১৯’শে এপ্রিল, ১৮৮৪

তাপস শর্মা এর ছবি
লিখেছেন তাপস শর্মা [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/০৪/২০১২ - ১২:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তিনি রবীন্দ্রনাথের কে ছিলেন? কি ছিলেন প্রকৃত অর্থে? সম্পর্ক, দ্বন্দ্ব, মিল, অমিল, কথা, টানাপোড়েন এসব নিয়ে বাংলা সাহিত্য অনেক অনেক আলোচনা করেছে। সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্লেষণ এবং বিন্যাস অব্যাহত। সেই তর্ক করার ইচ্ছে আমার নেই কিংবা বৃহৎ অর্থে বলতে গেলে সেই তর্কের জন্য যে জ্ঞান দরকার সেইরকম বোদ্ধা আমি নই।

শুধু জানি তাঁর নয় বছর বয়সে তিনি জোড়াসাঁকোতে বধূ হয়ে নয়, এসেছিলেন আট বছর বয়সের একজন বালকের খেলার সাথী হয়ে।

মাতঙ্গিনি গঙ্গোপাধ্যায় নামের সেই বালিকা ৫ই জুলাই ১৮৬৮ এ ঠাকুর বাড়ির গৃহবধূ হয়ে আসেন। তারপর কি করে তাঁর নাম পরিবর্তিত হল, পরিবার থেকে অনুমতি পেয়ে শিক্ষাদীক্ষা, জীবিত থেকেও পাষাণ পাথরের জীবন, তারপর একদিন অভিমানে চলে যাওয়া... থাক। এ সবকিছু সব বইয়ের পাতায় পাতায়ই আছে। সেই আলোচনাও থাক।

আলোকের প্রকাশ আমার কাছে কখনো কখনো সঙ্গীতে ধরা দেয়। আর সেই গান কোন আধুনিক, অত্যাধুনিক, রক কিংবা মেটাল নয়। সেই গানগুলি নিজের কাছে নিজের সুরে যেমন বাধা। আজ সকাল থেকেই কেমন জানি বিব্রত হয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনছি। মনেও ছিলনা কোন দিনের কথা। হঠাত কি জানি মনে হল, মাথায় ক্লিক করল, আগামীকাল তো ১৯শে এপ্রিল। ১৯শে এপ্রিল, এই দিনটা আমার কাছে একটা কারণে যতদিন জীবিত থাকব মাথা থেকে মুছবে না। কিন্তু সেই দিনটিতেই যে অন্য কিছুও ঘটে গেছে, তা যেদিন জেনেছিলাম সেই দিন থেকে এই দিনটা আরও বেশী করে বুকে বাজে, মরমে মরমে। কেউ যখন আমাকে রবীন্দ্রনাথের গান সম্পর্কে নানা কথা বলে তখন আমি এই কিছু অংশ কোট করি সবসময়। এটা আমার অভ্যেস। ''রবি আমাদের বাংলাদেশের বুলবুল'' - মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবিকাকার গান প্রসঙ্গে অবনীন্দ্রনাথ বলতেন - ''একলা মানুষের কন্ঠে হাজার পাখির গান।''

আর ঠাকুর নিজে বলতেন- ''তোমার গান রইল, এই আর কাল অপহরণ করতে পারবে না।''

স্মৃতিকথায় রবি ঠাকুর বলেছেন একটা ভীষণ মজার কাহিনী, “...পিতা তখন চুঁচুড়ায় ছিলেন। সেখানে আমার এবং জ্যোতিদাদার ডাক পড়িল। হারমোনিয়ামে জ্যোতি দাদকে বসাইয়া আমাকে তিনি নূতন গান সব কটি একে একে গাইতে বলিলেন। কোন কোন গান দুবারও গাইতে হইল। গান গাওয়া যখন শেষ হইল তখন তিনি বলিলেন – দেশের রাজা যদি দেশের ভাষা জানিত ও সাহিত্যের আদর বুঝিত তবে কবিকে তো তাহার পুরস্কার দিতো। রাজার দিক হইতে যখন তাহার সম্ভাবনা নাই, তখন আমাকেই সেই কাজ করিতে হইবে। এই বলিয়া তিনি একখানি পাঁচশ টাকার চেক আমার হাতে দিলেন।”

