পেরুর পবিত্র উপত্যকার অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝ দিয়ে বাস চলছে, মাঝে মাঝে দুয়েক জায়গায় যাত্রাবিরতি করা হল সুমহান ইনকা সভ্যতার শাসকদের কাছে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানটির গুরুত্ব বুঝবার জন্য। অদ্ভুত সেই জায়গা, শূন্যতা ভিড় করে আসছে চারদিক থেকে, দূরে আন্দেজের তুষারঢাকা রহস্যময় চূড়া হাতছানি দেয় রোমাঞ্চের, নিচ থেকে আহ্বান জানায় রূপোলী ফিতের মত উরুবামবা নদী, এখান থেকে যাবার পথে ইনকাদের বিখ্যাত পাহাড়ি শহর মাচু পিচু ছুয়ে গেছে তা। দুপাশে নানা ধরনের সবুজের আঁচড় বোলানো, মাঝে মাঝেই পাহাড়ে মানুষের উপস্থিতির চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে ফসলক্ষেত্র না হয় জীর্ণ ঘর-দোর দেখে। আমাদের রেড ইন্ডিয়ান গাইড যে কিনা প্রাচীন সেই ইনকাদের বংশধর যাত্রার ফাঁকে ফাঁকেই বয়ান করে চলেছে এই অত্র অঞ্চলের ইতিহাস, ইনকা রাজা-রানীদের কাছে এই পবিত্র উপত্যকার গুরুত্ব, নানা নগরের অবস্থান ইত্যাদি, ইত্যাদি। আন্দেজের এই উপত্যকাগুলো অতি উর্বর, এই একটাতেই প্রায় ৩০ জাতের ভুট্টা হয়, সবগুলোর নমুনা দেখালেন গাইড, সেই সাথে হয় অনেক অনেক জাতের আলু। হতেই পারে, আলুর জন্মই তো এইখানে, ইনকাদের হাতে এর পোষ মানা এবং বিস্তৃতি, অথচ এই খাবার আজ সারা বিশ্বের প্রতি দেশে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে যা কিনা ৫০০ বছর আগেও ছিল অচেনা।
পথে দেখা মিলল বিখ্যাত প্রাণী লামা এবং আলপাকার, মাংস এবং পশমের জন্য আন্দেজের অধিবাসীরা এই উট গোত্রের প্রাণীদের পোষ মানিয়েছে বহু আগেই, এখনো চলছে সেই পারস্পারিক সহযোগিতা। আলপাকার পশমের খুব কদর এই ঠাণ্ডা দেশে, শুনলাম এক কেজির দাম হাজার ডলারের উপরে! দামের গরমেই তো ঠাণ্ডা আর কাছে ভিড়বার কথা না! আর আছে ভিক্যুনা নামের ভিন্ন জাতের উটও, সেই সাথে তাদের দেখভালের জন্য ইনকা কিশোরেরা, যাদের বসনভূষণ অতীব রঙিন। মনে হয় এদের আদি বাসিন্দার রঙচঙে পোশাক খুব পছন্দ করত, ভ্রমণসঙ্গী মেক্সিকান ইসাইয়াস মায়া সভ্যতার দেশের লোক, যেখানে মায়ানদের বংশধরেরা মূলত সাদা রঙের কাপড় পড়ে, এত জেল্লা সেই শুভ্র বসনে নেই।
পেরু এক স্বপ্নের দেশ, বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বড় এই ভূখণ্ড প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে অতি সমৃদ্ধ, আছে আন্দেজের মত সুউচ্চ পর্বত, আমাজনের মত বিস্তৃত বৃষ্টিঅরণ্য, টিটিকাকার মত বিশাল হ্রদ, খাঁ খাঁ মরু, বালুকাময় সৈকত, আর ইতিহাসবিখ্যাত সব পুরাকীর্তি। এক মাচুপিচুই আছে সারা বিশ্বের কোটি কোটি ভ্রমণার্থী আর রোমাঞ্চপ্রিয়দের অবশ্যদ্রষ্টব্য গন্তব্য হয়ে, কিন্তু সারা দেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সুমহান সেই প্রাচীন সভ্যতার নানা নিদর্শন, তারই একটি আমাদের আজকের গন্তব্য- ইনকা নগরী পিসাক।
