উত্তরের দেশে বছরের সবচেয়ে মধুর সময় বসন্ত। এই সময়েও প্রকৃতি ঘন বরফে মুখ লুকিয়ে থাকে বটে, কিন্তু নিসর্গে একটু কান পাতলেই শোনা যায় বরফস্তূপ গলে গলে জলে পরিণত হবার টুপ টাপ আওয়াজ। বাতাসে উষ্ণতার রেশ তখনও থাকলেও তার অবিরাম তীক্ষ পরশে জমে থাকা তুষার পড়ে ন্যাড়া করে ফেলে আদিগন্ত বিস্তৃত বনকে- কিন্তু জানা কথা এর পরই আসবে সবুজ কুঁড়ির আভাস, চিরল পাতার ফিরে আসা, সবার শেষে ঘন সবুজ বন।
সেই সাথে ফিরে আসে আমার পালকাবৃত বন্ধুরা, সবার আগে দক্ষিণ থেকে হাজির হয় হেরিং গাঙচিলের ঝাঁকেরা, তাদের কর্কশ রবকেই দীর্ঘ আঁধারময় শীতের প্রবলে দাপটের পরে মনে হয় কোকিলের চেয়েও মধুর। তাদের পিছন পিছন নানা দেশ, এমনকি মহাদেশ থেকে নিজ বাসভূমে আসা শুরু করে বুনোহাঁসেরা, ছোট্ট ঘাস পাখির দল, শিকারি পাখিরাও ডেরা বাঁধে উত্তরের বনে আগামী প্রজন্মের কাছে এই বনভূমিকে বাসযোগ্য করে যাবার সুতীব্র প্রতিজ্ঞায়।
তাই গ্রীষ্মের সবচেয়ে আরামদায়ক, উষ্ণ, ২৪ ঘণ্টার আলোর বন্যায় ভেসে যাওয়া দিনগুলোর ফিরে আসার বাণী কিন্তু শোনায় বসন্তই। ধীরে ধীরে শীতকালীন নিদ্রা থেকে তখনই জেগে ওঠে ভালুকসহ নানা স্তন্যপায়ী প্রাণীর দল, ফিরে আসা পতঙ্গরাও। কিন্তু আমার মত পাখিপ্রেমীদের জন্য সবসময়ই আলাদা বার্তা বহন করে প্রকৃতির আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে ওঠার এই সময়টা। তখন ঝাঁকে ঝাঁকে হাজারে হাজারে ফিরে আসে দেশান্তরী পাখির দল, তাদের গন্তব্য আরো অনেক অনেক উত্তরে- ল্যাপল্যান্ডে বিস্তীর্ণ প্রান্তর, না হয় সাইবেরিয়ার তৃণভূমি। সেখানেই তাদের ঘরকন্নার সময়, ভালবাসার, আদর- সোহাগের পালা শেষে নতুন আগন্তককে এই নীল গ্রহটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার পালা।
উত্তর ইউরোপের আকাশে প্রবেশের সময় পরিযায়ী পাখিদের বড় একটি দল বাল্টিক সাগর অতিক্রম করে ফিনল্যান্ড, সুইডেন, রাশিয়ার মূল ভুখন্ডে প্রবেশ করে। সেই ঠাণ্ডা আবহাওয়াতেও তখন সাড়া পড়ে যায় পাখি পর্যবেক্ষকদের মহলে, সারা দিন সাগর পাড়ের পাহাড়ে না হয় বনের মাঝে পাখি পর্যবেক্ষণের টাওয়ার থেকে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে তারা বুনো পাখি গুণতে থাকে, সবাই যে গুনে সেই সংখ্যা লিপিবদ্ধ করে তাও না, কেবল প্রকৃতিপ্রেম থেকেই করে, ভাল লাগা থেকে করে, ভালবাসা থেকে করে। এই ভবঘুরেদের দলের অন্যতম কাণ্ডারি আমার কাছের বন্ধু স্টিফেন নপম্যান, যার গল্প একবার বলেছি এইখানে।
