবী মতে, শেখ মুজিব ফ্রস্টকে ভুল করে ইংরেজীতে ৩ মিলিয়ন বলে ফেলেন ৩ লাখ বলতে গিয়ে। আর এখন যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে তার ২ দিন পরেই ১০ই জানুয়ারী শেখ মুজিব "বাংলায়" "ত্রিশ লক্ষ" বলেছেন, এবং সেটা ফ্রস্টের সাথে কথা বলার সম্ভবত ১ সপ্তাহ আগে, তাহলে সিরাজুর রহমানের মিলিয়ন-লাখের থিওরী অসার প্রমাণিত হয় আরো বেশী, সেজন্যই এই বক্তব্য কবে কোথায় দেয়া হলো, বাংলায় না ইংরেজীতে, সেটার বিস্তারিত নিয়ে আমার আগ্রহ।
আরো সোজা ভাষায়, "১০ই জানুয়ারী বাংলায় ত্রিশ লক্ষ" আর "১২ই জানুয়ারী ইংরেজিতে তিন মিলিয়ন" এই ২ টার মধ্যে ১মটা সিরাজুর রহমানকে ভুল প্রমাণ করে আরো বেশী।
১২ই জানুয়ারী যে শেখ মুজিব ইংরেজীতে ৩ মিলিয়ন বলেছেন, এবং সেটা প্রায় নিশ্চিতভাবেই ফ্রস্টের সাথে কথা বলার আগে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
---কৌতুহলী
ইউটিউবে ১০ই জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে দেয়া ভাষণে 'ত্রিশ লক্ষ' বলার ভিডিও পেলাম। সম্ভবত এটাই বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে।
(মন্তব্য দুবার আসলে সরি)
দারুণ! ঠিক এটাই চাইছিলাম, তার মানে মুজিব ১০ই জানুয়ারীতেই বাংলাতে ত্রিশ লক্ষ সংখ্যাটা উল্লেখ করেছেন, যেটা ডেভিড ফ্রস্টের সাক্ষাৎকারের সপ্তাখানেক আগে। সিরাজুর রহমানের বক্তব্য ধোপে টিকছে না আর।
আর সাক্ষাৎকার ধারণের তারিখ নিয়ে আরেকটু সার্চ দিতে বেরিয়ে এলো, নিউইয়র্ক টাইমসের আর্কাইভে ১৭ তারিখের পত্রিকায় শেখ মুজিবকে নিয়ে নিউজে দেখতে পাচ্ছি "গতকাল ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে" তার মানে ১৬ তারিখ মিন করছে ধরে নিচ্ছি, আর এই পত্রিকায় ভুলের সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। ১৬ বা ১৮ যাই হোক, সেটা ১০ই জানুয়ারীর বাংলায় "ত্রিশ লক্ষ" বলার অনেক পরে।
----কৌতুহলী
তাছাড়া বঙ্গবন্ধু ১৪ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলনেও ত্রিশ লাখের কথা বলেছিলেন। সূত্র: দৈনিক বাংলা, ১৫ জানুয়ারি, ১৯৭২।
এইচ টি ইমামের বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১-৭৫ বই থেকে পেলাম।
-ইমতিয়াজ।
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
মুক্তিযুদ্ধ ডিনায়াল ল'টা একদম আর্জেন্ট হয়ে যাচ্ছে।
#নিটোল আরন্যক
চমৎকার, লেখার জন্য তানভীর ভাইকে
তবে এসব মিথ্যাচার কখনও থামবে বলে মনে হয় না, যতদিন মুক্তিযুদ্ধ/গণহত্যা অবমাননা আইন পাশ না হচ্ছে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি ত্রিশ লাখের কথা বলেছিলেন।
সূত্র: পূর্বদেশ ১১ জানুয়ারি, ১৯৭২।
এই কাগজ দেখুন ৭ কলাম
http://oldnewspaper.website/upload/2016/01/01/20160101123238-76ca5502.jpg
নতুন মন্তব্য করুন