সোনালী আলোর শৈশবে খবরের কাগজের প্রিয় পাতা ছিল দাদাভাই পরিচালিত কচিকাঁচার আসর। সেখানেই এক সময় ধারাবাহিক ভাবে ছাপা হত ভাস্কর শিরোমণি মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর ছোটবেলার জীবনকাহিনী ফ্লোরেন্সের সকাল শিরোনামে। সেই প্রথম এই জাদুময় শহরটির নামের সাথে পরিচয়, কেমন যেন মন অবশ করা, ভাল লাগা নামের এক শহর, ফ্লোরেন্স! শুনলেই নাকে এসে লাগে এক অজানা ফুলের সুবাস, বুকের ভেতরটা তিরতির কেপে ওঠে অজানা আবেগে, বুনো পাখির স্বর ঘাই মারে হৃদয়ের গভীরে।
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, ম্যাকিয়াভেলির শহর ইতালির ফ্লোরেন্স, চিত্রকলা আর মানুষের নান্দনিকতার প্রমাণ হিসেবে বিশালাকৃতির ক্যাথেড্রাল এবং বিশ্বখ্যাত জাদুঘর আর আর্ট গ্যালারীগুলো এখানে অবস্থিত। সেই সাথে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্য মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর ডেভিড!
ফ্লোরেন্স দর্শনের সৌভাগ্য হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর, কুমারী সূর্যের লাল আভা ছড়ানো ভোরের আকাশকে সাথী করে ফ্লোরেন্স পৌছালাম ট্রেনে করে, সাথী বোলগনা বিশ্ব-বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মণি ভাই।
শীতের দেরী করে ওঠা সূর্যদেব খানিকটা দেরী করে হলেও ক্রমাগত আলোর ব্রহ্মাস্ত্র হেকে দখল করে নিয়েছে আকাশের সিংহভাগ, কিন্তু বাতাসের ডিসেম্বরের শীতের আমেজটা থেকেই গেছে। স্টেশন থেকে পদব্রজেই রওনা দিলাম শহর কেন্দ্রের দিকে, সর্বক্ষণের সঙ্গী সেই শহরের মানচিত্র। এই প্রত্যুষেও পর্যটকের দল ভিড় করে এগিয়ে যাচ্ছে নানা গন্তব্যের দিকে, সেই দলে ক্যামেরায় ঝপাঝপ ছবি তুলতে থাকা চীনা আর জাপানীদের সংখ্যায় বেশী।
ধারণা করা হয়, স্বয়ং জুলিয়াস সীজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ৫৯ সালে আরনো নদীর তীরে এই অপরূপা নগরীর গোড়া পত্তন করেন। শহরের প্রায় সব রাস্তার মোড়েই চোখে পড়া অতি প্রাচীন সব স্থাপত্য সেই সুপ্রাচীন গৌরবময় অতীতের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে প্রতি ক্ষণে। বেশ খানিকক্ষণ অলি-গলি মাড়িয়ে বোঝা গেল আমরা শহরকেন্দ্রে এসে পৌঁছে গেছি। দৃশ্যপটে আবির্ভাব ঘটেছে ফ্লোরেন্সের প্রতীক বলে খ্যাত নয়নাভিরাম ফ্লোরেন্স ক্যাথেড্রালের।
চোখের সামনের আকাশকে পর্যন্ত আড়াল করে দেওয়া বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম এই ক্যাথেড্রালটির মূল নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় ১৫০ বছরে। তার বিশালাকার তোরণ, সুউচ্চ খিলান সেই সাথে দানবাকৃতির গম্বুজ নিজের অজান্তেই শ্রদ্ধায় মাথা নুইয়ে দেয় রেনেসাঁর সেই মহান প্রকৌশলী আর কারিগরদের প্রতি।
প্রতিটি দরজায়ই কাঠ আর ধাতুর সমন্বয়ে অতি নিখুঁতভাবে বাইবেলে বর্ণিত নানা ঘটনার চিত্ররূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বেশী সকাল বিঁধায় সিংহদ্বার বন্ধ, খোলা হবে দুপুর দেড়টায় তাই রওনা হলাম গ্যালারী দেল একাদেমিয়ার উদ্দেশ্যে।
এ-গলি সে-গলি ঘুরে, বার কয়েক পথ ভুলে অবশেষে বিশ্বখ্যাত এই জাদুঘরের সামনে টিকিতের জন্য প্রতীক্ষারত লম্বা লাইনের দেখা পেলাম, দিনের প্রথম ভাগেও দেখি শিল্পপ্রেমীদের উৎসাহের কমতি নেই। ঢোকার পরপরই একটা লম্বাকৃতি বারান্দাজাতীয় ঘরের দুই পাশেই সাজিয়ে রাখা মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর অসমাপ্ত বেশ কিছু ভাস্কর্য খুঁটিয়ে দেখার চিন্তা করছি, এই সময়ই দৃষ্টি পড়ল সামনের দিকে, চোখ কপালে তুলে বিস্ময়ে বোবা হয়ে থাকলাম কয়েক মুহূর্ত, সংবিৎ ফেরার পর গুটি গুটি এগোলাম সেই গ্যালারী কক্ষের শেষ প্রান্তে। উঁচু এক বেদীর ওপর সেখানে মাথা উচু করে কাঁধের উপর দিয়ে নির্নিমেষে চেয়ে আছে ভূলোকের সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্য মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর ডেভিড!
এ এক অপরূপ বিস্ময়ের আঁধার, মানুষের সৃষ্টিশীলতার শেষ কথা যেন, চোখের সামনে দেখেও বিশ্বাস হতে চায় না কোনো মানুষ ৫০০ বছর আগে কেবলমাত্র ছেনি-হাতুড়ি সম্বল করে অখন্ডিত একটিমাত্র বিশাল মার্বেল পাথরের টুকরো থেকে এত জীবন্ত, এত সতেজ, এত নিখুঁত মানবমূর্তি নির্মাণ করতে পারে।
পাঁচ মিটারের বেশী উচ্চতা বিশিষ্ট কিশোর ডেভিড প্রস্ততি নিচ্ছে বিশালদেহী শত্রু গোলিয়াথ বধের, তার ঠিক আগমুহূর্তের কল্পিত চিত্র থেকে এই সুমহান ভাস্কর্য গড়েছেন সর্বকালের সেরা ভাস্কর। মনে হল বেদী থেকে যেকোন সময় নেমে ডেভিড হাঁটা শুরু করবে। একটু লক্ষ্য করলেই তার হাত, পা, কাঁধ- সর্বত্রই ছড়ানো রক্ত পরিবহণকারী শিরা-উপশিরা। পরিষ্কার বোঝা যায় এক বাস্তব মানবদেহের মত। হয়তো আরেকটু ভাল মত খেয়াল করলে দেখা যেত সেই শিরা-উপশিরা দিয়ে রক্ত চলাচলও করছে!
আরও অনেক কিছুই ছিল গ্যালারী দেল একাদেমিয়ায়, নানা ভাস্কর্য, বিখ্যাত রেনেসাঁ শিল্পী জ্যোত্তোর কাজের বিশাল সংগ্রহ, কিন্তু আমাদের মনে প্রানে ডেভিড এমন এক চিরস্থায়ী গভীর মুগ্ধতার সম্মোহনী প্রভাব ফেলেছে যে আর অন্য কিছুতে কোন ভাবেই মনোযোগ বসাতে পারলাম না। জয়তু ডেভিড, জয়তু মাইকেল অ্যাঞ্জেলো!
পরবর্তী গন্তব্য বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত আর্ট গ্যালারী ফ্লোরেন্সের উফিজি। অবশ্যগন্তব্য এই শিল্পতীর্থে ৫০টির অধিক বিশালাকার কক্ষে অন্তত দেড় হাজার শিল্পকর্ম আছে, যার যে কোন একটি পেলেই কোন দেশ না জাদুঘর বর্তে যাবে। মূলত ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত মেদিচ্চি পরিবারের ব্যক্তিগত সংগ্রহই এখানে স্থান পেয়েছে, যা ১৭৪৩ সালে মেদিচ্চিদের শেষ বংশধর আন্না মারিয়া ল্যুদভিকো এই শর্তে দান করেন যে এই বিশ্ব সম্পদ গুলো কখনোই তার ভালবাসার শহরের বাইরে যাবে না!
খানিকক্ষণ শিল্পসুধা উপভোগের পর সোজা ১৯ নম্বর কক্ষে চললাম, যেখানে বিশ্বের অন্যতম সেরা রেনেসাঁ চিত্রকর বতিচেল্লির উল্লেখযোগ্য ১৫টি কাজ স্থান পেয়েছে, সে এক অবাক করা অসামান্য গুপ্তধনের ভুবন। দরজা দিয়ে প্রথমেই চোখে পড়ল বতিচেল্লির অমর সৃষ্টি বিশালাকৃতির প্রিমাভেরা (বসন্ত),
দেয়ালজোড়া এই চিত্রকর্মে আছে বেশ কজন পৌরাণিক দেব-দেবী, আর এদের মাঝেই কোলের আঁচড় থেকে বসন্তের আগমনী দূত ফুল ছড়াতে ছড়াতে এগিয়ে যাচ্ছে বসন্তের দেবী।
এর পাশের দেয়ালে সম্ভবত চিত্রকরের সবচেয়ে বিখ্যাত সৃষ্টি বার্থ অফ ভেনাস! কি যে জাদু এই অপরূপ ক্যানভাসে, সমুদ্রে ভাসমান ঝিনুকের উপর দণ্ডায়মান ভেনাস-সুন্দরী দুই হাতে লজ্জা ঢাকতে ব্যস্ত, এলোচুল বাতাসে উড়ছে আলগোছে, মাথা মৃদু ডানদিকে কাত হয়ে আছে, নেত্রে অপার বিষণ্ণ দৃষ্টি। বাতাসের দেবতা জোরালো ফু দিয়ে ঝিনুকটিকে ডাঙ্গায় নিচে যাবার চেষ্টারত, আর অন্য দেবী এগিয়ে আসছেন এক জমকালো বস্ত্রখণ্ড দিয়ে তাকে আবৃত করতে।
বিশ্বের লাখো লেখক আজ পর্যন্ত ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছেন বতিচেল্লির বার্থ অফ ভেনাসের সৌন্দর্য লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরতে, কিন্তু তাদের কেউই যে বিন্দুমাত্র সফল হয় নি তা ভেনাসের চোখে চোখ পড়া মাত্রই বুঝে গেলাম। এই অপরূপ বোবা সম্মোহনী বিষণ্ণ দৃষ্টি কি কলমের মাধ্যমে ফোটানো সম্ভবপর! মাথাটা আলতো কাত করে, চোখে চোখ রেখে ভেনাস যেন শুধাচ্ছে- এই বোকা ছেলে, কোথায় ছিলে এতদিন?
সেই কবে স্কুল জীবনে কাজী আনোয়ার হোসেনের রূপান্তরিত অসাধারণ ছোট গল্প জালিয়াত-এ প্রথম জেনে ছিলাম এই শাশ্বত সুন্দরের কথা, আজ নয়ন যেন সার্থক হল। সেই সাথে ছিল বতিচেল্লির মেডাল হাতে যুবকের, পৌরাণিক জীব অশ্বাকৃতী মানব সেন্টরের সুবিখ্যাত সব চিত্রকর্ম।
একরকম জোর করেই পা বাড়ালাম সামনের দিকে, পরের ঘরের এই দেয়ালে ঝোলানো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির তিন-তিনটি সুবিখ্যাত সৃষ্টি!
অ্যাডোরেশন অফ ম্যাজাই, অ্যানুসিয়েশন এবং যীশুর ব্যাপ্টিজম (পেইন্টিংটি আসলে লিওনার্দোর গুরু ভেরোক্কিওর আঁকা, শুধু বাঁ পাশের একটা দেবদূত তৎকালীন শিক্ষানবীশ লিওনার্দোর আঁকা, কিন্তু গোটা চিত্রকর্মটি অবলোকন করলে ক্যানভাস জুড়ে থাকা যীশু বাঁ অন্যরা নন, কেবল হাঁটু গেড়ে বসে থাকা দেবদূতটির দিকেই চোখ চলে যায় তার ভিন্ন আঁকার ভঙ্গি ও অপার্থিব সৌন্দর্যের কারণে।
কিংবদন্তী বলে, এই দেবদূত দেখার পরে গুরু ভেরোক্কিও ছবি আঁকা ছেড়ে দিয়েছিলেন)
অ্যাডোরেশন অফ ম্যাজাই-এর পরাবাস্তব স্বপ্ন ঘেরা ক্যানভাসে আবছা ভাবে নজরে পড়ে স্বয়ং তরুণ শিল্পী লিওনার্দোর আদল।
দীর্ঘ কাঁচের বারান্দাগুলোতেও ভাস্কর্যের সারি, মাঝে কাঁচের জানালা দিয়ে এক চিলতে ফ্লোরেন্স আর ঝকঝকে আরনো নদী চোখে পড়ে। নদীর বুকে নানা বাহারি সেতু, মেঘের চাদরের ফাক গলে মায়াবী সোনা ঝরা রোদে ফ্লোরেন্সকে মনে হয় এক টুকরো স্বর্গ।
এরপরের কক্ষে ঢুকতেই চক্ষুচড়কগাছ, দেয়ালে শোভা পাচ্ছে মাইকে অ্যাঞ্জেলোর দ্য হলি ফ্যামিলি! বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাস্কর যে সে যুগের অন্যতম সেরা স্থপতি, কবি, যন্ত্রবিদের সাথে সাথে সর্বকালের অন্যতম সেরা চিত্রকরও ছিলেন তার অন্যতম প্রমাণ দ্য হলি ফ্যামিলি। পেইন্টিংটি এত ঝলমলে উজ্জল রঙে আঁকা যে বলা হয় এটা এখনো ততটাই উজ্জল যতটা ছিল আঁকার সময়, ১৫০৬ সালে!
পরের গ্যালারীতে রাফায়েলের জয়জয়কার, বিশেষ করে তারুণ্যে আঁকার তার আত্নপ্রতিকৃতিটি মনের মাঝে গভীর রেখাপাত করে।
এরপরে তিনতোরেত্তো, ফ্রানসেসকো, পোনতোর্মো, জ্যোত্তো, দোনাটেল্লো, ফিলিপ্পো লিপ্পি, ফ্লোরেন্টিনো, দেল সার্তো প্রমুখ জগৎ কাঁপানো শিল্পীর অমূল্য সৃষ্টির অপরূপ সমাহার। শিল্পকলার এমন অমূল্য সম্ভার এক প্যারিসের ল্যুভ ছাড়া অন্য কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়ছে না।
এক কক্ষে দেখা হল টিটিয়ানের ১১টি অমর সৃষ্টির সাথে, যাদের মধ্যমণি হয়ে আছে উরবিনোর ভেনাস, টিটিয়ানের সুবিখ্যাত এই ভেনাস কেন জানি শুধু এদুয়ার মানের অলিম্পিয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়।
যাবার পথে চোখ বুলিয়ে গেলাম পিটার পল রুবেনস আর রেমব্র্যান্টের আলো-ছায়া নিয়ে কাজ করে অনন্যসাধারণ চিত্রকর্মগুলোতে।
নীচতলার বাহির হবার দরজার ঠিক আগমুহূর্তে দেখা গেল সুরাপাত্র হাতে বাক্কাসের পেইন্টিং, সামনে অবিশ্বাস্য রকমের বাস্তব ফলের ঝুড়ি! এমন ফলের ঝুড়ি তো আঁকতে পারতেন মাত্র একজন, এমন সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সামনে এগোচ্ছি , দেখি তাই-ই! সেই কারাভাজ্জিওর আঁকা পানরত বাক্কাস যেন মুচকি হেসে আহ্বান করছে মদিরার টানে জীবন জোয়ারে ভেসে যেতে।
অবশেষে বিদায় বলার পালা উফিজিকে। বিশাল জাদুঘরের ভিতরেই কয়েক মাইল ঊর্ধ্বশ্বাসে হাঁটায় খিদে পেয়েছে বেশ, কাছেই এক রেস্তোরাঁয় ফ্লোরান্টিনো পাস্তা দিয়ে পেটপূজা সারা হল খাঁটি জলপাই তেল দিয়ে তারিয়ে তারিয়ে। অদূরেই ভেক্কিও প্রাসাদ, সামনে ডেভিডের বহুল পরিচিত নকল ভাস্কর্য (আসল ডেভিডের সামনে ছবি তোলা নিষেধ বিঁধায় নকলটার সামনেই ছবি তুলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয়), পাশে সমুদ্র দেবতা নেপচুনের ঝরনা, সেই সাথে প্রাসাদের বারান্দায় পার্সিউসসহ নানা জগদ্বিখ্যাত ভাস্কর্য ( আসল না নকল জানা হয় নি)
আরও অনেক বিখ্যাত জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারীর সমাহার ফ্লোরেন্সে, কিন্তু দুই বন্ধু মিলে ঠিক করলাম আর নয় ! এক দিনে এত বেশী চমৎকার স্মৃতি মাথায় সইবে না, আবার আসা যাবে দিনক্ষণ বুঝে! তাই ট্রেনস্টেশনের পথে আবার, মনে মনে ভাবছি, আবার কেন? বারবার আসব! সুযোগ পেলেই ছুটে আসব অপরূপা ফ্লোরেন্সে, এমন জাদুমাখা শিল্পসমৃদ্ধ শহর আর দুটি আছে নাকি!
( বন্ধুরা, আবার চলেছি ফ্লোরেন্সের পথে, সেই তিলোত্তমাকে দিয়ে আসা ফেরার প্রতিশ্রুতি রক্ষায়! আপনার যখন এই লেখা পড়ছেন, আশাকরি ততক্ষণে পৌঁছে গেছি আবার আরনো নদীর তীরের সেই মায়ানগরে। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি গেলবারের অনেক না দেখা স্থান দর্শনের, যেমন মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর সৃষ্টি মেদিচ্চি চ্যাপেল, দোনাটেল্লোর ডেভিড ও অনেক অনেক কিছুর, সেই সাথে নিয়ে যাব আপনাদের পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রামে, যার নাম ভিঞ্চি।
এই লেখাটির কিছু অংশ ৩টি ছবিসহ এক দৈনিকের ক্রোড়প্রত্রে ছাপা হয়েছিল বেশ আগে, কিন্তু অসম্পূর্ণ।
ভালো থাকুন সবাই, ফিরে এসে কথা হবে, এই লেখায় ব্যবহৃত কিছু শিল্পকর্মের আলোকচিত্র নেট থেকে সংগৃহীত, যেহেতু সেগুলোর ছবি কোনভাবেই তোলার উপায় ছিল না, বাকীগুলো অধমেরই তোলা)
মন্তব্য
ছবিও দেখবনা কোন মন্তব্য ও করবোনা
খালি হিংসা...
মাহমুদ
facebook
দিক্কার
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
(বাংলায়)
facebook
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
জিহ্বা কামড়ানোর কি হল !
facebook
ভাগ্যিস আপনি আর গান্ধী সম সাময়িক না!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
কেন রে ভাই !
facebook
টেস্ট
facebook
বর্ণন আসাধারন। আর ছবির কথা বলাই বাহুল্য।
ধন্যবাদ।
facebook
আপনাকে হিংসা করতে করতে ক্লান্ত। যাই একটু ঘুমাই গিয়ে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
হ, জীবনের আছে আর কি, খেতা আর বালিশ!
facebook
এইসব নেংটুপুংটু ছবিওয়ালা পোস্ট আমি পড়ি না!!
_________________
[খোমাখাতা]
facebook
এখন থেকে বাংলাদেশী টাকায় ভ্রমনের খরচ টুকু জানাবেন । খরচ জানা থাকলে স্বপ্ন দেখতে সুবিধা হয়
আসলে একেকবার ভ্রমণ একেক ভাবে হয়, আর বেশী টাকার কথা বললে দেখেছি লেখাটা বৈষয়িক হয়ে যায় ! বিশেষ খরচ হলে তো আলাদা ভাবে লিখেই দিই, চিন্তা করছি, লেখার শেষে আলাদা ভাবে এমন তথ্য দিব নাকি।
facebook
আপনার নাম হওয়া উচিত "তারেক অমানুষ অণু"!
ইতালিয় শিল্পীদের সমস্যা কী আমি বুঝি না! এ পর্যন্ত নেংটুপুট যত ছবি/ভাস্কর্য দেখেছি কোনটাতেই দেহের মাপের সাথে নলেজের মাপের অনুপাত ঠিকঠাক নাই! এত কম বিবেক-বুদ্ধি নিয়া ক্যামনে কী!
দাউদ নবীর নেংটুপুটু ভাস্কর্য দেখে কেউ না আবার আপনার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে বসে।
এতো লম্বা নাম চইলত ন। 'তারেক অমানু' হয় না? (খুউপ খিয়াল কৈরা, একটা মাত্র নু। )
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
হৈ, নাম নিয়া টানাটানি করলে
facebook
হা হা, ওইটাই তো জাদু!
ভেনাসের এক হাতের চেয়ে অন্য হাত লম্বা, কিন্তু এটা কি চোখে পড়ে!
ডেভিডও অ্যাঞ্জেলো অনেক বড় অনুপাতে তৈরি করেছিলেন।
facebook
তারেক অণু, তুমি কচুপোড়া খাও !!
কই পাব !
facebook
ঢাকায় এখন ঝকঝকে রোদ, এক মগ মশলা চা নিয়ে বসে ফ্লোরেন্সের ছবি আর বর্ণনা পড়লাম। খুব ভালো।
কিন্তু আপনার কাছে প্রার্থনা আছে। আপনি যেহেতু ঘুরেছেন অনেক, আর দেখার গভীরতাও বেশি, আপনি আরো ডিটেইল সহ বর্ণনা দিন। ছবি সহ এটা একটানের বর্ণনা ভালো লেগেছে, কিন্তু আরো ডিটেইল সহ পড়তে চাই।
যেমন, ক্যাফেতে বসে পাস্তা খাবার সময় কি কি দেখা গেল, আশে পাশের মানুষ কেমন, কি পরে বা পড়ে, গলার স্বর কেমন, ওই দেশের বন্ধু বান্ধব দের চিন্তা ভাবনা কেমন... এইসব।
আমার খুব মানুষ সম্পর্কে কৌতুহল তো, আপনি বললে ছবি সহ কল্পনা করতে পেতাম।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এক মগ মশলা চা-- আহা এই বেলা পেলে প্রার্থনা মঞ্জুর হয়েই যেত !!
আসলে খবরের কাগজের জন্য লিখতাম তো মাঝে মাঝে, সেই ৫০০- ৭০০ শব্দের ভূতটা এখনো যায় নি, চেষ্টা করব সামনের লেখাগুলোয়।
facebook
আহা! দীর্ঘশ্বাস!
facebook
ফ্লোরেন্সে চলে গেছিলাম ভাই আপনার সাথে, লেখা শেষ হোল আর ধাপ করে নিজের জায়গায় এসে পড়লাম।
ফিরে যেয়েন না, এখানেই থাকেন কিছু দিন !
facebook
কি কমেন্ট দেবো ??? ছবি নিয়ে নাকি লেখা নিয়ে নাকি অনু ভাইকে নিয়ে ...
আরে দেন একটা নিয়ে, না হয় সবগুলো নিয়ে, আমরা আমরাই তো !
facebook
হিংসা প্রকাশের ভাষাও হারিয়ে ফেললুম... বেশি বেশি সুন্দর হৈছে।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
facebook
আপনি ডেভিডের ছবি তুলতে পেরেছেন। লাকি আপনি! আমার ভাগ্য নেহায়েতই মন্দ ছিল সেদিন, ছবি তুলতে দেয়নি। অথচ এই ডেভিডকে দেখার জন্যই ফ্লোরেন্স গিয়েছিলাম। একটা টিলার মতন উঁচু জায়গা থেকে ডুমো ক্যাথেড্রালসহ পুরো ফ্লোরেন্সের ছবি পাওয়া যায়। ওদিকে যাননি? যাহোক, ভ্রমণ জারি থাকুক। আমরাও ভ্রমণ করি আপনার সাথে। শুভকামনা রইল। সুস্থ থাকুন।
না দাদা, আসলে ডেভিডের ছবি ব্যাটারা তুলতে দেয় না ! দেখি চিকনে কাল-পরশু তুলতে পারি নাকি!
এরপরে ডুমোর ছবিগুলো দিতে হবে।
facebook
দাদা, ফ্লরেন্সের প্লাজা ডেলা সিগ্নরিয়ার (Piazza della Signoria) Loggia dei Lanzi তে যে ভাস্কর্জ গুলো আছে যেমন Kidnapping of the Sabines, Kidnapping of Polyxena, Hercules and Nero ছবিসহ মিথোলজি লিখে দিলে আরো দারুণ হতো।
ভাল বলেছেন, কালকেই ঐ ভাস্কর্যগুলোর আলাদা আলাদা ছবি তুলে রাখব।
facebook
'মায়ানগরের' গল্প খুব ভাল লেগেছে। খু-উ-ব।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
মায়ানগর থেকে শুভেচ্ছা,
facebook
রুদ্ধশ্বাস!
facebook
নীরবে তারাবাজি করে যাই শুধু
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
সরবেই হোক না , দাদা
facebook
জটিল।
সবসময় তো ফাতরামি কমেন্ট করি এইবার আপনাকে একটা সিরিয়াস বুদ্ধি দেই। আপনি অনেকটা সুনীলের "ছবির দেশে কবিতার দেশে" টাইপের একটা ভ্রমণোপন্যাস লিখা শুরু করেন। আরও অনেক বিশাল ক্যানভাসে। কত জায়গা, কত অদ্ভুত সব দেখার বস্তু। তবে সবকিছুকে ছাড়িয়ে প্রতিটা জায়গার আলাদা ফ্লেভার, বিশেষ করে সেখানের মানুষগুলোকে নিয়ে এবং তাদের সাথে আপনার মিথস্ক্রিয়া নিয়ে গল্প শুনতে চাই। সেই যে কোন দেশের কোন বালিকা ঝপাং করে আপনার হাত ধরে ফেলল, কোথায় গিয়ে কি বিপদে পড়লেন, সম্পূর্ণ অজানা অচেনা মানুষগুলোকে থেকে কিভাবে অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা পেলেন সেইসব নিয়ে। আমি নিজে লিখতে বসে সবচেয়ে বেশী যেই বস্তুর অভাব বোধ করি, সেটা হচ্ছে অভিজ্ঞতা। লিখতে বসলে খালি মনে হয় নিজের জীবনের মতো লেখাও চার দেয়ালের ভেতর আটকে যাচ্ছে। আপনার মতো বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থাকলে, আমি সব ছেড়ে ছুড়ে দিন রাত লেখা লেখিই করতাম। সত্যি কাহিনী লিখতাম, সেগুলাতে কল্পনার রং দিতাম, গদ্য, পদ্য, উপন্যাস, রহস্য কাহিনী, সাইন্স ফিকশন, প্রবন্ধ কি না লেখা যায় আপনার মতো এরকম বিভিন্ন জায়গার অভিজ্ঞতা থাকলে।
একমতের উপ্রে সহমত।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
অনেক ধন্যবাদ ভাই। চেষ্টা করব, মহাদেশ ভিত্তিক এমন লেখার ইচ্ছা কাজ করে সবসময়।
হায়রে, কবে পারব সব কিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু ঘোরাঘুরি আর লেখালেখি করতে!
facebook
ইক্কারে হাচা।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
মাত্র এক মাস আগেই ফ্লোরেন্স আর ভেনিস গিয়েছিলাম। আমার ফ্লোরেন্সকেই বেশি ভালো লেগেছিলো।
ডেভিডের ছবিগুলো কিভাবে তুললেন? আমাকেতো ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতে বারন করেছিলো। একই কথা উফিজির বেলায়ও প্রযেয্য- ওখানেও ক্যামেরা নিতে দেয়নি।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
ডেভিডের গুলো নেট থেকে পাওয়া, ক্যামেরা নিতে দিয়েছিল কিন্তু কড়া পাহারা। দেখি আজ কই করতে পারি।
facebook
(দীর্ঘ্যশ্বাসের ইমো)
facebook
ইমো দেওয়া গুলো আপনার কাছে থেকে শিখতে হবে।
facebook
আপনার লেখা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি । লেখা এবং ছবি দুটোই অসাধারন হয় । আলসেমি করে কখনো বলা হয়না । নিজের সীমাবদ্ধতা জানি বলেই আজকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেলাম , এভাবে বিশ্বব্যাপী আপনার সাথে সাথে বেড়াতে নিয়ে যাবার জন্য । ভাল থাকবেন । অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সবসময়।
facebook
যথারীতি অসাধারন পোস্ট...আপনি যে কত মানুষের হিংসাসহ ভালবাসা পাইতেছেন বলার নাই...শুধু নিজে ভ্রমন না করে আমাদের নিয়া করতেছেন...থাঙ্কু।।আগে উনারা দেব দেবিদের কাপড় পরাইতেন না কেন বুঝি না...!!!
কাপড়ের প্রয়োজন ছিল না, উনারা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে থাকতেন কিনা !!
facebook
অনু, আপনাকে হিংসে করতে ইচ্ছে হয়............
আপনার কাছে ল্যুভরের বর্ণনা শুনতে চেয়েছিলাম। আপনি জানিয়েছিলেন ওটা লিখতে গেলে তিনটি পোস্ট লিখতে হবে। তবুও লিখুন ভাই। আপনার কাছে এই একটা অনুরোধ রইল। আশা করি রাখবেন।
বর্ণনা আর ছবিগুলো অসাধারণ।
দীপাবলি।
লিখব ! সব জাদুঘর নিয়েই লিখব আস্তে আস্তে, কিন্তু আগেই বলছি ল্যুভ নিয়ে লিখতে সময় লাগবে, অনেক ব্যপক কাণ্ড সেটা ! শুভেচ্ছা রয়ল--
facebook
চমৎকার ... জ্বালাময়ি হিংসা... আর উষ্ণ ভালোবাসা...
ধন্যবাদ!
facebook
আপনার লেখা পরে আনেক ভাল লাগল। হিংসা হচেছ বলব না, কিন্তু আনুপ্রেরনা পাচিছ নিজের ভেতর আবার বেরিয়ে পরার। কৃতজ্ঞতা জানাচ্চি আপনাকে।
ধন্যবাদ। বেরিয়ে পড়ুন! আমাদের জানান সেই বেরিয়ে পড়া নিয়ে---
facebook
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
নতুন মন্তব্য করুন