স্টিফেন প্রায়ই বসন্তে পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য পাশের ক্ষুদে দেশ এস্তোনিয়াতে যায়, আমার প্রশ্ন জাগে ভারী ৯০ কিমি দূরের ভু খণ্ডে আর কি এমন পার্থক্য হবে পক্ষীজগতে! উত্তর মিলে বিস্ময় জাগানিয়া। হাজার হাজার মাইল দূরে থেকে উড়ে আসা পাখিরা পথিমধ্যে কয়েকদিনের জন্য বিশ্রাম নেয় বাল্টিকের এই দেশগুলোতে, মূলত এস্তোনিয়ায় এবং সেই সাথে লাটভিয়ার কিছু সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে। সেখানের জলা, বাদা, চর, নদীতে মজাসে কদিন খাবারের মোচ্ছব করে, বিশ্রাম নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে আবার উড়াল দেয় উত্তরের পানে। এই দেশগুলোতে তারা স্বল্প সময়ের জন্য আস্তানা গাড়ে সেখানকার ভূপ্রকৃতির জন্য, এমন চারণভূমিই দরকার তাদের পথি মধ্যে। তাই এই দেশগুলোর তুলনায় ফিনল্যান্ড, সুইডেন বা নরওয়ে আকৃতিতে অনেক বড় হলেও তাদের দক্ষিণ অংশে এমন চারণক্ষেত্র না থাকায় পাখিরা বিশ্রামের পর সোজা চলে যায় মিয়া-বিবির দায়িত্ব পালন করতে।
গত বছরের এপ্রিলে তাদের এই বিশ্রামকালীন জমায়েৎ দেখবার আশাতেই এস্তোনিয়া রওনা হলাম আমি ও পোড় খাওয়া পাখি পর্যবেক্ষক স্টিফেন, এবং তার গাড়ী। জাহাজে করে বাল্টিক সাগর পাড়ি দিয়ে এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিন পৌঁছানো মাত্রই শহর ছেড়ে আগের পরিকল্পনা মোতাবেক সৈকতের নিকটবর্তী দূর গন্তব্যে চললাম আমরা, সেই শহরের নাম হাপসালু।
এক ফাঁকে এস্তোনিয়া নিয়ে কিছুমিছু তথ্য একটু ঝালিয়ে নেওয়া যাক, পয়তাল্লিশ হাজার বর্গ কিলোমিটারের ভূখণ্ডে এক মিলিয়নের সামান্য বেশী মানুষ নিয়ে দেশটি সয়েছে শাসন ও শোষণের নির্মম পথ। কয়েক দফায় সাম্যবাদের নামে সোভিয়েত ইউনিয়নের নির্লজ্জ দখলদারিত্বের সাথে সাথে ২য় বিশ্বযুদ্ধের কয়েক বছর নাৎসি অধিকৃতও ছিল। ১৯৯১ সালে সত্যিকারের স্বাধীনতা পাওয়া ক্ষুদে দেশটির ২য় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষ আর মিত্র শক্তির মাঝে পড়ে তো বিপুল জনশক্তি ক্ষয় হল, আবার সোভিয়েত শাসনাধীন থাকার সময়ে মোট প্রাপ্ত বয়স্ক জনসংখ্যার দশ ভাগ চিরতরে হারিয়ে গেল সাইবেরিয়ার শ্রমশিবিরগুলোতে।
স্ট্যালিনের সেই নির্দয় সময়ের কথা নিয়ে উপন্যাস লিখে সেলিব্রেটির খ্যাতি পেয়েছেন ফিনল্যান্ডের তরুণী সোফি ওকসানেন, যার মা ছিলেন এস্তোনিয়ান। সোফির শৈশবের অনেক বছর কেটেছিল এই হাপসালু শহরেই, এমন তথ্য পাওয়া গেল শহরে ঢোকার পর কফি পান করতে গিয়ে। সেই বৃদ্ধা আরো জানালেন- বিশ্বাস করতে পার সাগরের পাড়ে বসত, অথচ আমাদের নৌকা রাখার অনুমতি ছিল না, রাশানরা ভয় পেত যে নৌকা থাকলেই এস্তোনিয়ানরা পালিয়ে সুইডেন বা ফিনল্যান্ড চলে যাবে!
হোটেল ব্যাগ রেখে জলার তীরে প্রথমে পাখি খোঁজাই সার হল, মিলল না কিছু এক পশ্চিমা পানকাপাসি , ( Western Marsh Harrier ,Circus aeruginosus) বাদে। কিন্তু অন্তরীপের কাছে যেয়ে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ মিলল কয়েক প্রজাতির রাজহাঁস, বেশ লাজুক রাজহাঁসগুলো, একটু কাছে যেতেই সঙ্গীদের উদ্দেশ্যে হাক ডাক শুরু করে!
