কিউবান কুমির, বিলুপ্তির গ্রাস থেকে ফিরে আসা এক প্রজাতি

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: শনি, ১৭/১২/২০১১ - ৮:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

302590_10150839196610497_608590496_21152161_1961260709_n

পৃথিবী নামের গ্রহটাতে সরীসৃপদের রাজত্ব কোটি কোটি বছর ধরে, এখনো অনেক ভূখণ্ডে কেবল তাদেরই বাস। তাদের মধ্যে আবার কুমিরদের প্রতাপ একটু বেশী ধরনের বেশী , এদের মধ্যে আবার কিউবান কুমির দখল করে আছে বিশেষ একটি স্থান, কারণ-

IMG_2603

এই প্রজাতির কুমির সবচেয়ে বেশী সময় ডাঙ্গায় অতিবাহিত করে, প্রাপ্ত বয়স্ক কুমিরের শরীর উজ্জলতর বর্ণ ধারণ করে, এদের পা দেহের তুলনায় লম্বা, গায়ের আঁশ খসখসে, এরা প্রয়োজনে অনেক উঁচুতে লাফাতে পারে, দলবদ্ধ ভাবে শিকার করতে পারে যা অন্য কোন কুমিরের ক্ষেত্রে শোনা যায় নি এবং সম্ভবত এরা সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রজাতির কুমির!

IMG_2612

ছোট আকৃতির এই কুমিরটি ( পূর্ণবয়স্কদের গড় দৈর্ঘ্য ২,৪ মিটার) এককালে ক্যারিবিয় নানা দ্বীপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করলেও বর্তমানে এর দেখা মেলে কেবলমাত্র কিউবার যাপাতার ম্যানগ্রোভ বনে এবং আইল্যান্ড অফ ইয়ুথ দ্বীপে। সেই হিসেবে এটি অতিবিরল এক সরীসৃপ, বর্তমানে এই দুই জায়গায় বুনো পরিবেশে মাত্র ৩০০০ থেকে ৬০০০টি টিকে আছে, কিন্তু কয়েক দশক আগে নীল গ্রহ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্তির মুখে পড়ে কোটি কোটি বছর টিকে থাকা প্রাণীটি। মূল কারণ, বরাবরের মতই বাসস্থান ধ্বংস, মানুষের শিকার।

IMG_2645

কয়েক দশক আগে ব্যাপারটি নজরে আসে কিউবান বিপ্লবের অন্যতম স্থপতি বর্তমান রাষ্ট্রপতি রাউল ক্যাস্ত্রোর, যাপাতা ম্যানগ্রোভ বনের কাছেই তার উদ্যোগে কিউবান সরকার স্থাপন করে কিউবান কুমির প্রজনন কেন্দ্র,

IMG_2584

বিলুপ্তির ব্ল্যাক হোলের করাল গ্রাস থেকে ফিরে আসে অসাধারণ এই প্রাণীটি, চলুন ঘুরে আসা যাক ল্য সালিনাসের সেই কুমির প্রজনন কেন্দ্র থেকে, শুনে আসা যাক তাদের টিকে থাকার কাহিনী।

IMG_2585

ফার্মে ঢুকতেই প্রথমে টিকিট কাটতে হল অফিস থেকে, সেই সাথে সঙ্গী হিসেবে দেওয়া হল একজন গাইডকে, যিনি কুমির এবং এই প্রজনন কেন্দ্রের কর্ম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। প্রথমেই এক জলজ উদ্ভিদেসমৃদ্ধ বিশাল পুকুর, উজ্জল ফুল থেকে থেকে সৌন্দর্যছটা দিয়ে যাচ্ছে অবিরাম, কুমিরদের খাদ্যের ভাণ্ডার, সেখানে মাছের স্তূপ,

IMG_2596

এর পরপরই জাল দিয়ে ঘেরা চৌবাচ্চা। তাতে কুমিরদের সাথে সাথে নানা ধরনের কচ্ছপের দেখাও মিলল।

