পিছন ফিরে দেখা - টাঙ্গুয়ার হাওর

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: মঙ্গল, ১৪/০২/২০১২ - ১২:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হাজার হ্রদের দেশ ফিনল্যান্ডে বসে লিখছি, তীব্র শীত পড়েছে বরাবরের মত, পেজা পেজা তুলোর মত তুষার পড়ার দিন আপাতত শেষ, এখন হাড় জমানো ঠান্ডার রাজত্ব। হিমাঙ্কের ৩০ ডিগ্রী নিচে, এত ঠান্ডায় তুষারপাতও বন্ধ হয়ে যায়। পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করছি আলগোছে, সাংবাদিক বন্ধু সীমান্ত দীপু আবার তাগাদা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশে কোন উল্লেখযোগ্য জায়গায় ভ্রমণের উপর লেখা দিতে হবে।

দেশ থেকে এসেছি প্রায় ৯ বছর আগে, কলেজ জীবনের পরপরই, এর পর কত দ্রুতগতিতে বছরগুলো পার হয়ে গেল! ঘটল কত চিত্র-বিচিত্র ঘটনা, বোহেমিয়ানদের মত ঘুরে বেড়ালাম ইউরোপের পথে প্রান্তরে, গেলাম সর্ব উত্তরের মানব বসতি স্পিটসবের্গেন দ্বীপপুন্জে, পৃথিবীর সর্ব উত্তরে ছয় মাস দিন- ছয় মাস রাতের রাজ্য উত্তর মেরুতে, গিরিরাজ হিমালয়ে, মধ্য প্রাচ্যের ধু ধু বালিয়াড়ির মাঝে, আল্পসের সর্বোচ্চ শিখর মঁ ব্লাতে, আন্দেজের কোলে, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে, তিব্বতের নির্জনতায়, মেক্সিকোর পিরামিডে, আফ্রিকার বুনো প্রান্তরে।

আহা, কি সব অপূর্ব স্মৃতি, সামান্য মনোযোগের আভাস পেয়ে মনের মুকুরে রাখা প্রতিটি স্মৃতি জ্বলজ্বল করে উঠছে, তারপরও কেউ যদি প্রশ্ন করে ভ্রমণের মাধ্যমে কোন জায়গাটি সবচেয়ে ভাল লেগেছে, কোনখানে বারংবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, বিন্দুমাত্র চিন্তা না করেই বলব সুনামগন্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, যেখানে প্রথম যাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সাথে পরিযায়ী পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য ২০০২ সালে, সেই প্রথম বাড়ীর বাইরে ঈদ, পুরনো রোজনামচার পাতা থেকে সেই কথায় জানাচ্ছি আজ-

যাত্রা শুরু হল ২২শে ফেব্রুয়ারী, অজানার উদ্দেশ্যে, অদেখার উদ্দেশ্যে। পাখি প্রেমিক , আলোকচিত্রগ্রাহক রোনাল্ড হালদার ভাইয়ের অতি চমৎকার সব পরিযায়ী হাসের ছবি সমৃদ্ধ টি-শার্টের পিছনে দেখতাম Have you ever been to Tangua Haor?

যেন সেই হাওরে গেলেই এই রঙ ঝলমলে পাখিগুলো দেখতে পাওয়া যাবে। তখন থেকেই সুপ্ত ইচ্ছা ছিল দেশের একবারে সীমান্তঘেষা পাখির এই গুরুত্বপূর্ণ আবাসভূমিটি দেখে আসার। কাজেই বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সেখানে যাবার খবর পেয়ে একরকম জোর করেই ইনাম ভাই-এর কাছ থেকে সাথে যাবার অনুমতি আদায় করলাম।

সুনামগন্জকে বলা হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে সমতল অন্চল,যে কারণে এখানে মাইলের পর মাইলব্যপী বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে পানি থৈ থৈ করা হাওর। এমনটাও শুনলাম, এখন যে জমিগুলো আমার দেখতে পাচ্ছি তার অধিকাংশই বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে থাকবে।

সুনামগন্জ শহরতলী থেকে সুরমা নদী পথে আমাদের যাত্রা শুরু। সুরমা ভ্রমণের জন্য অতি চমৎকার নদী, অপেক্ষাকৃত কম প্রশ্বস্ত, সর্বদাই শান্ত ভাবে বয়ে চলেছে মৃদুমন্দ হাওয়াকে সাথী করে, প্রবল স্রোত যেমন নেই এখানে, তেমন নেই বিক্ষুদ্ধ ঢেউ। অনেক সময় মনে হয় এযেন মানুষের হাতে তৈরী বড় ধরনের খাল, বিশাল এক সাপের মত একেবেকে তার গন্তব্যের দিকে এগিয়ে গেছে। দুধারের প্রাকৃতিক দৃশ্য তুলনাহীন। আসলে, মাথার উপর অবারিত নীল আকাশ, পায়ের নিচে শান্ত বহমান জলধারা, চারপাশের উম্মুক্ত প্রকৃতি যে কোন মানুষকেই কিছুটা কল্পনাবিলাসী করে তুলবে, তবে বাঁধা এখানেও আছে, সেটা হচ্ছে আমাদের ইন্জিন বোটের বিরক্তিকর একঘেয়ে ঘটঘট উৎকট শব্দ, যাকে বলা চলে রীতিমত উৎপাত!

ও বলা হয় নি, এই ট্রলারই আগামী ৫ দিনের জন্য আমাদের বাড়ী,শুধু মাত্র রাত্রিযাপন নয়, রান্না, খাওয়া থেকে শুরু করে বাথরুম পর্যন্ত সবকিছুই সম্পন্ন করতে এইখানেই। পাখি পর্যবেক্ষকের সংখ্যা ৮জন, বরাবরের মত দলনেতা ইনাম ভাই তার ক্যামেরা, টেলিস্কোপ আর দূরবীন নিয়ে ব্যস্ত, মহাকাশ মিলন ভাই আর এম এ মুহিত ন্যস্ত যাত্রার তদারকিতে, পুরনো ঢাকার আমান ভাই আর আই ইউ বি-এর শিক্ষক সাবির ভাই প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন তারিয়ে তারিয়ে , সাইফ আর আমি দলের কনিষ্ঠতম সদস্য, তাই বলে অপাংক্তেয় নয় মোটেই, আর আছেন সব যাত্রার একমাত্র বিদেশী সঙ্গী চেক ডাক্তার মারিশ্যা ক্রাউসোভা। নৌকার মাঝির সংখ্যা তিনজন, সর্দার শওকত মাঝির পরিপাটি গোফ আর জবাফুলের মত রক্তলাল চোখ বারবার এই অন্চলেরই কিংবদন্তী হাসন রাজার কথা মনে করিয়ে দেয়।

অভিযানের প্রথম দিনে যাত্রা বিরতি করতে হয়েছে মাত্র একবার, এবং তা অবশ্যই পাখি দেখার জন্য। একদা সমগ্র বাংলায় যে পাখিটি সর্বদা চোখে পড়ত, আজ তা আশ্চর্য রকমের দুলর্ভ। আমি শকুনের কথা বলছি, মানুষের অহেতুক ভীতি আর খাদ্য, বাসস্থানের উপর আগ্রাসনের কারণে পরিবেশের দারুণ উপকারী এই পাখিটি অস্তিত্ব আজ বিপন্ন, আর চোখের সামনে একসাথে চারটি শকুন, সেতো রাজদর্শনের মতই দুলর্ভ। এই বিরল দৃশ্যটি কাছে থাকে অবলোকন করা আর তাদের ক্যামেরার ফ্রেমে বন্ধী করার জন্যই আমাদের প্রথম যাত্রা বিরতি।

প্রথমদিন আরও একঝাক অতি দুলর্ভ প্রাণী দেখার হঠাৎ সুযোগ মিলেছিল আমাদের, তবে তা খেচর নয়, জলচর। নদীর এক বাঁকের মুখে শুশুক বা গাঙ্গেয় ডলফিনের ৭-৯ সদস্যের এক দলের সাথে সাক্ষাৎ ঘটল।ভয়ঙ্কর প্রাণী মনে করে অহেতুক শিকার করা আর নদী দূষণের কারণে এদের সংখ্যাও ক্রমশ শূন্যের দিকে আগাচ্ছে, অথচ জীববিজ্ঞানীদের মতে প্রায় অন্ধ এই জীবগুলো কোনভাবেই মানুষের ক্ষতি তো করেই না বরং নানা উপকারে আসে, এভাবেই দিন দিন মানুষের অজ্ঞানতা আর কুসংস্কারের ফলে এদের বিলুপ্তি ঘটছে, যেভাবে বাংলাদেশ থেকে প্রায় চিরতরে হারিয়ে গেছে মেছো কুমির বা ঘড়িয়াল।

সন্ধ্যার অল্প পরেই আলোর স্বল্পতার কারণে সেই রাতের মত যাত্রাবিরতি করতে হল যেকোন লোকালয় থেকে অনেক দূরে কোন এক অজ এলাকায়, অনাকাঙ্খিত অতিথির উপদ্রব এড়াতে নৌকা থামানো হল নদীর বুকে জেগে সদ্য জেগে ওঠা চরে, কাদায় ভর্তি সেই চরে হাটু পর্যন্ত না ডুবিয়ে হাটা প্রায় অসম্ভব কাজ, তবে লোকালয় থেকে যত দূরেই থাকি না কেন মশাদের গুনগুণ গান কিন্তু সেটা মনে করতে দেয়নি!

