নিচের লেখাটি এভারেস্ট জয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০০৩এর মে মাসে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্রকাশিত হয়, অধম সামান্য অনুবাদের অপচেষ্টা চালিয়েছে বিধায় ক্ষমাপ্রার্থনীয়—
আমার গল্প - এডমণ্ড হিলারী
১৯৫৩ সালের ২৯ মের সেই সকাল থেকেই, যখন তেনজিং নোরগে এবং আমি প্রথমবারের মত পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ আরোহণে সক্ষম হলাম, আমাকে এক মহান অভিযাত্রী হিসেবে বর্ণনা করা হতে থাকে। কিন্তু আমি আসলে স্রেফ এক পোড় খাওয়া কিউয়ী, যে জীবনের বহু প্রতিকূলতাকে উপভোগ করেছে মনে-প্রাণে। সত্য বলতে, আজ ৫০ বছর পরে সেই দিনের দিকে ফিরে তাকালে জীবনের অনেক পদক্ষেপের চেয়ে এভারেস্ট শীর্ষে আরোহণকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, বিশেষ করে আমার শেরপা বন্ধুদের জীবনযাত্রার মানের উন্নতির জন্য এবং হিমালয়ের সংস্কৃতি ও সৌন্দর্য রক্ষার জন্য যে কাজগুলো আমার জীবনে করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
এমন নয় যে বিশ্ব শীর্ষে পদচিহ্ন এঁকে দেবার জন্য আমি উদগ্রীব ছিলাম না। স্পষ্ট মনে পড়ে তেনজিং এবং আমি বরফের মুখোমুখি হয়ে চূড়ার কাছের সেই সরু ঢালের সামনে। আমাদের দলের অনেকেই বলেছিল এই ঢাল অতিক্রম করা সম্ভব না, যদিও আমাদের কাছে তা ততটা বিপদজনক মনে হয় নি। মুখোশে অক্সিজেনের নতুন বোতল এঁটে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। বরফকুঠার দিয়ে নতুন পথের ধাপ প্রস্তত করতে করতে আমিই পথনির্দেশ করছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা পরে ২৯,০০০ ফুট উচ্চতায় এক বিশাল বাঁধা সেই ৪০ ফুট লম্বা পাথুরে দেয়াল আমাদের পথ রোধ করে দাঁড়ালো। অতিকায় দেয়ালের ডান দিকে ফাটলসমৃদ্ধ এক বরফের চাঙ পড়েছিল, এর পরেই পর্বত যেন শূন্য পরিণত হয়ে ঝাড়া ১০,০০০ ফুট নিচে নেমে খ্যাংসুং হিমবাহে পরিণত হয়েছে। বরফের এই পিণ্ড কি আমার ওজন সয়ে টিকে থাকতে পারবে? উত্তর জানার একটিই উপায় ছিল!
বরফে ক্রাম্পন ঠেসে ধরে কোনমতে প্রতিটি ফাঁকফোঁকর ব্যবহার করে সেই ফাটলের চূড়ার দিকে যাত্রা অব্যাহত থাকল। প্রথমবারের মত মনে হল আমরা সফল হতেও পারি। ডান দিকে এক তুষার গম্বুজের মত দেখা গেল যার উপর দিয়ে আমাদের পথ কেটে অগ্রসর হওয়া চলতেই থাকে। এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সেই রিজের চূড়ায় পৌঁছানোর পর চারিদিকে কেবল শূন্যতায় দৃষ্টিগোচর হয়। তেনজিং আমার সাথী হয় এবং ব্যপক আনন্দে আপ্লুত হয়ে ও স্বস্তির সাথে আমরা এভারেস্ট শীর্ষে নিজেদের আবিস্কার করি।
সেই বছরের পরে আরও বহু বার এভারেস্ট অঞ্চল ভ্রমণের মাধ্যমে আমার সেই পর্বতারোহী বন্ধুদের সাথে একটা দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শেরপাদের সাহস এবং শক্তি আমাকে অভিভূত করলেও তাদের বাড়ীতে পরিবারের একজন হিসেবেই অনেক দিন অতিক্রম করার ফলে মনে হতে থাকে তাদের সমাজ ব্যবস্থায় সুচিকিৎসা এবং বিদ্যালয়ের মত জিনিসের অভাব রয়ে গেছে।
১৯৬০ সালের এক অভিযানে এভারেস্টের কাছেই হিমবাহের উপর ক্যাম্প স্থাপনের পর ঘনীভূত ঠাণ্ডাকে দূর করার জন্য ক্ষুরধার বাতাসকে অগ্রাহ্য করে এক ধোঁয়াময় আগুনকে ঘিরে সবাই উষ্ণতার সন্ধানরত থাকা অবস্থায় ভাঙ্গা ভাঙ্গা নেপালি-এবং ইংরেজিতে শেরপাদের জীবনযাত্রা নিয়ে আলাপচারিতা চলছিল। উরকিয়েন নামের একজন শেরপা নিভে আসা আগুনে এক মুঠো জ্বালানী ছিটিয়ে নিভু নিভু আগুনকে উস্কে দিয়ে হিমকে ক্ষণিকের জন্য ঠেকিয়ে রাখল, তাকে উদ্দেশ্য করেই প্রশ্ন করলাম- তোমার গ্রামের জন্য যদি আমরা কিছু একটা করতে পারি, সেটা কি হবে উরকিয়েন?
তার উত্তর ছিল- আমাদের বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাই সাহেব। তোমার যত জিনিস আছে, তার মধ্যে অধ্যয়নই আমাদের বাচ্চাদের জন্য সবচেয়ে কাঙ্খিত।
তারই কথাই ঠিক থাকল। পরের বছর কোলকাতার এক কোম্পানিকে একটি অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষুদে ভবন দান করানোর ব্যাপারে রাজী করাতে সক্ষম হলাম। সুইস রেড ক্রস ভবনটি কয়েকবারে কাঠমান্ডু থেকে ১৫,৫০০ ফিট উচ্চতায় মিংবো উপত্যকায় উড়িয়ে নিয়ে যায়। এরপর একদিনের হাঁটা দূরত্বে শেরপারা সেই নির্মাণ সামগ্রী বহন করে খুমজুং-এ নিয়ে আসে, আমাদের স্কুলটি মাথা তুলে দাঁড়ায় হিমালয়ের কোলে।
১৯৬১র জুনে থিয়্যাং বোচে মনেস্ট্রির প্রধান লামাকে স্কুলে উদ্বোধনের জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়। তার সাথে জনাকয়েক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ট্রাম্পেট, ঢোল এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র নিয়ে আবির্ভূত হয়ে নানাবিধ বাজনার সাথে সাথে প্রাথনার পর স্কুলে ভবনটিকে প্রদিক্ষণ করে মুঠো মুঠো চাল চতুর্দিকে নিক্ষেপ করে খুমজুংয়ের বিদ্যালয়টির শুভযাত্রা শুরু করে।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমি ও আমার স্ত্রী জুন, সারা বিশ্ব ঘুরে হিমালয়ের অধিবাসীদের জন্য নিত্য নতুন পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা করতে থাকি। শেরপা বন্ধুদের অনুরোধক্রমে ২৭টি বিদ্যালয়, ২ টি হাসপাতাল এবং ১২টি মেডিক্যাল ক্লিনিক স্থাপনে আমরা সক্ষম হই, সেই সাথে হিমালয়ের কিছু বুনো ক্রুদ্ধ নদীর উপরে সেতু নির্মাণও সম্ভবপর হয়। কয়েকটি রানওয়ে নির্মাণের সাথে সাথে বুদ্ধমন্দির পুনঃনির্মাণেও হাত দিই সবাই এবং সাগরমাতা ন্যাশনাল পার্কে এক লক্ষের উপরে বীজবপন করা হয় যেন জ্বালানীকাঠ সংগ্রহের এবং হোটেল নির্মাণের উদ্দেশ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত বন যেন কিছুটা হলেও আগের সবুজ অবস্থানে ফিরে যেতে পারে।
অনেক অনেক বছর ধরেই পৃথিবীর নানা দুর্গম প্রান্তরে ছোট বড় নানা অভিযান এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ভিতর দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের সাথে সাথে উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরুতেও পা রেখেছি তার অংশ হিসেবেই। আজ যখন আমার সারা জীবনের স্মৃতিচারণ করি, দৃঢ় কণ্ঠে বলতে পারি সেই সুউচ্চ পর্বতারোহণ কিংবা বন্ধুর ভূখণ্ড পাড়ি দেওয়া নয়, জীবনের সেরা অর্জন ছিল আমার হিমালয়ের বন্ধুদের জন্য সেই বিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল ক্লিনিকগুলো স্থাপন করা এবং পরিচালনা করা, সেই সাথে বুদ্ধ মন্দিরগুলো পুনঃ নির্মাণ করা।
সেই তীব্র সুখময় দিনটি আমার খুব স্পষ্ট মনে পড়ে যখন খুমজুংয়ের বিদ্যালয়টি আমরা মাত্র ৪৭ জন শিশু নিয়ে শুরু করি, যাদের পরনে ঠাণ্ডা ঠেকানোর জন্য অপ্রতুল শেরপা পোশাক থাকলেও লাল টুকটুকে গাল এবং মুখ ভরা হাসি নিয়েই তারা দিন বদলের স্বপ্ন দেখেছিল। আজ তাদেরই একজন ৭৬৭ বোয়িং-এর বিমান চালক এবং অনেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে কর্মরত।
এই সেই স্মৃতিমালা, যা আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী।
এই ছিল মহান মানুষটির কলমে নিজেকে নিয়ে লেখা গল্প, আরেকটি কাহিনী জানেন কি- নিচের ছবিটি ভাল মত খেয়াল করুন-
পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত আলোকচিত্রগুলোর একটি, এভারেস্ট শীর্ষে মানবজাতির প্রথম আরোহণ ( অনেকেই জর্জ ম্যালোরির কথা বলতেন একসময়, সেটি কেন গ্রহণযোগ্য নয় সেটি নিয়ে পোস্ট আসিতেছে! ), সারা বিশ্বকে পদানত করে সুমহান তুষার ধবল পর্বত শৃঙ্গে মানবতার পতাকা নিয়ে দণ্ডায়মান বীর পর্বতারোহী, ছবিতে দেখা যাচ্ছে শেরপা তেনজিংকে, ছবিটি তুলেছেন এডমুন্ড হিলারী। কিন্তু হিলারীর ছবি কোথায়? উত্তর- ছবি নেই! কিন্তু কেন! কারণ, এভারেস্টে আরোহণের পরে হিলারি নাকি আবিস্কার করেন যে তেনজিং ক্যামেরা ব্যবহার করতে জানেন না, আর হিমালয়ের চূড়ো নিশ্চয়ই কাউকে ছবি তোলা শিখানোর জন্য সেরা জায়গাটি নয়!
বুঝলাম, কিন্তু এভারেস্ট শীর্ষে প্রথম কে পৌঁছে ছিল? কার পদ চিহ্ন বয়ে নিয়ে গিয়ে ছিল মানুষের অভিযানস্পৃহা? এই বিষয়ে দুই অভিযাত্রীর মুখ যেন কুলুপ এঁটে বসে ছিল, উত্তর একটাই- আমরা একসাথে শিখর জয় করেছিলাম।
শিখর থেকে নামার পথে অনেক অনেক পরে প্রথম যে মানুষটির সাথে তাদের দেখা হয় তিনি ছিলেন সেই বিখ্যাত অভিযানের আরেকজন কিউয়ী, হিলারীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু জর্জ লোয়ে, যে হিলারী এবং তেনজিং-এর জন্য গরম স্যুপের পাত্র নিয়ে বেশ খানিকটা উপরের দিকে এগিয়েছিল। বন্ধুর দর্শন পেয়ে হিলারী বলেন তার সেই অমর বাক্য- Well, George, we knocked the bastard off.
কিন্তু শিখর জয় আসলে কে প্রথম করেছিল তার কোন হদিস মেলে না। সাংবাদিকদের বারংবার একই প্রশ্নতেও মেলে না কোন সদুত্তর। হিলারীর হিমালয় কেন্দ্রিক আত্নজীবনী High Adevntures এবং View from the Summit । লেখা ছিল আমরা একসাথে শীর্ষে পৌঁছালাম! "A few more whacks of the ice axe in the firm snow, and we stood on top."
এদিকে আন্তর্জাতিক ভাবে শুরু হয়েছিল এক অদ্ভুত লড়াই, তেনজিংকে নেপালি নাগরিকের চেয়ে ভারতীয় প্রমাণ করতে ব্যগ্র ছিল একটি বিশেষ মহল, তাকে সারা জীবনের জন্যই ভারতে রাখার ব্যবস্থা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, দার্জিলিঙে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট ( H M I ) স্থাপন করে সেখানে তেনজিংকে প্রথম ডিরেক্টর করা হয় ( উনার সমাধিও এইখানেই অবস্থিত) , আভাসে বলা হতে থাকে তেনজিংই প্রথম শীর্ষে উঠেছিলেন।
সমস্ত জল্পনাকল্পনায় বরফ গলা জল ঢেলে তেনজিং তার বই 'Man of Everest তে উল্লেখ করেন হিলারীই প্রথম শিখর জয় করেছিলেন এবং সেই ৪০ ফুট উঁচু আপাত অসম্ভব পাথুরে দেয়ালটি, যার নামকরণ পরবর্তীতে করা হয় হিলারী স্টেপ, অতিক্রমের উপায় হিলারীই খুঁজে বাহির করেন, এবং তেনজিং তাকে অনুসরণ করে যান। সেই সাথে তেনজিং মানুষের কৌতূহলে বিরক্ত হয়ে এও জানান, যদি এভারেস্টে হিলারীর এক কদম পিছনে থেকে ২য় মানুষ হিসেবে আরোহণ কোন লজ্জাজনক বিষয় হয়ে থাকে তাহলে এই লজ্জা নিয়েই আমাকে বাকী জীবন অতিবাহিত করতে হবে।
অবশ্য এখানে তেনজিং উল্লেখ করেন তিনি হিলারীর ছবি তুলে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হিলারী নিষেধ করেন এবং বলেন কাউকে শিখরে কে আগে উঠেছে সেটা না বলতে।
এখন প্রশ্ন করি, কোন মানুষটি এভারেস্ট শিখরে প্রথম উঠে যথেষ্ট সুযোগ থাকা শর্তেও স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে নিজের ছবি তুলতে চান না কিন্তু প্রমাণের জন্য অন্যের ছবি তুলেন?
তারেক অণুর উত্তর- সেই মানুষটি যার উচ্চতা এভারেস্টের চেয়েও বেশী, যার হৃদয়ের বিশালতা হিমালয়ের চেয়েও বিশালতর। একজন সত্যিকারের মহামানব।
এভারেস্ট জয়ে সংবাদে আনন্দে আপ্লুত নতুন রানী এলিজাবেথ হিলারী এবং অভিযানের মূল নেতা জন হান্টকে নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত করেন এবং তেনজিং নোরগে ব্রিটিশ উপনিবেশের নাগরিক না হওয়ায় বিদেশীর জন্য সর্বোচ্চ সন্মান ব্রিটিশ এম্পায়ার মেডেল বা জর্জ মেডেল পান ( গুজবে আছে তাকে নাইটহুড দেবার প্রস্তাব উঠলে নানা কূটনৈতিক কারণে নেহেরু তাতে সরাসরি ভেটো প্রয়োগ করেন)।
সারা বিশ্ব দেখা পেল এক নতুন মহানায়কের। যে নায়কের পেশা ছিল মৌমাছি পালন আর শখ ছিল অবসর মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের নানা পর্বত আরোহণ। মৌমাছিপালকটি হঠাৎ স্যার উপাধি পাওয়ায় স্বগোতক্তি করেছিলেন- আমি সেই ধরনের মানুষ না যার উপাধির প্রয়োজন আছে। আহ, এখন এই পুরস্কার নেবার জন্য আমাকে নতুন ওভারঅল কিনতে হবে!
এমন মানুষই ছিলেন তিনি, বিনয়ে নিজের কৃতিত্ব এড়িয়ে গেছেন সবসময়ই। যার অন্যতম বড় প্রমাণ প্রথম মানুষ হিসেবে তিন তিনটি মেরু ( উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু এবং এভারেস্ট যাকে বলা হয় থার্ড পোল ) জয়ী হিসেবে মানুষ তার নাম জানে না বললেই চলে অথচ তার অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের অভিযানও ছিল নানা রেকর্ডে মোড়া, কমনওয়েলথ অভিযানের অংশ হিসেবে তারা সমস্ত মহাদেশ বিশেষ ইঞ্জিনচালিত বাহনে পাড়ি দেন এবং অ্যামুন্ডসেন ( ১৯১১ সালে) ও স্বক্টের ( ১৯১২ সালে) ৩য় ব্যক্তি হিসেবে দক্ষিণ মেরু বিন্দুতে পৌঁছান ১৯৫৮ সালে, সেই সাথে প্রথমবারের মত ইঞ্জিন চালিত যানে করে, এই নিয়ে একটি সুখপাঠ্য বইও লিখেন তিনি যৌথভাবে।
১৯৮৫ সালে উত্তর মেরু পৌঁছান তিনি, সঙ্গী হিসেবে ছিলেন চাঁদে পা দেওয়া প্রথম মানুষ নিল আর্মস্ট্রং। শেষ হয় তার সব মেরু অভিযানের পালা কিন্তু ক্রমাগত চলতে থাকে হিমালয়ের বন্ধুদের জন্য কার্যক্রম। ১৯৭৫ সালে পাপলু নামের এক নেপালি গ্রামে হাসপাতাল নির্মাণের সময় তার সাথে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে বিমানযাত্রাকালীন সময়ে স্ত্রী লুই এবং বেলিন্ডা দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, যার ফলে চরম ভাবে মুষড়ে পড়লেও তার সমাজসেবা অব্যাহত রাখেন হিলারী। এর ১৪ বছর পরে তিনি তার মৃত ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিধবা স্ত্রীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
২০০২ সালে মে মাসে উনার একমাত্র পুত্র পিটার তার বাবার মহা অর্জনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অভিযানে এভারেস্ট বিজয়ে সক্ষম হন , তেনজিংএর ছেলে জামলিংও সেই অভিযানের সাথে ছিলেন। এভারেস্টের চূড়ো থেকে পিটার বাবাকে ফোন করলে আবেগাক্রান্ত হয়ে ধরা গলায় হিলারী কেবল বলেন- সাবধানে নামিস!
২০০৮ সালের ১১ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে তার ঘটনাবহুল জীবনে বিশ্রাম এসে উপস্থিত হয়।
হিলারীকে নিয়ে একটি দুঃখ আমার মনে রয়ে যায় সর্বদাই, এই অনন্য অসাধারণ মানুষটি নিউজিল্যান্ডের হাই-কমিশনার হিসেবে বাংলাদেশে,ভারতে এবং অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নেপালে সাড়ে চার বছরের জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন ১৯৮৫ সালে। তার সেই কূটনৈতিক জীবন মূলত দিল্লীভিত্তিক হলেও ঢাকাতে তিনি অবস্থান করেছিলেন বেশ কিছু দিন, বার বার এসেছিলেন বাংলা নামের পর্বতহীন সবুজ মায়াময় দেশটাতে, অথচ তাকে একটিবারও কোন রকম সম্বর্ধনা প্রদান করা হয় নি, না রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে, না ঢাকার নাগরিকদের পক্ষ থেকে, না তথাকথিত সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে! কেন আমার জানা নেই, কিন্তু এই লজ্জা আমাদের সকলের, প্রথম এভারেস্টজয়ী হিসেবে বিশ্বখ্যাত একজন ব্যক্তি বলেই নয়, এমন একজন সত্যিকারের মহানায়ক আমাদের মাঝে ছিলেন অথচ তার সত্যিকারের কদর করতে পারলাম না, অন্তত তাকে এটাও বোঝাতে পারলাম না- হিলারি, বাংলাদেশ তোমাকে মনে রাখবে! এই ব্যর্থতা আমাদের।
এডমণ্ড হিলারী আমার জীবনের মহানায়কদের একজন, এভারেস্ট জয় জীবনে হোক বা না হোক তার মত বিশাল মনের, নিরহংকারী স্বভাবের এবং পরোপকারী মনোবৃত্তির কোনটার ধারে কাছে যে কোনদিন যেতে পারব না তা বোঝা হয়ে গেছে অনেক অনেক আগেই। তারপরও এই মহামানবের বই পড়ি, ছবি দেখি মনের গোপন কোণে লালিত স্বপ্নবশেই, যদি তার মত হবার অনুপ্রেরণা মেলে, তাও মন্দ কি !
( ব্যবহৃত আলোকচিত্রগুলো পর্বত বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবপেজ থেকে সংগৃহীত, আর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নেবার পরে এক সাংবাদিক বলেছিলেন এই প্রথম এমন কোন মানুষের সাথে কথা বললাম যার ছবি সেই দেশের টাকাতে আছে, তাই নিউজিল্যান্ডের টাকার ছবিটিও যোগ করা হল! আর হ্যাঁ, ২৯ মে কিন্তু আর অল্প কদিন পরেই!