IMG_2597

315957_10150838604535497_608590496_21148743_1836102254_n

এরপর সারিসারি তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা খাচামত, প্রতিটিতেই জল আছে পর্যাপ্ত, শুরু হল আমাদের কুমির প্রজনন কেন্দ্র দর্শন। প্রথমেই মাত্র কয়েক মাস বয়সী কুমির ছানা,

IMG_2621

এর পরে এক বছর বয়সী ছানাদের মহামেলা, একটু দূরের খাঁচায় ২ বছর বয়সীদের ভিড়,

IMG_2622

তারপরে ৩ বছর বয়সীরা।

IMG_2676

IMG_2677

এমনভাবে বয়স অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ভাগ করে রাখা হয়েছে এই সুদর্শন সরীসৃপদের।

সূর্যিমামাকে মাথার উপরে রেখেই চলছে আমাদের দর্শন, এর ফাঁকে এক শক্ত-পোক্ত গড়নের চাচামিয়া এসে বলল, কুমিরকে খাওয়াতে যাচ্ছি, দেখতে চাও নাকি!

299185_10150841939215497_608590496_21171267_1727592013_n

দেখব না মানে, মনে হল এরই অপেক্ষায় ছিলাম এতক্ষণ, বিশাল মাছের মুড়ো-লেজসহ ( পেটি ছাড়া, সেটি মনে হল অন্য কাজে ব্যবহৃত হয়ে গেছে) দেহটা সেই সারি সারি পাথরের মূর্তির মত নিশ্চল ঝাঁকের মাঝে পড়ার সাথে সাথে কি যে এক আলোড়নের সৃষ্টি হল,

305718_10150837366360497_608590496_21141701_1750570078_n

মনে হল কুমিরের এক বিশাল পাহাড় নির্মিত হয়েছে অজানা মন্ত্রবলে, সেই পাহাড় আবার চলমান!

IMG_2662

IMG_2660

আর মাঝে থেকেই কোন চতুর কুমির কুশলী রাগবি খেলোয়াড়ের মত পাকা ডজ দিয়ে বেরিয়ে এল হুটোপুটি থেকে, মুখে ধরা মাছ নিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে, প্রায় দৌড়ে অন্যদের নাগালের বাইরে যেয়ে পড়ল জলের মাঝে!

316380_10150841938820497_608590496_21171261_1252935373_n

গাইডের কাছে থেকে জানা গেল লম্বা পায়ের রহস্য, এই প্রজাতির কুমিরের আদিপুরুষদের খাদ্যতালিকায় ছিল বিশালদেহী স্থলচর স্লথ, তাদের কাবু করতেই দ্রুতগতিতে দৌড় ও আক্রমণ করা শিখতে হয় তাদের, আর কোটি কোটি বছরের বিবর্তনের পরে তারা পৌছায় আজকের পর্যায়ে।

IMG_2642

এরপর এক খাঁচায় দেখা হল ৫ বছর বয়সের কিউবান কুমিরদের সাথে, গদাইলস্করী চালে শুয়ে রোদ পোয়াচ্ছে।

301960_10150840036410497_608590496_21157419_731166174_n

শুনলাম, এখন এই প্রজাতিটি বিলুপ্তির আশঙ্কামুক্ত, কেবল মাত্র কিউবান সরকারের খুব বেশী দেরি হয়ে যাবার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নিবিড় পরিচর্যার জন্য ( এই প্রসঙ্গে মনে পড়ল বাগেরহাটের খাঞ্জালি কুমিরগুলোর কুশিক্ষিত লোভী মানুষের খপ্পরে পড়ে আফিং খাইয়ে মারার ঘটনাটি) । কিন্তু এখনো চিন্তার মূল বিষয় হচ্ছে কিউবান কুমিরের মোট জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ২ ভাগ পুরুষ! তার মধ্যে একভাগ আছে জলাভূমিতে মুক্ত পরিবেশে, আর ১ ভাগ আছে এই প্রজনন কেন্দ্রে।

বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই অনুপাত বৈষম্য দূর করতে, কিন্তু এখন পর্যন্ত সফলতা ধরা দিচ্ছে না। কিন্তু আশা করতে পারি আমরা, যে গবেষণা ও পরিচর্যা এমন অসাধারণ একটি প্রজাতিকে সাক্ষাৎ বিলুপ্তির অন্ধকূপ থেকে তুলে এনেছে, তারা নিশ্চয়ই রক্ষা করবে এদের টিকে থাকার অধিকার।

ফেরার পথে দেখা গেল প্রজননকেন্দ্রের আরেক আকর্ষণ, কুমির ও কুমিরজাতদ্রব্যের দোকান! এখানে কুমিরের দাঁত, হাড়, চামড়া দিয়ে প্রস্ততকৃত নানাবিধ পণ্যের সাথে স্টাফ করা কুমিরের বাচ্চা পর্যন্ত বিক্রি হয় (একটি বাচ্চার দাম ২০০ ডলার) ,তবে এখানে কেবলমাত্র নানা কারণে মৃত অথবা পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ কুমির ব্যবসার খাতিরে বিক্রি করে সেই অর্থায়নে প্রজননকেন্দ্র চালানো হয়।

IMG_2768

ফটকের কাছেই মিলল আরেক প্রস্তাব, এখানে গোটাকয়েক হোটেলে কুমিরের মাংসের স্বাদ মিলতে পারে, সেই সাথে দুর্লভ এই আমিষ সস্তাগণ্ডায় উদরপূর্তি করতে চাইলে স্থানীয় কিছু বাড়ীতে গেলেও চলবে, পাতে ভাত, আলু, মুরগীর সাথে পড়বে খাঁটি কুমিরের মাংস! সর্বভুক মানুষ আমি, কিন্তু বুনোপ্রাণী খেতে মন কখনোই সায় দেয় না, হোক না সেটা আইনের মধ্য থেকে শিকার করা। তাই এ যাত্রা মানে মানে বাড়ী ফেরা, থুক্কু হোটেলে ফেরা।

(উল্লেখ্য নেটে অনেক খুঁজেও কিউবান সরকারের এই মহাপরিকল্পনা নিয়ে বিশেষ কিছু মিলল না, এমনকি উইকিতে এর কোন উল্লেখই নেয় ! সংশ্লিষ্ট কেউ কি একটু চেষ্টা করে দেখবেন বিষয়টির অন্তর্ভুক্তির?)


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

অনেক তো হলো, ঘরে একটা সুন্দরী ভিডিও ক্যামেরা নিয়াসেন এইবার।

তারেক অণু এর ছবি

এইটা কি কন হিমুদা ! দুর্দান্ত একটা ভিডিও ক্যামেরা ঘরে আনছিলাম তো আল্পসে যাবার আগে, ভিডিও তো করা হয়ই ! দেয়া হয় না শুধু।

হিমু এর ছবি

এডিট করে, কিছু নেরেশন যোগ করে বদর বদর বলে তুলে দেন।

তারেক অণু এর ছবি

না না, দিলে ডেভিড ডেভিড, অ্যাটেনবোরো, অ্যাটেনবোরো নামে দিব !

নাভেদ এর ছবি

ডেভিড অ্যাটেনবোরো নামে না, তারেক এটমবড় নামে দে। চোখ টিপি

তারেক অণু এর ছবি
টিউলিপ এর ছবি

নীড় থেকে একটা লেখা সরতে পারে না, আরেকটা রেডি।

কী আর বলব। ছবি দেখেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাই। তবে উদ্যোগটা খুব ভালো লাগলো। আমাদের দেশে যদি কেউ ভাবত এসব! অবশ্য মানুষের কথাই ভাবে না...

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

তারেক অণু এর ছবি

সব কিছু নিয়েই কাজ করতে হবে, মানুষের চেয়ে অন্য কোন প্রাণী কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এই গ্রহে।

রু(অতিথি) এর ছবি

সচলের পাতা খুলে রাম চিৎকার দিতে যাচ্ছিলাম। কী ভয়াবহ, আমার আত্মা কেঁপে গেল রে ভাই! বিরাট ধিক্কার!! যাই হোক আমি পোস্টটা আসলে দেখি নাই। হিমুর কমেন্টের লিঙ্ক ধরে ঢুকেছি। লেখা ভাল না খারাপ হয়েছে জানিনা। আশা করছি খুব খারাপ হয়েছে। সামনে কয়েকটা দিন খারাপ থাকেন এই কামনা করি।

তারেক অণু এর ছবি

অনেক আগেই আপনাকে বলেছিলাম কুমির নিয়ে একটা লেখা আসবে!!! আমার কি দুষ!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক। দারুণ হচ্ছে।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ।

রাব্বানী এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

দারুন্স!!!

কুমির ভালু পাই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই। ছবিটি কি পূর্ব এশিয়ায় তোলা!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এটা ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের রাজধানী মেডানে তোলা। ১৯৫৯ সালে এক খেয়ালি চায়নিজ মাত্র ৬টা সুমাত্রান কুমির নিয়ে তামান বুয়াইয়া (crocodile garden) বা কুম্ভীরোদ্যান গড়ে তোলেন। ২০০৫ সালে সেখানে গিয়েছি অনেকবার, একটা বাড়ির ভিতরে একটা মাত্র পুকুরে আর কিছু কনক্রীট ট্যাঙ্কে ৪,০০০ কুমির। এই খেয়লী জীবনে একটা কুমিরও বিক্রি করেননি বা কুমিরের চামড়া, দাত, নখ বা কোনও অঙ্গও বিক্রি করেননি। তার উদ্যানের কোনও কুমির মারা গেলে অন্যগুলো সেটাকে খেয়ে ফেলে। সময় পেলে হয়তো এটা নিয়ে একটা ছোট্ট ভ্রমণ ব্লগ লেখা যেতে পারে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

লিখে ফেলেন, দারুণ হবে !

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কুমীরের বাচ্চাগুলোরে তো আমি টিকটিকি মনে করতাম লেখা না পড়লে হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

পিচ্চি হলেও দাঁতে ধার আছে !

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

আদর করতে গেস্লেন নাকি? দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

হে হে সব কিছুই কি ছুয়ে বুঝতে হবে !

ডাইনোসর এর ছবি

খুবই ভাল লাগলো।
আপনার সব পোষ্টই চমৎকার।

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা।

নিটোল এর ছবি

ছোটবেলা থেকেই কুমির ভালো পাই। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

তারেক অণু এর ছবি

আম্মো, যখন থেকে টারজানের কার্টুন দেখতাম তখন থেকেই।

তাপস শর্মা এর ছবি

হাততালি ......

বস এইডা হৈল গিয়া কাজের কাজ। এত্ত কুম্ভীর চোখ টিপি ( কুম্ভীর বিভ্রাট অবলম্বনে - সৌজন্যেঃ ত্রৈলৈক্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ) ভালু পাইছি দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক। তবে অনেক সময় আর ধৈর্যের ব্যাপার।

তাপস শর্মা এর ছবি

ডায়ানা- অসুর ( ডায়নাসোর ) দেখতে মঞ্চায় ইয়ে, মানে...

তারেক অণু এর ছবি

আশা করি- সে দেখাই শেষ দেখা হবে না।

আমি শিপলু এর ছবি

উত্তম জাঝা! হাততালি ; একটারে কোলে নিয়া ছবিটা কোই?

ফারুক হাসান এর ছবি

হো হো হো

তারেক অণু এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

মস্করা! কুমির দেখলেই কোলে তুলে ছবি নিতে হবে !

অন্যকেউ এর ছবি

কুমির বড়ই ভালু পাই। এতো কুমিরের ছবি দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেলো। দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই, শেষ যে কবে বাংলার কোন নদীতে কুমির দেখা গেছে !

রফিকুল ইসলাম এর ছবি

অনু ভাই আমি তখন সাতক্ষিরা। তাবলীগে গিয়ে ছিলাম সেখানে ২ ফিট দূর থেকে কুমির দেখার সুয়োগ হযে ছিল । আমি বার বার তা দেখতে গিয়ে ছিলাম । আপনার দেওয়া ছবি গুলো অনেক ভাল লেগেছে বড়া বড়ের মত।

আর তাই কিছু বলার অবকাশ থাকেনা

চলুক কোলাকুলি

তারেক অণু এর ছবি

হুমম, সেই কুমিরগুলো সব মেরে ফেলেছে মসজিদের খাদেমরা আফিং খাইয়ে খাইয়ে, এখন যে কটা আছে সব ভারত থেকে রমুলাস হুইটেকারের দেয়া উপহার।

shafi.m এর ছবি

সাতক্ষীরায় তো নয়, বাগেরহাটে।

শাফি।

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক।

হাসিব এর ছবি

কিন্তু এরা তো কমিনিস্ট কুমির! এদের বাচানি কি ঠিক হইলো?

তারেক অণু এর ছবি

আগে বাঁচান তো ! পরে দেখা যাবে ডান না বাম।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সেই কবে, প্রায় ৪৫ বছর আগে বাগেরহাটের খান জাহান আলীর মাঝারের পুকুরে কুমির দেখেছিলাম। সম্ভবত ওদের নাম ছিল, ধলামিঞা ও কালামিঞা।
পোস্ট ভাল লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি

কালাপাহাড় আর ধলাপাহাড়।
ওদেরকেই তো মেরে ফেলছে লোভী খাদেমরা !

guesr_writer rajkonya এর ছবি

একেই বলে কাক-তাল। আমার পিচ্চি ভাইঝিটা এই শীতেও ঘরে স্যান্ডেল পরে না। ''কুমির, তোর জলে নেমেছি'' খেলার ছলে ওকে স্যান্ডেল পরানো গেলেও, এখন ভীষণ বিপদে আছি। এখন আমাকে বাসায় কুমিরের ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে। আর যেহেতু আমি ময়লা নোংরা পানিতে থাকি (আমার ভাইঝির মতে), তাই দিনে কয়েকবার ওর কাছে গোসল করতে হচ্ছে! মাটিতে শুয়ে থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে একটু শান্তির জন্য সচলে এসেই দেখি এই পোস্ট!!! ভাল লাগে বলেন?

তারেক অণু এর ছবি

দেঁতো হাসি মজা পেলাম, পিচ্চির জন্য আদর।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

আমার ভাইঝিও আপনার পোস্ট দেখে মজা পেয়েছে। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

দেরীতে হলেও শুভেচ্ছা।

জয়ন্তী এর ছবি

ডরাইসি ভাই.............

তারেক অণু এর ছবি

না না, এরা নেহাত নিরীহ ! সিনেমা দেখে আমাদের এই ধারণা হয়েছে যে এরা খুব হিংস্র, আর সারাদিন খাই খাই করে।

আশরাফুল কবীর এর ছবি

# ভাইয়া আমি ভেবেছিলাম আপনি বোধহয় শেষ পর্যন্ত কুমিরের মাংস ভক্ষন করেছেন, কিন্তু পরে ...........হতাশ। আসলে মন্দ হতোনা। সবসময় বোধহয় এ সুযোগ আসবেনা।

# আপনার এতো এতো সুন্দর লেখার+দেখার+পরিচ্ছন্নভাবে বোঝানোর রহস্যটা যদি জানতে পারতুম, হয়তো কাল্পনিক আর্কিমেডিস হয়ে "ইউরেকা, ইউরেকা" বলিয়া চিল্লাইতুম।

#অনেক অনেক ভাললাগা বাঘের বাচ্চা

তারেক অণু এর ছবি

রহস্যটা খুব সহজ--- উপভোগটা করবেন নিজের মত করে।
এখন ইউরেকা ইউরেকা করতে থাকেন, মনে হচ্ছে কাল ফেসবুক আপনের ছবিতে ভরে যাবে চোখ টিপি

রাশেদুল ইসলাম রনি এর ছবি

কুমিরগুলাতো সেই হালতে আছে...... খাইছে

তারেক অণু এর ছবি

আছে, খারাপ না।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

উঁটপাখি কই?
এই পোস্টে জাঝা

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

আমার তো উটপাখির ডিম নিয়ে লেখার কথা, উটপাখি নিয়ে লেখা চান তো চাদা তুলে আফ্রিকায় পাঠাবার একটা বন্দোবস্ত করেন !

মন মাঝি (আনসাইন্ড) এর ছবি

কুমির খাইতে কিন্তু খুব মজা দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

কত কিছুই তো খাইতে মজা, তাই বলে সব খাইতে হবে !
আপনি মনে হয় তরিবৎ করে নীলের কুমির খেয়েছেন?

দ্রোহী এর ছবি

এভারগ্লেডসে ঘুরতে গিয়ে কুমির-অ্যালিগেটর দেখছি প্রাণভরে!

কোথায় যেন পড়েছিলাম কুমির অতি কুৎসিতদর্শন প্রাণী হলেও বায়োলজিক্যালি অলমোস্ট পারফেক্ট! মনে হয় সৌন্দর্য্যের ভুল সংজ্ঞা শিখেই আমরা বেড়ে উঠেছি। হাসি

গতানুগতিক ঈর্ষার আগুন বরাদ্দ করলাম তারেক অণুর জন্য।

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই, এই নিয়ে পরের পোস্টে কিছু কথা বলব!
আরে ভাই,আগুন জমায় রাখেন, বারবিকিউ করব একসাথে!

ফাহিম হাসান এর ছবি

ছবি সুন্দর তুলেছেন অণু ভাই।

এবার একটু অন্য কথা বলি।

বাংলাদেশের ভালুকা, ময়মনসিংহে বাণিজ্যিকভাবে কুমির চাষ হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকেই আশাবাদী। মিডিয়াতেও পজিটিভ রিভিউ এসেছে - এর সম্ভাবনাময় দিকগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। অথচ ঝুঁকির কথা কেউ বলে না। এর থেকে রোগ জীবাণুর সংক্রমণের যে বিশাল হুমকি রয়ে গিয়েছে তা বণিকেরা উড়িয়ে দিতে চান। অথচ ব্যাঙের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে - ফাঙ্গাস ছরিয়ে পড়েছে কিন্তু চাষ করা ব্যাং থেকেই।

Chytridiomycosis, যে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ সমগ্র উভচর জগৎকে ঠেলে দিয়েছে বিপর্যয়ে মুখে, প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য ব্যাঙের প্রজাতি – এর উদ্ভব কিন্তু ব্যাঙের বাণিজ্যিক চাষ ও বিশ্বব্যাপী আদানপ্রদান।

আরেকটা ব্যাপার অনেকেই এটাকে সংরক্ষণের সাবস্টিটিউট হিসেবে দেখছেন। কিন্তু বন্যপ্রাণীর বাণিজ্যিক চাষ আসলে পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গীটাই পালটে দেয়। মানুষের মনে পরিবেশ সচেতনতার বদলে বাণিজ্যিক লোভ তৈরী করে। আর কর্পোরেট কো: কিন্তু এটাই চায়। এজন্য তারা স্পন্সরও করে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে বন্যপ্রাণীর বাণিজ্যিক চাষে বিশ্বাসী না - তবে এটা আমার নিজস্ব স্ট্যান্ডপয়েন্ট। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রাকৃতিক পরিবেশে বা প্রায়-প্রাকৃতিক পরিবেশেই করা উচিত। দরকার হলে ইকো-টুরিজম করুক বা বড় আকারের চিড়িয়াখানা - প্রজনন কেন্দ্র করুক। কিন্তু চাহিদা আছে বলেই চাষ করে চামড়া ছাড়িয়ে বিক্রি করতে হবে - এমন ধারণাটা বিপর্যয় ডেকে আনার জন্য যথেষ্ট - বিশেষ করে বাংলাদেশে।

তারেক অণু এর ছবি

পুরোপুরি একমত। ভালুকায় একবার গুইসাপ প্রজনন কেন্দ্র হয়েছিল, শর্ত ছিল বিশাল অংশের গুইসাপ বনে ছেড়ে দিতে হবে, সেটা তো হলই না, ধরা পড়া গুলোর ছাল ছাড়িয়ে নেওয়া হল মন খারাপ

অতিথিঃ অতীত এর ছবি

এইবার ডিপ্লোডোকাস এর কান্ধে চড়া ফটো সম্বলিত একখান পোস্ট দেন অণু ভাই। অবশ্য আমার ধারণা, আপনি টাইরানোসোরাসের ল্যাঞ্জা দিয়াও হয়তো কান চুলকাইসেন। চিন্তিত

-অতীত

তারেক অণু এর ছবি

আমি না, আপনি মনে হয় নজু ভাইয়ের কথা বলছেন !

অতিথিঃ অতীত এর ছবি

হাহাহাহাহা...না, আমি আপনার কথাই বলছি। হাসি আর নজু ভাই, শুনেছি উনি নাকি পঁচিশ বছর বয়সে একবার হাতের থাবা দিয়া একটা এককোষী প্রাণরে দুই ভাগ কইরা ফেলসিলেন সমুদ্রের তলায়...কালের বিবর্তনে সেই করাঘাত মাইটোসিস এবং বিশেষ বিশেষ জায়গায় মিয়োসিস নাম লইয়া দুনিয়াডা ভরায় ফেলসে জলে-স্থলে বিচিত্র সকল প্রাণসম্ভারে... দেঁতো হাসি

-অতীত

তারেক অণু এর ছবি

কস্কি মমিন! এইডা তো নজু ভাইরে জানিয়ে পেন্নাম করতে হয় !

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

Crocodile

তারেক অণু এর ছবি

আপনে ইমোর বস রে ভাই !

তারানা_শব্দ এর ছবি

আপনি এতো ঘুরে বেড়ান ক্যান? আমিও ঘুরে বেড়াতে চাই!!! মন খারাপ

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

তারেক অণু এর ছবি

ভাল লাগে যে ! অভ্যেস খারাপ হয়ে গেছে !

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কুমিরের এই বিষয়গুলি ভালুকায় আমার বন্ধু মুশতাকের দেয়া রেপ্টাইল ফার্মে স্বচক্ষে দেখেছি। তবুও আপনার পোষ্ট চোখ ধাঁধিয়ে দিল। তবু এই নিন আরেক প্রস্থ কুমির বিষয়ক,

কুমিরেরা ভালোবাসে জল। জলের হিমার্ত স্বাদ
তারা আজীবন পেতে চায়।
মানুষেরা ভালোবাসে ছল। ছলনা মিশিয়ে পথে
কাঁটাতারে তৈরি করে ঘর।
কুমিরেরা ভোগী, আয়েসী ও নিদ্রাপ্রিয়
এবং কখনো কখনো বোকা
মানুষেরা লোভী, হিসেবী ও হিংসাপরায়ণ
এবং কখনো কখনো ভীরু
কুমিরের সাথে তাই মানুষের মেলামেশা নেই
তারা বন্ধু হতে ভয় পায়
পালায়, যথেষ্ট দূরে থাকে কদাচিৎ দেখা হয়ে গেলে।
মানুষেরা জলে গেলে
কিংবা কুমিরেরা স্থলে এলে
তাদের স্বভাব বদলে যাবে এরকম সম্ভাবনা নেই।
কিন্তু আজ কুমিরে-মানুষে
বড়বেশী গলাগলি ভাব, চরিত্রে-বৈশিষ্ট্যে মিল
উভয়ে বসত করে আধুনিক চিড়িয়াখানায়।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তারেক অণু এর ছবি

শেষের লাইনটাতে যা এক হাত নিলেন -- আহা, দুর্দান্ত!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ওরে বাবা ভয় পেলাম তো!!! দেঁতো হাসি

চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি

ভয় কিসের ! ভয়ে তো অস্থির কুমিরেরা

উচ্ছলা এর ছবি

কুমিরগুলা সুন্দর আছে। এদের চোখের, মুখের এক্সপ্রেশান খুবই মনোহর। তোমার বর্নণাও ভাল লাগল।
হানিব্যাজারকে নিয়া কবে লেখবা? গড়াগড়ি দিয়া হাসি

তারেক অণু এর ছবি

আফ্রিকা ঘুরে আসি আরেকবার, বুনো পরিবেশে ওদের দেখতে পেলে লিখব।

শাব্দিক এর ছবি

চলুক
একটা বাচ্চা কুমির পালতে চাই।

তারেক অণু এর ছবি

তারচেয়ে বুনো কুমিরের পরিবেশ রক্ষার কাজ করলে খারাপ হয়ে না, বা ঘড়িয়ালের।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।