ধর্ম ধর্ষণ। ষষ্ঠ পর্ব

তাপস শর্মা এর ছবি
লিখেছেন তাপস শর্মা [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৭/০৩/২০১২ - ৭:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মিথ্যে কথা বলব না। স্বীকার করছি আমিও একসময় নিজেকে হিন্দু মনে করতাম! এবং হিন্দুধর্মাচার পালনও করতাম! সেই সময়ের কথা বলছি যখন আমি সদ্য কিশোর। এগুলি পরিবারতন্ত্রের দ্বারাই আমাদের মাঝে গেঁথে দেওয়া হয়। আজ জীবনের কিছু বছর পেছনে ফেলে এসে একটা জিনিষ বারবার ধাক্কা দেয় – যে সংস্কৃতি নিজের আচরণে সভ্যতাকে পর্যন্ত কলঙ্কিত করতে পারে তাকে ধারণ করা কী অমানবিকতার নামান্তর নয়? এখানে একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন সংস্কৃতি আমাদের গ্রাস করে নাকি আমরা সংস্কৃতিকে লালন করি?- এই দ্বন্দ্বটা চিরন্তন। কিন্তু সংস্কৃতি যখন কোন একটা বিশেষ সত্তার( ব্যাপক অর্থে ধর্মের) দালালি করতে শুরু করে তখন তার অবস্থানটা কোথায় থাকে?

ছেলেবেলা থেকেই শুনে আসছি, আমার দেশ মহান। ছাব্বিশে জানুয়ারি, ১৫ই আগস্ট প্রত্যেকের সাথে আমিও জোর গলায় চিৎকার করতাম। এটা একটা জাতীয় চেতনা। কিন্তু এখন একটা জায়গায় এসে খটকা লাগে যখন দেখা যায় জাতীয় চেতনাকে ধর্মের সাথে গুলে দেওয়া হচ্ছে। সেই ব্যাপারটা আদৌ বুঝতাম না। একটু বড় হয়ে শুনতাম নিজের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের কথা। আমাদের সংস্কৃতি পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমাদের কালচারে যা আছে তা পৃথিবীর কোত্থাও নেই। ইদানিং সবকিছুকে কানা বোবা হয়ে মেনে নেইনা বলে মমিনরা বেশী আলোচনা করতে আগ্রহী হয়না। কেননা এখানে কালচার ইকুয়েল টু ধর্মের পোশাক পড়ানো হচ্ছে। এখানেই মূল দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

ঈশ্বর নামক একটা সত্তা নিয়েই যাবতীয় লড়াই। একটা সহজ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে নারাজ। প্রশ্নটা খুব সহজ – ঈশ্বর কোথায়? কিন্তু এর উত্তরগুলো ভীষণ জটিল হয়?

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ধর্মীয় মৌলবাদের আখড়াগুলিতে মূলত রাজনীতির চর্চাই হয়। কিন্তু তাতে এক ধরণের প্লাস্টিক চাপা দেওয়া থাকে। এটা ঠিক যে ‘নানা জাতি নানা মত নানা পরিধান’ সমাহার নিয়ে আমাদের দেশ অনেক উদারতার পরিচয় দেয়। কিন্তু সেই উদারতার পেছনেও যে অনেক নষ্টাচার লুকিয়ে আছে তার পরিচয় কোথায়? বিশেষত দেশের প্রায় সত্তর শতাংশ মানুষ যখন একটা বিশেষ ধর্মের প্রতি আনুগত্য দেখায় তখন বাকিদের কি অবস্থা হয়? আর সেই বিশেষ ধর্মেই যখন লুকিয়ে থাকে ধর্মের মানে নিষ্ঠুর নানা প্রথার ব্যাভিচার তখন অবস্থানটা কোথায় দাঁড়ায়?

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ কন্নাদ জেলায় প্রতি বছর নভেম্বর এবং ডিসেম্বর-এ কুক্কে সুব্রামানয়া মন্দিরে চম্পা ষষ্ঠী উৎসব পালিত হয়। তিন ধরে এই উৎসব চলে। উৎসব চলাকালীন সময়ে মন্দির চত্বরে শিওয়ালি ব্রাহ্মণদের জন্য ভুরি ভোজের ব্যবস্থা করা হয়। খাবার পরিবেশন করা হয় কলা পাতায়। ব্রাহ্মণদের খাওয়া শেষ হলে ওদের কলা পাতাগুলি ফেলে দেওয়া হয় না। ওই এঁটো কলাপাতার ওপরই তখন স্থানীয় দলিত এবং মালেকুদিয়া আদিবাসিদের গড়াগড়ি দিতে হয়। এমন একটা বিশ্বাস চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, নিম্ন বর্ণের মানুষ যদি ব্রাহ্মণদের এঁটো পাতের ওপর গড়াগড়ি দেয় তবে তাদের পূণ্য অর্জনই হয়! চর্ম রোগও নিরাময় হয়। সন্তান লাভ হয় সন্তানহীনদের। প্রতি বছরই হাজার হাজার দলিত এবং আদিবাসী সম্প্রদায় এতে অংশ নেয়। তুলু এবং কন্নাদ ভাষায় একে বলা হয় ‘মাদে স্নান’ এবং ব্রাহ্মণদের দাবী এই ‘মাদে স্নান’ প্রথা নতুন কিছু নয় । গত চারশো বছর ধরে চলে আসছে এই প্রথা। আশ্চর্যের বিষয় হল, হিন্দু শাস্ত্রের কোথাও কিন্তু চারশো বছর ধরে চলে আসা এই প্রথার বিষয়ে বিন্দুমাত্র উল্লেখ্য নেই!

এটা শুধু একটা উদাহারণ মাত্র। উত্তর ভারতের যেখানে সেখানে এই ধরণের কু-প্রথা দেখা যায় আকছার। কোথাও কোথাও বাবাজীদের তান্ডব, তো কোথাও তান্ত্রিক হুজ্জুতি। মন্দিরে মন্দিরে চরণামৃত খাওয়ার খতিয়ান। এইবার কথা হল ‘মাদে স্নান’ এর মত প্রথাগুলিকে লালন করছে কারা? এগুলিকে ঠিক অর্থে বলতে গেলে ‘প্রোমোট’ করছে কারা? এবং এর পেছনের উদ্দেশ্যগুলি কি? বর্ণ ভিত্তিক হিন্দু সমাজ ব্যবস্থায় বৈষম্যকে বজায় রাখার জন্য মাদে স্নানের মতো অমানবিক প্রথা চালু করেছে ওই উচ্চ বর্ণের শাসকেরাই। এক শ্রেণীর আনুগত্য অর্জন এবং দাবিয়ে রাখার মনোভাব যে এখনো বর্ণবাদী সমাজে কায়েম তার প্রমাণ আকছার পাওয়া যায়। যেখানে সরকার নিজে এর বিরোধিতা করেনা উল্টো দেখা যায় সরকারের তরফ থেকে এই উৎসবের ঠিকঠাক উদযাপনের জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়- তখন বুঝতে অসুবিধা হয়না এর গভীরতা কতটুকু। এই নির্মম প্রথার জন্য আসল মুখ কারা এর অনুমান সহজেই পাওয়া যায় যখন কর্ণাটকের উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী ডঃ ভি এস আচার্য বলেন - ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা এই প্রথা বন্ধ করে দিলে জন সাধারণের ‘বিশ্বাস’কে আহত করা হবে। সুতরাং ‘মাদে স্নান’এর মতো প্রথা চলতে থাকুক। এতে কারোর কিছু ক্ষতি হবে না।’’ এখানে বলে রাখা প্রয়োজন ডঃ ভি এস আচার্য একজন ডাক্তার! এর পর আর বলার অপেক্ষা রাখেনা যে এর মূল বীজ কোথায় প্রোথিত।

made snana_01 (2)

made snana_01

কট্টর দক্ষিণপন্থী হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন ‘আর এস এস’এর সঙ্গে যে এই সমস্ত আঞ্চলিক মানুষগুলির খুবই অন্তরঙ্গ যোগাযোগ আছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। কারণ এরাই আজ অবধি সব বর্ণবাদী কট্টর হিন্দু সমাজ ব্যাবস্থাকে প্রোমোট করে গেছে। এদের অনেক নেতার মুখে আজও নানা জায়গায় বলতে শোনা যায় বাল্য বিবাহ প্রথা কিংবা সতীদাহ প্রথার স্বপক্ষে সাফাই... ডাইনি প্রথার নামে এখনো চলে সীমাহীন শোষণ।

যদিও আজকাল অনেক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। তবুও কোথাও এসে খটকা লাগে যখন দেখা যায় ধর্মকে যারা উত্তরণ এর পথ বলে ওরাই কি করে মৌলবাদের বীজ বুনে দিয়ে যান। আর আম আদমির দল ঈশ্বরের হুজুগে গা ভাসিয়ে দিয়ে যায় চিরকাল...

তবুও একটা সময় আসে যখন অনেক সময় ধরে নির্যাতিত মানুষরা আওয়াজ তুলেন। মধ্য ভারতের দলিত এবং আদিবাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে অতি বামপন্থা আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে। এদেশে আজও বিভিন্ন স্থানে দলিত বা আদিবাসিদের অস্পৃষ্য করে রাখা হয়, কিছু মন্দিরে ওদের ঢুকতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না, এই ‘নরেগা’র সময়েও উচ্চবর্ণের মানুষেরা তাদের খেতি জমিনে প্রায় বিনে মজুরীতে দলিত বা আদিবাসিদের দিয়ে খাটিয়ে নেয় (কারণ, নরেগা’র পরিদর্শক বা ব্যবস্থাপনায় যে থাকে সে নিজেও উচ্চবর্ণের সম্প্রদায়ভুক্ত), সামান্য অজুহাতে ওদের নারীদের নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো হয়। একবিংশ শতাব্দীর শূন্যের দশক পেরিয়েও যখন মাদে স্নান এর মত বর্বর প্রথা সমাজের আস্তাকুড়ে ঠাই পায়, তখন অনুমান করতে অসুবিধা হয়না মানুষ এখনো কতটা নিকৃষ্ট, ধর্ম কতটা নৃশংস। মাদে স্নান নিয়েও অনবরত প্রতিবাদ শুরু হয়ে গেছে অনেকদিন ধরেই। তথাকথিত দলিত এবং আদিবাসী অংশের মানুষরাও এখন প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন।

এই সংক্রান্ত কিছু খবর---

১। এখানে

২। এখানে

৩। এখানে

..............................

আরও খবর ( ভিডিও)

আরও খবর ( ভিডিও -০২ )

STOP "made Snana" -একটা ফেইসবুক ইভেন্ট

সরকার চাপে আছেন। মানবাধিকার সংগঠনের মানুষরা এগিয়ে আসছেন। মানুষ সোচ্চার হচ্ছেন। সরকার পক্ষ থেকে আমতা আমতা করে ‘ব্যান’ শব্দটা উচ্চারন করতেও শোনা গেছে। কিন্তু এখনো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কারণটা অনুমান করতে সমস্যা হয়না যে কট্টরপন্থী হিন্দুবাদী এবং ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনীতির এই বিষ কতটুকু গেঁথে আছে রাজনীতির অলিন্দে। বিজেপি শাসিত রাজ্যেও এখন সংকটে আছেন মমিনরা... তবে কি পাল্টে যাওয়া শিখে গেছে মানুষ? দেখা যাক......


ছবি এবং ভিডিও সূত্রঃ ইন্টারনেট।

ধর্ম ধর্ষণ - এর অন্য পর্ব এখানে

=========================================

আমার শহর

মার্চ। ২৭। ২০১২


মন্তব্য

সাই দ এর ছবি

আমার একান্তই নিজস্ব পর্যবেক্ষণ- এই জাত প্রথা ভারতের মত দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা।

তাপস শর্মা এর ছবি

দেখুন প্রতিবন্ধকতা কিনা সেটা বলার আগে দেখতে হবে মূল সমস্যাটা কোথায়। আসলে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি এমন একটা জায়গায় পৌঁছে গেছে যে এর বিভাজন এবং তার নীতি স্পষ্ট । এবং যারা এটা করছেন ওরা কিন্তু সফল। এরপর বাকি রইল উন্নয়ন আর অন্যকিছু।

করতোয়া এর ছবি

রাজনীতি চলে মিথ্যার উপর আর ধর্ম চলে সত্যের উপর। এখন যে মিথ্যা কালচারে অভ্যস্থ সে সবকিছুই তার মিথ্যার সাথে মিলাবে এটাই স্বাভাবিক। রাজনীতিতেও ধর্ম আসতে পারে ঠেকাবার কোন উপায় নাই। কারন ধর্ম হচ্ছে প্যাটেন্টহীন একটি আদর্শ যে কেউ তা যত্র তত্র ব্যবহার করতে পারে। রাজনীতি থেকে ধর্মকে দূরে রাখতে হলে মানুষের সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। আমেরিকার মত উন্নত শিক্ষিত দেশেও এখন রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার একটি বিরাট সমস্যা। আমরা হয়তো অনেকে মনে করি ফরমাল এডুকেশনে ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা উচিৎ নয়। এটাই সমস্যা তৈরী করেছে। আমাদের ফরমাল শিক্ষালয়ে সব ধর্মের সুশিক্ষার ব্যবস্থা রাখলে মানুষ বুঝতে পারতো ধর্ম এবং রাজনিতী'র পার্থক্য কি। যে সব দেশে ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক রাখার নামে ধর্মীয় শিক্ষাকে ফরমাল এডুকেশন থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে সেখানেই অকপটে ধর্মকে রাজনীতির চাবিকাঠি হেসেব ব্যবহার করা সহজ হয়েছে। ফলে ধর্মের মূল সত্যতা এখন রাজনীতির মিথ্যা দ্বারা একধরনের ককটেল ধর্মীয় রাজনীতি তৈরী হয়েছে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমার আবার বিভিন্ন ধর্মমত নিয়ে ঘাটাঘাটির একটা অভ্যাস ছিল। কিন্তু কোথাওতো এই 'মাদে স্নান' এর কথা পাইনি।
যাক, আপনার লেখাটি থেকে নতুন কিছু জানা হলো।

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ।

বুনান এর ছবি

বড় ভয়ানক অবস্থা। দেবোত্তর সম্পত্তির নামে কোটি কোটি টাকা মন্দির গুলোতে জমা। এবং এই ঘটনা গুলোর রাজনৈতিক প্রভাব আছে। যতদিন শোষিত, দলিত শ্রেনী নিজেদের অবস্থার জন্য পুর্ব জন্মের পাপকে দায়ী করবে ততদিন এরা স্বর নীচু রাখবে। লড়াই করতে পারবে না। অতএব রাখো এদের এই ভাবে।

তাপস শর্মা এর ছবি

সেটাই হয় আবহমানকাল থেকে এটাই চলে আসছে। এটাই শোষণের ফান্ডা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ভয়ানক অবস্থা।
ধর্মান্ধতা নিপাক যাক। মানবতা মুক্তি পাক।

তাপস শর্মা এর ছবি

সেটাই।

তারেক অণু এর ছবি

ধর্মান্ধতা নিপাক যাক। মানবতা মুক্তি পাক।

তাপস শর্মা এর ছবি

তাই যেন হয়।

অচল এর ছবি

আমার ব্যাক্তিগতভাবে সবসময় মনে হয়, এই ধর্ম জিনিসটা কোনও দিনও ঈশ্বরের সৃষ্টি হতে পারে না। যদি এই সহজ কথাটা সহজ ভাবে মেনে নিই তাইলে এই ঠুনকো জিনিস নিয়া সব ক্যাচাল এক নিমিষে শেষ। আর আমি কোনদিনও আমার উত্তরসূরীদের এই অন্ধ ধারনাতে দীক্ষিত করব না। ব্যাস তাইলে আমরা একদিন এই মিথ্যার জাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।

তাপস শর্মা এর ছবি

হয়তো তাই হবে।

তবে ঈশ্বর কারে কয় তাই আমি জানিনা।

শিশিরকণা এর ছবি

ধর্ম হইল এই পৃথিবীর সবচে' পুরনো আর সবচে' বিশাল ইন্ডাস্ট্রি। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ হইল এই ইন্দাস্ট্রির সবচে' বড় ৪ টা প্রতিষ্ঠান, নামকরা ব্র্যান্ড, যেইসব ব্র্যান্ড গায়ে লাগায় ঘুরতে ঘুরতে মানুষ আলগা ভাব মারে। যে কেউ চাইলেই দোকান খুলে এদের ডিস্ট্রিবিউটর হয়ে যাইতে পারে। জাকির নায়েক, পোপ এরা হইল এইখানকার স্টিভ জবস আর বিল গেটস। দালাই লামা হইল গিয়া লিনাস টরভল্ড, সবাই জানে খুব ভালো, কিন্তু কেউ ব্যবহার করতে চায় না। কাব্বালা, ব্রাহ্ম এইগুলা হইলো স্টার্ট আপ ।।।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তাপস শর্মা এর ছবি

একমত।

আসলে কিছু সিস্টেম আছে, আর আছে কিছু সুনিপুণ ট্র্যাক। ম্যাঙ্গো পিপল সব সময় একটা চেনা ছকে পা দিতে অভ্যস্ত আর ধর্মের ইন্ডাস্টিইয়ালিসরা সেটাকে ব্যাপকহারে কাজে লাগান। ফান্ডা খুবই সিম্পল।

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

শিশিরকণা এর ছবি

তবে আমি বিশ্বাস করি ঈশ্বর আছেন, তিনি সরাসরি আমার অন্তরে কথা বলতে পারেন, আমার মনকে প্রভাবিত করার জন্য তার দালাল ধরতে হয় না। তার ক্ষমতার মহিমা চাইলে আমার চোখের সামনেই ঘটাতে পারেন সেই জন্য তার ফেসবুক পেজ কি চেইনমেইল খুলতে হয় না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তাপস শর্মা এর ছবি

আরে কি যে বলেন, আজকাল তো সব মমিন ছাগু/ছাগি'রা ফেবুতেই ঈশ্বর/আল্লার হেদায়তের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। দেঁতো হাসি

তবে আমি বিশ্বাস করি ঈশ্বর আছেন,

আমি মনে করিনা। আমি মনে করি আপনি আছেন, আমি আছি, সাথে আছে আমাদের এই জগত। ব্যাস। বাকিটা আপনার বিশ্বাস। আমি এতে আঘাত আনব না। হাসি

শিশিরকণা এর ছবি

সেটাই। আমার নিজের মনে ঈশ্বর নিয়ে নানা কন্সপিরেসি থিওরি আছে। কিন্তু সে আরেক প্যাচাল।
ধর্ম গুলোতে সব সময়ই ঈশ্বরকে একটি ব্যক্তিরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাকে ব্যাক্তিসুলভ বৈশিষ্ট্য ( যেমন শক্তিশালী, দয়ালু ইত্যাদি) দিয়ে চরিত্রায়ন করা হয়েছে। আবার বলার চেষ্টা করা হয় যে, এটি একটি সত্তা, এর কোন আকার নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার বলা হয় একসময় আমাদের তার মুখোমুখি হতে হবে। এগুলো পুরাই গাজাখুরি গল্প দিয়ে মানুষের মস্তিষ্ককে বিশ্বাস করানোর জন্য তৈরি একটা চরিত্র।

আমার বিশ্বাসে ঈশ্বর হচ্ছেন একটি মহাজাগতিক ব্যাবস্থা, জগতের সবকিছু যে একটা সিস্টেমে, ছন্দে চলছে, তার একটা ইউনিফাইড ব্যাখ্যা। এই জগতের সাথে নিজেকে আটকে রাখা যে অদৃশ্য সূতার টান আমি অনুভব করি, তার অবশ্যই কোন ব্যাখ্যা আছে, আমার বর্তমান জ্ঞান দিয়ে চেষ্টা করলেও ব্যখ্যার কিছু কিছু শূণ্যস্থান এখনো পূরণ হয়নি। এখনো বিজ্ঞানের বর্তমান জ্ঞানভান্ডার গুটি গুটি পায়ে এগোতে এগোতে একদিন এই ব্যাখ্যার মূল খুঁজে পেয়ে যাবে। তার আগ পর্যন্ত এই অজানা অংশটিকে সংক্ষেপে আমি ঈশ্বর নামে একটি শব্দ দিয়ে শুণ্যস্থান পূরণের চেষ্টা করছি।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

শিশিরকণা এর ছবি

ধর্ম বইগুলার পরের ভার্শনে থাকবে, " কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহ তোমাকে জিজ্ঞেস করবেন, তুমি কি ফেসবুকে আমার ছবিতে লাইক দিয়াছিলা? সেদিন উত্তর দেবার জন্য কোন ইন্টারনেট কানেকশান পাওয়া যাবে না, আল্লাহ সেইসব পাপী বান্দাদেরকে তার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে ডিলিট করে দিবেন।।। ফেরেশতা জুকাবার্গাইন সেদিন তাহার খাতা খুলিয়া পাপীদের বিপক্ষে সাক্ষী দিবে।।।।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অরফিয়াস এর ছবি

শূন্যস্থানপূরণ করতে গিয়ে "ঈশ্বর" নামটা নিলেই ঝামেলা হয়ে যাবে, একদল আপনাকে আস্তিক হিসেবে ধর্মালম্বীদের দলে টানবে আরেক দল আপনার সমালোচনা করবে !!

তার থেকে এই অতিপ্রাকৃত এই শক্তির অনুভূতিতে অন্য নাম দিন চোখ টিপি

ফেসবুকীয় ধর্মস্রোতে আমার সব ভেসে যাচ্ছে !

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তাপস শর্মা এর ছবি

'ঈশ্বর' একটি 'মহাজাগতিক ব্যাবস্থা' কিনা জানিনা। তবে অখন্ড ব্রম্মান্ডে যে কালচক্রের গতি এবং একটা অজানা রহস্য আছে তাকে কোনদিনই অস্বীকার করার সাধ্য নেই। তবে সেটা দেখিনি যেহেতু আর বিজ্ঞান যেহেতু এর ভিত্তি দিতে পারেনি তাই এর নির্যাসটুকু বুঝে নেওয়া কঠিন।

তবে আমাদের পৃথিবীর ভগবানের দল তো আছেন চোখ টিপি । এদের দেখেই মন ভরে যায়। কৃষ্ণ ভগবান কয়েকশ মাইয়ার লগে ফিল্ডিং মারে ওটা হয় ঈশ্বরলীলা, এরপর রামকৃষ্ণ ইত্যাদি প্রভুরা মানসিক বিকারে প্রলাপ বকেন, - সেগুলি হয় অমৃত বাণী, হজরত মুহম্মদ কারি কারি নারী নিয়া রাজত্ব করেন তারপরও ইনি হর্তা, ---এইতো আরও কত আছে বলে শেষ করা যাবেনা।

০২।

আর এটা ব্যাপক বলেছেন, হায় ফেসবুক।

গত এক বছরে ওখানে যত ছাগু/ছাগি দেখেছি যে আর বিনোদন আমার বিকল্প হিসেবে চাইনা।

কল্যাণ এর ছবি

কাম সারছে, কি কইচ্চেন!!

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

মানবতা আজো চলেছে অস্তাচলে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তাপস শর্মা এর ছবি

হয়তো একদিন স্বপ্ন সোনালী ফসল কুড়াবে। হয়তো একদিন সকালে খুম থেকে উঠে দেখা যাবে বদলে গেছে আকাশ রঙ কিংবা এই মানব ইতিহাসের প্রচ্ছদ। হয়তো………… ততদিন স্বপ্ন দেখতেই হবে।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

এমন অজস্র উদাহরণ সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মন খারাপ

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

তাপস শর্মা এর ছবি

হুম। ঠিক।

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।