মন্তব্য
এডমন্ড হিলারী আমার প্রিয় মানুষদের মধ্যে অন্যতম । আমরা অনেক গুণী ব্যক্তিদের পূর্বেও যেমন সম্মান দিতে পারি নি , এখনও পারছি না।
কেমন অবাক করা একটা ঘটনা এইটা!
facebook
বিজয়ের সুদীপ্ত অভিপ্রায়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রেরণা জাগানিয়া অসাধারণ ব্লগ-গাথা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
facebook
ধন্যবাদ রোমেল ভাই, অন্যদের লেখা গুড় হয়, আপনার লেখার সাথে সাথে মন্তব্যও (গুড়)
facebook
অসাধারণ লাগল অণুদা।
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি শুধু ভাবছি যখন এডমণ্ড হিলারীর ছেলে এভারেস্ট জয় করে বাবাকে ফোন করলেন সেইসময় তাঁদের দুজনের মনের অবস্থাটা ঠিক কী ছিল।
মনে হচ্ছে এখনই একটা সিনেমা বানিয়ে ফেলি।
নিঃসন্দেহে অনন্য এক অনুভূতি। প্রথম এভারেস্ট অভিযান নিয়ে এক বড়সড় লেখায় হাত দিতে হবে।
facebook
facebook
চমৎকার একটা পোস্ট।
এডমণ্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে সম্পর্কে জানার আকাঙ্খা এতো পড়েও শেষ হয়না।
জর্জ ম্যালরি কে নিয়ে বানানো একটা ডকুমেন্টরি দেখেছিলাম অনেকদিন আগে "The Wildest Dream"।
অনেক ভাল লেগেছিল। তাকে নিয়েও কিছু লিখবেন আশা রাখি।
অবশ্যই লিখব।
তবে তাদের প্রথম অভিযান নিয়ে আলাদা ভাবে লিখতে হবে।
facebook
আরেকটা কথা না বলেই পারছি না। যে ব্যক্তিটি আমাদের এখনও অনুপ্রেরণা যোগায় দুঃসাহসিক কোন অভিযানে বিশেষ করে পাহাড়ে চড়ার ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিটি যখন নিজের দেশে ছিল তখন তার কোন অসামান্য কৃতিত্তের ভাগিদার হতে পারিনি, দিতে পারিনি সামান্যতম মর্যাদা। অথচ আজ তাকে ঘিরে যখন তিনি আর বেঁচে নেই তখন আমরা তাকে কেন্দ্র করে কত না লোক দেখানো অনুষ্ঠানের আয়োজন করি।
এ আর নতুন কি! এখনো যারা যোগ্যতম তারা সন্মান পান না, মারা গেলেই পড়বে শ্রদ্ধার হিড়িক।
facebook
খুব ভালো লেগেছে! কী অসাধারন মানুষ! হিমালয়ের চেয়েও উচুঁ, বিশাল। তার জন্য অনেক ভালোবাসা রইল।
এমন মানুষ আর হয় না।
facebook
খুব ভালো লেগেছে। আন্তরিক ধন্যবাদ এমন একটি সুখপাঠ্য লেখার জন্য।
শুভেচ্ছা।
facebook
আচ্ছা, এভারেস্টের নামকরণ নিয়ে একটা বিতর্ক আছে। বিতর্কটা সিরিয়াস না ফালতু জানি না - এর মধ্যে সারবত্তা কিছু থাকলে এনিয়ে কিছু লিখবেন?
****************************************
খুব একটা বিতর্ক কিন্তু নেই, যার নামে এই নামকরণ ক্রা হয়েছে সেই জর্জ এভারেস্ট বলেছিলেন স্থানীয় নাম চুমুলংমা রাখতে, সেই সাথে বলে ছিলেন মানুষ তার উচ্চারন করতে পারবে না, আসলেই তার নাম কিন্তু ইভরেস্ট!
facebook
আমার ছেলেবেলার নায়ক
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার সবসময়ের নায়ক
facebook
লেখা(অনুবাদ) 'বশশ' হয়েছে!
facebook
facebook
এরকম তথ্যবহুল লেখার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আবারো পড়বো সময় করে।
ভালো থাকবেন।
ক্রেসিডা
শুভেচ্ছা।
facebook
আচ্ছা উত্তর মেরু বিন্দু প্রথম কে প্রদক্ষিণ করেন?? উইকিতে দেখলাম পিয়েরীকে নিয়ে বিতর্ক আছে। কোন সঠিক তথ্য সূত্র থাকলে দিবেন।
বাংলাদেশের পক্ষে ইনাম আল হক এবং অধম তারেক অণু
আর মানব জাতির পক্ষে পিয়েরি এবং তার ইন্যুইট দলই প্রথম মেরুবিন্দুর ৫ কিমির মধ্যে পৌঁছেছিল। সেটিকেই সঠিক ধরা হয়। দক্ষিণ মেরু জয়ী অ্যামুণ্ডসেন বিমানে করে প্রথম উত্তর মেরু বিন্দুর উপর দিয়ে পাড়ি দেন, সেই হিসেবে তিনি হয়ত প্রথম মানুষ যে বিন্দুটি চাক্ষুষ করেন! আর চুলচেরা হিসেবে অনেক অনেক পরে মনে হয় ১৯৬৯ সালে এক ব্রিটিশ অভিযাত্রী মেরু বিন্দুতে পা রাখেন। কিন্তু পিয়েরিকেই মূল সন্মান দেওয়া হয়।
facebook
এবার তো আপনাকে নিয়ে আমি লিখতে বসে যাব। আচ্ছা মেরুবিন্দুতে যেয়ে কি দেখলেন। ছবি কি দেয়া যাবে??
সচলে একাধিক পোস্ট করেছি আগে সেই ঘটনা নিয়ে, ছবিও আছে।
facebook
facebook
#আমি হাজির। প্রিয় তারেক অনু ভাই, মন্তব্য পরে
নাম কোঠায় !
facebook
নাম কোঠায় !
হাজির, আমাকে চিনতে পারছেননা?
আশরাফুল কবীর
facebook
দার্জিলিঙে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট এর সামনে থেকে তোলাঃ
--------
সায়ন
কিচ্ছু দেহি না
facebook
এখন দেখা যাবে কিনা জানি না।
facebook
#প্রিয় তারেক অনু ভাই,
আপনি কখন ঐখানে মানে হিমালয়ের চূড়ায় যাইবেন, জানতে মুঞ্চায়
>আমি শিওর আপনি যে ভবিষ্যতে কোন এক সময় ঐ স্থানটিতে পৌছাইবেন।।।।
>তবে সাবধানে, ব্যাপক ঠান্ডা বলিয়া কথা।।
ঠাণ্ডা কোন ব্যাপার না, ডাণ্ডা মেরে ভাগিয়ে দিব, সমস্যা দুইখান মাত্র- সময় এবং অর্থ।
facebook
ধন্যবাদ, এমন একটি পোস্টের জন্য। আর বাংলাদেশে তাঁর অবস্থান কালে তাঁকে সম্মাননা না জানাতে পারার অনুশোচনা আমাদের চিরকাল বয়ে বেড়াতে হবে।
জেনে খুবই অবাক হয়েছিলাম
facebook
facebook
অণু তোমার এই সিরিজটাও অসাধারণ হচ্ছে। পড়তে পড়তে শেষে এসেও শেষ হওয়ার আক্ষেপ কাতর করে না মোটেই। তাই বলে কিন্তু এটা মনে কোরো না যে ক্লান্তি এসে ঘাড়ে এসে চেপে বসে।
ছোটরাও কত সহজেই না শ্রদ্ধা আদায় করে নিতে জানে, তোমার পোস্টে আসলেই সেটা খুব বেশি করে টের পাই। তোমাকে একদিন ওই ভয়ঙ্কর সুন্দর উচ্চতম বিন্দুটায় দেখতে পাবো এই আশা করি।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
ঠিক কথা। অণুদার জন্য শুভকামনা সবসময়।
আপনের বসকে বলে রাখেন, কোম্পানির লোগো নিয়ে যামু স্পন্সরের কিছু অংশ হলে
facebook
টেরাই নিয়া দেখতে পারি
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
ডান, মালাওয়িতে হাতির এতিম বাচ্চাদের নিয়ে একটা প্রজেক্ট আছে, দেখেন কিছু দানছত্র পাওয়া যায় নাকি, তাহলে চলে আসি মাস ছয়ের জন্য--
facebook
অসাধারণ। ।
ধন্যবাদ।
facebook
তাই তো কই, হিলারির হাতে পোথমালূ'র লোগো কই? হিলারির হাতে পোথমালূ'র লোগো সহ একখান ফটুক দ্যান।
ইটা লইবেন নি? পরের সব পর্বের জন্য ইটা রাইখা দিলাম --
লন, ইটা লন।
facebook
২০০৮ সালের ১১ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে তার ঘটনাবহুল জীবনে বিশ্রাম এসে উপস্থিত হয়।
#সময় ও অর্থ কোনটিই আপনার জন্য সমস্যা নয়।।।।।।।
#আপনার বিশ্রাম যেন না হয়
আশরাফুল কবীর
ঐ দুইতাই তো মূল সমস্যা, ভাই কি মশকরা করলেন জেনে শুনে
facebook
#প্রশ্নই ওঠেনা?আমার মাথায় কি দুইটা মগজ নাকি?
আশরাফুল কবীর
কি করে বলি !
facebook
অনু ভাই । অসাধারণ লাগলো ।
আমাদের এরকম বিনয়ী মানুষ বোধয় একটিও নেই । মানুষের মানুষ হতে যে বিনয় কতটা প্রয়োজনীয় তা এডমুন্ড হিলারীকে নিয়ে এই লেখাটা পড়ে আরো একবার হৃদয়ঙ্গম করলাম ।
আপনার পরবর্তী প্রিয় মুখের অপেক্ষায় থাকলাম ।
আসিতেছে, তবে ২ জন নিয়ে।
facebook
facebook
"এইটা সচলের তারেক অণু, আমাদের সবার প্রিয় তারেক অণুর লেখা" - এগার কোটি মানুষকে গর্ব নিয়ে দেখিয়ে বলার মত এই পোস্ট।
জনপ্রিয়, গুণবান অণুকে মাঝে মধ্যে স্নাইপার স্টাইল গুম-খুনের হুমকি দিয়ে বড় মজা পাই
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
১১ কোটি! তখন তো আমি প্রাইমারীতে পড়তাম! এহন কত---
facebook
কড়িকাঠুরে
facebook
ভুল কি বললাম !
facebook
এডমন্ড হিলারীকে শুধুমাত্র একজন পর্বতারোহী হিসেবেই জানতাম। কিন্তু এই লোকটা হিমালয়ের কোলে বাস করা মানুষগুলোর জন্য এত কিছু করে গেছেন সেটা জানতাম না। অসাধারন লাগল লেখাটা।
বাহ !
ধন্যবাদ, প্রচার বিমুখ মানুষ ছিলেন তো, কথা না বলে কাজ করে গেছেন সবসময়ই--
facebook
আমাদের দেশে কেন জানিনা জীবিত সম্মানিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানাতে পারিনা
রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রাপ্তদের তালিকায় সবচেয়ে দৃষ্টিগোচর বিষয়- "মরনোত্তর"
কারও মৃত্যু না হলে তার কদর যেন করতে নেই--- আজব এক---
দেশের দোষ দেই না---
আপনি, বা
আমার মত অধম তো তাকে শ্রদ্ধাকরি- করে যাবো ।
২৯মে তো এলো বলে, লেখা পাচ্ছি নিশ্চই---
সাথে মুহিত ভাই ও নিশাত আপুকে নিয়ে কিছু ।
কড়িকাঠুরে
আসবে, তারা ফিরছে ঢাকাতে সামনে সপ্তাহে, তার পরপরই।
facebook
I want to read it again and again which cannot be fill up my heart
অজ্ঞাতবাস
facebook
সত্যিকারের মহামানবেরা নিজেদের কৃতিত্ব কত সঙ্গোপনে লালন করেন ! মহাত্মা হিলারী যেখানে পৃথিবীর প্রথম মানুষ হিসেবে এভারেস্টে পা রাখার কৃতিত্বে সঙ্গে নিয়েছেন তেনজিংকেও, সেখানে আমাদের দেশে প্রথম এভারেস্ট বিজয়ীর নামে কেমন আঁশটে গন্ধ ! কেউ জয় করেও নিজের নাম ছড়াতে চায় না, কেউ না জয় করেই নিজের নাম পাঠ্যপুস্তকে ছাপাতে চায় ! এখানেই অবশ্য খাঁটি মানুষের সাথে চোরের প্রভেদ ।
এখানেই অবশ্য খাঁটি মানুষের সাথে চোরের প্রভেদ ।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন