নাম না জানা ইনকা গ্রাম, লুকোচুরিরত শিশু এবং আমার মুচি বন্ধু

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০৫/২০১২ - ৬:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

407350_10151251633700497_608590496_23056773_1200158949_n

থেকে থেকেই সময় থমকে দাঁড়ায়। প্রবল পরাক্রান্ত মহাকাল হার মানে ক্ষণিকের তরে হলেও মানুষের কল্পনার কাছে, পৃথিবী নামের নীল গ্রহটা বন বন করে ঘুরতে থাকে আপন অক্ষ ও কক্ষপথে, সূর্য নামের নক্ষত্রটি ৮টা গ্রহ এবং শতাধিক উপগ্রহ নিয়ে সেকেন্ডে কয়েকশ মাইল গতিতে ছুটতে থাকে কিন্তু আমাদের চারপাশ থেকে যায় একই রকম, মুহূর্তের সাথে গড়ায় না সে সামনের দিকে। এমন ঘটে কিছু স্থানে, জনাকয়েক মানুষের সংস্পর্শে, জাদুমুহূর্তগুলো হয়ে থাকা আমাদের সারাজীবনের সম্পদ। তেমন এই বছর একবার ঘটেছিল ব্যক্তিগত জীবনে।

395493_10151228470970497_608590496_22982865_1538683502_n

মধ্য পেরুর সেই গ্রামটির নাম জানবার সুযোগ হয় নি, আর সব কিছু জানারই বা দরকার কি? কিছু প্রিয় বিস্ময় থাক না অজানা নামের হয়ে, ক্ষতি কি! আমাদের খুব অল্প সময়ের জন্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্থানীয় বিশাল ক্যাথেড্রালটি দেখার জন্য, সেই সাথে স্থানীয়দের একটি গ্রাম্যবাজার যেখানে গোটা চারেক দোকান,যেখানে রকমারি দ্রব্যের রঙিন পসরা সাজিয়ে বসেছে এই এলাকার এককালের শাসনকারী ইনকাদের বংশধরেরা।

398766_10151281990915497_608590496_23146536_730495449_n

বাস থেকে নামতেই একটা প্রাণচঞ্চল জনসমাগমের আমেজ অনুভূত হল কিন্তু তা উপভোগের আগেই সেখানের বিশালকায় ক্যাথেড্রালটির গহ্বরে প্রবেশ করতে হল গাইডের তাড়ায়, বেশ সমৃদ্ধ স্থাপনা, দেয়াল আর বেদীতে নানা মূল্যবান পাথরের কারুকার্য, জানালের কাঁচে খোদাই করা সুক্ষ শিল্পকর্ম।

389342_10151763821065497_608590496_24607986_476252481_n

কিন্তু ইনকাদের দেশে এসে তাদের শোষণের টাকায় গড়ে ওঠা দখলদার ঔপনিবেশিকদের রক্তাক্ত স্মৃতিময় এই উপাসনালয় দেখতে আর ইচ্ছে করল না, দলের বাকিদের সেই গম্ভীর আঁধারময় পরিবেশে ফেলেই বেরিয়ে আসলাম খোলা বাতাসে শ্বাস নিতে, সাথের গাইড অবশ্য ফিরিস্তি দিতে চাচ্ছিল যে এই ক্যাথেড্রাল কত বিখ্যাত কত শত বছরের পুরনো তাই নিয়ে, সাথে এও বলল গ্রামটিতে আর বিশেষ কিছুই দেখার নেই! নাই যদি থাকে তাহলে বাজারে গাছের তলায় বসে থাকব এমনটা বলেই গট গট করে বেরিয়ে এলাম উদার আলোক মাঝে উম্মুক্ত বাতাসে।

অপূর্ব গ্রামটি, বেশ খোলা একটা চত্বর, মাঝে ফুল হাসা বাগিচা, গজিয়ে ওঠা ইনকা বাজার আর চারপাশের গুটিকয় বাড়ি-ঘর- ব্যস! কিন্তু একটা শান্তিময় বাতাস যেন হিল্লোল তুলে বয়ে বেড়াচ্ছে সবার মাঝে। নির্জন, শান্ত, সুমসাম পরিবেশ। ঘরদোরের ফাঁক দিয়ে কাছের শস্যক্ষেত আর দূরের আন্দেজ পর্বত চোখে পড়ে। রঙচঙে পনচো পরিহিত স্থানীয়দের সাথে সাদামাটা বাড়ীগুলোর সমন্বয়ে তৈরি কিছু দৃশ্য মনে হল একেবারে টিনটিনের পাতা থেকে উঠে এসেছে।

564365_10151763821610497_608590496_24607989_1941774121_n

শুনেছি, অনেক লেখকই নির্জনে কথার জাল বুনবার জন্য বিশেষ বিশেষ জায়গায় গা ঢাকা দেন যাতে শান্তিমত লেখালেখি চালাতে পারেন। এমন কোন লেখক হবার সম্ভাবনা মনে হচ্ছে সুদূর পরাহত কিন্তু বই লেখার জন্য যে নির্জন কিন্তু অন্যান্য সুযোগ সুবিধাময় বন্ধুত্বপূর্ণ জনপদের প্রয়োজন মনে হচ্ছে গ্রামটি সবদিক থেকেই নিখুঁত, কেবল স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগের জন্য ভাষাটি খানিকটা সড়গড় হয়ে গেলেই ছোট কামরা ভাড়া করে আস্তানা গাড়া যায় নির্জনবাসের জন্য। দেয়ালে লামার প্রতিকৃতি খোঁদাই করা লাল টালির এক বাড়ীতে প্রায় ঢুঁকেই পড়েছিলাম এই অভিপ্রায়ে!

549357_10151476358760497_608590496_23858210_1521610808_n

প্রথমেই মাথায় সাদা হ্যাট পরা, রেড ইন্ডিয়ান রীতি অনুযায়ী লম্বা দুই বেশী ঝোলানো স্মিত হাস্যরত দাদিমার সাথে দেখা হল, উনি ভেষজ চায়ের কারবারি। ( শুনেছে সাদা হ্যাট পড়ার রীতি স্প্যানিশরাই চালু করে, এর অর্থ হ্যাট পরিহিত ব্যক্তি স্প্যানিশ জানে) ফোকলা হেসে মাথা নাড়িয়েই চা বানানো শুরু করলেন আমার দাবী শুনে ( বলেছি, চা কিনব, পানও করব কিন্তু তার একটা ছবি চাইই চাই আমার সাথে! )

397533_10151199621785497_608590496_22887445_958575589_n

তার এই হাসি কি কেবলই লোকদেখানো? পাথরে খোদাই করা মুখমণ্ডলে অন্যসময় যে গভীর বিষণ্ণতা খেলা করা, যা সাক্ষ্য দেয় কয়েক শতাব্দী ধরে নিজভূমে পরবাসী হবার বঞ্চনা, লাঞ্ছনা, গঞ্জনার। তার মুখের বলিরেখায় যেন সেই না বলা শোষণের ইতিহাস মূর্ত হয়ে ওঠে।

428995_10151281991370497_608590496_23146540_1820194715_n

চায়ের অপেক্ষা করছি আয়েশ করে কাঠের বেঞ্চিতে বসে, এক তরুণ ইনকা এসে পাশে বসল। হাতে তার জুতো পালিশ করবার যাবতীয় সামগ্রী একটি কাঠের বাক্সে, মনে হয় পেশাতে মুচি। বেশ একগাল হেসে আমার লাল ধুলো ধূসরিত জুতো জোড়ার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশন করে বলল- উনা সোল অ্যামিগো, উনা সোল! ( মানে বুট পালিশ করে দেব মাত্র ১ সোলেসের বিনিময়ে। পেরুর মুদ্রার নাম সোলেস)। নিজের জুতাজোড়ার হতশ্রী অবস্থা দেখে মনে হল অবশ্যই চকচকে পালিশ করানো দরকার, আর দক্ষিণ আমেরিকার যাত্রা তখন কেবল শুরু হয়েছে, সামনে অনেক অনেক দীর্ঘ পথ কিন্তু হাতে তো সময় আছে দশ মিনিটেরও কম। সহযাত্রীরা সবাই বেরিয়ে আসলেই আবার বাস রওনা হবে, চালক ইতিমধ্যেই আসনে গ্যাঁট হয়ে বসেছে। এখন জুতো পালিশ করতে দেয় কি করে? যদি ১ পাটি পালিশের পরপরই রওনা দেবার সময় হয়ে যায়? তরুণটি এখনো পর্যটকদের নিয়ে কাজ করবার অন্যতম অপরিহার্য শর্ত চরিত্রের লাজুকতা বিসর্জন দেয় নি, বিনম্র ভঙ্গীতে কেবল বলে গেল- উনা সোল, উনা সোল!

148911_10151763821740497_608590496_24607991_429315079_n

তাকে হাসি দিয়েই বললাম, দাবী খুবই ন্যায্য এবং সে জুতো জোড়া রঙ করে দিলেই মহাখুশী হতাম কিন্তু হাতে সময় নেই, যদিও সে ইশারায় বুঝিয়েছিল বিদ্যুৎ গতিতে কাজ সারা সম্ভব কিন্তু সেই মুহূর্তে রাজী হওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু তাতে মুখের হাসিটি বিন্দুমাত্র ম্লান না করে সেও চায়ের আসরে যোগ দিল। রেড ইন্ডিয়ান দিদিমা বেণী দুলিয়ে দুলিয়ে বানাতে লাগলেন আরেক চাপ সুগন্ধি ভেষজ চা।

চত্বরের এক কোণে ইনকা পোশাকের আর অন্যান্য হস্তজাত সামগ্রীর গুটিকয় দোকান, নিরিবিলি এলাকা বিধায় দেখলাম দোকানী মায়ের শিশুদের নিয়েই বসেছেন, একটু বড় বাচ্চার নিজেদের মধ্যেই মেতে আছে, কেউবা বা গাছে চড়ায়, কেউবা বরফ-পানি খেলায়, কেউ জানালা দিয়ে ছুড়ে দিচ্ছে কৌতূহলী দৃষ্টি!

430846_10151281991210497_608590496_23146539_953552869_n

576276_10151763821475497_608590496_24607988_1619719797_n

এক জায়গায় স্মৃতি ফ্রেমে আটকানোর সময় মনে হল কেউ একজন নির্নিমেষে চেয়ে আছে অদ্ভুত ভাবে, ঝট করে মাথা ঘুরাতেই দেখি মায়ের দোকানের টেবিলের নিচে অবাক করা দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ইনকা কিশোরী! চোখে চোখ পড়তেই আস্তে করে ঠোঁটে আঙ্গুল ঠেকিয়ে নীরবতা পালন করতে বলে জানিয়ে দিল তারা লুকোচুরি নামের আন্তর্জাতিক খেলায় মত্ত, সেখানে বিদেশীদের অস্তিত্ব টেবিলের তার উপস্থিতি জানান দেবার জন্য হুমকিস্বরূপ! মানে মানেই সরে পড়লাম চত্বরের অন্য ধারে।

547646_10151763838935497_608590496_24608036_1334614379_n

সেখানে তখন বাগানের মালীদের কাজ চলছে পুরোদমে, আন্দেজের হিম ঠাণ্ডায় ঊষর ভূমিতে জীবনের আলো ভরা ফুলের হাসি দেখিয়ে তারা প্রমাণ করেছে তাদের কুশলতা, আবার আগাছা বেছে নিয়ে করছে নতুন বীজ বপন, সেখানে তখন বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্ম প্রায় দোরগোড়াতে, হয়ত তারই প্রস্তুতি চলছে।

IMG_5593

179567_10151763821335497_608590496_24607987_1845820553_n

এক কিশোর প্রায় শূন্যে ভেসে ফুটবল নিয়ে নানা কসরতে ব্যস্ত, পেরু অবশ্য তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে বিশ্ব এবং আঞ্চলিক ফুটবলে কিন্তু এমন নিবিষ্ট প্রাণ ভক্তদের জন্যই যে দেশটি একদিন নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলবে তা ভাবতে ভাল লাগে।

402707_10151307937370497_608590496_23220513_351200375_n

রূপকথার পাতা থেকে উঠে আসা গল্পের মাঝের গল্পবলিয়েদের সমাবেশ দেখেছিলাম সেই স্বল্প সময়ে সেখানে অবস্থান কালে, নিজেদের মাঝে কথার চরকা ঘুরিয়ে চলেছিলেন মহাকালের সাক্ষীরা। কি নিয়ে এত কথা তাদের? কালকের আবহাওয়া, আজকের উপার্জন, বিশ্ব রাজনীতির কুটিল খেলা, নাকি অভাবের মাঝে বেঁচেও জীবনের সুন্দর দিকগুলো নিয়ে?

398548_10151251633545497_608590496_23056772_122444370_n

খবরের কাগজে পড়েছি বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণের মডেল অনুসরণ করে পেরুর আন্দেজের অসংখ্য গ্রামের রেড ইন্ডিয়ান অধিবাসীরা নিজেদের স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছে, হয়ত দারিদ্র পিছু হটছে অন্ধকারাচ্ছন্ন এই ভূখণ্ড থেকে ধীরে ধীরে।

হতদরিদ্র যে মাধুকরী বৃদ্ধাকে দেখেছিলাম শতচ্ছিন্ন পোশাক পড়ে উপাসনালয়ের সিঁড়িতে সবার অনুগ্রহ কামনা করতে, তাকেই দেখলাম পরম বন্ধুর মত সারাদিনের উপার্জন এক টুকরো রুটি একটি কুকুরের সাথে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন, এমনটি দেখলে আন্তন চেখভ নিশ্চয়ই আরেকটি মাস্টারপিস উপহার দিতেন বিশ্বসাহিত্যকে! অক্ষম আমি কেবল উপভোগ করি সেই দৃশ্য পূর্ণ বিস্ময় নিয়ে, ভালোবেসে ফেলি গ্রামটির প্রতিটি প্রাণীকে।

401714_10151763822210497_608590496_24607997_905963561_n

বাস ছেড়ে দিচ্ছে, জানালা দিয়ে চত্বরের পানে চোখ পড়তেই খানিকটা কুঁকড়ে গেলাম, সেই মুচি বন্ধু এক মুখ হাসি নিয়ে আলতো হাত নেড়ে বিদায় জানাল, কিন্তু সব ছাপিয়ে আমার কানের পর্দায় ভাসে তার সেই অস্ফুট আবেদন- উনা সোল, অ্যামিগো ! উনা সোল!

IMG_5533

(পেরু থেকে বলিভিয়া প্রবেশের সময় দেখি পকেটে ৮০ সোলেস রয়ে গেছে, আর্জেন্টিনায় পেরুর মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় টাকাগুলো আমার সাথেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে বাল্টিক সাগর তীরের হেলসিংকিতে আশ্রয় নেয়। এখনো হঠাৎ সেগুলোর দিকে চোখ পড়লে সেই বন্ধুর কথাগুলো আমার সামনে মূর্ত হয়ে ওঠে, ভাবি- সে তো কোন ভিক্ষা নয়, অনুগ্রহ নয়, কাজ চেয়েছিল। হাতে অল্প কয়েক মিনিট বেশী থাকলেই এই ৮০ সোলেসের ১টি মাত্র সোলেস দিয়ে তার মুখের হাসিটি আরেকটু চওড়া, আরেকটু দীর্ঘস্থায়ী করতে পারতাম হয়ত! )

ধীরে ধীরে বিদায় নেই গ্রামটি, নাকি বিদায় নিই আমরাই। সেটি আগের মতই থমকে দাঁড়ানো সময়সুড়ঙ্গে চলতে থাকে ঢিমেতালে শান্তিমত। স্মরণে আসে প্রিয় কবির পঙক্তিমালা, যা হয়ত তিনি লিখেছিলেন এই গ্রহেরই ওপর প্রান্তের এমনকি আরেকটি জনপদ নিয়ে—

সেই দিন এই মাঠ স্তব্ধ হবে নাকো জানি-
এই নদী নক্ষত্রের তলে
সেদিনো দেখিবে স্বপ্ন-
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে!
আমি চলে যাব বলে
চালতাফুল কি আর ভিজিবে না শিশিরের জলে
নরম গন্ধের ঢেউয়ে?
লক্ষীপেঁচা গান গাবে নাকি লক্ষীটির তরে?
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে!

চারিদিকে শান্ত বাতি- ভিজে গন্ধ- মৃদু কলরব
খেয়ানৌকাগুলো এসে লেগেছে চরের খুব কাছে
পৃথিবীর এইসব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল-
এশিরিয়া ধূলো আজ- বেবিলন ছাই হয়ে আছে।

( লেখাটি নজমুল আলবাব অপু ভাইয়ের জন্য)


মন্তব্য

শিপলু এর ছবি

ইটা রাইখ্যা গেলাম...

তারেক অণু এর ছবি

কোথায় গেলেন রে ভাই!

জ.ই মানিক এর ছবি

ছুঁয়ে দেয় বর্ণনা ও উপস্থাপনা।
মুগ্ধতা।
ভালো লাগা ভীড়ে এটা একটু বেশিই ভালো লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ। হাসি

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক চলুক অদ্ভুত!

তারেক অণু এর ছবি

জায়গাটাই এমন !

অতিথি লেখক এর ছবি

মধু- মধু।।।(ডট দিতে ঝামেলা হচ্ছে)

হাততালি হাততালি হাততালি

কড়িকাঠুরে

তারেক অণু এর ছবি

।।।। ।।। ।।।।---।।
আমারও!

তাসনীম এর ছবি

চমৎকার লাগলো ।

ইনকা শুনলেই সূর্যদেবের বন্দির কথা মনে পড়ে।

খবরের কাগজে পড়েছি বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণের মডেল অনুসরণ করে পেরুর আন্দেজের অসংখ্য গ্রামের রেড ইন্ডিয়ান অধিবাসীরা নিজেদের স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছে, হয়ত দারিদ্র পিছু হটছে অন্ধকারাচ্ছন্ন এই ভূখণ্ড থেকে ধীরে ধীরে।

চলুক

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তারেক অণু এর ছবি

সূর্যদেবের বন্দী, মমির অভিশাপ আর বিপ্লবীদের দঙ্গলে বার বার পড়েছি ল্যাতিন ট্রিপে।

hasan  এর ছবি

অসাধারন।

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

মনে হলো রূপকথার কোনো এক রাজ্যে ছিলাম। বাস্তবতা মাঝেই হয়তো সবচেয়ে বড় পরাবাস্তবতা লুকিয়ে আছে

অদ্ভূত সুন্দর এক লেখা চলুক

তারেক অণু এর ছবি

বাস্তবতার মাঝেই হয়তো সবচেয়ে বড় পরাবাস্তবতা লুকিয়ে আছে উত্তম জাঝা! (গুড়) হাততালি দারুণ বলেছেন।

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভেতরটা মুচড়ে দেবার মতোন একটা লেখা
কবিতার মতোন। ভেতরে হাহাকার তৈরি করে
আহা... আমি এইসব মায়াময় পরিবেশে থাকি না...

অণু, আমি নিতান্তই এক ক্ষুদ্র মানুষ। এভাবে এমন চমৎকারভাবে কেউ যখন ছুয়ে দেয় তখন ভেতরে আরেক ধরণের উচাটন তৈরি হয়। বর্ণনা করা যায় না সেই উচাটনি ভালো লাগা। কৃতজ্ঞতা জানবেন।

জ.ই মানিক এর ছবি

একমত।

তারেক অণু এর ছবি

আহা, আমিও এইসব মায়াময় পরিবেশে থাকি না।

ভাবলাম, এমন স্থান হয়ত আপনার ভাল লাগবে।

নজমুল আলবাব এর ছবি

আমারতো ভালো লাগেনি। ভালো লাগার পরে যদি কোনকিছু থাকে সেটা লাগলো। আহা...

তারেক অণু এর ছবি

গ্রামটা ছেড়ে আসতে বেশ খারাপ লেগেছিল, যদি কিছুদিন থাকতে পারতাম বেশ হত।

নজমুল আলবাব এর ছবি

লন যাই।
বাংগালের সাদা পাসপোর্ট এ ভিসা দেবেতো?

তারেক অণু এর ছবি

পেরুর ভিসা এমনিতে পাওয়া খুব মুশকিল, ব্যাটারা আঙ্গুলের ছাপ, চোখের ছবি, পুলিশের কাছে থেকে অপরাধ নেই এমন প্রত্যায়নপত্র, আরো কি সব হাবিজাবি চেয়েছিল। ফাউলের গাছ=

নৈষাদ এর ছবি

চমৎকার লাগল।

তারেক অণু এর ছবি
বুনোফুল এর ছবি

ভালো লাগলো।

________
বুনোফুল

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

>অনেক অনেক সুন্দর প্রিয় তারেক অনু ভাই, আপনার চোখ দিয়ে বিশ্বটারে ভ্রমি।।

>ভাল থাকুন সবসময় বাঘের বাচ্চা

আশরাফুল কবীর

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, ভাল থাকুন আপনিও।

উচ্ছলা এর ছবি

অনেক সুন্দর, অনেক কাব্যিক লেখা। ছবিগুলো একটা আরেকটার চেয়ে হৃদয়-ছোঁয়া। নিমিষেই পাঁচতারা এঁকে দিলাম তোমার পোস্টের কপালে।

( দেখসো নি কান্ড, অণু, আমিও তো দেখি কাব্য করে বসলাম ! হাসি )

তারেক অণু এর ছবি

হ, তাই তো দেখচি! কাব্য রোগ এবং হাসি বড়ই ছোঁয়াচে ! দেঁতো হাসি

ক্রেসিডা এর ছবি

এককথায় চমৎকার!

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ। আচ্ছা, এই কবিতাটা কার লেখা? মানে যেটা আপনার ওয়ালে দেখছি।

ক্রেসিডা এর ছবি

মানে আমার সিগনেচার এ?

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

ক্রেসিডা এর ছবি

আপনি যদি এটার কথা বলে থাকেন -

ভালোবাসার সময়তো নেই
ব্যস্ত ভীষন কাজে;
হাত রেখ না বুকের গাঢ় ভাঁজে।

এটা রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ এর "পরকিয়া" কবিতার প্রথম ৩টা লাইন।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

তারেক অণু এর ছবি

সেইটাই, অনেক ধন্যবাদ।

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

দঃ আমেরিকায় ঔপনিবেশিকদের (বিশেষ করে স্প্যানিশ কঙ্কুইস্টেডরদের) অত্যাচার সম্পর্কে আমার জ্ঞান "ঘনাদা তস্য তস্য অমনিবাস" পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। তাই ঐ বইটার কথাই মনে পড়ে গেল। তাছাড়া এই লেখাটাও তো একজন বাস্তবের (তবে সত্যবাদী) ঘনাদারই তো লেখা, তাই না? হাসি
প্রেমেন মিত্তির আজ বেঁচে থাকলে নির্ঘাৎ তাঁর নায়কের নাম বদলে ফেলতেন - "অণুদা"-তে। দেঁতো হাসি

****************************************

তারেক অণু এর ছবি

(তবে সত্যবাদী) গড়াগড়ি দিয়া হাসি
হা হা হা এমন করে ঘনা দা ভক্তদের দাগা দিলেন !

এই নিয়ে একটা বইয়ের রিভিউ লিখার ইচ্ছে আছে, দেখা যাক।

তিথীডোর এর ছবি

লেইখ্যা ফেলান তাত্তাড়ি, কী আছে জীবনে? হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তারেক অণু এর ছবি

কিছু নাই বইলাই তো সমস্যা!

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বইয়ের রিভিউ আর কতকাল লিখবেন ? আপনার বই আর বউ দেখতে চাই।

মন মাঝি এর ছবি

পরেরটার রিভিউ তো আর লেখা সম্ভব না, তাই প্রথমটাই চলুক। নাকি আপনি... খাইছে

****************************************

তারেক অণু এর ছবি

ক্যান মুরব্বী, আপনের কি ক্ষতি করলাম অ্যাঁ

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

এমন মর্মস্পর্শী লেখার সাথে জীবনন্দের নস্টালজিক- সব মিলিয়ে একে কী নাম দেব অনু ভাই, ভাষা খুঁজে পাইনা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

খবরের কাগজে পড়েছি বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণের মডেল অনুসরণ করে পেরুর আন্দেজের অসংখ্য গ্রামের রেড ইন্ডিয়ান অধিবাসীরা নিজেদের স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছে, হয়ত দারিদ্র পিছু হটছে অন্ধকারাচ্ছন্ন এই ভূখণ্ড থেকে ধীরে ধীরে।

ক্ষুদ্র ঋণের মডেল ঢুকে গেছে ইনকাপাড়ায়?
গুড... আর কিছু লাগবে না... বছর কয়েক পরে সেই গ্রামে গিয়ে দেখবেন দারিদ্র কাকে বলে...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

হুম, দেখা যাক। এই মডেল অনেক দেশেই বেশ কার্যকরী হয়েছে বলেই শুনেছি।

অমি_বন্যা এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
রিয়েল ডেমোন এর ছবি

ছবি গল্পে বিষণ্ণ ইতিহাস।

তারেক অণু এর ছবি

এমনই

কীর্তিনাশা এর ছবি

চলুক

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তারেক অণু এর ছবি

আবার কিসের পপ্পন!

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

এবারকার লেখাটা একটা অদ্ভুত রকম অনুভূতি নিয়ে এল মনে।
আর শেষের আগের সাদা-কালো ছবিটা অসাধারণ। হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, বাসের জানালা দিয়ে তোলা, নিচে নামার সময় ছিল না।

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

ভালো লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি
বন্দনা এর ছবি

উনা সোল, অ্যামিগো ! উনা সোল!

আমারি খারাপ লাগছে সেই তরুন ইনকার জন্য।
উপাসনালয়ের ছবিটা বেশ, সাথে ফুটবলার ছেলেটার ছবিটা ও।

তারেক অণু এর ছবি

সেই, পরে দেখি এতগুলো টাকা খামোখায় পকেটে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মনটা কেমন আনচান করে!

তারেক অণু এর ছবি

আমারও।

সবজান্তা এর ছবি

এই লেখাটা অন্যরকম। আন্দেজের কথা নাই, টিটিকাকার কথা নাই। বিখ্যাত কিছুর কথা নাই, শুধু সাধারণ মানুষের কথা। আমার মনে হয় বিখ্যাত ভ্রমনকারীদের এই চোখটা খুব ভালো মতো থাকে- বিখ্যাত, নামকরা জিনিসের মধ্যে থেকে খুব সাধারণ জিনিসটাকে আলাদা করে দেখার ক্ষমতা।

লেখাটা খুবই ভালো লাগলো অণু ভাই। পেরু অনেক দূরের দেশ। যতোই যেতে চাই, আসলেই কোনদিন পারবো নাকি জানি না। তবে আপনার চোখে অন্তত ঘোরা হলো, এইবা কম কী !

তারেক অণু এর ছবি

আপনের ঘটনা কি, পেরুর পোস্টটাতে কোন মন্তব্য নাই !

রেডি হন, হিমালয় যেতে হতে পারে--- পরে জানাচ্ছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি তো নেপাল যাচ্ছেন অক্টোবরে ।

কড়িকাঠুরে

তারেক অণু এর ছবি

জানলেন কি করে অ্যাঁ

অতিথি লেখক এর ছবি

দেঁতো হাসি

কড়িকাঠুরে

তারেক অণু এর ছবি

উত্তর পেলাম না ইয়ে, মানে...

অতিথি লেখক এর ছবি

ওক্কে-
শরীফ ভাই'র ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে ।

কড়িকাঠুরে

তারেক অণু এর ছবি

হে হে্‌, কেবল পিলান ! কত পিলান এমন আমার! ঠিক হয় নি এখনো

অতিথি লেখক এর ছবি

হবে হবে-
আপনার হবে না কার হবে?(তৈল না)

কড়িকাঠুরে

তারেক অণু এর ছবি

আমি বুঝে গেছি আমার হবে না ( আবুল হাসানের কাছ থেকে ধার নিলাম চোখ টিপি )

অতিথি লেখক এর ছবি

ছোট মানুষ পাইছেন আর মষ্করা করেন । করেন ।

আমি কই- আমার হবেনা তাতে কি হয়েছে- আপনার হোক_হেলাল হাফিজ এর কাছ থেকে ধার নিয়ে, নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখলাম---

কড়িকাঠুরে

তারেক অণু এর ছবি
সৈয়দ নূর কামাল এর ছবি

পেরু ভৌগোলিক অবস্থানে বাংলাদেশ হতে সবচেয়ে দুরের দেশ, কিন্তু মানব-অন্তর সবদেশে একই। বর্ণনার ভাষা চমৎকার কাব্যিক।

তারেক অণু এর ছবি

পেরু আমার নিজের দেশ বলেই মনে হয়েছে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

রংধনুর কথা এর ছবি

অদ্ভূত।।।মনে হলো আমি গ্রামটা ঘুড়ে দেখলাম।।।চমৎকার লেখা হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

রংধনুর কথা এর ছবি

হাসি

তারেক অণু এর ছবি
 অধরা এর ছবি

আপনার পিছু হেঁটে পৃথিবীর অলিগলিতে বেড়াতে দারুণ লাগে তাই আপনার কাছে ঋণী।

তারেক অণু এর ছবি

আসুন বেড়ানো উপভোগ করি, সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

রামগরুড় এর ছবি

ইটা লইবেন নি?

ইটা রাইখ্যা গেলাম...

লন ইটা লন

তারেক অণু এর ছবি

ক্যান, টেণ্ডার দিছেন নি চোখ টিপি

Hira এর ছবি

অফিসে বসেই আজ ইনকাদের এক গ্রাম থেকে ঘুরে এলাম। ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা--

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।