বেঁচে আছি অজস্র দিন ও রাতের ক্রোধ ও ঘৃণা উপেক্ষা করে। যে বিবিধ রঙ আমি দেখি, জমাট অস্তিত্ব ঘেঁটে তাদের আলাদা আলাদা অবস্থান চিহ্নিত করা যায় অনায়াসে। আমার সামনে কর্মী লাল পিঁপড়েরা রাস্তা করে নেয়। মাড়িয়ে দিলে সে পথ বেঁকে যায় কিঞ্চিত। দেয়ালে টিকটিকি বসে থাকে ওঁত পেতে, উপরে চালের কোনায় কোনায় জাল পেতে বসে আছে সব হা মুখো হাভাতের দল। সামনে এক ঝলক শিকারী বাতাস গাছেদের নাড়িয়ে দেয়, আলতো কিংবা খুব জোরে। কিশোরী গাছেরা মাথা সরিয়ে হেসে চুল ঠিক করে নেয় পরবর্তী যুবার প্রতীক্ষায়। সদ্য লাজ ভাঙা কিশোরীরা...
ভীষণ অস্থির লাগে, আক্রান্ত হই। সার বেঁধে সৈনিকের দল পাহাড় ডিঙোয়, পাহাড় দেখি না। বালিয়াড়ির মত নেই হয়ে যাই মরুঝড়ে। সমুদ্রজলে পা ডুবাই না বহুদিন, গা ডুবাই না তার চেয়ে ঢের বেশি সময় ধরে। আকাশে মেঘের ঘোড়া সূর্যকে আড়াল করে ছুটে ছুটে যায় এপ্রান্ত-ওপ্রান্ত, টেনে নেওয়া শব কথা বলে প্রয়োজনে, মাঝে মাঝে তীব্র অট্টহাসিতে প্রাণ খুঁজে নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চলে। এভাবে হেঁটে যেতে যেতে ঝিনুকের খোল নৈঃশব্দের কিনারায় ভেঙে পড়ে।
গন্ধে টের পাই জীবিকা, ড্রিল মেশিনের শব্দ হচ্ছে কোথাও, শ্রমিকদলের কোরাস, পথচলতি কারো ফিসফাস, বোঁকাট্টা ঘুড়ি বেগুনী সাদা, কালো মাটি, অ্যাসফল্ট... ভেজা কাদায় চাকার দাগ থেকে শুরু করে বহুদূরের বন থেকে হঠাৎ উড়তে শুরু করা পাখির দল, পুনরায় ফিরে দেখা আকাশ, ড্রিল মেশিনের শব্দ লক্ষ লক্ষ বৃত্ত তৈরি করে বন্দী করে ফেলে আমাকে। চারপাশ থেকে চেপে আসা শব্দ দু’টাকার পলেথিনে ভরে ফেলে দিতে ইচ্ছা করে পাশের ডাস্টবিনে, সেই ডাস্টবিন সহ দৃষ্টিগ্রাহ্য সকল কিছুকে দূরের বড় ডাস্টবিনে, সেই ডাস্টবিনকে আরো দূরে...।
এই শ্লথ সময় আমাকে থু থু মেরে যায় অবিরত, বিষন্ন ইজেলে প্রতিদিন তবু একই ছবি আঁকি।
মন্তব্য
অসংলগ্ন ছবিগুলো ঠিকঠাক আঁকতে পারি না সবসময়। ছবিগুলো একদমই বিচ্ছিন্ন আর হাতের তুলিটাও কাঁচা হাতে ধরা। তবু যা ইচ্ছে তাই লেখার স্বাধীনতার উপভোগ করা আরকি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
খুবই কাব্যিক কথামালা। আপনার লেখা ভাল লাগছে।
ভাগ্যিস কবিতা বলেন নাই।
সচলে ইদানিং কবিতা নিয়ে যে সরব বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে সেটা এবং কাব্যসমালোচনা আর গম্ভীর সব মতবাদের আলাপে আমার অবস্থা এমনিতেই সিএনজি হয়ে আছে !
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
সেই একই গতানুগতিক সময়। একটা দিন আরেকটা দিনকে ধাক্কা দেয়। আমরা সামনে এগিয়ে যাই।
সবচেয়ে ভয়ংকর লাগে যখন দেখি, আমার প্রতিটা দিনই পুরনো, প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতাগুলো অনেক চেনা চেনা তখন এই অন্তহীন লুপ থেকে বেরিয়ে যেতে ইচ্ছে করে কিন্তু পারি না।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
ইমরুল ভাই, ধন্যবাদ। আপনার পর্যবেক্ষণ সত্যি অসাধারণ। শুধু এখানেই না, অন্যান্য পোস্টেও আপনার ছোট ছোট মন্তব্যগুলো আমার কাছে পোস্টের সম্পূরক বলেই মনে হয়েছে, বিশেষ করে বিভিন্ন কবিতায়।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
হুমমম..
সুন্দর ছবি হয়েছে। এরকম ছবি আঁকবো, রোজ ভাবি।
ভাবনা আর খাঁচা ছেড়ে বেরোয় না।
"গন্ধে টের পাই জীবিকা"
মোহিত হৈলাম এই অবধারণে।
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
'পাতায় পাতায় বিষন্নতা,গাছের ও মন কেমন করে...'
ঠিক সেরকমই কিছু একটা,এই লেখাটা ।
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
'একলা হতে চাইছে রাত্রি, অন্ধকারের আড়াল থেকে...'
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
নতুন মন্তব্য করুন