সেই সাথে উড়ন্ত পানচিল। মাছ ধরবার চেষ্টায় মহাব্যস্ত সেই অপূর্ব ছিপছিপে পাখিটিকে দেখে কেবলই মনে হল ধনুকের ছিলা থেকে মুক্তি পাওয়া স্বাধীন তীরের মত, অনেকটা শিকাররত চিতাবাঘ বা জলের মাঝে হাঙরের রাজকীয় বিচরণের সাথে অনেক মিল তার।
ভ্রমণজনিত ক্লান্তির কারণে সেদিন বেশী ঘুরোঘুরি না করে স্টেফানের পূর্ব পরিচিত এক বাদা মত জায়গায় যাওয়া হল পেঁচার ডাক শোনার জন্য, চারিদিকের নিস্তব্ধতার সাগর ভেদ করে কোন ডাক আমরা শুনতে পেলাম না বটে কিন্তু ফেরার পথে ফাকা জায়গায় দেখা হয়ে গেল এক বিশাল অবয়বের সাথে, দেখেই মনে হল বিভূতিভূষণের আরণ্যকের মহিষ দেবতা, আদতে তা ছিল বিশাল মুজ হরিণ, এর আরেক নাম এল্ক। সে বেচারাও আমাদের দর্শনে খুব একটা প্রীত না হয়ে মিলিয়ে গেল ঘন বনের নিবিড় অন্ধকারে।
পরদিন কাক ভোরে উঠে শিশির ভেজা মাঠ পেরিয়ে যাওয়া হল বিশেষ কিছু স্থানে যেখানে খাবার আহরণের জন্য চরে বেড়াচ্ছিল বুনো হাঁসের দল, মাথার উপর দিয়ে ইতস্তত উড়ে বেড়াচ্ছে গুটি কয়েক সোয়ালো, দেখা হল এযাত্রার প্রথম গর্বিত সারসের সাথে।
রোদ খানিকটা মাথার উপরে ওঠার পরপরই দেখা মিলল বিখ্যাত ধলা মানিকজোড়ের, White Stork (Ciconia ciconia), কিন্তু জোড়ায় জোড়ায় নয় একাকী! তাই অবশ্য হবার কথা, অন্যজন তো ডিমে তা দিতেই ব্যস্ত, কাজেই আরেকজন এসেছে তার জন্য খাবার যোগাড়ের উদ্দেশ্যে- বলা তো যায় না, যদি কোন বোকা নাদুস নুদুস ব্যাঙ মিলে যায়।
এবার আমাদের যাত্রা সাগর পানে, সেখানে ভাসমান বরফখণ্ডগুলো এখনো ধরণীর বুকে শীতকে ধরে রাখার শেষ চেষ্টারত,
তাদের প্রবল অস্তিত্বকে উপেক্ষা করেই হাজার হাজার ধবল রাজহাঁসের দেখা মিলল, যেন দানব হিমবাহ ভেঙ্গে পড়ে তৈরি হয়েছে শত সহস্র ভাসমান জীবন্ত বরফখণ্ড। সৈকতের কাছেই অগভীর পানিতে তারা জলকেলির সাথে সাথে জলজ উদ্ভিদের অন্বেষণে ন্যস্ত। বেশ দূর থেকে তাদের দেখেই সন্তুষ্ট থেকে যাত্রা শুরু করলাম সৈকতের তীর ঘেঁষে পিচ ঢালা রাস্তায়।
অবাক হচ্ছি এই ক্ষুদে দেশটার প্রাকৃতিক বৈচিত্রতায়, কত অপূর্ব ধরনের ঝাঁকড়া গাছপালা, বিশেষ করে রূপকথার বইয়ে আঁকা ছবির মত ওকের বন এক ভাবালুবতায় আচ্ছন্ন করে ফেলে আমাদের।
সুবিধে মত জায়গায় গাড়ী রেখে সেই বন ঠেলেই এগোয় আমরা সাবধানে, আপাতদর্শনে নিরীহ শান্তিময় এই বনেই থাকে ভালুক, বন্য বরাহ, লিনক্স, উলভেরাইন মত প্রাণীরা, সন্তর্পণে বনের আড়াল থেকে চোখ রাখি এক চিলতে ফাঁকা জমিতে, যেখান বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার হাঁস মনের সুখে নানা সুখাদ্য অন্বেষণ করে চলেছে।
ভেবে ভাল লাগল, ইউরোপের অনেক দেশের মত এই দেশটিতে শিকারের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে নি, তাই সুকান্তের একটি মোরগের কাহিনীর মত এই বুনোহাঁসদের অন্যদের খাদ্যে পরিণত হতে হয় না বললেই চলে। অবশ্য এর অন্যতম কারণ- সোভিয়েত আমলে স্থানীয়দের যে কোন রকম আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা নিষিদ্ধ ছিল, তাই শিকারের পথও ছিল বন্ধ।
সেই সাথে এস্তোনিয়ার এমন ভূপ্রকৃতি জন্য অনেকটা দায়ী প্রাণীজগতের প্রকৌশলী হিসেবে খ্যাত বিভার নামের প্রাণীটি, যেখানে সেখানে বাঁধ তৈরি করে জলা বানিয়ে এই দেশের বিশাল অংশ ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে করে রেখেছে বিভার গং, যা পাখিদের জন্য তৈরি করে দিয়েছে চমৎকার বিশ্রামস্থল, যদিও মানুষেরা অবিরাম চেষ্টা করে যাচ্ছে সেই বাঁধগুলো সরিয়ে জলাবদ্ধতা কমাবার।
সে এক অন্য ভুবন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায় টেলিস্কোপ দিয়ে অপূর্ব পাখিগুলোর কাজকারবার দেখতে দেখতে, নতুন কিছু ঘটছেই সবসময়।
এদেরই কোন পূর্বপুরুষ বাৎসরিক দেশান্তরের সময় আটকা পড়েছিল অন্য ভূখণ্ডে আমাদের পূর্বপুরুষদের হাতে, তারপর খাঁচায় কয়েক প্রজন্ম আটকা থাকার ফলে তাদের পাখা যেমন দূরপাল্লার উড্ডয়ন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তেমনি ভারি হয়ে যায় শরীর, আজ তাদের ব্যবহার কেবলমাত্র মানব জাতির রসনা তৃপ্ত করায়।
সেখান থেকে সেই রাতের আস্তানা খোঁজার জন্য দক্ষিণে রওনা হতেই প্রথম সামনে পড়া ফসলের ক্ষেতটিতে আমাদের সামনের দিয়ে ভীম গতিতে উড়ে যেয়ে এক গিরগিটি জাতীয় সরীসৃপ শিকার করল শ্যেন জাতীয় পাখি, তড়িঘড়ি করে থেমে দূরবীনে ফোকাস করতেই আনন্দ আর ধরে না, এ যে অতি বিরল ছোট গুটিঈগল, Lesser Spotted Eagle (Aquila pomarina), জীবনে প্রথম দেখলাম বুনো পরিবেশে। কিন্তু শিকার কাবু করেই সে উড়াল দিল ঘনিষ্ঠতার কোন সুযোগ না দিয়েই।
এক পর্যায়ে সাগর পাড় ছেড়ে বনের গভীরে অনুসন্ধান চালানো শুরু হল আমাদের পুরনো বন্ধু কালা মানিকজোড়ের, Black Stor, Ciconia nigra, উদ্দেশ্য, সে তার খালাতো ভাই সাদা মানিকজোড়ের মত এত খোলামেলা জায়গায় ঘুরে না বেরিয়ে ঘাপটি মেরে থাকে বনের ছায়ায়, বিশেষ করে ডোবার পাশে- শিকারের অপেক্ষায়। এ যাত্রা ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল না, কিন্তু প্রমাণ পাওয়া গেল অতি বিরল প্রজাতির এক কাঠঠোকরার উপস্থিতির। সেই সাথে একেবারেই উপরি হিসেবে ফ্রেমে বাঁধানোর মত এক আলোকচিত্র মিলে গেল, বলুন তো এটা কিসের ছবি---
লাটভিয়া- এস্তোনিয়ার সীমান্তের কাছে বনের মাঝে বয়ে চলা শান্ত এক নদীর বুকে সেই বনদেবতার প্রতিচ্ছবি! চলমান বহমান জলে যে এমন স্বচ্ছ আর সূক্ষ প্রতিফলন ঘটতে পারে তা আগে জানা ছিল না।
আগেই বলেছি স্টেফান প্রায়ই বসন্তের শুরুতে এই দেশটিতে আসে পাখি দেখার টানে, কিন্তু মাঝে মাঝে আসে সে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যও, প্রায়ই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হয় এখানে, বেশ কয়েক ধরনের, তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়টি হচ্ছে নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কোন দল সবচেয়ে বেশী সংখ্যক পাখি দেখতে পারবে বা তার ডাক শুনতে পারবে। ( ৩/৪ জন মিলে একটি দল গঠন করা হয়) ।
বহু দিনের ঘনিষ্ঠ পাখিপ্রেমী বন্ধুদের বড় গলা করে বাংলাদেশের টাঙ্গুয়ার হাওরের কথা বলি, বলি দক্ষিণের সামুদ্রিক চরের কথা, কথার মুখরতায় বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানোর সাথে সাথে এটা বলতে ভুলি না যে বাংলার বন-পাহাড়-নদী-সমুদ্র পাখি দেখার জন্য স্বর্গ বিশেষ, কিন্তু ঘুণাক্ষরেও উল্লেখ করি না পাখিদের নিয়ে যে প্রতিযোগিতা চলে সেইখানে! প্রতিযোগিতা চলে এম পি, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে মান্যগণ্যদের কোন বছর কে কতগুলি শিকার করল তা নিয়ে, একগুলির ছররায় কতগুলি বুনোহাঁসের ডানা ভেঙ্গের গেল তা নিয়ে মাতুব্বরের ছেলের গর্ব করার কথা, বলি না তথাকথিত ভদ্র তরুণ সমাজের কথা যারা ঘুরতে যেয়ে খোঁজ করে বুনো পাখির মাংসের, ডিমের! হরিণের মাংস, কাছিমের ডিমের জন্যতো পারলে তারা গোটা ম্যানিব্যাগ বিসর্জন দিতেই রাজি। কিন্তু বলি পচামাড়িয়া নামের রাজশাহীর সেই পাখি গ্রামটির কথা, অনেক বছর আগে দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের বাঁশ ঝাড়ে বকদের আস্তানা রক্ষায় স্থানীয়দের তৎপরতার কথা, মাদারিপুরের ব্যাইগ্যার বিলে কোড়া পাখি রক্ষায় মৎস্যজীবীদের শেষ চেষ্টার কথা। স্বপ্ন দেখি সকল বেদনা চাপিয়ে, একদিন পরিযায়ী পাখিদের অভয়াশ্রম হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিতি নাম করবে বাংলাদেশ, দেশবিদেশের পাখিপ্রেমীরা ভিড় করবে সেখানে বছরভর। যেখানে পাখির ঝাঁক গুলি চালিয়ে মারার বদলে ক্যামেরা বন্দী করাতেই দিনটি সার্থক মনে করবে যুবসমাজ, তাদের মাংসে মশলা আনাজ মাখিয়ে খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর না তুলে মুক্ত পরিবেশে তাদের ডানা ঝাপটানো দেখে অধিকতর তৃপ্তি লাভ করবে সভ্য মানুষ।
সেইসব প্রতিযোগিতার কল্যাণে স্টেফানের কিছু গলি ঘুপচির সন্ধানও জানা ছিল বনের মাঝে, সেই মোতাবেকই পৌঁছালাম ধুপনি বকদের (Grey Heron ,Ardea cinerea) সবচেয়ে বড় আস্তানায়, অনেকগুলো গাছে অগুনতি বকের বাসা, গোটা বন বিটকেল এক গন্ধে ডুবে আছে, এ যেন বকদের রসিকতা- আমাদের বাড়ীতে বিনা অনুমতিতে আসার জন্য এই শাস্তি পেতে হবে তোমাদের!
