কালাকমুলের পিরামিড থেকে তো নামলাম, নতুন গন্তব্যে যাবার সময় হয়ে এসেছে, বন্ধু ইয়াইয়াস পিরামিডের চুড়োতেই থেকে গেল আরো খানিকক্ষণের জন্য, আর অন্য পিরামিড থেকে নেমে আসা হুয়ান ভিদাল আর চিকোর সাথে দেখা পথের মাঝে এমন সময় পাশে ঘন বন ভেদ করে কর্ণকুহরে তোপ দাগাল বিকট এক চিৎকার।
মনে পড়ল স্কুল জীবনের অন্যতম প্রিয় বই তিন গোয়েন্দার ভীষণ অরণ্যের কথা, এই ডাক শুনেই তিন গোয়েন্দা ভেবেছিল হয়ত এক সাথে ডেকে উঠেছে আমাজনের সব জাগুয়ার নয়ত মরণযুদ্ধে মেতেছে একপাল বুনো সিংহ কিন্তু আসলে খোলা হাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে গলা সাধতে বসেছে একপাল হাওলার বানর!
নামেই যে তাদের পরিচয়, হাউল মানেই উৎকট চিৎকার যে! স্থলচর প্রাণীদের মাঝে সবচেয়ে বিকট আওয়াজ সৃষ্টি করার সুনাম বা দুর্নাম কিন্তু এই গোত্রের বানরেরই, ৩২ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায় তাদের এই আনন্দ উল্লাস!
কিন্তু এ যাত্রা চিৎকারের মাত্রা শুনে মনে হল খুব একটা দূরে নেই শাখামৃগ মহাজন, হুয়ানের আবার খুব উৎসাহ বুনো প্রাণীর ছবি তোলার ব্যাপারে, তাই দুই বন্ধু একমত হয়ে খানিকটা বেআইনি ভাবেই পথ ছেড়ে নেমে পড়লাম সেই চিৎকারের উৎসের সন্ধানে, অন্য জন চিকো প্রতিশ্রুতি দিল সে ইয়াইয়াসকে নিয়ে পথের ধারেই অপেক্ষা করবে।
ঘন জঙ্গল মাড়িয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হল, মিনিট দশেক ভালই এগোলাম সরাসরি সেই বানরের অবস্থানের দিকে, এরপর দেখি চারিদিকে একের পর এক গাছে ভেঙ্গে পড়ে আছে, তার কোন কোনটা আবার টপকানো মহা ঝামেলার ব্যাপার, তখন এড়িয়ে খানিকটা বাঁকা পথে যেতে হচ্ছে। এভাবেই একসময় দেখা হল কয়েকটা অদ্ভুত রঙচঙে ছোট্ট ব্যাঙের সাথে, গায়ের চামড়া এতটাই উজ্জল রঙিন মনে হল সেজান না হলে ভ্যান গগের ক্যানভাসে খানিকক্ষণ আচ্ছাসে ঘষে তাদের এই চির সবুজ বৃষ্টি অরণ্যে ছেড়ে দিয়েছে কোন খেয়ালী শিল্পী। কিন্তু এই সৌন্দর্যে ভুলবার পাত্র আমরা নয়, খুব ভাল মতই জানি এই একরত্তি রঙচঙে উভচরগুলো মহা বিষাক্ত!
মানে মানে তাদেরকে তাদের আস্তানায় থাকতে দিয়ে আবার শুরু হল বন চলা, যদিও যতই গভীরে যাচ্ছি ততই বন্ধুর হয়ে উঠছে ঘন থেকে ঘনতর হয়ে ওঠা নিবিড় অরণ্যের কারণে। উৎসাহের মহা আতিশয্যে যে স্রেফ চপ্পল পড়ে , হাফ প্যান্ট আর ধবধবে সাদা ফতুয়া পড়ে বনে অনুপ্রবেশ করেছি তা এতক্ষনে মনে হল!
