সুমনের জন্ম ১৯৪৯ সালে। কলকাতার নগর জীবনে বনেদী পরিবারে বেড়ে উঠা এই মানুষটির জীবন অনেক ঘাত প্রতিঘাতে আজও যেন এক অসম্পূর্ণ গানই রচনা করে চলছে। স্কুলে পড়ার সময় রাজনীতিতে খুব একটা ঝোঁক ছিলনা তাঁর, আসলে তখকার সময়ে স্কুলে ছাত্র রাজনীতিটা আজকের মত এত গজিয়ে উঠেনি। একেবারে ছেলেবেলাতেই বাবার এবং মায়ের হাতে তাঁর গানের হাতেখড়ি। সেই ধারা আজও অক্ষুণ্ণ। একাধিক বার তাঁকে বলতে শুনেছি – আমি সঙ্গীত কতটা জানি তা আসলে জানিনা, তবে আমি ভালো সঙ্গীতের ছাত্র। আসলেই তিনি সঙ্গীতের মনযোগী ছাত্র। আজকের দিনে দাঁড়িয়েও সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ ছেঁকে ফেললে তাঁর মতো এমন ওয়ার্ল্ড মিউজিকের একনিষ্ঠ ছাত্র খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে। বৃহত্তর অর্থে বারো বছর বয়েসেই সুমনের গানের জার্নির সূত্রপাত, ততদিনে তিনি ‘খেয়াল’ শিখতে শুরু করেছেন। নানা সংগীত- গুরুর কাছে তিনি নিয়েছিলেন গানের শিক্ষা। বাবা মা দুজনেই ছিলেন ভালো সংগীতজ্ঞ। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই ভাসতে শুরু করে সুমনের গানের তরী। সুমন এগুচ্ছিলেন নিজের খেয়ালেই। ১৯৬৫ সাল, কলেজে ভর্তি হলেন ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স নিয়ে। কলেজ জীবনে ঢোকার পর তাঁর জীবনে একটা বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। সুমনের ভাষায় - “৬৫ সালে কলেজে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে একটা বড় দুনিয়া আমার সামনে খুলে গেল।’’ এবং সেই জায়গাটা জুড়ে বসল বৃহত্তর রাজনীতি। যদিও সুমনের ভাষ্যমতে পলিটিক্সকে বাংলায় তিনি রাজনীতি বলতে চান না, তাঁর মতে সেটা হওয়া উচিত ছিল ‘লোকনীতি’। এতদিনে নিজের মধ্যে মজে থাকা মানুষটির সামনে একটা বিশাল জগত হঠাত করেই উন্মোচিত হয়ে গেল। তখন সময়ের দ্রোহকাল; একদিকে জওহর লাল নেহেরুর মৃত্যুর পর কংগ্রেস দলের ভাবাদর্শ কীরকম হবে তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা, আর অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে লালের উন্মেষ ঘটছে বিপুল গতিতে, অর্থাৎ বামপন্থার জোয়ার এসেছে তখন। আর একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গে ঘটছে এক বৈপ্লবিক উত্থান, কৃষকদের অভ্যুত্থান, নকশাল-বাড়ির ডাক… ‘লাঙ্গল যার জমি তার’...
এই সমস্ত বিষয়ের অনুষঙ্গে এসে এবং সময়ের স্রোতের এই প্রবাহে এক এক করে পরিবর্তিত হচ্ছিল সবকিছু, পশ্চিমবাংলার জনজীবনেও ঘটল এক বিরাট পরিবর্তন। সুমন চট্টোপাধ্যায়ও সেই জনজীবনের বাইরে ছিলেন না, কাজেই তাঁর ভেতরেও চলছিল এক বিরাট পরিবর্তন। কলেজে, ক্যান্টিনে, পাড়ার মোড়ে কিংবা অন্দরমহলেও তখন পাল্টে যাওয়া রাজনীতি নিয়ে আলোচনা। সেই সময়টাতেই সুমনের ব্যাক্তি সত্ত্বার পরিচয় ঘটে বিপ্লবের সাথে। সময়টাই ছিল এক চূড়ান্ত বৈপ্লবিক আলোড়নের। তবে সুমনের সেই বিপ্লবের প্রতি ঝোঁক মাঠে নেমে সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল না। সুমনের ভাষায় সেই বিপ্লব ছিল ‘ভীষণ কেতাবি’, আলোচনা কিংবা তর্ক-বিতর্কেই সীমাবদ্ধ। তখন কতই’বা বয়েস তাঁর, সতের কি আঠেরো; পড়তে শুরু করেছেন কার্ল মার্ক্স, এঙ্গেলস, লেনিন, মাও সে তুং, আবার পড়ছেন মহাত্মা গান্ধীর লেখাও। এক সাক্ষাৎকারে সুমন বলছেন – “১৯৬৬ – ৬৯ এক অদ্ভুত সময়, অর্থাৎ ৬৯ সালে যে আমি বি.এ. পরীক্ষা দিলাম ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ছিল, ...পরীক্ষা দিলাম পাশও করলাম। এই যে মাঝের তিনটি বছর, এই সময়টাতে একটা ভীষণ হৈ চৈ পড়ে গিয়েছে আমাদের সমাজে...’’
কেমন ছিল সেই বদলে যাওয়া সময়টা। একটা সময় ছিল ৪৭ এর পর স্বাধীন ভারতেও সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক দল বলতে শুধু কংগ্রেস দলকেই বুঝতেন। কিন্তু ষাটের দশকে অনেক কিছুই বদলে যেতে শুরু করে, প্রথমে চীন-ভারত যুদ্ধ, যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হল কমিউনিস্ট পার্টি, তৈরি হল সিপিআইএম দল... তারপর মৃত্যু হল নেহেরুর। নেহেরুর মৃত্যুতে কংগ্রেস দলের একটা বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ করা গেল, কে সামলাবেন দায়িত্ব ইত্যাদি ইত্যাদি। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে সেই মুহূর্তে বামপন্থীরা আনছিলেন বিপ্লবের গণ জোয়ার। ১৯৬৬, সুমন তখন হায়ারসেকেন্ডারির ছাত্র। শুরু হল ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলন, ফেটে পড়লেন হাজারো মানুষ, শহিদ হলেন বহু তরুণ ছাত্র নেতা। চারিদিকে ভয়ানক আলোড়ন। জনতা যেন প্রতিবাদ আর প্রতিরোধের জন্যে জেগেছে। ... এই অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়েই কবীর সুমনের হয়ে উঠা...
১৯৭০-৭১ সাল, ততদিনে বি.এ পরীক্ষা দিয়ে এম.এ’তে ভর্তি হয়েছেন সুমন, পাশাপাশি গানের চর্চা তখন তুঙ্গে। কিন্তু চারিপাশের পরিবর্তন দেখে সেই সময়ে কেউ কি স্থির থাকতে পারে? আসলেই পারেনা। সেই উদ্ভট উদ্বাস্তু সময়ের আর্তি ও জন জোয়ারে প্লাবিত বিপ্লব তখন সদ্য যৌবনের রক্তে টগবগ সুমনের ভেতরটাকেও নাড়িয়ে দিচ্ছিল। ভেতরে ভেতরে চলছিল চূড়ান্ত পরিবর্তন। সেই সময়টার কথা বলতে গিয়ে সুমন বলছেন – “রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। দেয়ালে দেয়ালে তখন লেখা : তোমাকে আমাকে দিচ্ছে নাড়া / মাও সে তুং’এর চিন্তাধারা...”
সময়টা ছিল উদ্ভট, শুধু পশ্চিমবাংলাই নয়, পুড়ছে সমস্ত পৃথিবী। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের খবর সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে পৌঁছে যাচ্ছে জনগণের কাছে। পৃথিবী জুড়ে নানা বৈপ্লবিক পরিবর্তনও নাড়া দিচ্ছে সুমনকে। চে গ্যেভারার মৃত্যু দৃশ্য যেদিন খবরের কাগজে দেখলেন সেই সময়ের কথা বা দৃশ্য বলতে গিয়ে সুমন বলছেন – “ পত্রিকার দেখলাম চে গ্যেভারার মৃতদেহ। পুরো প্রচ্ছদে চে শুয়ে আছেন, চোখটা খোলা, বন্ধ নয়, বুলেট সারা শরীরে...।’’ তেমনি সেই সময়টাতেই মারা গেলেন হো-চি-মিন (Ho Chi Minh ), কলেজের ছাত্ররা মিলে শোক সভা করছেন, সুমনও সেই ছাত্রদেরই দলে। চলছে ভিয়েতনামের যুদ্ধ। বিপ্লবের পোড়া মাটিতে তখন নকশাল আন্দোলনের আঁতুড় ঘরের বিনির্মাণ চলছে। সুমনের বহু সহপাঠী ততদিনে সেই পথের পথিক। ছাত্র আন্দোলন ও নকশাল আন্দোলনের ছেলেমেয়ের চেহারাতেও যেন পরিবর্তন। সব ঘটছে সুমনের চোখের সামনেই। তাঁর বন্ধু তিমির বরণ সিংহ তখন বিপ্লবের আলোকে আলোকিত হয়ে এক শ্রেণীহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। বাইরের এই বিশাল পরিবর্তন ভেতর তোলপাড় করে দিলেও সুমন কিন্তু সেই প্রত্যক্ষ বিপ্লবে যেতে সাহস করেননি। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি – “আমি কিন্তু অত সাহসী ছিলাম না...।’’ আসলে সেই পরিবর্তনের সময়েও তিনি গান নিয়েই বেশী আত্মমগ্ন ছিলেন, এবং সেই গানেই ঘটছিল বিপ্লব, গানের মধ্যে দিয়েই ভাবনা চিন্তার পরিবর্তন ঘটছিল
বন্ধু তিমির একদিন আর ফিরলেন না। আসলে তখন তরুণ হওয়া মানেই বিপদ। সেই সময়ের একটা ঘটনার কথা বলতে গিয়ে সুমন জানাচ্ছেন – “ আমার বড় জ্যাঠা মশাই মারা গেলেন, তার মেজো ছেলে ছিলেন থানার দারোগা। আমি গেছি জ্যাঠার মৃতদেহ আসবে, শ্মশানে অপেক্ষা করছি। তখন আমার গেরুয়া পাঞ্জাবি আর ধুতি, এই আমি পরতাম। আমার মুখে ছিল দাড়ি। হঠাত দেখি দু’তিন জন আমার দিকে কেমন জানি নজর রাখছে, আমি যেদিকে যাচ্ছি যা করছি, একটু চা খেতে যাচ্ছি... তারাও যাচ্ছে আমার পেছনে পেছনে। আমার সেই মেজো দাদা এসে পৌঁছলেন, তার দুই দিকে দুই পুলিশ। তখন ভয়ংকর অশান্ত সময়... মেজদা আমার কানে কানে বললেন, ‘হ্যাঁ রে দাড়িটা কাটলে পারিস না?’ আমি বললাম – কেন? এত ভয় পাও দাড়িওলাদের? সেই সময়টায় তিনি বললেন, ‘তুই এমন করছিস, আজ যদি আমি না থাকতাম তোকে এরা গ্রেপ্তার করতো’...” এবং এমন গ্রেপ্তার করে করে হাজারো তরুণ প্রাণকে নিঃশেষ করে দেওয়ার কাহিনী আমরা ষাট এবং সত্তরের দশকের ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালেই খুঁজে পাই। ধরপাকড় করে যুব নিধন এবং পুলিশি এনকাউন্টার তখন নিত্যদিনের ঘটনা
আকাশবানীতে সুমন নিয়মিত কন্ঠশিল্পী ছিলেন। তখন তাঁর বাইশ বছর বয়স। নতুন বাড়িতে এলেন সুমন, যাদবপুরে। পুড়ছে সময়, অস্তিত্ব তখন ম্লান, “তখন আমি আমির খান আর নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান ও সেতার রাত জেগে জেগে শুনছি আর শুনছি এবং ভাবছি কিভাবে গানের রাস্তা পাল্টায়...।” সময়ের কথা জানাচ্ছেন সুমন – “এই বাড়িতে বসে আছি। সক্কালবেলায় একটা চোঙা লাগিয়ে পুলিশ বলতে বলতে গেল, যাদের বয়েস এখনো তিরিশ বছর হয়নি তারা কেউ বাড়ি ছেড়ে বেরোবেন না আমরা বলা পর্যন্ত...” কলকাতা শহর তখন পুলিশের এবং সামরিক বাহিনীর বুটের আওয়াজে ঠকঠক করে কাঁপছে, পশ্চিমবঙ্গ তখন ধুঁকছে এক অজানা অন্ধকারে। আম আদমি তাদের পরিণতি কি হবে তা নিয়ে আতংকগ্রস্ত, মানুষ নিজের অস্তিত্ব নিয়েই সন্দিহান, রাষ্ট্রযন্ত্র তখন উন্মাদ। অন্যদিকে একদল মানুষ লড়ে যাচ্ছেন সমাজকে বদলে দেয়ার উন্মত্ত অঙ্গীকারে, ‘দিন বদলের খিদে ভরা চেতনায়’...
ততদিনে সুমন রেডিওর চাকরিটা ছেড়ে ব্যাংকের চাকরি নিয়েছেন। একেবারে দশটা পাঁচটার কেরানী জীবন তখন তাঁর। শুধু বাকি সময়টা ধরা ছিল সংগীত চর্চার জন্য। সকালে ভোরে উঠে রেওয়াজ করতেন তারপর অফিস, আবার অফিস থেকে বাড়ি ফিরে সন্ধ্যের পর রেওয়াজ। সুমন বলছেন –"প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতি করার কোন উপায়ই যেন আমার ছিল না; কিন্তু দেখতাম খালে চলেছে ছেলেদের মৃতদেহ ভেসে ভেসে। একটি মৃতদেহ দেখেছিলাম এক যুবকের, তার পিঠে তখনো ছোরাটা গাঁথা। যেন লক্ষীন্দর ভেসে যাচ্ছে, তাঁর পাশে কিন্তু কোন বেহুলা নেই..."
ঝলসে যাওয়া সময়ে পোড়া রূপকথার মাঠ, বিশ শতকের সবচেয়ে বিধ্বস্ত সময়ের মানুষ, স্বপ্নেও হতাশা কুড়ানো মানুষ, রাজনীতির অলিন্দে গণখুন হওয়া মানুষ, ডাল ভাতের জন্যে জীবন সংগ্রাম, এবং নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলা মানুষ। এই সব মানুষদের ছায়া মেখেই কবীর সুমনের হয়ে উঠা। তাঁর ভাষায় – ‘আমি সেই সময়ের মানুষ।’ আর পারছিলেন না তিনি। ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলেন নিজের সাথে লড়াই করেই। গানের শরীরে ক্ষত বিক্ষত এক সংগীতজ্ঞ। গানই যার স্বধর্ম তার প্রকাশ তো গানেই আসবে। কিন্তু সেই গান আর হয়ে উঠছিল না। ভেঙে যাচ্ছিল সমস্ত গণ্ডী। নিজের গানের শরীরে নিজেই ভাঙছিলেন এই কিংবদন্তি। নিজেই প্রশ্ন করছেন নিজেকে – “এরপর আমি কোন গান গাইব? আমি অনেক গান শিখেছি তখন... কিন্তু যত দেখছি শুনছি আমার মনে হতো আমি কি গান গাইছি? কোন গান এই সময়কে ধরবে? ... রবীন্দ্রনাথের গান? – না। কাজী নজরুল ইসলামের গান? – না। আমার চেনা আধুনিক বাঙলা গানগুলো? – না। শ্যামা সংগীত? – না। রামপ্রসাদ? – না। খেয়াল? – না...”
এই ছিল তাঁর এক অদ্ভুত অসহায়তার সময়। তখন কবীর সুমন নিজেই দ্বিখণ্ডিত। একদিকে তাঁর এতদিনের একটু একটু করে গড়ে তোলা সঙ্গীতের জগত ও অন্যদিকে দেশ এবং পৃথিবীর অবস্থা। প্রথমত সেইসব সংগীত আর তাঁকে টানছিল না, কেননা তাঁর মনে তখন সেই প্রশ্নের জোয়ার – এই গান সময়কে ধরতে পারছে না। আর দ্বিতীয়ত দেশ এবং পৃথিবী তাঁকে যেন টেনে ফেলে দিচ্ছে এক কর্দমাক্ত ও রক্তমাখা বিচ্ছিন্ন পরিসরে, যেখানে তাঁর এতদিনের লালিত সংগীত পৌঁছাতে পারছে না। তখন প্রশ্ন একটাই ‘আমি কোন গান গাইব?’ কবীর সুমন পাল্টাচ্ছিলেন ভীষণ দ্রুত গতিতে। তাঁর ভেতর যে ভাবনাগুলি তৈরি হচ্ছে, তাঁর মধ্যে যে ভাষা জন্ম নিচ্ছে সেগুলি সেই সময়ের কোন গানে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি বলছেন – "যেভাবে কথা বলছেন আমার বন্ধুরা, তিমির যেভাবে একদিন আর ফিরল না, তিমিরের মৃতদেহ তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে সাঁজোয়া গাড়ি এলো মিলিটারি, যেভাবে আমার সহপাঠী মোজাফফর আর ঘরে ফিরল না, যেভাবে আমার চেনা একটি মেয়ে শাশ্বতী ধর্ষিত হল পুলিশের হাতে। এই যে জায়গাগুলো, এই অসহায়তা...!” এই অসহায়তা থেকে আর গান হয়ে উঠছিল না। লিখতে চাইছেন গান... লিখছেন, আবার ফেলে দিচ্ছেন, আবার লিখছেন আবার ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছেন... নিরন্তর চলছে কলম ভাঙার পালা। একদিন হঠাত করেই বাংলাদেশের কবি শহীদ কাদরী’র একটা কবিতা তাঁর চেতনাকে গানের দিশা দিল। কে জানত যে কবি শহীদ কাদরীর ‘রাষ্ট্র’ কবিতাটা বিংশ শতকের শেষের দশককে তোলপাড় করে দেওয়া শ্রেষ্ঠ বাঙালি গানওলাকে মুক্তির পথে ঠেলে দেবে... তখনই সেই কবিতার উপর ভিত্তি করে তৈরি করতে চেষ্টা করলেন একটা গান – “রাষ্ট্র মানেই কাঁটাতারে ঘেরা সীমান্ত/ রাষ্ট্র মানেই পাসপোর্ট নিয়ে উমেদারি/ রাষ্ট্র মানেই মেঘে বাঁধা আমার দিগন্ত/ রাষ্ট্র মানেই সবকিছু দারুণ সরকারী..."
কিন্তু সেই গান সুমনের প্রথম লেখা ও সুর করা গান নয়। কেননা সেই গানের আদল এবং ভিত্তি সমস্তই শহীদ কাদরীর সেই কবিতা। আকাশবাণীতে কাজ করার সময়েও সুমন অন্যের কথায় সুর বসিয়েছিলেন। তবে তাঁর মৌলিক লেখা ও সুর করা নিজস্ব গানের জন্যে শহীদ কাদরী প্রথম ধাক্কাটা দিয়ে দিলেন সেই কবিতাতেই। এই সেই কথা যা তিনি বলতে চাইছিলেন গানে গানে... এরপর থেকেই তাঁর বদলে যাবার শুরু। তখন তাঁর একটাই ধ্যান আধুনিক বাঙলা গান বাঁধতে হবে। যে গান ‘মানুষের ছোট ছোট চাওয়া-পাওয়া ও বড় বড় ব্যর্থতার গান’... এই জায়গা থেকে গান তৈরি হল :
"এ কেমন আকাশ দেখালে তুমি।
এ কেমন আকাশ জন্মভূমি..
এ যে শুধু কান্না শুধু কান্না।
শুধু কান্না কান্না কান্না
এ কান্না চাইনা, আমি চাইনা,
আমি চাই না চাই না চাই না চাই না
এ কেমন কান্না শেখালে তুমি
এ কেমন কান্না মাতৃভূমি..."
১৯৭৪ সালের কোন একটা সময়ে কবীর সুমনের প্রথম লেখা ও সুর করা সেই প্রথম গান। মাত্র আটটি লাইন তিনি লিখেছেন, গেয়েছেন এবং সুর করেছেন এই গানের। এরপর আর গানটা সম্পূর্ণ করতে পারেন নি। এই গান আজ অবধি অসম্পূর্ণ... সেই অসম্পূর্ণ গানের হয়ে উঠার যে রসদ তিনি মজুদ করেছিলেন দিনের পর দিন, সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে আজকের কবীর সুমন...
এরপর বাকিটা তো ইতিহাস। তাঁর জার্মানি যাত্রা, ভয়েজ অফ জার্মানির চাকরি এবং আশির দশকে ফের কলকাতার চলে আসা এবং নব্বই এর দশকে ‘তোমাকে চাই’ এর মধ্যে দিয়ে বাঙলা গানের জগতকে ঘুরিয়ে দেয়ার জার্নি... সবটাই সকলের জানা। তবুও বারবার মনে আসে সেই প্রথম গানের কথা। ভাঙা একটা গান যেভাবে হয়ে উঠল। সঙ্গীতের বিচারে সেই গান কতটা সার্থক হয়েছে তার বিচার করা আমার মতো সংগীত-অজ্ঞ ও সাঙ্গেতিক বেজন্মার কাজ নয়, সঙ্গীতের বিশেষজ্ঞরা হয়তো সেই কাজ করবেন। তবুও কেন জানি বারবার ফিরে তাকালেই মনে হয় এই অসম্পূর্ণ গানের নেপথ্য মঞ্চটা যদি তৈরি না হত, তাহলে হয়তো তৈরি হত না আজকের সুমন। হয়ে না উঠা গানেই আজকের গানওলার হয়ে উঠার রক্তবীজ। কবীর সুমন, যে মানুষ নিজেই একটা গান...
২০১৩. ০৮. ১৭. - ২০১৩. ০৮. ১৯.
মন্তব্য
ইসরাত
ধন্যবাদ
ডাকঘর | ছবিঘর
ওপার বাংলার দুজনের গান আমায় টানে। যদি সেখানে যাওয়ার আমার সুযোগ হত তবে এই দুজনের সাথে দেখা করার চেষ্টা করতাম। একজন তো সম্ভব নয়, মানুষটি রবীন্দ্রনাথ।
অপরজন, এই গানওয়ালা...
সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে গাওয়া "কেমন আছ" গানটার প্রারম্ভে যখন তিনি কথা বলতে থাকেন, মনে হয় তাঁর পাশে বসে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছি !
গানওয়ালা, বেঁচে থাক চিরকাল!
র নাহিয়েন
রবীন্দ্রনাথ কি আসলেই কোন একটা নির্দিষ্ট পারের বাংলার মানুষ? তাঁকে কি বিভক্ত করা যায়?
০২
সঙ্গীতের কি কোন সীমানা আছে। বৃহত্তর অর্থে শিল্পের কি কোন দেশ আছে। আমার তো মনে হয় নাই
০৩
সাবিনা ইয়াসমিন আমার অন্যতম একজন প্রিয় শিল্পী। এবং এই যে 'কেমন আছো' গানটার কথা বললেন সেটা ভীষণ প্রিয় একটা গান
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ জানবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
সঙ্গীত সীমানা মানে না, মানতে পারে না।
নির্ঝর অলয়
একেবারেই পারেনা
ডাকঘর | ছবিঘর
এই লেখাটা আমার লেখার কথা ছিল--
সুমনকে নিয়ে এই লেখাটা, এই রকম একটা লেখার কথা ভাবছি আজ বছর দশেক হল---
এইরকম একটা লেখা, আমার লেখার কথা ছিল---
আর আজ লেখাটা পড়ে চমকে উঠলাম ভীষন ভাবে---
একেবারে ঠিক যেভাবে আমি হয়ত লিখতাম
এই লেখাটা তারচেয়েও ভাল করে বলে দিয়েছে কথাগুলো---
এই লেখাটা তাই, এক রকম ভাবে আমারই যেন লেখা হল---
অশেষ ধন্যবাদ তাপস--খুব সম্ভবত সচলায়তনে পড়া তোমার অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখা এইটি
অনেক অনেক শুভাশীষ ভাইটি---
বেশী প্রশংসা পেলে লজ্জা লাগে। কিন্তু আপনার আবেগ আমাকে স্পর্শ করে বদ্দা
ভাল থাকবেন আপনিও। এত্তোডি থেঙ্কু
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
খুব সুন্দর হয়েছে লেখাটা- একজন সংগীতজ্ঞের উত্থানের প্রেক্ষাপট সুগভীর বিশ্লেষণে ফুটে উঠেছে চমৎকার ভাবে। সুমন আমার পার্সোনাল ফেভারিট নয়, কিন্তু ওনাকে শ্রদ্ধা করি। তোমার এ লেখাটা পড়ে সেটা আরও অনেকগুন বেড়ে গেল। ওনার গানগুলো নতুন করে শুনে দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
সুমনের বিশালতা তাঁর গানে এবং তাঁর জীবন দর্শনে। শুরু কর, ঠকবি না কথা দিলাম
থ্যাংকস
ডাকঘর | ছবিঘর
ভালো লাগল, বাকিগান , সুমনে জীবনের নানা জানা- অজানা ঘটনা নিয়ে লেখ।
facebook
ধন্যবাদ অণু। আসলে লোকটাকে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর গানেই। চেষ্টা করব নিশ্চয়ই। এই প্রসঙ্গে পুরোনো একটা লেখা যুক্ত করে দিলাম
ডাকঘর | ছবিঘর
দারুণ!!!
----------------------------
সুবোধ অবোধ
ধন্যবাদ
ডাকঘর | ছবিঘর
প্রাতিষ্ঠানিক কোন গায়ন-শিক্ষা আমার নেই। গান শুনি নিজের মত করে। সেই নিজস্ব শোনার অনুভব থেকে বুঝি সুমন একজন অসাধারণ গায়ক, একজন অসাধারণ কবি, এক অসাধারণ প্রতিভা। আমাদের সাধারণ মানুষদের মাপে ওনাকে মাপতে গেলে মাপের ফিতে কম পড়ে যায়।
- একলহমা
নিজের মতো করে আত্মস্থ করার মধ্যেই তো আনাবিল আনন্দ লুকিয়ে আছে। এই আনন্দ থাকলে আর কি চাই বলেন
লেখা পাঠের জন্যে ধন্যবাদ জানবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
দুর্দান্ত- দুর্দান্ত লেখা তাপস দা...
উপরে অনিকেত দা'র সাথে পুরোপুরি একতম। আর সুমন- তিনি তো গানওয়ালা...
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে কড়িকাঠুরে
ডাকঘর | ছবিঘর
অসাধারণ লিখেছেন তাপসদা। আপনার আবেগটা ছুঁয়ে গেল।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অনেক ধন্যবাদ কবি মশাই
তা আজকাল আপনাকে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? কৌ-টৌ সহ যে টো টো করলেন তার লেখা কোথায়?
ডাকঘর | ছবিঘর
দৌড়ের উপ্রে আছি রে ভাই। কৌ টৌ এর সাথে টো টো-র বর্নণা, কৌ টৌ কেই লিখতে হপে। তাছাড়া লেখালেখিও ঠিক আসতেছে না। ঠেইলা ঠুইলা কি আর লেখালেখি হয়? ভিতরে থাকা লাগে রে ভাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ওকে
ডাকঘর | ছবিঘর
”আমি চাই ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু”।এমন সাহসী উচ্চারন,এমন উদার আহ্বান কয়জন করতে পেরেছিলো।পেরেছেন কবীর সমুন,গানের মাঝে সাম্যতা,কবিতা,নাগরিক জীবন,রাজনীতি,ধর্ম,সবি উঠে এসেছে কাব্যিক ভাবে।তিনি তাই বাংলা গানের অসমান্য কিংবদন্তি।তার জাতিস্মর আর গানওয়ালা গান দুটো আমার সব সময় প্রিয় গানের অন্যতম।ভালোথাকুক কবীর সমুন,দীর্ঘজীবি হোন।
আপনার লেখা দিয়ে অনেক কিছু জানা হলো,তাই আপনাকে ।
মাসুদ সজীব
সুমন চির অক্ষত থাকবে। উনার আরেকটা লাইন আছে এমন - "আহা পাকস্থলীতে ইসলাম নেই নেইকো হিন্দুয়ানী, তাতে যাহা জল তাহা পানি''
লেখা পাঠের জন্যে আপনিও ধন্যবাদ জানবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
অসাধারণ লেখা। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
তবে শুরুর এনালজিতে সামান্য আপত্তি করব। কারণ গানের লিরিকে ইন্টেলেক্টের অভাবের দায় পেশাদার সুরকার ও গাইয়ে আর,ডি, ও কিশোরের চেয়ে গীতিকার ও সর্বোপরি রুচিহীন পরিচালক ও তস্য প্রভু প্রযোজকের ওপর বর্তায়। পপুলার মিউজিকে সলিল চৌধুরীর বিপ্লবাত্মক সূচনার যথার্থ উত্তরসূরী আর,ডিই। আর কিশোর অজস্র মশলাদার গান করা সত্ত্বেও প্রতিভায় নিজের তুলনা নিজেই। আর তাছাড়া এই দ্বয়ীর বাংলা গানের সংখ্যা নগন্য। সুমন মূলত সেই সময়কার বাংলা গানের কথার একঘেয়েমির কথা উল্লেখ করেছেন তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে। আসলে ফিল্মি গানও মানুষের গান, তবে তার জীবনবোধ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোলো।
একটা মানুষ একই সঙ্গে আমীর খাঁ সাহেবের ইমনকল্যাণের শুদ্ধ মধ্যমের ইশারাকে বুকে ধরে রাখছেন, নিখিল ব্যানার্জি থেকে নিচ্ছেন অনুপ্রেরণা, হেমন্তের অনুসরণে আনছেন উচ্চারণের স্বাভাবিকত্ব, লিরিকে আত্তীকরণ করছেন ডিলান, সলিল চৌধুরীর জীবনবোধ! সত্যিই কবীর সুমন নিজেই গান হয়ে গেছেন!
দুর্দান্ত লেগেছে।
নির্ঝর অলয়
আপনার আপত্তিতে আমার আপত্তি নেই। আসলে তখকার সমাজের হয়তো পছন্দটাও তাই ছিল। আরডি কিংবা কিশোর কুমার আমারও পছন্দ। আরডির যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। হয়তো আমি সেই কথাটা ভালভাবে বুঝাতে পারিনি। আসলে বুঝাতে চাইছিলাম তাঁদের সেই গানে 'সময়'কে ধরা যাচ্ছিল না
পঞ্চানন ঘোষাল, নির্মলেন্দু চৌধুরি, সলীল এরা সবাই সেই যুগেরই প্রতিনিধি। এদের বাদ দিয়ে সুমনও অধরা
০২
দুরন্ত বলেছেন
০৩
এমন সুন্দর একটা প্রতিক্রিয়া এবং পাঠের জন্যে আপনিও ধন্যবাদ জানবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
দারুণ লাগলো তাপসদা।
থ্যাংকু....
তা আপনার ভায়োলিন শেখার কদ্দুর?
ডাকঘর | ছবিঘর
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ
ডাকঘর | ছবিঘর
এত ভালো লেখা অনেকদিন পড়া হয়নি, অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
-আরাফ করিম
পাঠ করার জন্য এবং প্রতিক্রিয়ার জন্য আপনিও ধন্যবাদ জানবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
সুমনের এই লাইন দুটো আমার হৃদয়ে আজন্ম সলজ্জ সাধ হয়ে জেগে থাকবে,
এমন চমৎকার লেখা উপহার দেবার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা, তাপস দা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অনেক ধন্যবাদ দাদা। শুভেচ্ছা রইলো
ডাকঘর | ছবিঘর
অনেক না-জানা কথা জানা হলো।
**************
একটা কথা - আমি জেনেছিলাম যে সুমন জার্মানীতে ডয়েচে ভেলে'র বাংলা বিভাগে চাকুরী করতেন। আপনি বলছেন ভয়েস অব আমেরিকাতে। এটা এই লেখার জন্য বড় কোন বিষয় নয়। তারপরও সঠিক টা জানতে ইচ্ছে হচ্ছে।
****************
শহীদ কাদরীর জন্যই বোধহয় বাংলাদেশের মানুষের প্রতি উনার ভীষন ভালোবাসা। এমনকি ১৯৯৪-৯৫ এর দিকে কলকাতার কোন অনুষ্ঠানে কোন বাংলাদেশী দর্শক থাকলে এবং সেটা তাঁর কানে গেলে উনি সেই বাংলাদেশী দর্শকদের একটা হাততালি পাইয়ে দিতেন এই বলে যে এঁরা আমার বন্ধুর দেশের মানুষ। এমন একটি ঘটনার স্বাক্ষী আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বন্ধু - আতিক।
************************
আপনার কাছে আরো এমন লেখা পাবার প্রত্যাশা করছি।
ভালো থাকবেন। যদি এমন লেখা আরো পাই আমরা - খুব ভালো হবে।
তাপস, আপনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আপনারটাই ঠিক। আমার আসলে সামান্য জানার ত্রুটি ছিল, এটা ভয়েস অফ জার্মানি হবে। ঠিক করে দিচ্ছি
০২
শুধু শহীদ কাদরীর জন্যে নয়। আসলে বাঙালি তো, সুতরাং বঙ্গভূমির প্রতি ভালবাসা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। উনার অসংখ্য গানে বারেবারে বাংলাদেশের কথা উঠে এসেছে। সেটা 'বাংলার ধনুকের ছিলায় ছিলায় যত টান, তীরের ফলায় তবুও বিষ নয় লালনের গান'ই হোক কিংবা খালাম্মা সুফিয়া কামালকে নিয়ে 'ঐ তো লক্ষ ছেলেমেয়ে নাতিনাতনি দামাল, সবুজ দ্বীপের মতো মাঝখানে সুফিয়া কামাল'। শেষটা ছিল শাহবাগের জাগরণ নিয়ে। এমন আরও অসংখ্য কথা ছড়িয়ে আছে সুমনের গানে। স্টেজ শো'গুলি সহ নানা জায়গায় টেলিভিশনে সাক্ষাতকারে কিংবা বইয়ের পাতায় তিনি বারেবারে ৭১ কথা বলে উঠেন, বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন, বলেন মুক্তির কথা, বলেন আবহমান কালের বাংলার সংস্কৃতি তথা ঐতিহ্যের কথা
০৩
লেখা পাঠের জন্য ও প্রতিক্রিয়ার জন্যে আপনিও ধন্যবাদ জানবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন