(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ—এখানে প্রিয় কিছু চলচ্চিত্রের গল্প বলার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছি মাত্র, এটা কোন মুভি রিভিউ নয়, কারণ এমন চলচ্চিত্র নিয়ে রিভিউ লেখার জ্ঞান বা প্রজ্ঞা কোনটাই আমার নেই, এটি স্রেফ ধারা বিবরণী। কাজেই যাদের চলচ্চিত্রটি এখনো দেখা হয় নি, তারা আগে দেখে ফেললেই ভাল হয়, নতুবা সব ঘটনা জানলে হয়ত আগ্রহ কিছুটা কমে যাবে। এমন লেখার ব্যাপারে সকল ধরনের পরামর্শ স্বাগতম। )
পর্দা ওঠার আগেই কানে ভেসে আসে করুণ আর্তিময় গান, মায়াভরা কন্ঠের এক তরুণ বুকের বেদনা নিয়ে প্রিয়তমাকে বিদায় দিচ্ছে ভিয়েতনামের কারণে, অর্থাৎ ভিয়েতনাম যুদ্ধের কারণেই প্রিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে, তারুণ্য ছিনিয়ে নিচ্ছে দূরদেশে সংঘটিত অন্যায় যুদ্ধ। এমনভাবেই শুরু হয়েছে বিশ্বখ্যাত পরিচালক স্ট্যানলি কুবরিকের ফুল মেটাল জ্যাকেট চলচ্চিত্র, যা পুরোটাই তৈরি যুদ্ধ নিয়ে এবং সেই সঙ্গে যুদ্ধবিরোধী চলচ্চিত্রের প্রতীক হিসেবে সারা বিশ্বের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে সমাদৃত।
সেই Goodbye my Sweetheart, Hello Vietnam গানের সঙ্গে সঙ্গেই পর্দায় ভেসে ওঠে চুল কামানোরত অবস্থায় একদল তরতাজা নতুন প্রাণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন সেনাদলে নাম লিখিয়ে ট্রেনিংয়ে যোগদানের আগে বাধ্যতামূলক ভাবে মাথা ন্যাড়া করছে সবাই, মেঝেতে জমে উঠেছে একের পর এক চুলের স্তুপ- সোনালী, কালো, বাদামী, কোঁকড়া, সিল্কি- সব ধরনের চুলের সমারোহ। পরিচালক এই রূপক শটের মাধ্যমে জানালেন এই যুদ্ধ নামে নিষ্ঠুর খেলায় বলি হয়েছিল সব ধরনের তরুণ, সকল বর্ণের, সকল জাতের।
ফুল মেটাল জ্যাকেট মূলত দুই ভাগে বিভক্ত, প্রথম অংশে দেখানো হয় মেরিন একাডেমীতে সদ্য অংশগ্রহণকারী এক দল তরুণের নানা প্রস্তুতির মাধ্যমে ধাপে ধাপে একজন খুনে সেনাতে পরিণত হওয়ার সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক কসরত। একজন ড্রিল সার্জেন্টের কর্কশ, কদর্য ভাষার চাঁছাছোলা আক্রমণে তাদের মানসিক দৃঢ়তাটুকু ভেসে যায় প্রবল স্রোতের মুখে খড়কুটোর মত, সোজা জানিয়ে দেয় সার্জেন্ট হার্টমান তার কথা মতো গুনে গুনে দিনের প্রতিটি মুহূর্ত কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে সেনাদের (সার্জেন্ট হার্টমানের ভূমিকায় অনন্য অভিনয় করেন ব্যক্তিগত জীবনে সত্যিকারের প্রাক্তন মেরিন সেনা রোনাল্ড লি এরমে, তার বাস্তবতাপূর্ণ অভিনয় এই অমর চলচ্চিত্রের অন্যতম চালিকাশক্তি)।
সকালে ঘুম থেকে ওঠা দিয়ে শুরু করে রাতে বিছানায় যাবার আগ পর্যন্ত সম্পূর্ণটাই তার এখতিয়ারে, সেই সঙ্গে সব নবাগতকেই অদ্ভুত, অশালীন সব ডাকনামে অভিহিত করে, পিতৃপ্রদত্ত নাম ভুলে গিয়ে এই নতুন নামের সাথে তাদের অস্তিত্বকে আস্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলতে চায়।। কাকভোর থেকেই শুরু হয় সৈনিক হওয়ার কঠোর একঘেয়ে অনুশীলন, জগিং, প্যারেড, নানা ধরনের ড্রিল। পান থেকে চুনটি খসবার উপায় নেই, সামান্য ভুলচুক হলেই আছে সার্জেন্টের গালিগালাজ আর সেই সাথে শারীরিক শাস্তি, যার অন্যতম শিকার হয় একটু স্থুলদেহের অধিকারী লিওনার্দ লরেন্স, যার নতুন নাম হয় গোমের পাইল।
একপর্যায়ে ট্রেনিং-এ অংশরতদের দেওয়া হয় নতুন চকচকে এম- ফোরটিন রাইফেল, রাতে ঘুমানোর আগে রাইফেল হাতে প্রার্থনা আওড়ায় সবাই সার্জেন্টের নেতৃত্বে, যা হয়ে আছে চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় উপহাসময় সংলাপ, যার কয়েকটি লাইন—এটি আমার রাইফেল, এর মত আরো অনেক রাইফেল আছে কিন্তু এটি আমার। আমার রাইফেল আমার সেরা বন্ধু, এটা আমার জীবন। আমি ছাড়া আমার রাইফেল অকেজো, আমার রাইফেল ছাড়া আমি অকেজো।
নানা কসরতের ফাঁকে একদিন সৈন্যদের কক্ষে রুটিন চেকআপের সময় লিওনার্দের বাক্সে একটি জেলি ডোনাট খুঁজে পান সার্জেন্ট। স্থূলকায় হবার কারণে মিষ্টিজাতীয় খাদ্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল তার, এই পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সার্জেন্ট ঘোষণা দেন, এর পর থেকে কোন ভুলচুক করলেও লিওনার্দকে আর কোনরকম শাস্তি দিবেন না তিনি, কিন্তু শাস্তি হবে পুরো ব্যাটালিয়নের, কারণ তারা তাকে লিওনার্দে ব্যাপারে যথেষ্ট সাহায্য করছে না!
কথা ও কাজের প্রমাণ রাখে নিষ্ঠুর সার্জেন্ট, সরলমনা লিওনার্দের সামান্য ভুলেও একের পর এক শাস্তি পেতে থাকে অন্য সবাই, ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এক রাতের আঁধারে দলীয় প্রচেষ্টায় ঘুমন্ত লিওনার্দকে নিগৃহীত করে সবাই তোয়ালে প্যাঁচানো সাবানখন্ড দিয়ে দস্তরমত প্রহার করে, দু-একজন এই অসুস্থ ঘটনায় অংশ নিতে না চাইলেও দলীয় অন্যায়ের অংশ হিসেবে বাধ্য হয় এই নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করতে।
এর পরপরই চমক জাগানো উন্নতি আসে স্থূলকায় লিওনার্দের সৈনিক জীবনে, বিশেষ করে দূরপাল্লার শুটিংয়ে মার্কসম্যান হিসেবে স্বয়ং সার্জেন্টের বিরল প্রশংসা অর্জন করে সে। কিন্তু এই দ্রুত উন্নতির ফাঁকে ফাঁকে কয়েকজন সৈন্য লক্ষ্য করে লিওনার্দের মাঝে মানসিক বিকারগ্রস্ততার লক্ষণ, একাকী সময় কাটানোর প্রবণতা ও নিজস্ব রাইফেলের সাথে কথা বলা, যার এক ফাঁকে সে রাইফেলের মারণাস্ত্র বুলেটগুলোকে উল্লেখ করে FULL METAL JACKET বলে, যেখান থেকে চলচ্চিত্রটির নাম এসেছে।
এরপরে আসে সেই বহুল প্রতীক্ষিত দিন, সবাই স্বীকৃতি পায় মেরিন কোরের সদস্য হিসেবে, সার্জেন্ট বিদায়ী ভাষণেও তার স্বকীয়তা বজায় রেখে বলেন, তার সামনে উপস্থিত কেউই আর নবাগত আবর্জনা, দুর্গন্ধময় স্তূপ নয় বরং গর্বিত মেরিন, দক্ষ খুনি।
সেই রাতেই টহলরত প্রহরী বাথরুমে সন্দেহজনক শব্দ শুনতে পেয়ে সন্ধান নিতে গিয়ে আতঙ্কিত হয়ে লক্ষ্য করে লিওনার্দ সেখানে অপেক্ষা করছে গুলি ভরা রাইফেল নিয়ে, অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় জানায় নর্দমার ক্লেদাক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকার কোন উৎসাহ পাচ্ছে না সে, শব্দ শুনে ছুটে আসে ঘটনাস্থলে ড্রিল সার্জেন্ট, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সার্জেন্টকে গুলি করে হত্যা করে লিওনার্দ, এর পরপরই একই রাইফেল দিয়েই আত্নহত্যা করে সে, রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় গুলির নিষ্ঠুর আওয়াজে।
শেষ হয়ে যায় সিনেমাটির প্রথম অধ্যায়। এখানে দেখানো হয়েছে কি করে সাধারণ মনের মানুষদের ক্রমাগত ট্রেনিঙয়ের মাধ্যমে মগজ ধোলাই করে পরিণত করা হয় বোধ-বুদ্ধি হীন রোবটে। তাদের শেখানো হয় কেবল আদেশ পালন করতে, এবং সেই সাথে কেন আদেশ পালন করব এই চিন্তা করতেই নিরুৎসাহিত করা হয়। এভাবেই যুদ্ধের ব্যবসা করে যাওয়া ব্যবসায়ী আর রাজনীতিবিদদের ক্রীড়নকে পরিণত হয় লাখো লাখো মানুষ।
২য় পর্ব শুরু হয় ১৯৬৮ সালের জানুয়ারিতে, ভিয়েতনামে। হ্যানয়ের জনবহুল রাস্তায় সংঘাতপূর্ণ যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের আরেক কালো দিক নারী মাংসের কদর্য বাজার আর স্থানীয়দের নীতিবোধের অবক্ষয়ের দিকে প্রতীকময় ইঙ্গিত করে। প্রথম পর্বে ট্রেনিং পাওয়া মেরিন প্রাইভেট জোকারকে দেখা যায় সৈনিক-সাংবাদিকের ভূমিকায়, তথ্য সংগ্রহের মিশনে। কিন্তু এটা বোঝা যায়, তার বড়কর্তার কড়া আদেশ রয়েছে সত্য সংবাদের চেয়ে প্রোপাগান্ডা সৃষ্টিতেই, ভিয়েতনামী মুক্তিপাগল সেনাদের নামে আজেবাজে সংবাদ বহির্বিশ্বে পরিবেশন করে তাদের ভাবমূর্তিকে যথাসম্ভব কালিমালিপ্ত করার জন্য। যার এক অংশ হিসেবে মগজ ধোলাই হওয়া সৈনিকদের একজন মনের দুঃখে বলেই ফেলে- এই পোড়া ভিয়েতনামের লোকেরা এটাও বুঝে না যে আসলে আমরা তাদের স্বাধীনতা দিতে এসেছি, এত কষ্ট করেও তাদের তরফ থেকে কোন কৃতজ্ঞতা নেই!
হেলিকপ্টারে করে প্রাইভেট জোকার সহযোগী নিয়ে রওনা দেয় রণাঙ্গনের উদ্দেশ্যে, পথে উড়ন্তযান থেকে এক রক্তপিপাসু ঠাণ্ডা মাথার খুনে সৈনিক অবিরাম গুলিবর্ষণ করে মেরে ফেলতে থাকে একের পর এক আমজনতাকে, তার পৈশাচিক কর্মকাণ্ড ও উল্লাস দেখে অসুস্থ হয়ে বমি শুরু করে জোকারের সহযোগী। ক্যামেরায় দেখা যায় পড়ে থাকা লাশের সারি, যারা ছিল নিরস্ত্র বাজারফেরত সাধারণ গ্রাম্যমানুষ। এর ফাঁকেই সেই জল্লাদ সৈন্য সদর্পে ঘোষণা করে কত মানুষকে এভাবে খুন করেছে সে। সেই শিকারের পরিণতি নারী, শিশু, বৃদ্ধ- রাইফেলে আওতায় যে কেউ-ই!
গন্তব্যে পৌঁছানোর পর থমথমে সংগীতের সঙ্গে আসে গণকবরে শোয়ানো সারি সারি লাশের দৃশ্য। চুনে ঢাকা পুতিগন্ধময় পরিবেশ এড়ানোর জন্য কেউই কাছে যেয়ে সঠিক লাশের সংখ্যা গুনতে রাজি হয় না। এই সময়ে তদারকিতে উপস্থিত সামরিক কর্মকর্তা যথেষ্ট ভৎসনা করে প্রাইভেট জোকারকে তার ইউনিফর্মে শান্তির প্রতীক আটকিয়ে রাখার জন্য, তার মতে বুকে শান্তির ব্যাজ এবং হেলমেটে লেখা BORN TO KILL একসঙ্গে পরিবহণ করা মূঢ়তা, মূর্খতা।
পরবর্তীতে ট্রেনিং সময়ের আরেক চরিত্র প্রাইভেট কাউবয়ের সাথে দেখা হয় জোকারের, তার দলের সাথে থেকেই সে অর্জন করতে থাকে একের পর এক নারকীয় অভিজ্ঞতা। যুদ্ধরত সৈন্যদের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ চলতে থাকে অবিচ্ছিন্ন ভাবে, মানবিকতার নুন্যতম বোধটিও হারিয়ে যায় যখন পর্দার মার্কিন সৈন্যরা মৃত ভিয়েতনামী সৈন্যদের মরদেহ নিয়ে কদর্য ঠাট্টায় মেতে ওঠে।
সমস্ত যুদ্ধবাজ ব্যবসায়ী আর রাজনীতিবিদদের গালে সপাটে চড় কষিয়ে যেন হাসিমুখে অপ্রকৃতস্থ উত্তর দেয় জোকার তার ভিয়েতনামে আগমনের উদ্দেশ্য জানান দিয়ে- এসেছি পূর্বএশিয়ার রত্ন ভিয়েতনামের সৌন্দর্যে অবগাহন করতে, এসেছি দুই হাজার বছরের পুরনো সভ্যতার ধারক অধিবাসীদের সঙ্গে পরিচিত হতে এবং তাদের হত্যা করতে।
গোলাগুলির ফাঁকেই মাংসের কারবারে যোগ দিতে হাজির হয় এক স্থানীয় বারবণিতা, তাকে ভোগ করার জন্য পাশবিক লালসায় উম্মত্ত সৈনিকদের আচরণ ফুটিয়ে তোলে যুদ্ধের আরেক পঙ্কিল পর্ব।
কাউবয়ের নেতৃত্বে টহলরত সেনাদল অতর্কিত হামলার মুখে পড়ে এক পোড়ো বাড়ীতে অবস্থান নেওয়া স্নাইপারের লক্ষ্যভেদী গুলিতে, তার এক গুলির জবাবে হাজারো গুলি ছুড়তে থাকে হতভম্ব সেনারা, সেই সাথে চলতে থাকে মর্টারের গোলা। কিন্তু নিপুণ নিশানায় একে একে কাউবয়সহ তিন আমেরিকান সেনাকে ধরাশায়ী করতে সক্ষম হন স্নাইপার। পরবর্তী সময়ে টানটান উত্তেজনার মাঝে অনেকটা গেরিলা পদ্ধতিতে পোড়ো ভবন ঘিরে স্নাইপারের অবস্থানে পৌঁছে দুইসেনা একসাথে, তার ওপর গুলিবর্ষণ করে আহত করবার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় সবাই। স্নাইপার যে এগার- বার বছর বয়সের নেহাৎই এক বালিকা! দেশপ্রেমের আগুন জ্বেলে সে যুদ্ধক্ষেত্রে এসেছে হানাদার বাহিনীর সাথে ঝুঝতে।
খানিক আগের রক্তপিপাসু প্রতিশোধপরায়ণ সেনারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে হামলাকারীকে চাক্ষুষ দেখে, বালিকা তখনো জীবিত কিন্তু প্রবল ভাবে আহত, বাঁচার সম্ভাবনা সুদূর পরাহত কিন্তু বাঁচবে সে আরও অন্তত কয়েক ঘণ্টা, এখন কি করা যায়? জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গুরুতর সিদ্ধান্ত নেবার আবেগের দোলাচলে কেটে যায় মুহূর্তের পর মুহূর্ত। সহযোদ্ধাদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবার জন্য কেউ কেউ বলে তাকে এভাবেই ইঁদুরের জন্য ফেলে রেখে যাওয়া হোক, কিন্তু জোকার কড়া ভাবে জানায় এভাবে বালিকাটিকে রেখে যাওয়া যাবে না। কিন্তু কে গুলি চালাবে এই ফুটফুটে নিষ্পাপ মুখে কিশোরীর উপর! যেখানে মেয়েটি নিজে থেকেই অস্ফুট উচ্চারনে বলে যাচ্ছে- Shoot me ! নাটকীয়তাই মোড়া আবহে জোকারকেই করতে হয় এই অসম্ভবকে সম্ভব, এমন অমানুষিক কাজ করার সময় মুখমণ্ডলে প্রগাঢ় যন্ত্রণার ছাপা বুঝিয়ে দেয়, যুদ্ধের নারকীয়তা তার মানবিক গুণাবলীকে সম্পূর্ণরূপে নিঃশেষ করতে পারে নি, মানবচরিত্রের এই নরম দিকগুলোর মাঝেই হয়ত সুপ্ত আছে ভবিষ্যৎ জীবনের উম্মেষ।
উঠতে থাকে শেষের পর্দা, ব্যারাকে ফেরতরত সেনারা দূরের লেলিহান আগুনের অস্তিত্ব ভুলে জীবিত থাকার আনন্দে গান গাইতে থাকে এম এই সি কে ই ওয়াই, এম ও ইউ এস ই- Mickey Mouse, Mickey Mouse!
প্রাইভেট জোকারের কণ্ঠ শোনা যায় আবছাভাবে, সব সৈন্যের মুখপাত্র হয়ে বলতে থাকে সে- হয়ত আমরা নরকেই বসবাসরত কিন্তু আমরা জীবিত অখন্ডিত দেহে এবং আমরা আর ভীত নই।
১৯৮৭ সালে মুক্তি পাওয়া ১১৬ মিনিটের এই অপূর্ব আলেখ্যর মূল আকর্ষণ নিঃসন্দেহে এর তীক্ষ সংলাপ, মর্মে আঘাত আনা গানের সম্ভার আর বাস্তবসম্মত অভিনয়, যা আমাদের চেতনার মূলে আঘাত করে। নিজেদের অজান্তেই আমাদের করে তোলে যুদ্ধবিরোধী, বুঝিয়ে দেয় মানবসভ্যতার ইতিহাস মূলত যুদ্ধের ইতিহাস হলেও তা অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নয় বরং ব্যবসার খাতিরে, ক্ষমতা আর অর্থের জন্য। যুদ্ধকে যেন ঘৃণা করি আমরা সবাই- এই তার বক্তব্য আমাদের তথাকথিত সভ্য সমাজের প্রতি।
মন্তব্য
কতোদিন আগে দেখেছিলাম এই মুভিটা! আপনার লেখাটা আজ আবার মনে করিয়ে দিলো।
চমৎকার বর্ণনা অণু ভাই। গুড় নেন। (গুড়)
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
এর মাঝে গুড়, বেশী মিষ্টি হয়ে যাবে না ! আরেকবার দেখে ফেলেন সময় করে !
facebook
পুরাডা পড়লাম না, কারন মুভিটা দেহিনাই। তয় সবার আগে সর্পঘ্ন বীরের তোলা ছবি পুষ্টা! তিলোত্তমার লগে তোর ছবিগুলা দেহি।
আসিতেছে !
facebook
আপনার চলচ্চিত্রালোচনা দারুণ লাগছে! চলুক।
_________________
[খোমাখাতা]
facebook
দেখেছি এবং অবশ্যই নাড়া দিয়ে গেছে। আপনার মুভি "
"-র দিকে চোখ রাখছি। কোনটা বাদ পড়ে যায় কিনা।
ধন্যবাদ।
facebook
ভাগ্যিস যে সিনেমাগুলো নিয়ে রিভিউ লিখছেন, তার সবগুলোই আমার দেখা । নাইলে কাহিনী বলে দেয়ার জন্য আপনার খবর ছিলো
দ্য মটরসাইকেল ডায়েরীজ, প্যানস ল্যাবেরিন্থ, ফুল মেটাল জ্যাকেট সবগুলোই বেশ প্রিয়। ক্রিয়েশন আর হাইপেশিয়া নিয়ে আমি লিখব, তাই আগেই সতর্ক করে দিচ্ছি এই দুইটাতে হাত দিবেন না
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
তথাস্ত!!!
facebook
পড়েছি এতোটুকু শুধু জানায় গেলাম। এই সিনেমা বা আপনার লেখা নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই।
facebook
মর্মান্তিক একটা ছবি। Shoot Me দৃশ্যটা মনে করে আরেকবার শিউরে উঠলাম!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
facebook
ট্রেনিং শেষের দিন, টয়লেট এর দৃশ্যটা মাথায় গেঁথে যায়। সেই কবে দেখা ছবি। এই দৃশ্যটা মনে আছে।
ওয়ার মুভিগুলো নিয়ে আপনার রিভিউ ভাল লাগছে। পুরনো ছবিগুলো নেড়েচেড়ে দেখবো আবার।
ব্ল্যাক হ্ক ডাউন নিয়ে লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ। অন্য ধরনের সিনেমা নিয়েও লিখছি, কেবল যুদ্ধ নয়,শান্তিও আছে !
facebook
এই লোকটার যতগুলো ছবি দেখেছি সবগুলোই আমাকে মুগ্ধ করেছে....আপাতত কি আপনার বিশ্রাম চলছে!! ঘোরাঘুরির খবর পাই না যে!!!!!
মাস্টারপীস বানানোর ওস্তাদ ছিলেন কুবরিক।
বিশ্রাম আর কি, সামনে সপ্তাহ থেকে হেঁটে নয় উড়েই বেড়াব! লিখা আসিতেছে--
facebook
বর্ণন যথারীতিই অতি চমৎকার। নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা।
ভাল লেগেছে।
facebook
facebook
facebook
চরম একটা চলচ্চিত্র
পুরাই গরম!
facebook
তারেক ভাই, টম হ্যাঙ্কস এর 'ফরেস্ট গাম্প' এর একটি চলচ্চিত্রালোচনা লেখার অনুরোধ করছি। আমি চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ছবিটা এতটাই বহুমাত্রিক মনে হয়েছে আমার কাছে যে, লেখার পর সন্তুষ্ট হইনি।
আপনার পর্যবেক্ষন গুন অসাধারণ। আমজনতা উপকার পাবে আশা করি।
শুনে ভাল লাগল, কিন্তু ফরেস্ট গাম্প খুব বেশী বহুমাত্রিক! দেখি। আমাকে অণু বললেই হবে। ভালো থাকুন সবসময়।
facebook
আপনার লেখা সেই শুরু থেকে অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়ে যাচ্ছি। কারণ আপনার কথাগুলো সবসময় আমার মনের কথা বলে মনে হয়। যেমন..."সারা পৃথিবীটাই আমার দেশ"।
দুঃখ যে, পৃথিবী নামক অসম্ভব সুন্দর এই গ্রহে আমাদের শুধুমাত্র একবারই আসার সুযোগ হয়। কিন্তু বেশীরভাগ মানুষ সত্যিকারের প্রানরস্টি হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারেনা,অথবা করার সুযোগ পায়না।
আপনার সেই প্রচেষ্টাকে শ্রদ্ধা জানাই।
অনেক প্রশ্ন জমে আছে আপনাকে জিজ্ঞাসা করার জন্যে। সাহস করে করবো একসময় অনু'দা।
আমি আপনার ছোট ভাই। এরপর থেকে 'তুমি' সম্বোধনটি আপন মনে হবে বেশী।
ভালো থাকবেন।
একবার আসাও নেহাৎ মন্দ না, যদি না আসতাম ! জগতের কোন ক্ষতি সাধিত হত না, ক্ষতি ছিল আমার !
সম্বোধনে কি যায় আসে? আপনিই থাক, আমার এটাই ভাল লাগে।।
facebook
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
facebook
উফ! মিষ্টি! মিষ্টি!
****************************************
টক ঝাল আছে তো!, নাকি একটু তেঁতো দিয়েই দিব!
facebook
নতুন মন্তব্য করুন