আমাদের চেনা দিনরাত্রি, অনুভূত সময়, সন্ধ্যা ও মেঘমালা, বিভঙ্গ চৈতন্য কিংবা নিরন্তর বয়ে যায় যে নদী তার করুণ আর্তস্বর শুনে কাতর হন এক কবি। তার বিরহের পদ্য আমরা শুনি, তার চৈতন্যের গানে এক অদ্ভুত মর্মন্তুদ দহন আমাদের স্পর্শ করে। সেই শোকগাঁথা এতটাই গভীর কোন এক সুদূর রাত্রির জন্য, মফস্বলের কোন এক সড়ক মধ্যযামে ঘুমিয়ে গ্যাছে বলে কোথাও পৌঁছুনো হয় না জেনে কিংবা যেহেতু ‘পথ মনে রাখে নাই দুঃখবতী মেঘেদের গান’, আমাদের অনুধ্যানে, অনুভবে ‘স্মৃতিমাতৃক খুচরো কষ্ট’রা নাড়া দিয়ে যায়ঃ
*
"সারারাত মুখরিত দহন; মথুরার গল্প নেমেছে আজ পদ্যসুরে
ঘুমহীন মফঃস্বলের কবি গ্রন্থিত হই শিশিরে পুনবার
…………
…………
সেই তো গেলে ভেসে ভেসে জলের বৈঠায় উজানে বহতা
আমার বর্ণিল মুখরতা এক ফাঁকে উড়ে গেলো গাহর্স্থ্য রোদে
স্বপ্নকে আর ভাই ডাকি না এখন, পথে ঘুমায় শ্যাওলা পিচ্ছিলতা
কতো পূর্ণিমাও চলে গ্যাছে দূরদেশে...কতো প্রতীক্ষা ভ্রষ্টবোধে!" (স্মৃতিমাতৃক খুচরা কষ্ট)
*
"ইলোরা তোমার শহরে বিভাজিত করি যতো ব্রাত্যগান
প্রিজম স্বপ্নে মোড়ে দেয়া উপকথা কিংবা নিঝুপুর বৃত্তান্ত
পথ ঘুমিয়ে গ্যাছে না হয় রাত ছুঁতো মাসকান্দির যাত্রানৃত্য আবহমান..." (ইলোরা, তোমাদের মিথ্যে কথার শহরে)
তবু কোন কোন রাতে সবাই জেগে থাকে... হাহাকারও ফুরিয়ে যায়। ডানা ভাঙা অনুভূতি নিয়ে আহত পড়ে থাকেন এক কবি। আমাদের সব ভাবনা-ই তবে কেন সমান্তরাল? কেন বলা হবেঃ
"জানা হবে না এই শস্যময় প্রান্তর কেন অধিকন্তু শস্যবিহীন"
অপূর্ণতার এই অনুভূতিই তবে কবিতাকে বাঁচিয়ে রাখুক।
কাজেই এ অনুভব কেবল আক্ষেপের নয়। বিষাদের নগরীতে যে চিঠি বয়ে নিয়ে যায় পাথর সময় তাতে আশাবাদও থাকে -
"এই যে বিরহ বেলায় রচিত গান গাওয়া হলো বিষণ্ণ সুরে,
উড়ে যাবার আগে ব্যাথিত শিস কেটে গেলো পাখিদম্পতি
তাদের ডানার নিচে কিছু রোদফুল ছিলো -..." (দাদাজানের ফরচা)
*
"স্রোতে স্রোতে ফিরে আসছে মুখোমুখি বসিবার দিন
দ্রোণফুলে নিবিষ্ট ভোমরা-- অর্ধেক বিরহী বাকীটা রঙিন
উড়ে গিয়ে পুড়িয়েছে ডানা বিলোড়নের কালে
রঙ হারানোর রাতে--তাই শোনো, স্মৃতিমাতৃক যতো ভায়োলিন
সূত্র ভুলে বেজে উঠবে আবার অ্যালভিয়োলাস সকালে
নতুন সন্ধিতে কেউ ফিরে পাবে ফের যৌথভুলের দিন" (যৌথভুলের দিন)
বৃষ্টি, সন্ধ্যা, নদী ও মেঘ যেন তাঁর প্রিয় বিষয়। ‘সন্ধ্যায় বৃষ্টি এলে’ তিনি লিখেন -
" সন্ধ্যায় সামান্য বৃষ্টি... বৃষ্টি খেলতে শহরে এসেছেন বাল্মীকি
বিভঙ্গ চৈতন্যের কাব্য হবে এবার, এ সন্ধ্যায় আমরা কী লিখি!"
কিংবা
"সান্ধ্য জলে কবিতার ঢেউ, ভেসেছি সেই প্রপাতে করুণাবিহীন" (ভুল গ্রামে এসে) -- এই পংক্তিগুলো আমার প্রায়ই মনে পড়ে যায়, ভোলা সহজ নয়।
এর বাইরে সুপান্থ’র কবিতায় শহরকেন্দ্রিক বিরহের নানামুখী সংকট আমরা দেখতে পাই। তাঁর প্রিয় শহরের কাছে পূরণ-না-হওয়া অনেক পুরনো দাবী এবং অভিমান, প্রবাসযাপন, নির্বাসনের তূল্য যন্ত্রণা বেশ কিছু কবিতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এই নির্বাসন কে তিনি বলেন দ্বিতীয় মৃত্যু। "সওয়াল" কবিতায় এক স্বতঃজিজ্ঞাসু মন নিজেকে প্রশ্ন করে --
"অত্রবার দ্বিতীয় মৃত্যুর কথা বলি। মৃত্যুর উৎসব থেকে নেমে আসেনি কেন জীবনশবের চাঁদমারি...", "...তবে কেন এমন অসহায় মৃত্যু? এমন পলায়ন? সখীরে আমার, বিশ্বাস কর আমি তোমাদের শহরে ঘুমিয়েছি জননীর জরায়ূ ভেবে", "...তবু কেন যে এ নগর উগরে দিলো আমাকে!"
এবং
"এই ভুল শিলাস্বপ্ন--ফের ঘুমোবে না আর
যে গাঁথা এ জীবনের; শিল্প তার বিষণ্ণ অধ্যাস
কার্তিকের মাঠ বুঝে মর্ম, করুণা বিলাস
কোন্ পাখি লিখে শিস্ নির্বাসন ব্যাকুলতার" (নির্বাচিত স্মৃতির প্রণতি)
এবং আরো
"তবু কারা যেন ফের লিখে স্মৃতিতে জ্বলে পুড়ে
মানুষ নাকি আবার ডাকতে শিখেছে ডাক নামে
যে পাখি ভিনদেশে বাস করে সেও নাকি স্বদেশী পাখায় উড়ে
নির্বাসিত রাত্রিগুলো বেচতে যায় প্রাত্যহিক দামে" (নৈশ বিলাপের চতুর্দশপদী)
সুপান্থকে বিষাদের বা বিরহের কবি বললে সত্য বলা হয় না বলে মনে হয়। এক শব্দে বলতে গেলে তিনি বিরহের নন; অবসাদের কবি। তাঁর ভাষার অন্তঃপ্রবাহে যে স্নিগ্ধ সুর তা মোহ জাগানিয়া কিন্তু একে ঠিক বিশ্বস্ত বলা যায় না। এর আড়ালে বহু কথা না বলাই থেকে যায়; যেটা থাকে বর্ণনাতীত অনুভবের গ্রাহ্যে। তাই তার কবিতা পাঠে আমরা বিহবল হই, অবসাদের নীল বিষ আমাদের আহত করে।
"শ্রাবণের পূর্ণিমায় বলা হয়ে গেছে নোনতা জলের উপকথা"
‘নোনতা জলের উপকথা’! জলের এই নোনতা অনুভব আমাদের আচ্ছন্ন করে, এর পর যেন আর কিছু হবার নাই, কিছু বলারও নাই। কেবল কিছুটা প্রলম্বিত বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়া ছাড়া। এবং তা হতেই হয়, ফলতঃ আমাদের অনুভূতি নিঃসাড় হয়ে আসে। অনুভবের ক্লান্তি আমাদের বিহ্বল করে তোলে – এই তো সুপান্থর কবিতা।
আজ কারা যায় নকশী কাঁথার মাঠে? কারা গায় কাব্য কলার গান!
একদিন স্বপ্নের প্রাথমিক স্রোতে জীবনের এমন বহু অর্থ জেনেছি
সারা গ্রাম জুড়ে স্বপ্নবসতি... চৌকাঠ ডিঙালেই নিকোনো উঠোন
ঝিঙেফুলের বিদূরতা – অমন দূরে নিজেকে গেঁথে চন্দনী প্রার্থনায়
ছুঁতে গেলেই পেয়ে যেতে নীল নীল স্নায়ূর ভেতর স্বরচিত অবসাদ
তুমি দ্যাখোনি সই; এতোকাল পর আজ মনে পড়ে ব্যার্থতার ধারাপাত
আকাশের গায়ে গায়ে ধনুকের নাব্যভাষা...
ফেরারী পাখিরা তবু মনে রাখে বিপন্ন বালকের আর্তি
নদী শুধু কিঞ্চিত বুঝে জলের অতলে নিঃস্ব মাছের রোদন
আমিও নিঃস্ব বড়ো, স্বপন ছাড়া বুনিনি কোন বিকল্প শস্য
শেষ রাতে তাই বনশ্রী রোডের করূনা নিয়ে ছুটে যায় ধাবমান ট্রেন
স্টেশনে তখোন বন্ধ্যা রাত আর ব্যর্থ তীরন্দাজ একসাথে ঘুমোয়!
__________________________________
'নিশিন্দা মেঘের বাতিঘর' –এর কবিতাসমূহের নির্বাচন থেকে ধারণা হলো এর সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে নতুন কবিতাটি রচনার মাঝখানে অনেক সময় গড়িয়ে গিয়েছে। কবিতাগুলো যখন পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল এরা যেন আমাকে একটা ক্রম রূপান্তরের ভেতর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই রূপান্তর ব্যাপকার্থে আধুনিকতা হতে উত্তরাধুনিকতার দিকে, ছন্দ থেকে ছন্দোমুক্তির দিকে। এবং কিভাবে বলি কবির এ প্রয়াস সচেতন নয়? 'আছি বিগতের কাছে নত' - এ কবিতায় সেই স্বীকার্য যেন বিগতের কাছে ঋণস্বীকারের দায়পূরণ করেছে।
এই বইয়ের অধিকাংশ কবিতাই নিখুঁত ছন্দোবদ্ধ। পর্বের বিন্যাস পালটে, আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার ক’রে, কিংবা প্রমিত ছন্দের সাথে গদ্যকবিতার ছন্দ মিলিয়ে কবিতার শরীর নির্মাণে কিছু নিরীক্ষা চোখে পড়েছে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু গদ্যকবিতাও স্থান পেয়েছে। যেমন- 'ডানা', 'ব্যর্থ দুপুর', 'অরুনাক্ষ রাতের মতো', 'সন্ধ্যারা অমনি হয়', 'সওয়াল,'স্বপ্ন বিষয়ক আরও এক', 'বিগত লোভ জাগিয়া উঠিলে পর'। এ থেকে কিছু উদ্ধৃত করি --
"বিস্মরনের কালে তুমি ফের গাইলে এই গান! পথে পথে ছিলো যতো তৃষিত ধূলো--তারা সব আজ মেতেছে বহ্নিহরণ উৎসবে! তোমার করুণায় একদিন ডানা পেয়েছি। শ্বাসের বদলে পারিজাত হাওয়া! সেই মহিয়সী কথারাআজ সন্তরণের দোকান খুলেছেন। তাতে সাজানো যত কিচ্ছা, রক্তসংরাগে। আমি কৃষকপুত্র-- বাণিজ্যের সূত্র জানিনা! ভাবি, যদি সেই পূর্ণিমা আবার আসে ইতিহাসের বাঈজীর মতো। যদি আবার কেউ যায় মৃগয়ায়... হরপ্পার হরিণ তখন একাকী!