ভর দুপুরের বাসে চেপে পিসাকের সামনে পৌঁছালাম সবাই, যাত্রা শুরু হবে এখন সূর্যনগরীর অভ্যন্তরে, তার আগে জলদি পেটপুজো সারার জন্য পথের ধারের নড়বড়ে রেস্তোরাঁ থেকে রেড ইন্ডিয়ান মহিলার বিক্রি করা বড় সড় দানার ভুট্টা এবং এক ফালি চীজ হাতে নিয়ে কামড় বসাতে বসাতে গাইডের পেছনে পেছনে চললাম সবাই। এল চিলতে পাহাড়ি পথের ধারে তখন বসে গেছে ইনকাদের নানা মনোহারী দ্রব্যের দোকান, বিশেষ করে হাতে বুনানো নানা ধরনের কাপড়, সেই সাথে চরকা মত এক যন্ত্র।
এক বৃদ্ধ দেখলাম কোঁকা পাতা বিক্রি করছেন, ইনকা সম্রাট তার প্রজাদের কাছ থেকে কর হিসেবে আদায় করতেন কোঁকা পাতা! এত উচ্চতায় পাৎলা বাতাসের সাথে খাপ খাওয়াতে এই পাতার কোন বিকল্প তখন ছিল না, পিসাকের উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এগার হাজার ফুট! ইনকা দাদুর কাছ থেকে এক গোছা পাতা কিনে চাবাতে চাবাতে চললাম ত্রিমূর্তি সামনের দিকে।
কেমন নির্লিপ্ত যেন স্থানীয়রা, শত শত বছরের উপনিবেশিক শাসনের শিকার হয়ে জীবন থেকে রূপ-রস-রঙ জনে হারিয়ে গেছে তাদের, পরনে সপ্তবর্ণের ছড়াছড়ি থাকলেও তাদের মুখে আজ হাসি নেই, ঔপনিবেশিক প্রভুরা ছলে বলে কৌশলে দখল করে নিয়েছে তাদের উর্বর জমি, প্রাচীন সংস্কৃতি, বিকশিত মনন। নিজে ভূমে পরবাসী বানিয়ে ছেড়েছে ইনকা বংশধরদের, সমস্ত গ্রাম-শহর লুট করে তাদের নির্বাসনে পাঠিয়েছে পাথুরে কাঁকরময় বন্ধুর জমিতে, সেই জমিতে আক্ষরিক অর্থেই রক্ত বিসর্জন দিয়ে যখন সুজলা সুফলা করেছে দক্ষ কৃষিবিদ ইনকারা, সেই জমি জবর দখল করে আবার তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্গমতর স্থানে। এই শঠতা, গুণ্ডামি, নোংরামি চলছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে,আজো এই অস্তিত্ব দুঃখজনক ভাবে অতি উজ্জল আন্দেজের বুকে।
কিন্তু তবুও জীবন চলতে থাকে, সবকিছুর মাঝে, সেই ধারাতেই চলছে এখনকার ইনকাদের জীবন, সেই প্রাচীন সভ্যতার স্মৃতি আজ বিস্মৃতপ্রায়, শুধু এই স্থাপত্যগুলোতে হয়ত তারা স্মৃতিচারণা করে থাকে সেই অসীম ক্ষমতাশালী পূর্বপুরুষদের।
পিসাকে প্রবেশের আগ মুহূর্তেই চোখে পড়ল ফসলের ক্ষেত,দক্ষ কৃষক ছিল ইনকারা, জমি তৈরিতেও ছিল তাদের অপরিসীম দক্ষতা। প্রথমেই বড় বড় পাথর খণ্ড, তার উপর বিশেষ ধরনের ছোট পাথর খণ্ড, তার উপর কয়েক ধরনের কাঁকর, এমন বেশ কিছু স্তরের পরে সবার উপরে উর্বর মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হত নগরীর মাঝেই কৃষিক্ষেত্র। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির কৃষিকাজ তারা উদ্ধাবন করেছিল হাজার বছর আগে। এই বিশেষ ক্ষেতগুলোর উপরের স্তরের জন্য মাটি নিয়ে আসা হয়েছিল পাহাড়ের পাদদেশ থেকে, এবং সেই ক্ষেতে এখনো ফসল ফলানো হয় !
সিঁড়ি বেয়ে প্রাচীন ক্ষেতগুলো পর্যবেক্ষণের পর উপরের সুরক্ষা প্রাচীরে পৌঁছালাম সবাই, সবারই চক্ষুচড়কগাছ সামনের বিশাল পাথরের তৈরি নিপুণ নিখুঁত স্থাপনা দেখে। নানা আকারের পাথর এমন ভাবে জোড়া লাগানো হয়েছে একটি আরেকটির সাথে যে দুই পাথরের ফাঁকে পাতলা ব্লেডও ঢোকানো সম্ভব নয়!
যে ইনকারা কোন রকম ধাতব পদার্থের ব্যবস্থা জানত না তারা কি করে এবড়ো থেবড়ো পাথরখণ্ড এত চমৎকার ভাবে মসৃণ করে মাপমত বসিয়ে এমন আশ্চর্যজনক নিদর্শন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল তা এখনো রহস্যে ঘেরা। বিশালকার কিছু দরজা ছিল প্রায় ৯ ফুট উঁচু, মাপ মত বড় বড় প্রস্তর খণ্ড বসিয়ে তৈরি।
সেই সাথে ছিল তাদের বাসস্থান, সেগুলো ছাদ আর আর টিকে নেই, হিমে ঝড়ে বৃষ্টিতে লুপ্ত হয়ে গেছে প্রকৃতির মাঝেই, কিন্তু পাথুরে দেয়ালগুলো জয়গান গাচ্ছে সেই বুদ্ধিমান কারিগরদের, যাদের সৃষ্টি ভূমিকম্প আর পাহাড়ি ঢলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে টিকে আছে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
এবং পাহাড়ের শীর্ষে অবস্থিত নগরীতে এখনো কাজ করেই চলেছে তাদের জলসরবরাহ ব্যবস্থা!
আর কি সুষম ভাবেই না পাথরগুলো বসিয়েই তৈরি হয়েছে বিশাল সব ফটক, উচ্চকণ্ঠে জানান দিচ্ছে ইনকা স্থপতিদের কীর্তির মহিমা।
এছাড়া আছে সূর্যমন্দির, নগর সেচ ব্যবস্থা এবং ইনকা গোরস্থান, কেবল এক ঘনীভূত রহস্য চারিদিকেই বিরাজমান এখনো। আমার কেবল মূক দর্শক, যারা অবগাহন করেই চলেছি এই বিস্ময়রাজ্যে। সীমানা প্রাচীরের সামনে দাঁড়ালে ধাপে ধাপে পাহাড়ের পাদদেশে নেমে যাওয়া শস্যক্ষেত্রগুলোকে পাখির ছড়ানো ডানার মত মনে হয়, হয়ত এই মিল মাথায় রেখেই এই এলাকার এক বিশেষ পাখি পিসাকার ( Partridge) নামেই শহরের নামকরণ করা হয়েছিল পিসাক।
সম্ভবত ১৪৪০ সালে ইনকা সম্রাট পাচাকুটির রাজত্বকালে এই বিস্ময় শহর নির্মিত হয় কিন্তু মাত্র শখানেক বছরের মাঝেই এর পতন ঘটে দখলদার লুটেরা স্প্যানিয়ার্ডের আক্রমণে। কিন্তু পতন ঘটে নি তাদের ইতিহাসের, শৌর্যের। আজো আধুনিক মানুষেরা নির্বাক হয়ে উপলব্ধি করবার চেষ্টা করে তাদের সেই রহস্য।
শহরের চারদিকেই উচু উচু পাহাড়, আন্দেজের তুষার জমা হিমের আলয় থেকে অবশ্য খানিকটা দূরে, সবুজের ছোঁয়া আজো বিরাজমান। এমন এক পাহাড়ের মাঝে দেখি মৌচাকের মত খোপ খোপ ধরনের দেয়াল, দূর থেকে উত্তর আমেরিকার হোপি ইন্ডিয়ানদের আবাসের মত মনে হয়, সেই দিকেই নিয়ে গেল ইনকা গাইডা, জানাল- এই সেই সমাধিক্ষেত্র, সাধারণ ইনকাদের কবরস্থ করা হত এখানেই, আর রাজাদের জন্য ছিল পবিত্র উপত্যকার মাঝে গোপনীয় কোন স্থান, রাজকীয় মৃতদেহ মমি করার প্রচলন ছিল ইনকাদের মাঝে, তবে সেই পদ্ধতি মিশরীয়দের চেয়ে খানিকটা আলাদা ( টিনটিনের মমির অভিশাপ এবং সূর্যদেবের বন্দীর কথা মনে পড়ছে নিশ্চয়ই!) ,
এই বিশেষ সমাধিক্ষেত্রে শুনলাম হুয়ানাকা গোত্রের ইনকাদের শেষ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করা হত, এখনো ফি বছরের সেপ্টেম্বরে অনেক ইনকা তীর্থযাত্রীদের মত এখানে আসেন, অন্য সময়েও পথ ভুলে আসা কেউ রেখে জানা এক তোড়া বুনো ফুল, জানিয়ে দেন পূর্ব পুরুষদের- আমরা তোমাদের ভুলব না !
ঠিক কি কারণে পিসাক নির্মাণ করেছিলেন ইনকা সম্রাট পাচাকুটি তা অবশ্য পরিষ্কার নয়, হয়ত পবিত্র উপত্যকায় দখল বজায় রাখার জন্য, হয়ত রাজধানী কুজকোকে অন্য জাতিদের আক্রমণ থেকে রক্ষার করার জন্য এটি চেকপোস্ট হিসাবে ব্যবহার করা হত। পিসাক ইনকা সাম্রাজ্যের সাথে যেখানে চির হরিৎ বৃষ্টি অরণ্য মিলেছে সেই সীমান্তেই অবস্থিত, তাই হয়ত সীমান্ত দুর্গ হিসেবে এর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
সূর্য দেবতা ইনতির ( Inti) মন্দিরে অবশ্য যাওয়া গেল না, বেদির সামনে দাড়িয়ে মুখে অনুভব করা গেল না পৃথিবীর মানুষের মনে সবচেয়ে দীর্ঘকাল ঈশ্বর রূপে রাজত্ব করা সূর্যের পরশ, কারণ কিছু তস্কর সেই প্রাচীন উপাসনালয়ের অংশ বিশেষ চুরি করে নিয়ে গেছিল বছর কয় আগে, এখন পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে বেদিতে যাওয়া! হতভাগা অর্থলোভী তস্করকে শাপশাপান্ত করতে করতে ফিরলাম সবাই মূল ফটকের দিকে। সেখানে লর্ড অফ দ্য রিংসের সেই বাজ পোড়া গাছের জমজ ভাইটির নিচে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিতে হল ক্লান্ত পায়ের পেশীগুলোকে, আড্ডা চলল ইনকা সভ্যতা আর আন্দেজের নানা রহস্য নিয়ে ভুট্টা খেতে খেতে।
বিমুগ্ধ চিত্তে পিসাকে স্বল্পক্ষণ অবস্থানের সময় পেরিয়ে গেলে আবার গাইডের চিৎকার বাসে চেপে বসলাম সবাই, এবারে গন্তব্য প্রাচীন ইনকা রাজধানী- কুজকো!
( লেখাটি সুপ্রিয় তাপস শর্মার জন্য, শুভ জন্মদিন তাপস দা, সুখে থাক সবসময়!)
মন্তব্য
অসাধারন অণুদা। অন্য সব লেখার মত এটিও এক টানে খতম। এখন ইয়োরপে আছি, তোর সাথে টক্কর দেয়ায় চেষ্ঠায়, হা: হা: ।
জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইটালি আর ফ্রান্সের পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তোর সাথে খুব তাড়িতাড়ি দেখা হবে মনে হচ্ছে!!!!
সাবাশ, বাচ্চা বাঘ!
facebook
অসাধারণ টান টান লেখা দারুন এক সভ্যতা নিয়ে!
পাথুরে স্থাপত্য আসলেই বিস্ময়কর!
- ১৪৪০ এ এরা ধাতব পদার্থের ব্যবহার জানতোনা?!
আলপাকার, ভিক্যুনা কে দেখতে পেলে ভাল হত।
অন্য লেখায় আছে কিন্তু !
ধাতবের ব্যবহার ছিল না মায়া, ইনকাদের।
facebook
কত কত পুরাতন সভ্যতার কথা শুধু ইতিহাসেই পড়েছি। আর আপনি স্বশরীরে সে সব স্থান ভ্রমণ করছেন। অবশ্য আপনার দেওয়া ছবি ও লেখার গুণে আমরাও অনেকটা একাত্মতা অনুভব করতে পারি।
ধন্যবাদ, ভাল থাকুন। আর আমাদেরকে এভাবেই সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়ান।
শুভেচ্ছা, আশা করি জানুয়ারিতে দেখা হবে আপনার সাথে।
facebook
আচ্ছা পাথরগুলো একটা আরেকটার সাথে যে গেঁথে আছে এত শত বছর ধরে তার রহস্যটা কী? পাথরগুলো কি একে অপরের সাথে সিমেন্ট বা চুন-সুরকি জাতীয় কিছু দিয়ে লাগানো? কবে যে যাবো?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
তাদের নির্মাণ সামগ্রী, মনে হয় আঠালো কাদা দিয়ে তৈরি সিমেন্টের মাধ্যমে।
চলেন যাইগা, মেজাজ খারাপ হয়ে আছে, গেলবার নাজকা যাওয়া হয় নি, তবে এইবার গেলে অনেক দিন হাতে নিয়ে যেতে হবে। সতর্কীকরণ--- মাচু পিচু সর্বসাধারণের জন্য আর বেশীদিন উম্মুক্ত নাও থাকতে পারে।
facebook
আমার কি আপনার মত সে সৌভাগ্য আছে? পড়ে আছি জঙ্গলের কিনারে। চারিদিক মৌন হয়ে আছে এখানে। বরং আপনিই ঘুরে বেড়ান। আর লিখুন। আমরা শব্দ মাধ্যমে ঘুরে ফিরে আসি দশ-দিক।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
নদীর এপার কহে ছাড়িয়ে নিঃশ্বাস! সৌভাগ্য নিয়ে এখন আর তর্ক না করি, বরং আপনি থাকতে থাকে আফ্রিকার ঐ অঞ্চলে একটা বড় পিলান করেন, চলে আসি দিন কয়েকের জন্য
facebook
এরপর গেলে আমারে সাথে নিয়েন প্লিজ লাগে।
কোন দিকে?
facebook
পথের ধারের বুনোফুল দেখে মনটা কেমন করে উঠল।লেখা -বর্ণনা-ছবি যথারীতি
বুনো ফুল কিন্তু কবরস্থানে ছিল
facebook
যথারীতি চমৎকার লেখা ও ছবি!
আপনাকে সচলায়তনে পাওয়ার পর থেকে জীবনে আফসোসের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
যতদূর জানি ইনকারা চাকার ব্যবহার ও জানতো না। অথচ তারপরও কী অসাধারণ সভ্যতা গড়ে তুলেছিল তারা!
তবে তারা পরিবহনের কাজে লামাদের ব্যবহার করত, কিন্তু মায়াদের তেমনটিও ছিল না !
facebook
চাকার ব্যবহার না জানার পেছনে মনে হয় সমতল ভূমির অপ্রতুলতার খানিকটা ভূমিকা ছিল।
কিন্তু মায়ানরা জঙ্গলে থাকলেই অ্যাজটেকরা থাকত সমতলের জলাতে।
facebook
অ্যাজটেকরা তো ধার্মিক ও যুদ্ধবাজ ছিল। দখল করে নিলেই পারতো। সেই তুলনায় মায়ানরা অনেক বেশি বিজ্ঞানমনস্ক ছিল।
অ্যাজটেকরা যুদ্ধবাজ ছিল কোন সন্দেহ নাই, কিন্তু তাদের বিজ্ঞানও ছিল দুর্দান্ত, তেওতিহুয়াকান তাদের অনন্য কীর্তি। মায়ারাও কিন্তু ধর্মবাজ হিসেবে পিছিয়ে ছিল না।
অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের নিয়ে লেখা দেন না! গতকাল বুনিপ নিয়ে নতুন করে পড়লাম, কি দারুণ।
facebook
অসাধারন অনু দা। খুব ঘোরাঘুরির উপরে আছেন মনে হয়। একেবারেই অজানা বিষয় দেখলে বা জানলে যেমন চোখ বড় হয়ে যায় আপনার এই লেখাটিও ঠিক তাই। শুধু আফসোস এই অপরুপ সৌন্দর্য আপনি একাই ভোগ করছেন।
ভালো থাকবেন সবসময়।
নাহ, এগুলো তো জানুয়ারির বর্ণনা, সামনে জানুয়ারির আগে উদ্দামতা চলছে না কেবল টুকটাক ঘোরা-
facebook
অনেক তো হৈল, এইবার ঘুরাঘুরি বাদ্দিয়া ঘরে জায়নামাজে বৈসা ক্বলবের জিকির করেন. এহুদি নাছারাদের দেশে আর কত?
কিঞ্চিত অফ টপিক: অণু ভাই আপনে হেলসিংকি তে ঘর ভাড়া দেন কেন কন্দেহি? মিয়া ঘরে কখন থাকেন এইটাই তো ধর্তার্লামনা.
..................................................................
#Banshibir.
ঘর নাতো , বাসা ভাড়া
নাছারা না তো, ফিনল্যান্ড তো জানতাম নাস্তিকদের দেশ !
facebook
নাউজুবিল্লা মিন জালিক, আস্তা দেশটাই নাস্তিক? নাছারার থেকেও তো খারাপ দেখি. আপনে তাবলিগ জমাত খুলেন দিকি, দরজায় দরজায় গিয়া দাওয়া দেন. অশেষ নেকি পাইবেন.
..................................................................
#Banshibir.
আমার লাগবে না, এমনিতেই আছে, ছাগু আসে দেশে দেশে----
facebook
ভালো পাইলাম অনেক।
অট: বলিভিয়া নিয়ে একটা লেখা দেয়ার(লেখার) কথা ছিলো। অপেক্ষায় আছি, জানান দিলাম। (http://www.sachalayatan.com/tareqanu/44570
৪নং মন্তব্য দ্রষ্টব্য)
একটা লেখা ছিল বটে, http://www.sachalayatan.com/tareqanu/43299
পরে আরো অন্তত একটা লিখব---
facebook
অসাধারণ।
আলুর ব্যাপারটা পড়ে অবাক হলাম। বাংলাদেশীদের/ দক্ষিণ এদেশীয়দের খাদ্য তালিকার অপরিহার্য উপাদান আলুর এদেশীয় বয়স মাত্র ৪০০-৫০০ বছর।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
না না, মাত্র ২০০ বছর, ইংরেজদের মাধ্যমে আলু এসেছে ভারতবর্ষে, আর এখন হিমালয়েও আলু ছাড়া চলে না! ব্রিটিশরা অনেক চেষ্টা করেছে আলুর মত আরেকটা খাবার আবিস্কারের, রুটিফল দিয়ে প্রচেষ্টা চলেছিল, কিন্তু ফ্লপ।
এমন অনেক ফসল আছে, টম্যাটো আর মরিচ এসেছে মেক্সিকো থেকে।
facebook
কচুরিপানাও এসেছে দঃ আমেরিকা থেকে।
****************************************
হ, ব্রাজিল থেকে, পেঁপেও।
facebook
আপনি আসলে মানুষ না/মানুষগুলা অন্যরকম।
লাগলে আপনার কিচ্ছু হবেনা।
কাক্কেশ্বর কুচকুচে
মানুষগুলা অন্যরকম মানে !
facebook
মানুষরা আমার মত,আপনার লেখা ছবি পইড়া স্বপ্নে এইসব জায়গায় যায়
আজকের স্বপ্ন কালকের বাস্তব, স্বপ্ন দেখি সবসময়ই- দেখে যাচ্ছি নিরন্তর--
facebook
আমার স্বপ্ন কিন্তু আপনার মত হওয়া
হ আর কাম নাই? পালান -
facebook
কোন জবাব নেই, অণু ভাই! গোগ্রাসে গিললাম। বরাবরের মত ছবিগুলো লেখার আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ, তবে ক্যাপশন থাকলে ছবিগুলোর স্থান-কাল আরও বেশি করে হৃদয়ঙ্গম করা যেত হয়ত।
মনে পড়ল, আমাদের দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের কথা! প্রায়ই চাকমাসহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়, উচ্ছেদ করা হয় সংখ্যাধিক্যের জোরে!
কুজকো দেখার জন্য
অনেক অনেক ভূখণ্ডেই এই অবস্থা---
facebook
অসাধারন! খুব সুন্দর।
-রু
facebook
ইদানিং আমি আর ছবিগুলো তেমন খেয়াল করে দেখি না। লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ি। ছবি তো সারাজীবন ভালো তুলেছেন সেটা জানেন কিন্তু এতো অপূর্ব সুন্দরভাবে সভ্যতার ইতিহাস আর কেউ তুলে ধরে না অণু ভাই। হিংসা করি আর যাই করি আমি আপনার অনেক বড় ভক্ত হয়ে গেছি।
খুব ভালো লেগেছে, খুউব!
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
ছবিগুলো খেয়াল করেন না মানে _???
facebook
মানে হচ্ছে আপনি ঢ্যাং ঢ্যাং করে সব জায়গা ঘুরে বেড়াচ্ছেন এটা আমি একটু কম কম দেখতে চাই এখন আপনাকে হিংসা করতে চাই না এই জন্য। লেখাগুলো মনে হয় বেশি ভালো হয়ে যাচ্ছে এটাও কারণ হতে পারে। আসল ঘটনা আমি জানি না
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
এখন থেমে আছি, রিলাক্স!
facebook
কোনও সভ্যতাকে দেখা মানে আমার কাছে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোকে খুঁজে পাওয়া । আপনার ছবি আর বর্ণনায় সরাসরি ইনকা সভ্যতার সেই সময়টা ভেসে উঠলো। উঠতেই হবে না হলে উত্তরসূরিদের জানবো কেমনে।
ধন্যবাদ, খুব সুন্দর বলেছেন। (গুড়)
facebook
পাপলু বাঙ্গালী-
------নাম ভুলিয়া গেছিলাম না দিলে কেমন মরা মরা লাগে
facebook
হাতে বোনা ছোট ছোট ক্রাফটগুলা কি কালারফুল, আপনি কিছু কেনেন নাই ওখান থেকে। চমতকার আর ও একখান পোস্ট।
কিনেছিলাম মনে হয় হাতে ঝলাবার ব্রেসলেট দুই খান, কেনাটা উছিলা, তাদের ছবি তোলাটাই ছিল মূল কারণ।
facebook
এক নিঃশ্বাসে পড়ে গেলাম অনু ভাই। সেইরকম লাগলো।
facebook
---
অনুপম প্রতীপ
facebook
ভাই আপনি এবার সত্য করে কন তো, আপনি কি ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়ায় পড়ছেন? ক্যামনে সম্ভব এত ঘুরা?
ঐ এক জায়গা বাকী আছে, দেশে গেলেই বিমান বন্দর থেকে সরাসরি ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়া যাব-
facebook
যাইবেন নি !
facebook
ইতিহাস, প্রত্মতত্ত্ব, বিজ্ঞান, ভ্রমন – মারাত্মক লাগল।
facebook
ছোট বেলায় ভাত খাবার সময় যেদিন চিংড়ি থাকত, ওটা কে আলাদা করে রাখতাম, সব শেষে মজা করে খাব বলে। আপনার লেখা দেখলেও তেমনি রেখে দিই সব শেষে মজা করে পড়ব বলে। তাই আমার মন্তব্যটা সবসময় নীচে পড়ে যায়।
লেখা চিংড়ির মতই মজা।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
কি সুন্দর করে মনে ভাব প্রকাশ করেন, ধন্যি আপনার কিবোর্ড
facebook
ও হ্যা, তাপস'দা শুভ জন্মদিন। গেল কই সে? পোস্ট জুড়ে তার কোন আনাগোনা নেই। যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন সবসময়।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
লজ্জা পাইছে ! ওদিকে নাকি খুব বৃষ্টি---
facebook
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
facebook
"আমাদের রেড-ইন্ডিয়ান গাইড যে কিনা প্রাচীন সেই ইনকাদের বংশধর"
রেড ইন্ডিয়ান শব্দটি কিন্তু এখন আক্রমণত্বক (offensive)টার্ম হিসেবে পরিগণিত হয়, ঠিক যেমনটা হয়'নিগ্রো'শব্দটি। এক্ষেত্রে বিকল্প শব্দ হিসেবে আসতে পারে: আদিবাসী (Indigenous people), নেটিভ অ্যামেরিকান (আমেরিকা বা মেক্সিকোর ক্ষেত্রে), কানাডীয় অ্যাবওরিজিনাল জনগোষ্ঠী (কানাডার ক্ষেত্রে) ইত্যাদি। আসলে এগুলোর সঠিক পরিভাষা কি হবে ঠিক বলতে পারছিনা, তবে টার্ম হিসেবে 'রেড-ইন্ডিয়ান' শব্দটি ব্যবহার না করাটাই বাঞ্ছনীয়।
যেকোনো ভুল বানানের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
এই শব্দটি আমিও ব্যবহার করতে ইচ্ছুক না, কিন্তু বিকল্প না পাওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়েই ব্যবহার করছি, কোন এক লেখক যেন তাদের লাল ভারতীয় বলে বাংলা করেছিলেন, সেটিও খুব অপছন্দ হয়ে ছিল। নেটিভ আমেরিকানের সঠিক বাংলা কি হতে পারে?
facebook
চমৎকার!
facebook
এই পাথরের দেয়াল গুলা দেখলে সব সময়ই অবাক লাগে। এমন নয় যে সবগুলো এক মাপে কাটা, এবড়ো খেবড়ো আকার কিন্তু সুঁই গলবার ফাঁক নেই। কেমনে সম্ভব? আচ্ছা! এমনকি হতে পারে যে একটা কাছাকাছি আকারের পাথর নিয়ে ঐ খাঁজের গায়েই ঘষতে থাকা হয় যতক্ষণ না ঐ খাঁজের মাপ মত হচ্ছে। দু'টো পাথরই তাহলে ক্ষয় হয়ে মাপমত হয়ে যাবে।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
বলা হয়ে থাকে , পাথরগুলো আগে একটা আরেকটা উপরে বসানো হত, তারপর অনেক অনেন দিন ধরে আচ্ছাসে অন্য পাথর দিয়ে ঘসা হত যেন মসৃণ হয় বাহিরের দিকটা। দুই পাথর জয়েন্টে সিমেন্ট জাতীয় কাঁদা থাকার কথা---
facebook
আপনে পাথরের জয়েন্টে কাদা সিমেন্ট দেখছেন? ছবি ভিডীও দেখে আমার মনে হইছে কোন কাদা সিমেন্ট এর বালাই নাই।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
নাহ, আমি বুঝতে পারি নি খালি চোখে, কিন্তু কোথায় পড়েছিলাম এই নিয়ে--
facebook
****************************************
জটিল!
facebook
কী আর কমু! লোকজন ধরতে পারলে ১৫ নম্বর ছবিটার পোজেই আপনাকে ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় করিয়ে দেবে...
আপনেও কি আমজনতার দলে ?
facebook
আহ, সেই প্রাচীন ইনকা সভ্যতা। কবে যে যাওয়া হবে !! তবে যাব অবশ্যই তখন আমিও এরকম হাত উঁচু করে ছবি তুলে দাঁত কেলাব !! হে হে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অক্কে! ডান!
facebook
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ইয়ে, মানে পারলে খচ্চরের পিঠে বসে একটা ছবি !
facebook
খচ্চরের পিঠে তো চড়ছি, রোটাং পাস এ উঠার সময়। বড়ই ভালো প্রাণী, ঠান্ডা সুস্থির, ঘোড়ার মতো দাপাদাপি করেনা।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
লেখা দিয়ে ফেল রে ভাই !
facebook
#ইনকাদের গোরস্থান থেকে বের হলেন কিভাবে?সত্যি দারুনস!
হা হা, ঢুকি নাই ভিতরে, অনুমতি ছিল না!
facebook
সিরিয়াসলি পেরুতে না গিয়ে মরতে চাইনা,খালি গ্র্যাজুয়েশন শেষ হোক বের হয়ে পড়বো দুনিয়া ভ্রমণে।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন