টেবিল মাউন্টেনে আরোহণ

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৮/২০১২ - ৬:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

DSC04100

দূর থেকে দেখে মনে হল এক সিংহ বসে আছে, চিড়িয়াখানার চোদ্দ শিকের ভিতরে দেখা বেড়ালের কাকাতো ভাই নয়, সত্যিকারের বুনো পশুরাজ, কেশর ফুলিয়ে রাজসিক ভঙ্গীতে বসে তাকিয়ে আছে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে নিচের মানববসতির পানে। নট নড়নচড়ন, শিকার ধরার পূর্ব মুহূর্ত বুঝি? আসলে তা নয়, সিংহাকৃতির অবয়বটি এক জড়পাথরের স্তূপ, দক্ষিণ আফ্রিকার বিখ্যাত পর্বত টেবিল মাউন্টেনের একটি অংশমাত্র, এমন কিছু বাঁধা এড়িয়েই পৌছতে হবে কিংবদন্তীর সেই পর্বতের চুড়োয়, বিশ্বের বিস্ময়ের শীর্ষ দেশে।

IMG_4532

যাবেন নাকি? তাহলে প্রথমেই শর্টস পরে নিন, সাথে মাথায় পানামা হ্যাট, সাথের ঝোলাতে পানীয়ের বোতল ( আপাতত কোমল পানীয়, যেহেতু আপনি ক্যাপ্টেন হ্যাডকের সাথে যাচ্ছেন না ), আর সম্ভব হলে একটা লাঠি, যাতে সময়ে- অসময়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো যায়।

526663_10151634585780497_2009781254_n

দাড়িয়ে আছি টেবল মাউন্টেনের পাদদেশে, সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশের তো বটেই, বলা যায় না হয়ত সারা বিশ্বেরই সুন্দরতম মহানগরী কেপটাউনের বেলাভূমিতে, যা আবার ছুয়ে গেছে দুই দুইটি বিশাল জলরাশি- ভারত মহাসাগর এবং অতলান্তিক মহাসাগর। অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক আশ্চর্যটি, মনে হচ্ছে শহরের গায়ে হেলান দিয়ে আছে বিশাল এক দেয়াল, আকাশ ছোঁয়া নিরাপত্তা বলয়। পর্বতের শরীরে অবশ্য তুষারের চিহ্নমাত্র নেই, তারচেয়েও অবাক করা বিষয় হচ্ছে এর শীর্ষে কোন এবড়ো থেবড়ো চূড়া নেই, বরং পুরো মাথা সমান উচ্চতার, কোন দানব যেন তার তরবারি দিয়ে সমানে মাপে কেটে রেখেছে!

DSC04092

DSC04149

অবশ্য একবার দৃষ্টিপাত করলেই বোঝা যায় কেন এর নাম দেয়া হয়েছে টেবিল মাউন্টেন, নিচ থেকে মনে হচ্ছে উপরটা বেশ সমতলই হবে, ছড়ানো মালভূমির মত, যেমনটা আছে ভেনিজুয়েলার তেপুইয়ে ( যা থেকে স্যার আর্থার কোনান ডয়েল তার বিখ্যাত হারানো পৃথিবী বইখানার প্লট খুঁজে পেয়েছিলেন)।

DSC04148

মূল টেবিল মাউন্টেনের এক পাশে এই পর্বতেরই অংশ লায়ন্স হেড ( সিংহমাথা পর্বত) এবং অন্য পাশে ডেভিলস পিক ( শয়তানের চূড়া) দেখা যায়,

IMG_4655

DSC04171

এমনিতেই পর্বতটি খুব একটা উঁচু নয়, উচ্চতা মাত্র ১০৮৬ মিটার ( ৩,৫৬৩ ফুট) কিন্তু এটি বিখ্যাত হয়েছে এর অবস্থানগত সৌন্দর্য, ভিন্ন ধরনের আকৃতি এবং নেলসন ম্যান্ডেলার জন্য, মহান মানুষটিকে প্রায় দুই দশক যে কারাগারে আটক রাখা হয়েছিলে সেই কুখ্যাত রোবেন আইল্যান্ড কেপ টাউনের কাছেই সমুদ্রের মাঝে অবস্থিত এক দ্বীপ, যেখান থেকে তিনি প্রতিদিন ভিন্ন ধরনের আবেগ নিয়ে দেখতেন টেবিল মাউন্টেনকে, মনে করতেন ঐ তো তার স্বদেশভূমি, বর্ণবাদী, অত্যাচারী, উপনিবেশিকরা তার কাছ থেকে সময়, পরিবার সবকিছুই কেড়ে নিয়েছে কিন্তু কেড়ে নিতে পারেনি তার বাবার ভূমি, সেই পর্বতের পানে চেয়েই শপথ নিতেন, দেশপ্রেমের মন্ত্র জপতেন সবসময়ই- একদিন আমি ফিরে যাব ঐখানে।

IMG_4675

কেপ টাউনে পৌঁছালাম ২০১০ সালে জুলাইর এক দিনে, সেখানে তখন শীতকাল, যেহেতু দক্ষিণ গোলার্ধের ভূখণ্ড, বেশ মন খারাপ করে, আগের দিন পোর্ট এলিজাবেথে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেও প্রিয় ফুটবল দল ব্রাজিল কে জিতাতে পারি নি, কমলা জার্সির ওলন্দাজরা জিতে গেছে ফিলিপ মেলোর দুই- দুইটা ভুলের সুবাদে, এখন হল্যান্ড- উরুগুয়ের মাঝের সেমি ফাইনাল দেখতেই আগমন এই সত্যিকারের তিলোত্তমা নগরীতে। হায় ব্রাজিল! হায় ব্রাজিল! ( এইবার স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রির অনুমতি ছিল, প্লাসিকের গ্লাসে অবশ্য। হঠাৎ নাকে এসে লাগল গাঁজার গন্ধ, নিজে না খাবার জন্যই হবে- সিগারেট আর গাঁজার গন্ধ অনেক দূর থেকে টের পেয়ে যাই, এই বিশ্ব দরবারে কে গাঁজা টানার সাহস দেখাচ্ছে, চারিদিকে নিরাপত্তারক্ষীদের ভিড়! পরে শুনলাম বা দূর থেকে কিছুটা বুঝলাম তাদের দুইজনকে বাহির করে দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়াম থেকে, পরদিন খবরের কাগজে দেখি তাদের একজন মহাপরিচিত- প্যারিস হিলটন! পুলিশ বলেছিল জরিমানা বা জেল, সে সুন্দর জরিমানা দিয়ে সাথে বান্ধবী নিয়ে দলছুট হয়ে গেল! )

IMG_4530

যাক, শহরের ঢোকার পরপরই যখন পর্বতখানা দৃষ্টি আড়াল করে সটান দাড়িয়ে পড়ল, চিন্তা করে ফেললাম এযাত্রা একটু গেছো বাবা হতেই হয়, চড়েই দেখি চুড়োতে! কিন্তু কোনটাতে- যেহেতু মূল পর্বতের সাথে সাথে সিংহমাথা আর শয়তানের চুড়াকেও বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে দূর থেকে। হোস্টেলের রিসেপসনিস্ট এলিজাবেথ দেওয়া এবং সাথের লোনলি প্ল্যানেট ঘেঁটে পাওয়া তথ্যগুলো জোড়া লাগিয়ে বোঝা গেল ছোট্ট মরিচের ঝাল বেশী, মানে উচ্চতায় একটু কম হলেও একেবারে নিরীহ নির্বিষ নয় কিন্তু টেবিল মাউন্টেন, এখানেও আরোহণ করতে যেয়ে অতীতে ঘুমের দেশে চলে গেছে রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষ। আর বিপদ হচ্ছে এখানে ওঠা অপেক্ষাকৃত সহজ, কিন্তু নামার পথ এত বেশী যে প্রায়শই মানুষ পথ ভুলে পর্বতের গভীরে বা পাদদেশের অন্য পাড়ের জঙ্গলে হারিয়ে যায় প্রায়ই!

IMG_4672

কিন্তু সহজ উপায়ও আছে- কেবল কার! মানে মানে কেবল কারে টিকেট কেটে চেপে বসলেও সোজা উপরে চলে যাবেন কয়েক মুহূর্তেই, যদি না ঝড়ো হাওয়ার কারণে সেদিন কেবল কার যাত্রা বন্ধ না থাকে, এবং আপনার কয়েক হাজার লোকের পিছনে অপেক্ষা না করতে হয়! এইটা কোন কথা হইল, হিমালয়-আল্পস ঘুরে এসে এই হাজার মিটারের পর্বতে উঠব যন্ত্রের সাহায্যে, অসম্ভব! সাথে খেলা দেখতে সঙ্গী হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গে বসবাসরত তরুণ আব্দুল মজিদ ( সেই সময়ই দক্ষিণ আফ্রিকায় দেড় লক্ষ বাংলাদেশী ছিল ), নিপাট সরল মানুষ, কোনদিন পর্বত-সমুদ্রের ধারে কাছে যান নি, আমার ফুঁস মন্তর শুনে টগবগিয়ে উঠে বললে- ভাই, রাখে আল্লাহ, মারে কে, আমি এই পাহাড়ে আপনার সাথে উঠমুই উঠমু! বললাম, মিয়াঁ এত্তো লাফায়েন না, আল্লাহ রাখলেও মারবেন আপনি নিজেই! জীবনে কোনদিন হাঁটেন নি পাঁচ মাইল, পাহাড়ের মাঝামাঝি যেয়ে বলবেন আর পারব না, তখন হবে মহাহুজ্জত, উঠাও বন্ধ, নামাও!

DSC04136

গম্ভীর মুখে মজিদের প্রশ্ন তাহলে কি করা যায় ? কিছুই করার নাই, যেহেতু হাতে সময় আছে চলেন আজ বিকেলেই সিংহমাথা পর্বতে কাছাকাছি ট্রেকিং করে আসি, তাহলেই বোঝা যাবে আপনি কেবল কারে এই পাহাড় ডিঙ্গাবেন না হেঁটে!

IMG_4671

আরো একটা বিশাল আকর্ষণ এই পাহাড়ের, এটি টেবিল মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কের অংশ এবং ইউনিসেফের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইড, এই এক পার্কেই ২,২০০ প্রজাতি গাছ পাওয়া যায় যা সম্ভবত আয়তন অনুযায়ী সারা বিশ্বে একটি রেকর্ড, সেই সাথে আছে কিছু স্থানীয় পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণী।

IMG_4229

IMG_4691

IMG_4685

এবং চুড়োতে পৌঁছাতে পারলে অবারিত সমুদ্র দর্শন।

DSC04163

হাত-পায়ের খিল ছাড়াতে সেই বিকেলেই পর্বতের পাদদেশে কুম্ভি ( মাইক্রোবাসের স্থানীয় নাম) করে যেয়ে সিংহ মাথার পর্বতের দিকে এগোনো শুরু হল, এটি নাকি কেপ টাউনের তরুণ-তরুণীদের কাছে চাঁদনী রাতে পিকনিকের জন্য মহাজনপ্রিয় এক জায়গা! ভরা পূর্ণিমায় সেখানে মানুষের ঠেলায় নাকি পা ফেলারই জায়গা থাকে না! আরেব্বাস, হয়ে গেছে, যে জায়গাতে সবাই পিকনিক করতে ওঠে সেখানে অ্যাডভেঞ্চার করতে যাবার কিছু নেই, বরং উপভোগের জন্য যাওয়া যেতে পারে, তাই সিদ্ধান্ত হল আপাতত পাহাড়টা ভাল মত ঘুরে দেখে পরের দিন মূল পর্বতে মানে টেবিলের মাথার সওয়ার হওয়ার চেষ্টা চালানো হবে।

IMG_4582

বেশ কঘণ্টা আস্তে ধীরে সেই চমৎকার পরিবেশে ঘোরা হল, সিংহমাথায় যাবার মূল ফটকটাও চোখে পড়ল, আর কত ধরনের যে ফুল পুরো উদ্যানে ছেয়ে আছে!

IMG_4652

IMG_4649

দূর থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে নয়নাভিরাম কিছু বাসস্থানের সাথে চোখাচোখি হল, বিপুল সাগরও যেন এসে চুমে যাচ্ছে অপূর্ব স্থানটিকে।

IMG_4573

IMG_4533

DSC04107

কিন্তু মনের পর্দায় সবচেয়ে বেশী দাগ কেটে গেছে এক অপরূপ সূর্যাস্ত, মহাসাগরের প্রান্তসীমায় যেন উধাও সূর্যদেবতা, কিন্তু তার উপস্থিতির ছাপ থেকে গেছে ছড়িয়ে থাকা মেঘমালায়, পেজা তুলোর মত ছড়িয়ে থাকা মেঘগুচ্ছের মাঝ দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে আসছে অতিপ্রাকৃত রশ্মি, তার মাঝে উড়ে বেড়াচ্ছে একাধিক হেলিকপ্টার, নিচের বিপুল জলাধারের মাঝে অবস্থিত জাহাজের উপর যেন পড়েছে বিশাল সার্চলাইটের আলো। কি অপার্থিব, কত মায়াময়! আহা, বেঁচে থাকা কতই না সুন্দর।

546156_10151576561960497_684475547_n

সূর্যের শেষ আলো উধাও হবার আগেই প্রায় পাল্লা দিয়ে শহরে নেমে এলায় বেশ তাড়াহুড়োয়, তবে তার কোন দরকার ছিল না, আসলে শেষের কয় দিন সন্ত্রাসময়,মহাঝুঁকিপূর্ণ শহর জোহান্সবার্গে থেকে মনে হয়েছিল এই দেশের সব শহরেই এমন হয়ত- সন্ধ্যে ঘনাবার আগেই ঘরে ঢুঁকে পড়তে হবে, ভর দুপুরেও একা বাহির হওয়া যাবে না, সাথের ক্যামেরা কোন সময়ই হাতে নেওয়া যাবে না, গলায় ঝুলানো তো অনেক দূরের করা, এমনকি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও এমন কোন ছাপ ফেলতে পারেনি সেখানের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। কিন্তু কেপটাউন সম্পূর্ণ অন্য এক দিন দক্ষিণ আফ্রিকার, খুবই নিরাপদ! পরে রাত একটার সময় সাইবার ক্যাফেতে গেছি, সাগরের ধারে ছবি তুলে গেছি কোন রকম সমস্যা হয় নি,এখানে দেখলাম সাদা-কালো সবাই এক সাথে কুম্ভিতে করে চলাচল করছে, যেটা অন্য অনেক শহরেই কল্পনা করা যায় না। মাটি খুবই উর্বর এই অঞ্চলের, আবহাওয়া কারণে সেরা আঙ্গুর জন্মায়, তৈরি হয় আফ্রিকার সেরা ওয়াইন। কেপ টাউন আসলেই ধরণীর বুকে স্বর্গ।

267818_10150670327060497_5119577_n

পরের দিক সকাল সকালই ভরপেট নাস্তার পরপরই শুরু হল যাত্রা, সাথের ব্যাগে কিছু হালকা খাবার, কোমল পানীয় ভরে নেওয়া হয়েছে হিসাব মত। পাহাড়ের গোঁড়ায় যেতে দেখি পথ হারাবার কোন উপায় নেই, অনেক অনেক পর্যটকদেরই শখ হয়েছে সৌখিন পর্বতারোহী হবার, প্রায় মিছিল করে চলছে তারা গিরিখাদের দিকে, আর ততক্ষণে কেবল কারের সামনে প্রায় আধা কিলোমিটার লম্বা লাইন! ঝকঝকে রোদ, মাটি বেশ লাল এখানে, ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদও বেশ রাজত্ব বিস্তার করেছে। ঝোপের মাঝে দেখা হল তিতির পাখিদের সাথে, সারা শরীরে সাদাকালো ফোঁটাওয়ালা এই পাখিগুলোকে ছোটবেলায় বলতাম চিনামুরগী। উপরে ওঠার সাথে সাথে ভূপ্রকৃতির পরিবর্তনের সাথে সাথে উদ্ভিদজগতের পরিবর্তনও চোখে পড়ল,

IMG_4713

কিন্তু আমাদের চিন্তা তখন শীর্ষে ওঠার সঠিক পথ বাহির করতেই নিবদ্ধ। আব্দুল মজিদ দেখি দৌড়ে দৌড়ে পথ চলছে, একাধিক বার ভুলে পথে যেয়ে আবার ব্লাইন্ড ক্যানিয়নে গোত্তা খেয়ে ফিরে লাইনে আসল। কি ব্যাপার ভাই, এত তাড়াহুড়ো কেন? উত্তরে বোঝা গেল, সে নিজেকে মহাফিট প্রমাণিত করতে ব্যস্ত, বলল- ভাই এক দৌড়ে পাহাড়ে উঠুম, পরের দৌড়ে নামুম!

IMG_4692

IMG_4724

একাধিকবার পথের ছোট ঝর্ণা পড়ল, কুলকুল শব্দ তুলে নিচে মহাসাগরে বিলীন হবার জন্য যাচ্ছে, তাদের সান্নিধ্যে জিরিয়ে নিয়ে ভুল চিহ্নে বোকা বনে ভুল পথে অবশ্য আমিও একবার গেলাম বটে কিন্তু হয়রানির শিকার হতে হল না এক মার্কিন তরুণীর জন্য, সেই পথে থেকে ফেরৎরত অবস্থায় সে একগাল হাসতে হাসতে জানাল- এই পথ নিচের দিকে গেছে, ভুল রাস্তা! মিলল যাত্রাপথের বন্ধু, নাম তার নাতালি, সাথে আছে বোন ফ্রানসেসকা ( আজ্ঞে আমার বোন নহে, তারা নিজেরা নিজেরা বোন, এককালে অনেক ভগ্নী পাতিয়ে ফেলেছি সারা বিশ্ব জুড়ে, আর নয় বিশেষ বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া! ), সাথে তাদের বিশালবপু পিতা মহাশয় এবং এক চাচাও হাজির! গোটা পরিবার নিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া নাকি তাদের রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে, জার্মানিতেও ছিল ( এহহে, তখন দেখা হতেও পারত), ব্রাজিলেও আসবে, আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখল ২০১৪র।

IMG_4677

আবার যাত্রা উপরের দিকে, দুঃখজনক ভাবে যতই উপরের দিকে উঠতে থাকলাম ততই রোদের তেজ কমে আকাশে মেঘের আনাগোনা বাড়তে থাকলে, এর ফাঁকেই চলল গোটা শহরের কিছু ছবি তোলার চেষ্টা। ক্যালেন্ডারে ছাপা ছবির মত সুন্দর এমন বেশ কিছু জায়গায় থেমে থেমে ছবি তোলা হল তৃষ্ণা নিবারণের সাথে সাথে।

DSC04156

দেখা মিলল কুখ্যাত রোবেন দ্বীপের, যেখানে যাবার কথা ছিল পরের দিন।

IMG_4615

ঘণ্টা দেড়েক পরে টেবিলক্লথেরা ঘিরে ধরল আমাদের, হারিয়েই গেলাম যেন তার ভিতরে। আগেই শুনেছিলাম টেবিল মাউন্টেনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যখন তখন দেখা দেওয়া মেঘেরা, তারা নাকি পর্বতটির ভীষণ ন্যাওটা, একবার সঙ্গ পেলে আর ছাড়তেই চায় না! এইজন্য তাদের নামই দেওয়া হয়েছে টেবিলক্লথ!

IMG_4754

তখন আমরা শীর্ষে পৌঁছে গেছি, গলা ফাটিয়ে হৈ চৈ করা হল, যদিও পরিবেশ ছিল ধূসর, রহস্যময়, অনেকটা লাইফ অফ প্ল্যান্টে দেখানো ডেভিড অ্যাটেনবোরোর মাউন্ট রোরাইমার মত, কিন্তু অবিরাম বৃষ্টির বদলে এখানে কেবল আদিগন্ত মেঘমালার সমাহার। আসলেই বেশ ছড়ানো টেবিলের মত জায়গাটি, বিস্তার ২ মাইলের মত, তবে একেবারে চাছাছোলা সমতল নয়, বেশ উঁচুনিচুই আছে, আর বিশেষ ধরনের ঝোপে আবৃত সমস্ত পাথুরে দেহ।

IMG_4751

DSC04151

DSC04153

IMG_4759

স্থানীয় বলতে হাইরেক্স গোত্রের কয়েকজনের সাথের দেখা হল, কিন্তু তারা মানুষদের সাথে খাতির করতে খুব একটা আগ্রহী নয়!

DSC04131

বেশ কাঁপানো ঠাণ্ডা উপরে, মাঝে মাঝেই প্রবল বেগে হাওয়া দিচ্ছে, এর মাঝে আবার শুরু হল ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি, কোনমতে কিছু ছবি তুলে ঢুঁকে পড়া হল টেবিলের একপ্রান্তের ক্যাফেতে, যেখান কেবলকার থেকে বেরিয়ে সোজা ঢুঁকে পড়ে আয়েশি ভ্রমণার্থীরা।

DSC04111

IMG_4766

DSC04118

গরম কফিতে চুমুক দিয়ে খানিকটে ধাতস্থ হবার সাথে সাথে একটি বিশেষ নোটিশ বোর্ডে যেখানে কিনা আরোহীরা স্বদেশের নাম লিখে থাকেন, সেখানে বাংলার নাম খোদাই কর হল মার্কার কলম দিয়ে। নাতালি আর ফ্রানসেসকার সাথে আবার দেখা হবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় নিলাম,

IMG_4778

এমন সময় দেখা আব্দুল মজিদের সাথে, সেই বেচারা দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বেশ ক্লান্ত, এক কোণে বিশ্রামের সন্ধানে ছিল, বললাম- চলেন, কেবল তো চড়াই গেল এখন উৎরাই!

185583_10150759183825497_1346441_n

( পোস্টটি প্রিয় লেখক, প্রিয় গায়ক অনিকেত ( তারেক আজিজ) দার জন্য। লিখে যান বরাবরের মতই বিষণ্ণতায় মোড়া কিন্তু স্মৃতিমেদুরতায় আক্রান্ত তিরতির সুখের পরশ বুলানো লেখা। যা পড়ে আমরা হতবাক হই, ঈর্ষান্বিত হই, ভালোলাগায়, ভালবাসায় আপ্লুত হই, অপেক্ষা করি পরের লেখাটির জন্য, পরের গানটির জন্য। )


মন্তব্য

অনিকেত এর ছবি

লাখো শুক্রিয়া বস!
এই অকিঞ্চিতকর মানুষের জন্যে এ এক বিশাল উপহার। এখন পর্যন্ত সচলায়তনে আমি অনেক ভালবাসা পেয়েছি। দেখা মিলেছে অনেক না-দেখা বন্ধু-ভ্রাতা-ভগ্নীর। তোমার এ লেখাটি আমার জন্যে বিশাল এক সম্মান---কোনদিন দেখা না হওয়া এক মানুষের দেয়া ভালবাসার উপহার।
জানিনা বস তোমার এই ভালবাসার যোগ্য কি না আমি। পারতপক্ষে তোমার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতেই বেশি পছন্দ করতাম আমি। সারাটা বিশ্ব টো টো করে ঘুরে তুমি অনেক আগেই আমার মাপের বাইরের মানুষ। তোমার কাছে দাঁড়ালে নিজের ক্ষুদ্রত্বগুলো বড় প্রকট হয়ে ধরা পড়ে। কিন্তু তুমি নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছ যেখান থেকে আমার আর আমাদের এই ক্ষুদ্রতাগুলো তোমাকে স্পর্শ করতে পারে না। তাই তুমিই এসে আপন করে নিলে।

আমার অনেক অনেক দোষের মাঝে সবচাইতে বড় দোষ বোধকরি আবেগপ্রবণতা।
এখন এই মুহূর্তেও ভীষনরকম আবেগাক্রান্ত।
তাই আর কথা না বাড়িয়ে তোমাকে দূরে থেকে একটা সেলাম ঠুকে বিদায় নিচ্ছি।

অশেষ ধন্যবাদ এই উপহারটির জন্য (বিশেষ করে অস্তাচলের সেই অতিপ্রাকৃত দৃশ্যটি ধরে দেবার জন্যে)।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অনিকেত'দার মন্তব্যে ঠেস দিয়ে অনেকদিন মন্তব্য করা হয়না! দিলাম ঠেস : দেঁতো হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

দেখা হবে , কথা হবে, আম্রিকা গেলে আপনার গান সামনাসামনি না শুনে ফেরত আসব ভেবেছেন !

আরে ভাই, আমরা হচ্ছি বাংলামুলুকের লোক, আবেগ আমাদের থাকবে না তো আবেগের জন্ম হইছে কাদের জন্য, আজব কথা !

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

আমরা হচ্ছি বাংলামুলুকের লোক, আবেগ আমাদের থাকবে না তো আবেগের জন্ম হইছে কাদের জন্য, আজব কথা !

হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

সত্য কি না বলেন?

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

তুমি এতদিনে ভাল করেই জেনে গেছো আমরা কারা কারা তোমার লেখা আর ছবির ভক্ত। আমি ছোট বেলা থেকেই মানচিত্র দেখতে ভাল বাসতাম। মনে আছে ক্লাস ফাইভে মানচিত্র দেখিয়ে ভূগোল স্যার জানতে চাইলেন হিয়াং সী কিয়াং নদীটি কোথায়? আমি সাথে সাথেই চীনেই উপর আঙ্গুল রাখলাম। তোমার লেখা পড়ে আমার সব স্বপ্নের জায়গা গুলো দেখা হয়ে যাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ।

আগামী সচল আড্ডায় অনিকেতের গানের আসর বসবে আশাকরছি।

তারেক অণু এর ছবি

কোন মাসে হবে? নিউইয়র্কে তো নাকি?

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

খুব সম্ভব আগামী বছর রোজার আগে বা পরে। রোজা মনে হয় জুলাই দশ থেকে আগস্ট দশ।
তোমার কখন আসার সুবিধে, তাহলে সে অনুযায়ী। তুমি দেখ ইউরোপ থেকে আর কেও আসে কিনা। আগামী বছরের প্রথম দিকেই আমরা প্ল্যান করে ফেলব। হবে নুইইয়র্ক এ আমার বাসায়।

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

@ অনু, আগামী বছর রোজার আগে বা পরে সচল আড্ডা হতে পারে। অর্থাৎ জুলাই এর দশ এর আগে বা অগাস্টের দশ এর পরে। অথবা তুমি যখন আসতে পারবে। ইউরোপ থেকে আর কেও কি আসবে? প্ল্যান করছি নিউইয়র্ক এ আমার বাসায়।

তারেক অণু এর ছবি

অগাস্টের পরে হলে আশা করি আসতে পারব, তাহলে অটাম ইন নিউইয়র্ক ও হয়ে যাবে দেঁতো হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার ফটোশপের হাত আসলেও মারাত্মক। আপনি কোন ভার্সন ব্যাবহার করেন? অ্যাতো দাম এইটার, আপনার নিশ্চয়ই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায় নতুন ভার্সন আসলে! চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

ধুর মিয়াঁ, আমি ফটোশপের ফ - ও জানি না, জায়গাটাই এমন ছিল, আমার উচিত ছিল ফিল্টার ব্যবহার করা।কিন্তু নাই যে।

আর এখন ম্যাকের নিজস্ব একটা প্রোগ্রাম আছে, সেটা অনেক সহজ তো , ঐটাই ব্যবহার করি, নাহ ছবি এডিটিং শিখতেই হবে, কিন্তু মনে হয় ব্যপক পরিশ্রমের কাজ, ভাই ডি!, আচ্ছা, আপনার আস্তানা বন থেকে কত দূর?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

কী আপনার বিনয়! আপনার মহৎ পরাণ! অ্যাতো চমৎকার সব ছবি ফটোশপে বানিয়েও বলেন যে ফটোশপ পারেন না! আবার ফিল্টার না কী কী জানি নাই! ওইসব থাকলে তো আরো চমৎকার ছবি বানাইতে পারতেন! চোখ টিপি

আমার বাড়ি বন থেকে প্রাগের দিকে জার্মানীর একেবারে উল্টো পাশে (৪০০ কিমি +)! বিসমিল্লা বলে লাফ দিলে প্রাগে যাওয়া যায়! গতবছর আইবেন কইছিলেন। আইলেন্না!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

তবেরে ব্যাটা আর্য, গরীব পাইয়া মস্করা! গড়াগড়ি দিয়া হাসি এতক্ষণে বুঝলাম!

ছরিরে ভাই, এই বছর ফুল প্যাক, সামনে মাসে লন্ডন আসেন, ডকিন্সকে না হলেও কৌ কে দেখতে পারবেন! দেখি আপনি সামনে বছর থাকলে দেশ থেকে ফিরে ৩ দিনের জন্য হলেও আসব পাক্কা।

অতিথি লেখক এর ছবি

গরীবের আবার একখান ম্যাক ও আছে, সুযোগ পাইয়া শোনাইতে ভুলে নাই।। চোখ টিপি

অটঃ প্রশ্নঃ যেদিন সচলে নতুন লেখা আসে না, সেদিন সবচেয়ে মন খারাপ থাকে কার!?
অটঃ উত্তরঃ দৈনিকদার।। খাইছে

অণু ভাই, আপনার সাথে সাথে আমাদেরও যে কতো যায়গা ঘোরা হয়ে যায়..।।
আপনার সবগুলো লেখাই পড়া হয়, আলসেমিতে মন্তব্য করা হয়ে ওঠে না। মন খারাপ

আবছায়া

তারেক অণু এর ছবি

আপনার নিকটাতো বেশ! কষ্ট করে করবেন মাঝে মাঝে মন্তব্য।

অনিকেত এর ছবি

সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গেঃ নাতালির ছবির জন্যে একস্ট্রা তালি!
মেয়েটার ফুন নং এবং আরো যা যা জানো সেগুলো সত্তর মেইল করো---
এই রকম নাতালি পাচ্ছিলাম না দেখেই তো পাহাড়ে চড়া হলো না আমার (গড়াগড়ি দিয়ে কান্নার ইমো হবে এইখানটায়)

সাথে থাকত যদি নাতালি
পেরিয়ে যেতাম সাগর মরু, দিয়ে হাতে হাততালি
খালি থাকত যদি নাতালি----

তারেক অণু এর ছবি

এইটা আমার ইনবক্সে বলতে পারতেন, এখন এই যে বললেন, সবার আগে আর্য রতন হামলে পড়বে! খাইছে

ভালো কথা বলি, গত সপ্তাহেই কথা হয়েছে, তারা ব্রাজিল যাচ্ছে খেলা দেখতে, লন যাই ব্রাজিল! গুল্লি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আর বলবেন না ব্রাজিলের কথা! আমার ল্যাবে মাস তিনেকের জন্য এক ব্রাজিলীয় বালিকা এসেছিল তার ব্যাচেলরের একটা প্রোজেক্টে! নানাবিধ পরীক্ষণে তাকে সকল সহযোগীতা-জ্ঞান ইত্যাদি সহকারে পরিকল্পণা করেছি যে, ২০১৪'তে খেলা দেখতে ব্রাজিল যাচ্ছি! ব্রাজিলে ওই বালিকার বাসায় বসে পপকর্ণ সহ তার টিভিতে খেলা দেখার পরিকল্পনা পাক্কা! আপনারা গেলে আপনাদেরকে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে হবে! পপকর্ণ বেশি কিনতে পারব না! চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

হ, স্বপ্নেই যখন খাবেন বেশী করে খান। চোখ টিপি

তারেক অণু এর ছবি

সাথে থাকত যদি নাতালি
পেরিয়ে যেতাম সাগর মরু, দিয়ে হাতে হাততালি
খালি থাকত যদি নাতালি-- গড়াগড়ি দিয়া হাসি হাততালি

শাব্দিক এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

তারেক অণু এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

কেডা অ্যাঁ
আর ইউ ফ্রম জ্ঞানা!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

'ম্যান ইউ হেভ টু রেসপেক্ট ইন বাংলাদেশ'। এইভাবে আপনার ভাবীদেরকে খাবলা দিয়ে চিপক্কে ধরে বেলেল্লাপনা করলে তু বুকের ডাইন দিকে চিনচিনাচিন বেদনা হয়! মন খারাপ

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ম্যান, বুকের ডাইন দিক্টারে শক্ত করেন। সাতশো কোটি মানুষের মধ্যে তরুণীর সংখ্যা একশ কোটি ধরলে কমসেকম তিনশ কোটি বার চিঞ্চিনা ব্যাথা হইতে পারে (পার হেড বেশি না তিনটা করে অ্যাফেয়ার ধরলাম)। অবশ্য যদি চোখকান বন্ধ রাখতে পারেন তাইলে ছবি দেখা বা অন্যের কাছে গল্প শোনা অ্যাভয়েড করতে পারবেন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

চোখ কান বন্ধ রাখতে পারি, কিন্তু লিপস্টিকের দুকান তো আর বন্ধ রাখতে পারি না! নিচে দেখেন, এই পাপিষ্ঠ তাড়েকাণু কী করছে! তার ভাবীদের সাথে কেবল বেলেল্লাপনাই করে নাই, লিপস্টিকও লিয়ে লিয়েচে।

ম্যায় লুট গ্যায়া, ম্যায় বরবাদ হো গ্যায়া...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

যদি উপায় থাকে, ডাকাতকে পুলিশে ধরিয়ে না দিয়ে, তার বাড়িতেই ডাকাতি করা উত্তম শয়তানী হাসি । অবশ্য যতদুর জানি, টাড়েকানুর পার্মানেন্ট বাড়ি এখনও হয় নি, একটু অপেক্ষা করতে হবে, এই আর কি। মরদের মত মরদ হইলে দেখায়া দিবেন হে হে

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মরদানি দেখানোর আগে যেই লক্ষণ বুঝতেছি, ডাকাত অবশেষে ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়িতেই হামলা করে বসবে মনে হচ্ছে!

তারেক অণু এর ছবি

কথা হবে সম্মুখ সমরে হে ভ্রাত---

অতিথি লেখক এর ছবি

বরাবরের মতই সুন্দর ছবি আর লেখা, চালায় যান -- উত্তম জাঝা!

-- রামগরুড়

তারেক অণু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- চেষ্টা করে যাচ্ছি-

স্বপ্নখুঁজি এর ছবি

বরাবরের মতই চমৎকৃত।।। চলুক

তারেক অণু এর ছবি
রাপুনযেল এর ছবি

দারুন as usual...! অণু কে ধন্যবাদ, কারন তার লেখাগুলো পড়তে পড়তেই আমার সচলায়তন এ আগ্রহ

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

এত সুন্দর ! অ্যাঁ

তারেক অণু এর ছবি

তাতো বটেই!

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

অপূর্ব! মনে হলো, নিজেই ঘুরে এলাম।

( গতকাল আমাদের পারিবারিক আড্ডায় আপনাকে ইচ্ছামতো গালি দিতে দিতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম, তারেক অণু মানুষ নয়, জ্বিন! খাইছে )

তারেক অণু এর ছবি

কতবার বললাম আমার শরীরে ডি এন এ এবং জিন দুইই আছে, পাবলিক শোনে না!

পারিবারিক আড্ডা আমাকে টানার কি দরকার অ্যাঁ

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

অসাধারণ! অসাধারণ! বর্ণনায় যেমন, ছবিতেও তেমনি।

একটা লাঠি, যাতে সময়ে- অসময়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো যায়।

এই লাঠিটির কেতাবী নামই কি শ্যুটিং ষ্টিক?

অ ট । পাহাড়ের চূড়োয় উঠে অণু কি ঠোঁটে লিপিস্টিক লাগালে নাকি ? ভালোই তো লাগছে!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তারেক অণু এর ছবি

না হে দাদা, ওয়াকিং স্টীক!

লিপস্টিক লাগাতে হবে কেন, অন্য কোথাও থেকে আসতে পারে না লইজ্জা লাগে

কালো কাক এর ছবি

"লিপস্টিক লাগাতে হবে কেন, অন্য কোথাও থেকে আসতে পারে না "

জনসাধারণ তো এই কথাটাই বের করতে চাচ্ছিলো চোখ টিপি

তারেক অণু এর ছবি

পুরাই ফাউল শয়তানী হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

কঠিন! জটিল!! অসাধারন!!!
আপনে মিয়া আসলেই ধরাছোঁয়ার বাইরের মানুষ। কই কই যে না গেছেন কে জানে।

অঃটঃ টেবিল মাউন্টেন নিয়ে একটা বিলাই মার্কা পোস্ট দিব ভাবছিলাম, আপনার বাঘু পোস্ট সেই কষ্ট বাঁচিয়ে দিয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ

তারেক অণু এর ছবি

না রে ভাই, পিলিজ লেখেন!
আরে একই জায়গা নিয়ে অন্য রকমের কত লেখা হবে তত লাভ

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চুরি যাওয়া আলোর ছবিটা যত দেখি- মুগ্ধ হই... অসাধারণ...

তারেক অণু এর ছবি

মুহূর্তটা কি যে অদ্ভুত ছিল।

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবি কত কথা বলে!!! আপনার সব লেখা পড়ি, আর অনেক মজা পাই, এক্সট্রা টপ আপ হল আপনার সব বন্ধুদের মজার মজার মন্তব্য।
েই
[আমার কোন লেখাই তো সচল ছাপে না, কি করি বলেন তো?? লিখতেই থাকব?]

মনের রাজা টারজান/mahinaaa@ymail.com

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই লিখবেন, আপনি আপনার নিকের রহস্য লিখে ফেলেন, সেটা নিশ্চয়ই ছাপার মত হবে !

স্যাম এর ছবি

আবারও দূর্দান্ত! আপনার লেখা পড়লে সত্যিকারের ভ্রমণ এর স্বাদ টের পাওয়া যায়! অস্তাচলের দৃশ্যটি অপার্থিব! শুভকামনা হে উড়ন্ত ঘুড়ি!!!

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, এখন কষ্ট করে ভ্রমণের উপর একটা ব্যানার বানিয়ে ফেলেন!

কৌস্তুভ এর ছবি

আহাহা, কী দুর্দান্ত!

তারেক অণু এর ছবি

চলেন বেন নেভিস!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

যাব্বাবা! শেষ পর্যন্ত টেবিল মাউন্টেনও বাদ গেল না!
এই টেবিলে উঠার স্বপ্ন সুযোগ খুঁজতেছিলাম অনেকদিন।
এরপর আপনারে জিগাতে হয়, আর কোন জায়গা বাদ রাখছেন আপনি?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

ওঠা খুব কঠিন না, কিন্তু কেবল কারে চাপার হ্যাপা অনেক!

যুমার এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পাশে একটা চেয়ার থাকলে ভালো হইতো চোখ টিপি

আর আপনার কপাল, আমরা সমতলভূমিতে কিছু খুঁজে পাই না, আর আপনে আথারে পাথারে গিয়েও নাতালিদের খুঁজে পান, এইটা বেইনসাফি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

এককালে পাইছেন তো অনেক, এখন আমাদের জন্য একটু ছাড়ান দেন রে ভাই, সবাই এরশাদ হলে হবে বলেন?

সত্যপীর এর ছবি

দশ নাম্বার ছবিতে গাছের মাথাও দেখি টেবিল পাহাড়ের মতন ফ্ল্যাট। কি তামশা। আমার মনে হয় এগুলি ভিনগ্রহের প্রাণিদের কান্ড চিন্তিত

টেবিলক্লথ নামটা পছন্দৈসে।

নাতালিরে আরো পছন্দৈসে।

ব্রাজিল ওয়ার্ল্ড কাপে কি সত্যই যাইবেন? টিকেটের দাম কেমুন? গেলে নাতালির সাথে দেখা হৈবতো?

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

টিকেট মিললে তো দামের প্রশ্ন!

নাহ, এই বিশ্বকাপ আমি মনে হয় বাদ দিব, পরেরটা হবে রাশিয়াতে , সেটা পাক্কা।

হ, আপনি খেয়াল করছে, অদ্ভুত ছিল কয়েকটা গাছের মাথার, প্রাকৃতিকই হবে ।

সত্যপীর এর ছবি

আমি আরো ভাবলাম রিওতে আমি আর নাতালি খেলা দেখব আর আপনে আমাদের ছবি টবি তুইলা দিবেন. চমত্কার ওয়ার্ল্ড কাপ কেটে যাবে আমাদের...

নিষ্ঠুর পৃথিবী মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

খুব ভাব লইতাছেন, কি ব্যাপার, ভাবী সচল পড়ে না, নাকি খাইছে

সত্যপীর এর ছবি

ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

পড়ছে ধরা, পীর বাবা ফান্দে!

সত্যপীর এর ছবি

ফোর মাইনাস ওয়ান ইজিকল্টু থ্রি। অতএব আরো তিনখান জায়েজ আসে। হুঁহুঁ, অংক জানতে হয়।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি
খেকশিয়াল এর ছবি

কিরে হনুমান আবার পোস্ট দিয়েছিস? শ্লা! দেঁতো হাসি

মেঘের ফাঁক গলে আসা সূর্যের আলোর ছবিটা তোর তোলা সেরা ছবিগুলার মধ্যে একটা

টেবিল মাউন্টেন দেখেই বেতালের ওয়াকারের টেবিলের কথা মনে পড়লো হাসি

নাতালিকে আগেই দেখেছিলাম তোর ফেবুর ছবিগুলোতে, নাতালির সাথে পত্রমিতালী কেমন চলছে তোর? দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তারেক অণু এর ছবি

লে ঘিরে লে, যদি ফেব্রুয়ারিতে তুমি গর্ত থেকে বাহির না হইছ, আমি আর ওডিন তোর লেজ কেটে দেব, ব্যাটা,খেয়াল রাখিস।

প্ত্রমিতালি দিয়া তোর কি কাম অ্যাঁ বেল পাকলে কাকের কি ?

খেকশিয়াল এর ছবি

এই সামনের ফেব্রুয়ারী? বের হবো! বের হবো! প্ল্যান কি রে? দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তারেক অণু এর ছবি

তিষ্ঠ ক্ষণকাল।

রংতুলি এর ছবি

আহা! দারুণ সব ছবি আর ঘুরাঘুরির পোষ্টগুলোর কারণেই সচলায়তন নেশা হয়ে যাচ্ছে দিন দিন! চলুক হাসি

তারেক অণু এর ছবি

ভাল নেশা

শামীম এর ছবি

উত্তম জাঝা!
চীনে যাইবেন কবে?
http://bengali.cri.cn/other/2012city/

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তারেক অণু এর ছবি

পরের বছর, আশা করি। আপনি কোন শহরে আছেন?

শামীম এর ছবি

যাইবেন বলেছি, আইবেন তো বলি নাই ভ্রাতঃ।
ঢাকাতেই থাকি।

আপনি শুধু নিজেই দেখেন না, সেগুলো চমৎকার করে ফ্রেমে বন্দী করে সাথে নিয়ে যাওয়ার মত বর্ণনা সহকারে পরিবেশন করেন। কাজেই আপনি গেলে আমাদেরও কিছুটা যাওয়া হবে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তারেক অণু এর ছবি

চলেন যায় গা,
একটা টিম করার চেষ্টা করছি, যারা চীনের প্রাচীরের ৬০০০ কিমি হাঁটবে, একটানা, কয়েক মাসে।
আসবেন> তবে কবে জিগায়েন না ভাই! জানি না, কিন্তু হবে একদিন।

শাব্দিক এর ছবি

অপূর্ব! বিশেষ করে সূর্যের শেষ আলোর ছবিটা।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

তারেক অণু এর ছবি
ধুসর জলছবি এর ছবি

সূর্যাস্তের ছবিটা অসাধারন। মন ভাল করে দেয়া ছবি।
আপনি দেখা যাচ্ছে পাহাড় পর্বতে গিয়েও নাতালিদের খুঁজে পান। মাসুদ রানার নারীঘটিত সৌভাগ্য কে আগে গালগল্প ভাবতাম, এখন দেখা যাচ্ছে ঘটনা সত্যি। যুগে যুগে মাসুদ রানারা ছিলেন , থাকবেন। খাইছে চাল্লু

তারেক অণু এর ছবি

তা একটু আধটু হা হলে জীবন পানসে হয়ে যাবে না খাইছে

অরফিয়াস এর ছবি

নাতালি এর জন্য একটা হাততালি হাততালি । আর ঐরকম করে কোলাকুলি করে ছবি তুলতে হয় নাকি!! খাইছে দীর্ঘশ্বাস !! তাও যদি একজন হতো, অনিন্দ্যসুন্দরী দু-দুজন ! "উপরওয়ালা যব ভি দেতা, দেতা ছাপ্পর ফারকে !!"

সূর্যাস্তের ছবিটা অপূর্ব। আলোর রশ্মিগুলো পুরো স্বর্গীয় আবেশ এনে দিয়েছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

হ, উপরওয়ালা পুরাই ফাউল! যা করার নিজেকেই করতে হয় ইয়ে, মানে... মন খারাপ

অরফিয়াস এর ছবি

খাইছে

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি
পরমাণুঅণুজীব এর ছবি

এতো দেহি মাসুদ রানার ছুড ভাই ! যেখানেই যায় নাতালি- বৈকালি এগুলারে খুইজ্জা পায় ! আবার এই নারী তারে বিপথে না-টাইন্না উল্টা হয়রানির হাত থেইক্কা বাঁচায় ! দুনিয়াতে বিচার নাই ! যে পায় এক্কেরে এনটারটিকাতেও পায় আবার কেউ কেউ বাণিজ্য মেলাতেও একলা একলা বাদাম চিবায় !!

ফটোকগুলান কেমন অদ্ভুত ভাবে বিষণ্ণ। ইটা রাইখ্যা গেলাম... মুখ দিতে পারে কেউ - হেল্লাই ইটা দিলাম !

তারেক অণু এর ছবি

আবার কেউ কেউ বাণিজ্য মেলাতেও একলা একলা বাদাম চিবায় !! শয়তানী হাসি বই মেলাতে যান মিয়াঁ !

জুন এর ছবি

আমারে স্পন্সর করলে আমি আছি ৬০০০ কিমিতে। ইয়ার্কি না কিন্তু।

আপনার নাতালিতো মনে হল বয়সে আপনার বড়ই হবে। কাজেই এলা বড় ভাইদের জন্য রাস্তা ছাইড়া দাঁড়ান। বড়ভাইরা বিবাহিত তাতে কী? তাঁদের কী শখ আহ্লাদ নাই? বরঞ্চ তাঁরা এখন লাইসেন্সধারী এবং অভিজ্ঞ।

টেবল টপে যাওয়ার ইচ্ছে অনেক আগে থেকেই। চমৎকার ছবিগুলোর (বিশেষ করে সুন্দরীদের) জন্য আবারো ধন্যবাদ।

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

তারেক অণু এর ছবি

এদিকে আমি ভাবলাম আপনি কুতায়!

স্পন্সর! সেটা কি?

জুন এর ছবি

ডরায়েন না। আপনার কাছে চাই নাইক্কা। যদি কোনও দয়াবান কোম্পানী বা আমার বাপের ফ্যামিলি করে; তাই বলছিলাম আর কি।।। নাইলে আর হইছে।। মন খারাপ

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

তারেক অণু এর ছবি

পাইলে জানায়েন, আম্মো খুঁজছি, হারিকেন জ্বালায়ে--

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।