সকালে ঘুম ভাঙ্গল সহযাত্রীদের উত্তেজিত কথাবার্তায়, সকলের কথার সারমর্মই এক, এই ভোরে গ্রামের শিশু থেকে শুরু করে আবালবৃদ্ধবণিতা সবাই স্নান করতে নেমেছে, সূর্যদেব এখনো তার দর্শন দেন নি, তবে খুব শীঘ্রই যে মেঘ আর কুয়াশার চাদর হটিয়ে তার অস্তিত্বের জানান দিবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই,আর তখন সূর্যোদয়ের অপরূপ রং ভোরের মেঘে ছড়িয়ে গোটা প্রকৃতিকেই এক অপরূপ আভায় রাঙ্গিয়ে তুলবে,আর অপরূপ সেই দৃশ্যকে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করে স্নানার্থীদের ভাল কিছু ছবি তোলা সম্ভব হতে পারে,এটাই সবার আলোচ্য বিষয়।

যেমন কথা, তেমন কাজ- মোটামুটি সবাই ক্যামেরা ও ভিডিও ক্যামেরা হাতে নৌকার ছাদে চলে গেলেন, কিন্তু সবার মনেই একই প্রশ্ন কি কারণে আপামর জনসাধারণ এত ভোরে ঠান্ডার মাঝে জলে নেমেছে? কে যেন বলে উঠল। আজ তো ঈদ! এরা তো ঈদের গোসল করছে। আজ ঈদের দিন, পরিবারের বাইরে প্রথম ঈদ করছি, আশ্চর্য কারো মনেই হয় নি, একবারের জন্যও না! অতএব, ঈদ মোবারক!

আবার যাত্রা শুরু টাঙ্গুয়ার উদ্দেশ্যে,হাওর এলাকায় অনেক আগে প্রবেশ করলেও মূল হাওরে তখনো প্রবেশ করিনি আমরা,কয়েক ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন যাত্রার পরে চোখে যেন কিছুটা দৃষ্টি বিভ্রম দেখা দিল।
দৃষ্টি বিভ্রমই বটে, নাহলে দেশের সবচেয়ে সমতল এলাকা, মাইলের পর মাইলে হাওরের জলা, এখানে পাহাড় আসবে কোথা থেকে? চোখ ভালমত রগড়ে আবার তাকালাম, আরে পাহাড়ইতো! তাও চা বাগানের ছোট খাট টিলা নয় একবারে সুউচ্চ পাহাড়, অনেকটা টেকনাফ থেকে আরাকানের পাহাড় দেখতে যেমন লাগে সে রকম পাহাড়শ্রেণী। হতবিহবল অবস্থা কাটালেন মিলন ভাই, অনেকটা ঘোষণা দেবার ভঙ্গীতে বললেন-- মেঘালয়! মেঘালয়!!

তাই তো, আমরা এখন সীমান্তবর্তী এলাকায়, দূরে মেঘালয়ের পাহাড়শ্রেনী আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের মাথায় মেঘ জমে আছে, দূর থেকে মনে হচ্ছে পেজাঁ তুলোর ভেলা ভীড় করে আছে, সহযাত্রীদের কেউ বলে উঠল যথার্থ নাম মেঘালয়- মেঘের আলয়।

পথে পানাবিলে দেখা হল বিশ্বব্যপী বিপন্ন এবং মাছ ধরায় অপরিসীম দক্ষতার অধিকারী পাখি অসপ্রে (কালিগাল মেছো চিলে)র সাথে, সে উড়ে এসেছে ইউরোপের কোন প্রান্ত থেকে, নাতিষীতোষ্ণ শীতের আশায়।

এরকমই এক বিশাল বিলের মাঝে ব্যতিক্রমী নীল ছোপ দেখা যেতেই সবার উৎসুক হয়ে নৌকা থামাল ,যা ভাবা হয়েছে তাই, সুবিশাল জল-কাদাময় ভূ-খন্ডের এক কোণায় কয়েকশ পদ্ম নীল কালেম পাখির ঝাক। মানুষের রসনা তৃপ্ত করতে করতে এদের অস্তিত্ব ধ্বংস প্রায়,বাংলার এইসব নির্জন বিরান প্রান্তরেই আজ তাদের আস্তানা।

টাঙ্গুয়ার হাওরে যেখানে ফি বছর পাখি পর্যবেক্ষকেরা নৌকা থামিয়ে আস্তানা গাড়েন, সেখানে নোঙ্গর ফেলার সাথে সাথেই কুরাঈগলের সাথে দেখা হল, কাছেই গাছের মাথায় তার বিশাল বাসা, সেখানে ছানা লালন-পালন আর খাদ্য জোগাড়েই সে ব্যস্ত। এই প্যালাসাস ফিশ ঈগল বা পালাসি কুরাঈগল বিশ্বের অন্যতম বিরল প্রজাতির শিকারী পাখি, আই ইউ সি এন কতৃক প্রনীত সমস্ত বিশ্বের প্রায় বিলুপ্ত পাখিদের তালিকা রেড বুকে এদের নাম আছে।

বাসোপযোগী গাছ এবং খাদ্যের উৎস জলাভূমি ধ্বংসের কারণে এদের একসময় বাংলাদেশের হাওর প্রধান সমস্ত এলাকায় ও সুন্দরবনে দেখা গেলেও এখন প্রধানত সুনামগন্জেই দেখা যায়। এরা মৎস্যভোজী। পালাসি কুরাঈগলের ওড়ার ভঙ্গী সত্যিকার অর্থেই রাজকীয়, বিশাল ডানার বিস্তার, কালো লেজের ঠিক মাঝখানের সাদা পালকের সারি লেজকে তিনরঙ্গা পতাকায় পরিণত করেছে(তা উড়ন্ত অবস্থায় চিন্থিত করতেও সুবিধাজনক), আর পাখা সন্চালনের ভঙ্গী ওড়াকে এছে সুষমামন্ডিত।

পাখিঅন্তপ্রাণ ইনাম ভাই তখনি ভিডিও ক্যামেরা হাতে সেই অপরূপা ঈগলকে ফ্রেম বন্ধী করতে গেলেন, সারাদিনের ভ্রমণ শেষেও আশ্চর্য রকমের প্রাণবন্ত এই কাজপাগল মানুষটি! আমরা তখন আগামীকদিনের আবাসটি দেখে নেওয়ার সাথে সাথে মাঝির তৈরী চায়ের অপেক্ষারত।

পরদিন সাতসকালে উঠেই যাত্রার তোড়জোড়, বড় ট্রলার বা বজরাটি নোঙ্গররত, অপেক্ষাকৃত ছোট এক নৌকা আনা হল যাতে আমরা টেলিস্কোপ, ভিডিও ক্যামেরাসহ সারাদিন হাওরে পাখি গণনার কাজ করব। বিশাল বিস্তীর্ণ টাঙ্গুয়ার হাওর, যে দিকেই তাকায় থৈ থৈ পানি, অনেক জায়গা থেকেই কিনারা দেখা যায় না, তার মধ্যে একরত্তি নৌকোয় আমরা কজন প্রকৃতি প্রেমিক, খানিকপরেই হাঁসের দলের সন্ধান পাওয়া গেল।

দেশী মেটেহাঁস, নীলমাথা হাঁস, খুন্তেহাঁস,গিরিয়া হাঁসের দল খাবারের সন্ধানে চরতে বেরিয়েছে, আহ, কি অপরূপ সৌন্দর্য তাদের, তেল চকচকে ভেজা শরীরে সূর্যের আলো যেন ঠিকরে পরছে,কিছু মানুষ কেমন করে পারে এই পাখিগুলোকে গুলি করতে?

এক জলা মত জায়গায় প্রায় হাজার পাঁচেক উত্তুরে খুন্তেহাঁসের বিশাল ঝাক দেখা গেল, অবিকল খুন্তের মত তাদের ঠোটের গড়ন, প্যাক প্যাক করতে করতে খাবারের সন্ধানে চষে বেড়াচ্ছে জলাগুলো।

সুদর্শন পাখি নেউ পিপির (যাদের অনেকেই লম্বা লেজের কারণে জলময়ূর বলে) দল ভেচ্ছে যাচ্ছে নল খাগড়ার বনে, হঠাৎ-ই হাওরের এমন এক জায়গায় হাজির হলাম আমরা যেখানে শুধু হাঁস আর হাঁস, জল পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না থিকথিকে হাঁসের দঙ্গলের ভীড়ে! অনেকক্ষণ গণনার পর জানা গেল প্রায় দেড়লক্ষ হাঁস আছে সেই এক জায়গাতেই, তাদের ফাঁকে ফাঁকে কিছু বড় খোঁপা ডুবুরি ইতস্ততঃ মাছ শিকারে ব্যস্ত। আমরা বেশ দূরে অবস্থান করে টেলিস্কোপের সাহায্যে গুনছিলাম বলে পাখির দলে তা কোন আলোড়নের সৃষ্টি করেনি, কিন্তু হঠাৎই এমন এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা ঘটল, যা চর্মচক্ষে দেখার সৌভাগ্য খুব মানুষের হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস!

একেবারে কোন রকম জানান না দিয়েই দেখি মহাকাশের উল্কার মত সেই বিশাল হাঁসের ঝাকের উপরে দুই দিক থেকে দুইটি পৃথিবী সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী (জলচর, স্থলচর, খেঁচর মিলিয়ে) পেরিগ্রিন শাহিন ( পেরিগ্রিন ফ্যালকন) তীব্রগতিতে ধেয়ে আসছে, যা সেই ভাসমান পাখিগুলোর কাছে মূর্তীমান বিভীষিকা, যেকোনটার প্রাণ তখন সুতোর উপর ঝুলছে, প্রাণ ভয়ে দেড়লক্ষ হাঁস একসাথে সপাটে ডানা ঝাপটিয়ে উড়াল দেয়ার মাধ্যমে যে স্বর্গীয় দৃশ্যের অবতারণা করল তাতে এক মূহুর্তের জন্য হলেও গোটা আকাশ যেন ঢেকে গেল সেই ঝাকে, এই দৃশ্য মহাকবি কালিদাস দেখতে হয়ত হংসবধ্য কাব্য লিখে ফেলতেন, আমরা বেরসিকের দল কেমন স্থাণূ ভাবে দাড়িয়ে সেই সৌন্দর্যসুধা উপভোগ করতে থাকলাম।

দুপুরে খানিকপরে ফেরার পথে জেলেদের মাছধরার বাঁশ ফাদের উপরে কুচকুচে কালো পানকৌড়ির ঝাকের ভিতরে বিশ্বের অন্যতম বিরল পাখি সাপপাখি বা উদয়ী গয়ারের দেখাও মিলল, টাঙ্গুয়ার এই হাওরটি যে জীববৈচিত্রে কত সম্পদশালী!

ইনাম ভাইয়ের কাছেই জানা গেল, এই বিশাল হাওড়ের জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য প্রতিদিন কয়েক হাজার টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হত, যা বাংলাদেশে কখনোই সম্ভব হত না, কিন্তু এই বিশাল হাঁসের ঝাঁকের বিষ্ঠা সেই প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগাড় দেয়!

মাঝির রান্না টাটকা মাছের ঝোল দিয়ে উদরপূর্তি করে ছোট ছোট দলে সবাই বিভিন্ন অ্যাডভেন্চারে বের হলাম, মিলন ভাই সাইফকে নিয়ে রওনা দিলে মেঘালয়ের পাহাড়ের উদ্দেশ্যে,তার এক কথা- পাহাড় ছুয়ে তরপর ফেরৎ আসবেন। আমি আর মারিস্যা আরেক প্রান্তে রওনা দিলাম কাছের গ্রামগুলো দেখার আশায়,ইনাম ভাই বরাবরের মত ঈগলের ছবি তুলতে ব্যস্ত।

টাঙ্গুয়ার চিত্তহরণকারী সূর্যাস্তের কথা আর নাই বা বলি, সে কেবলমাত্র চোখে দেখার জিনিস এবং অনুভবের জিনিস। সন্ধ্যার বেশ খানিক পর ফিরে আসার সময় দেখি আমান ভাই ছইয়ের পাশে আরাম করে চন্দ্রাহত মানুষের মত বসে আছে, শুধু বললেন-, ভাই, সূর্য ডোবার সময়টাতে ঈগলটাকে দেখলাম দারুণ ভাবে উড়ে এসে বাড়ীতে বসল, আহা, বুকটা ভরে গেছে! এ জীবন সার্থক!!

পরদিন যাওয়া হল হাওরের অন্যপ্রান্তে, দেখা মিলল বিপন্ন মরচেরঙ ভুতিহাঁসের, যাদের সংখ্যা আমাদের জানামতে গোটা বিশ্ব লাখখানেকেরও কম, অথচ অবাক করা ভাবে আমরা সেদিন দর্শন পেলাম নব্বই হাজারের মত মরচেরঙ ভুতিহাঁসের!! পরবর্তীতে ঢাকায় এসে ইনাম ভাই এ সংখ্যা জানানোর পর গোটা বিশ্বে তাদের সংখ্যা একেবারে দ্বিগুণ ধরা হয়েছে, যা রীতিমত আশা জাগানিয়া।

আরও দেখা মিলল উত্তুরে ল্যান্জাহাঁস, ইউরেশীয় সিথীহাঁস, গাডওয়াল হাঁস, দেশী মেটেহাঁস লালঝুটি ভুতিহাঁসের বিশাল ঝাকের। উল্লেখ্য রামসার সাইট ঘোষিত এই হাওরে ২৬ প্রজাতির হাঁস এ পর্যন্ত দেখা গেছে, এমনকি সুদূর চীন থেকে আসা মান্দারিন হাঁস পর্যন্ত। শেষমেষ প্রায় তিন লক্ষ হাঁস গুনলাম আমরা, এই হাঁসগুলোর বিষ্ঠা সার হিসেবে এই বিশাল জীববৈচিত্রকে রক্ষা করতে মূল ভমিকা পালন করছে।

আবার ফেরার পথে, দূরে নদী বাঁকে মনে হল গাছে গাছে সাদা বিশাল আকৃতির সব ফুল ফুটে আছে, এত বড় কোন ফুল হতে পারে? সাত-পাঁচ ভেবে কাছে যেতেই টাঙ্গুয়ার আরেকটি জাদুকরী দৃশ্য দেখা গেল- নদীর ধারে দেশ কিছু গাছ আলো করে নানা ধরনের বক ধ্যানে মগ্ন, এগুলো তাদের রাত্রিকালীন আবাস, আহা পুরাণে স্বর্গের বর্ণনা বুঝি এমনটাই হয়!

তাই এতদিন পরও কায়মনোবাক্যে বলি,জীবন যত জায়গায়ই যায় না কেন, যত কিছুই করি না কেন, আমার সবচেয়ে স্মরণীয় ভ্রমণ ২০০২ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরে।

( পাখির বাংলা নামগুলো বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কতৃক প্রকাশিত উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের পাখি খণ্ড থেকে নেওয়া হয়েছে, যার সম্পাদনায় ছিলে ইনাম আল হক। আগ্রহীরা বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত দেখা পাওয়া যাবতীয় পাখির নাম বাংলা, ইংরেজি এবং ল্যাতিনে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের ওয়েব পেজে ঢুঁ মারতে পারেন।
লেখাটি বাংলা ওয়ার্ড থেকে অভ্রতে এত জলদি রূপান্তর করে দেবার জন্য কৌস্তভদাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ )


মন্তব্য

জালিস এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম
কোলাকুলি

তারেক অণু এর ছবি

আরে এত পপ্পন খায়েন না রে ভাই,
কোলাকুলি

সত্যপীর এর ছবি

তাই এতদিন পরও কায়মনোবাক্যে বলি,জীবন যত জায়গায়ই যায় না কেন, যত কিছুই করি না কেন, আমার সবচেয়ে স্মরণীয় ভ্রমণ ২০০২ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরে।

এই কথাটি "ভ্রমণসচল তারেক অণুর মতে" হেডিংএর আন্ডারে বড় বড় করে লিখে টাঙ্গুয়ার হাওর ট্যুরিজমের পোস্টার ছাপানো উচিত। পিছনে থাকবে হাওরের মনোমুগ্ধকর ছবি।

ফান করতেসিনা অণু ভাই। যেই লোক "ইউরোপের পথে প্রান্তরে, সর্ব উত্তরের মানব বসতি স্পিটসবের্গেন দ্বীপপুন্জে, পৃথিবীর সর্ব উত্তরে ছয় মাস দিন- ছয় মাস রাতের রাজ্য উত্তর মেরুতে, গিরিরাজ হিমালয়ে, মধ্য প্রাচ্যের ধু ধু বালিয়াড়ির মাঝে, আল্পসের সর্বোচ্চ শিখর মঁ ব্লাতে, আন্দেজের কোলে, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে, তিব্বতের নির্জনতায়, মেক্সিকোর পিরামিডে, আফ্রিকার বুনো প্রান্তরে" ঘুরে বেড়িয়েছে তার মুখের কথা দশটা বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর কথার সমান।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

এইটা একটা কাজ করলেন সত্য দা, শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী! ধুর
তবে একটা কথা বলি, বেশী লোক না যাওয়ায় ভাল, তখন পিকনিক স্পট বানিয়ে ফেলে ডাস্টবিন করে ফেলবে বিস্তীর্ণ এলাকা।

সত্যপীর এর ছবি

আরে পর্যটনের পোস্টারে মন্ত্রীর নামই তো থাকবো নাকি? তাই কইলাম। আচ্ছা যান মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়ায় দিলাম, পঞ্চাশটা মন্ত্রীর সমান।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

মন্ত্রী বাদ দ্যান !
আমরা আমরাই তো !

সত্যপীর এর ছবি

না, বাদ দিমুনা। আপনেরে পর্যটন মন্ত্রী বানানো হউক।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

পালালাম !

নাঈম এর ছবি

বেশী লোক না যাওয়ায় ভাল, তখন পিকনিক স্পট বানিয়ে ফেলে ডাস্টবিন করে ফেলবে বিস্তীর্ণ এলাকা।

খুব সত্য কথা বলেছেন অণু ভাই। মৌলভীবাজারের হামহাম বা হাম্মাম ঝর্ণা বোধহয় এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

তারেক অণু এর ছবি

কেওক্রাডংয়েরও একই অবস্থা হয়ে যাচ্ছে।
আর বাঙ্গালির আরেক সমস্যা হচ্ছে ভোজন! যেখানেই যাবে পোলাও, কোর্মা, ঘিয়ে ভাজা মুরগির রোস্ট থাকতেই হবে! তারপর সেই উচ্ছিষ্টগুলো পড়ে থাকে যত্রতত্র।

সুজিপ্পে এর ছবি

হুম! কঠিন সত্য কথা!! দুঃখ লাগে!!

তারেক অণু এর ছবি

নিজে সচেতন হতে হবে, তারপর অন্যদের জানাতে হবে। আমরা সেখানে না গেলেও কোন ক্ষতি নাই, কিন্তু যেয়ে পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না।

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

২০০৮-০৯ এর দিকে আমরা ৮-৯ বন্ধু মিলে টাঙ্গুয়া হাওরের উদ্দেশ্যে শীতের এক ভোর বেলা রওনা হই। কোথায় টাঙ্গুয়া হাওর, কিভাবেই বা যাব ওখানে, এই-সব কিছুই জানিনা। বাসে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত গিয়ে নৌকায় করে মনিপুরী ঘাট, সেখান থেকে ভাড়াকরা মোটর বাইকে করে একটা নদী(চমৎকার স্বচ্ছ ঠান্ডা পানি সেই নদীর, এই মুহুর্তে নামটা মনে পড়ছে না, নামটাও চমৎকার) পার হলাম নৌকো করে। নদীর পর আরো অনেকটা পথ মোটর বাইকে করে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ার একটা বর্ডার, কয়লা আসা যাওয়া হয় এই বর্ডার দিয়ে। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেলে পড়েছে রোদ। ফিরে আসার সিন্ধান্ত নিই। ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল।

স্বপ্নে টাঙ্গুয়া হাওরে উড়ে যাওয়া একঝাক পাখি দেখি, পাখির কিচিরমিচির শব্দে বিভোর হই। আর ঘুম ভাঙতেই দুঃখ হয়, টাঙ্গুয়া হাওরে বুঝি শুধু স্বপ্নেই ঘুড়ে বেড়াবো ।

তারেক অণু এর ছবি

হাতে কয়েকদিনের সময় নিয়ে যেয়েন।
বর্ষার হাওরের রূপ কিন্তু আলাদা।

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

নদীটির নাম জাদুকাটা। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে ২ বছর আগেও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। পাখির মতোই মাছের অভয়ারণ্য ছিল সেটা। যদিও চুরি করে মাছ ধরা হতো কিন্তু তারপরেও অনেক বড় একটা ব্রিডিং জোন ছিল। গত বছর স্থানীয়ভাবে মাছ ধরার অনুমতি দেয় সরকার। এবং এইবার জানুয়ারীতে বানিজ্যিক ভাবে মাছ ধরার। পাখি আসতো বেশি ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এই সময় পাইকারীভাবে মৎস্য নিধন শুরু হওয়ায় একদিকে পাখিদের খাদ্য সংকট অন্যদিকে মানুষের ভয়। এখন পাখির সংখ্যা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

দাঁড়ান , এই বছরের খবর জানাচ্ছি। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের কয়েকজন সদস্য এখন সিলেটেই আছে।

হিমু এর ছবি

টাঙ্গুয়ার হাওরে গিয়েছিলাম ২০০৪ এর নভেম্বরে। আইইউসিএনের সহযোগিতায় নৌকা ভাড়া করে তিন রাত আমরা নৌকায় কাটিয়েছিলাম। সে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। ট্যাকেরঘাটে নৌকা ভিড়িয়ে এক রাতে নৌকার ছাদে বিছানা পেতে ঘুমাতে গেছি, মাথার ওপরে তারামাখা আকাশ, দূরে মেঘালয়ে পাহাড়ের গা বেয়ে নামছে গাড়ির হেডলাইট, মিষ্টি বাতাস, নৌকার দুলুনি, সকালে উঠে সদ্য ধরা কুচোচিংড়ির ভুনা দিয়ে গরম ভাত। আহ, স্বর্গ যদি কোথাও থেকে, ওখানেই।

তারেক অণু এর ছবি

আহ, কি সব কথা মনে করিয়ে দিলেন ।
এখন হিম্ভাই এই শীতের মাঝে তো দেড় কিমি হাঁটলেই গরম ভাত রান্নার চাউল পেয়ে যাবেন জানি, কিন্তু কুচোচিংড়ির ভর্তা আসবে কোথ থন মন খারাপ

হিমু এর ছবি

ভিয়েতনামি দোকান থেকে। কাল্কেই হবে।

তারেক অণু এর ছবি

ধুর, মেসেজটা ডুব দিয়া ছিল, নয়লে ভিয়েতনামী দোকানে আজকেই হামলা দেওয়া হয়ে যেত !

সৌরভ কবীর  এর ছবি

হাওর এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে ঐ এলাকাবাসীর জন্য খারাপ লাগে। লেখা ভালো লেগেছে।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ।

achena এর ছবি

লেখা ভাল লেগেছে, তবে ছবিবিহিন তারেক অনু (!) একদমই ভাবা যায় না।

তারেক অণু এর ছবি

লেখাই চলুক না মাঝে মাঝে !

উজানগাঁ এর ছবি

আহ্ স্বর্গের কথা মনে করিয়ে দিলেন। আমার মামাবাড়ি টাঙ্গুয়ার হাওরের কাছেই। সেই ছোটবেলায় বড় একটা নৌকা নিয়ে মামাবাড়ি থেকে লোক আসতো মাকে নাইওর নিয়ে যাওয়ার জন্যে। মাঝখানে একটা রাত কাটাতো হতো আমাদের নৌকাতে এবং প্রতিবারই রাতটা আমরা কাটাতাম টাঙ্গুয়ার হাওরে।

ছোটবেলা থেকে এই হাওর নানাভাবে মিশে আছে আমার দিনযাপনের সাথে। আমার সব খালাদের বাড়িই এই টাঙ্গুয়ার হাওরের আশে-পাশে। শীতে-বর্ষায় নানাভাবে আবিষ্কার করেছি এই হাওরকে। হয়তো কোনো একদিন লিখে উঠতে পারবো সেইসব ঘুমজড়ানো কুয়াশাভেজা ভোরের গল্প কিংবা বর্ষার অবিরাম বৃষ্টির কথা কিংবা মেঘালয় থেকে ছুটে এসে টাঙ্গয়ার হাওরে মিশে যাওয়া সেই অদ্ভুত মায়াবী নদীটির কথা।

টাঙ্গুয়ার হাওরের পানি এতো স্বচ্ছ যে গভীরে বড়-বড় মাছের দৌঁড়ঝাঁপ পানির উপর থেকে অনায়াসে দেখতে পাওয়া যায়। আর শ্যাওলার ফাঁকে-ফাকে রৌদ্রের লোকোচুরি ! আহ্ !

সেই গল্প না হয় অন্যদিনের জন্যে তোলা থাকল।

তারেক অণু এর ছবি

অন্যদিনটা কত দূরে! মানে বলছিলাম, বেশ তো এগোচ্ছিল, লিখেই ফেলুন না কষ্ট করে!

Arif এর ছবি

পাগল হয়ে যাব রে ভাই, কি সব যে আপনি কন!!!!

তারেক অণু এর ছবি

ঐটা হই দেঁতো হাসি য়েন না !

পরী  এর ছবি

মার্চে যাচ্ছি হাসি

তারেক অণু এর ছবি
ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

অনুর প্রতি ভালবাসা

তারেক অণু এর ছবি
ডাইনোসর এর ছবি

ছবি নাই কেনুনুনু।।।।।।।।।।।।।।

তারেক অণু এর ছবি

সেই আমলে ডাইনোসররা চরে বেড়াত, মানে ক্যামেরা ছিল না নিজের।

মেঘদূত_মেঘ এর ছবি

অসামসালা!!! মন খারাপ আমি কবে যামু?

তারেক অণু এর ছবি

তাড়াতাড়িই আশা করি।

লাবণ্যপ্রভা এর ছবি

ছবি থাকলে কি দারুন হতো মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

আরে মাঝে মাঝে ছবি ছাড়াই চলুক না। জগতের সেরা ভ্রমণকাহিনীগুলো কিন্তু সবই ছবি ছাড়া!

ফাহিম হাসান এর ছবি

অণু ভাই, লেখা তো সবসময়ই গুল্লি হয়। আপনার ভ্রমণকাহিনির লিস্টের একদম উপরে টঙ্গুয়ার হাওড় দেকেহ খুবভাল লাগলো।

আরো ভাল লাগতো যদি অবৈধ পাখি শিকার, অতিথি পাখি খাওয়া নিয়ে বিশদে লিখতেন। এইবারো শয়ে শয়ে ফাঁদ দেখা গিয়েছে। বিষ দিয়ে মারার ঘটনাও পুরানো। এই অতিথি পাখির ক্রেতা কিন্তু শিক্ষিত মানুষেরাই। বহু পর্যটক আছে যারা শখ করে অতিথি পাখির মাংস খেতে সুনামগঞ্জ যায়, হরিণের মাংস খেতে সুন্দরবন যায়।

প্লিজ এগুলো নিয়ে বিস্তারিত লিখেন। আপনার একটা ডেডিকেটেড রিডার গ্রুপ আছে। এই মেসেজগুলো পৌঁছে দেওয়া জরুরী।

তারেক অণু এর ছবি

লিখব ফাহিম ভাই, আসলে এখানে কেবল সেই সময়ের স্মৃতি হাতড়েই লেখলাম।
এই ব্যাপারগুলোর বর্তমান হালচাল জেনেই লিখব।

তাপস শর্মা এর ছবি

মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। হাসি চলুক

সুনামগঞ্জের কথা অনেক শুনেছি। যাব একদিন নিশ্চয়ই।

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই। আসাম দিয়ে মনে হয় বেশ কাছেই হবে, ত্রিপুরা থেকে অবশ্য দূরে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

9

6

19

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

তারেক অণু এর ছবি

আহা, অনেক ধন্যবাদ।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমার জন্মস্থান সুনামগঞ্জ। সেইযে ছোটবেলায় চলে এসেছি আর যাওয়া হয়নি। মাঝে মধ্যে ইচ্ছে হতো, এখন ইচ্ছটা জোরদার হলো।

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই যাবেন। সুনামগঞ্জের নদী ঘাটটাকেও খুব মনে পড়ে, একটা কবি লিখেছিলাম সেই ঘাটের স্মৃতি নিয়ে।

উজানগাঁ এর ছবি

এই দুইটা ছবিই পেলাম আপাতত।

১।

Take Me Home, Country Roads III

২।

Take Me Home, Country Roads II

তারেক অণু এর ছবি

দারুণ! আরো দেখুন না, থলে ঝেড়ে ! চমৎকার আলো। করজ গাছের কোন ছবি আছে?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।