গভীর রাত, নিস্তব্ধ নিঝুম, প্রকৃতির ডাকের বেগে ঘুম ভেঙ্গে গেছে, ঘুম জড়ানো চোখে তাবু থেকে বাহির হয়ে পাথরের আড়ালে হালকা হবার চেষ্টারত, কোন হুঁশ নেই বললেই চলে, হঠাৎ সামনে দিকে চোখ গেল, তারপর মাথার উপরে, মনে হল একরাশ ঠাণ্ডা জল ঢেলে দেয়া হয়েছে মাথার উপরে, পেটের ভিতরে ফরফর করে উড়াল দিল একরাশ প্রজাপতি, আর সারা শরীর এক অজানা কারণে ভীষণ ভাবে কাঁটা দিয়ে উঠল—
এই ঠাণ্ডার মাঝেই কুল কুল করে চিকন ঘামের ধারা নামল মেরুদণ্ড বেয়ে, আর উত্তেজনায় হৃৎপিণ্ড রক্ত সরবরাহ করতে লাগল দ্বিগুণ গতিতে, মুখ খুলে হাঁ করে নিঃশ্বাস নিয়ে ধাতস্থ হবার চেষ্টা করতে করতে কেবল বুঝতে চাইলাম আমি কোথায়?
যে দৃশ্যটি সেই মুহূর্তে আমার চোখের সামনে ছিল তা মস্তিস্কের নিউরনে অক্ষয় খোদিত হয়ে গেছে বাকী জীবনের জন্য--- আকাশ ভরা অন্তত নক্ষত্র বীথি, আমাদের ছায়াপথ আকাশগঙ্গার অনেকখানিই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বাকী অর্ধেক ব্যতিক্রমী উজ্জলতায় ঢাকা পড়ে গেছে আধখানা চাঁদের আলোয়, সামনের বরফঢাকা একাধিক সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, চাঁদের আলোয় ধুলোবালিহীন বাতাসে নিজের ঝকঝকে স্পর্ধিত অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে, পায়ের নিচ থেকেই শুরু হয়েছে ঘন পেজা মেঘের ভেলা , দূরে সরু হিমবাহ মৃত ড্রাগনের মত আঁকাবাঁকা নিথর পড়ে আছে। এমনটি দেখেছি আমি আগেও, একাধিকবার! কিন্ত কোথায়?
এমন দৃশ্য কেমন স্বপ্নেই দেখা সম্ভব, তাই তো সারা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠেছিল, কোথায় দেখেছি এমন! কেমন যেন চির চেনা দৃশ্যপট। ঐ তুষারঢাকা কুমারী পর্বতশৃঙ্গ, দূরের অথচ কাছের জ্যোতিস্কের দল, মেঘের ভেলা, সবই যে ভীষণ পরিচিত। ঘটনাটির বিস্তার কিন্তু কয়েক মুহূর্তমাত্র, ভাবতে ভাবতেই অতল চিন্তায় তলিয়ে যেয়ে তাবুতে ঢুকতেই ঝা করে বিদ্যুৎ চমকের মত মনে পড়ে গেল কোথায় দেখেছি এই দৃশ্য- সিনেমার পর্দায়! একাধিকবার কল্পকাহিনী নিয়ে নির্মিত সিনেমায়, ভিনগ্রহের আকাশ এমনই হয়! ঠিক এমন, ঝকঝকে নক্ষত্রের হাঁট, জ্বলজ্বলে চাঁদ, বরফপর্বত। কিন্তু আমি কোথায়?
তাবুর পরিচিত পরিবেশে, স্লিপিং ব্যাগের উষ্ণতায় সম্বিত ফিরে আসল, চট করে এই অবিস্মরণীয় ঘটনা হেডল্যাম্প জ্বেলে লিখতে লাগলাম রোজনামচার পাতায়, বিশ্বের উচ্চতম অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পে, প্রায় ৬০০০ মিটার বা ২০,০০০ ফুট ( ৫৭২০ মিটার চুলচেরা মাপ) উচ্চতায় আধো জাগো, আধো ঘুমো তন্দ্রার মাঝে।
বিশ্বের ৬ষ্ঠ উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ তিব্বতের চৌ য়ূ ( ৮২০১ মিটার) বিজয় অভিযানের অংশ হিসেবে নেপালের কোদারি সীমান্ত দিয়ে তিব্বতে প্রবেশের পর গাড়ী দিয়েই আমরা ৪৯১০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত চৌ য়ু বেস ক্যাম্পে পৌঁছাই, যেখানে সারা গ্রীষ্মের জন্য গোটা কয়েক তাবু ফেলা হয়েছে, পাশেই সমানে জাবর কাটছে ইয়াকের দল।
সেখানে একরাত কাটিয়ে এই উচ্চতায় খানিকটা ধাতস্থ হয়ে বেশ ক-কাপ লবণ চা খেয়ে পরদিন পদব্রজে যাত্রা শুরু হল অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পের দিকে যাকে সংক্ষেপে এবিসি ( Advance Base Camp = ABC) । বাংলাদেশ থেকে এই ঐতিহাসিক যাত্রায় দুইজনের দলে পর্বতারোহী এম এ মুহিত এবং আমি, তারেক অণুর সাথে আছে দুইজন শেরপা।
এর আগে অবশ্য কয়েকটা জনপদে থেমে এক থেকে দুই রাত করে অতিবাহিত করতে হয়েছে এমন উচ্চতার কম অক্সিজেনের পাতলা বাতাসের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য, সেই ফাঁকে চলত প্রতিদিন খানিক সময় নিয়ম করে হাঁটাহাঁটি যাতে ফুসফুস ধীরে ধীরে খাপ খাইয়ে নিতে পারে পরিস্থিতির সাথে।
উল্লেখ্য তিব্বতে অবস্থিত পর্বতটির অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্প বিশ্বের উচ্চতম বেস ক্যাম্প ( বেস ক্যাম্প হচ্ছে সেই স্থান যেখান থেকে মূল অভিযান পরিচালিত হয়, সাধারণত অভিযাত্রীরা কয়েক সপ্তাহ থেকে কম অক্সিজেনের বাতাসের সাথে খাপ খাইয়ে রক্তে অতীব প্রয়োজনীয় হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা বাড়াতে পারেন, সেই সাথে এখান থেকেই তারা বেশী উচ্চতার ক্যাম্প ওয়ান, পরবর্তীতে ক্যাম্প টু, ক্যাম্প থ্রী তে যেয়ে আবার ফিরে আসেন, মূল অভিযানের সমস্ত রসদ, অক্সিজেন, বড় তাবু সবই এখানে থাকে),
এভারেস্ট বেসক্যাম্পের উচ্চতা যেখানে তিব্বতে ৫১৫০ মিটার এবং নেপালে ৫৩৬৪ মিটার। বলা চলে এটি পর্বতারোহীদের কাছে এটি একটি শহর মত, এখানেই রঙবেরঙের তাবু ফেলে আশ্রয় নেয় পাহাড় ছোঁয়ার নেশায় মত্ত পৃথিবীর মানুষেরা, এখানেই শেষ বারের মত মেলে বাবুর্চির রান্না করা গরম খাবার, গোসলের ঈষদুষ্ণ জল, সেই সাথে বাড়তে থাকে শারীরিক সক্ষমতা।
কিন্তু এই বেস ক্যাম্পে পৌঁছানোকেই বলা চলে এক মহা অ্যাডভেঞ্চার, সে এক মহাঝক্কির কাজ, ইয়াকের কাঁধে আমাদের যাবতীয় মালসামান, যার মধ্যে আমার ল্যাপটপও বর্তমান, দুই হাতে হাঁটার দুই লাঠিসহ যাত্রা শুরু করেছি বিশ্বের উচ্চতম পর্বতমালায়। যতই উপরের দিকে যাওয়া হচ্ছে ততই ক্রমশ মন্থর হয়ে আসছে হাঁটার গতি এবং কষ্টকর হয়ে উঠছে পরবর্তী পদক্ষেপ।