প্রকৃতিতে প্রবেশ করার সময় অবশ্যই আশেপাশের পরিবেশের সাথে মিলিয়ে গাঢ় রঙের কাপড় পরা উচিত, যাতে কোন প্রাণী যেন অস্বস্তির শিকার না হয়, এই বিষাক্ত ব্যাঙ আর পতঙ্গময় অঞ্চলে গোড়ালি পর্যন্ত ঢেকে মোটা কাপড়ের প্যান্ট পড়া উচিত, গরমে ঘেমে চটচটে অনুভূতি হলেও, হাফপ্যান্ট স্রেফ বাতিলের খাতায়, আর চপ্পলের স্যান্ডেল ! নিষিদ্ধ বস্তু। হাইকিং বুট না থাকলেও নিদেনপক্ষে কেডস থাকতেই হবে, যদি হঠাৎ গাছে চড়তে হয়? কিংবা দৌড়াতে? দেখা যাচ্ছে, আমরা চরম অপ্রস্তুত অবস্থায় বিশ্বের সবচেয়ে গহীন বনগুলোর একটায় প্রবেশ করে ফেলেছি ঝোঁকের মাথায়, এখন বানর দর্শন শেষে ভাল ভাল বেরিয়ে যেতে পারলেই হয়।
চারিদিকে একটা ঝাঝাল বনজ লতাপাতার গন্ধ, বিশ্ব চরাচরে সেই বানরের উদ্ভট চিৎকার বাদে আর কোন শব্দ নেই এই সময় এক পড়ে থাকা গুঁড়ি টপকে যাবার সময় মনে হল সাদা সাদা কি যেন সামনে সারি বেঁধে পড়ে আছে। সামনে যেতেই আত্মারাম খাঁচা ছাড়া না হলেও অজানা আদিম অনুভূতির বেশ একটা শীতল স্রোত নেমে গেলে মেরুদণ্ড বেয়ে, হাড়ের স্তুপ!
হতে পারে প্রাকৃতিক নিয়মেই কোন বড় প্রাণী এখানে মরে মাটিতে মিশে যাবার পর তার হাড় কখানা কেবল এখনো বাকী আছে, কিন্তু তার মিনিট খানেকের মধ্যেই আবার বড় একটা হাড়ের স্তুপ দেখার পর মনে হল কোন মাংসাশী জন্তু এখানে হয়ত শিকার ধরে এনে নিয়মিত ভোজন সারে, এটাই হয়ত তার নিরিবিলিতে পেটপুজোর গোপন জায়গা। হুয়ান বিড়বিড় করে বলতে লাগল- খারাপ জায়গা, খুবই খারাপ জায়গা।
আগেই বলেছি অরণ্যের সেই অঞ্চলে জুড়ে সবখানেই ভেঙ্গে পড়ে আছে গাছের ডাল, আর সবাই জানেন পড়ে থাকা ডালে পচন ধরলে তা উপর থেকে দেখতে অক্ষত লাগলেও ভিতরে হয়ে যায় সম্পূর্ণ ক্ষয়প্রাপ্ত। সামান্য চাপ পড়লেই মট করে ভেঙ্গে যায় তা, যে কোন পলকা ডালের মতই। ঠিক সেই সময়েই ডান দিক থেকে স্পষ্ট এমন ডাল ভাঙ্গার শব্দ এসে মিসাইলের মত কানে আঘাত করল- মট! এর মিনিট দুয়েকের মাঝেই আরো দুই বার এবং ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে! স্পষ্ট মনে হল কোন ভারী শরীরের জন্তু আমাদের ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ করছে অনেকক্ষণ ধরেই! সে যথেষ্ট সতর্ক হওয়া স্বত্বেও চারিদিকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পচা ডালপালার কারণেই তার ক্ষুর বা থাবার নিচে ভেঙ্গে শব্দগুলো উৎপন্ন হয়েছে।
সুন্দরবনের সেই অমোঘ কথাটি মনে হল- বনে কোন হঠকারী কাজ করবেন না, মনে রাখবেন আপনি বাঘকে না দেখলেও বাঘ কিন্তু আপনাকে সবসময়ই নজরে রাখছে।
দেহের প্রতি শিরা উপশিরায় ছুটল অ্যাড্রিনালিনের উত্তাল স্রোত, অজানা বিপদের শঙ্কায় বাকরুদ্ধ হয়ে দুই বন্ধুই হাতে তুলে নিলাম পাশে পড়ে থাকে লম্বা ডাল, উদ্দেশ্য সেই প্রাণী আক্রমণ করতে আসলে অন্তত লাঠির মত ব্যবহার করতে পারব, কিন্তু বিধি বাম হয়ত অধিক উত্তেজনায় নতুবা আতঙ্কিত অবস্থায় শরীরে চলে আসা অযাচিত বলের কারণেই হাতের মুঠোর মাঝে ধরা ডাল দুটোই ভেঙ্গে গেল ! এমন আরও একবার ঘটার পড়ে মোটামুটি চলনসই ডাল পাওয়া গেল, যেটা মরবার আগ মুহূর্তে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে যাইলেও যাইতে পারে।
এদিকে সেই জন্তুর পায়চারিতে কখনো বেশ কাছেই ডাল ভাঙছে, তো কখনো খানিকটে দূরে। হয়ত এমন চলেছিল মাত্র কয়েক মিনিট কিন্তু যার ব্যপ্তি সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল যুগ যুগান্তর! নানা বইতে এমন ঘটনা পড়েছি অগণিত বার, কিন্তু বাস্তবে আসলেই এমন অবস্থায় পড়লে যে কি বিভীষিকাময় পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, রোমাঞ্চময় রোমান্টিকতার ছিটেফোঁটাও যে থাকে না এতে, তার প্রমাণ হয়ে গেল হাড়ে হাড়ে।
শেষে দুই বন্ধু একজন আরেকজনের পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে সেই অকেজো লাঠি হাতে কেবল কোনমতে প্রতীক্ষা করতে থাকলাম কোন মুখ ব্যাদান করে থাকা শ্বাপদের, কারণ তখন আমার মনে পড়ে গিয়েছে কালাকমূলের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশের সময় দেখা এক সাইনবোর্ড, যাতে উল্লেখ ছিল মেক্সিকোতে বসবাসরত ৬ ধরনের বৃহৎ মার্জার জাতীয় প্রাণীর মধ্যে ৫টিই এই বনে পাওয়া যায়, যার অন্যতম আমাজনের রাজা জাগুয়ার, সেই সাথে আছে অসেলট এবং পার্বত্য সিংহখ্যাত পুমা !
হৃৎপিণ্ড নামের রক্ত সঞ্চালন পাম্পটা বহুদিন এমন জোরসে কাজ করে নি, মনে হচ্ছে হাওলার বানরের ডাকের চেয়েও অনেক দূর থেকে শোনা যাবে আমাদের সম্মিলিত হৃৎস্পন্দন। স্যাঁতস্যাঁতে গরমে এমনই ঘাম ছিলাম, এখন তো কুলকুল ঘামের ধারা নামছে সারা শরীর বেয়ে, মৃত্যু তো আসতেই পারে জীবন নদীর যে কোন বাঁকেই, তাই বলে মেক্সিকোর বনে, এইভাবে কোন প্রস্তুতি ছাড়াই ! অস্ফুট কণ্ঠে হুয়ানকে কেবল বলতে পারলাম, আশা করি এই জীবটা কোন পথ ভোলা বাচ্চা জাগুয়ার না, তাহলে তার সন্ধানে এসে হাজির হবে তার পূর্ণ বয়স্ক মা !
সেই সময়ে মাত্র কয়েক ফুট দূরে অত্যন্ত আবছা ভাবে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের জন্য দেখা মিলল সেই পরাবাস্তব শ্বাপদের, ধোয়াটে অরণ্য ভেদ করে দৃষ্টিসীমার শেষ প্রান্তে কেবল বাস্তবে রূপ নিল চারটে পা, হিংস্র শিকারি প্রাণীর বলিষ্ঠ পা, এক খানা লম্বা লেজ, মুখ ঢাকা পড়ে গেছে সামনের গাছের আড়ালে, আর তার শরীরে মনে হল কেবল দুইটি বর্ণই দেখতে পেলাম- কালো এবং হলদে !!
আজ পর্যন্ত হলপ করে বলতে পারি না সেটা কি ছিল, নিঃসন্দেহে বেড়াল জাতীয় প্রাণী, কিন্তু জাগুয়ার না অসেলট না বন বেড়াল বলতে পারি না, তবে বেশ বড় আকৃতির, নেহাৎ খোকাটি নয় ।
আবারো অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি আক্রমণের, নিদেনপক্ষে কোন সন্দেহজনক শব্দের, তারপর আসল সামনে ঝোপের আড়াল থেকে খর খর আওয়াজ , বেশ অন্য ধরনের। কৌতূহলী হয়ে এগোতেই বেশ সরগোল করে দুটি বড় পাখি সেই ঘন বনে চোখের পলক ফেলার আগেই অদৃশ্য হয়ে গেল! সেই সাথে নিশ্চিন্ত করে গেল আমাদের, ধারে কাছে সেই শ্বাপদ থাকলে এত উপাদেয় খাবার বিশাল পাখিগুলো এত নিশ্চিন্তে ঘুরত না!
মানে আমরা মুক্ত, মানে আমরা বেঁচে আছি অক্ষত অবস্থায়! কি যে অদম্য এক ভাল লাগার অনুভূতির আমেজ ছড়িয়ে পড়ল সারা শরীর জুড়ে, সবুজ পাতায় পিছলে যাওয়া রোদের সরলতাকেও মনে হল জীবনের সেরা সঞ্চয়। কি অপূর্ব এই বেঁচে থাকা।
সেই মর্কটরাজ তখনো তার অস্তিত্বের জানান দিয়েই যাচ্ছে সগর্বে, যদিও তার টিকিটির দেখাও মিলছে না।
এই সময় টের পেলাম আমরা পথ হারিয়েছি! এমনিতেই অনেকক্ষণ এঁকে বেঁকে ঘুরেছি বনের মাঝে, তার উপর সেই বড় বেড়ালের উপস্থিতিতে কখন যে পথ হারিয়ে অন্য প্রান্তে চলে এসেছি কিছুই ঠাহর করতে পারি নি। কিন্তু কেবল বানরটাকে মনে হচ্ছে আশে পাশের কোন গাছেই আছে, তার হুঙ্কারের তীব্রতা শুনে হুয়ান বারদুয়েক বললই, কাছে যাবার দরকার নেই, মনে হচ্ছে আঁচড়ে কামড়ে দিতে পারে!
ভাগ্যিস হাওলার বানরদের নিয়ে একাধিক রিপোর্ট পড়া ছাড়াও একাধিক তথ্যচিত্র দেখা ছিল, এটুকু অন্তত জানি তাদের চিৎকারটাই এমন বীভৎস, তারা বানর হিসেবে যথেষ্টই ভদ্র। হয়ত টিকে থাকার জণ্য বিবর্তনের পথ ধরে এই নিরীহ দর্শন প্রাণীর মাঝে এই বিকট আওয়াজের জন্ম নিয়েছে, যাতে আক্রমণকারী প্রাণীরা ভয়ে তাদের এড়িয়ে চলে।
অবশেষে কাছের এক গাছের মগডালের দেখা মিলল দিনের রাজার, মিশমিশে কালো উলের বলের মত, থেকে থেকে গলার থলি ফুলিয়ে পিলে চমকে দিচ্ছে সমস্ত জঙ্গলের। তার পিচ্চি আকৃতি দেখে হুয়ান প্রথমে রেগে কাই, বলে- এই ফাজিল ব্যাটার জন্যই আমাদের আজ এই হেনস্থা, এত ছোট্ট শরীর নিয়ে এমন ডাকের প্রয়োজনই বা কি! পারলে সে গাছে উঠে তখনই পরমাত্মীয়ের কাছে এর জবাবদিহিতা দাবী করে বসে!
বেশ কয়েক মিনিট দেখলাম তার বাঁদরামো, অন্য ধরনের একটা অদ্ভুত সুরেলা শব্দ কানে প্রবেশ করতেই উটকো আপদ ভেবে আমি চমকে উঠলেও হুয়ান নিশ্চিন্তের হাসি দিয়ে বলল, আর চিন্তা নেই চিকো চলে এসেছে! সেও ঠোঁট গোল করে একই ধরনের শীষ দিল, অন্যদিক থেকে মিলল উত্তর, এর পরপরই দেখা মিলল জঙ্গল মাড়িয়ে আসতে থাকা চিকো এবং ইসাইয়াসের!
এর পরের অংশ ইসায়াসের মুখে শোনা- বেশ খানিক্ষন অপেক্ষা করেও আমাদের পাত্তা না পেয়ে তার মনে সন্দেহ জাগে হয়ত আমরা পথ হারিয়েছি, কাজেই সূর্যের অবস্থান আর পিরামিডের দিকের একটা হিসাব কষে সে বানরটির ডাক বরাবর অন্য পথ ধরে আসতে থাকে, মজার ব্যাপার হচ্ছে সে আসার আগে ভিডিও ক্যামেরা চালু করে এটা বলতে বলতে আসে যে- আমি ইয়ূকাটানের জঙ্গলে প্রবেশ করছি পথ হারানো অণু এবং হুয়ানকে উদ্ধারের জন্য।
একসাথে আবার মূল পথে ফিরে এলাম আমরা।
ফটকের দিকে এগিয়ে আসার সময় দেখা মিলে গেল দুই দল স্পাইডার বানরের ( মাকড়শা বানর), বিশ্বের একমাত্র প্রাইমেট যাদের বুড়ো আঙ্গুল নেই ! চিন্তা করে দেখবেন বুড়ো আঙ্গুল না থাকলে লক্ষ বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা শক্ত করে পাথরের অস্ত্র ধরতে সক্ষম হত না, মানে মানব সভ্যতায় গড়ে উঠত না বুড়ো আঙ্গুলের অভাবে।
কিন্তু সেই বুড়ো আঙ্গুলের অভাবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঠিকই এই জীবনের নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে মাকড়শা বানরের দল, প্রকৃতি তাদের দিয়েছে বিশাল লম্বা লেজ, এবং সেই লেজকে অতিরিক্ত একটি হাতের মত করে ব্যবহারের ক্ষমতা।
মাকড়শা বানরদের ছবি তুলতে গিয়েই ফেজ্যাণ্ট পাখিদের সাথে দেখা হয়ে গেল, কিন্তু লাজুক পাখিরা বেশী সময় না দিয়েই বেরসিকের মত বিদায় নিল।
বানরদের ২য় দলটার ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকার সময় মনে হল কাঠঠোকরার গাছের ডালের ঠোকরানোর মত একটা আওয়াজ পেলাম কিন্তু অনেক জোরালো সেই শব্দ! শব্দের সন্ধানে ঘাড় ঘুরাতেই কয়েকটা ক্ষুদ্রাকৃতির রঙে সিক্ত রঙধনু যেন উড়ে গেল বনের এক প্রান্তে, বিশ্বের অন্যতম সুদর্শন রঙ ঝলমলে পাখি টুকান!
বইয়ের মলাটে দেখেও কোন দিন বিশ্বাস হয় নি টুকান বাস্তবে এত সুন্দর হতে পারে! কি অপূর্ব ঠোঁট তার, কি চমৎকার পালক, আর সবচেয়ে বিস্ময়কর তার রঙ ! সেই উড়ন্ত বিস্ময়কর সৌন্দর্যকে ফ্রেমবন্দী করতেই চলে গেল বাকী সময়টুকু।
স্মৃতির মণিকোঠায় চির ভাস্বর একটা দিন নিয়ে কালাকমুলকে আপাতত বিদায় জানিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হল মেক্সিকো উপসাগরের দিকে--
মন্তব্য
বনের ভেতর ঢুকে হারিয়ে যাওয়া বা পশুপাখির বিকট চিৎকারে চমকে উঠা অন্যরকম এডভেঞ্চার। বন বললেই আমরা বুঝি কত পশুপাখির উপস্থিতি। আসলেও তাই। কিন্তু বনের ভেতরে গেলে তাদের দেখা মেলা ভাগ্যের ব্যাপার। সুন্দরবনে গিয়েও আমাদের একই অবস্থা হয়েছিল, কোন পশুপাখির দেখা মিলে না। স্পাইডার বানরের নাম শুনেছি, বিস্তারিত জানা হল। যে কয়টা পশুপাখির ছবি দেখলাম আর জানলাম ভাল লাগলো। সামনে আরও অনেক পশুপাখিকে নিয়ে ছবি ও লেখা সম্মিলিত লেখা আশা করছি।
পশুপাখি থাকে ঠিকই, কিন্তু তাদের দেখা পাওয়া মুশকিল!
সবাই মানুষকে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে ।
facebook
মানবজাতি খুবই খারাপ জাতি
ঠিক, যদিও তারা সেটা মনে করে না।
facebook
facebook
আমি তো পরী তাই ডোন্ট অউরি মুডেই থাকি
facebook
ওই বিলাই কে । আপনারে খায়া ফেললে ব্যাপক অঘটন হইয়া যাইত!
পোস্ট
হ, কিন্তু তেমন কিছুই করার ছিল না
facebook
ইমো লাইক হইছে
facebook
সিম্বা কিন্তু অণু ভাইরে না খাওয়া বিলাইয়ের মতন ভালু । সিম্বারে ভিলেন বানানো চলবেনা!!
facebook
দারুণ হয়েছে এই পর্বটা!
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
facebook
আপ্নারে আর (গুড়)
আর আমার নিজের কপালরে ঝ্যটারবাড়ী।
হ, যান না পথ হারিয়ে দেখব নি, নিজের কপালকে শাপ-শাপান্ত করেন কি না !
facebook
হারায়ছিলাম তো একবার, অনেক আগে, গজনীর বনে।
গাজীপুরে নাকি !
facebook
নাহ। গাজীপুরে কি আর বন-পাহাড় আছেরে ভাই। এইটা ময়মনসিংহ এর শেষ মাথায়, ভারত এর বর্ডার এর পরেই। গিয়েছিলাম ভূত ধরতে। সে ছিল একটা জীবন।
ভূত ধরে কি হোমোপ্যাথিক বোতলে ভরে রেখেছিলেন! লিখে ফেলেন না সেই ঘটনা!
facebook
হারায় যাইতেন বনের মধ্যে, ভাল মানুষ আছিলাম, পুরাই হিংসুইট্যা বানাই দিছেন। অনেক তো ঘুরলেন, বাকি জীবন বনে কাটাইলে ক্ষতি কিছু হইত না আপনার
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কোন আপত্তি নাই! বন খুজছি, যেটাতে হারানো যাবে !
facebook
এখানে একজন মুগ্ধ পাঠক এবং দর্শক স্তব্ধ হয়ে বসে আছে।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
সে যে বসে আছে, বসে আছে==
facebook
সে যে বসে আছে 'তব্ধা তব্ধা'------(একা একা না হইয়া 'তব্ধা তব্ধা' হইব )
চ্যাইপা যান--
facebook
কি লিখব বলতো। আচ্ছা লিখলাম - ভালো লেগেছে। ভালো লাগা ছাড়া আর কি উপায় আছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
অন্য কিছুও লিখতে পার তাপস দা। যেমন, এই পরিস্থিতিতে নিজের কি করার থাকে---
facebook
আমি হইলে হাজারখানেক বার শিট ম্যান শিট ম্যান কইতাম! (আমার খারাপ অভ্যাস!!)
, হাজার বারের সময় পাইলে তো!
facebook
আপনেরে সচল বানায় দিয়াও থামানো গেলো না!!! অণুদা ইজ গ্রেট!!!
_____________________
Give Her Freedom!
আমি কি ঈষৎ অচল হব !
facebook
টুকান পাখিটা খুব ভাল লাগল। আমি শুধু এগুলো ক্যালেন্ডারের পাতাতেই দেখেছি।
অটঃ বাঘ আপনাকে দেখলে নিশ্চিত তার বাড়িতে নেমতন্ন করত, আর তারপর
এতই সহজ! বাতাপি আর ইম্বলের মত বাহির হয়ে আসতাম যে---
facebook
সবগুলো ছবি যে কি অসাধারণ ! শুধুমাত্র টুকান পাখিটার ছবির জন্যই অনেক অনেক ধন্যবাদ দেয়া যেত আপনাকে । বাকি ছবিগুলোর জন্যও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি । আর বিপদ হবে কেন আপনার । আমাদের দোয়া আপনার সাথে আছে না ।নাহলে আমরা বিশ্বময় ঘুরে বেড়াব কি করে?
টুকান যে কি অদ্ভুত সুন্দর--
facebook
facebook
ঈশ কী সুন্দর সুন্দর সব পাখি, পশু! দেখলেই মন ভাল হয়ে যায়।
ফ্লিপ-ফ্লপ (চটি বলতে লজ্জা লাগে) পড়েই এতবড় এ্যাডভেঞ্চার কাভার করলে?!
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
হে হে, ওতেই হয় !
facebook
যথারীতি দারুণ।
ইয়ূকাটানের নাম শুনেছি। জায়গাটা ক্যানকুন থেকে খুব দূরে নয়। বাড়ির পাশে মেক্সিকো গিয়েছি মাত্র একবার
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হা, কানকুন মনে হয় একই রাজ্যে। কিন্তু জঙ্গলটা বিশাল, কয়েক রাজ্য জুড়ে বিস্তৃত।
facebook
প্রথম আর শেষের পাখিটার নাম কি ধনেশ পাখি? আপনে এই পাখির ছবি এতোগুলা দিছেন ক্যান মিয়া? এই পাখির তেলের বানিজ্য করবেননি?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
না মুরব্বী ! এটা তো টুকান, ধনেশ এর চেয়ে ৪ গুন বড়!
যারা পাখির তেল কিনে এবং বেঁচে, দুই পক্ষকেই ধরে ছ্যাচা দেওয়া দরকার।
facebook
মোরাল: বিপদ মুকাবালায় চাই সঠিক ডাণ্ডা।
বিপদকে করা হবে ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা
facebook
এখানে লেখা আছে 'নতুন মন্তব্য করুন'। বলার মত নতুনতো আর কিছুই পাচ্ছিনা। বলতে বলতে (লিখতে লিখতে) সব শেষ করে ফেলেছি।
অতি সুন্দর!
দাঁড়ান, দেশে গেলে একসাথে কোথাও যাওয়া যাবে।
facebook
টান টান উত্তেজনা ছিল। ভাল লেগেছে।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
উত্তেজনা! আমার ছিল খবর।!
facebook
চালিয়ে যান এডভেঞ্চার। একদিন আমিও........
অবশ্যই
facebook
খুব ভাল লাগল ।
আপনার ছবি আর লেখার মধ্যে দিয়ে কত জায়গাই যে দেখা হয়ে গেল ।
দারুণ ।
ধন্যবাদ। নিজেও দেখবেন, শুধু সময়ের অপেক্ষা।
facebook
আমি তো শেষ পাখিটারে ধনেশ মনে করছিলাম। টুকান নামটা তো বেশ চমৎকার। তবে ধনেশ পাখির চেয়ে এইটারে রূপবতী মনে হলো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
টুকান অবশ্য অনেক ধরনের হয়। সবগুলোই রঙ ঝলমলে।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন