৮০০ বছর আগের এক ঝড়ের রাতে প্রবল প্রতাপশালী অ্যাজটেক সম্রাট দৈববাণীর মত স্বপ্ন দেখলেন- বিশাল এক ক্যাকটাসের মাথায় বসে একটি বিষধর সাপকে চঞ্চু আর নখর দিয়ে ফালি ফালি করে ছিড়ে খাচ্ছে পাখির রাজা ঈগল। ভেবেই নিলেন, যেমন স্বপ্নে ঐশী বাণী পাওয়া মানুষেরা ভেবে নেয়, এটি নিশ্চয়ই কোন শুভ লক্ষণ। এমন স্থান খুঁজে বাহির করে সেখানেই গড়তে হবে অ্যাজটেকদের নতুন নগরী। যুদ্ধংদেহী রণোম্মাদ অ্যাজটেক যোদ্ধাদের রাজার হুকুম মানেই ঈশ্বরের অমোঘ বাণী, আর সেই সাথে ধর্মের ধ্বজাধারী ভণ্ড পুরোহিত মোল্লারাতো ছিলই ইন্ধন জোগাতে। দিকে দিকে যেতে লাগল যোদ্ধারা, সেই শুভ লক্ষণের খোঁজে।
এর মধ্যে এক গোত্রপতি উপত্যকা ঘেরা এক সবুজ জলাভূমিতে বিশ্রামের জন্য আস্তানা গাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন, খানিকতে দোনমনায় ভুগছিলেন বটে, কিন্তু সেই সময়ই মাথার উপর দিয়ে আলসে ভঙ্গীতে চলে গেল বিশাল এক ছায়া, রোদ ঠেকানোর জন্য চোখের সামনে হাত তুলতেই দেখা মিলল এক ঈগলের রাজকীয় উড়াল, আকাশ জোড়া ডানা মেলে গোটা দুই চক্কর দিয়ে জলার সামনের এক ক্যাকটাসে বসল বিশ্রামের জন্য। আরে, অবাক কাণ্ড, এর পরপরই যে ক্ষুরধার বাঁকানো চঞ্চু দিয়ে পায়ে থেকে কি যেন খুবলে খুবলে খেতে থাকল মজাসে!
রক্তে অ্যাড্রিনালিনের স্রোত বয়ে গেল সর্দারের, এই কি সেই পুণ্যভূমি যার খোঁজে যারা আদিগন্ত চষে চলেছে এতগুলো ঘর্মাক্ত দিন? খুব সাবধানে নিজেকে পারলে মাটির সাথে মিশিয়ে সামনে এগোলেন তিনি, চোখ পড়ল ঈগলের খাদ্যবস্তুটির দিকে, আর কোন সন্দেহ হয়, চিৎকার করে মহান দেবতা কেটজালকোয়াটলকে ধন্যবাদ দিলেন, মনের গভীরে একটা আশাও ঝিলিক দিয়ে গেল- হয়ত কেটজালকোয়াটলই স্বয়ং এসেছেন পাখিটির রূপ ধরে, দেবদর্শনের সাথে সাথে মিলে গেল তার ভবিষ্যৎ অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের রাজধানীর অবস্থান!
দিন গড়িয়ে বছর হল, সেই জলাভূমিতেই গড়ে উঠল জলের মাঝে আজব শহর, মানুষগুলো ভাসমান মাচায় সবজি উৎপন্ন করে, নৌকা করে ঘুরে বেড়ায়, আবার পুজোর জন্য যায় ৩০ কিমি দূরের তিওতিহুয়াকান শহরে, দিন দিন বাড়তে থাকল নগরীর জনসংখ্যা। একসময় পৃথিবীর প্রথম মেট্রোপলিটান সিটি হয় এই অদ্ভুত শহরটি, অর্থাৎ এইখানেই প্রথম জনসংখ্যা এক মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায় ( এক পর্যায়ে অবশ্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় শহরের পরিণত হয় সে, কিন্ত তখন তার নাম হয়ে গিয়েছে মেক্সিকো সিটি! ) , যখন একই গ্রহের আরেক মহাদেশে নোংরা দৈনন্দিন জীবন যাপনের কারণে গোসলের অভাবে প্লেগের বিস্তার ঘটে বিস্তর মানুষ মারা যাচ্ছে ইউরোপে তখন সেই অ্যাজটেক শহরের বাসিন্দারা প্রত্যহ দুইবার গোসল করত!
তাই যখন সাগর পাড়ি দেওয়া লুটেরা স্প্যানিয়ার্ডের দল যখন এই মর্ত্যের অমরাবতী দেখে তারা বিস্ময়ে পুলকিত হয়ে সেই সৌন্দর্য উপভোগের সাথে সাথে প্রাচীন সভ্যতার সমস্ত নিদর্শন এবং ইতিহাস গুঁড়িয়ে দিয়ে ১৫২১ সালে টলেডো ইস্পাতের আঁচড়ে নতুন যুগের সূচনা করে। কিন্তু দেশটির পতাকায় থেকে যায় অ্যাজটেক সম্রাটের দেখা স্বপ্ন- ক্যাকটাস, ঈগল ও শিকার পরিণত হওয়া সাপ !
এর ৪৯০ বছর পরে ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারেক অণু নামের এক বঙ্গসন্তান একই শহরে পদার্পণ করে হাওয়াই জাহাজে চেপে, এটা তারই গল্প, সেই হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার কাহিনী, অপরূপ দেশ আর দেশবাসীর আলেখ্য-
( চলবে)
মন্তব্য
আপনার লেখার নিয়মিত এবং আগ্রহী পাঠক। আলসেমির জন্য মন্তব্য করা হয়ে ওঠেনা।
জমজমাট সিরিজের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সাথেই আছি।
অনেক শুভেচ্ছা! চেষ্টা করব।
facebook
এতো ছুড ক্যান? আপ্নের লিখা আরো পড়তে মঞ্চায়। এর ডাবল সাইজ দিয়েন পরেরবার, পাখি নিয়া পিচ্চিপিচ্চি লিখে আপ্নের অভ্যাস খারাপ হয়া গেসে
..................................................................
#Banshibir.
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ছোট গল্প লিখার চিন্তা করছি মাঝে মাঝে , তাই---
facebook
(গুড়)
facebook
মাসুদ রানার অথবা সেবার কোন এক বইতে সম্রাটের এই স্বপ্নের কথা পড়েছিলাম। ব্যাস। ঐটুকুই। কিন্তু এত ছোট পর্বে তৃষ্ণা মেটানো তো দূরে থাকি, তৃষ্ণা জাগতেই পর্ব শেষ! "প্রথম পর্বপ এত ছোট কেনে?"
পরের পর্বের জন্য (ইমো দিতে পারছি না তবে কল্পনা করে নিন, এখানে পপ্পন হবে)
এখানে 'হাসি'
তাই নাকি ! কোন বই মনে পড়লে জানায়েন।
প্রথম পর্ব না তো, এতই ০, মানে শুরুর আগের মুখব্যাদান!
facebook
চাই সাম্রাজ্য?
কিন্তু চাই সাম্রাজ্য তো আলেকজান্দ্রিয়ার নিয়ে! তারা অবশ্য উত্তর আমেরিকা পৌছায় দেখানো হয়েছিল।
facebook
কিন্তু লেখা ছুডু ক্যান? বেশী বেশী বড় বড় লেখা দেন। নো ফাকিবাজি
হ, ফাঁকিবাজদের তালিকায় নাম উঠে যেত ঠেকানোর জন্য দিলাম
বেশী বেশী বড় বড়! ভাইজান মনে হয় মতিকন্ঠের খবর ইদানীং বেশী পড়ছেন, বিশেষ করে বাংলার কোকিল সম্পর্কিত!
facebook
এই ব্যাটা সাহিত্যিক ফাঁকি মাত্তেছে, তার উপ্রে প্রফেসর খেদানির পাট দিব দিব কইয়াও ঝুলাইতেছে। উদা মাস্টরের ফাঁসি চাই
ডাকঘর | ছবিঘর
উদাস দা, আমারে লগে লন, আপনি তেল খুজেন খনিতে, আমি পাখি খুজব বনে!
facebook
আমি মাঞ্চিত্রে নাই কেনু??????? আমি কি কৈচ্চি।
ডাকঘর | ছবিঘর
তেল খুঁজতে খুঁজতে লেখালেখি মাথায় উঠছে। ওইদিকে ইয়োলো স্টোনএর প্ল্যানটাও ঠিক মতো করতে পারতেছিনা । যাউকগা, অনেকদিন পর একটু সময় পেয়ে প্রফেসরদের এসো নিজে করির বাঁশ দেয়ার কাজটা শেষ করতেছি। কালকেই লেখা দিবো, নো মোর ফাঁকিবাজি
facebook
অল্প কদ্দুর পড়ার পরই যখন উত্তেজনার এড্রেনালিনের ক্ষরণ শুরু হল, সেই সভ্যতা চোখের সামনে মেলে ধরা শুরু করল... নিজের মনের পাতায় নিজেকে টাইম মেশিনে ফেরত যাওয়া পরিব্রাজক হিসেবে কল্পনা করা শুরু করলাম...
ওমনি দিলেন ল্যাখাটা থামাইয়া... এ ক্যামুন অবিচার...!!
সচল অনুর কঠিন শাস্তি দাবী করছি...
তাড়াতাড়ি পরের লেখাটি দিলে শাস্তি মাফ...
লিখে ফেলুন
নো চিন্তা, ডু ফুর্তি, শাস্তি মাপ করার ব্যবস্থা করছি !
facebook
উরেবাব্বহা!
বেশ জমজমাট পর্দার ঝালর ঠেলে স্টেজের বাতি জ্বলে উঠেছে-
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
সারা পৃথিবীই তো নাট্যশালা!
facebook
আপনি হাওয়াই জাহাজে করে গেছেন? আর দেখেন আমি ভাবতেছিলাম হাওয়াই জাহাজ পানিতে চলে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
জলের নিচেও চলে
facebook
ছবি কই? আপনার পোষ্ট, ছবি নাই, হয় নাকি? ফাকিঁ, ফাকিঁ,,,,,,,,,
(প্রাসঙ্গিক না হলেও পাঠকের চাহিদা বলে একটা ব্যাপার আছে না! )
আর হ, ল্যাখা ছুডো ক্যান?
আসিতেছে !
facebook
এলাম পড়লাম শেষ হয়ে গেল---- নাহ হয় নাই - আর বড় লেখা চাই ----
লিয়েই লিব !
facebook
দাদা বসলাম নিয়ে - তোমার ঝুলি খোল
"০" পর্বও মজার হয়েছে
আমিও একটু বসি!
facebook
ভূমিকা খুব পছন্দ হলো। দারুণ একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে নিশ্চয়ই
আপনেই বুঝলেন
facebook
পড়তে পড়তে ভাবছি নিশ্চয়ই নিচে ছবি আছে। শেষে দেখলাম কিছুই নেই। । লেখার শুরুটা চমৎকার , তবে এত ছোট লেখা পড়লে আমার আবার মন খারাপ হয়ে যায়
মন খারাপ কইরেন না! লেখা আসিতেছে--- সেই সাথে ছবিও !
facebook
ছুডো ক্যাঁ?
শুরু তো ছুডোই হয় !
facebook
কেটজালকোয়াটল - সে এক নাম বটে। তেমনি তারেক অণুও এক বঙ্গ সন্তান।
সিরিজ পড়বার অন্য ধরনের মজা। পর্ব ছোট হলেও সিরিজ সুদীর্ঘ হোক।
তাদের নামগুলো আসলেই শিহরণ জাগানিয়া
facebook
আরে মিঞাঁ টক-ঝাল পরে, আগে কন বরফমিষ্টি দেশ ফিনলাণ্ডিয়া ছেড়ে মেহিকোর বিখ্যাত নীল রাজবংশের আগুনাভ আগাভে রাজকন্যার পানিপ্রার্থনা করতে যে গেসিলেন সেটা তো আমি জানি ! তারে আমাদের বঙ্গপুঙ্গব জয় করতে পারছেনি ভাল মত? সাথে করে দুয়েকটা ১০০% নীল শালী আনতে পারসেন? আগে হেই কথা কন, পরে যত্তসব হাবিজাবি... (পারলে একজন কুমারী আগাভে শ্যালিকা পার্সেল করে দেন)।
ফিনল্যাণ্ডের ঠাণ্ডায় আগাভে রাজকন্যার উষ্ণ সাহচর্যে আশা করি সময় ভালই কাটছে...
****************************************
অবশ্যই ! হে হে, সে কথা আর বলতে
facebook
দুপুরেই পড়েছিলাম। লগাইনি বলে মন্তব্য করা হয়নি। ভাল্লাগছে।
আমারও অভিযোগ আছে এত্ত ছুডু হপে না। এই অন্যায় ছৈলত ন।
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
চমৎকার লিখেছেন। গল্প লিখুন।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
facebook
ছোট লেখা দিয়ে ফাকিবাজির চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। শুরুটা অনেক ভাল হয়েছে। পর্ব ১ এর অপেক্ষায় রইলাম। আপনি ট্রাভেল রাইটিং শুরু করলে মন্দ হত না। আপনি কি বলেন?
শুরু করলে!
এর মানে কি! তাহলে এতদিন কি করলাম!
facebook
এই শুরু করা মানে বই আকারে প্রকাশ। যাতে করে আপনার লেখা পড়া এবং সংগ্রহে রাখা যায়।
facebook
এই শুরু করা মানে বই আকারে প্রকাশ যাতে করে আপনার লেখা পড়া ও হয় আবার সংগ্রহে ও রাখা যায়।
ভাল বলেছেন, প্রকাশক খোঁজা হচ্ছে, দেখা যাক।
facebook
অসংখ্য শুভ কামনা আপনার জন্য। ভাল কিছু বই এর অপেক্ষায় রইলাম।
পৌরাণিক অভিনন্দন আমাকেই ... এই লেখাটি পড়ার জন্য ।
facebook
চলতে থাকুক। বড় রক্তার্ত এই দেশের ইতিহাস। বড় মন খারাপের - এবারে বঙ্গ সন্তানের চোখে দেখি কেমন লাগে।
আসলেই, সেই ইতিহাস জড়ানো পথে চলা বড়ই ক্লান্তিকর তার নিষ্ঠুরতার জন্য
facebook
চখাম হইসে, চলুক
চলছে এখনো-
facebook
অসাধারণ মুখবন্ধ।
কেন যে ৩ নম্বরটা আগে পড়লাম!!!
-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
তাতে কী !
facebook
প্রথম থেকেই শুরু করলাম---
---এস এম নিয়াজ মাওলা
নতুন মন্তব্য করুন