এর আগে মুহিত ভাই বেশ কবার হিমালয়ের নানা পর্বতশৃঙ্গ আরোহণ করায় এবং এর চেয়ে বেশী উচ্চতায় অভিযান চালানোর অভিজ্ঞতা থাকায় তার জন্য খুব বেশী কষ্টকর না হলেও আমার এর আগের সর্বোচ্চ উচ্চতার অভিজ্ঞতা ছিল আল্পসের ম ব্লা শৃঙ্গ ( ৪৮৪৮ মিটার) যার ফলে প্রতি পদক্ষেপের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আমার অর্জন হচ্ছে এক নতুন রেকর্ড! যদিও তাতে বিন্দুমাত্র আহলাদিত হবার সুযোগ পাচ্ছি না, বরং থেমে থেমে জলপান করার মাঝেই যেন খুঁজে নিচ্ছি বেঁচে থাকার সার্থকতা।
আমাদের সাথে একই সাথে যোগ দিয়েছেন জাপানীদের একদল, স্পেনের বাস্ক জাতির বন্ধু, শেরপারাতো আছেনই পথপ্রদর্শক হিসেবে। ডাঙ্গায় তোলা মাছের মত খাবি খাচ্ছে যাত্রীদের কমবেশি সকলেই, কিন্তু যাত্রা অব্যাহত রয়েছে এর মাঝেও। এক পর্যায়ে দেখা মিলল বিশাল ঘুমন্ত হিমবাহের যার অবশ্যম্ভাবী প্রবল নিম্নদিকে ধাবিত গতিপথের জন্য সৃষ্ট গ্রাবরেখার উপর দিয়েই কোটি কোটি পাথর খণ্ড মাড়িয়ে যাত্রাপথ করে নিতে হচ্ছে।
এমনভাবে প্রায় পুরো দিন যাত্রার পর দেখা মিলল দূর পর্বতের গায়ে ঝুলে থাকা বেশ কিছু তাবুর দর্শন মিলল যাদের চারপাশ ঘিরে ছিল ঝিলমিল করতে থাকা প্রার্থনা পতাকা (Prayer Flag) , কাঙ্খিত গন্তব্য দৃষ্টিসীমায় চলে আসায় অ্যাড্রিনালিনের প্রবাহ বেড়ে উল্লসিত করে তুলল সবাইকে।
যদিও আরো ঘণ্টাখানেক লাগল আমাদের দলের জন্য নির্ধারিত জায়গা খুঁজে বাহির করতে, যেখানে যাবার পরপরই আমাদের দলের শেরপারা শুরু করেছে তাবু খাটানো, যদিও দলের মূল রান্নার স্থান ও খাবার ঘর, গোসলের স্থান এবং টয়লেট বেশ আগেই স্থাপন করা হয়েছিল।
না না, এমন সব কথা শুনে আলিসান কিছু কল্পনা করার দরকার নেই, সেগুলো সবই নানা আকারের তাবু, গোসলেরটা বলা চলে কেউই ব্যবহার করতাম না, এত উচ্চতায় যেখানে শ্বাস নেওয়া মুশকিল, জল গরম করে শরীরে ঢালার আগেই জুড়িয়ে ঠাণ্ডা হয়ে যায়, সেখানে গোসলের হুজ্জতে না যাওয়াটাই শ্রেয়তর মনে হয়েছিল। আর টয়লেট? সেটিও মহা অস্বস্তিকর এক ক্ষুদে তাবু, পাথরের খাঁজের মাঝে কায়দা করে স্থাপন করা, সেটির নিচের ফাঁকা জায়গা বর্জ্যে ভর্তি হয়ে গেলে আবার তাবু সরিয়ে সুবিধজনক জায়গায় স্থাপন করা হয়। এবং সেই বিশেষ জায়গায় যেতে হলে নাকে টিস্যুপেপার ( যাকে এক নামী সাহিত্যিক বলেছেন হাগজ) চাপা দিয়ে যাওয়া আবশ্যক।
যাক সে কথা, আমাদের তাবুর জায়গায় ফিরে আসি, চমৎকার বাড়ীটি প্রায় প্রস্তত, আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য এইতো আমাদের বাড়ী, জীবন ধারনের আশ্রয়। প্রত্যেক পর্বতারোহীর জন্য আলাদা আলাদা তাবু, কিন্তু নিয়মিত দেখা হবে সকলের খাবার সময় আর চায়ের আড্ডায়।
নিজের আস্তানা খাঁড়া হতে দেখে টলোমলো পায়ে খাবার তাবুতে তখনকার বরাদ্দ গরম ফলের রস পান করার জন্য যেতেই হড়হড় করে পাকস্থলীর সমস্ত পদার্থ গলিত তরলের রূপ ধরে মুখ দিয়ে ছিটকে বেরিয়ে এল! একটু ধাতস্থ হতেই দেখি রান্নার কাজে নিয়োজিত গোমবু দাজো দাঁত বাহির করে বলছে এই বেস ক্যাম্পের উচ্চতায় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ সী লেভেলের স্রেফ অর্ধেক, অনেককেই এই পোড়া চোখে দেখলাম পা দিয়েই বমি করে তারপর স্বাগতম জানাল!
কি আপদ! কিন্তু তখন কি আর জানি বিপদের সবে শুরু—
অবসাদ ধুয়ে ফেলে হতক্লান্ত অবস্থাতেই তাবুর ভিতরে স্লিপিং ব্যাগসহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কোনমতে ব্যাকপ্যাক থেকে বাহির করে আবার খাবার ঘরে গেলাম সবার সাথে দেখা করবার এবং মুখে কিছু দেবার জন্য। দেখা হল ব্রাজিলের বিখ্যাত পর্বতারোহী পল কোয়েলহো ( আলকেমিস্টের সেই লেখকের নাম) এবং তার স্ত্রী হেলেনা কোয়েলহো, পল অনেক বছর আগেই চৌ য়ু আরোহণ করেছিলেন আবার এসেছেন হিমালয়ের অমোঘ টানে, আছে অস্ট্রিয়ার তরুণ অ্যান্ডি, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা মেসনারের মত এক মুখ দাড়িওয়ালা প্যাট্রিক এবং সেই সাথে ৭২ বছর বয়স্ক জাপানী মাতসুমোতো। দলের বাকী দুই জার্মান সদস্য সেবাস্তিয়ান এবং টলস্টেন ইতিমধ্যেই হাইকিং করে ১ম ক্যাম্পে চলে গেছে।
গরম গরম মুরগীর স্যুপের সাথে টিনের সব্জি আর ভাত অনেক ঘণ্টার অভুক্ত পেটে যেতেই আরেকবার বমনবন্যা নড়িয়ে দিল আমার অস্তিত্বের ভিত। মুহিত ভাইয়ের পরামর্শে এযাত্রা হালকা কিছু খেয়ে বিশ্রাম নিতে সোজা তাবুতে ফিরে গেলাম।
এযাত্রা আপনাদের জানিয়ে দিই, অক্সিজেনের অভাব জিনিসটা কেমন-
অক্সিজেনের অভাবে মানব দেহের কি হয়? দেহ অসাড় হয়ে পড়ে, চলে না। এটা কেমন কথা, জলজ্যান্ত দেহ এমনি এমনি স্থবির হয়ে গেল! সহজ উদাহরণ দিই- পেট্রল না থাকলে একটা গাড়ীর কি হয়? জ্বালানী না থাকলে আবার কি হবে, গাড়ী স্টার্ট নিবে না, এক জায়গায়ই পড়ে থাকবে। এখন কল্পনা করুন আমাদের দেহ একটা গাড়ী, তাহলে ব্রেন বা মগজ তার ইঞ্জিন আর জ্বালানী হচ্ছে অক্সিজেন ( অবশ্যই খাদ্য থেকে সে শক্তি লাভ করে, কিন্তু অক্সিজেন ছাড়া সেটিও অসম্ভব) । এখন যদি বাতাসে অক্সিজেন স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক হয় ( এভারেস্ট শীর্ষে এক তৃতীয়াংশ!) তাহলে কি ঘটবে সহজেই অনুমেয়, আপনার সমস্ত কাজকর্ম অত্যন্ত ধীর হয়ে যাবে, এবং কোন কিছুই করতে ইচ্ছে করবে না।
এবিসির প্রথম দিন দুই আমার এক গ্লাস পানীয় ( ফলের রস অথবা জল) পান করতেই প্রায় পনের থেকে বিশ মিনিট সময় লেগেছে), কিন্তু কিভাবে এবং কেন?
টেবিলের উপর পানীয়ের গ্লাস, চিন্তা করছি সেটা পেটে গেলে একটু ভাল বোধ হবে ( পর্বতে সুস্থ থাকার প্রথম নিয়ম প্রচুর পরিমাণে জলপান করা), কিন্তু মগজের অন্য অংশ বলছে খামোখা বসে আছে বসে থাক, আবার হাত বাড়িয়ে গ্লাস তুলে এনে ঠোঁটের কাছে ধরে মাথা ঝুঁকিয়ে সেই তরল গলাধঃকরণ করে আবার গ্লাসটি নামিয়ে রাখা অনেক ঝক্কির কাজ। আবার মস্তিস্কের অন্য অংশ হিসাব কষে বলল- কিন্তু ভাল হতে চাইলে, পর্বতে উঠতে চাইলে, সবচেয়ে বড় কথা বেঁচে থাকতে চাইলে পান করতেই হবে! আবার অন্য অংশের ভেটো দেবার পালা। এই দন্ধের মাঝে পড়ে সামান্য এক কাজটিতেই চলে যেতে মূল্যবান ২০টি মিনিট। এবং অনেক ক্ষেত্রেই গ্লাস হাতে নিয়ে ঠোঁটের কাছে এনেও বেশী ভারী বোধ হওয়ায় আবার নামিয়ে রাখতাম, সেই দৃশ্যগুলো এখন মনে পড়লে স্লো-মোশন ছায়াছবির কথা মনে হয়!
সেই সাথে রাতে মুত্রত্যাগের জন্য টয়লেট পর্যন্ত কেউই যেতে রাজী না, তাই পাথরের আড়ালে সেটি সারলেই চলে, কিন্তু আঁধারকালে তীব্র ঠাণ্ডায় আর মস্তিষ্ক সেই ঝামেলাটুকু পোহাতে না চাইলে তাবুর ভিতরে একাধিক বড় বোতল রাখা থাকত, যাতে জলত্যাগ করে পরের দিন আবার ফাঁকা করে আসতে হত। তবে জলপানের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়াতেই থাকলাম জোর করে, (সবকিছুর পড়ে পর্বতে মনের জোরটাই প্রধান, এটি থাকলে আপনার শীর্ষে পা দেবার সম্ভাবনা থাকে সবসময়ই, এটি হারিয়ে গেলে সেযাত্রা পত্রছাড়াই ফেরত!) , তাই মাঝে মাঝে একরাতের তরল নির্গমনের পরিমাণ দেড় লিটার ছাড়িয়ে যেত, যা রীতিমত উৎসাহব্যঞ্জক। আর তাবুর বাহিরে যে অন্য গ্রহের আকাশ দেখতাম ঘুমের ঘোরে তা দিয়েই তো লেখাটা শুরু করলাম!
দিন দুই পড়ে ব্রাজিলিয়ান হেলেনা তার সাথের রক্তের অক্সিজেন পরিবহণ ক্ষমতা মাপার যন্ত্রে আমার হাত পরীক্ষা করে বেশ গম্ভীর মুখেই বললেন - You are Clinically Dead! বুঝলাম, আসলে একধাক্কায় এত উপরে চলে আসায় শরীর সহজে মানিতে নিতে পারছে না, তার উপর তিব্বতে ৫০০০ মিটার পর্যন্ত আমরা গাড়ীতেই এসেছি, সেই পথটুকুও হেঁটে আসলে ফুসফুস এবং হৃৎপিণ্ড অনেক বেশী খাপ খাইয়ে নিত এই মরণফাঁদে।
বাধ্য হয়েই পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হল কয়েক দিন, এর মাঝেই মুহিত ভাই ফার্স্ট ক্যাম্প ঘুরে আসলেন শেরপাদের সাথে। আমার সাথী তখন সাথে বয়ে আনা চারখানা বই, দস্তয়েভস্কির ব্রাদার্স অফ কারামাজোভ এবং ইডিয়ট, সেই সাথে হেনরি ডেভিড থরোর ওয়ালডেনসহ নির্বাচিত রচনা এবং পেঙ্গুইনের রবার্ট ফ্রস্টের শ্রেষ্ঠ কবিতা সংকলন। তিব্বত সীমান্তে বই নিয়ে অনেক ঝামেলা করে সেখানের কাস্টমস কর্মকর্তারা, পাছে চীন বিরোধী কিছু ঢুঁকে পড়ে ভেতরে! তাই, এক হালি বইয়ের সবগুলোই ইংরেজি নিয়েছিলাম ঝামেলা এড়ানোর জন্য। যদিও সাথের ল্যাপটপে অগণতি বাংলা ই-বই ছিল কিন্তু এক অদ্ভুত অজানা কারণে ৪৬০০ মিটার উচ্চতায় আসার পর থেকে নতুন ল্যাপটপ আর কোনভাবেই চালু হল না! সেই সাথে ৫০০ গিগার চমৎকার সব ডকুমেন্টরি নিয়েছিলাম, ভাবটা এমন বসেই থাকব বেস কিছু দিন, ফাঁকে ফাঁকে দেখে ফেলব, কিন্তু কম্পু চালু না হয়ে ভাল একটা বিপদে ফেলে দিয়েছিল, মনে হল হয়ত ইয়াকের পিঠে সওয়ার হবার সময় কোন এক ফাঁকে বারোটা বেজেই গেছে অথচ কাঠমান্ডু ফেরার পরপরই বাছাধন পূর্ণোদ্দমে কাজ বা জীবনের ২য় ইনিংস শুরু করেছিল!
সেই শ্রান্ত সময়ের অফুরন্ত অবসরে ব্রাদার্স অফ কারামাজোভ শেষে করেছিলাম কয়েক দিনেই, বাবা- ছেলের প্রেম আর জিঘাংসার মাঝে দেখতাম বিশ্ব সেরা লেখকের ভাষার এবং ঘটনার মারপ্যাচ, আর গ্রুসেঙ্কা নামের তরুণীটি মানসপটে হানা দিত মাঝে মাঝেই যার দেহের প্রতিটি অংশই লেখকের মতে ছিল এক একটি ধারালো তীক্ষ বাঁক, এমনকি আঙ্গুলের নখও।
দিনের রুটিন ছিল বেশ একঘেয়ে, বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙ্গার পরে নাস্তার জন্য খাবার তাবুতে যাওয়া, সেখানে বেশ কয়েক কাপ চা দিয়ে অন্যদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করে ফের তাবুতে ফেরা, খানিকটা ভাল বোধ করলে আসে পাশের ক্যাম্পগুলোতে যাওয়া এবং খানিকটা হাঁটাহাঁটি করা, মাঝে মাঝে স্যাটেলাইট ফোনে চড়া বিল দিয়ে বড় ভাইয়ের এবং ক্লাবের বন্ধুদের মাধ্যমে বহির্বিশ্বকে জানানো যে বেঁচে আছি! দুপুরের খাবারের সময় গরম গরম রান্না নিয়ে নেপালি ছেলে তেনজিং-এর তদারকি , যদিও মূল পাচক ছিলেন গোমবু দাজো ( নেপালি ভাষায় দাজো মানে ভাই, দিদি মানে বোন)। কখনো পাতে মিলত আস্ত মুরগীর ঠ্যাং, কখনো ডাল-ভাতের সাথে ডিম, মোটামুটি পুষ্টিকর খাবার সব, কিন্তু অক্সিজেনের অভাবে খেতে নিজেকে বাধ্য করাটাই ছিল প্রথম দিকের এক যুদ্ধ।
দুপুরের খাবার পরে অন্যান্য পর্বতারোহীদের সাথে আড্ডাটা জমত বেশ, বিশেষ করে ৭২ বছরের মাতসুমোতো যে গত ৩০ বছর ধরে ব্রাজিলে থাকে, তার নানা অভিজ্ঞতার ঝুলি খুলে ধরত মনোযোগী শ্রোতা পেয়ে। সবাইকে অবাক করে আমাদের মাঝে সেই বছর উনিই সবার আগে চৌ য়ু শীর্ষে আরোহণ করে ফিরে আসেন, এবং যেখানে এক তরুণ পর্বতারোহীর জন্য এক মৌসুমে একটি ৮০০০ মিটারের পর্বত জয়কেই বিশাল কিছু হিসাবে গণ্য করা হয়, সে তখন আরেকটি ৮০০০ মিটার জয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল! জিজ্ঞেস করলাম- তাহলে মাতসুমোতো, তুমি সারা জীবনই পর্বতে চড়েছ, নাহলে এত ভাল ফিটনেস হবার কথা না- তার অবাক করা জবাব- না না, ৬৩ বছর বয়সে অবসর নেবার পর থেকেই না পাহাড়ে চড়া শুরু করলাম, জাপানী কোম্পানিতে চাকরি করলে অবসর নেবার আগে পর্যন্ত নিজের শখপূরণ বলতে কিছু নেই জীবন!
অ্যান্ডি জানাত কি করে গত ৭ বছর ধরে তিল তিল করে অর্থ জমিয়ে সে এসেছে তিব্বতে এই স্বপ্নপূরণের জন্য। জার্মান টলস্টেনের পর্বতারোহণের হাতে খড়ি হয় তার বাবার কাছে, পেরুর আন্দেজে! সে ল্যাতিন আমেরিকার প্রায় সব উঁচু পর্বত আরোহণের সাথে সাথে অতিক্রম করেছে তিব্বতে হিম মরুভূমি চ্যাং থ্যাং এবং ল্যাং থ্যাং।
মাঝে মাঝে আড্ডায় যোগ দিত তেনজিং, যার দাবী নেপালের সমস্ত শেরপা মেয়ের সমস্ত তথ্য তার মাথায় পোরা আছে, ব্যাটা মনে হয় শেরপাদের হিউ হাফনার হয়ে বসেছে এমন একখানা ভাব!
বিকেলে এক ফাঁকে ফলের রস নিয়ে তাবুতে দিয়ে আসত তিব্বতি তরুণ নরবু। কেমন আছে নরবু, তার বিষণ্ণ হাস্যোজ্জল চেহারাটি খুব মনে পড়ে। এত ভদ্র একটা মানুষ, অথচ তাবুতে সে থাকত নিজ ভূমে পরবাসীর মত, তিব্বতের মাটিতেই তিব্বতি হবার অপরাধেই যেন নেপালিরা তাকে গালি না দিয়ে কথাই বলত না! খুব খারাপ লাগত এই নিগ্রহ, একাধিক বলে কাজ না হওয়ায় শেষে নিজেই ভাল ব্যবহার করে পুষিয়ে দেবার সামান্য চেষ্টা করতাম তার মনোজগতের গ্লানি। তাবু ছেড়ে একেবারে চলে আসার সময় সংশ্লিষ্ট সবাইকেই বেশ ভাল দর্শনী দেওয়া হয়েছিল, সেখানে গোমবু দাজো ২৫০ ডলার পেলেও নরবু কিন্তু পেয়েছিল মাত্র ৫০ ডলার, অথচ দলের সবচেয়ে ভারী কায়িক পরিশ্রমের কাজগুলো সেই করত হাসিমুখে!
এরপরে তারাজ্বলা আকাশের নিচে রাতের আহার, তারপর বিছানায়- বই পড়া অথবা কথা বলা। মাঝে মাঝেই মুহিত ভাই পাশের তাবু থেকে একের পর এক বাংলা গান গেয়ে শোনাত ( এক সকালে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটা এসে বলল- তোমরা প্রতি রাতেই প্রার্থনা বেশ জোরে জোরেই কর দেখি! )। রাতের প্রায়ই কামান দাগার মত শব্দ করে হিমবাহের প্রান্তসীমা থেকে খসে পড়ত বরফের চাঙড় সামনে সৃষ্ট জলাশয়ে।
আবার একটা দিন শুরু হয় সূর্যের আলো তাবুর দরজার পড়লে, মাঝে মাঝেই অবশ্য দিনটির শুরু হত তুষারাচ্ছন্ন হয়ে, একটা গুমোট ভাব জড়িয়ে থাকত চারিদিক।
এমন এক দিনেই শুনতে পেলাম ইয়াকের গলায় বাঁধা ঘণ্টার শব্দ এগিয়ে আসছে আমার তাবুর দিকে! কি ব্যাপার, ইয়াকের বাবারও সাধ্য হবার কথা না এই উঁচু নিচু পাথরের দঙ্গল পাড়ি দিয়ে খাদ্য অন্বেষণে আসা, কিন্তু শব্দ দেখি গায়ের উপরে এসে পড়েছে, সাবধানে মুখটা দরজার ফাঁকা দিয়ে বাহির করতেই দেখি ইয়াকের গলায় বাঁধার দুই ধাতব ঘণ্টা নিয়ে দুই তিব্বতি কিশোর দাঁতের প্রদর্শনী করছে চোখ মটকে! ভাবটা এমন, কি চমকে দিলামে তো! এখন কিনে ফেল একটা ঘণ্টা!
এমন আরেক দিন দুপুরের খাবার পর অতি আলস্যের কারণে আর তাবুতে ফেরা হয় নি, সেখানের উষ্ণতায় আরাম করে বসে কথা চলছে নেপালিদের সাথে, হঠাৎ কানে এল মৃদু রমণীকণ্ঠ, কেমন যান কাঁপা কাঁপা প্রতিবাদমুখর কিন্তু জোর নেই তাতে! কি ব্যাপার? তেনজিং ব্যাটা আকর্ণ হেঁসে ফিসফিস করে বলল, সর্দার আজ দেখেছি ঘরে এনে তুলেছে , কি ভাগ্য! মাংসের বিকিকিনি তাহলে চলছিল বিশ্বের উচ্চতম তাবু শহরেও!
দিন যায় মন্থর গতিতে, কারো তাড়া নেই পর্বতে, একমাত্র তাড়া মৌসুম থাকতেই চূড়া ছোঁয়ার। এর মাঝেই সত্তরোর্ধ্ব এক মার্কিন পর্বতারোহী সফল ভাবে চূড়া থেকে নেমে ক্যাম্প ওয়ানের নিরাপদ আশ্রয়ে নেমে আসার পর ঘুমের মাঝে মৃত্যুবরণ করেন, তার স্ত্রী আবার আমেরিকার এক জাঁদরেল সিনেটর, মোবাইলে তার নির্দেশ পেয়ে মরদেহ নিচে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করা হয়। সবারই মন খারাপ ছিল, কিন্তু একটি তথ্য সেই মন খারাপের মেঘ অনেকখানি হটিয়ে দেয়, ঘুমোতে যাবার আগে সেই ভদ্রলোক তার বন্ধুদের বলেছিলেন - So far, this is the most beautiful day of my life !
পর্বতের আবহাওয়াকে কক্ষনো বিশ্বাস করতে হয় না, বিশেষ করে তা যদি হয় হিমালয়ের মত উঁচু পর্বতমালা। এক সকালে জানা গেল আর কয়দিন পরেই চরম তুষারপাত শুরু হতে পারে, তখন আর শীর্ষে যাওয়া সম্ভব হবে না, কাজেই এখনই শেষ চেষ্টা করা যেতে পারে। মুশকিল হচ্ছে আমাদের সাথে শেরপা দুইজন, অথচ মূল ভরসা বিশ্ব রেকর্ডধারী পেমবা দরজি শেরপা শেষ পর্যন্ত আসতে পারে নি চীন সরকার ভিসা না দেওয়ায় ( মূল অপরাধ সে এভারেস্ট শীর্ষে তিব্বতের পতাকা উড়িয়েছিল! যে বুদ্ধমূর্তি নিয়ে এত হট্টগোল সেটিও কিন্তু তার বয়ে নিয়ে যাওয়া বিশ্বশীর্ষে) , তাই যেহেতু আমার পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর অংশ হিসেবে ক্যাম্প ওয়ান এবং টুতে যাওয়া হয় নি এখন ব্যাপারটি যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে, কারণ শরীর বেশী খারাপ করলে তখন আমার সাথে একজন শেরপাকে নেমে আসতে হবে, ফলে মুহিত ভাইয়ের সাথে যেতে পারবে মাত্র একজন শেরপা, ফলে দলগত সাফল্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।
দলের সভায় সিদ্ধান্ত হল আপাতত মুহিত ভাই একাই দুই শেরপা নিয়ে চৌ য়ু আরোহণের চেষ্টা করবেন, আর তারা ফিরে আসার পর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমি চেষ্টা করে দেখব( দুঃখজনক ভাবে এর মাত্র দুই দিন পরেই পূর্ণ শারীরিক সক্ষমতা ফিরে আসে, অক্সিজেন মাপার যন্ত্র এবার জীবিত বলেই রায় প্রদান করে! )। এবার যাত্রা প্রস্তুতি হিসেবে আয়োজন করা হল পুঁজোর।
শেরপাদের কাছে পর্বত হল দেবতা, তার কাছে ভোগ না দিয়ে যাত্রা করা অসম্ভব, যদিও কাঠমান্ডুতে যাত্রা শুরুর আগে এক পেটমোটা লামার আশীর্বাদ নিতেই হয়েছিল টাকার বিনিময়ে, কিন্তু এখানেও ধুমধাম করে রীতি অনুযায়ী পূজার মঞ্চ সাজানো হল, চৌ য়ুর ছায়া তলে সবাই বসে আছি পুরোহিতে অপেক্ষায়, চক্ষু কপালে তুলে দিয়ে এতদিনের পরিচিত মিংমা চিরিং শেরপা দেখি পুরোহিতের আসনে বসে মন্ত্রপাঠ শুরু করেছে! মানে মানে আসল পুরোহিততো আর এখানে আসতে সক্ষম না, তাই শেরপা মন্ত্র পড়ে দেবতাদের কৃপা ভিক্ষা করছে, যদিও পূজার নৈবদ্য তার ভাগেই যাবে!
আরো কিছু দিন কেটে যায়, খবর আসে বাংলাদেশের পক্ষে আমাদের দলের প্রথম ৮০০০ মিটার উচ্চতার পর্বত জয়ের। সেই গল্প চৌ য়ু নিয়ে পোস্টে হবে, আজ এবিসির গল্প এই পর্যন্তই---
( এই লেখাটি পরম সুহৃদ, বন্ধু, সহঅভিযাত্রী এম এ মুহিতের জন্য। হিমালয়ে যেতে হলে যে হিমালয়ের চেয়েও বড় মন এমন উঁচু মানসিকতা থাকতে হয় এম এ মুহিত তার প্রমাণ অনেক অনেক বছর ধরেই। বর্তমানে সে নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট জয়ের চেষ্টারত নিশাত মজুমদারের সাথে, আশা রাখি আমরা তাদের শিখরজয়ের সংবাদ পাব অচিরেই)
২০০৯ সালে গিয়েছিলাম এক ঐতিহাসিক অভিযানে, বিশ্বের ষষ্ঠ উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ চৌ য়ু অভিযানে, সঙ্গী ছিলেন পরবর্তীতে একাধিকবার এভারেষ্টজয়ী একমাত্র বাঙ্গালি এম এ মুহিত ( সেটি ঐতিহাসিক কারণ সেটাই প্রথম অভিযান সেখানে বাংলাদেশের কেউ ৮০০০ মিটার উচ্চতার পর্বত আরোহণে সক্ষম হয়েছিল।)। সেখান থেকে ফেরার বেশ কয়েক বছর পরে ২০১২র মে মাসে সেই অভিযানের স্মৃতিচারণ লিখে ফেলি প্রিয় ব্লগ 'সচলায়তন'-এ, যেখানে মূলত ছিল ২০,০০০ ফুট ( ৫৭২০ মিটার) উচ্চতায় অবস্থিত চৌ ইয়ূ অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পের কথা, যেহেতু High Altitude Sickness এর কারণে প্রায় ১ সপ্তাহ আটকে ছিলাম সেইখানেই, যার মধ্যে মুহিত ভাই শিখর বিজয় করে ইতিহাস গড়ে ফিরে আসেন,কী এক অদ্ভুত কারণে, হয়তো শেরপা বা পোর্টারদের মুখে শোনার কারণে, বা আমার তথ্য গুলিয়ে ফেলায় চৌ য়ূ অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্প যে এভারেষ্টের তিব্বতের দিকের অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্প(abc)এর চেয়ে উঁচু তেমনটা মনে করায় সেই ব্লগের টাইটেল ছিল 'বিশ্বের উচ্চতম বেসক্যাম্প থেকে'। আমার ২য় বই 'পথ চলাতেই আনন্দ'তেও সেই টাইটেলই আছে, অথচ এখন ঘেটে দেখি সেটি সঠিক তথ্য নয়, তিব্বত দিয়ে এভারেষ্ট অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পের উচ্চতা আসলে
৬,৪৩০ মিটার বা ২০,৮০০ ফুট! কাজেই সেটি চৌ য়ুর abc থেকে অনেক উঁচু, এখন চৌ য়ু abc উচ্চতার দিক থেকে যত তমই হোক না কেন সেটি তো আর বিশ্বের উচ্চতম abc নয়!
ফোন দিলাম এম এ মুহিত কে, যেহেতু উনি তিব্বত দিয়ে ২ বার এভারেষ্টে ওঠার চেষ্টা করে ২য় বার সফল হয়েছিলেন (আরেকবার নেপাল দিয়ে), সে আবার সব উচ্চতা, ক্যাম্প, দিনক্ষ্ণ নিখুঁত ভাবে চুলচেরা খেয়াল রাখে, সে সাথে সাথেই বলল এভারেষ্ট abcর উচ্চতা অবশ্যই বেশি!
ভ্রমণের কারণে আর পাখিদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখন ব্লগ লেখা হয় কম, ইন ফ্যাক্ট পড়ায় হয় খুব কম, তারপর এই পোস্টে ঢুঁকে দেখি ২০১৩ ও ২০১৪ সালের কমেন্টগুলোরউত্তর এখনও দেওয়া হয় নি, এবং সেখানে এক পাঠক (নাম উল্লেখ ছিল না) এই উচ্চতার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছেন যে চৌ য়ূ কী করে উচ্চতম বেস ক্যাম্প হয়!
পাঠকেরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে এত্ত এত্ত ভ্রমণ ব্লগ লেখার সময়ে সবসময় চেষ্টা করেছি সবসময় নিখুঁত তথ্য দিতে, সেই আমিই এত বড় একটা ভুল তথ্য দিয়ে সেটা আবার মূল টাইটেলেও দিয়েছি। এজন্য আমি সত্যিই লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
যে কারণে পোষ্টের হেডিং পরিবর্তন করে দিলাম (বইয়ের পরবর্তী সংস্করণেও করে দিব)- তারেক অণু , ১৪/১০/২০১৭
-
মন্তব্য
এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। রাতের আকাশের দুই একটা ছবি তুলেন নি?
ধন্যবাদ। ঐ ব্যাপারটা বাদ পড়ে গেছে, অথচ প্রায়ই আকাশগঙ্গা দেখতাম, পরের বার !
facebook
facebook
facebook
আপনারে উত্তম জাঝা।
শুভেচ্ছা।
facebook
আপনাকে চৌ ইয়ূ শীর্ষ এভারেস্ট শীর্ষ জয়ের আগাম অভিনন্দন (কোন একদিন হবেই!)
অনেক ধন্যবাদ ব্রুনো, আশা করি সেই একদিন খুব দূরে না।
facebook
মন খুব চায়, একদিন বেরিয়ে পড়বো। কিন্তু জীবনের হাজারো প্রয়োজন গুলো আরা ছাড়তে চায়না।
খুব ভালো লাগলো লেখা। তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে আটহাজারী ক্লাবে প্রথম আপনারা দুজনই নাম লিখিয়েছিলেন। চমৎকার সৌভাগ্য আপনার ঝুলিতে। চলতে থাকুক জীবন হাটের রমরমা এই বিকিকিনি।
সৌভাগ্য কই দেখলেন- খবর হয়ে গেছিল তো!
facebook
ভালো লাগলো পড়ে।
facebook
মন চায় সব ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি। কিন্তু জীবনের চারদিকে জড়িয়ে যাওয়া জালগুলো আর ছাড়তে চায়না।
লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। বাংলাদেশের পক্ষে আপনারা দুজনই তাহলে প্রথম আটহাজারী ক্লাবে নাম লিখিয়েছিলেন!
শুভ কামনা, জীবনকে আবিস্কারের এই অভিযান চলতে থাকুক নিরন্তর।
বাংলাদেশের আরেক মেয়ে ওয়াসফিয়া নাজরীন এখন এভারেষ্ট বেইস ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। মে’র তৃতীয় সপ্তাহের দিকে হয়তো সে সামিট বিজয় করতে পারে।
মুহিত আর নিশাতের ব্যাপারে কোন আপডেট থাকলে জানাবেন।
আশা করি তারা সবাই সফল হবে।
ফোন পেলেই জানাব।
facebook
মানুষের যে কত কত সাধ জন্মে। আমারও যেন ইচ্ছে হল ওইরকম এক আকাশ দেখার। থাক, নাহয় নাই দেখলাম। তাহলে হয়ত আর মরে যেতে ইচ্ছে করত না। কিংবা বাচার!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হিমালয়ের আকাশ কিন্তু এমনই, অন্নপূর্ণাতেও দেখেছি প্রতিরাতেই ছায়াপথ আর তারাদের মিছিল।
facebook
বিশ্বাস করবেন? 'অণু কি ঘোরাঘুরি বন্ধ করে দিল নাকি? অনেক দিন তার কোনো ভ্রমন পোস্ট দেখিনা!" এই কথাটা ভাবতে ভাবতেই সচলের পাতা ওপেন করলাম। আর--- অমা!! প্রথমেই অণুর পোস্ট!!!
কী তাজ্জব !! কী তাজ্জব!! আগে কমেন্ট লিখলুম এবার পড়ি---
কি বলেন আপা, ঘোরাঘুরি থামালে বেঘোরে মারা পড়ব যে!
ল্যাতিনের পোস্টগুলো পড়েছেন কি, আরো অবশ্য আসিতেছে---
facebook
আরেকটা কথা বলা হয় নাই-- অণু ভাইটি দিন কে দিন যে কী সাংঘাতিক রকমের সাহিত্যিক হয়ে উঠেছে সেটা কি সে খেয়াল করেছে?? ভ্রন তো অনেকেই করে কিন্তু এতো সুন্দর করে এতো প্রাঞ্জল ভাষায় তা উপস্থাপন কয়জনা করতে পারে?
হ্যাটস অফ টু ইউ অণু--
আরে না , আমি আবার সাহিত্যিক, এক বসায় ঘুম ঘুম চোখে যা আসে পোস্ট করে ঘুমোতে যায়, মাইনকা চিপায় পড়ে বদভ্যাস হয়ে গেছে।
facebook
একদিন আমিও যাব ।
অবশ্যই।
facebook
পর্বতারোহণের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ নাই, কেওকারাডং ছাড়া। কিন্তু হিমালয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা। আর এই সংক্রান্ত লেখাগুলোও পড়ি খুব আগ্রহ ও উৎসাহ নিয়ে। আপনার এই লেখাটা ভালো লাগলো খুব। ছবিগুলোও। এক জীবনে এত এত অভিজ্ঞতা কয়জনেরই বা হয়! ঘোরাঘুরি জারি থাকুক। ভালো থাকুন। শুভকামনা।
প্রথমবার হিমাল্যে ট্রেকিং-এর জন্য যেতে পারেন খুব ভাল হবে। আর বড় পর্বতের জন্য বেশী উচ্চতায় অবস্থানের অভিজ্ঞতা যে কত জরুরী তা আমার মত খাবি খেলে বুঝবেন
facebook
বস মানুষ দেখি আপনি!!
আরে না, একেবারে সাধারন মানুষ।
facebook
অসাধারণ অভিজ্ঞতার অসাধারণ বর্ণনা । এ যেন সোনার হাতে সোনার কাঁকন - কে কার অলংকার।
আহা, কে যে হাত আর কে যে কাঁকন ! যা বলেছেন==
facebook
#গতকাল থেকে অপেক্ষা করে ছিলাম বুলেটপ্রূফ কোন পোষ্ট দেখব এবার, ধারনা সত্যি ফলাফল শতভাগ।।।।অভিনন্দনস আপনাকে
>কোন জায়গায় যে আপনার উপস্থিতি নেই তা বোঝা মুশকিল।।।।।এবার পর্বতামালা ছাড়িয়া সাগর জলের একটি পোষ্ট দিয়ে দিন।
>যারা নড়তে জানেনা তাদের জন্য আপনার পোষ্টটি একটি খোলা জানালা।
#ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা
বুলেটপ্রূফের অপেক্ষায় কেন রে ভাই !
জানালা চলবে না, দেয়াল ভাঙ্গতে হবে !
facebook
বুলেটপ্রূফের অপেক্ষায় কেন রে ভাই !
>বুলেটপ্রূফ বলতে শক্ত গাঁথুনির কথা বুঝিয়েছি, আপাতত জানালাই খুঁজে ফিরছি, দরজা দূর অস্ত, ভাল হোক বেসক্যাম্প থেকে নেমে আসার পথ
facebook
সাগর নিয়ে একাধিক পোস্ট আছে বিশেষ করে ডুবুরীর অভিজ্ঞতা নিয়ে, কিন্তু তাতে শাপ=শাপান্ত বেশী পড়ে!
facebook
সাগর নিয়ে একাধিক পোস্ট আছে বিশেষ করে ডুবুরীর অভিজ্ঞতা নিয়ে, কিন্তু তাতে শাপ=শাপান্ত বেশী পড়ে!
>সমস্যা কি তাতে? শাপশাপান্ত জমতে জমতে এতো বেশী হবে যে পরেরবারে পোষ্টে সাগরের নীচে নামলেই ওৎ পেতে থাকা কোন কুমির টেনে নিয়ে যাবে। একদিন কুমিরের ভোজ হতে সমস্যা কি? আহা! কুমির, অপেক্ষা করো
সাগরে কুমির কোথায় পাইলেন! আমি তো অস্ট্রেলিয়া থাকি না !
facebook
সাগরে কুমির কোথায় পাইলেন! আমি তো অস্ট্রেলিয়া থাকি না !
>ওহ নো!, আরে আছে আছে, বেসক্যাম্পেতো অনেক উচুতে ওঠেছেন তাই হয়তো বুঝতে পারছেননা। আচ্ছা সাগরের মধ্যে যেন কি কি আছে যা আপনাকে কিছুটা হলেও টেনে নেয়ার ভয় দেখাতে পারে?
>জুজুগুলো বড্ডো বেরসিক, সময়মতো মনে আসেনা
জুজুগুলো বড্ডো বেরসিক
facebook
>কাদম্বিনী হাসিয়া প্রমান করিল, সে হাসে নাই।।।।
facebook
মারাত্মক। আমি কল্পনাতে যত জায়গাতে গিয়েছি, আপনি বাস্তবেই তার চেয়ে বেশি ঘুরে ফেলেছেন। হিংসা নয়রে ভাই - আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। আশাকরি সারাজীবন ধরেই পায়ের নিচে শর্ষে থাকবে।
আমি চৌদ্দ হাজার ফিট পর্যন্ত উঠেছি। ট্র্যাকিং নয়, গাড়ি চালিয়ে। অক্সিজেনে স্বল্পতা ওই উচ্চতায় বোধ করেছি। মোটা হওয়ার অসুবিধা মনে হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
১২ হাজারেও অনেকের সমস্যা দেখা দেয়, চিন্তার কিছু নাইক্যা।
ধন্যবাদ আপনার দুর্দান্ত শুভকামনার জন্য।
facebook
যদি ঠিকঠাক চলে তো আগামী বছর নেপালের অভিমুখে একবার যাত্রা করার ইচ্ছে আছে। আর তাও যদি এ যাত্রায় না হয় তো কারশিয়াং কিংবা কালিমপং গিয়ে এভারেস্টকে হ্যালু করে আসবোই আসব। তারপর আর নেপাল কদ্দুর।
ডাকঘর | ছবিঘর
সাবাস
facebook
লেখাটি পড়ে এবং ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে এখনই চলে যায়। আশাকরছি এ বছরই যাবো। খুব ভাল লেগেছে লেখাটি পড়ে।
অবশ্যই যাবেন !
facebook
অক্সিজেনের অভাবজনিত সমস্যাটার কথা শুনেছি অনেকের কাছে। আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাটাও দারুণ। আচ্ছা, ঐ সময় হ্যালুসিনেশন হয় নাকি? চালিয়ে যান।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
তা তো হয়, এই নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু রাত জেগে একটানা লিখে পোস্ট করলে যা হয়, কিছু পয়েন্ট বাদ পড়ে যায় ! বিশেষ করে ৮০০০ মিটারের উপরে হ্যালুসিনেশন খুব সাধারন ব্যাপার!
facebook
facebook
গতকাল রাতে কথা হচ্ছিলো ইউক্রেনের বন্ধু মাসুদের(সংসারে এক সন্ন্যাসী) সঙ্গে। আমরা দুজনেই তোমাকে নিয়েই পড়ে থাকলাম অনেকক্ষণ! তুমি একটা জিনিস বটে! এতো গুণী একটা ছেলে!
এই লেখাটাও অনেক নতুন অভিজ্ঞতা দিলো।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
কি কথা রিটন ভাই!! আমি পুরাই বেগুনের নির্ঘণ্ট! আজকেই বড় ভাই এক ঘণ্টা ঝাড়ি দিয়ে বলেছে= জীবনে কিছুই হল না ।
আপনিই বলেন, কিছু না হলে ক্ষতি কি! কয়জন আছে যার কিছু হয় না !
facebook
আমি আপ্নের পোস্ট মেজাজ খারাপা কইরা পড়ি না! কিন্তু এইটা না পইড়া পারলাম না!
---------------------
আমার ফ্লিকার
এখন মেজাজ ঠাণ্ডা না গরম।
facebook
আমার জীবনে কিছুই হয়নি। আর হয়নি বলেই কিছু রক্ষা করার ঝামেলাও নেই। সহজ, সরল, ঝামেলামুক্ত । আর তাইতেই আমি একজন সুখি মানুষ।
আপনার কিছু হয়নি, মানতে পরছি না।
হে হে, কি করে বোঝায়!
আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ লেখাগুলো পড়ার অপেক্ষায় আছি কিন্তু===
facebook
এতো কষ্ট করার দরকার কী? হিমালয়ের উপরে কী এমন হাতি ঘোড়া আছে শুনি?
নাকি আছে কোনো সুন্দরী মেয়ে?
অহেতুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হ, সবচেয়ে বড় কথা উঠলেই নামতে হবে, খামোখা !
facebook
সেইটাই।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বুঝলেন তাহলে ! অনেকেই বুঝতে পারে না!
facebook
কিছু না হলে ক্ষতি কি! কয়জন আছে যার কিছু হয় না !
বলেন---
facebook
আমি আর আপনার কোন পোস্ট পড়ব না বলে ঠিক করেছিলাম। পড়লেই মন খারাপ হয়। তারপরও পড়লাম। আল্লাহই জানে কেন। তবে লেখাটা পড়ার পর থেকে থম ধরে বসে আছি। কি চমৎকার এই পৃথিবী। রাতের আকাশের কিছু ছবি যদি দিতেন তাহলে আরও চমৎকার হত। খালি একা একাই দেখলেন
ঘুরতে থাকুন ইচ্ছেমতন
মাথার ব্যাথায় ছবি তোলার চিন্তা আসে নি আসলে, যখন তুলতে ইচ্ছে করেছে তখন বাগড়া দিয়েছে মেঘের দল।
facebook
অণুর লেখায় আমাদের অনেকের বিশ্ব দেখা হয়।
ঈয়াসীন
আছেন মজায় ! পরের লেখা কবে দিচ্ছেন?
facebook
৭২ বছর বয়স্ক মাতসুমত'র কথা জেনে বেশ আশা জাগল মনঃে। এখন এক্টা পাহাড় পছন্দ করে উঠতে শুরু করলেই হবে।
নরবু'র জন্য খারাপ লাগলো। কোনও এক সময় তার প্রাপ্য সন্মান পাবেন আশা করি।
তিব্বতিদের সামগ্রিক অবস্থা খুবই খারাপ, প্রায় আগের যুগের দাসদের মত।
facebook
এত সুন্দর ছবি দেখে মনে হচ্ছে এক্ষুনি চলে যাই, কিন্তু আপনার অক্সিজেনের কথা শুনে সেই ইচ্ছে মাঠে মারা গেছে। ছবি দেখে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে প্রায়।
কোন ব্যাপার না, কয়েকদিন বেশী করে দৌড়াতে হবে
facebook
আপনার চোখ দিয়ে কত কিছুই যে দেখছি! আরো দেখান, দেখি নয়ন ভরে।
আর দেখা, চশমা পড়ি তো !
facebook
আপ্নেরে হিংসাই।
খামোখা ।
facebook
অসাধারণ । অনেক দেরী হয়ে গেলো পড়তে।
বনে ছিলেন নাকি পাহাড়ে !
facebook
এইবার সমতলে ছিলাম। পশ্চিম টেক্সাস এর রুক্ষ এলকায়। ক্যাকটাস ছাড়া আর কোন গাছপালা নাই। র্যাটেল স্নেক এর ভর্তি জায়গাতে স্নেক বুট পরে ঘুরাঘুরি, রোমহর্ষক ব্যাপার স্যাপার।
লেখা দেন। আর তেল খুজে বাহির করেন জলদি, না হলে ইরানে হামলা চালাবে যে !
facebook
এটা পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে নিজেই অক্সিজেনের অভাব টের পাচ্ছিলাম।
আপনি মিয়া! কী কই বুঝতারতাসি না
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অক্সিজেনের অভাব খুব খারাপ জিনিস, পুরাই আউলা হয়ে যায় সবকিছু
facebook
শেষ করলি না কেনরে হতভাগা! শেষ কর শিজ্ঞির!
শেরপার বিয়ার পূজা দেইখা ব্যপক আমোদ পাইলাম
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
এত কিছু থাকতে তো চোখ গেল বিয়ারে! রতনে রতন চেনে !
facebook
হে তারেক রিনপোছে,
আপনার লেখায় তো মন্তব্য করার কিছু খুঁজে পাই না। আগের কোন একটা লেখা থেকে যেকোন একটা মন্তব্য দেখে নিয়েন আর কী
আমি বরং অন্য একটা ব্যাপার নিয়েই বলি। আমার একটা ছোট্ট অবজারভেশন আছে, একটু চিন্তা করে দেখতে পারেন। আপনার এই অভিযানের ঘটনাগুলি পড়তে চমৎকার লাগে, কিন্তু এতো ছবি মাঝে মধ্যে রসভঙ্গ করে। বর্ণনার ফাঁকে ফাঁকে কিছু ছবি দিলে সমস্যা হয় না, কিন্তু এতো ছবি থাকলে কেনো যেন মনযোগের ব্যাঘ্যাত ঘটে! এই পোস্টটাই আমি এর আগেও দুইদিন খুলেও পড়তে পারিনি পুরোটা কারণ চোখ বারবার ছবিতেই চলে যাচ্ছিলো। ছবিগুলি নিয়ে কিন্তু আলাদা ফটোব্লগ কিংবা ফটোস্টোরি দিতে পারেন আর মূল লেখাতে মিনিমাম ছবি দিতে পারেন।
একেবারেই ব্যক্তিগত অভিমত, অন্য কারো সাথে হয়তো মিলবে না- সম্ভব হলে ভেবে দেখার অনুরোধ থাকলো।
জ্ঞানের কথা বার্তা শেষ, পরের পর্ব দেন। বিশেষত তিব্বত কেমন দেখলেন সেই ব্যাপারে একটা লেখার জোরদার অনুরোধ জানায়া গেলাম। আর কারো জন্য না হোক, আমাদের তিব্বতী পার্টির জন্য দেন।
অলমিতি বিস্তারেণ
একমত, আগে তো এই কারণে ছবিই দিতাম না, পরে সবাই সোরগোল শুরু করল- ছবি দিতেই হবে !
তিব্বত নিয়ে আসল কাহিনী লিখলে চীন আর ভিসা দিবে না, মানসটা ঘুরে আসি তারপর বোমা পাঠাব !
facebook
আমি যেতে চাই এতো সুন্দর দৃশ্য দেখতে
facebook
লেখা---
ছবি---
আকাশগঙ্গার ছবি চাই ।
আকাশভরা সূর্যতারা
আকাশমূখী সারিসারি
নোংরা কালো ধোঁয়ায়
ঠাসাঠাসি বাক্সবাড়ি
কড়িকাঠুরে
পরের বার !
facebook
লেখা---
ছবি---
অবশ্যই আকাশগঙ্গার ছবি চাই ।
আকাশ ভরা সূর্য-তারা
আকাশমূখী সারিসারি
নোংরা কালো ধোঁয়ায়
ঠাসাঠাসি বাক্স বাড়ি
facebook
অসাধারণ ছবি, আর চমৎকার লেখা। দূর্দান্ত অভিযান ।
একটা বিষয় বুঝে আসছে না :
আবার
তবে তো দেখা যাচ্ছে বেস ক্যাম্প এভারেষ্ট - এর টাই বেশী উচু ।
আর যদি অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পের কথা বলেন তবে তিব্বতে এভারেষ্ট -এর বেলায় সেটা তো আরো উচু, ৬৪০০ মিটার! (২১৩০০ ফুট!) সুত্র : http://www.somewhereinblog.net/blog/area_51/29459186
কিন্তু এই যে বললেন :
সেটা - কিভাবে উচ্চতম ?
কী এক অদ্ভুত কারণে, হয়তো শেরপা বা পোর্টারদের মুখে শোনার কারণে, বা আমার তথ্য গুলিয়ে ফেলায় চৌ য়ূ অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্প যে এভারেষ্টের তিব্বতের দিকের অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্প(abc)এর চেয়ে উঁচু তেমনটা মনে করায় সেই ব্লগের টাইটেল ছিল 'বিশ্বের উচ্চতম বেসক্যাম্প থেকে'। আমার ২য় বই 'পথ চলাতেই আনন্দ'তেও সেই টাইটেলই আছে, অথচ এখন ঘেটে দেখি সেটি সঠিক তথ্য নয়, তিব্বত দিয়ে এভারেষ্ট অ্যাডভান্স বেস ক্যাম্পের উচ্চতা আসলে
৬,৪৩০ মিটার বা ২০,৮০০ ফুট! কাজেই সেটি চৌ য়ুর abc থেকে অনেক উঁচু, এখন চৌ য়ু abc উচ্চতার দিক থেকে যত তমই হোক না কেন সেটি তো আর বিশ্বের উচ্চতম abc নয়!
ফোন দিলাম এম এ মুহিত কে, যেহেতু উনি তিব্বত দিয়ে ২ বার এভারেষ্টে ওঠার চেষ্টা করে ২য় বার সফল হয়েছিলেন (আরেকবার নেপাল দিয়ে), সে আবার সব উচ্চতা, ক্যাম্প, দিনক্ষ্ণ নিখুঁত ভাবে চুলচেরা খেয়াল রাখে, সে সাথে সাথেই বলল এভারেষ্ট abcর উচ্চতা অবশ্যই বেশি!
ভ্রমণের কারণে আর পাখিদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখন ব্লগ লেখা হয় কম, ইন ফ্যাক্ট পড়ায় হয় খুব কম, তারপর এই পোস্টে ঢুঁকে দেখি ২০১৩ ও ২০১৪ সালের কমেন্টগুলোরউত্তর এখনও দেওয়া হয় নি, এবং সেখানে এক পাঠক (নাম উল্লেখ ছিল না) এই উচ্চতার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছেন যে চৌ য়ূ কী করে উচ্চতম বেস ক্যাম্প হয়!
পাঠকেরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে এত্ত এত্ত ভ্রমণ ব্লগ লেখার সময়ে সবসময় চেষ্টা করেছি সবসময় নিখুঁত তথ্য দিতে, সেই আমিই এত বড় একটা ভুল তথ্য দিয়ে সেটা আবার মূল টাইটেলেও দিয়েছি। এজন্য আমি সত্যিই লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
যে কারণে পোষ্টের হেডিং পরিবর্তন করে দিলাম (বইয়ের পরবর্তী সংস্করণেও করে দিব)-
facebook
রবি ঠাকুরের ছোট গল্প পড়লাম মনে হইলো। শেষ হইয়া ও হইলোনা শেষ। শান্তি নাই।
facebook
ছবি ছাড়া আর ছবি সহকারে ভ্রমন বিষয়ক লেখা ভালোলাগায় যে কতটুকু ব্যবধান গড়ে তুলে তা কাল বুঝলাম। বইয়ে লেখাটি পড়ে কেমন জানি অপূর্ণ অপূর্ণ লাগলো, তাই ব্লগে এসে খোঁজে খোঁজে লেখাটা পড়লাম। ছবিগুলোর জন্যে ব্লগের লেখা বইয়ের চেয়ে বেশি প্রাণবন্ত মনে হয়েছে। ইস যদি বইয়ের ছবিগুলো এমন রঙিন হতো !
মাসুদ সজীব
হবে
facebook
নতুন মন্তব্য করুন