এমন হয়না। সহজে হয়না। এমনভাবে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া কথা শোনা হয়নি বহুকাল...
প্রথম সূচনা হয়েছিল ‘পথের পাঁচালি’ দিয়ে তারপর সেই পথে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো ‘গৃহদাহ’, এরপর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ এবং শেষটা ছিল ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’... এরপর বহুদিন। বহু সময় গড়িয়ে গেছে কিন্তু সেই স্পর্শের বিহ্বলতা, হৃদয়ের পোড়াস্থানে আন্দোলন উঠেনি বহুদিন।
তবে সবকিছুকেই নাড়িয়ে দিয়ে গেলেন তিনি এক ধাক্কায়। এখন কোথাও ছুটে পালাতে পারলে যেন বাঁচি। এই উপন্যাসটা মনে হয় আমার সবচে বেশী সময় ধরে পড়া গদ্য। প্রায় একমাস লাগল। কারণ পারছিলাম না, কয়েক পাতা আবার কখনো কয়েক লাইন পড়ার পরই আর পড়তে পারছিলাম না অনেক চেষ্টা করেও। এই করে অনেক বার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি। আবার বইটা হাতে নিয়েই আবার, আবার, ...... বারবার...
বাংলা ভাষায় রচিত এই উপন্যাসটি এযাবৎ ভারতের বারোটি আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করেছে ন্যাশানাল বুক ট্রাস্ট অফ ইণ্ডিয়া। এই উপন্যাসের জন্য লেখক পেয়েছেন অজস্ত্র সাহিত্য পুরস্কার, এরমধ্যে রয়েছে আই আই পি এম কর্তৃক একটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মান। সারা ভারতের গুটিকয় ক্লাসিকস এর সাথে বাংলা ভাষায় এটাই একমাত্র সৃষ্টিশীল লেখা যা সর্বভারতীয় সাহিত্যে অনুবাদের মাধ্যমে সুলভ সংস্করণের জন্য নির্বাচিত। কথিত হয়ে থাকে উপন্যাসটি উপমহাদেশের বিবেক।
অবশেষে শেষ করলাম এই ক্লাসিক। চোখের সামনে এখনো রূপকথার গল্পের মতো ভাসছে বাংলাদেশ! যার মুখ এখনো আমার দেখা হয়ে উঠেনি। শুধু সাদা পাতাতেই আমি হাতড়ে বেড়াই ঘাতকের ষড়যন্ত্রে বিচ্যুত আমার ভাষাকে, মাটিকে... ... তবে কি একটু বেশী বলে ফেললাম! হুম! আবেগ বড্ড খারাপ জিনিষ!
'নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে' – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় এর এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় -এপ্রিল, ১৯৭১। উপন্যাসটিকে যদি কয়েক লাইনে সারসংক্ষেপ করা হয় তাহলে এই দাঁড়ায় - বিপুল বাংলাদেশের ছোট্ট একটি গ্রামের কথা। আর সেই ছোট্ট গ্রামটির মধ্যে দিয়েই গোটা বংগদেশকে এঁকেছেন লেখক। প্লট স্বাধীনতার আগে থেকে শুরু। আছে রায়টের ক্ষুদ্র প্রচ্ছদ, মুসলিম লীগের তৎপরতার কথা। আর সেই সাথে ধানের শীষে আর নদীর বহমানতায় বাঙালির জীবন, বৃহৎ অর্থে বাংলাদেশের জীবন এবং তার রঙ।
কি বলছেন সাহিত্য বোদ্ধারা। দেখে নেওয়া যাক -
সমরেশ মজুমদার এর ভাষায় – ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ এই সময়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তফা সিরাজ লিখেছেন – “দুই বাংলার সাহিত্যিক ঐতিহ্যের ঐক্যে বিশ্বাসী বলে আমার জানাতে দ্বিধা নেই যে, অতীনের এই রচনা এযাবৎকালের নজিরের বাইরে। ভাবতে গর্ব অনুভব করছি যে, আমার সমকালে এক তাজা তেজস্বী খাঁটি লেখকের আবির্ভাব ঘটেছে।আজ হয়ত তিনি নিঃসঙ্গ যাত্রী। কিন্তু বিশ্বাস করি, একদা আমাদের বংশধরগণ তাঁর নিঃসঙ্গ যন্ত্রণা অনুভব করে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে তিরস্কার বর্ষণ করবে। ‘পথের পাঁচালীর পর এই হচ্ছে দ্বিতীয় উপন্যাস যা বাঙলা সাহিত্যের মূল সুরকে অনুসরণ করেছে।"
জীবন, জিজ্ঞাসা, সময়, মানুষ সব একসময় ধোঁয়াশা মনে হয়। তবুও মনে হয় বেঁচে আছি....
সাথে বেঁচে আছে মৃত গদ্য, টলটলে কালির আঁচর, খসখসে খাতা এবং আমি... বেঁচে আছি।
আবার হয়তো বেড়িয়ে যাবো ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’... … সেই কবে থেকে যেন খুঁজছি । এইবার আবার পাড়ি দিতে হবে কোন গভীর অরণ্যে! যেখানে কবরে শুয়ে আছে চির দুঃখিনী জালালি, যেখানে সামসুদ্দিন আর রঞ্জিত মালতীকে নিয়ে ছুটছে ধানের শীষ কুড়াতে, যেখানে দুর্গাপুজোর দিনে অমলা আর কমলা পরী সেজে ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়, যেখানে বড় বৌমণি ঠাকুর বাড়িতে সন্ধ্যায় ধুপ দেয় আর ধন বৌ গেছেন রান্নার আয়োজনে। এখনো হয়তো কাঁঠাল গাছটঠালনীচে অপেক্ষা করছে ফতিমা তার প্রিয় সোনা ঠাকুর আসবে বলে, তারপর ওরা ছুটবে ধান খেতের আল ধরে। সেখানে হয়তো স্থির হয়ে আছে ফকিরসাবের কিংবদন্তি বনে যাওয়া দেহটা, জুটন বসে আছে চুপচাপ, নরেন দাস এখনো বেঁচে আছে একটা শূন্য দৃষ্টি নিয়ে, আবেদালি এখনো কাঁদে তার কুলাঙ্গার ছেলের অসভ্য নষ্ট কাজের জন্য, আন্নুকে এখনো সন্দেহ করে ফেলু আর তার পঙ্গু হাতটা নিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠে – হালার কাউয়া... সেই মাঠ, পাটক্ষেত, চারিদিকে সবুজ ধান আর নদীর জীবনে মানুষগুলির জীবন সংগ্রাম। সোনা জোড়ে জোড়ে পড়ছে – পাতায় পাতায় পরে নিশির শিশির।
চলে যাবো সেই পথ ধরে...
পথেই দেখা হয়ে যাবে পাগলা ঠাকুরের সাথে, উনার সাথে আমি পলিন'কে খুঁজতে বেরুব কিংবা সোনালি বালির চরে হারিয়ে যাবো রোদ দেখতে দেখতে, আর তারপর গল্পের খাতার বাইরে এসে উল্টো সুরে আমাদের পথ দেখাবে ছোট্ট সোনা আর তার পাশে পায়ে পায়ে হাঁটবে আশ্বিনের কুকুর । ঘাটে তখন পাটাতনের উপর অপেক্ষা করছে ঈশম, চলো এবার সোনালি বালির নদীর তলে হারিয়ে যাই, হারিয়ে যাই রূপকথার নৌকা তুলে আনার জন্য। বিশাল দৈত্যের হাত থেকে উদ্ধার করলেই ভেসে উঠবে সোনার নৌকা, রুপার বৈঠা, এবং ভেসে বেরাতে বেরাতে অনেক দূরের খোয়াই দেখা যাবে আর উপরে নীল আকাশ, উড়ছে হাজার হাজার নীলকণ্ঠ পাখি।
আর, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটা কথা বলার আছে, এর পর আপনার সৃষ্ট ‘মানুষের ঘরবাড়ি’ দেখতে যাব, সেখান থেকে চড়ব ‘অলৌকিক জলযান’-এ এবং শেষে ‘ঈশ্বরের বাগান’-এ ঢুকে যাবো। আর আপনাকে একটা কথা কানে কানে বলে যাই, ঐ যে মাত্র একটা কথাই সেই পাগল মানুষটা বলতে পারে... সেই এক শব্দ, যাতে করে পাগল ঠাকুর সব কিছু বলে দিয়ে যায়, সেই এক শব্দ – ‘গ্যাৎচোরেৎশালা’!
-----------------------------------------
• নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে ( অখন্ড সংস্করণ)
• অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়।
• করুণা প্রকাশনী।
মন্তব্য
ধন্যবাদ। বইটি ঢাকার কোথায় পাওয়া যাবে বলতে পারবেন তাপসদা?
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
নিউমার্কেট, শাহ্বাগের আজিজ মার্কেট বা কাঁটাবনের কনকর্ডে দেখতে পারেন। বেইলী রোডের সাগরেও খোঁজ করতে পারেন। পেয়ে যাবেন। ঢাকায় বাংলাদেশী লেখকদের বই খুঁজে পেতে সমস্যা হতে পারে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বই পেতে সমস্যা হবার কথা না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ। পড়ে ফেলুন বইটা।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমার প্রিয় বইগুলোর একটি। আমি বহু বছর আগে বইটি পড়েছি প্রথমবার। এরপরও পড়েছি। এখনো মাঝে মাঝেই মনে হয় বইটির কথা। এত ভালো, এত ভালো। কতজনকে যে বলেছি বইটি পড়ার কথা। নীল কণ্ঠ পাখির খুঁজে পড়ার বেশ কয়েক বছর পর ঢাকায় বই কিনতে গিয়ে অন্য বই গুলোর কথা জানতে পারি, কিন্তু একটিও নীল কণ্ঠ পাখির খুঁজে র মত নয়।
অনেক ধন্যবাদ বইটি নিয়ে লেখার জন্য। আপনার লেখায় এই আমার প্রথম মন্তব্য। যদিও প্রায় সব লেখাই পড়েছি।
আসলে বইটার প্রতি যে আমার কি রকম মায়া জন্মেছে তা বলে বোঝাতে পারব না। একটা সুস্পষ্ট প্রচ্ছদ যেন দেখতে পাই সামনে থেকে।
আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগল। একেবারেই বিনয় না নিয়েই বলছি - আপনি আমার লেখা ব্লগ পড়েন জেনে খুশি হলাম। আমি খুব সুলেখক নই এটা আমি জানি। তবুও আপানারা যে সময় নিয়ে পড়েন সেটাই আমার কাছে সবচে বড় পাওনা। কৃতজ্ঞতা রইলো।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমাকে দেশ ছাড়তে হয়নি। কিন্তু বইটি শেষ করার পর বুকে দেশ ছাড়ার কষ্ট পেয়েছিলাম।
আজকে তাপসের লেখাটি পড়ে আবারো সেই কষ্ট হচ্ছে।
কঠিন কিছুই নয় তাই সেই সেই কষ্টটা বুঝতে পারছি।
ডাকঘর | ছবিঘর
এই ট্রিলজিটা আমি পড়েছি একসাথে। আজ বইটা নিয়ে আপনার লেখাটি পড়ে ভালো লাগল।
বইটা কিনেছিলাম কৌতুহলের বশে, এতগুলো পুরস্কারপ্রাপ্ত তা না জেনেই। কৌতুহলের কারন ছিল যে নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে বইটি উৎসর্গ করা হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে। 'নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে' পড়ে যে আকাঙ্খা তৈরী হয়েছিলো (যার কারনে বাকী দুইটা বই সংগ্রহ করে ফেলেছিলাম এক সপ্তাহের মধ্যে)'অলৌকিক জলযান' সেটা পূরন করতে পারেনি শতভাগ, তারপরও ভালো লেগেছিল তবে 'ঈশ্বরের বাগান' সেই আকাঙ্খা পূরন করতে পারেনি, হয়ত পাঠক হিসেবে সেটা আমার ব্যর্থতা।
ধন্যবাদ।
আসলে পাঠক হিসেবে আমার কাছে ঠিক এমন মনে হয়নি যদিও। হয়তো একটা অদ্ভুত ভালো লাগা এমন ভাবে মিশে গেছে যে কিছু চিন্তা করার অবকাশ এখনো পাচ্ছিনা। ঘোর কেটে গেলে অতীনকে নিয়ে আবার ভাবতে বসব।
ডাকঘর | ছবিঘর
অতীনের এই সিরিজের আরও কয়েকটা উপন্যাস আছে। একটার নাম সমুদ্র মানুষ। এটা আলৌকিক জলোযানের সম্পূরক। অতীন আমার খুব প্রিয় লেখক। কিন্তু তাঁকে নিয়ে আলোচনা কম। তাঁকে নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।
আলোচনা দরকার শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজকে নিয়েও।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনার লেখা রিভিওটাও পড়ে এলাম। ভালো লেগেছে। সমুদ্র মানুষ - আমার পড়া হয়নি। জোগাড় করতে পারি কিনা দেখি। আগামী বইমেলায় অতীনের যা কিছু আছে তার বেশীর ভাগ কালেক্ট করার একটা চেষ্টা দেবো।
ঠিকই বলেছেন - অতীনকে নিয়ে বাংলা সাহিত্যে এখনো এতটা আলোচনা হয়নি। কি এক অদ্ভুত ব্যাপার। সুনীলকে নিয়ে যতটা মাতামাতি হয়, সেই তুলনায় অতীনের ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীনতা। ভেবে পাইনা!!
হ্যাঁ। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজকে নিয়েও আলোচনা হওয়া দরকার। দেখি, একটা চেষ্টা দিতে পারি। তবে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় আমার খুব বেশী পড়া নেই। উনার সমগ্রটা দেখেছি এইবারের বইমেলায়। কিনা হয়নি।
ডাকঘর | ছবিঘর
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজেরও আগে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ধরুন। শ্যামল পড়লে বুঝবেন এতোদিন কী থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নিশ্চয়ই পড়ব পান্ডব'দা।
এইবারের বইমেলায় দেখেছি উনার সমগ্রগুলি। বেশ কয়েকটা খন্ডে বিভক্ত উনার সব লেখাগুলি। বেশ এক্সপেনসিভও বটে। তবে ধীরে ধীরে কালেক্ট করে নেব, শিওর!
ডাকঘর | ছবিঘর
বই রাখার স্থান সংকটের কারণে এখন বাধ্য হয়ে ল্যাপটপে পিডিএফ বই রাখতে হচ্ছে।
খুঁজে দেখলাম 'নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে' আছে সেখানে।
সময় করে পড়ে নেব।
লেখাটা ভাল লাগল।
ধন্যবাদ।
পড়ে জানিয়েন কেমন লাগল।
ডাকঘর | ছবিঘর
পাঠিয়ে দেবেন পিডিএফটা? shanto ডট eee অ্যাট জিমেইল ডট কম এ?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমাকে পাঠানো যাবে ? খুব খুশী হতাম।
facebook
@ কবি-পাঠিয়ে দিচ্ছি, তবে পিডিএফের কোয়ালিটি হতাশ করতে পারে।
@ তারকাণু- আরে আজব! আপনি বিখ্যাত মানুষ ঠিকাছে, তাই বলে আপনার ইমেইল অ্যাড্ড্রেস মুখস্থ করে কেউ বসে আছে? অ্যাড্ড্রেস দেন আগে!
Disclaimer: আমি কিন্তু পিডিএফ বইয়ের পক্ষে নই। এতে লেখক-প্রকাশক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হন।
যদিও আমিও পিডিএফ এর পক্ষে নই। তবুও এখন সময় এসেছে বিকল্প ভাবনার। সে নিয়ে আলাদাভাবে না হয় কথা বলা যাবে।
আর অণুকে আপনি সচলের এড্রেস ( ব্যাক্তিগত মেসেজ ) অপশন ব্যাবহার করে মেইল করে দিতে পারেন। মেইলটা ওর কাছে পৌঁছে যাবে তাতে।
ধন্যবাদ।
ডাকঘর | ছবিঘর
তারকা ভাইরে একটা মেসেজ দিলাম।
বিনিময়ে আমার মেইলে একটা ধমকি গেল "Be careful with this message. It appears to have been forged and did not originate from your account."
আসলে কারো কখনো উপকার করতে নাই।
স্যরি। এটা কেন হল বুঝতে পারলাম না। এমন তো হওয়ার কথা না। অণু বলতে পারবে ওর মেসেজ অপশন ডিসেবল করা আছে কিনা!!
ডাকঘর | ছবিঘর
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বই পরিচিতির মেজাজে ও মননে শৈলীর ছাপ পরিস্ফুট। অনেক ধন্যবাদ তাপস দা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আপনাকেও ধন্যবাদ প্রিয় কবি। অনেকদিন হল লেখা পাইনা যে...
ডাকঘর | ছবিঘর
আমার এক ভাইয়ের বাসায় বইটি দেখেছি আর সময় করেছি পড়বো। কিন্তু ইহার ভেতরে যে এত বিশালতা বুঝিনি । এখন আর না পড়ে থাকতে পারবো না।
পাপলু বাঙ্গালী
অবশ্যই পড়ুন। পড়ে অনুভূতির কথা একবার জানিয়ে যাবেন......
ডাকঘর | ছবিঘর
বইপড়ুয়া গ্রুপেও 'নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে' এবং অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আপনার উচ্ছসিত প্রশংসা পড়েছি বারবার।
জোগাড় করতে হবে বইটা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথী আমারও মনে আছে আপনি পড়ে একটা রিভিও-ও লেখার কথা বলেছিলেন।
ধন্যবাদ! পড়ে ফেলুন বইটা শিজ্ঞির।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমি এই সপ্তাহেই কিনছি! তবে 'এই সময়ের সেরা উপন্যাস' বলা হচ্ছে যাকে, সেই 'নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে' তেমন আলোচিত হয়নি কেন আমাদের মিডিয়ায়, বুঝতে পারছি না।
অতীন বন্দোপাধ্যায়ের এই বইটি ১৯৭১ এ প্রকাশিত হয়? তবু এই চল্লিশ বছরে একবারও শুনলাম না এই ক্লাসিক বইটির নাম? যাই হোক, তাপসদাকে ধন্যবাদ এমন একটি বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।
মামুন ভাই চল্লিশ বছরে কেন বইটার সম্বন্ধে শুনলেন না বা মিডিয়া কি আলোচনা করল না ইত্যাদি - সেটা বলা মুশকিল। আমরা সবাই তো সব জানিনা। আমি নিজেই স্বীকার করি যে বাংলাদেশের বিপুল সাহিত্য সম্ভার এর একটা বিশাল অংশ সম্পর্কে আমি অজ্ঞ।
যাই হোক সম্ভব হলে এখন যখন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পড়েই ফেলুন। ঠকবেন না, কথা দিলাম!
ডাকঘর | ছবিঘর
রিভিউটা বেশ ভাল লাগলো। বইটা পড়ার খুব ইচ্ছা।
অবশ্যই পড়ুন। ধন্যবাদ।
ডাকঘর | ছবিঘর
আগে নামও শুনিনি,কিছুনা; কিন্তু রিভিউটা পড়ে খুব পড়তে ইচ্ছা করছে। মনে হয় বইটা খুব পছন্দ হবে আমার;এই ধরনের বই সবসময়ই ভাল লাগে।
কিছু কিছু বই পড়তে গেলে আমারও এমন হয়। রিভিউটা খুব ভাল লাগলো।
এখনই ডাউনলোড করে নিতাম। স্পিড মাশাল্লাহ বেশ কম আসছে তাই হবে না মনে হয়;;;ভীষণ থ্যাংকু দিলাম।
আপনাকেও থিঙ্কু দিলাম।
......... আসলে বই এর সাথে মননের যে একটা যোগসূত্র আছে তাই গেঁথে যায় আর কী, একে অস্বীকার করার উপায় নাই।
ডাকঘর | ছবিঘর
বর্ণন চমৎকার হয়েছে। বইটি এখনো পড়া হয়নি। এ জনমে কত কিছুই হয়নি। কতকিছু হবেওনা।
ধন্যবাদ কবীর দাদা।
আসলে আমরা জানতে চাইলেও কতটাই বা জানতে পারি ক্ষুদ্র পরিসরে......
ডাকঘর | ছবিঘর
বইটা কিনেছিলাম পাইকারি বইয়ের বাজার, বাংলাবাজার থেকে। আমি বেশ কয়েকবার পড়ার চেষ্টা করেছিলাম, বেশি দূর যেতে পারিনি। বর্ণনার গতি খুব শ্লথ আর মাঝে মাঝেই অতি ডিটেইলিং এর চাপে মনোযোগ হারাচ্ছিলাম বলে মনে পড়ে। আমাদের বাসায় মনে হয় একমাত্র আমার বোনই বইটা পড়ে শেষ করেছিলো।
আপনার লেখাটা পড়ে বইটা যতোটা আকর্ষণীয় বলে মনে হচ্ছে, কার্যত পড়ার সময় সেটা মনে হয়নি- বরং অতিকথনের ভারে ক্লান্ত মনে হয়েছে। অবশ্য এসবই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আশা করি অনেকেরই হয়তো ভালো লাগবে।
অলমিতি বিস্তারেণ
পাঠক মাত্রই যে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া হবে তা তো হবেই।
আসলে যে ডিটেইলিং এর চাপে কিংবা শ্লথ গতির জন্য আপনার ঠিক লাগেনি, সেই কারণ এবং বর্ণনার গুণেই কিন্তু লেখাটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। এই আর কী।
আপনাকে ধন্যবাদ।
ডাকঘর | ছবিঘর
সহমত।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বই অথচ নামটাই প্রথম শুনলাম আজ। চেষ্টা করবো শীঘ্রই পড়ে ফেলবার।
ধন্যবাদ।
পড়ে ফেলুন বইটা। ঠকবেন না, শিওর।
ডাকঘর | ছবিঘর
দেশভাগের উপর এমন উত্তীর্ন বোধ নিয়ে আর কোন লেখা নেই, কোনদিন হবেনা। শেষ করতে পেরেছেন, আপনাকে অভিনন্দন।
থ্যাঙ্কস বিগ ব্রো।
ভালোবাসা রইলো এত্তডি।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমি বইটি পড়েছি সত্তুরের শেষের দিকে। কলেজ শেষ করে বিশ্ব বিদ্যালয়ে তখন। আমি কিন্তু প্রতিটি লাইন পড়েছি খুব মনোযোগ দিয়ে। কিছুই বাদ দিতে পারিনি, বর্ণনার গতিও শ্লথ মনে হয়নি। কেমন একটা ভাল লাগায় আচ্ছন্ন ছিলাম বইটি পড়ে। কত বছর আগের কথা। তাপসের লেখা পড়ে আবার সেই ভাল লাগাটা অনুভব করলাম।
আবার পড়ার চেষ্টা করুন, এবার হয়তো ভালো লাগতে পারে।
আমি না জেনে শুধু সুন্দর নামের জন্য বইটি কিনে ছিলাম।
@Guest_Writer নীলকমলিনী ---
আপনি বোধ হয় সবজান্তা ভাই এর উদ্দেশে বলছিলেন!
আমিও তাই বলব, আরেকবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
ডাকঘর | ছবিঘর
পড়া হয়নি। পড়ার আগ্রহ জমছে। ধন্যবাদ রিভিউ এর জন্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আপনাকেও ধন্যবাদ জাহিদ ভাই।
ডাকঘর | ছবিঘর
এই বইটা আমার বাবার খুব প্রিয় বই। শুধু এইটা, অলৌকিক জলযান ঈশ্বরের বাগান পড়ে বাবা আশাহত হয়েছিলেন। কিন্তু এই "নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে" বইটা একেবারে হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে জড়ানো ওঁর।
আমি প্রথম এ বই পড়েছিলম ক্লাস এইটে থাকতে, ভালো লেগেছিলো কিন্তু বাবার যে অনুভূতি- প্রত্যক্ষ সেই টনটন, সেই শাপলা বিল, সেই হাঁসের দল, সেই জ্যোৎস্নাপ্লাবিত নদীর চর, সেই নীলকন্ঠের সন্ধানে থাকা জ্যেঠামশাই, সেই গাছে লিখে যাওয়া "আমরা চলে গেলাম", তারই মতন সমান্তরাল অনুভব তারও, সব ফেলে শিকড় ছিঁড়ে চলে যাবার বেদনা---সেই অনুভব কোথায় পাবো?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সমুদ্র মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে পড়ুন। তাহলে অলৌকিক জলোযানটা ভালো লাগবে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
ধন্যবাদ তুলি'দি।
সেই বেদনা কিংবা ঘা নিয়েই হাজার প্রাণ এখনো বাঁচে, নীরবে।
ডাকঘর | ছবিঘর
নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে উপন্যাসটি নিয়ে আমার একটা পাঠপ্রতিক্রয়া--
নীলকণ্ঠ পাখিদের কথা : সখা ঈশম, প্রাণ ঈশম
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
পড়েছি দাদা। আপনার রিভিওটা। খুব ভালো লেগেছে। ঈশমকে আপনি বলেছেন প্রকৃত মননের একমাত্র মানুষ, আমারও তাই মনে হয়েছে। এত সহজ এবং সরল মানুষ যেন অন্তহীন একটা ভালোবাসার কথা বারবার বলে যায়।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমি ছাপার অক্ষরের বেশ ভক্ত তারপরও আজ প্রথম এই নামটা জানলাম জানার সুযোগ এত কম.....
আসলে ঐ যে বললাম না, আমাদের জানার ইচ্ছে থাকলেও সময় কিংবা ঠিক প্রতিকূল পরিস্থিতি গড়ে উঠেনা, সব সময়। তাই কত জানার ইচ্ছে যে মাঠে মারা যায়।
এনি ওয়ে বইটার সম্পর্কে বলব যদি পারেন তো একবার পড়ার চেষ্টা করতে পারেন, কথা দিচ্ছি ঠকবেন না।
ডাকঘর | ছবিঘর
এই উপন্যাসটা একবার পড়ে এখন দ্বিতীয়বার পড়ছি।
একবার ভেবেছিলাম লিখব এর সম্বন্ধে। কিন্তু ভেবেছি সকলেরই এটা পড়া।
তাপসদা অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটার জন্যে।
আমি অবাক হচ্ছি এটা ভেবে যে, এত সুন্দর এবং মহান সৃষ্টি সম্বন্ধে বাংলাদেশে খুব একটা আলোচনা হয়নি।
কারন আমার অভিজ্ঞতা বলে বাংলাদেশের পাঠকরা আমাদের এখানকার পাঠকদের থেকে অনেক বেশি সচেতন।
এখানে এই সুযোগে আরেকটি উপন্যাসের কথা বলি। 'ঈশ্বরের বাগান'।
আমার পড়া হয়নি। তবে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ তিনটি উপন্যাসের কথা উঠলেই নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে, ঈশ্বরের বাগান আর অলৌকিক জলযান এর নাম আসে।
আসলে আলোচনা হয়নি এটা বলা কিন্তু যাচ্ছেনা প্রদীপ্ত! কেননা আমার পরিচিত অনেক পাঠকই বইটা নিয়ে অনেক কথা বলেছে। সোসাল নেটওয়ার্ক এর দৌলতে অনেক কিছুই জেনেছি! এখানে দেখা গেছে যে অনেকে পড়েন নি বলেছে! হতেই পারে, তাই না! আমরাই বা কতটাই জানতে পারি। তুমি তো তবুও প:বঃ-তে আছো বলে অনেক সুবিধেতে বই পাচ্ছো বাংলাদেশের। আমাদের এখানে তো একেবারেই পাওয়া যায়না বললেই চলে!!
যাই হোক, তুমিও লিখে ফেল না বইটা নিয়ে। তোমার অনুভূতিও শেয়ার করতে পার। তাইনা।
ডাকঘর | ছবিঘর
কথাটা তুমি ঠিকই বলেছ তাপসদা।
তবে আমার মনে হয় আমাদের এখানে যতটা বাংলাদেশের বই পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি বাংলাদেশে আমাদের বই পাওয়া যায়। অথবা ওই যে বললাম বাংলাদেশের পাঠকেরা বেশি সচেতন।
এখানকার বইপড়ুয়াদের জিজ্ঞেস করলে হুমায়ূন আহমেদের পর দ্বিতীয় নাম বলতে গেলে বেশিরভাগই থমকে যায়। কিন্তু সে তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু সুনীল, সমরেশ, শীর্ষেন্দু বা বুদ্ধদেব গূহদের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। এর ফলে বঞ্চিত হচ্ছি আমরাই আর এটা হতাশাজনকও বটে।
যাই হোক আবারও ধন্যবাদ তোমাকে। ভাল থেকো।
নতুন মন্তব্য করুন