সেখানে বেশীক্ষণ থাকা সম্ভব হল না এক বন্ধুর ফোনের কারণে। সে জানাল বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরতম হাঁসদের একটি লাল বুক রাজহাঁসের (Red-breasted Goose , Branta ruficollis) ২ টিকে দেখা গেছে এক চারণ ক্ষেত্রে, সেখানেই ছুটলাম আমরা।
পথি মধ্যে বার দুই থামা হল ধলা মানিকজোড়ের বাড়ী দেখে, মজার ব্যাপার হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ীর সামনের চত্বরেই হয় বৈদ্যুতিক স্তম্ভের মাথায় না হয় পরিত্যক্ত চিমনীর উপরে বিশালকার নয়নমনোহর এই বাসা দেখা যায়।
সাধারণত এক দম্পতি বাড়ী তৈরি শুরু পর বেশ কবছর একই বাড়ীতে ফিরে আসে, কলেবরে বাড়তে থাকে তাদের দুর্গ, সেই সাথে ছানাপোনার সংখ্যা ( অবশ্য তারা দ্রুতই সাবালক হয়ে নিজেদের উড়ার দায়িত্ব নিজেরাই নিয়ে ফেলে)।
ইউরোপের সব দেশেই মানিকজোড়ের বাসা বাঁধাকে অত্যন্ত শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যে কারণে তারা নির্বিঘ্নে এখানে বসবাস ও বংশ বিস্তার করতে পারে। এরা কিন্তু আজ পর্যন্ত বাল্টিক সমুদ্র পার হয়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় বাসা তৈরি করে নি। কাজেই, এই অঞ্চলটুকুই আমাদের ভরসা।
যদিও কথায় কথায় এক রেস্তোরাঁ কর্মী জানিয়েছিল, কোন মানিকজোড়ের বাড়ী থেকে নাকি সাপ বের হয়েছিল, মানে ছানাকে খাওয়ানোর জন্য আনা সাপ কোনরকমে সেই বৃহচঞ্চুর হাত থেকে জীবন রক্ষা করে ছাদ থেকে বাড়ীতে প্রবেশ করে ছিল। যদিও সাপ এখানে এমন সুলভ কোন খাদ্য নয়, আর এমন ঘটনা কোটিতেও মনে হয় একবার ঘটে না, কিন্তু মানুষ এই নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে, এভাবেই বিস্তার লাভ করে গুজব !
অবশেষে সেই চারণক্ষেত্রে পৌঁছে বিশাল হাঁসের ঝাঁকের সাথে মোলাকাত হল, আমাদের বন্ধুরা ইতিমধ্যেই অন্য স্থানে চলে গেছে, কিন্তু আমাদের জন্যই যেন অপেক্ষা করছিল সেই লাল বুক রাজহাঁস, নিচের ছবিটা খুব ভাল মত খেয়াল করুন, পিছনের দিকে মাঝে অন্যরকম দেখতে হাঁসটিই সাইবেরিয়াগামী সেই আরাধ্য পাখি।
অবাক করা ভাবে সেই ঝাঁকের অন্য অংশে একই হাঁস আরেকটি ছিল, কিন্তু মনে হল তারা একে অপরের সন্ধান পায় নি। আশা করি, তারা শুনতে পেয়েছিল অন্যের আহ্বান, রচনা করেছিল সুখের নীড়।
মাঝে মাঝেই ছোট সব গ্রামে চলে যেতাম আমরা, যেখানে সাকুল্যে মাত্র ৫ টি বাড়ী, কিছু ক্লান্ত মুখ।
এদের নিয়ে খুব জানতে ইচ্ছে করে, কেমন আছে তারা এখন? ইতিহাসের কোন পর্বটা তাদের জন্য আসলেই সুখের ছিল? অনেক অব্যক্ত প্রশ্ন থেকেই যায়, উত্তর মিলে কেবল কল্পনায়।
কিছু গ্রামে বাড়ীর পাশে ধলা মানিকজোড় চরে বেড়াতে দেখে স্টেফান মহাখুশী হয়ে সিদ্ধান্ত নিল, সে যে কোন দিন এস্তোনিয়ায় বসবাস করতে চলে আসবে চিরতরে!।
পরদিনের অন্যতম প্রধান গন্তব্য ছিল মাতসালু ন্যাশনাল পার্ক বা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সেখানের পাখি দেখার টাওয়ারটিও বেশ উঁচু, প্রায় ৭-৮ তলা ভবনের সমান। অনেক ঝামেলা করে সেখানে আরোহণের পর যে শব্দগুলো কেবল শুনতে পেলাম তা ছিল চারপাশের বন থেকে ভেসে আসা পাখিদের সুরমূর্ছনাময় কলকাকলী, আর কিছুই ছিল না বিশ্ব চরাচরে, আর সামনের দৃশ্যটি ছিল নীলে নীলে নীলাম্বরী। এই বিশেষ এলাকাটিকে সবচেয়ে বেশী আপন মনে হয়েছিল সমগ্র এস্তোনিয়ায়, মনে হয়েছিল কেবল নিসর্গ উপভোগের জন্যই বারংবার আসা যেতে পারে।
সেখানের আরেক অঞ্চল কেমুর পাখি পর্যবেক্ষণের টাওয়ারটিও বেশ জনপ্রিয়, সেখানে নানা প্রজাতির পাখি দেখা সাথে সাথে বোনাস হিসেবে মিলল একটি শেয়াল!
অপার্থিব সূর্যোদয়ের ভোরে আমাদের যাত্রা আবার শুরু হল সাগর পানে,
সেখানে উড়ন্ত হাজার হাজার হাঁসের উড়ালের সৌন্দর্য যেন ম্লান করে দিল মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা একটি মৃত বিশাল মিউট রাজহাঁস, মনে হল একটা রূপকথার সমাপ্তি ঘটেছে চিরতরে, এই সবল ডানা দুটি আর কখনোই আকাশের নীল চিরে দেশান্তরে যাবে না।
আরো কিছু এলাকা পর্যবেক্ষণ করে এস্তোনিয়ার অন্যতম বৃহত্তম শহর পারনু পৌঁছালাম বিকেলে, এখানকার মোটা বালুর সৈকত মহা বিখ্যাত সমগ্র বাল্টিকে, ঠিক তেমনি আমাদের কাছে আকর্ষণীয় সাদা লেজ সিন্ধু ঈগলের জন্য। পরদিন মধ্য দুপুরের আগেই তাদের দর্শন মিলল, সেই সাথে নানা ধরনের কাঁদাখোঁচার। তাদের বিদায় বলে, অবিস্মরণীয় টাটকা বনজ ঝাঁঝালো গন্ধময় স্মৃতি নিয়ে আবার তাল্লিনের জাহাজঘাটার পথে আমাদের যাত্রা শুরু। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনার কথা শুরু হয়ে দিয়েছে পরবর্তী বসন্ত নিয়ে !!
( ব্যবহৃত পাখির বাংলা নামগুলি ইনাম আল হক সম্পাদিত বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের পাখি খণ্ডটি থেকে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল স্টেফান জানালো এই বছর মে তে এস্তুোনিয়া গেলে ভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি দেখা যাবে এন্তার, শুনেই তো উদ্বেল হয়ে উঠলাম এই সময় দেশ থেকে পেলাম এক মহা সুখবর !
খেমোখাতায় বইপড়ুয়া নামে যে আড্ডাচক্রটি আছে আমাদের, তার পক্ষ থেকে একুশের বইমেলায় এসেছে প্রথম বই! গ্রুপের সদস্যরাই অনুবাদ, সম্পাদনা, প্রকাশ সবকিছুর পিছনে। গর্বে আরও ইঞ্চি দুই লম্বা হয়ে জেমস বন্ডকে ছুয়েই ফেললাম মনে হল। বইটি অনুবাদ করেছেন অদিতি কবীর, বইটি উভচর মানব খ্যাত বিশ্বের অন্যতম সেরা কল্পকাহিনী লেখক আলেক্সান্ডার বেলিয়ায়েভের প্রথম বই প্রফেসর ডয়েলের মস্তক। এর পিছনে আরো অনেকের অবদান অজানা, অবলা থেকে যাচ্ছে কিন্তু ঠিকই আঁচ পাচ্ছি সুপ্রিয় হিল্লোল দত্ত দা, নজমুল আলবাব অপু দা, অদিতি আপু, চিরতরুণ নজু ভাইয়ের হাড় ভাঙা মেহনৎ! এই লেখাটি তাদের জন্যই।
আমরা পড়ুয়ারা যেন মাথা উঁচু করে বৈষয়িক সম্পদের পিছনে ছুটে চলা বাকী বিশ্বকে আজীবন বলতে পারি-
তোমরা যখন পড়তে বস, মানুষ হবার জন্য-
আমি না হয় পাখিই হব, পাখির মত বন্য ।। )
মন্তব্য
প্রিয় মাহবুব মুর্শেদ ভাই, জলদি <তারেকঅণু> ইমো চাই।
এই সক্কালবেলায় পাখিপোস্ট দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেলো।
পশ্চিমা পানকাপাসির ছবিটা খুব সুন্দর। এই একটা বললাম, বাকি সব সুন্দরের কথা বলতে হলে আপনার পোস্টটা প্রায় তুলে দিতে হয়! তারপরেও আলাদা করে ভালো লাগলো বনদেবতার প্রতিচ্ছবি। অন্যরকম আর অদ্ভূত সুন্দর!
আপনার পোস্টে অন্য কোনও ইমো খাটে না। আপনার জন্য-
[কিস্যু আর কওনের নাই! তারেকঅণু!]
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
অনেক ধন্যবাদ, ঐটা আসলে রাজহাঁসের ছবি, বাংলা নাম এখনো দেওয়া হয় নাই বলে উল্লেখ করি নাই। পানকাপাসি বাজ জাতীয় শিকারি পাখি, ছবি তুলতে পারি নাই সেই যাত্রা!
ভালো থাকুন---
facebook
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কবি কান্দে ক্যান !
facebook
গ্রামের বাড়ীটা (সাইকেলওয়ালা) কারেজ দ্য কাওয়ার্ডলি ডগ এর বাড়িটার মতন
..................................................................
#Banshibir.
অন্যরকমের একটা অনুভূতি হয়েছিল বাড়ীটা দেখার পর।
facebook
নাহ্, অণু ভাই, জীবন্ত কিংবদন্তি মনে হয় একেই বলে। আপনার তুলনা কেবল আপনিই।
[তারেক অণু] ইমো এর আবেদন আমিও আগে করেছি। এইটা মহাজরুরী। অণু ভাইয়ের লেখায় মন্তব্য করতে গেলে লেখা ইমো কোনোটাই মেলে না। তবে উনার ইমো তৈরি করাও মনে হয় বেশ জটিলই হবে। সারা দুনিয়া যিনি চোখের পাতায় নিয়ে ঘুরতেছেন, তাকে একটা ক্ষুদ্র সিম্বল দিয়ে বোঝানো আসলেই কঠিন। আমার মনে উনার জন্যে "বার্ডস আই ভিউ" অর্থাৎ টাইপের একটা ইমোটিকন দেয়া যাইতে পারে, যার দৃষ্টিসীমায় প্রায় সবই চলে এসেছে দুনিয়ার।
পুনশ্চ, অণু ভাই, এইসব পাখির বাংলা নামই কি ইনাম আল হকের বইটাতে আছে? (আমি বইটা দেখেছিলাম কিন্তু আমার কাছে নাই। )
অতীত
ঐ বইটাতে পাখির নাম, ছবি সহ সমস্ত তথ্য পাবেন, আর শুধু নাম সংগ্রহ করতে চাইলে চেক লিস্ট খুঁজে দেখতে পারেন।
facebook
মারাত্মক।
facebook
সচলায়তন এ ঢুকেই আপনার লেখা খোজা অভ্যাস হয়ে গেছে অণুদা।
"তোমরা যখন পড়তে বস, মানুষ হবার জন্য-
আমি না হয় পাখিই হব, পাখির মত বন্য ।।" - ধাক্কা খেলাম একটা।
আর বলেন দেখি আপনার গায়ে কি জ্বালা করে না? এতো যে পোড়াচ্ছি হিংসের আগুনে! তবুও হাসি মুখ নিয়ে বসে আছেন (ছবিতে)!
সে তো কেবল ছবিই !
অনেক ধন্যবাদ উৎসাহ দেবার জন্য।
facebook
শরীরডা ভালা ভাই? কইলজা না কি একটা কলকব্জা ভাঙা শুনলাম !
facebook
আরও ভাঙব, শুধু সময়ের অপেক্ষা। ওয়েট এন্ড ওয়াচ। আরও দুইখান মাথায় আইসা গেছে। সময়ের লাইগা পারতাছি না। মুহাহা হা হা। হুঁ হুঁ
ডাকঘর | ছবিঘর
উদাস দা বৈষয়িক হলে কিন্তু খপর আছে ! সাবধান।
facebook
আরে না না । উদু ভাই মানুস ভালু আছে। তয় দুইচাইরটা কইলজা ভাইঙ্গা গেলেও সমুস্যা নাই। । আর আমি এখন ছোডু কিনা, তাই আমার লগে দুশমনি কত্তনা উনি
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
হাসেন হাসেন, যত পারেন হাইসা লন। আপনারা ফুটাইবেন পটকা আর আমি ফুটাইলে ফুটামু নিউক্লিয়ার বোমা ।
সুতরাং সাধু সাবধান। তবে তাপসদা আপনি সত্যি সত্যি তাইলে আমার শত্রুপক্ষে (তারকাণু পক্ষ) যোগ দিলেন?
এহ। কিযে বলেন না কত্তা
আমি আবার শত্তুর। আমি বরাবর ব- সমৃদ্ধ বন্ধু
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
আপনি এ পর্যন্ত কয়টা দেশ ঘুরেছেন?
মুসা ইব্রাহীমের মতো আপনার ইগো সমস্যা নাই এই বিশ্বাসে আপনাকে একটা প্রশ্ন করি। প্রশ্ন করার উদ্দেশ্য আপনাকে হেয় করা না। বরং ছোটকাল থেকেই আপনার মতো ঘোরাঘুরির নেশা আমার।
আপনি এই যে এতো জায়গায় ঘোরেন এতে তো অনেক অর্থ লাগে; আপনি এটা কোথা থেকে পান?
আর আপনি যে ক্যামেরা দিয়ে এইসব অসাধারণ ছবি তুলেন তার দাম কত? আমার এরকম একটা ক্যামেরার শখ অনেক দিন থেকে।
অবশ্যই, কিন্তু কোন সময়ই আলাদা ভাবে দেশ গোণা হয় নি, আর সব জায়গা কিন্তু নির্দিষ্ট দেশের অন্তর্ভুক্ত নয়, যেমন মেরু না উত্তর মহাসাগর। অবশ্যই ঘুরবেন, এর চেয়ে তেজালো নেশা আর কি হতে পারে।
অর্থ নিজেই জোগাড় করতে হয় , সেটাও এক সমস্যা। ছবি বা লেখা থেকে উপার্জনের ব্যবস্থা থাকলে আরো বেশী দেখা সম্ভব হত।
এগুলো ক্যানন ৭ ডি দিয়ে তোলা, দাম কিন্তু প্রায় প্রত্যেক দেশেই আলাদা, কাজেই একটু খোজ নিয়ে মডেলটা বললেই জানতে পারবেন।
facebook
আজকের প্রায় প্রতিটা ছবিই সুন্দর
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
facebook
[কিস্যু আর কওনের নাই! তারেকঅণু!]
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
facebook
এটা সত্যিই মারাত্মক হইছে। সেলাম ঠুকতে হচ্ছে ভাইডি। পুরাই আগুন। এন্ড
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
আজ আর ব্লগটা পড়লাম না, ছবিগুলো দেখতে এত ভাল লাগছে.................. গাছ গুলোকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে সেই ছোট বেলার মত দৌড়ে যেতে ইচ্ছা হচ্ছে
ঠিক আছে, পরে পড়ে জানিয়েন কেমন লাগল।
facebook
অঅঅসাধারন! আর কিছু মনে করতে পারছিনা!!
facebook
আমি পড়ছি। কিন্তু কিছু কমুনা। কমু ক্যা? আমার ঠেকা লাগেনাইক্কা এতো। হাহ।
facebook
আর কিছু বলার নেই।।
facebook
এত্ত সুন্দর সুন্দর পাখি !
পাখিরা তো সুন্দরই হয় !
facebook
তারেকানু ম্যান', জীবনের জটিল- কুটিল হিসাব- নিকাস যখন প্যাঁচায়ে ধরে, তখন আপনার লেখা পড়লে মনে হয়- 'ধ্যাততেরি এত ভেবে কি হবে।' আপনার লেখা সবসময় পড়ি, কিন্তু কখনও মন্তব্য করা হয়নি। আপনার লেখা পড়লে জীবনটা যেন নিঃশ্বাস নেয়।
শুনে ভাল লাগল, অনেক প্রেরণা দিলেন, আমাকে অণু বললেই হবে, শুভেচ্ছা।
facebook
দারুন দোস্ত ! অসাধারন তথ্যবহুল লেখা যথারীতি। চালায়া যা।
- নাভেদ
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
বাহ, নিকটা তো দারুণ হয়ছে।
facebook
আপনার লিখা পড়লে হিংসা আর প্রশংসা - এই দুটি অনুভুতি আসে!!
আর হিংসা! সাথে আসেন একবার, শীতের হিম বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এই পাখি দেখার শখকে যদি শাপ-শাপান্ত না করেন তাহলে বইলেন !
facebook
কোবা রে কোবি, কোবা।
দড়ি আসার আগ পর্যন্ত কোবাইয়া কৈরালান আন্ধা।
দড়ি আইলে পরে খাষ্টাঙ্গের পায়ার সনে কোবি থাকবেন বান্ধা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
খট্বাঙ্গে বাঁধা থাকলে পলান্ন খেতে চাইব কিন্তু!
facebook
যথারীতি আগে ছবি দেখলাম, পরে পড়লাম। আপনার পোস্ট সুন্দর, অসাধারণ এইসব বলতে বলতে আঙ্গুলের ডগা ব্যাথা হয়ে গেছে। এখন থেকে শর্টকাটে কাজ সারবো। পোস্টে মন্তব্য "ঐ"। ভালো থাকবেন।
facebook
শুধুই হিংসা
তারপর ভাললাগা,
অনেক অনেক শুভকামনা,
ধন্যবাদ
facebook
চালায়া যান ভাইডি।
অণুর্তুলোনাণুই
চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি
facebook
দারুণ
facebook
ফাটাফাটি হৈসে।
facebook
কিস্যু কওয়ার দরকারাসে???
নাই নাই
আছে আচ্ছে
facebook
অসাধারণ। শুধু এই প্যারাগ্রাফ নিয়েই একটা পোস্ট হয়।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ ফাহিম ভাই। আপনার রকি পর্বত নিয়ে লেখার অপেক্ষায় আছি।
facebook
আ-সি-তে-ছে
তবে একটু ধীরে, অণু ভাইয়ের মত জোর-জোয়ারে নয়
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বছর পেরিয়ে গেল যে !
facebook
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
facebook
ছবি দেখতে দেখতেই সময় পার। তাপ্পর বসলাম লেখা পড়তে। ওমা শেষের দিকে এসে দেখি আমার নাম সেটে দিয়েছে!!! আমি কিন্তু কিছুই করিনাই ভাই। অনেক ধন্যবাদ।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
যা করেছেন তার জন্যই অনেক অনেক
facebook
আমার চোখে পানি এসে গেল শেষটুকু পড়ে। অনেক ভালবাসা!
আর প্রথমটুকু !
facebook
নতুন মন্তব্য করুন