এইবার কথা হল কেন গানের কথা বলা। বলা এই কারনেই যে রবির গানের সাথেই মিশে আছে আমার ১৯শে এপ্রিল। আর সেদিনের ঘটনার নিঃসঙ্গ বেদনা সারাটা জীবন ‘সেই সুরে সাগর কুলে বাঁধন খুলে অতল রোদন’ হয়ে থেকেই যাবে।

আর রবীন্দ্রনাথ এর জীবনের ১৯শে এপ্রিল সারা বঙ্গদেশের কাছেই নয়, বিশ্ব সাহিত্যের খাতায় একটা প্রশ্নচিহ্ন। কারণটা মাতঙ্গিনি গঙ্গোপাধ্যায়। রবির ছেলে বেলার খেলার সাথী, বন্ধু, সাহিত্যের পাতায় প্রকাশের তাগিদ, মননের গভীরতা... সব। স্বামীর স্নেহ বঞ্চিত একটি নিঃসঙ্গ মেয়ে আর প্রথা বিরোধী মাতৃহীন নিঃসঙ্গ হৃদয়ের একটি ছেলে। দুটি নিঃসঙ্গ মানুষ কি করে সাজিয়েছিলেন তাদের জীবনবিতান তা ভাবতেই যেন কেমন লাগে। জীবনের ষোলটি বছর তারা একে অপরের আশ্রয় হয়ে কাটিয়েছিলেন। এরপর থেকে তাঁদের সম্পর্ক ঘিরে যে নানা কথা, গবেষণা, নানা সাহিত্যিক মুল্যায়ন—থাক সেদিকে আর নাইবা গেলাম। শুধু এতটুকু জানি হয়তো, মনে হয় তাঁদের জগতে তাঁরা অনেক সুখী ছিলেন। একে অপরের আশ্রয় ছিলেন। কিন্তু একদিন সবই শেষ হয়ে যায়। সব হারিয়ে যায়, বাঁধন ছিন্ন হয়ে যায়। শুধু থেকে যায় স্তব্ধতা... সেখানে আর যাই ছিল, ভালোবাসা ছিল, কিংবা প্রাণ... কিন্তু কলুষতা ছিল না। এই ভালোবাসা দিগন্তের প্রান্তীয়রেখা থেকে ধাবমান একটা বলয় ভিন্ন আর কিছুই নয়। ছিল একটা অর্বাচীন নির্ভরতা।

রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, “আমার চব্বিশ বছর বয়েসের সময় মৃত্যুর সঙ্গে যে পরিচয় হইল তাহা স্থায়ী পরিচয়। তাহা, তাহার পরবর্তী প্রত্যেক বিচ্ছেদ লোকের সঙ্গে মিলিয়া অশ্রুর মালা দীর্ঘ করিয়া গাঁথিয়া চলিয়াছে।”

এই মৃত্যু রবীন্দ্রনাথের নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবীর আত্মহত্যা। ১৯’শে এপ্রিল ১৮৮৪।

তিনি লিখছেন, “জীবনের মধ্যে কোথায়ও যে কিছুমাত্র ফাঁক আছে তখন তাহা জানিতাম না। সমস্তই হাসিকান্নায় একেবারে নিরেট করিয়া বোনা। তাহাকে অতিক্রম করিয়া আর কিছুই দেখা যাইত না। তাই তাহাকে একেবারে চরম করিয়াই গ্রহণ করিয়াছিলাম। এমন সময় কোথায় হইতে মৃত্যু আসিয়া এই অত্যন্ত প্রত্যক্ষ জীবনটার একটা প্রান্ত যখন এক মুহূর্তের মধ্যে ফাঁক করিয়া দিল তখন মনটার মধ্যে সেই কি ধাঁধাই লাগিয়া গেলো। চারিদিকে গাছপালা, মাটি, জল, চন্দ্রসূর্য, গ্রহতারা তেমনি নিশ্চিত সত্যেরই মতো বিরাজ করিতেছে। অথচ তাহাদেরই মাঝখানে তাহাদেরই মতো যাহা নিশ্চিত সত্য ছিল, এমন কি দেহ প্রাণ হৃদয় মনের সহস্রবিধ স্পর্শের দ্বারা যাহাকে তাহাদের সকলের চেয়েই বেশী সত্য করিয়াই অনুভব করিতাম সেই নিকটের মানুষ যখন এতো সহজে এক নিমিষে স্বপ্নের মতো মিলাইয়া গেলো তখন সমস্ত জগতের দিকে চাহিয়া মনে হইতে লাগিল এই কি অদ্ভুত আত্মখন্ডন? যাহা আছে এবং যাহা রহিল না এই উভয়ের মধ্যে মিল করিব কেমন করিয়া।’’

যুবক বয়েসের রবীন্দ্রনাথ এর হৃদয়ের ব্যাথিত স্পন্দন থেমে যায়নি। এই ঘটনা তিনি তাঁর মন থেকে কোনদিনও মুছে ফেলতে পারেন নি, পারেন নি নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করতে। একটা আলোর মতো তীব্র ছেদ সেই যে হৃদয়ের চোরা বালিতে গেঁথে গিয়েছিল তার চাপা ব্যাথা, সেই চোরা স্রোত বয়েই গেছে নিয়মিত। দীর্ঘকাল পরেও তিনি রানী চন্দকে বলেছিলেন, “নতুন বৌঠান মারা গেলেন, কি বেদনা বাজল বুকে। মনে আছে সেই সময় আমি গভীর রাত পর্যন্ত ছাদে পায়চারী করেছি, আর আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বলেছি কোথায় তুমি নতুন বৌঠান, কোথায় তুমি নতুন বৌঠান, একবার এসে আমায় দেখা দাও... কতদিন এমন হয়েছে সারারাত এভাবে কেটেছে। সেই সময় আমি এই গানটাই গাইতুম বেশী, আমার বড় প্রিয় গান...”

সেই গানটা আজ সকাল হতে অনেকবার শুনছি। বারবার। কি মিশে আছে সেই গানে। কোথাও ধোঁয়াশা নেই, কোন অতিরিক্ত পরিচর্যা নেই। সাধারণ যেন, একেবারেই সাধারণ। একটা স্মৃতিকল্প। মনের মণিকোঠায় বেজেই যাচ্ছে। তিনি বলতে চেয়েছেন যেন, আমি আছি, এখনো আছি, বেঁচে আছি, কথা বলছি, চাঁদ দেখছি কিন্তু তুমি কোথায় ‘নতুন বৌঠান’ তুমি কোথায়......

“আমার প্রাণের পরে চলে গেলো কে

বসন্তের বাতাসটুকুর মতো

সে যে ছুঁয়ে গেলো, নুয়ে গেলো রে

ফুল ফুটিয়ে গেলো শতশত

সে চলে গেলো বলে গেলো না...

সে কোথায় গেলো ফিরে এলো না

সে যেতে যেতে চেয়ে গেলো

কি যেন গেয়ে গেলো

তাই আপন মনে বসে আছি

কুসুম বনেতে......”

----------------------------------------------

আমার শহর

এপ্রিল। ১৮। ২০১২


মন্তব্য

খেয়া'দি এর ছবি

ভালো লাগল রে!

তাপস শর্মা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপু। হাসি

তারেক অণু এর ছবি
তাপস শর্মা এর ছবি

ধ্যনবাদ অণু।

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ কল্যাণ ভাই।

কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ দিলেই মাইর, ফর্মালিটি ছাড়ো। চলুক চলুক চলুক পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তাপস শর্মা এর ছবি

হাসি হাসি

ওক্কে ছাড়লাম। এইবার কও তোমার কি খবর? এত সময় হল, বাপু একটা লেখা তো ছাড়ো, নাকি??

কল্যাণ এর ছবি

আরে ব্যাটা কয় কি, এই যে শত শত মন্তব্যে সচলায়তনের আয়তন বাড়ায় চলতেছি এইগুলা ধর্বানা? খাইছে । লিখুম, এখন খালি পড়ে পড়ে রেডি করতেছি নিজেরে।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তানিম এহসান এর ছবি

লিখুম, এখন খালি পড়ে পড়ে রেডি করতেছি নিজেরে।

চলুক

তাপস শর্মা এর ছবি

থিকজ। জলদি করেন মিয়া। লেখা চাই-ই চাই। হাসি

কল্যাণ এর ছবি

হবে হবে, মরা মরা কইতে কইতে রত্নাকর উঁইঢিবি ফাটায়া বাল্মীকি হইতে পারলে আমিও কি আর একদিন কিছু একটা লিখে ফেলতে পারবো না? কিন্তু পড়েইযে কুল কর্তারিনারে ভাই।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তাপস শর্মা এর ছবি

অ। বুঝছি। তুমি মিয়া মহাকাব্যু লিখবা। হুম [ ব্যাপুক চিন্তিত হবার ইমো হপে ] খাইছে

আরেকটা কথা, কল্যাণ ভাই তুমি সচলের সবচে নিবিড় পাঠক।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

চলুক

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ।

সৌরভ কবীর  এর ছবি

উত্তম জাঝা!

তাপস শর্মা এর ছবি

হাসি । ধন্যবাদ।

সুপ্রিয় দেব শান্ত এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে।

নতুন বৌঠান কে নিয়ে তিনি মনে হয় এই গানটিও রচনা করেছিলেন

মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে চলে সে দিন ভরা সাঁঝে,
যেতে যেতে দুয়ার হতে কী ভেবে ফিরালে মুখখানি–
কী কথা ছিল যে মনে ॥
তুমি সে কি হেসে গেলে আঁখিকোণে–
আমি বসে বসে ভাবি নিয়ে কম্পিত হৃদয়খানি,
তুমি আছ দূর ভুবনে ॥
আকাশে উড়িছে বকপাঁতি,
বেদনা আমার তারি সাথি ।
বারেক তোমায় শুধাবারে চাই বিদায়কালে কী বল নাই,
সে কি রয়ে গেল গো সিক্ত যূথীর গন্ধবেদনে ॥

তাপস শর্মা এর ছবি

এমন অনেক অসংখ্য গান এবং কবিতায় তিনি ছেয়ে আছেন।

ধন্যবাদ।

আশালতা এর ছবি

রবীন্দ্রনাথের গান কবিতা যতটা ভালো লাগে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ক লেখা পড়তে আমার বরাবর ততটাই আলসি লাগে। এই লেখাটা ভালো লাগলো, হয়তো গানটা শুনলেই মন হু হু করে বলেই।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তাপস শর্মা এর ছবি

আমারও একই অবস্থা আপু। হাসি

দুর্দান্ত এর ছবি

রবীন্দ্রনাথের কিছু গান আর কবিতা কাদম্বিনীর দিক থেকে বেশী প্রযোজ্য় হয়। নিররঝরের স্বপ্নভংগের কথা বেশী নিউরন খরচা না করে ভাবুন, 'রবির কর' যদি সুরযরশ্মি না মানুষ রবির হাত হয়?

তাপস শর্মা এর ছবি

হ্যাঁ। কাদম্বরী দেবীর ছোঁয়া অনেক জায়গাতেই বেশ প্রাণবন্ত।

ঠিক তাই যেন স্বপ্নের মতো।

ধুসর জলছবি এর ছবি

লেখাটা দারুণ লাগল। হাসি চলুক

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে হাসি

সাইফ শহীদ এর ছবি

তাপস,

১৯শে এপ্রিল যে কাদম্বরী দেবীর আত্মহত্যার দিন, তা জানা ছিল না। এটা না জেনেই গত সপ্তাহে আমার ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথ ও আইন্সটাইনের যুগল ছবি দিয়ে লিখেছিলাম এই দুই সনামধন্য ব্যক্তির মধ্যে একটা অদ্ভুত জায়গায় মিল ছিল - একজনের ছিল কাদম্বরী দেবী এবং অন্যজনের এলসা। এদের জীবন সাধারনের মাপকাঠিতে মাপা কি উচিৎ।

ভাল লেগেছে লেখাটা।

সাইফ শহীদ

তাপস শর্মা এর ছবি

সাইফ শহীদ, দাদা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আসলে রবির কাদম্বরী অনেক বেশী নিশ্চল, দুঃখিনী, নিঃসঙ্গচারিণী।

তানিম এহসান এর ছবি

ভালো লাগলো।

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

উচ্ছলা এর ছবি

কী অন্যরকম সুন্দর একটা লেখা !
চলুক

তাপস শর্মা এর ছবি

হুম। থিঙ্কু হাসি

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

লেখা ভালো হয়েছে।

তাপস শর্মা এর ছবি

আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগল। হাসি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আপনার জেনে ভালো লাগবে যে, লেখাটা আমারো ভালো লেগেছে। হাসি
আমি উচ্ছলার মতো করে বলতে চেয়েছিলাম। খাইছে

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তাপস শর্মা এর ছবি

বলেই ফেললেন না, শুনি একটু...... খাইছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।