মাঝ রাতে আচমকা ঘুম ভাঙল যাত্রীদের হট্টগোলে আর বাস কন্ডাকটারের বাজখাই আওয়াজে, বোঝা গেল সীমানা এসে গেছে, এখন আবার সেই বিরক্তিকর ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, সীমানা পেরোবার ঝক্কি। বাস এসে থেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা আর মোজাম্বিকের সীমান্তে, এখন সব যাত্রীকে দুই দেশের ইমিগ্রেশন ঘুম ঘুম চোখে পার হয়ে তবেই আবার বাসযাত্রা শুরু করতে হবে। সময় ২০১০ সালের জুন মাস।
গজগজ করতে করতে দক্ষিণ আফ্রিকার ঝামেলা শেষ করে এগোলাম মোজাম্বিকের সীমানা অফিসের দিকে, এমনিতেই ভিসা নিয়ে আসিনি, আগের দিন গলদঘর্ম হয়ে যখন প্রিটোরিয়ার মোজাম্বিক দূতাবাসে পৌঁছালাম, তারা দাঁত বের করে বলল, খামোখা কষ্ট করলে, সীমান্তেই পোর্ট এন্ট্রি ভিসা পেতে, তোমার এই সবুজ বাংলাদেশী পাসপোর্টেও! তাই নাকি, শুনেই বেশ খুশী খুশী হয়ে উঠে কল্যাণ দাকে ( ব্লগার কল্যাণ F ) দিলাম এক ফোন – ভিসা লাগবে না দাদা, আসিতেছি! দাদা শুধু সতর্কবাণী দিলেন, এই ইমিগ্রেশনের ফাজিলগুলো মওকা বুঝে কিছু টাকা খসাবার ধান্দা করবে, এড়িয়ে যেও!
কিন্তু কোন বিশেষ সমস্যা ছাড়াই ভিসা মিলল, কেবল নির্ধারিত ফি তারা নিল ডলারে, আর পর্তুগীজে কিছু বলে ছেড়ে দিল, আমিও একমাত্র সম্বল অবরিগাদো, মুচাশ অবরিগাদো বলে হাঁটা ধরলাম বাসের উদ্দেশ্যে। মাথার উপরে নক্ষত্রের হাঁট বসেছে, আঁধারের মাঝে তাদের আলোতেই পথ ধরে এগোচ্ছি অল্প খানিকটা আঁধার পথ, এর পরপরই সোডিয়াম বাতির রাজত্ব। সেই ঘোলা ভুতুড়ে হলুদাভ আলোতে এক নতুন ভূখণ্ডে পা দিতেই কিছু স্থানীয় তরুণের দেখা পেলাম, তারা এই মধ্য রাতের ঘুমের স্বর্গীয় আরাম ত্যাগ করে জীবিকা উপার্জনের কঠিনতম অ্যাডভেঞ্চারে ব্যস্ত, ফেরি করছে মোজাম্বিকের মোবাইল সিম কার্ড, কেউবা মুদ্রা বিনিময়ে নিয়োজিত। আমার বয়সীই হবে ছেলেগুলো, বেশ খারাপ লেগে গেল হঠাৎ করেই, একটা সিম কার্ড বিক্রি করে আর কতই লাভ হয়! বেচারারা তীর্থের কাকের মত এভাবে উপার্জনের সংগ্রাম চালাবে আফ্রিকার আঁধার রাতে প্রতিটি বাস থামার পরপরই। সবাইকে নিরাশ করতে হল নতমুখেই, ফের যাত্রা শুরু।
পরের বার ঘুম ভাঙল আফ্রিকার সবচেয়ে মূল্যবান দুটি সম্পদের একটি, অপূর্ব সূর্যোদয়ের প্রভাবে ( অন্যটি সূর্যাস্ত), সমগ্র মহাবিশ্ব যেন তখন পাকা আপ্রিকট ফলের মত হলদেটে সোনালি বর্ণে ডুবে আছে, দূর দিগন্ত পর্যন্ত সেই আভার প্রতিফলন ঘটেছে অদূরের মহাসাগরেও। পাখপাখালির উড়াল দেখতে দেখতে অনুভব করলাম নতুন দেশটাকে কেন জানি বেশী ভাল লেগে গেল, মনে হয় এমন জীবনের উজ্জল আলো ভরা ভোরের জন্য।
মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতোর বাসকাউন্টারে নামিয়ে দিয়ে গেল বেশ ভোরেই, অধিকাংশ স্থানীয়রাই তখন নিদ্রাদেবীর কোলে, তবুও সেখানে পা দিয়েই প্রথম যার দেখা পেলাম সে হল রডরিক! মনে আছে তো রডরিকের কথা, সেই যে মাসুদ রানার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাহিনী আই লাভ ইউ, ম্যান এর মূল চরিত্রদের একজন, বইতে যার আত্মত্যাগ আর মৃত্যু জল এনে দিতে আমাদের কৈশোরের আবেগ ভরা স্বপ্নময় চোখে। সেই একই রকম বিশালদেহী, নিখুঁত ভাবে কামানো মাথা ও মুখমণ্ডল, মাথায় চওড়া ক্যাপ, দৈত্যাকার মুখে সারল্যের হাসি! তার বগলে আবার একটা বড় প্লাস্টিকের টুকরো, তাতে লেখা ট্যাক্সি!
হায় রে, আমার মোজাম্বিকের রডরিক তাহলে ভারত মহাসাগরের শ্রেষ্ঠ মাছশিকারি নয় বরং একজন চ্যাম্পিয়ন ট্যাক্সি চালক! সে সেধে এসে একাধিক বার বলল আমার সাহায্য লাগবে নাকি, সে এই শহরের নাড়িনক্ষত্র চেনে, যে কোন জায়গায় যাওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র ! কিন্তু কল্যাণ দা মেসেজ দিয়ে জানিয়েছিল তার এক স্থানীয় বন্ধু আমাকে নিয়ে যাবে, কাজেই অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই। একমাত্র আফসোস, রডরিক বেচারার কোন ছবি তোলা হল না, আসলে জোহান্সবার্গে থাকার সময় সবাই ক্যামেরা ছিনতাই হওয়া নিয়ে এতটাই ভয় দেখিয়েছে যে পাশের দেশে এসেও সেই হুমকিগুলো ভুলছিলাম না, যদিও মাপুতো জোহান্সবার্গের চেয়ে অনেক অনেক গুণ নিরাপদ নিরিবিলি এক শহর।
খানিক পরেই সেই বন্ধু এসে হাজির, নাম তার Daxinho, উচ্চারণ পর্তুগীজে কি হবে জানা নেই তাই দাদার মতই দাসিম বা বৌদির মত জসীম বলেই চালিয়ে গেলাম এযাত্রা।
এখানে মনে হয় ক্ষুদে আকারে কল্যাণ দার সাথে পরিচয়ের ব্যাপারটা জানানো দরকার। আমরা একই স্কুলে পড়তাম, পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা স্কুলে, যেখানে ঘটত বিশ্বের সবচেয়ে মজাদার ঘটনাগুলো, রাজশাহী বিশ্ব-বিদ্যালয় স্কুলে। দাদা আমার এক বছরের উপরের ক্লাসে পড়তেন, সেই সুবাদে আমার বড় ভাই তানভীর অপুর বাল্য বন্ধু। কাজেই পরিচয় আর সখ্য বলা চলে সারা জীবনেরই। কিন্তু কলেজের পরপরই ছিটকে পড়লাম একেকজন একেকদিকে, এরপর অবিশ্বাস্য হলেও প্রায় এক দশক কোন যোগাযোগ নেই! দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট পাবার পরপরই যখন পরিকল্পনা করছি ভবিষ্যৎ ভ্রমণের বড় ভাই জানালো, আরে কল্যাণ তো এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়! ওর ওখানেই যাও সরাসরি! বিধি বাম, জানা গেল কল্যাণ দা সটকে পড়েছেন ( মানে চাকরির বদলীর কারণে) পাশের দেশে। তাই শেষ পর্যন্ত দুই খেলার ফাকে দিন তিনেকের জন্য আসতে হল মাপুতো !
অবশেষে দেখা হল, দাদাতো মহা আবেগে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, প্রীতি বৌদি গোটা শহর তন্ন তন্ন করে খুঁজে সেরা বাজারগুলো করেছেন আমাকে খাওয়াবেন বলে। দারুণ লাগল তাদের সংসার, দেশ ছেড়ে এতদূরে ভিন্ন মহাদেশের আকাশ তলে কি চমৎকার ভাবেই না চলছে মানব ধর্মে বিশ্বাসী এই যুগলের দিনকাল ( কল্যাণদার জন্ম মুক্তমনা হিন্দু পরিবারে, প্রীতি বৌদির মসুলমান পরিবারে), সেই সাথে ফেলে আসা রাজশাহীর কথা, পদ্মা নদীর স্মৃতি আর মতিহারের গন্ধ যেন ফিরিয়ে নিয়ে গেল আমাদের তুমুল আড্ডার ফাঁকে স্মৃতির শহরে। এর ফাঁকেই আমরা ছক কষে ফেললাম আগামী মহামূল্যবান দিনগুলোতে কি করা যেতে পারে।
বিশাল দেশ মোজাম্বিক, যেমন আছে এখানে বিশ্বের সেরা সাফারি পার্ক ক্রুগার, তেমনি আছে ভারত মহাসাগরের উত্তাল ঢেউয়ে চেপে বিশ্বের বৃহত্তম মাছ তিমি হাঙরের ( হোয়েল শার্ক ) সাথে সাঁতার কাটার আমন্ত্রণ, কিন্তু এই সল্প সময়ে এসব কিছুই হবে না, কারণ ফিরতি খেলা হবে ব্রাজিল-পর্তুগালের, নন্দিত নগরী ডারবানে,ফিরতে হবে তার আগেই। কাজেই ঠিক হল মজাসে মাপুতো ঘোরা হবে। দাদা যদিও যথেষ্ট ব্যস্ত অফিসের কাজে, তারপরও ফাঁকে ফাঁকে যোগ দিবেন আমাদের সাথে, আর জসীম গাড়ী নিয়ে সর্বক্ষণের সঙ্গী।
যদিও মাপুতো মোজাম্বিকের বৃহত্তম শহর, তারপরও আমার কাছে বাংলাদেশের কোন চুপচাপ আপাত নিরীহ শহরের কথাই মনে হল, তার অধিবাসীর সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ, এখনো উন্নয়নশীল একটা বন্দর নগরী বলা চলে।
শহর ঘুরতে বেরিয়ে বেশ কিছু ঔপনিবেশিক আমলের দালানকোঠা চোখে পড়ল, কেমন সুমসাম ভাব সেগুলোর কাঠামোতে, জানা গেল সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে এই ঐতিহাসিক ভবনগুলোকে রক্ষার।
থেকে থেকেই ছোট খাট বস্তি মত দেখা গেল, এই শহরের শতকরা আশি ভাগ লোকই এমন বস্তিতে থাকে, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির সুবিধা ছাড়াই, যদিও দেখলাম সব জায়গাতেই চলেছ নানা স্থাপনার কাজ, বিশাল চওড়া রাস্তা, উঁচু ভবন নির্মাণ চলছে সমানে। দাদার কাছ থেকে শুনলাম, জমি খুব উর্বর বিধায় প্রচুর বিদেশী বিনিয়োগ আসছে এদেশের মাটিতে।
শিশিরের শব্দের মত নামা এক সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে আমি আর বৌদি কল্যাণ দার জন্য মাপুতো উপসাগরের তীরে অপেক্ষা করতে করতে চা- কফি কিছু একটার আশায় ঢুঁকে পড়লাম সাগর তীরে কাঠ দিয়ে তৈরি সুদৃশ্য ক্যাফেগুলোতে।
রেস্তোরাঁর কর্মচারী খাদ্যতালিকা দিয়ে যেতেই মহা বিপদে পড়লাম, সবই পর্তুগীজে! ইংরেজির লেশ মাত্র নেই! বৌদিকে অভয় দিয়ে স্কুলে কিছুদিন শেখা পর্তুগিজের খালাতো ভাই স্প্যানিশের উপর ভরসা করে দিলাম আন্দাজে দুটো লেবু চায়ের ফরিয়াদ! হা কচুপোড়া, ব্যাটা আমাদের জন্য দুটি সাজানো ঝক ঝকে কাপে নিয়ে এল গরম জল, আর তাতে লেবুর ছিলকে ডোবানো, পাশের পিরিচে বেশ খানিকটা চিনি! চা নয়, শরবত নয়, শেষ পর্যন্ত এই অতি বিচ্ছিরি গরম লেবুজল দিয়ে আমাদের ভারত মহাসাগর তীরের সন্ধ্যাকে মাটি চাপা দেবার মতলব!
ভাগ্যিস দাদা এসে পড়লেন এর মাঝে, চমৎকার গোলাপি সূর্যাস্তটি হাঁটতে হাঁটতে উপভোগ করলাম পূর্ণ মাত্রায়।
তবে একটা মুশকিল, পকেটে কোন স্থানীয় মুদ্রা নেই! টাকা ভাঙ্গাবো বললেই দাদা বলে ওঠে, তোমার টাকার দরকার কিসের জন্য! আমরা তো সাথেই আছি! বাধ্য হয়েই বললাম, আমি যে কোন দেশে গেলে সেই দেশের মুদ্রা সংগ্রহ করে থাকি, কাজেই এখানে এর ব্যতয় ঘটবে কেন! ওরে বাবা, বৌদি আরও এক কাঠি সরেস, ব্যাগ খুলে কয়েকটা খুচরো পয়সা এগিয়ে দিয়ে বলল, আপাতত এই রাখ, পরে দেখা যাবে! মনে হচ্ছে, দুই জন মিলে যুক্তি করে রেখেছে আমায় কোন খরচ না করতে দেবার জন্য।
আরেকদিন সাগর পারের মাছের বাজারে যাওয়া হল, উজ্জল রঙ বেরঙের মাছ দেখতে সবসময়ই খুব ভাল লাগে, আর মাছের বাজারগুলোতে আঁশটে গন্ধের সাথে সাথে চমৎকার সব ছবিও মিলে। মাপুতোর মাছ বাজারে অক্টোপাস, স্কুইড, শামুক, ঝিনুক মেলে এন্তার নানা রকমের মাছের সাথে সাথে। তবে এখানেই জীবনের প্রথম ব্যারাকুডা দেখলাম।
সেই সাথে এক নাম না জানা গাঢ় লাল বর্ণের মাছের শরীরের উপরে হলদেটে সূর্য রশ্মির অপূর্ব খেলা।
বিদেশী দেখা বাদাম বিক্রি করতে এল জনাকয়েক কিশোরী, হাতে একটা কৌটা মত, সেটা বাদাম ভর্তি করে সেই অনুযায়ী দাম ! একটু দামাদামির চেষ্টা করতেই গলাবাজির পর্তুগীজ মেশিনগান চালিয়ে হাসতে হাসতে বিক্রি করল, বোঝা গেল তারা বলছে- এই পাজি বিদেশীগুলোতো ভারি চালু!
একটু অবাক হয়েই লক্ষ করলাম, মোজাম্বিকের প্রায় সব কর্মস্থলেই, বিশেষ করে কায়িক পরিশ্রমের জায়গাগুলোতে নারীদের ভিড়, আর পুরুষরা ভিড় করে আছে শুঁড়িখানায় নয়ত ভদ্রগোছের পানশালায়, পানরত! ঘটনা কি! জানতে চাইতেই মুখ ঝামটা দিয়ে বৌদি বলে উঠল, আর বলো না, এই দেশের ব্যাটাগুলো মহা অলস আর বদের বদ ! সারাদিন নেশা ছাড়া আর অন্য চিন্তা নাই। আজব ব্যাপার, কাজ করবে না, তাহলে এত পানীয়ের পয়সা পায় কোথা থেকে! আর কোথা থেকে- ব্যাটারা প্রত্যেকে কয়েকটা করে বিয়ে করে, এরপর বৌরাই খেটে পয়সা উপার্জন করে প্রায় চাঁদা দিয়ে স্বামীদের চালায় ! আমাদের কথা আন্দাজ করে হয়ত জসীম হাসছিল দেখে বৌদি জানাল, জসীমেরও তিন বৌ! প্রত্যেকে মাসে স্থানীয় একশ টাকা দিলেও তিনশ টাকা হয়ে যায় ! সেও খুব একটা কাজ কর্ম করে না ! কেমন একটা ভিন্ন সমাজ ব্যবস্থা যেন!
এদিকে মাপুতো অবস্থানের সময় ফুরিয়ে আসছে, ভাবলাম ডারবান যাবার পথে সোয়াজিল্যান্ড ঘুরেই যায়, কিছু গণ্ডার দেখা যাবে সে দেশের গণ্ডার প্রজনন কেন্দ্রে ( আসল গণ্ডার অতি অসাধারণ প্রাণী, আবুলের মত নচ্ছার নয় ), দাদার সাথে সোয়াজি দুতাবাসে যাবার সময় বাহির থেকে দেখা হল নেলসন ম্যান্ডেলার বর্তমান শ্বশুরবাড়ী ( ম্যান্ডেলার বর্তমান সহধর্মিণী গ্রেকো ম্যাশেল মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি ), তার পরপরই মেজাজ চটে গেল দুতাবাসের খবর শুনে। তাদের মহামান্য সোয়াজিল্যান্ডের রাজা চিতাবাঘের ছালের নেংটি পরে শ দুয়েক মোসাহেব নিয়ে মাপুতো আসবেন অদুর ভবিষ্যতে এই শহরকে তার পদচিহ্ন দিয়ে ধন্য করতে , তাই দূতাবাসের কর্মচারীদের পর্যটকদের ভিসা জাতীয় তুচ্ছ জিনিসে সময় নষ্ট করার মুহূর্তটুকুও নেই! যতোসব ফাঁকিবাজের দল।
বোঝা গেল যে পথে এসেছি আবার সেই পথেই ফিরতে হবে, জোহান্সবার্গ হয়েই তবে ডারবান। এই কদিন এখানেই কেটে গেল দ্রুতগতিতে, মাঝে মাঝে দেখতাম স্কুল ফেরত আফ্রিকার ভবিষ্যৎদের,
কখনো ফুটবলের নেশায় মত্ত শিশু, হয়ত তাদের মাঝেই আবির্ভূত হবে ভবিষ্যতের ইউসেবিও ( পর্তুগালের সর্বকালের সেরা এই ফুটবলার কিন্তু আসলে মোজাম্বিকের সন্তান)
সৈকতে স্কুল পালানো বালক।
অবশেষে ফেরার দিন হয়ে এল, এক কাকভোরে জসীমের ট্যাক্সি চেপে একই বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছালাম, এবার ভাড়া দেবার পালা, কিন্তু দিব কোথা থেকে! এই দেশের মুদ্রা কি হাতে নিয়ে দেখেছি আজ পর্যন্ত! জসীমকে বললাম তুমি কল্যাণ দার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলে নিও, সেও একগাল হেসে বিদায় নিল। এক অদ্ভুত ধরনের নতুন অভিজ্ঞতা হল, একটা পুরো নতুন দেশ দেখা হল, সেই দেশের মুদ্রা না ছুয়েই, একটিও টাকা খরচ না করে! এ এমন কোন সুখদায়ক অভিজ্ঞতা নয়, কিন্তু স্নেহের বাঁধন যে বড়ই শক্ত !!
( এই লেখাটি কাদের জন্য আর উল্লেখ না করলেও চলে, আমার অতি প্রিয় মানুষ কল্যাণ দা ও প্রীতি বৌদির জন্য, তাদের জীবন যেন সবসময় সুখের জোয়ারে ভেসে যায়। )
মন্তব্য
ইউসেবিও মোজাম্বিকের জানা ছিল না।
আপনের পোস্টে আর কত পাঁচতারা দিমু কন দেখি?
..................................................................
#Banshibir.
দিলেনই একটু !
facebook
প্রতিবারের মত এবারেও আপনার লেখায় একটা নতুন জায়গা তার টুকরো টুকরো ছবি নিয়ে হাজির ।
আর সেই টুকরোগুলো মিলে আমার মনে জন্ম নিচ্ছে একটা নতুন দেশ ।
ওপর থেকে নয় নম্বর ছবিটা দেখে একটা কথা মনে এল । পৃথিবীর সব দেশেই কি প্লাস্টিকের চেয়ারগুলো একইরকম দেখতে ?
আমাদের এখানেও তো ওরকমই চেয়ার ঠিক ওভাবেই রাখতে দেখেছি ফুটপাথে !
তাহলে কি ওপর থেকে না দেখে তলার দিকটা দেখলে সব জায়গাই একইরকম ?
সব দেশে না হলেও, অনেক দেশেই এক !
facebook
দেশতো আসলে একটাই, মানুষও তো একই জাতি !
facebook
আরেকটা শহর ঘোরা হোল আপনার সাথে। লেখা বরাররের মতো ভালো হয়েছে।
ধন্যবাদ।
facebook
facebook
"গোলাপী সূর্যাস্ত" দারুণ লাগল কথাটা। বরাবরের মতই অসাধারণ পোস্ট।
শুভেচ্ছা।
facebook
facebook
অনুর কল্যাণে আরেকটি দেশ সম্পর্কে জানা হল। আপনার যাত্রা সব সময় শুভ হোক।
গোটা দেশ সম্পর্কে কিছুই জানতে পারলাম না, আরেকবার যেতেই হবে।
facebook
মাছের বাজার কেমন ? বাংলাদেশের মাছের বাজারের মত নাকি ? ২, ৩ , ৫ , ৮, ৯, ১১, ১২, ১৩ ১৪, ১৭, ১৮ , ১৯ , ২০, ২২ নম্বর ছবিগুলো ভাল লেগেছে । আর শেষ ছবিতে কল্যাণF দা আর বউদি কে দেখা হল
সব জায়গার মাছের বাজারই এক, হে হে।
facebook
সূর্যোদয়ের ছবিটা অদ্ভূত সুন্দর।
আর পদছাপের ছবিটা দেখে বারান-এর কথা মনে পড়ে গেলো
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
আফ্রিকার ভোরগুলো অন্য ধরনের।
facebook
রডরিক চরিত্র কোনদিন ভোলার নয়। মনে করিয়ে দেবার জন্য আবারো ধন্যবাদ। আবুল বেটা গণ্ডারের মান-ইজ্জত আর রাখল না।
মোজাম্বিক সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হল। আরও ভাল লাগলো কল্যাণ দাদা এবং বৌদির সম্পর্কে জানতে পেরে।
ছবি বরাবরের মতই
আরে না, এই বার ছবি তুলতে পারি নাই !
হা রডরিক, হা ল্যাম্পনি
facebook
ভালো লাগলো অণু। পায়ের ছাপওলা ছবিটা দেখে কেন যেন মন খারাপ করা বাতাস উড়ে এল। কেমন করে চলে যাওয়া শিখেছে মানুষ !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আসলেই===
facebook
দারুন লেখা! দারুন ছবি!
মিশরে থাকতে দঃ আফ্রিকায় যাওয়ার একটা ইনভিটেশন পাইসিলাম। প্লেন ভাড়া বাদে অল-এক্সপেন্সেস-পেইড। সাত-পাঁচ ভেবে যাই নাই। মিস করছি!
****************************************
পরের বার মিস কইরেন না।
facebook
বরাবরের মত ভাললাগা জানিয়ে গেলাম। মন্তব্য করতে গিয়ে ভাষাজ্ঞানের দুর্বলতা অনুভব করছি।
facebook
আপ্নার ব্লগ পড়লেই খালি মাথায় এক্টা চিন্তাই আসেঃ " এই মানুষটা এত দেশ ঘুরল কেম্নে ? এত টেকা পাইল কই !?!? "
facebook
দেখা হবে বন্ধু কারনে আর অকারনে
দেখা হবে বন্ধু ---
facebook
কল্যাণ দা আর প্রীতি বৌদিকে শুভেচ্ছা।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনাকেও !
facebook
ধন্যবাদ রণদীপম দা, আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
হুম। আম্রিকা আইবেন না? আপনেরে ছাড়াই এই বছর কিন্তু হলুদ পাথরে চলে যামু।
কল্যাণদার খোমা দেখে তো নিতান্ত নিরীহ পুলিশ মনে হচ্ছে
যাবেন! এই বছর একটু মুস্কিল যে আমার জন্য ! গেলে বুড়ো বিশ্বস্তর সাথে একটা ছবি তুইলেন!
হা হা , দেখি কল্যাণ দা কি বলে--
facebook
খোমা ভচকায়া নিড়িহ নিড়িহ ভাব আইছে, আসলে কিন্তু লুক আমি ম্যালা খ্রাপ সাহিতিক দিছেন? দাড়ান ছেক করি।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
facebook
চমৎকার বর্ণনা এবং ছবি। সবমিলিয়ে তারেক অণুর অনবদ্য একটা ভ্রমণ ব্লগ।
আমার এবং স্ত্রীর পাসপোর্টে এখনও মোজাম্বিকের দুটো ভিসা জ্বলজ্বল করছে যদিও ভিসাগুলোর ব্যবহার কখোনোই করা হয়ে ওঠেনি। তাই বলে যেনো ভাববেন না মোজাম্বিকে যাইনি! বিনা পাসপোর্ট-ভিসায় একাধিকবার গিয়েছি। তবে সে যাওয়া সীমান্তের এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলো।
তবে, মোজাম্বিক সীমান্তে অবস্থিত মালাওইর সানজে (Nsanje) এলাকায় প্রজেক্ট ভিজিটে গেলে রাতে খুব সাবধানে থাকতে হতো আর গাড়িতেই ঘুমাতে হতো। মোজাম্বিকান রেবেলরা সানজে এলাকায় পালিয়ে থাকতো এবং খুবই জ্বালাতো। এদের ডাকাতির একটা বহুল প্রচলিত পদ্ধতি ছিলো এরা বালতিতে করে ঘন করে ডিটারজেন্ট গুলে রাস্তায় ঢেলে দিয়ে রাখতো। কোনও গাড়ি সেই ডিটারজেন্ট ঢালা রাস্তা পেরোতে গিয়ে স্কিড করে অবধারিত ভাবে কাছের গাছে বাড়ি খেতো নতুবা রাস্তার পাশের খাদে পড়ে থাকতো। এরা সেই সময় এসে সব লুটপাট করে নিয়ে চলে যেতো।
কল্যাণ Fদার ছবি দেখে ভালো লাগলো। চেহারাটা কেমন যেনো চেনা চেনা লাগছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
মালাওয়ী হ্রদ দেখার খুব ইচ্ছে ছিল, সেবার হয় নি। আপনি এখন কোথায় !
facebook
লেক মালাউই চমৎকার একটা জায়গা। তার উপরে সেখানে আছে বার্ডস আইল্যান্ড। পাখি এবং সরীসৃপে গিজগিজ করছে ছোট্ট পাথুরে দ্বীপটা। আরো আছে চমৎকার সব রিসর্টগুলো। ওখানকার সবথেকে নামকরা রিটর্স যা লেকের পাড় ঘেঁষে ৯৬০ মিটার দীর্ঘ, সান-এন-স্যান্ডস। এটার মালিক আবদুল মুনাফ রশীদ একসময় আমার বোজম দোস্ত ছিলো। ওখানে সাঁতরাতে পারবেন, স্পিড বোট রাইড করতে পারবেন, আর ট্যাক ভরা কড়ি থাকলে পাওয়ার গ্লাইডারেও একটা চক্কর মারতে পাবেন, আর পাবেন জেলেদের কাছ থেকে সদ্য ধরা চাম্বো মাছ। আর সান-এন-স্যান্ডে গেলে স্থুলবক্ষা-গুরুনিতম্বিনী পর্তুগীজ ইজাবেলের দেখা পাবেন, আর সাথে একটা বোকাচোদারও দেখা পাবেন, নাম উৎপল, কলকাতায় বাড়ি। ওখানকার চিফ শেফ। উনি আবার ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষা চোদান না। মানে আপনি বাংলায় কথা বললেও উনি ইংরেজিতে উত্তর চোদাবেন।
এই মুহুর্তে ঢাকায় আছি। ২০১২ তে বিদেশ ভ্রমণ বিশেষ না করার পরিকল্পনা করেছি। তা'ও কম হলেও গোটা আষ্টেক প্ল্যান চুড়ান্ত হয়ে গেছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ঠিক আছে, পরের বার আপনাকে আগেই জানাব।
এখন শুধু বলেন তাঞ্জানিয়া- কেনিয়ায় এমন কোন বোজম বন্ধু আছে নাকি! বিশেষ করে সাফারি এলাকায় !
facebook
কেনিয়ায় আছে, অনেক। তবে সাফারী এলাকায় নয়। আপনি হয়তো জানেন যে মাসাই মারা এলাকা কিন্তু তেমন জনবসতিপূর্ণ নয়। আর নাকুরুতে দুইজন ক্ষণিকের বান্ধবী ছিলো, কিন্তু আর কন্টাক্ট নাই। আমার সার্কেলের সবাই নাইরোবিতে বসবাস করে। তবে আমাদের পার্টনার অব ক্রাইম পিটার আছে। একটা প্রাইভেট রেন্টে-আ-কারের মালিক।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দুনিয়াটা খুব ছোট রাতঃদা
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আসলেই তাই। কিন্তু ঠিক মনে করতে পারছি না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
facebook
চোখ টিপে লাভ হবেনা ভায়া। ঠিকই মনে পড়ে যাবে একসময়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
কি একটা গান ছিল না== চোখ হল সেই আয়না, যাকে কখনো ভুলানো যায় না।
facebook
facebook
খুব মজা পাইছি, ভীষণ। পুলিসদা এবং বৌদিকে অনেক শুভেচ্ছা। এই মানুষটিকে আমিও দেখিনি কাছে থেকে, কিন্তু তারপরেও অনেক কাছের মনে হয়, কি করে যে এমন হয়... থাক আর নাইবা বললাম।
ডাকঘর | ছবিঘর
দাদা কিন্তু এল তেড়ে, ফৌজদারি আইন নেড়ে! এখন বুঝবেন মজাটা !
facebook
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
৮ নং ছবির পাকনা, কিউট পোলাটার বুটস্ খুবই মনে ধরেছে।
প্রীতি... খুব সোন্দর্য্য ।
কল্যাণ...ভাল মানুষের মত চেহারা।
অণুর লেখা ও ছবি... সুপার নাইস
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
হ, ঐ পোলা দেখতে আমার বাল্য বন্ধু লেলিনের মত, গাব্দুগুব্দু!
facebook
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
facebook
বরাবরের মত অসাধারণ লাগল....
মূর্তালা রামাত
অনেক ধন্যবাদ।
facebook
ছোট পরিসরে মোজাম্বিক সম্পর্কে একটা আইডিয়া পাওয়া গেল প্লাস দেখাও গেল !
সুন্দর পোষ্ট
ঘ্যাচাং!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
facebook
অণু, অনেক কিছু লেখার ইচ্ছা ছিল মন্তব্যে, লিখেও ছিলাম, কিন্তু কি যে করলাম আর কি করে যে পেজ রিফ্রেশ হল পুরো মন্তব্য গায়েব। যাই হোক, মোদ্দা কথা হল আমার ভয়ঙ্কর বোরিং আর কল্যাণের ভয়ঙ্কর ব্যাস্ত জীবনে দুই দিনে যে আনন্দ আমাদের দিয়ে গেছো সে জন্য মস্তবড় একটা ধন্যবাদ তোমার এখনো পাওনা। তুমি তাড়াতাড়ি সাউথ আফ্রিকায় চলে আস, আবার মজা করব আমরা, আমাদের এখনো ক্রুগার ঘোরাও বাকি আছে। কল্যাণ এখনো লেখাটা পড়ে উঠতে পারেনি মনে হচ্ছে, বেচারা অনেক দৌড়ের উপর আছে, তাই আমি ওর আগে মন্তব্য করার চান্স পেয়ে গেলাম । লেখা অনেক ভাল হয়েছে, অবশ্য তোমার সব লেখাই চমৎকার হয়। ভাল থেক অণু আর তোমার বিশ্বভ্রমণ চলতে থাকুক সমানে।
আর বলেন না, যদি জানতাম ডারবানে খেলা ড্র হবে তাহলে মোজাম্বিকই থাকতাম বেশ কিছু দিন!
আসব, কিন্তু জো বার্গ না, কেপ টাউন, তারপর আপনাদের নিয়ে নামিবিয়া, বতসোয়ানা। কিন্তু এই দাদা ছুটি পেলে একসাথে কিলিমানজারো যাবার কথা, আপনি জোরসে তাগাদা দিয়ে যান !
facebook
আগের অসম্পূর্ন মন্তব্যটা বেজায়গায় পোষ্ট হয়ে গেছিল।
আপনার এই পর্বটার মধ্যে যাত্রাপথের ইমিগ্রেশান বর্ণনাটা বাড়তি পাওনা। ভ্রমণব্লগে এই জাতীয় বর্ণনাগুলো বিশেষ উপাদেয়। বিশেষ করে আপনি যেসব জায়গায় গেছেন সেই জায়গাগুলোতে আর কেউ যেতে চাইলে ওখান থেকে কিছু তথ্য কাজে লাগাতে পারে। খরচ, নিরাপত্তা, যাতায়াত ব্যবস্থা, খাওয়া জাতীয় বর্ণনার সংযুক্তি চাই আগামী পর্বগুলোতেও।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চেষ্টা করব, তবে অর্থনৈতিক ব্যাপারটা সবসময় ভাল শোনায় না, দেখা যাক---
facebook
হুম্ম...এই লেখা অতি বাজে আর ভুলে ভরা । অণু যেমনে কইছে অত খাতির তারে করা হয় নাই, খিক্ক। তবে কিনা এক বোতল ওয়াইন শেষ করার পর সচল-বতুতা রাত দুইটায় কোই যেন আটকা পড়ছিলো (বতুতারেও তাইলে আটকানো যায়!!!! ), সেই গঠনা কোই? আর উপরে প্রীতিও দেখি বেমালুম চেপে যাচ্ছে, এইটা পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কি?
মাপুতোতে একটা রাস্তা দেখেছিলাম নাম জিনবালা স্ট্রিট, তাইলে ওই মাপুতো চ্যানেলের কাছেই কি কোথাও আই লাভ ইউ ম্যানের জিনবালা বে?
অদ্ভুত ঘটনা হল মাপুতো থাকতে থাকতে হাপায় গেছিলাম, সব সময় প্ল্যান করতাম কেমনে কেটে পড়া যায়। কিন্তু এখন আবার মাপুতো মিস করি (আজব), গত ৩১শে একবেলার জন্যে গেছিলাম আবার, নেমে রাস্তায় বের হয়ে মনটা বেশ খারাপ হল। আহা কত সুন্দর কিছু সময় কেটে গেছে মাপুতোতে। আর জোবার্গের থেকে মাপুতো অবশ্যই নিরাপদ, তবে ঝালেমা কিন্তু সবখানেই আছে। আমার অবশ্য তিন বছরে মাত্র এক বার সমস্যা হয়েছে মাপুতোতে।
একেবারে প্রথম ছবিটার নারকেল গাছের তলার কূড়ে ঘরটা একটা ক্যাফে। বেশ কিছু সন্ধ্যা কাইপিরিয়া খেয়ে কেটে গেছে ওই যায়গায়। আর ওই ক্যাফের পাশেই আমরা উইক এন্ডে মাছ ধরতে যেতাম। যায়গাটা আমার আর প্রীতির দুইজনেরি খুব প্রিয় ছিল। আর একুশ নাম্বার ছবিটাতে যে রাস্তার মত দেখা যাচ্ছে, রবিবারে বিয়ের পর আসল মোজাম্বিকানরা ওইটা ধরে বর-বউ বিকালে বন্ধু বান্ধব নিয়ে হেটে হেটে একেবারে পানির কাছে চলে যায়, তারপর হালকাপাতলা পান-টান করে ছবি টবি তুলে আবার চলে আসে (কেন যানি না, কোন একটা আচার বা প্রথা হবে)।
কয়দিন আগে শুনলাম বাংলাদেশীদের আর মোজাম্বিকে পোর্ট এন্ট্রি দিচ্ছে না। ভিসা নিয়ে তারপর এন্ট্রি। শুখের দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার দিকের জংগল আর গেম রিজার্ভটা হল ক্রুগার পার্ক, মোজাম্বিকের দিকে জংগল কেটে সাফা করে ফেলছে, চাইনীজ বাটকুরা অতি অল্প পয়সা খরচ করে মিলিয়ন ডলারের গাছ কেটে চীনে পাচার করে দিছে অনেক আগেই।
মোজাম্বিকের সাধারন কালো মানুষগুলো অতি নরম সরম আর ভদ্র। বদও আছে কিছু, যেই গুলা একটু উপরে উঠে গেছে টাকা পয়সা করছে সেইগুলা তুলনামূলকভাবে পাজী, আর ভয়ংকর দুর্নীতিগ্রস্ত। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকানদের একটু দুর্নাম শুনেছি কর্কশ বলে। তবে সবথেকে পাজী হল ভারতীয় আর পাকিস্তানী বংশদ্ভুত মোজাম্বিকানরা, শুনতে খারাপ শোনালেও এটাই বাস্তব। ওরাইতো বেশীরভাগ দোকান টোকানের মালিক, খালি টাকা কম দেওয়া চেষ্টা করে। মানে খুচ্রা ফেরত দেওয়ার সময় কম দেয়, কম কেন জিজ্ঞেস করলে তাড়াতাড়ি দেশকুল্পা (দুঃখিত) বলে বাকি টাকা ফেরত দেয়। একবার দুইবার না অনেক বার এইরকম হয়েছে আমার সাথে এবং প্রীতির সাথেও। মোজাম্বিকের গ্রামের মানুষগুলো কিন্তু সাঙ্ঘাতিক ফ্যান্টাজমার (ভূত) ভয় পায় । যাকগা, তোমার লেখার থেকে আমার মন্তব্য বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে, এইবার কেটে পড়ি।
(টীকাঃ পর্তুগীজ উচ্চারণ কিন্তু অতি ভয়ানক, আমার গাড়ি চালক=দোশিন, মুচাশ=মুইতো। প্রথম দিকে আমার এক কলিগের নামের বানান দেখে মনে করেছিলাম মাজাকো, পরে শুনি সবাই ওই ব্যাটারে মাগাছ বলে ডাক্তেছে , কি বিপদ। ঘটনা হল তিন বছরে আমার দৌড় ওই মুইতো অব্রিগাদো পর্যন্তই )
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
তাহলে বড় মন্তব্য না লিখে একটা ছোট লেখাই দেন !!
ঐ ঘটনা পড়ে আসবে, কোন সংকলনের ফাঁকে!
যতই দৌড়ের উপরে থাকেন্ কিলি যেন ঠিক থাকে !
facebook
facebook
নতুন মন্তব্য করুন