• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

যে কথাগুলি ব্যক্তিগত - ০১

তাপস শর্মা এর ছবি
লিখেছেন তাপস শর্মা [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০১/০৫/২০১৫ - ১০:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১'লা বৈশাখ একলাই কেটেছে আমার; যদিও বরাবর একলাই কাটে। তবুও সারা বছর একে অন্যের আরোপ-প্রত্যারোপ, খিস্তিখেউর, গলা উঁচিয়ে ঝগড়া করা শর্মা বাড়ির জেলাসম যৌথ পরিবার ঐ একমাত্র পয়লা বৈশাখের দিনটিতেই চুপচাপ একসাথে থাকে, খাওয়া-দাওয়া করে, শেয়ার করে সবকিছু। আমিও থাকি, নীরবে দেখি। এবার ছিলাম না। সবাই ভুলে গেলেও মা নামে একটা প্রাণী ভুলেন নি। অনেক চেঁচামেচি-হল্লাহাটি করেও আমাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে না পেরে আজ সুযোগ পেয়ে পাঠিয়ে দিলেন প্রথম বৈশাখের দিনের কিছু ডিস্‌। মায়ের হাতের বানানো নাড়ু খেতে খেতে মায়ের মুখটা মনে পড়ে। আমি জানি ঐ বিশেষ দিনে সব আয়োজন করতে গিয়ে কোনো এক মুহূর্তে আমার কথা মনে পড়ে মায়ের, মা আড়ালে লুকিয়ে তখন কেঁদে নেন, আমি জানি...

মায়ের সাথে আমার শিশুবেলা, শৈশববেলা কিংবা কৈশোরবেলার কোনো স্মৃতি নেই; যা আছে তা স্মৃতিবিষ। সে বিষগুলি আজীবনের ক্ষত। মাকে দুষতাম, একসময় প্রচন্ড ঘেন্নাও করতাম যেমনটা করতাম বাবার বেলায়। বড় হয়ে গেলে মা আর আমার পাত্তা পায় নি, সেই ১৭ বছর বয়স থেকেই ঘরছাড়া আমি। হস্টেল, কলেজ, ভার্সিটি, তারপর কর্মজীবনের প্রারম্ভে আমি সম্পূর্ণভাবে ঘরবিমুখ। তারপর একদিন ফেরা, ২০১১। দীর্ঘ চার বছর ছিলাম বাড়িতে। তখন মাকে বুঝেছি, দেখেছি, জেনেছি। আমি এমন একটা বাচ্চা যাকে তার মায়ের সান্নিধ্য পেতে সময় ব্যয় করতে হয়েছে জন্মের পর প্রায় ২৬-২৭ বছর। আমার মা এখন আমার সাথে ছোট্ট শিশুর মতো আচরণ করেন, আমি কিছু বলি না। যে আচরণগুলি আমার ত্রিশ বছর আগে পাওয়ার কথা ছিল তা হয়তো মা এখন করছেন। মা-ও তা জানেন। আমার খারাপ লাগে না এখন। ফোনের ঐপ্রান্তে মা যখন ভাত খাওয়ার জন্য ধমকান, আমার খারাপ লাগে না, বরং আজীবন সংসারের ঘানি টেনে যাওয়া এই মানুষটির জন্য আমার ভীষণ মায়া লাগে...

জীবনের বেশিরভাগ সময়টা আমার মা রান্না ঘরে কাটিয়ে দিয়েছেন। এতে তার হাত ছিলো না। তাই আজকে যখন খাবার পাঠালেন সেই খাবারের মধ্যেও মায়ের সেই রান্না ঘরের গন্ধ আমি স্পষ্ট টের পাই। প্রতি রাতে ফোন করে খবর নেন কী করছি, কী খেয়েছি কিংবা খেয়েছি কিনা... ঠিক যেমন আমি ত্রিশ বছরের একটা বড়-বাচ্চা শিশু... ফোনের ঐপ্রান্তে মা যখন কথা বলেন তখন আরেকটা কন্ঠ একাএকা বিড়বিড় করে চলে। সেই কন্ঠটা আমার বাবার। আমি জানি তিনি কোনো না কোনো ভাবে প্রাণপণে নিজের অস্তিত্বটা জানান দিতে চান। যদি আমি একবারের জন্য তার সাথে একটু কথা বলি... কিন্তু আমি এখনো নিষ্ঠুর। নিজের ইগোর সাথে আমি পেরে উঠি না। তবুও প্রতি দিন একটু একটু করে বাবার বুড়িয়ে যাওয়া মুখটার কথা মনে পড়লে আমার কষ্ট হয়, ভয়ংকর কষ্ট হয়। ঠিক যেমন সময়ে অসময়ে বুকটা চিনচিন করে ওঠে মায়ের জন্য...

মা, বাবা, আপনারা ভালো করে জানেন না আপনার সন্তান কী চেয়েছিলো, কীভাবে বড় হয়ে উঠেছিল। এখন আর আপনাদের জাজ্‌ করি না। আমি বুঝি প্রত্যেকটা মানুষের ব্যক্তিগত ইতিহাস থাকে, তার লড়াই থাকে। আপনাদের লড়াইটা আমি জানি, বুঝি। আপনাদের এখন আর দোষ দিতে আমার ভাল্লাগে না। তাই এখন কঠিনভাবে নীরব থাকি। আপনারা কিছুই কোনোদিন জানবেন না। আমি বলবোও না। আমি বড় হতে চাই নি, আমাকে জোর করে বড় করে দেওয়া হয়েছে...

২০১৫. ০৫. ০১


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চুপ হয়ে পড়লাম, আবারো পড়লাম, হয়তো আবারো পড়বো--------

অনেকদিন পর লিখলেন।

ভালো থাকবেন।

স্বয়ম

তাপস শর্মা এর ছবি

হুম...

হ্যাঁ, দিন তো চলেই যায়। লেখা ঠিক হয়ে ওঠেনা

আপনিও...

অনিকেত এর ছবি

আমি বড় হতে চাই নি, আমাকে জোর করে বড় করে দেওয়া হয়েছে...

কথাটা একেবারে মনের মাঝে কেটে বসে গেল!
ভাল থাকো বস--
শুভেচ্ছা নিরন্তর

তাপস শর্মা এর ছবি

আপনিও ভালো থাকবেন বদ্দা। শুভেচ্ছা আপনাকেও...

রানা মেহের এর ছবি

মা এবং ছেলে দুজনের জন্যেই কষ্ট হল।
ভাল থাকবেন।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তাপস শর্মা এর ছবি

কষ্টগুলি আসলে চিরন্তন, শাশ্বত...

ভালো থাকবেন আপনিও

আয়নামতি এর ছবি

মনটা খারাপ হলো পড়ে। দুইদিনের দুনিয়ায় অভিমান পুষে হয়টা কী রে দাদা!

তাপস শর্মা এর ছবি

কিছু কিছু জিনিস অভিমানের চেয়ে উপরে চলে যায়। কিছু কিছু দীর্ঘশ্বাস সমস্ত দৈর্ঘ্য-প্রস্থকেও ছাপিয়ে যায়...

নিন, আরেকটু মন খারাপের গান শুনুন

আয়নামতি এর ছবি

গান আমার মন খারাপ করাতে পারেনা। এটাও পারেনি রে দাদা!
অসংখ্য ধন্যবাদ চ্রম গানটার জন্য :)

তাপস শর্মা এর ছবি

বেশ। মন খারাপ করা এমনিতেও ভালো না :)

এক লহমা এর ছবি

স্মৃতিবিষগুলি যতটা সম্ভব স্মৃতিমধু হয়ে উঠুক, এই আকাঙ্খা জানাই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তাপস শর্মা এর ছবি

হয়তো, আই উইশ...

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

পড়লাম। বিস্তারিত মন্তব্য নিস্প্রয়োজন। শুধু বলবো অনুভূতির রূপান্তর বড়ো অদ্ভুত।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

তাপস শর্মা এর ছবি

হুম। জীবন এবং তার সম্পর্ক এবং সেই সম্পর্কের অনুভূতিগুলো মানেই অদ্ভুত। হয়তো কিছু বলা হয় আর কিছু কিছু নিজের সাথে কবরে কিংবা চিতাভষ্মে হারিয়ে যায়, চুপিচুপি, একা...

মরুদ্যান এর ছবি

কত্তদিন পর দাদা!!

কিছু জিনিসের উপর আমাদের হাত নাই। আপ্নার মনের বিষ তাড়াতাড়ি নেমে যাক এই কামনা করি।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

তাপস শর্মা এর ছবি

হুম। প্রায় দেড় বছর...

হয়তো তাই, হয়তো... বাকিটা বুঝিয়ে বলার মতো নয়

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অনেকদিন পরে, অনেক পথ ঘুরে, অবশেষে! যাক সেকথা। এখনতো বুঝতে পেরেছেন, মায়ের সীমাবদ্ধতার কথা! আমার জীবনেই প্রায় এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে।
মানুষ শুধু নিজের জন্যই বাঁচেনা, অপরের জন্যও বাঁচে। ভাল থাকুন। অন্তত চেষ্টাটা করুন। :)

তাপস শর্মা এর ছবি

না বোঝার মতো কিছুই নেই, ছিলোও না। ঐ সীমাবদ্ধতাগুলির একটা বিন্দুই বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট...

ভালো থাকুন আপনিও...

সুমাদ্রী এর ছবি

তাপস, এই কথাগুলো ব্যক্তিগত কোথায় রে ভাই আর? এগুলো তো আমারও কথা, আমাদের নিম্নমধ্যবিত্ত-অসচ্ছ্বল-অনাধুনিক-উদাসীন অথচ মমতাময় সংসারগুলোর কথা। ভাল লাগল লেখা পড়ে। ইনবক্সে একটা মেসেজ দিচ্ছি।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

তাপস শর্মা এর ছবি

ব্যক্তিগত অর্থে সামান্য ব্যক্তিগত এই তো... কিন্তু সামগ্রিকভাবে একই। শুধু অবস্থান চেইঞ্জ হয়ে যায়, প্লটটা থেকে যায় একই। কোনোটা প্রকাশিত, কোনোটা অপ্রকাশিত...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।