দ্যাখো, সেই লোভে তোমার দেয়া ডানা খুলে রাখি!" (ডানা)
'আতকা পাওয়া দুই' -- একটি চমৎকার উত্তরাধুনিক কবিতা। এটি পড়তে গিয়ে আমার উৎপলকুমার বসু পাঠের অনুভূতি হলো।
তাঁর কয়েকটি কবিতার ভাষা ও ছন্দের মন্থরলয়ে জীবনানন্দের প্রভাব দেখা যায়। যেমন -
"প্রতি সন্ধ্যায় পুরনো গাঙুর নদীটি উৎসবের সুরে
ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে দু'তীর বেহুলার মতো মূক হয়ে যায়"
আবার "ওগো নিদ্রিতা মেঘ আজ এসো আমাদের ইশ্কুলে" – পড়ে ভ্রম হয় মেঘদূত পড়ছি বুঝি! ‘বৃষ্টি সন্ত্রাসে’ কবিতায়ঃ
"সব ছন্দ অস্বীকার করে আমরা অপেক্ষা করি মেঘকিশোরী
আমাদের ভিটেমাটি প্রত্নধনু ধুয়ে দিয়ে যাও রজঃস্বলা স্রোতে"
'শুদ্ধমৃত্যু, প্রখরভুলে' তাঁর রচিত একেবারেই অন্যরকম একটি কবিতা এবং আমার খুব পছন্দের ও। এরকম খুব বেশি লিখেননি তিনি-
"কিছু কিছু ভুল সুর থাকা ভালো প্রতি অন্তরায়
হলুদ শশ্মানপথে মুদ্রিত উজ্জ্বল রোগে
পীড়িত হয়ে গেলে কিছু ভুল খেয়ে নেয়া যায়
দ্রাক্ষা ভেবে যাবতীয় মুদ্রাদোষ সহযোগে
তাতে সফেদ মৃত্যুর পূর্বে যাবতীয় বেঁচে থাকার আশা ফোটে..."
এই সংকলনের আর কোন কবিতায় এইরকম প্রতিবাদী সুর দেখি না।
শিরোনামের কবিতাটি আমার খুব প্রিয় একটি কবিতা। আমার একলা সময়ে পড়বার কবিতা।
“এইরকম গল্পে তুমি রাখোনি আমায় , আমি ফিরেছি একা!
শঙ্খের ভেতর জমানো নিষাদ অপ্রস্তুত বালির কাছে
পড়ে র’লো কয়েক জন্ম; আর দেখো, কিছু মৃত্যু নীল তটরেখায়
পরিশ্রান্ত জাহাজের মতো তবু নোঙর করে আছে!
কিছু গল্প বাকী থাকে, কিছুটা অর্ধেক বলা
অর্ধেক আঁধার রেখে বাড়ি ফিরে যায় পৃথিবীর শেষ বাতিওয়ালা।“
এই সময়ের প্রতিনিধিত্বশীল কবিদের অন্যতম সুমন সুপান্থ। তাঁর ‘নিশিন্দা মেঘের বাতিঘর’ – এর অধিকাংশ কবিতা-ই আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। আরো আরো কবিতা নিয়ে কবিতার এই বাতিওয়ালা আলোকিত করুন আমাদের – এই-ই প্রত্যাশা তাঁর কাছে।
মন্তব্য
তারেক, কী লিখলেন রে ভাই! কবিতার বইয়ের আলোচনা যেন নিজেই এক কবিতা হয়ে ধরা দিলো! এক কথায় – দুর্দান্ত। কবিতা আপনি কতটা ভালবাসেন, এই বিষয়ে আপনার পড়াশুনার গভীরতা কতটুকু, তা সবই ফুটে উঠল এই পাঠ-প্রতিক্রিয়ায়।
কবি সুমন সুপান্থকে অভিনন্দন তাঁর "নিশিন্দা মেঘের বাতিঘর"-এর জন্য (নামটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে, পছন্দ হলো এখানে উদ্ধৃত পঙতিমালাও)।
তারেক'র এই পোস্টটাতে আমার নিজের মন্তব্য করবো কি, করবো না এই দ্বিধায় ভুগতে ভুগতে কিছু কথা উথলিয়ে উঠছিলোই !
কি লিখেছি, কি লিখি, আদৌ সেটা লেখা হয়ও কি-না - এই নিয়ে আমার সংশয় যায় নি কোনও দিন । কবিতার ক্ষেত্রে তো আরও না । যে বইয়ের কথা হচ্ছে এখানে, সেটা মেলায়ও আসে নি এখনো ! (কাল/পরশু নাগাদ পাওয়া যাবে হয়তো ) কিন্তু সতীর্থ বন্ধু, অগ্রজ কবি, কিংবা সুহৃদরা ফোনে,আড্ডায়, ফেসবুক চ্যাটে মতামত জানাচ্ছেন টুকটাক। অগ্রজপ্রতিম এক কবি আর সমসাময়িক এক কবিবন্ধু, কবিতালোচনার মতো করেই লিখে জানিয়েছেন ২ টো প্রতিক্রিয়াও !
কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে তারেক'র এই পোস্ট আমাকে অবাক করে দিয়েছে । মনে করে দিয়েছে উলুবনেও কেউ কেউ মুক্তা ছড়ায়।
মনে করিয়ে দিয়েছে,অভীন্দ্র সিং জানা' নামের এক উত্তর ভারতীয় কবির কবিতা নিয়েও আলোচনা করেছিলেন আবু সাইদ আইয়ুব ! কবি হিসেবে অভীন্দ্রকে ইতিহাস কোথায় রেখেছে কে জানে ! কিন্তু আবু সাইদ আইয়ুব জ্বলজ্বলই করছেন, দীপ্তিতে,কীর্তিতে !
এই পোস্টের সকল অভিবাদন,ধন্যবাদ তারেক রাহিম নামের অমিত শক্তিশালী তরুন লেখকের তরে ...কবি আর তার কবিতা উপলক্ষ্য মাত্র ।
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
শেষ দু'লাইন পড়ে আমার গলা শুকিয়ে গেলো অস্বস্তিতে, ভয়ে। কিন্তু সুপান্থদা বাকীদের মতামত নিয়ে সম্ভব হলে আলাদা একটা পোস্ট দিন না, পড়ি।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
নিষাদ মানে ব্যাধ না? মানে Hunter-Gatherer। নাকি?
হাঁটুপানির জলদস্যু
তাই বোধহয়। আরো কিছু হতে পারে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
স্বরগ্রামে সপ্তম সুরের নামও নিষাদ । এখানে অই অর্থেই ব্যবহার করা হয়েছে ।
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
সচলায়তন সংকলন প্রথম খন্ড থেকে মাথার ভেতর ঠোকর মেরে যাচ্ছে নিশিন্দা মেঘের বাতিঘর। আপনার পোস্ট থেকে কিছু কবিতার কিছু অংশ আগে পাঠ করে ফেললাম।
নিজের ফুলদানীতে যারা পৃথিবীর সব ফুলকে আঁটাতে চায় তারা মুদি; কবি নয়। কবির কাজ ফুল ফুটিয়ে যাওয়া তার চলার পথে পথে। সে ফুল কাকে গন্ধ দিলো, কার খোঁপায় বা ফুলদানীতে উঠলো তা দেখা তার কাজ নয়।
___________________________ [বুদ্ধদেব গুহ]
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
কিছু বললাম না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সুমন সুপান্থ'র কবিতাতে মুগ্ধতার শেষ নেই - যেমন নেই তারেকের ভাষা, শব্দচয়নে।
কবি-আলোচক দু'জনকেই
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কবিতার তুলনায় তার আলোচনা যে অনেক বেশী স্পর্শী, হৃদয়জাগানিয়া; আর কেউ না জানলেও বেচারা কবি ঠিকই জানে, সবজান্তা !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
কোনটার প্রশংসা করব? কবির কবিতার নাকি জ্ঞাতি ভাইয়ের পোস্টের?
দু'টায় অসাধারন!
----------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
আমি সুমন সুপান্থের গদ্যের ভক্ত। কিন্তু, তারেকের এ রিভিউ পড়ে এবার কবিতা বোধের আগ্রহ জন্মালো।
অভিনন্দন কবি।
ধন্যবাদ তারেক...।
'৯৮ এ এর কোন একদিন, আমি প্রথমবারের মতো দেশ ছাড়ার আগে আগে-আমাদের কাগজ 'সহবাস' এ কথাশিল্পী আকমল হোসেন নিপুর একটা সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য মৌলভীবাজার গিয়ে হাজির আমরা তিনজন-আমি, অর্জুন মান্না ও আসিফ মনি । পুরো আয়োজন সম্পন্ন করেছিল বন্ধু সুমন সুপান্থ ।
প্রথামাফিক সাক্ষাৎকার শেষ হবার পর নিপু ভাই সহ আমরা গিয়ে বসেছিলাম মনুবাঁধ পেরিয়ে একটা ছোট্ট চায়ের দোকানে । হঠাৎ করে কথা উঠেছিল আমাদের লেখালেখি নিয়ে ।
আমরা তখন গদ্য লিখি । আমাদের সবাই । আমি, আরিফ জেবতিক, সুমন সুপান্থ,সুমন্ত আসলাম, পাপড়ি রহমান, আফরিন আহমেদ, শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস, সুমন সুপান্থ- । আমরা গদ্য লিখি চিরকুটের মতো । ছোট ছোট বাক্যে ছোট ছোট চিরকুট ।
মনে পড়ে নিপু ভাই বলেছিলেন - 'তোমাদের কারো কারো আসলে কবি হওয়ার কথা, গদ্য নয় তোমাদের গন্তব্য আসলে কবিতা ।'
আমার কাছে কবিতা রয়ে গেছে প্রথম প্রেমের স্মৃতির মতো । মাঝে মাঝ খামোখা জানান দেয় খুব গোপনে পেরেকের মতো বিঁধে আছে- এর বেশী আর কিছু নয় । ঘর-সংসার করার মতো অতোটা চর্চা হয়নি আমার ।
আমাদের সুমন কবি হয়েছে । কবিতার সাথে তার ঘর-সংসার হয়েছে । এই দাম্পত্য দীর্ঘ হোক । কবিতার সাথে হোক তার সহমরন ।
আর তারেকের আলোচনা?
অসাধারন!
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ঈর্ষা হয় আপনাদের বন্ধুতায়। আমি সত্যি সত্যি হিংসা করি আপনাদেরকে।
সুপান্থদার সহমরণ হোক কবিতার সাথে-- এইটা ভালো বলছেন
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
আমরা গদ্য লিখি চিরকুটের মতো । ছোট ছোট বাক্যে ছোট ছোট চিরকুট
'তোমাদের কারো কারো আসলে কবি হওয়ার কথা, গদ্য নয় তোমাদের গন্তব্য আসলে কবিতা
প্রথম চুমুকেই এমন স্মৃতিকাতর হই নি কতোকাল ! এইসব পানের অধিক নেশাজাগানিয়া কথাবার্তা...সে এক দিন ছিলো আমাদের ! ...আর ছোট ছোট চিরকুটের মতো স্বপ্নগুলোও কী বেপরোয়া !!!
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
- তারেক ছেলেটাকে আগে ভাবতাম বয়ষ্ক গোছের কেউ। কিন্তু পরে অবয়ব দেখে ধারণা মেলে সে বয়সে অনেক বিশাল কেউ না হলেও বিদগ্ধে সে অনেক উচ্চতায়। তার মতো একজনের দ্বারাই আসলে সুপান্থ'দার বইয়ের যোগ্য আলোচনা হওয়া সম্ভব! হয়েছেও তাই।
অনেক অভিনন্দন সুপান্থ'দা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আজকে মনে মনে পণ করেছি অফিস শেষে একবার ঢুঁ মারবো মেলায়। যদি নিশিন্দা মেঘের বাতিঘর এসে থাকেই তাহলে নিশ্চিত আমার সাথে সহবাস হবে ওর, রাত-দুপুরে আমার একলা ঘরে।
কবিতার মতো তারেকের হাতে গদ্যও ভালো বেজে ওঠে।
..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
কানেকশনটা স্লো যাচ্ছিল। নিশ্চিত হতে না পেরে একাধিকবার রিফ্রেশ-রিট্রাই মারায় এই কাণ্ড হলো! নিচের দুটো ঘ্যাচাং করে দিলে খুশি হবো। আমি ঘ্যাচাং করার অপশন পেলাম না কেন? মন্তব্যকারীর এ সুবিধা কি রহিত হয়েছে? অন্তত মিনিট পাঁচেক সুবিধাটা থাকতে পারে তো!
..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
তারেক এর লেখাটা সত্যি চমতকার। ধন্যবাদ তারেক ...!
নিশিন্দা মেঘের বাতিঘর - এর প্রকাশনী অনুষ্ঠান আগামী শুক্রবার একুশে বইমেলায় ভাষাচিত্র ষ্টল প্রাঙ্গণে হবে ( ষ্টল নং ৪০৯) আপনাদের নিমন্ত্রণ রইলো।
তারেক রহিম এবং সুমন সুপান্থ, এই দুই লেখকের কবিতা মিস করি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন